• মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-গ্রন্থাগার
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
Tuesday, August 9, 2022
নবজাগরণ
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-গ্রন্থাগার
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-গ্রন্থাগার
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ
No Result
View All Result

সিনেমার চিত্রনাট্য – ইতিহাস, বিবর্তন ও ক্রমবিকাশ

নবজাগরণ by নবজাগরণ
July 8, 2020
in সিনেমা
1
চিত্রনাট্য

Image Source: nofilmschool

Share on FacebookShare on Twitter

লিখেছেনঃ মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম

সাধারণত ‘চিত্রনাট্য’ সিনেমার জন্য লিখিত নাট্যরূপকে বলা হয়। স্ক্রিপ্ট, সিনারিও ইত্যাদি সংজ্ঞাতেও সংজ্ঞায়িত করা হয়। বাংলায় বলা হয় চিত্রনাট্য। অনেকে মনে করেন যে, যে কোনো গল্পের নাট্যরূপকেই সিনেমার ক্ষেত্রে চিত্রনাট্য বলা হয়, যা আদৌ সত্য নয়। চিত্রনাট্যের নিজস্ব একটা বৈশিষ্ট ও ধর্ম আছে। সিনেমায় এই চিত্রনাট্য লেখার জন্য কতকগুলো পদ্ধতির আশ্রয় নিতে হয়, যেগুলো সাধারণ নাটকের থেকে সম্পূর্ণ পৃথক।

মঞ্চে অভিনয় করার জন্য যে নাটক লেখা হয় তাতে বিভিন্ন দৃশ্যের মধ্যে সংলাপের সাথে আনুসঙ্গিক সেটের কিছু বর্ণনা থাকে যেখানে নাটকটি মঞ্চস্থ করা হবে বা অভিনয় করা হবে। যেমন মঞ্চের পারিপার্শ্বিক বস্তু ইত্যাদি, কিন্তু সিনেমার ক্ষেত্রে লিখিত চিত্রনাট্যে চরিত্রের সংলাপের সাথে সাথে আনুসঙ্গিক অনেক কিছুর বিস্তারিত বর্ণনা করা থাকে যেমন স্থান – কালগত অবস্থান, ক্যামেরার মুভমেন্ট, চরিত্রের চলাফেরার খণ্ড ইঙ্গিত, দেহভঙ্গিমা ইত্যাদি।

বিভিন্ন চিত্রনাট্যকার বিভিন্নভাবে চিত্রনাট্য রচনা করে থাকেন। কোন চিত্রনাট্যকার দৃশ্যের বিভাজন করে শুধুমাত্র সংলাপ লিপিবদ্ধ করেন বাকি শট ডিভিজন শুটিং পর্বের আগে পরিচালক স্কেচ করে নেন। আবার অনেক চিত্রনাট্যকার সংলাপের পাশাপাশি ক্যামেরার মুভমেন্ট, দৃশ্যের কৌনিক অবস্থান, শট ডিভিজন অর্থাৎ চরিত্রের কতটুকু শরীরী অংশ ফ্রেমের মধ্যে থাকবে তাও লিপিবদ্ধ করেন। এইসব কাজ সাধারণত চিত্রনাট্যকার ও পরিচালক যদি একই ব্যক্তি হয়ে থাকেন তখন করে থাকেন। চিত্রনাট্যকার আর পরিচালক আলাদা ব্যক্তি হলে সাধারণত এইসব শট ডিভিজন ও ক্যামেরার মুভমেন্ট লিপিবদ্ধ করেন না কারণ যে দৃশ্যকল্প চিন্তা করে চিত্রনাট্যকার এসব করে থাকেন তা অনেক সময় লোকেশনে গিয়ে সেই দৃশ্য শুট করা পরিচালকের পক্ষে সম্ভব হয়না।

পরিচালক যদি নিজের ছবির চিত্রনাট্য নিজেই লেখেন তাহলে সম্পূর্ণ ব্যাপারটা আরো ভালভাবে প্রত্যক্ষ হয়। কারণ পরিচালক নিজের কল্পনায় যে সিকোয়েন্সটিকে লিপিবদ্ধ করতে পারবেন, অন্য চিত্রনাট্যকারের রচনা অবলম্বন করে চলচ্চিত্র নির্মাণ করলে সেই অনুযায়ী দৃশ্যের কম্পোজিশনটা গড়ে ওঠে না। সেজন্যই দেখা যায় চিত্রনাট্যকার ও পরিচালক যদি আলাদা ব্যক্তি হন তখন পরিচালক শুটিং করতে গিয়ে মূল চিত্রনাট্যের অনেক কিছুই পরিবর্তন করে থাকেন। অনেক সময় চিত্রনাট্যকারের লেখা সংলাপ ঠিক ঠাক খাপ না খেলে মূল বক্তব্যের কোন রকম পরিবর্তন না করে অভিনেতা বা অভিনেত্রীরাও নিজেদের মত করে সংলাপ বলে যান।

Image by Gerd Altmann from Pixabay

চিত্রনাট্য লেখার কোন বিধিবদ্ধ নিয়ম নেই। আগে যেভাবে চিত্রনাট্য লেখা হত সেভাবে এখন লেখা হয়না। আধুনিক চিত্রনাট্য রচনার রীতিতে অনেক পরিবর্তন এসেছে। বিখ্যাত রুশ চিত্র পরিচালক সের্গেই আইজেনস্টাইন চিত্রনাট্য লেখার কতকগুলো নিয়মের কথা বলেছিলেন যাকে অবলম্বন করে চলচ্চিত্রের একটা নিজস্ব ব্যাকরণ গড়ে ওঠে।

সত্যজিৎ রায় ও পূর্ণেন্দু পত্রী সহ অনেক পরিচালক আছেন যাঁরা ছোট ছোট স্কেচের মাধ্যমে আগে থেকেই পুরো দৃশ্যকে মনে মনে কল্পনা করে রাখতেন। এই রীতি চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে বিশেষ কার্যকর বলেও অনেক পরিচালক মনে করে থাকেন। আধুনিক অনেক চিত্র পরিচালক রয়েছেন যাঁরা চিত্রনাট্য সম্পর্কে কোনোরূপ পূর্বলিখিত বা পূর্বপরিকল্পিত কোনো নির্দিষ্ট নীতি অবলম্বন করে চলেন না। অর্থাৎ শুটিং-এর সময়েই কি করবেন তা ঠিক করে নেন। এমনকি অনেকে এমন রয়েছেন যাঁরা নির্দিষ্ট সংলাপ লিখে রাখারও পক্ষপাতী নন। এটা সাধারণত হলিউডেই বেশি হয়।

সত্যজিৎ রায় চিত্রনাট্য সম্পর্কে বলেছেন, “আমি চিত্রনাট্য সম্পর্কে বলতে গিয়ে গদার এর কথা বলবো না, কারণ এসব পরিচালককে কোন নিয়মের গন্ডির মধ্যে ফেলা যায় না। যারা চিত্রনাট্যের বিষয়ে জানতে চান, তারা যদি এইসব পরিচালক দ্বারা শুরু করেন, তাহলে খুব বেশি লাভজনক হবে বলে আমি মনে করি না। বিশেষত গদরের প্রায় ছবি লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে তার একটা লক্ষ্য হল সিনেমার সনাতন রীতিগুলোকে অত্যন্ত সচেতনভাবে ভেঙ্গে ফেলা। কাজেই গদারকে বোঝার আগে জানা চাই এ সনাতন রীতিগুলোকে চিত্রনাট্যকারের কোনো সমস্যার সঙ্গে সাহিত্যিকের সমস্যার বিশেষ কোন তফাৎ নেই। দুজনের কাজ হলো কোন একটি বিষয়বস্তুকে ভাষায় ব্যক্ত করা। তফাৎ এই যে, সাহিত্যিক কেবল মাত্র কথার আশ্রয় নেন; চিত্রনাট্যকার কিছুটা কথা এবং কিছুটা ছবি ও ধ্বনির মধ্যে দিয়ে তাঁর কথা বলেন।”

সত্যজিৎ রায় “চলচ্চিত্রের সংলাপ প্রসঙ্গে” প্রবন্ধে সাহিত্য আর চিত্রনাট্যের মধ্যে মূল পার্থক্য সম্পর্কে নিজের বক্তব্য তুলে ধরেছেন। যেটি ১৯৬৩ সালে আনন্দবাজার পত্রিকার শারদীয় সংখ্যায় ছাপা হয়। তাতে তিনি চিত্রনাট্যে সংলাপের ব্যবহার প্রসঙ্গে লিখেছেন, “চলচ্চিত্রে সংলাপের প্রধানত দুটি কাজ। এক, কাহিনীকে ব্যক্ত করা; দুই, পাত্র-পাত্রীর চরিত্র প্রকাশ করা। সাহিত্যের কাহিনীতে কথা যে কাজ করে, চলচ্চিত্রে ছবি ও কথা মিলিয়ে সে-কাজ হয়। …… সংলাপ যদি স্বাভাবিক না হয় তাহলে অভিনয় স্বাভাবিক হওয়া মুশকিল। বাস্তব জীবনে মানুষ একই বক্তব্য বিভিন্ন অবস্থায় বিভিন্ন ভাষায় ব্যক্ত করে। একই কথা অলসমুহূর্তে একভাবে, কর্মরত অবস্থায় আরেকভাবে; এমনকি গ্রীষ্মে ঘর্মাক্ত অবস্থায় একভাবে এবং শীতে কম্পমান অবস্থায় আলেকভাবে ব্যক্ত হয়। নিরুদ্বিগ্ন অবস্থায় মানুষের কথার লয় হয় বিলম্বিত, উত্তেজিত অবস্থায় মানুষের কথা কেটে যায়, বাক্য উখিত হয় নি:শ্বাসের ফাঁকে ফাঁকে।”

সত্যজিৎ রায় অস্কার জয়ী “পথের পাঁচালী” সিনেমার পূর্ণাঙ্গ চিত্রনাট্য একেবারেই তৈরি করেননি। পাণ্ডুলিপির একতাড়া কাগজে লেখা ছিল কিছু নোট আর কিছু স্কেচ। তাঁর আঁকা ছবি ও টীকাগুলি থেকে এই চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয়। তিনি ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে লন্ডনের উদ্দেশ্যে সমুদ্রযাত্রার করেন সেই সময় এই সকল নোটগুলি লেখেন।

ছবিতে কাহিনী বোঝবার জন্য পূর্ণাঙ্গ চিত্রনাট্যের প্রয়োজনও তাঁর ছিল না। তিনি বলেন, “একে তো পুরো কাহিনীটাই আমার মনের মধ্যে একেবারে গেঁথে গিয়েছিল, তার উপরে আবার ডি.কের করা সারাংশ আর চিত্রনাট্যের মূল উপাদানের মধ্যে সামঞ্জস্য ছিল কম নয়।

ছবির কাহিনী থেকে মূল বইয়ের প্রচুর চরিত্র বাদ দেওয়া হয়। পুরুতঠাকুর হরিহর রায় ও তাঁর পরিবার, অর্থাৎ তাঁর স্ত্রী সর্বজয়া, মেয়ে দুর্গা, ছেলে অপু, আর বয়সের ভারে ন্যুজ এক দূর সম্পর্কের দিদি ইন্দির ঠাকরুন, হরিহরের ছেলেমেয়েরা যাকে পিসি বলে ডাকে—বাস, মূলত এই কটি চরিত্রকে ঘিরেই আবর্তিত হয়েছে ছবির কাহিনী। ছবির পক্ষে অপ্রয়োজনীয় বলে মূল বইয়ের একটানা অনেক বাগিবস্তার বর্জন করে ঘটনাগুলিকে আমি একটু অন্যভাবে সাজিয়ে নিই, ফলে ছবির কাহিনীতে একটা নতুন বুনট তৈরি হয়ে ওঠে। পিসিটিকে যে আমি আরও অনেক দিন বাঁচিয়ে রাখি, তার কারণ আমি জানতাম যে, নানা রকমের নাটকীয় ঘটনায় ভরা ওই পরিবেশ থেকে যদি হঠাৎ তাঁকে সরিয়ে নেওয়া হয় তো দর্শকদের পক্ষে সেটা একটা নৈরাশ্যজনক ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে। মূল বইয়ে অপুর জন্মের কিছুদিন বাদেই তিনি মারা যান। সেক্ষেত্রে ছবিতে তিনি যখন মারা যান, দূর্গার বয়স তখন দশ-এগারো। একটা বাঁশঝাড়ের মধ্যে অপু আর দুর্গা তাঁর মৃতদেহ দেখতে যায়। মৃত্যু যে কী, তা তারা সেই প্রথম জানলো।”

চিত্রঃ সত্যজিৎ রায়, Image Source: Google Image

দূর্গার মৃত্যু নিয়ে সত্যজিৎ রায় যা কিছু তাঁর সিনেমায় দেখিয়েছেন তা বিভূতিভুষণ বন্দোপাধ্যায়ের মূল ‘পথের পাঁচালী’ উপন্যাসে নেই। সেখানে তিনি গল্পের কিছুটা পরিবর্তন করেছেন। সত্যজিৎ রায় দেখিয়েছেন প্রবল বৃষ্টিতে ভিজে দূর্গা নিউমোনিয়াতে আক্রান্ত হয় এবং তার মৃত্যু হয়, অথচ মূল বইয়ে এমনটা নেই।

অপুর পাঁচালী বইয়ের মধ্যে সত্যজিৎ রায় লিখেছেন যে তিনি চলচ্চিত্রের প্রয়োজনে তিনি উপন্যাসের অনেক চরিত্রকে সরিয়ে দিয়েছিলেন ও গল্পের মধ্যেও বেশ কিছুটা পরিবর্তন পরিবর্ধন করেছিলেন। উপন্যাসের শুরুর দিকেই গ্রামের মন্দিরে সামনেই ইন্দির ঠাকরুণের মৃত্যু ঘটে, কিন্তু সিনেমায় দেখা যায় অপু ও দুর্গা তাঁর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে। চলচ্চিত্রের অপু ও দুর্গার ট্রেন দেখার জন্য দৌড়নোর যে দৃশ্য সেটিও মূল উপন্যাসে নেই। বর্ষায় ভিজে প্রচণ্ড জ্বর বাঁধিয়ে দুর্গার মৃত্যু ঘটে বলে চলচ্চিত্রে দেখানো হলেও উপন্যাসে মৃত্যুর কারণ অজানাই রাখা হয়েছে। হরিহর রায়ের পরিবারের গ্রাম ত্যাগ দিয়ে চলচ্চিত্র শেষ হলেও উপন্যাস সেই ভাবে শেষ হয়নি।

এই প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন, “জঙ্গলের ঝড়বাদলের মধ্যে তার ওই আত্মহারা নাচ, দুর্গার মৃত্যুর প্রত্যক্ষ কারণ হিসাবে এটাকেই আমি তুলে ধরি। দুর্গার মৃত্যুর পরে আমার কাহিনীতে ধীরে ধীরে উপসংহার টানি এবং দেঘাই পিতৃপুরুষের ভিটে ছেড়ে হরিহর তাঁর পরিবার নিয়ে কাশীতে চলে যাচ্ছেন।” (চলচ্চিত্রের সংলাপ প্রসঙ্গে, আনন্দবাজার পত্রিকার শারদীয় সংখ্যা, ১৯৬৩ সাল)

আন্তনিওনি বলেছেন, “I go away by myself for half an hour or so before we begin shooting.”

আবার ব্রেসর কথা— “I arrive in the morning knowing what I intend to do during the day, but not how I intend do it.”

আবার গদার বলেছেন- “I have an idea at the back of my mind, and I develop it with my actors; although we work from a written text, the dialogue may only be put down on paper a few minutes before we start filming.”

চিত্রনাট্যের এই ক্রমবিবর্তন পর্যবেক্ষণ করে অনেকে অনুমান করেন, সুদূর ভবিষ্যতে সিনেমার প্রয়োজনে লিখিত কোনো চিত্রনাট্য ধরনের বস্তু আদৌ থাকবে কি না সন্দেহ।  

জন্মলগ্ন থেকে চলচ্ছিত্রের ‘চিত্রনাট্য’ ব্যাপারটির মধ্যে এক অভিনব ক্রমবিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। বর্তমানে অনেক এমন চিত্রনাট্যকার ও পরিচালক রয়েছেন যাঁরা চিত্রনাট্যের এই বিবর্তনটিকে ভেঙে দিচ্ছেন। অনেকে চিত্রনাট্যকে ‘চলচ্চিত্রনাট্য’ নামে অবিহিত করছেন তবে আমার মনে হয় ‘চিত্রনাট্য’ নামটাই অধিক সঙ্গত।

শুরুর দিকে সিনেমার চিত্রনাট্য ছিল অনেকটা সাহিত্যনির্ভর। সাহিত্যের গল্পকে কেন্দ্র করে চিত্রনাট্য লেখা হত। ক্রমবিবর্তনে যখন সিনেমা স্বতন্ত্র একটা ইন্ডাস্ট্রি রূপে স্বীকৃত হল তার পর থেকে গল্পের নাট্যরূপকে ‘চিত্রনাট্য’ হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হতে লাগল। চলচ্চিত্রের বিবর্তনের ফলে চিত্রনাট্যের মধ্যেও এক অভিনব পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেল। ফলে এখন আমরা এমন একটা যুগে পদার্পন করেছি যেখানে চিত্রনাট্যকে অনেকে স্বতন্ত্র সাহিত্য রূপে স্বীকৃত দিচ্ছেন। স্বীকৃত না দিয়েও উপায় নেই কারণ সাম্প্রতিককালে বহু চিত্রনাট্য আদালাদাভাবে গ্রন্থ আকারে প্রকাশ করা হয়েছে যেগুলোর শিল্পমূল্য অস্বীকার করা যায়না। যেমন সত্যজিৎ রায়, ঋতুপর্ণ ঘোষ, ঋত্বিক ঘটক, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, মৃণাল সেন প্রভৃতি পরিচালকদের লেখা চিত্রনাট্য ব্যাপক পরিমাণে বিক্রি হয়। যদিও এইসব চিত্রনাট্য তখনই প্রকাশিত হয়েছে যখন এগুলি পেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে। মুক্তির আগে কোন চিত্রনাট্য গ্রন্থ আকারে প্রকাশিত হয়নি। তবে ভবিষ্যতে চিত্রনাট্য শুটিং হবার আগে প্রকাশিত হবে কি না সেটা সময়ই বলবে।

সিনেমার প্রাথমিক এবং শক্তিশালী উপকরণ হল ক্যামেরা সেজন্য ক্যামেরার গতিবিধি বা মুভমেন্ট চিত্রনাট্যে উল্লেখ করে দেওয়া হয়। সিনেমার পরিভাষায় একে ‘ট্রিটমেন্ট’ বলা হয়। চরিত্রের গতিবিধিকেও ‘ট্রিটমেন্ট’ বলে অবিহিত করা হয়।

উপন্যাসের মত চিত্রনাট্যে কোন ঘটনাক্রমকে অনন্তকাল ধরে বর্ণনা করা হয়না। খন্ড খন্ড দৃশ্যে বিভাজন করে সেগুলি লিপিবদ্ধ করা হয়। সেগুলিকে শুট করার পর সম্পাদনার মাধ্যমে একটা অখন্ড চলচ্চিত্রের রূপ দেওয়া হয়। এইসব খন্ড খন্ড দৃশ্য সম্পাদনার মাধ্যমে এমন ভাবে জুড়ে দেওয়া হয় তাতে দর্শক গল্পের ধারাবাহিকতা বুঝতে পারেন। যাঁরা চিত্রনাট্য পড়তে অভ্যস্ত তাঁরা সহজেই একটা সিনেমাটা না দেখেও গল্পের দৃশ্যক্রম কল্পনা করতে সক্ষম হন। তাঁরা কল্পনা করে মনের মধ্যে যে দৃশ্যগঠন করেন তা হয়তো মূল উক্ত সিনেমার দৃশ্যগঠনের সাথে নাও মিলতে পারে। তবে মূল চিত্রনাট্যের কাছাকাছি একটা দৃশ্যগঠনে সক্ষম হবেন।

একটি সফল চিত্রনাট্যের মধ্যে লেখকের কল্পনা এবং বাস্তবতা দুটোই থাকতে হবে। কাল্পনিক কোন কাহিনীকে অবলম্বন করে চিত্রনাট্য নিখলেও অবান্তর কোন কিছু লেখা যাবে না। চিত্রনাট্যকারকে অবশ্যই খেলায় রাখতে হবে যে স্থানকালের অবস্থা কিরকম, পারিপার্শ্বিক পরিবেশ, চরিত্রের গতিবিধি, কাহিনীর মূল প্রতিপাদ্য বিষয়, সর্বশেষ চলচ্চিত্রের নিয়ম বা ধর্ম অনুযায়ী বিবিধ উপকরণের সুক্ষ্ম নির্বাচন। এছাড়াও বাস্তবতা যাতে রক্ষা পায় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। না নাহলে চিত্রনাট্য দুর্বল হয়ে পড়বে। দুর্বল চিত্রনাট্য চলচ্চিত্রকেও দুর্বল করে দেয়। এখানে অতিরঞ্জিত বর্ণনার কোন স্থান নেই। মনে রাখতে হবে ক্যামেরায় হল চিত্রনাট্যের ভাষা। তাই ক্যামেরায় কতটুকু ধরা পড়বে সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে, ক্যামেরায় ধরা পড়বে না এমন কিছু বর্ণনা করার সুযোগ চিত্রনাট্যে নেই।

সাহিত্য রচনার ক্ষেত্রে যেমন বাক্য গঠনে পূর্ণচ্ছেদ, স্বল্পমতি, বিরামচিহ্ন ইত্যাদি ব্যাকরণের প্রয়োগ করা হয়ে থাকে অনুরুপ চিত্রনাট্যেও কাট, জাম্প কাট, ইন্টার কাট, মিক্স বা ভিজলভ, ফেড আউট, ফেডইন ইত্যাদি এই জাতীয় ব্যাপার আছে যেগুলি যান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হয়। ফলে চিত্রনাট্য সম্পূর্ণ চলচ্চিত্রের গঠনকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দেয়।

সিনেমা সম্পর্কে আরও জানতে পড়ুন

১) সাড়া জাগানো তুর্কী ওয়েব সিরিজ “দিরিলিস আরতুগ্রুল” কেন একাধিক রাষ্ট্রে বাজেয়াপ্ত করা হল?

২) ক্যাপ্টেন জ্যাক স্প্যারো এক রহস্যময় সামুদ্রিক জলদস্যুর ব্যক্তিগত জীবনের কাহিনী

Post Views: 1,868
Tags: Screenplayচিত্রনাট্যসিনেমাস্ক্রিনপ্লেস্ক্রীপ্ট
ADVERTISEMENT

Related Posts

ক্যামেরার দিব্যদৃষ্টি : ইওরােপীয় চলচ্চিত্রের শিল্পনিরিখ
সিনেমা

ক্যামেরার দিব্যদৃষ্টি : ইওরােপীয় চলচ্চিত্রের শিল্পনিরিখ

লিখেছেনঃ সােমেন ঘােষ চলচ্চিত্রের নন্দনতাত্ত্বিক আন্দ্রে বাজা তার সাড়া জাগানাে গ্রন্থে বলেছিলেন “All the arts depend on the presence...

by অতিথি লেখক
April 5, 2022
কাজী নজরুল ইসলাম যেসব চলচ্চিত্রে পরিচালক, অভিনেতা, চিত্রনাট্যকার হিসেবে সরাসরি যুক্ত ছিলেন
সিনেমা

কাজী নজরুল ইসলাম যেসব চলচ্চিত্রে পরিচালক, অভিনেতা, চিত্রনাট্যকার হিসেবে সরাসরি যুক্ত ছিলেন

লিখেছেনঃ মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম আমরা কাজী নজরুল ইসলামকে একজন ‘বিদ্রোহী কবি’ ও যুগশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক হিসেবেই বেশী চিনি। অথচ আমরা...

by মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম
April 8, 2022
হলিউডের সিনেমায় ক্যামেরাশৈলী—একটি নান্দনিক বিচার
সিনেমা

হলিউডের সিনেমায় ক্যামেরাশৈলী—একটি নান্দনিক বিচার

লিখেছেনঃ বীরেন দাশশর্মা হেনরি ফক্স ট্যালবট, ফোটোগ্রাফির অন্যতম স্রষ্টা, আঠারােশাে ঊনচল্লিশ সালে তাঁর নােটবুকে বাস্তবের প্রতিচ্ছবি গ্রহণের এই অসাধারণ...

by অতিথি লেখক
January 31, 2022
ভারতীয় সিনেমায় সিনেমাটোগ্রাফি–একটি সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন
সিনেমা

ভারতীয় সিনেমায় সিনেমাটোগ্রাফি–একটি সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন

লিখেছেনঃ গোবিন্দ নিহালনী উনিশ শতকের শেষ ভাগে পাশ্চাত্যে সিনেমার উদ্ভব হয়েছিল আমাদের দর্শনশক্তির বিশেষ একটা ক্ষমতা, পারসিটেন্স অব ভিশন...

by অতিথি লেখক
May 25, 2021

POPULAR POSTS

  • সুলতান মাহমুদ

    সুলতান মাহমুদের ভারত অভিযান ও সোমনাথ মন্দির প্রসঙ্গ (১ম পর্ব)

    181 shares
    Share 181 Tweet 0
  • বাউরী সম্প্রদায়ের উৎপত্তির ইতিহাস ও ঐতিহাসিক পর্যালোচনা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • দ্বি-জাতি তত্ত্বের প্রথম প্রবক্তা বঙ্কিমচন্দ্র ও হিন্দু জাতীয়তাবাদের ক্রমবিকাশ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • হিন্দু পদবীর উৎপত্তির ইতিহাস, বিবর্তন ও ক্রমবিকাশঃ বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • ঔরঙ্গজেব ও তাঁর ধর্মীয় নীতি এবং ধর্মীয় সহনশীলতা: ইতিহাসের পুনর্বিচার

    1 shares
    Share 0 Tweet 0

Facebook Page

নবজাগরণ

ADVERTISEMENT
নবজাগরণ

'Nobojagaran' is a website of its kind where you can gather knowledge on all the unknown facts of the world. We human beings always have a thirst for knowledge. Nobojagaran takes its first steps to quench this thirst of ours. We are now in the era of digital world, where we get almost anything online. So how about a bit of knowlyfrom online?

Connect With Us

No Result
View All Result

Categories

  • English (8)
  • অন্যান্য (11)
  • ই-গ্রন্থাগার (1)
  • ইসলাম (25)
  • ইসলামিক ইতিহাস (20)
  • কবিতা (36)
  • খ্রিস্টান (6)
  • ছোটগল্প (6)
  • নাস্তিকতা (17)
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (19)
  • বিশ্ব ইতিহাস (23)
  • ভারতবর্ষের ইতিহাস (181)
  • রাজনীতি (33)
  • সাহিত্য আলোচনা (46)
  • সিনেমা (14)
  • হিন্দু (16)

Pages

  • Checkout
  • Contact
  • Donation to Nobojagaran
  • Homepage
  • Order Confirmation
  • Order Failed
  • Privacy Policy
  • Services
  • লেখা পাঠানোর নিয়ম
  • হোম
No Result
View All Result
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-গ্রন্থাগার
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi

©Nobojagaran 2020 | Designed & Developed with ❤️ by Adozeal

Login to your account below

Forgotten Password?

Fill the forms bellow to register

All fields are required. Log In

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In
wpDiscuz
1
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x
| Reply
Open chat
1
Powered by Joinchat
Hi, how can I help you?