লিখেছেনঃ ড. সুরঞ্জন মিদ্দে
লেখক রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, পশ্চিমবঙ্গ খ্রিস্টিয় যুব সংঘের সাধারণ ও সম্পাদক
খ্রিস্টীয় প্রথম শতকেই দক্ষিণ ভারতে খ্রিস্টধর্মের প্রচার শুরু হয়ে যায়। কথিত আছে ৫২ খ্রিস্টাব্দে জিশুখ্রিস্টের সাক্ষাৎ শিষ্য সেন্ট টমাস দক্ষিণ ভারতে এসেছিলেন। তারপর ভারতে মুসলিম শাসনের পর ব্রিটিশ শাসনের শুরু হয়। এই সময় যোগাযোগ ব্যবস্থার সঙ্গে সঙ্গেই জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রভূত উন্নতি হয়। সেইসঙ্গে দলে দলে খ্রিস্টান মিশনারিরা আসেন। মিশনারিদের সেবামূলক কাজ ছাড়াও খ্রিস্ট ধর্মের উদার নৈতিক মানবতা ও সাম্য ভাবনার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়। লক্ষ লক্ষ পিছিয়ে পড়া মানুষ বৈষম্য আর অত্যাচার থেকে মুক্তির আশায় খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেন। ইসলাম ধর্মের মতো খ্রিস্টধর্মে ধমান্তরিত মানুষেরা দলিত সমাজ থেকে এসেছিলেন। রক্ষণশীল উচ্চবর্ণের মানুষেরা সমাজব্যবস্থার চাপে খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করতে বাধ্য হয়েছিল।
বঙ্গদেশে খ্রিস্টধর্মের প্রসার ঘটেছিল প্রায় চারশো বছর আগে। বঙ্গদেশ তথা সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতের সর্বপ্রাচীন ব্যান্ডেল চার্চ (১৫৯৯) স্থাপিত হয়। প্রতিষ্ঠিত হয় মিশনারি স্কুল-কলেজ ছাত্রাবাস আর সেবাকেন্দ্র। বিগত চার শতকে বঙ্গদেশে গড়ে জীবনবোধ বঙ্গ সংস্কৃতির এক বৈচিত্র্যময় অভিনব মাত্রা হয়ে ওঠে। অন্যদিকে এই সমাজের সমস্যা আর সংগ্রামের না-জানা ব্যথা-বেদনা গবেষকদের আগ্রহ বাড়িয়েছে। এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গের খ্রিস্টান জনসংখ্যা ১২ লক্ষের অধিক। এই জনগোষ্ঠী প্রায় ৯৫ শতাংশ পিছিয়ে পড়া শ্রেণি থেকে এসেছে।
২০০১ খ্রিস্টাব্দের জনগণনা অনুযায়ীর পশ্চিমবঙ্গের মোট জনসংখ্যা ৮,০২,২১১৭১ (আট কোটি দু’লক্ষ একুশ হাজার একশো একাত্তর)। শতকরা হিসাবে নিম্নরূপ চিত্র স্পষ্ট হয়। —
তফসিলি জাতি/উপজাতি | ২৯.২২% |
ভারতীয় মুসলমান | ১২.১২% |
অন্যান্য/অভারতীয় | ৪.৭৬% |
উচ্চবর্ণ | ১.৮% |
ওবিসি | ৫২.১% |
মোট | ১০০% |
এই চিত্র থেকে বোঝা যায় আমাদের দেশে পিছিয়ে পড়া মানুষ শতকরা ৯০ ভাগেরও বেশি। এই বিপুল সংখ্যক দলিত মানুষ যদি খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ না করত তাহলে তারা তপশীলিদের সুযোগ সুবিধা পেত। এরপর ভারতবর্ষ স্বাধীন হয় ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ১৫ আগস্ট। ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে রাষ্ট্রপতির সিডিউল্ডকাস্ট অর্ডারে অনগ্রসর তপশীলি তালিকা প্রকাশ করেন। ধর্ম নিরপেক্ষ ভারত সরকার সংবিধানের ৪৬ নং অনুচ্ছেদের সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয় কেবলমাত্র হিন্দু ধর্মাবলম্বীকে। সেই সময় থেকে প্রায় দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর ধরে সরকারের নিষ্ঠুর প্রশাসন নির্লজ্জভাবে তপশীলি থেকে ধর্মান্তরিত খ্রিস্টান নাগরিকদের সংবিধানের সিডিউলকাস্টদের সুযোগ সুবিধা প্রাপ্ত অধিকার থেকে বঞ্চিত করল। ভারতবর্ষের একই গ্রামে বাস করে তপশীলি শ্রেণির মানুষেরা সরকারি চাকরি পেয়ে বৃহত্তর সমাজে প্রতিষ্ঠিত হল। অথচ একই গ্রামে বাস করে এক পরিবারের অন্য ভাই ধর্মান্তরিত খ্রিস্টান হওয়ার অপরাধে পেটের জ্বালায় দিন মজুর হয়ে গেল। ভিক্ষাপাত্র নিয়ে গ্রাম থেকে শহরের অভিশাপগ্রস্ত কীটে পরিণত হল।
এখানেই নাটক শেষ নয়। পরবর্তী সময়ে শিখ সম্প্রদায়ের জোরালো চাপে ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে একেবারে ক্ষুদ্রতর সংখ্যালঘু শিখদের এবং ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দে নব বৌদ্ধদের তপশীলি শ্রেণির সুযোগ সুবিধা দিতে বাধ্য হয় —ধর্মনিরপেক্ষ ভারত সরকার। কিন্তু পিছিয়েপড়া খ্রিস্টান সম্প্রদায় অন্ধকারে ক্রমশ তলিয়ে গেল।
অবশেষে আরও এক ঐতিহাসিক মাহেন্দ্রক্ষণ এল। ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দের ৭ আগস্ট। ভারতের জাতীয় মোর্চা সরকারের প্রধানমন্ত্রী বিশ্বনাথ প্রতাপ সিং ‘মণ্ডল কমিশন’এর সুপারিশ আংশিকভাবে গ্রহণের কথা সংসদের উভয়কক্ষে ঘোষণা করেন। আর সঙ্গে সঙ্গেই কায়েমী স্বার্থের চক্রান্তে সরকারের পতন ঘটে যায়। কিন্তু তবুও পিছিয়ে পড়া শ্রেণীদের জন্য ২৭ শতাংশ চাকরির সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে যান। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে ওবিসিদের জন্য সেই সংরক্ষণ প্রথমে ৫%, পরে ৫%-৭% করা হয়েছে। অথচ অন্যান্য রাজ্যে ২৭% করা হয়েছে। এমনকী মিলনাড়তে ৫০% করা হয়েছে। সেই সঙ্গে অন্যান্য রাজ্যের চিত্রও বেশ বিচিত্র। কেরালা ২৮%, বিহার ২৬%, অন্ধ্র প্রদেশ ২৫%, কণাটক ১৮%, উত্তরপ্রদেশে ১৫%, করা হয়ে গেছে। সেই দিক থেকে পশ্চিমবঙ্গের চিত্রটা অনেকটা বঞ্চনারও বটে।
মণ্ডল কমিশনের তালিকায় ১৭৭টি শ্রেণির নাম আছে। তার মধ্যে ৯৯ শ্রেণির নাম কস্টা (পর্তুগীজ পদবীধারী খ্রিস্টান) আর ১৬২ সংখ্যক শ্রেণি খ্রিস্টধর্মে ধর্মান্তরিত তপশীলি জাতি। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ওবিসি কমিশন, এ পর্যন্ত ৭০টি শ্রেণিকে ওবিসির মধ্যে স্বীকৃতি দিয়েছে। ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দের ১২মে এক সরকারি বিজ্ঞপ্তি (১) কষ্টা (পর্তুগীজ পদবীধারী খ্রিস্টান) ও (২) তপশীলি থেকে ধর্মান্তরিত খ্রিস্টানদেরকে ওবিসির তালিকায় নথিভুক্ত করে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।
আমাদের ভালোভাবে মনে রাখতে হবে ধর্মান্তরিত মানুষের সামাজিক অবস্থানের রূপান্তর রাতারাতি ঘটতে পারে না এবং পারেওনি। ধর্মান্তরিত হলেই তো মানুষের পেশার পরিবর্তন ঘটে না। খ্রিস্টীয় মিশনগুলি সমাজ উন্নয়নমূলক সেবা প্রতিষ্ঠান চালু করলেও কিন্তু সেগুলো ধর্মান্তরিতদের জন্য যথেষ্ট ছিল না। আবার কেউ কেউ বস্তুগত কিছু সুবিধা পেলেও তার জাতিভাইদের তুলনায় সামাজিক মর্যাদায় উন্নততর হতে পারেনি। ধর্মান্তরিত হওয়ার পরও জাতিগত বৈষম্য থেকে যায়। কিন্তু আইন ধর্মান্তরিতদের তফসিলি জাতি (S.C.) বলে স্বীকার করে না। এই বিষয়টা বিচার করার সময় আমাদের সুপ্রিম কোর্ট খ্রিস্টীয় দর্শনের তাত্ত্বিক সাম্যকেই গুরুত্ব দেন। সামাজিক বাস্তবতাকে গুরুত্ব দেন না। ধর্মান্তরিত ব্যক্তি জাতিভেদের ও জাতি বৈষম্যের বাস্তবতা থেকে মুক্তি পান না; আবার তফসিলি জাতির মানুষের সামান্য যে সুযোগ-সুবিধা পান তা থেকেও বঞ্চিত হল। এটা ধরে নেওয়া হয় যে কোনো ব্যক্তি ধর্মান্তরিত হলে তার জাতি-পরিচয় লুপ্ত হয়ে যায়। সুতরাং তফসিলি জাতির প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা তিনি আর পেতে পারেন না। এরকম একটা ভয়াবহ অবস্থায় এখনও পর্যন্ত দলিত খ্রিস্টানরা তফসিলি জাতির আইনি স্বীকৃতি আদায় করতে সক্ষম হননি। তাই আপাতত ওবিসির অনুমোদনকে ধর্মান্তরিত খ্রিস্টানরা মেনে নিয়েছেন।
আমাদের মনে রাখতে হবে পশ্চিমবঙ্গে ওবিসি খ্রিস্টানদের দুটি বিশেষ শ্রেণিতে চিহ্নিত করা হয়েছে। (১) পর্তুগিজ পদবিধারী খ্রিস্টান (কস্টা) সম্প্রদায়ের সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার। মেদিনীপুরের গেঁওয়াখালি, কেওড়াপুকুর (বাগানপাড়া), দমদম মাঠকল, রানাঘাট (মণ্ডলপুকুর), হাবিবপুর, কলকাতার তালতলা অঞ্চলে এঁরা বাস করেন; যেমন —ডিরোজিও, গোমেশ, লোবো, রোজারিও, ডিফ্রজ, গ্যাসপার, রডরিগস্ প্রভৃতি পদবিগুলি ভারতীয় পর্তুগিজ বংশদের মধ্যে এখনও বিদ্যমান। এরা খ্রিস্টান সমাজেও ঘৃণিত। আবার বর্ণহিন্দুদের কাছেও অচ্ছুত। এঁদের নিয়ে ব্যঙ্গ বিদ্রুপও চালু আছে। যেমন—
ফিরিঙ্গি তুই, জাত কীরে তোর নামটা বিটকিলে।
সাহেব যদি বাপ তবে তোর চামড়া কেন কেলে।
এঁরা গোমাংস ও শূকর মাংসও খান। এদের বেশিরভাগই বাবুর্চির কাজ করেন। শিক্ষা-দীক্ষায় অনগ্রসর। ৫০ শতাংশ ছেলেমেয়ে দরিদ্রের কারণে স্কুলে যায় না। যারা যায় শতকরা ৭৫ ভাগই ৪-৫ বছর পর লেখাপড়া ছেড়ে দেয়। এদের মধ্যে একজনও বিধায়ক বা সাংসদ নেই। একটি পরিসংখ্যান দেখলেই আর স্পষ্ট হয়। ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দে কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক প্রকাশিত মণ্ডল কমিশনের রিপোর্ট :
শ্রেণী | জনসংখ্যার হার | রাজনীতি | চাকরি |
ব্রাহ্মণ | ৩.৫% | ৪১% | ৬২% |
ওবিসি | ৫২% | ৮% | ৭% |
এসসি/এসটি | ২২.৫% | ২২.৫% | ৫% |
সংখ্যালঘু | ১০.৫% | ৫.৫% | ১%, |
মোট দলিতশ্রেণি | ৮৫% | ৩৪% | ১৩% |
পশ্চিমবঙ্গের খ্রিস্টান জনগোষ্ঠীর ৯৫ শতাংশ মানুষ এসেছে তফসিলি শ্রেণি থেকে। একটি চিত্র থেকে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে বোঝা যাবে। |
পদবী | সাবকাস্ট | পূর্বপুরুষের জীবিকা |
নস্কর, সরদার, পুরকাইত, ঢালি, বিশ্বাস, হালদার, সাঁপুই, গায়েন, কয়াল, পৈলান, ঘরামি, বৈদ্য, বৈরাগী, মিন্দে, মণ্ডল। | পৌদ্র/পোদ। | চাষবাস |
আড়ী, বর, বাগ, রোগী, দাস, ধাড়া, ঘোষ, ঘুঘু, হাজরা, মিস্ত্রী, মাখাল, মাল, পাত্র, পাঁজা, রং, সিং, সাঁতরা | ||
সানি, দলুই, পণ্ডিত, বিজলী, চকাদার, নায়ক, সর্দার |
একজন ধর্মান্তরিত তফসিলি খ্রিস্টানকে প্রমাণ করতে হবে তার পূর্বপুরুষ হিন্দু তফসিলি ছিল। তবেই সে ওবিসি মানপত্র পাবে। যেমন—
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নাম দেখে বোঝা যাচ্ছে না, কারা বাঙালি বা ভারতীয় খ্রিস্টান ? এই জটিল সমস্যার প্রমাণপত্র-সহ হাজির করা সব সময় সম্ভব নয়। আবার অনেক সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তা ছাড়া সাধারণ নিরক্ষর মানুষের এই সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা নেই। যার ফলে সরকারি অফিসে খ্রিস্টান ওবিসি প্রার্থীদের হয়রানির শেষ নেই। দীর্ঘ ১০ বছর হয়ে গেলে এখনও খ্রিস্টান জনগোষ্ঠীর মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি হয়নি।
স্বাধীনতার পর থেকে অনগ্রসর খ্রিস্টান সম্প্রদায় মিশনারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছে। আধুনিক ভারত গঠনে খ্রিস্টীয় মিশনারি শিক্ষালয়গুলির (স্কুল ও কলেজ) অবদান সবর্জনস্বীকৃত। খ্রিস্টীয় মিশনারি শিক্ষালয়গুলি শুধু দেশের মূল্যবান সম্পদ নয়। জাতীয় ঐতিহ্যকে রক্ষা করে চলেছে। এখনও প্রতি বছর ভর্তির সময় দীর্ঘ লাইনও পড়ে। অথচ একটি স্থায়ী পদে শিক্ষক-অশিক্ষক নিযয়োগ করতে বহু সময় ধরে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। যার ফলে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত মিশনারি স্কুলগুলো ক্রমশ অন্ধকারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
ভারতীয় সংবিধানে ৩০ (১) নং ধারায় বলা আছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলি ‘ধর্ম ও ভাষাভিত্তিক সংখ্যালঘু শ্রেণি পছন্দমতো শিক্ষালয় স্থাপন ও পরিচালনা করতে পারবে। এমনকী এও বলা আছে ৩০ (২) নং ধারায় সংখ্যালঘু শিক্ষালয়কে আর্থিক অনুদান দেওয়ার ব্যাপারে সরকার কোনোরকম বৈষম্যমূলক আচরণ করবে না। অথচ বর্তামনে খ্রিস্টীয় মিশনারি শিক্ষালয়ে বহু পদ খালি পড়ে আছে শিক্ষক ও অশিক্ষক নিয়োগ করতে বহু সময় ধরে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। যার ফলে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত মিশনারি স্কুলগুলো ক্রমশ অন্ধকারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
ভারতীয় সংবিধানে ৩০ (১) নং ধারায় বলাআছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলি ‘ধর্ম ও ভাষাভিত্তিক সংখ্যালঘু শ্রেণি পছন্দমতো শিক্ষালয় স্থাপন ও পরিচালনা করতে পারবে। এমনকী এও বলা আছে ৩০ (২) নং ধারায় সংখ্যালঘু শিক্ষালয়ে বহু পদ খালি পড়ে আছে —শিক্ষক ও অশিক্ষক নিয়োগ করা যাচ্ছে না। এই সমস্যা আরও জটিল করে তুলেছে ‘হ্যাভেন পয়েন্ট রোস্টার’ নামক নিয়মটি। বহু শিক্ষিত খ্রিস্টান প্রার্থী সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
সব মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গের খ্রিস্টানদের অবস্থা ভালো নয়। অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অবস্থান সমাজের মূল স্রোত থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। খ্রিস্টান মানে ইংলিশে কথা বলে, স্যুট-কোট-টাই পরে, ব্যাপারটা তা নয়। কলকাতার নামকরা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল দেখে বাংলার দলিত খ্রিস্টানদের প্রকৃত অবস্থা বোঝা যাবে না। যেতে হবে গ্রামবাংলার জেলাস্তরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অথবা কলকাতার এন্টালির কাছে তিন নম্বর ব্রিজ পেরিয়ে মোতিঝিল-হাটগাছিয়া অঞ্চলে। তবেই বোঝা যাবে অনগ্রসর খ্রিস্টানদের প্রকৃত অবস্থা। বাংলার দলিত খ্রিস্টানদের অবস্থা ক্রমশ তলানিতে ঠেকেছে। বঞ্চিত হতে হতে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে।