• মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-গ্রন্থাগার
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
Wednesday, March 29, 2023
নবজাগরণ
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-গ্রন্থাগার
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
  • en English
    ar Arabicen Englishfr Frenchel Greekhi Hindiur Urdu
No Result
View All Result
নবজাগরণ
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-গ্রন্থাগার
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
  • en English
    ar Arabicen Englishfr Frenchel Greekhi Hindiur Urdu
No Result
View All Result
নবজাগরণ
No Result
View All Result

বাঙালি মুসলিম সমাজে আধুনিকীকরণ—রামমােহন বা বিদ্যাসাগরের প্রসঙ্গ

আমিনুল ইসলাম by আমিনুল ইসলাম
January 29, 2022
in ইসলাম
0
বাঙালি মুসলিম সমাজে আধুনিকীকরণ—রামমােহন বা বিদ্যাসাগরের প্রসঙ্গ

Image Source: Google Image

Share on FacebookShare on Twitter

অনেকেই বলেন, মুসলিম নেতাগণ প্রগতিশীল চিন্তা-চেতনার ছাপ রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন এবং তারা সমাজে আধুনিক শিক্ষা বিস্তারের কথা ভাবেননি। এও বলা হয় যে, পাশ্চাত্য জ্ঞান-বিজ্ঞান বাংলার বাঙালি  হিন্দু সমাজে যে ভাববিপ্লব এনেছিল মুসলিম নেতাগণের মধ্যে তার প্রতিফলন দেখা যায়নি। এমন বক্তব্য সর্বাংশে সঠিক নয়। এটা ঠিক যে, একটা সমাজে সমস্তু সম্প্রদায়ের মানুষ সমানভাবে এগিয়ে আসতে পারে না। নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এই সমস্যার হতে হয় প্রকৃতি আবার সব ক্ষেত্রে অভিন্ন না। তবে বহু প্রতিকুলতা সত্তেও মুসলিম নেতাগণও বাংলায় আধুনিকতার প্রশ্নে খুব একটা পিছিয়ে ছিলেন না।

উনিশ শতকে বাংলার মুসলিম সমাজের জাগরণের আলােচনায় নবাব আবদুল লতিফ (১৮২৮-৯৩) ও সৈয়দ আমির আলির (১৮৪৯-১৯২৮) কথা নানাভাবে উচ্চারিত হয়। এদের পূর্বে অবশ্য আরও কিছু মুসলিম চিন্তাবিদ মুসলিম মানসে আধুনিকতার আলাে সঞ্চার করেন। এক্ষেত্রে অগ্রগণ্য হলেন আবদুল লতিকের বাবা কাজী ফকির মােহাম্মদ (১৭৪ ৪-১৮৪৪)। রাজা রামমােহন রায় (১৭৭২-১৮-৩৩), ডিরােজিও (১৮০৯-১৮৩১) প্রমুখের ২০/৩০ বছর পূর্বে তিনি ইতিহাস ও যুক্তিবাদ চর্চা করেছেন। ফকির মােহাম্মদ ইতিহাসে ও আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানে পাণ্ডিত্যের অধিকারী ছিলেন। তাঁর জীবিতকালে কলকাতায় রামমােহন রায় সমাজ-সংস্কার আন্দোলন করেছেন। ব্রাডলি বার্ট ফকির মােহাম্মদের জ্ঞানের তারিফ করতেন (Twelve men of Bengal, P. 112). ‘ইণ্ডিয়ান মিরর’ তাঁকে বিখ্যাত প্রাচ্যবিদ বলে মন্তব্য করে (৪ জানুয়ারি ১৮৮৫)।

বাঙালি মুসলিম সমাজে আধুনিকীকরণ—রামমােহন বা বিদ্যাসাগরের প্রসঙ্গ
চিত্রঃ রাজা রাম মোহন রায়, Image Source: commons.wikimedia.org

এমনই ব্যতিক্রমী যুক্তিবাদী চিন্তাবিদ ছিলেন আবদুর রহিম (১৭৮৫-১৮৫৩)। বস্তুত ডিরােজিওর (১৮০৯৩১) মতােই তিনি সংশয়বাদী ছিলেন এবং ডিরােজিওর মতােই জ্ঞানচর্চার একটি পরিবেশ গড়ে তুলেছিলেন। আবদুর রহিম রামমােহন প্রমুখের সমকালে রেনেসাঁসের মানবতাবাদ ও বৈজ্ঞানিক যুক্তিবাদ মুসলিম সমাজে প্রচারে অগ্রগণ্য ছিলেন। কোম্পানির সরকারের সময়ে কলকাতা মাদ্রাসার সিলেবাসে পাশ্চাত্য বিজ্ঞান অন্তর্ভুক্ত করার পক্ষপাতী ছিলেন তিনি। জ্যোতির্বিদ্যা, গণিত, পদার্থবিদ্যা, চিকিৎসাবিদ্যা ও দর্শনের মত বিভিন্ন বিষয়ে তার বৌদ্ধিক আগ্রহ ও জ্ঞান ছিল। অ্যারিস্টটলের যুক্তিবাদ দ্বারা তিনি বিশেষভাবে প্রভাবিত ছিলেন।

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের (১৮২০-১৮৯৯) যুগে আরাে যারা সমাজ সংস্কারের সাথে যুক্ত হন তাদের মধ্যে মেদিনীপুর শহরের ওবায়দুল্লাহ সােহরাওয়ার্দি (১৮৩২-১৮৮৫) ছিলেন অন্যতম। ওবায়দুল্লাহ আবদুর রহিমেরই ছাত্র ছিলেন। তিনি হুগলি কলেজের ইংরেজি-আরবি বিভাগের প্রফেসর ছিলেন। ওবায়দুল্লাহই প্রথম ব্যক্তি, যিনি বঙ্গের মুসলমানদের বাংলা শিক্ষাদানের ব্যবস্থা গ্রহণের আওয়াজ তােলেন (১৮৭৩)। তিনি ‘বেঙ্গল ম্যাগাজিন’-এ (ফেব্রুয়ারি ১৮৭৩) ‘মহামেডান এডুকেশন ইন বেঙ্গল’ শীর্ষক একটি অগ্নিগর্ভ প্রবন্ধ লেখেন। তিনি স্ত্রী-শিক্ষারও পথিকৃৎ ছিলেন। তিনি ভাবতেন, সমাজে যদি পুরুষ ও স্ত্রী উভয় যথারীতি শিক্ষা-দীক্ষায় উন্নত না হয়, তবে সে সমাজের অগ্রগতি হয় না। ওবায়দুল্লাহ ১৮৭৪ সালে হুগলি কলেজ থেকে ঢাকা মাদ্রাসায় সুপারিন্টেনডেন্ট পদে যােগদান করেন। তার উদ্যোগে ঢাকায় ধীরে ধীরে একটি জনহিতৈষী দল গড়ে ওঠে। তিনি ঢাকা শহরের যুবকদের জাতীয় প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করেন। তার সহযােগিতায় ১৮৮৩-র ২৪ ফেব্রুয়ারি ‘মুসলমান সুহৃদ সম্মিলনী’ গঠিত হয়। এই সম্মিলনীর উদ্দেশ্য ছিল মুসলিম সমাজে সাধারণ শিক্ষা বিস্তার করা। সৈয়দ আমির আলি ওবায়দুল্লাহর ছাত্র ছিলেন।

বাঙালি মুসলিম সমাজে আধুনিকীকরণ—রামমােহন বা বিদ্যাসাগরের প্রসঙ্গ
চিত্রঃ বিদ্যাসাগর, Image Source: historyunderyourfeet

হুগলির সৈয়দ কেরামত আলি (১৭৯৪-১৮৭৬) ইউরােপীয় পর্যটক আর্থার কনলির বন্ধু ও সহযাত্রী হিসেবে মধ্য এশিয়ার বহু দেশভ্রমণ করেন। কেরামত আলি ইতিহাস, গণিত, পদার্থবিদ্যা ও আরবিবিদ্যায় দক্ষতা অর্জন করেন। তার বিখ্যাত গ্রন্থ ‘মাখায-এ-উলুম’-এর (‘জ্ঞানের উৎস’) ইংরেজি অনুবাদ করেন ওবায়দুল্লাহ সােহরাওয়ার্দি এবং সৈয়দ আমির আলি। অনুদিত এই গ্রন্থের নাম ‘এ ট্রিটিজ অন দ্য ওরিজিন অব সায়েন্সেস’ (১৮৬৭)। তিনি আরবীয় জ্ঞান-বিজ্ঞান ও ইউরােপীয় জ্ঞান-বিজ্ঞানের মধ্যে সেতুবন্ধন রচনার চেষ্টা করেন। সৈয়দ আমির আলি চট্টগ্রামের কবিরুদ্দিন আহমদকে একজন ‘পরিশীলিত বিদ্বান’ বলে আখ্যাত করেছেন। তিনি জ্ঞানানুরাগী ছিলেন, কর্নেল নাসাউ লিজের সাথে সহযােগিতা করে আইন ও ইতিহাস বিষয়ক বহু গ্রন্থের সম্পাদনার কাজ সম্পন্ন করেন। প্রথাগত ধারায় ইতিহাস গ্রন্থ রচনা করেন মালদহের ইংলিশ বাজারের সৈয়দ এলাহি বকস্ (১৮২৪-৯২) গ্রন্থের নাম ‘খুরশিদ-ই-জাহাননামা’ (১৮৫৩-৬৩)। এটি মালদহ জেলার আঞ্চলিক ইতিহাস।

কুমিল্লায় নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরাণীরই (১৮৩৪-১৯০৪) অর্থে ও চেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হয় ফয়জুন্নেসা উচ্চ ইংরেজি বালিকা বিদ্যালয়। সৈয়দ আহমদের পেছনে ছিল ইংরেজ শাসকের প্রত্যক্ষ আনুকুল্য, কিন্তু কুমিল্লায় ফয়জুন্নেসার একক চেষ্টাই ছিল উল্লিখিত বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার মূলে। মানিকগঞ্জের আদালত খান (১৮৪৪-৯৪) বহু ফারসি পুস্তক ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করেন, যেগুলি সোর্ট উইলিয়াম কলেজ, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও আলিয়া মাদ্রাসার পাঠ্যভুক্ত ছিল। তিনি দু’খানি অভিধান রচনা করেন, এ এখনি ছিল তিন ভাষায় এবং অপরখানি ছিল পাঁচ ভাষায়। শিক্ষাবিদ হিসেবে তার খ্যাতি ভারত ছাড়িয়া ইউরােপেও প্রসার লাভ করে। বাংলার ছােটোলাট আদালত খানকে ‘ওরিয়েন্টাল স্কলার’ বলে অভিহিত করেন। জগালির প্রগতিশীল চিন্তাবিদ, শিক্ষানুরাগী দিলওয়ার হােসেন (১৮৪০ – ১১৯১৩) মুসলিম সমাজে মুক্তবুদ্ধির সঞ্চারণ ঘটাতে সচেষ্ট হয়েছিলেন উনিশ শতকেই। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মুসলমান গ্রাজুয়েট (১৮৬১)। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ও যদুনাথ বসু ছিলেন প্রথম প্রাজুয়েট (১৮৬১)। দিলওয়ার হােসেন ইংরেজি ও বাংলা শিক্ষার উপর গুরুত্ব দিতেন। তিনি ইউরােপীয় যুক্তিবাদকে সামনে রেখে সমাজ সংস্কারে অগ্রণী হয়েছিলেন। দিলওয়ার ইংরেজি মাধ্যমে সম্পূর্ণ আধুনিক ও কারিগরী বিদ্যাশিক্ষা প্রণয়নের জন্য ব্রিটিশ সরকারকে সুপারিশ করেছিলেন। দিলওয়ারকে আধুনিকতার অন্যতম শ্রেষ্ঠ ধারক বলে অধ্যাপক সালাউদ্দিন আহমেদ মনে করেন। খুলনার আবদুল ওয়ালি (১৮৫৫-১৯২৬) কলকাতার এশিয়াটিক সােসাইটির সদস্য রূপে যুক্ত থেকে দেশের বুদ্ধিজীবী মহলে বেশ পরিচিতি লাভ করেন। তার গবেষণার বিষয় ছিল ভারতের ইতিহাস, পুরাকীর্তি ও জাতিতত্ত্ব।

নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরাণী
চিত্রঃ নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরাণী, Image Source: kalerkantho

নবাব খাজা আবদুল গণির নেতৃত্বে ১৮৭২ সালে ঢাকার প্রভাবশালী মুসলিম সমাজ সরকারের কাছে ঢাকায় একটি স্বতন্ত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনের আবেদন জানিয়েছিলেন। এরই ফলশ্রুতিতে ‘ঢাকা মাদ্রাসা’ স্থাপিত হয়। ফরিদপুরের জমিদার মীর মােহাম্মদ আলি ইংরেজি-বাংলা বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, চিকিৎসালয়, অতিথিশালা নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য বহু অর্থদানের ব্যবস্থা করেন। বীরভূমের জমিদার সৈয়দ এরফান আলি ১৮৯৮ সালে লাহােরে যে ‘মুসলিম এডুকেশন কনফারেন্স’ অনুষ্ঠিত হয় তাতে তিনি বাংলার একমাত্র প্রতিনিধি ছিলেন। বিদ্যোৎসাহী ও শিক্ষা আন্দোলনের অন্যতম দিশারী ছিলেন নবাব আবদুস সােবহান চৌধুরী। ১৮৮৭ সালে বগুড়ায় তিনি ‘ভিক্টোরিয়া মাদ্রাসা’ স্থাপন করেন। বগুড়ার তাহিরুন্নেসা ‘মহিলা হাসপাতাল’-এ তার আর্থিক সাহায্য নিয়মিত ছিল। বিজ্ঞান শিক্ষার জন্য তার পৃষ্ঠপােষকতাও ছিল বিশেষভাবে লক্ষণীয়। শিক্ষা উন্নয়নের ক্ষেত্রে সৈয়দ নবাব আলি চৌধুরী (১৮৬৩-১৯২৯), নবাব হােসসাম হায়দার (১৮৬৮-১৯২১), কলকাতার সৈয়দ ওয়াহেদ হােসেন প্রমুখের অবদানও স্মরণীয়। নবাব আহসানউল্লাহ (১৮৪৬-১৯০১) সমাজকর্ম ও দানশীলতার জন্য খ্যাতি লাভ করেন। ঢাকায় ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল স্থাপনের জন্য তিনি দুই লক্ষ টাকা এবং ঢাকায় বৈদ্যুতিক আলাের ব্যবস্থা শুরু করার জন্য চার লক্ষ টাকা দান করেন। সিরাজুল ইসলাম (১৮৪৮-১৯২৩) ঢাকা কলেজের (১৮৭৩) প্রথম মুসলমান গ্রাজুয়েট ছিলেন। তিনি সরকারি ও বেসরকারি বহু সভা-সমিতির সঙ্গে যুক্ত থেকে শিক্ষা বিস্তার ও সমাজ উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ‘দ্য মুসলমান’ পত্রিকা প্রকাশে তার অর্থলান নিয়মিত ছিল।

উনিশ শতকে আরও কয়েকজনের নাম করা যায়, যারা বুদ্ধিজীবী হিসেবে সমাজে পরিচিতি লাভ করেন। তাঁরা হলেন এনায়েত রসুল, আবদুর রহমান ওজুদি, মীর্জা আবদুর রাজ্জাক (১৮৬৪), নুরুল হক, নবাব সিরাজুল ইসলাম (১৮৪৮-১৯২৩), সৈয়দ আমির হােসেন (১৮৪৩-), আবদুল জব্বার (১৮৩৭-১৯২৮), মােহাম্মদ ওজীহ (-১৮৬৮), আবদুর রউফ ওয়াহিদ, প্রিন্স মােহাম্মদ রহিমুদ্দিন, রিয়াজউদ্দিন আহমদ মাশহাদি, খােন্দকার ফজলে রাব্বি (১৮৪৯-১৯১৭) প্রমুখ। তারা সকলেই ইংরেজি ভাষাভিজ্ঞ ছিলেন। তাদের ঐকান্তিক চেষ্টা ও নিরলস কর্মের ফলে আধুনিক শিক্ষা ও ধ্যান-ধারণার ক্ষেত্রে মুসলিম সমাজের উত্তরণ ঘটে। পরবর্তীতে বিশেষ করে সাতচল্লিশ পর্যন্তও এই ধারা বজায় ছিল বলা চলে।

দুঃখের বিষয়, ১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর এদেশের বাংলা ভাষাভাষী মুসলমান সম্প্রদায়ের পরিস্থিতি বদলে যায়। বাঙালি মুসলিমদের এলিট শ্রেণীর প্রায় পুরােটাই তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানে পাড়ি জমায়। ফলে বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে মুসলিমদের ভাবনা চিন্তার জগতে দেখা যায় দৈন্যদশা। বাঙালি মুসলমানের মানসিক ইচ্ছা, সম্প্রদায়গত বিকাশ, দুঃখ-দারিদ্র, সামাজিক ও রাজনৈতিক সমস্যা, অর্থনৈতিক সংকট, সম্প্রদায়গত অবজ্ঞা, অবহেলা ও লাঞ্ছনার খতিয়ান, স্বকীয় প্রতিভার প্রতিফলন প্রভৃতি এ দেশের প্রচলিত পত্র-পত্রিকা, এমনকি সরকারী মাধ্যমসমূহ অর্থাৎ দূরদর্শন ও রেডিওতেও তেমন গুরুত্ব পায় না। অমুসলমান এমনকি অবাঙালি মুসলমানদের মধ্যেও বাঙালি মুসলমান সম্প্রদায়ের কৃষ্টি-সংস্কৃতি সম্পর্কে অনেক ভুল ধারণা চালু রয়েছে। এই স্থিতিকরণ ও ভুল বােঝাবুঝির জন্য অথবা পারস্পরিক অনীহা অবহেলার দরুণই ধর্ম সাম্প্রদায়িকতাবাদীরা ফায়দা লােটার সুযােগ করে নেয়। কেউ কখনও ভেবেই দেখতে চায় না, দেশভাগের পর বাংলাদেশের অর্থাৎ ওপার বাংলার বাঙালি মুসলমানরা যদি প্রথম শ্রেণীর। অতাে অতাে দৈনিক কাগজ এবং সাহিত্য-সংস্কৃতিমূলক পত্র-পত্রিকা চালানাের যােগ্যতা অর্জন করতে পারে আর তাদের। রেডিও-টিভি পরিচালনার ক্ষেত্রে যদি তারা যােগ্য ভূমিকা পালনে সক্ষম হয়, তাহলে এ বাংলার বাঙালি মুসলমানদের মধ্যে ১৯৪৭ সালের পর থেকে এই ৭৪ বছরে অন্তত ৭৪ জন যােগ্য লেখক, সাংবাদিক বা শিল্পীও কি খুঁজে পাওয়া গেল না যারা পশ্চিমবঙ্গে প্র মাধ্যমগুলােতে জায়গা পেতে পারে? পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি মুসলমানের সাংস্কৃতিক বিকাশ ধারার মান নিম্নস্তরের? অথচ এ বাংলার এই বাঙালি মুসলমান পদ্মা পেরলেই প্রতিভাধর হয়ে ওঠে কীভাবে? সমাজতত্ত্ববিদরা কখনও কি এটা ভেবে দেখেছেন?

বাঙালি মুসলিম সমাজে রামমােহন বা বিদ্যাসাগরের মত ব্যক্তিত্ব জন্মাননি বলে এই সমাজের আধুনিকীকরণ সম্ভব হয়নি বা সাংস্কৃতির ক্ষেত্রে তারা কোনও অবদান রাখতে পারছে না, ফলে মুসলিম সমাজ পিছিয়ে পড়েছে। এই রকম একটা হল প্রচলিত ধারণার সঙ্গে সহমত পােষণ করতে পারছি না। রামমোহন রায়ের সবচেয়ে বড় অবদান হল সতীদাহ প্রথা নিবারণ। একই ভাবে বিদ্যাসাগরের অবদান বিধবাদের পুনর্বিবাহের প্রবর্তন। এই দুটোর কোনওটাই মুসলিম সমাজের সমস্যা ছিল না। তাহলে তারা মুসলিম সমাজে জন্মে কী করতেন? ইসলাম ধর্ম কোরান হাদিস নির্ভর হওয়ায় ধর্মের নাম করে বেশী বাড়াবাড়ি করার সুযোগ ছিল না। হিন্দু ধর্ম মতে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক জন্ম-জন্মান্তরের, খ্রীষ্টান ধর্ম মতে ‘ম্যারেজ ইজ মেড ইন হ্যাভেন’। শুনতে ভাল লাগলেও বাস্তব সম্মত নয়, তাই সমস্যা ছিল। ফলে আইনের পরিবর্তন করতে হয়েছে। ইসলাম ধর্মে ম্যারেজ ইজ সােস্যাল কন্ট্রাক্ট। শুনতে খারাপ কিন্তু বাস্তবসম্মত। তাই সমস্যাও কম ছিল।

মুসলিম সমাজে সতীদাহ প্রথা কোনদিনই ছিল না, বিধবাদের পুনর্বিবাহ চিরকালই আছে, তালাক বা বিবাহ বিচ্ছেদ বা ডিভাের্স তাও আছে। ইসলাম ধর্মে বিধবাদের কোনও পােশাক বর্জন করার বিধান নেই, মাছ-মাংস ত্যাগ বা খাদ্যের বিধিনিষেধ নেই। মুসলিম মেয়েদের বাবা, মা, স্বামী এমন কি সন্তানের বিষয় সম্পত্তিতেও অধিকার বরাবর স্বীকৃত। তাই তাদের কোনও তীর্থস্থানে নির্বাসিত হতে হয়নি। এমনকি আজও যেসব বৃদ্ধাশ্রম গড়ে উঠেছে সেখানে একটিও মুসলিম বৃদ্ধাকে যেতে দেখা যায় না। তাছাড়া মুসলিম মেয়েদের কাশীবাসী হতেও হয় না। আর মুসলিম মহিলাদের ধর্মশাস্ত্র কোরানে পূর্ণ অধিকার আছে। মুসলিম মহিলারা পৌরােহিত্যের অধিকারী। নারী-পুরুষ সকলে কোরান পাঠ করতে পারে, নিষিদ্ধ নয়। নাচ-গানের ব্যাপারে বিধি নিষেধ থাকায় ধর্মের নাম করে কোথাও দেবদাসী প্রথার প্রচলন হয়নি। ধর্মের নাম করে কোথাও সাগরে শিশু সন্তানকে বিসর্জন দিতে হয়নি। ফলে সামাজিক কদাচার দূর করার জন্য মুসলিম সমাজে রামমােহন বা বিদ্যাসাগরের প্রয়ােজন হয়নি। রামমােহন রায় সতীদাহ প্রথা রদ করেছিলেন, সতীদাহ প্রথা ছিল উচ্চবর্ণের হিন্দুদের সমস্যা। রানী ভবানী বিধবা ছিলেন,তার কিশােরী কন্যাও বিধবা ছিলেন। রানী রাসমণিও বিধবা ছিলেন।

বিদ্যাসাগর বিধবা বিবাহ আইন চালু করতে পারাটাকে জীবনের সবচেয়ে বড় কাজ বলে দাবি করেছিলেন। নিম্নবর্গের হিন্দুদের মধ্যে বিধবা বিবাহের প্রচলন ছিল, যদিও বিধবা বিবাহ ব্যাপক হারে আইন পাশ করার আগেও হয়নি পরেও হয়নি। মুসলিম সমাজেও বিধবা বিবাহ হয়। তাহলে মুসলিম মেয়েরা কি খুব ভাল অবস্থায় আছেন? সে কথা বলা যাবে না মােটেই। কেননা ধর্ম বা আইন তাদের যে অধিকারই দিক না কেন পুরুষ। শাসিত সমাজে তারা বরাবরই কোনঠাসা। হিন্দু সমাজের ক্ষেত্রেও একই কথা বলা যায়। মহিলাদের পক্ষে বহু আইন হয়েছে, কোন আইনটা তাদের রক্ষা করতে পারছে কি?

অনেকে আবার বলেন, রামমােহন বা বিদ্যাসাগর মুসলিম সমাজে আধুনিক মননের প্রক্রিয়া চালু করতেন। তাদের জানা উচিত, রামমােহনের জন্মের অন্তত ৫০ বছর আগে থেকেই এ কাজটার সূত্রপাত ঘটিয়েছিলেন শাহ ওয়ালিউল্লাহ। দিল্লিতে তাঁর জন্ম ১৭০৩ সালে। আর রামমােহনের জন্ম ১৭৭২ সালে। শাহ ওয়ালিউল্লাহ সম্পর্কে আনিসুজ্জামান লিখেছেন, “ইউরােপীয় রেনেসাঁসের একটি ফল দেখা যায় Theological Criticism-এর বিকাশে ক্লাসিক্যাল বিদ্যা অবলম্বন করে ধর্ম বিষয়ক স্বাধীন আলােচনার উদ্ভবে। ঊনবিংশ শতাব্দীতে বাংলায় নবজাগরণে রামমােহন ও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ভূমিকা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সমালােচক বলেছেন যে, হিউম্যানিজমের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রাচীন শাস্ত্রকেই তাঁরা সংগ্রামের হাতিয়ারে পরিণত করেন। এও নবযুগেরই অন্যতম বৈশিষ্ট্য। তাহলে একথাও বলা চলে যে সমগ্র ভারতবর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে এই নবযুগের আলােকবর্তিকা প্রথম যার হাতে দেখা দিয়েছিল তিনি শাহ ওয়ালিউল্লাহ।”

একথাও ঠিক যে, নবযুগের এই প্রথম আলােকবর্তিকা বহনকারী চিন্তাধারার প্রভাব মুসলিম সমাজে সুদূর প্রসারী হয়নি। কিন্তু রামমােহন বা বিদ্যাসাগরের চিন্তাধারার ক্ষেত্রেও কি সেই একই পরিণতি ঘটেনি? উভয় ক্ষেত্রেই নবযুগের আলােকবর্তিকার অনুসারী চিন্তাধারা হিন্দু-মুসলিম উভয় সমাজেই ধর্মীয় পুনর্জাগরণবাদের প্রবল জোয়ারে ভেসে গিয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও দেখা গেল এপার বাংলার মুসলিমরা নানা কারণে পিছু হটে গেল।

‘নবজাগরণ’ অ্যান্ড্রোয়েড অ্যাপ্লিকেশনটি প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।

‘নবজাগরণ’ এর টেলিগ্রাম চ্যানেলে জয়েন হতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।

‘নবজাগরণ’ এর ফেসবুক পেজে লাইক করতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।

Post Views: 1,679
Tags: Bengali MuslimIswarchandra VidyasagarMuslimRaja Rammohan Royঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরবাঙালি মুসলিমবিদ্যাসাগরমুসলিমরাজা রামমােহন রায়
ADVERTISEMENT

Related Posts

ফুরফুরা শরীফের প্রতিষ্ঠাতা আবু বকর সিদ্দিকী (রহঃ) এর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
ইসলাম

ফুরফুরা শরীফের প্রতিষ্ঠাতা আবু বকর সিদ্দিকী (রহঃ) এর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

হুগলী জেলায় বালিয়াবাসন্তী গ্রামে ১২৩৬ হিজরী সনে মওলুবী হাজী মােঃ মােকতাদির সাহেবের আবু বকর নামে এক সুযােগ্য সন্তান জন্মগ্রহণ...

by গোলাম আহমাদ মোর্তাজা
December 24, 2021
ইসলাম এবং মহানবি হজরত মোহাম্মদ (সঃ) স্বামী বিবেকানন্দের ভাবনায়
ইসলাম

ইসলাম এবং মহানবি হজরত মোহাম্মদ (সঃ) স্বামী বিবেকানন্দের ভাবনায়

স্বামী বিবেকানন্দ (১৮৬৩-১৯০২) সারাজীবন জাতিকে অন্য ধর্মীয় মতবাদকে শ্রদ্ধাশীল দৃষ্টিতে দেখার শিক্ষাই দিয়ে গেছেন। নিজ ধর্মের প্রতি অবিচল আস্থা,...

by আমিনুল ইসলাম
June 17, 2021
মুসলিম সমাজে বিবাহের বর্ণনা ও প্রাসঙ্গিক কিছু আলােচনা
ইসলাম

মুসলিম সমাজে বিবাহের বর্ণনা ও প্রাসঙ্গিক কিছু আলােচনা

বিবাহ কথাটির অভিধানিক অর্থ—পুরুষ ও নারীর স্বামী-স্ত্রী হিসাবে জীবনযাপন করার সামাজিক বিধি। ঠিক কোন সময় থেকে এই সামাজিক বিধির...

by আমিনুল ইসলাম
June 6, 2021
মাদ্রাসা রহিমিয়া,
ইসলাম

মাদ্রাসা রহিমিয়া, ভারতে ইসলাম চর্চা, দেওবন্দ ও ফুরফুরা

সপ্তদশ শতকে সম্রাট আওরঙ্গজেবের পৃষ্ঠপোষকতায় মাদ্রাসা রহিমিয়া প্রতিষ্ঠিত হয়। মাদ্রাসা রহিমিয়া সম্পর্কে লেখার আগে একটু পিছিয়ে শুরু করি। ভারতে...

by চৌধুরী আতিকুর রহমান
July 31, 2021

POPULAR POSTS

  • সুলতান মাহমুদ

    সুলতান মাহমুদের ভারত অভিযান ও সোমনাথ মন্দির প্রসঙ্গ (১ম পর্ব)

    181 shares
    Share 181 Tweet 0
  • বাউরী সম্প্রদায়ের উৎপত্তির ইতিহাস ও ঐতিহাসিক পর্যালোচনা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • হিন্দু পদবীর উৎপত্তির ইতিহাস, বিবর্তন ও ক্রমবিকাশঃ বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • আর্যদের ভারত আগমন, বিস্তার, সমাজ ও সভ্যতা: এক ঐতিহাসিক পর্যবেক্ষণ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • ‘দ্বীন-ই-ইলাহী’ : মুঘল সম্রাট আকবরের প্রবর্তিত এক নতুন ধর্ম

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

Facebook Page

নবজাগরণ

ADVERTISEMENT
নবজাগরণ

'Nobojagaran' is a website of its kind where you can gather knowledge on all the unknown facts of the world. We human beings always have a thirst for knowledge. Nobojagaran takes its first steps to quench this thirst of ours. We are now in the era of digital world, where we get almost anything online. So how about a bit of knowlyfrom online?

Connect With Us

No Result
View All Result

Categories

  • English (8)
  • অন্যান্য (11)
  • ই-গ্রন্থাগার (1)
  • ইসলাম (25)
  • ইসলামিক ইতিহাস (20)
  • কবিতা (36)
  • খ্রিস্টান (6)
  • ছোটগল্প (6)
  • নাস্তিকতা (18)
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (20)
  • বিশ্ব ইতিহাস (23)
  • ভারতবর্ষের ইতিহাস (184)
  • রাজনীতি (36)
  • সাহিত্য আলোচনা (57)
  • সিনেমা (14)
  • হিন্দু (16)

Pages

  • Checkout
  • Contact
  • Donation to Nobojagaran
  • Homepage
  • Order Confirmation
  • Order Failed
  • Privacy Policy
  • Services
  • লেখা পাঠানোর নিয়ম
  • হোম
No Result
View All Result
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-গ্রন্থাগার
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi

©Nobojagaran 2020 | Designed & Developed with ❤️ by Adozeal

Login to your account below

Forgotten Password?

Fill the forms bellow to register

All fields are required. Log In

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In
wpDiscuz
0
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x
| Reply
Open chat
1
Powered by Joinchat
Hi, how can I help you?