লিখেছেনঃ মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম
বর্তমান রাজনীতিতে সংসদীয় গণতন্ত্র এর রমরমা বেশ তুঙ্গে। গণতন্ত্র ছাড়া যেন রাজনীতিই হয় না। অথচ এই সংসদীয় গণতন্ত্র হল সম্পূর্ণ ভ্রান্ত একটি মতবাদ। আর গণতন্ত্রের যে সংজ্ঞা দেওয়া হয় সেই অর্থে গণতন্ত্র কোনদিনই সম্ভব নয়। কেননা,
১) সংসদীয় গণতন্ত্র তে বলা হয়েছে, গণতন্ত্র হল জনগণের শাসন। অথচ যে কোন রাজনৈতিক দলই নির্বাচনে জয়ী হবার পর জনগণের কথা একেবারেই ভূলে যান। তখন আর জনগণের কিছুই করার থাকে না। পাঁচ বছর সেই শাসকগোষ্ঠীকে নির্বিচারে মুখ বুজে সহ্য করতে হয়। জনগণ পাঁচ বছরের আগে সেই শাসকগোষ্ঠীকে হটাবার সুযোগটুকুও পান না।
২) অপরদিকে দেখা যায়, দেশের অধিকাংশ জনগণ কোন রাজনৈতিক দলকে সমর্থন না করলেও নির্বাচনে জয়ী হয়। যেমন, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে দেশের প্রায় ৭০% শতাংশ জনগণ ভোট দেননি অর্থাৎ তিন ভাগের দুই ভাগ লোক চাননি মোদী প্রধানমন্ত্রী হোক তবুও মোদী সরকার একচেটিয়াভাবে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসেন এবং মোদীজী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। যা হল সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রত্যক্ষ অভিশাপ। অথচ সংসদীয় গণতন্ত্রের বর্তমান সংজ্ঞায় বলা হয়েছে গণতন্ত্র হল, জনগণের শাসন, কিন্তু বাস্তবে এতে জনগণের মতামতকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়।
৩) বর্তমান সংসদীয় গণতন্ত্র তে জোট হল রাজনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এই জোটের মাধ্যমে কোন কোন রাজনৈতিক দল অন্য কোন রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে ক্ষমতায় আনতে পারে বা জোট সরকার চালাতে পারে। অথচ দেখা যায় কোন দলের লোক কোন একটি রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে। অথচ দেখা গেল যে দলটিকে সে সমর্থন করে সেই দল এমন একটি দলের সাথে জোট করেছে যা সেই ব্যাক্তির পছন্দ নয়। তবুও দেখা যায় যে নিজের পছন্দনীয় দলের প্রার্থী না থাকায় জোটের দলের অপছন্দনীয় প্রার্থীকে ভোট দিতে বাধ্য হয় বা অনেক সময় নিজের প্রার্থীকে না পাওয়ায় জোটপ্রার্থীকে ভোট দেওয়া সম্ভব হয় না বলে অন্য কোন তৃতীয় রাজনৈতিক দলকে ভোট দিতে হয়। উদহারণস্বরুপ বলা যায়, এই ২০১৬ সালের পশ্চিম বঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএম ও কংগ্রেস জোট করে তৃণমূল কংগ্রেসকে পরাস্ত করার জন্য। এখানে দেখা যায়, যেখানে সিপিএমের প্রার্থী ছিল সেখানে কংগ্রেস প্রার্থী দাঁড়ায় নি। জোটের খাতিরে। ফলস্বরুপ, অনেকে যারা কংগ্রেসের সমর্থক ছিল তারা অধিকাংশ সিপিএম বিরোধী ছিল। আর অনেক সিপিএম সমর্থক ছিল যারা কংগ্রেস বিরোধী ছিল। কিন্তু যখন সিপিএম ও কংগ্রেসের জোট হয় তখন সেই সমর্থকেরা একে অপরকে ভোট দেওয়া প্রায় অসম্ভব ছিল। তখন জনগণ বাধ্য হয়ে জোটের প্রার্থীকে ভোট না দিয়ে অনেকে তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট দিয়ে দেয়। অথচ এরাই চেয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসকে পরাস্ত করতে কিন্তু জোটের জন্য তৃণমূল কংগ্রেস বাজিমাত করে বিপুল ভোটে জয়ী হয়। যা হল সংসদীয় গণতন্ত্রের এক কালো দিক।
৪) গণতান্ত্রিক শাসনব্যাবস্থায় বহু রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। ফলে ভোট বহু অংশে ভাগ হয়ে যায় এবং বিচ্ছিন্ন জনমতের সৃষ্টি হয়। এক্ষেত্রে ভোট ভাগ হয়ে যাবার ফলে শাসকগোষ্ঠী লাভবান হয়।
৫) সংসদীয় গণতন্ত্র তে যে কোন ব্যাক্তি যে কোন প্রতীক চিহ্ন চয়ন করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে। এক্ষেত্রে অযোগ্য ব্যাক্তিরাও যে কোন ঝান্ডা নিয়ে নির্বাচনে দাঁড়িয়ে যায় এবং অনেকক্ষেত্রে জয়ী হয়। অনেকক্ষেত্রে দেখা যায় প্রার্থী নিজের নাম সহি করতে পারে না কিন্তু জনগণের সমর্থনে সে জয়ী হয়। যা গণতন্ত্রের কালো দিক।
৬) সংসদীয় গণতন্ত্র হল এক ধরণের মুর্খে শাসন। কেননা দেশের অধিকাংশ জনগণ অশিক্ষিত। এই অশিক্ষিতরা দেশের শাসক নির্বাচনের যোগ্যতা রাখে না। তবুও এদেরকে নির্বাচনে সুযোগ দেওয়া হয় এবং ইচ্ছামত শাসক নির্বাচনের অধিকার রাখে। সুতরাং মুর্খরাই মুর্খ শাসককে নির্বাচিত করে যা আদৌ কাম্য নয়। উদাহানস্বরুপ বলা যায়, অনেক সময় সিনেমার অভিনেতা, অভিনেত্রীরা রাজনীতির কিছুই বোঝেন না। তাঁরা নিজেদের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচনে নেমে পড়েন। আর জনগণ নিজেদের পছন্দের অভিনেতা অভিনেত্রীকে ভোট দিয়ে জয়ী করেন। যেমন, তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে বাংলা সিনেমার অভিনেত্রী, শতাব্দী রায়, দেবশ্রী সরকার, অভিনেতা দেব, চিরঞ্জিত, তাপস পাল, সোহম প্রভৃতিদেরকে নির্বাচনে দাঁড় করিয়ে বাজিমাত করার চেষ্টা করে। আর জনগণ কিছুই না বুঝে এদেরকে ভোট দেয়। যা গণতন্ত্রের নামে চরম পরিহাস।
৭) সংসদীয় গণতন্ত্র তে কখনো প্রত্যেক প্রার্থী নিজের ইচ্ছামত শাসক নির্বাচন করতে পারে না। কেননা, ঘরের একজন ব্যাক্তি যদি কোন প্রার্থীকে ভোট দেয় তাহলে তার বাড়ি প্রত্যেক সদস্যই সেই প্রার্থীকেই ভোট দেয়। ফলে বাড়ির অভিভাবক বা একজনের ভোট দেওয়া আর সকলের ভোট দেওয়া একই ব্যাপার। এক্ষেত্রে গণতন্ত্রের কোন মূল্যই থাকে না।
৮) অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় কারো আত্নীয় যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাহলে সকলেই নিজের আত্মীয়কে ভোট দিয়ে সমর্থন করে। এক্ষেত্রে আত্মীয়রা জানে যে সে ব্যাক্তি প্রার্থী হিসেবে একেবারেই অযোগ্য। তবুও আত্মীয়তার খাতিরে ভোট দিয়ে সমর্থন করে। যদি অত্মীয়কে ভোট না দেওয়া হয় তাহলে অনেক ক্ষেত্রে আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করা হয় এবং রক্তক্ষয়ী লড়াইও শুরু হয়ে যায় এক্ষেত্রে গণতন্ত্র আর বাকি থাকে না।
৯) সংসদীয় গণতন্ত্র বিরোধী দলের জনগণকে রাষ্ট্রীয় বহু সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়। ফলে শাসক দলের সমর্থকরা বিপুল পরিমাণে লাভবান হয় এবং বিরোধীরা অতলে তলিয়ে যায়। যেমন, ২০১৬ সালে তৃণমূল কংগ্রেস বিরোধী পক্ষের লোকদেরকে সরকারী তরফ থেকে ঘর দেওয়া থেকে বঞ্চিত করে। এর আগেও বাম জামানায় সিপিএমের নেতারা বিরোধীপক্ষের লোকেদের বহু রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত রেখেছিল। যা গণতন্ত্রের এক অভিশাপ।
১০) বাস্তবে গণতান্ত্রিক দেশে নেতাগিরি আর গুন্ডাগিরি যেন একই মায়ের দুই জারজ সন্তান। এখানে কোন নেতাই গুন্ডাগিরি না করে টিকতে পারে না। ভারতে বিজেপির যেকোন নেতাই দেখুন দিনের পর দিন গুন্ডাগিরি করেই তারা রাজনীতিতে বিস্তার লাভ করেছেন। পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অনুব্রত মন্ডল তো পুলিশকে বোমা মারার হুমকি দিয়েছেন, আর নদীয়া জেলার তৃণমূল কংগ্রেস নেতা (বাংলা সিনেমার অভিনেতা) তাপস পাল তো মানুষের ঘরে আগুন লাগাবার এবং মহিলাদেরকে ধর্ষন করারও হুমকি দিয়েছেন। লাভপুরের মনিরুল ইসলাম তো কোর্টের জজদেরকেও হুমকি দিয়েছেন। গণতন্ত্রে এর থেকে বড় অভিশাপ আর কি হতে পারে?
১১) গণতান্ত্রিক শাসনব্যাবস্থায় জনগণ সেই সরকারকেই ভোট দেয় যে সরকারের কাছ থেকে সুযোগ সুবিধা লাভ করে। এক্ষেত্রে যোগ্য প্রার্থী দেখা হয় না। এতে প্রার্থীরাও সুযোগ পেয়ে যায় এবং জনগণকে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার লোভ দেখিয়ে, ভূয়া সাহানুভুতি দেখিয়ে, প্রতিশ্রুতি দিয়ে জনগণের সাহানুভূতি অর্জন করে। কিন্তু নির্বাচনে বিজয়ী হবার পর তারা কোন প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করে না। যেমন, ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী নির্বাচনের আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, অবৈধ উপায়ে যত কালো টাকা উপর্জন করে বিদেশী ব্যাঙ্কে জমা করা হয়েছে তা ফিরিয়ে আনা হবে এবং দেশের প্রতিটি জনগণকে মাথা পিছু ১৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে। জনগণ মোদীজীর এই প্রতিশ্রুতিতে খুশি হয়ে উক্ত নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী করায়। কিন্তু মোদীজী তাঁর প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেন নি এবং বিদেশ থেকে কালো টাকাও ফিরত আনেন না এবং জনগণের মাথাপিছু ১৫ লক্ষ টাকাও দেননি। উলটো মোদী সরকার করেছে কি দেশের যেসব ব্যাক্তি অবৈধ উপায়ে কালো টাকা উপার্জন করেছে তাদেরকে আদেশ দিয়েছে যে, সেই টাকার ৪৫% ট্যাক্স দিয়ে বৈধ বানিয়ে নিক। এক্ষেত্রে সরকার দেখবে না যে সেই টাকা কিভাবে উপার্জন করা হয়েছে। চুরি করেছে, না ডাকাতি করেছে, না ব্ল্যকমেইল করে কারো টাকা আত্মসাৎ করেছে, না ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে উপার্জন করেছে, না স্মাগলিং করেছে, না কালোবাজারী করে টাকা উপার্জন করেছে।
সুতরাং গণতন্ত্র হল এমন একটি যন্ত্র যার সাহায্যে জনগণকে বোকা বানানো হয় এবং একচেটিয়া ক্ষমতা ভোগ করে জনগণের মাথায় বেল ভেঙ্গে খাওয়া হয়।
১২) গণতান্ত্রিক শাসনব্যাবস্থায় একটি দল অন্য দলের ব্যাপারে সবসময় বিষোদ্গারণ করে থাকে। সবসময় একে অপরের বিরুদ্ধে কাদা ছোঁড়াছুড়ি করে থাকে। বিরোধী দলকে জনগণের সম্মুখে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য মিথ্যা অপবাদ অভিযোগ করে থাকে। অনেক সময় বিরোধী পক্ষের নেতাকে মিথ্যা কেসে ফাঁসিয়ে জেলে পর্যন্ত পাঠানো হয়। আর নিজেদের দোষত্রুটি গুলো গোপন রাখার চেষ্টা করা হয়। যেমন, পশ্চিমবঙ্গের ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেস বিরোধী নেতারা কতকগুলি ভিডিও ফুটেজ দেখিয়ে প্রচুর হাঙ্গামা করে এবং তৃণমূলের ভাবমূর্তীকে জনসম্মুখে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করে। সেই ভিডিওতে দেখানো হয়েছিল তৃণমূলের কয়েকজন নেতা লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ নিচ্ছেন। এই ভিডিও ফুটেজের ঘটনাটি ‘নারদা কান্ড’ নামে পরিচিত। ভিডিওর সত্য মিথ্যার ব্যাপারে কিছু বলছি না। ঐ নেতাদের ঘুষ নেওয়ার ব্যাপারটা সত্যও হতে পারে। তবে বিরোধী পক্ষ ভিডিও নিয়ে প্রচার-অপপ্রচার করল কবে? নির্বাচনের ঠিক কয়েকমাস আগে থেকে। অথচ এই ভিডিও কয়েক বছর আগেকার। তাহলে নির্বাচনের ঠিক কয়েকমাস আগে থেকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে কেন বিরোধী পক্ষ কোমরে গামছা বেঁধে ময়দানে নামলেন কেন? কারণ তৃণমূলকে জনগণের সম্মুখে হেয় প্রতিপন্ন করে মানুষের কাছে সমর্থন লাভ করাই ছিল বিরোধী পক্ষের মূল উদ্দ্যেশ্য।
এই হল বর্তমান সংসদীয় গণতন্ত্রের নমূনা। এখানে বিরোধী পক্ষ যোগ্য হলেও তার বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করা হয়। কুৎসা রটনা না করলে জনগণের সাহানুভুতি অর্জন করা যায় না এবং রাজনীতিতে বাজিমাত করা যায় না।
১৩) গণতান্ত্রিক শাসনব্যাবস্থায় সবসময় ধর্মকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়। এখানে কোন নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের সাহানুভুতি অর্জনের জন্য ছলচাতুরির সাহায্য নিয়ে তোষনমূলক রাজনীতি করা হয়। অনেক নেতা-নেত্রী আছেন যাঁরা ভূলভাল জায়গায় “খোদা হাফেজ-ইনশাআল্লাহ” বলতে বেশ পটু। দেখা গেছে তাঁরা সারাদিন খাওয়া দাওয়া সেরে ঢেকুর তুলতে তুলতে ইফতার পার্টিতে যোগদান করেছেন। হজের যাত্রীদের জন্য হাততুলে মোনাযাত করার পোজ নিয়ে ছবি তোলেন। তা নাহয় তাঁদের ভাড়া করা কিছু লোক তো পোষায় রয়েছে যাঁরা এসব করার জন্য রীতিমত মাইনেও পান। এইভাবে তাঁরা মুসলমানদের মাথায় বেল ভেঙ্গে খান এবং সময়ে অসময়ে এই গণতান্ত্রিক দেশের নেতা বলে থাকেন, “মাদ্রাসা হল সন্ত্রাসবাস তৈরীর আখড়া।” ভোটের সময় এলে বলে, “ওরা ৩৪ বছরে মুসলমানদের জন্য কিছুই করেনি। আমরা করব।” কিন্তু ক্ষমতায় এলে দেখা যায় তারা মুসলমানদের জন্য কিছুই করেন নি। তবুও তাঁরা গলা উঁচু করে বলেন, “৯০ শতাংশ কাজই করে দিয়েছি, তা মানতেই হবে।” মুসলমানরা এসব কিছু বোঝে নাকি?
এ হল গণতান্ত্রিক দেশের তোষনমূলক রাজনীতি। পক্ষান্তরে দেখা যায় বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক দলের হিংসাত্মক রাজনীতি। কখনো রামমন্দির নির্মানের ফেনা তুলে উগ্র হিদুত্ববাদকে জাগ্রত করে ধর্মের নামে শুরু হয় রক্তক্ষয়ী দাঙ্গা। যেমন, ভাগলপুর দাঙ্গা, কানপুর দাঙ্গা, গুজরাট দাঙ্গা, কোয়েম্বাটুর দাঙ্গা প্রভৃতি দাঙ্গাগুলি ধর্মের নামেই হয়। এবং এগুলো করে এক শ্রেণীর সাম্প্রদায়িক দলের নেতা নেত্রীরা। রাজনৈতিক বাজারে বাজিমাত করার জন্যই এসব করা হয়। বিভিন্ন সময় মুসলমানদেরকে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেবার হুমকী দেওয়া হয়। গণতান্ত্রিক দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠদের সাহানুভুতি অর্জন করে গদি দখল করার জন্যই এসব করা হয়। তাতে রাজনৈতিক নেতারা তো লাভবান হন কিন্তু সাধারণ মানুষের সর্বনাশের সীমা থাকে না। এসব একমাত্র গণতান্ত্রিক দেশেই সম্ভব হয়।
১৪) ভারতের মত গণতান্ত্রিক দেশে অনেক সময় হিন্দু নেতারা মুসলমানদেকে তোষণ করে এবং মুসলমান নেতারা হিন্দুদেরকে তোষণ করে ভোট পাবার চেষ্টা করে থাকেন। এতে অনেক সময় নেতারা নিজেদের ধর্মটুকুও পালন করেন না ভোট হারাবার ভয়ে। দেখা যায় পার্টি অফিসে কোন মুসলমান নেতাকে সালাম জানালে ইতস্থতঃ হয়ে যান এবং জবাব না দিয়ে এড়িয়ে চলে যান। পাছে হিন্দুদের কাছে গোঁড়া, মৌলবাদী হিসেবে চিহ্নিত হয়ে না যান। এতে নিজের ধর্মটাকেও পর্যন্ত কবর দেওয়া হয়। এই হল সংসদীয় গণতন্ত্রের পরিণাম।
১৫) গণতান্ত্রিক শাসনব্যাবস্থায় সাহসিকতার সাথে নিজের দলের বিরুদ্ধে কথা বলার সুযোগ থাকে না। এখানে উপর তলার নেতারা যদি ভূল সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে নিচের তলার নেতাদের কিছুই বলার থাকে না। কিছু বলতে গেলে উপর তলার নেতারা সেই প্রতিবাদী নেতা দল থেকে বহিস্কার করে দেন। যেমন, কয়েক বছর আগে প্রাক্তন বামপন্থী নেতা রেজ্জাক মোল্লাকে সিপিএমএর কর্ণধাররা দলের ভূল সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলে তাঁকে দল থেকে বহিস্কার করা হয়।
১৬) গণতান্ত্রিক শাসনব্যাবস্থায় সবসময় ক্ষমতাসীন সরকার জোর করে ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়ে বুথ দখল করে সাজানো ভোট দেয়। অনেক সময় ভোটারদেরকে ভয় দেখিয়ে, হুমকি দিয়ে, সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার ভয় দেখিয়ে ভোট নিয়ে থাকে। যদি কোন লোক তাদের হুমকিতে ভয় না পেয়ে তাদের বিরুদ্ধে ভোট দেন তাহলে পরবর্তীকালে সেই ব্যাক্তির উপর নেমে আসে নির্মম অত্যাচার। অনেক সময় তাদেরকে হত্যাও করা হয়।
১৭) সংসদীয় গণতন্ত্র হল এক ধরণের মুনাফেকী শাসনব্যাবস্থা। এখানে জনগনকে খুশি করে ভোট লাভের জন্য সকলকে তোষন করে চলতে হয়। এখানে নাস্তিক, মুর্তাদ, কাফের, ইসলাম বিদ্বেষী, হিন্দুবিদ্বেষী সকলকে তোষন করে সঙ্গে রাখতে হয়। ভোট পাবার জন্য সকলের অন্যায় আবদার মেনে চলতে হয়। যেমন, বাংলাদেশের হাসিনা সরকার নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) এর বিরুদ্ধে কটুক্তিকারী নাস্তিকদেরকেও সমর্থন করে এবং মসজিদ মাদ্রাসার পক্ষেও কথা বলে। সুতরাং গণতন্ত্র হল এক চুড়ান্ত মুনাফেকী শাসনব্যাবস্থা।
১৮) গণতন্ত্রে বলা হয়েছে, ‘গণতন্ত্র’ হল জনগণের শাসন। অর্থাৎ এখানে জনগণ যা চাইবে তাই হবে। কিন্তু বাস্তবে এর বিপরীতটাই হয়। দেশের অধিকাংশ জনগণ যা চাই তা পাইনা। পার্টির নেতারা যা চায় তাই হয়। অনেকক্ষেত্রে দেখা যায় দেশের অধিকাংশ মানুষ স্বেচ্ছাচারমূলক বল্গাহীন জীবনযাত্রা পছন্দ করে। তারা চায় না তাদের এই বল্গাহীন জীবনযাত্রায় কেউ হস্তক্ষেপ করুক। কিন্তু যখনই জনগণের এই বল্গাহীন জীবনযাত্রায় সরকার পক্ষের বা রাষ্ট্রীয় মর্যাদার পক্ষে হানিকারক হয় তখন সরকার তা কঠোরভাবে দমন করে। এখানে আর ‘গণতন্ত্র’ বজায় থাকে না।
১৯) সংসদীয় গণতন্ত্র তে বলা হয়েছে জনগণই হল সমস্ত ক্ষমতার উৎস। কিন্তু এই জনগণ যখন সরকারের বিরুদ্ধে বা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে তখন সরকার তা কঠিনভাবে দমন করে। এখানেও আর ‘গণতন্ত্র’ বজায় থাকে না। এসব ক্ষেত্রে গণতন্ত্রে বেকার হয়ে পড়ে।
২০) সংসদীয় গণতন্ত্র তে বলা হয়েছে জনগণই হল সমস্ত ক্ষমতার উৎস। কিন্তু যখন দেশে কোন বিল পাশ করানো হয় বা কোন আইন পাশ করা হয় তখন এতে জনগণের কোন প্রত্যক্ষ হাত থাকে না এবং অনুমোদনও নেওয়া হয় না। জণগণের উপর আইন জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হয়। এখানেও আর ‘গণতন্ত্র’ বজায় থাকে না।
২১) গণতান্ত্রিক শাসনব্যাবস্থায় দেখা যায় যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তখন তারা নিজেদের সেইসব চিন্তাধারা (Ideology) জনগণের উপর জোর করে চাপিয়ে দেন যা জনগণ চান না। যেমন, ২০১৪ সালে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর নিজের ব্রাহ্মণ্যবাদী চিন্তাধারা জনগণের উপর চাপানোর চেষ্টা করে। যেগুলি থেকে ভারতের জনগণ সাধারণত দূর থাকতে চান। এখানেও আর ‘গণতন্ত্র’ বজায় থাকে না। এসব ক্ষেত্রে গণতন্ত্র বেকার হয়ে পড়ে।
২২) গণতান্ত্রিক শাসনব্যাবস্থায় দেখা যায় কোন সরকার যখন বিপুল ভোটে জয়ী হয় তখন সেই সরকার অনেকটা স্বৈরাচারী হয়ে উঠে। বিরোধী দলগুলি শোচনীয়ভাবে পরাজিত হওয়ার ফলে অনেকটা কোনঠাসা হয়ে পড়ে। ফলে ক্ষমতাসীন সরকার ইচ্ছামত পদক্ষেপ নিলে প্রতিবাদ করার মতো কেউ থাকে না। এক্ষেত্রে বিরোধী দলগুলি সরকারপক্ষের বিরুদ্ধে হাঙ্গামা করলে কিছুটা লাভবান হলেও অনেক ক্ষেত্রে ব্যার্থ হয়।
২৩) গণতান্ত্রিক শাসনব্যাবস্থায় জনগণকে সমস্ত ক্ষমতার উৎস বলা হলেও সমস্ত ক্ষমতা ভোগ করে পার্টির নেতারা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় সাধারণ মানুষ কোন সমস্যায় পড়লে প্রশাসনের কাছে না গিয়ে পার্টির নেতার হাত ধরে। ঘরোয়া সমস্যা থেকে শুরু করে বড় বড় যে কোন ধরণের সমস্যার সমাধান পার্টির নেতার কাছে বা মন্ত্রীদের কাছে করা হয়। আর প্রশাসনকে পঙ্গু করে দিয়ে পার্টির এইসব নেতা-মন্ত্রীরা একচেটিয়া ক্ষমতা ভোগ করেন।
২৪) গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে যতটা মানবতার লঙ্ঘন হয় ততটা অন্য কোন রাষ্ট্রে হয় না। এমনকি রাজতন্ত্রেও এত মানবতার লঙ্ঘন হয় নয়। আমেরিকার মত প্রথম শ্রেণীর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ২৪ ঘন্টায় যে মানবতার লঙ্ঘন করে এই তথাকথিত গণতন্ত্রপ্রেমীরা তা সৌদী আরবের মত স্বৈরাচার বাদশাহরা সারা বছরেও করে না। এবং আমেরিকায় ২৪ ঘন্টায় যে অপরাধ হয় তা সৌদী আরবের মত রাজতন্ত্র দেশে সারা বছরেও হয় না।
২৫) গণতান্ত্রিক দেশের নেতা-নেত্রীরা অধিকাংশ ক্ষেতেই বুর্জোয়া শ্রেণীর কেনা গোলামে পরিণত হন।
২৬) সংসদীয় গণতন্ত্রে মানুষের যোগ্যতার তুলনায় চাটুকারিতার মূল্য বেশী, ফলে যে যত বেশী মিথ্যা বলে মানুষকে ধোকা দিতে পারে সেই নির্বাচিত হয়।
২৭) এখানে যোগ্যতা বিবেচনার কোন বালাই থাকেনা। জনগনকে ভোটের আগে ঘুষ খাওয়ানো হয়। সবচেয়ে বেশী ঘুষ আদান প্রদান হয় খোদ মার্কিন মুল্লুকে।
২৮) এই ব্যবস্থায় মাত্র ৩০% ভোটের উপর ভিত্তি করে বাকি ৭০% মানুষের মতামত কে সরাসরি অগ্রাহ্য করা হয়। মোটামুটি গণতন্ত্র না সার্বজনীন ব্যবস্থা, না এটা রুচিশীল সৎ নেতৃত্বের স্বাধিনতা নিশ্চিত করে।
২৯) এখানে তথাকথিত অর্থনৈতিক মুক্তির নামে ঋনপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো গরিব সাধারন মানুষের রক্ত চুষে খায়। গরিব আরো গরিব হয়, ধনী আরো ধনী হয়। উন্মুক্ত বাজার ব্যবস্থার নামে স্থানীয় সাধারন উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পন্যের অবমুল্যায়ন করা হয়। যেখানে কতিপয় মাল্টি-ন্যাশনাল পুরো বাজার ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রক হয়ে দাঁড়ায়।
৩০) বিচার ব্যবস্থার বালাই থাকে না; ক্ষমতাসীনরা তাদের ইচ্ছামত বিচারকের কলকাঠি নাড়ে। যেখানে একজন প্রমানিত খুনের সাজা -প্রাপ্ত আসামীও ক্ষমা পাওয়ার ভুরিভুরি দৃষ্টান্ত রয়েছে। এর বাইরে স্থানীয় পর্যায়ে যে দল যখন ক্ষমতায়, তার নেতাকর্মীর জন্য সাত-খুন মাফ।
৩১) সমাজে অসামাজিক ক্রিয়াকলাপ গনতান্ত্রিক সমাজের একটা অংশ হয়ে দাড়িয়েছে। সুতরাং যতসামান্য আলোচনা থাকে প্রতীয়মান হয় যে গনতন্ত্র কোন কল্যান কর ব্যবস্থা তো নয়ই বরং এটা আবেগ তাড়িত বিষয় ও ক্ষণ ভঙ্গুর শাসন ব্যবস্থা যেখানে অবৈধ অর্থ এবং পেশি শক্তির মহড়া একটা প্রধান ভিত্তি। কোন সুস্থ এবং স্বাভাবিক মানসিকতার মানুষের পক্ষে গনতান্ত্রিক ব্যবস্থার অংশগ্রহন করে সমাজের কল্যান সাধন সম্ভব নয়।
৩২) বলা হয় যে গণতন্ত্র হল জনগণের শাসন। অর্থাৎ সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ যাঁকে শাসক নির্বাচন করবে তিনিই হবেন রাষ্ট্রনেতা। অথচ বাস্তবে তা হয় না। উদাহরণস্বরুপ, মনে করে ভারতের লোকসভা নির্বাচনে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। এখানে ‘A’ হল একটি রাজনৈতিক দল, ‘B’ হল একটি রাজনৈতিক দল, ‘C’ হল একটি রাজনৈতিক দল, ‘D’ হল একটি রাজনৈতিক দল, ‘E’ হল একটি রাজনৈতিক দল, ‘F’ হল একটি রাজনৈতিক দল, এবং ‘G’ হল একটি রাজনৈতিক দল। নির্বাচনে ‘A’ পেয়েছে ২০% ভোট, ‘B’ পেয়েছে ৩০% ভোট, ‘C’ পেয়েছে ১০% ভোট, ‘D’ পেয়েছে ১০% ভোট, ‘E’ পেয়েছে ১০% ভোট, ‘F’ পেয়েছে ১০% ভোট, এবং ‘G’ পেয়েছে ১০% ভোট।
এখানে ‘A’ এর থেকে ‘B’ বেশী ভোট পেয়েছে কিন্তু বাকি (C, D, E, F, G) দলগুলি যখন জোট করে ‘A’ কে সমর্থন করে দেয় তখন ‘B’ ‘A’ এর থেকে বেশী ভোট পেয়েও পিছিয়ে পড়ে এবং ‘A’ রাষ্ট্রপ্রধান হয়। কিন্তু C, D, E, F, G প্রভৃতি রাজনৈতিক দলগুলিকে যারা ভোট দিয়েছিল তারা অনেকেই চাইনি ‘A’ রাষ্ট্রপ্রধান হোক কিন্তু জোট সমর্থনের জন্য শেষ পর্যন্ত ‘A’ রাষ্ট্রপ্রধান হয়। এ হল গণতন্ত্রের চরম ব্যার্থতা।
গণতন্ত্র সম্পর্কে মনীষীদের বক্তব্য
১) প্লেটোঃ
“সংখ্যাধিক্যের শাসন প্রকারান্তরে মুর্খেরই শাসন।”
২) জন ড্রাইডেন [John Dryden (1631 – 1700)]
“Nor is the Peoples Judgment always true: The Most may err as grossly as the Few.” (Absalom and Achitophel)
অর্থাৎ “জনগণের বিচার সবসময় সঠিক হতে পারে না। কম লোক যেমন ভূল করতে পারে তেমনি বেশিরভাগ লোকও ভূল করতে পারে।”
৩) উইন্টন চার্চিলঃ
“পৃথিবীতে গণতন্ত্রই সবচেয়ে নিকৃষ্ট শাসনব্যবস্থা। তবে এ যাবৎকাল আমরা যেসব পদ্ধতি চেষ্টা করেছি তার মধ্যে এটিই সর্বোত্তম।” (Many forms of Government have been tried, and will be tried in this world of sin and woe. No one pretends that democracy is perfect or all-wise. Indeed, it has been said that democracy is the worst form of government except all those other forms that have been tried from time to time)
তিনি আরও বলেন, “গণতন্ত্র হলো গড়পড়তা জনগণের সাথে ৫ মিনিটের আলোচনা।” (Democracy is a five minute discussion with the average voter)
(তথ্যসূত্রঃ প্রথম আলো–আলপিন, ১২/২/২০০৭)
৪) চিদাম্বরমঃ
“গণতন্ত্র সিদ্ধান্ত নেওয়াটাকে অনেকসময় পঙ্গু করে দেয়, গণতন্ত্রের এই নীতি পরবর্তন করতে হবে। (১৮ জুলাই ২০০৮)
৫) বাট্রান্ড রাসেলঃ
“হিংসায় গণতন্ত্রের ভিত্তি।” (“Envy is the Basis of Democracy”)
৬) জন লেকিঃ
“গণতন্ত্র দরিদ্র প্রপীড়িতম অজ্ঞতম ও সর্বাপেক্ষা অক্ষমদের শাসন। কারণ রাষ্ট্রে এদের সংখ্যায় অধিক। …প্রজ্ঞা, জ্ঞান কিছু সংখ্যক লোকের অধিকারভূক্ত। প্রশাসনিক কাজে সফলতা অর্জনের জন্য তাদের হাতে ক্ষমতা থাকা প্রয়োজন।”
৭) রুশো (1712 – 1778)
In the strict sense of the term, there has never been a true democracy, and there never will be. It is contrary to the natural order that the greater number should govern and the smaller number be governed. (The Social Contract)
অর্থাৎ “সুক্ষ্মভাবে চিন্তা করলে বলতে হয়, কোথাও প্রকৃত গণতন্ত্রের অস্তিত্ত্ব পাওয়া যায় না এবং কখনও পাওয়া যাবে না। কারণ এটা প্রাকৃ্তিক রীতিবিরুদ্ধ যে, সংখ্যাগরিষ্ঠকে অপরিহার্যভাবে শাসন করতে হবে আর সংখ্যালঘুকে শাসিত হতে হবে।”
৮) এডমান্ড বার্ক [Edmund Burke (1729 – 1797)]
“Man is by his constitution a religious animal. A perfect democracy is therefore the most shameless thing in the world.” (Reflections on the Revolution in France)
অর্থাৎ “মানুষ প্রকৃতিগতভাবেই ধার্মিক রক্ষনশীল জীব। প্রকৃত গণতন্ত্র তাই পৃথিবীর সর্বাধিক নির্লজ্জ জিনিস।”
৯) মাইকেল গোরবাচেভ [Mikhail Gorbachev (1931 – )]
“Some comrades apparently find it hard to understand that democracy is just a slogan. The Observer (London), (Sayings of the Week)
অর্থাৎ “কিছু কমরেড তাৎক্ষনিকভাবে এটা বুঝতে কষ্ট অনুভব করে যে, গণতন্ত্র কেবলই একটি শ্লোগান বা প্রচারণা।”
১০) হেনরী বুরাশা [Henri Bourassa (1868 – 1952)]
Canadian politician and journalist – There is no greater farce than to talk of democracy. To begin with, it is a lie; it has never existed in any great country. (Le Devoir)
অর্থাৎ “গণতন্ত্রের কথা বলার চেয়ে বড় প্রতারণা আর নেই। তার শুরুটাই একটি মিথ্যা। কোন বৃহৎ বা সমৃদ্ধ (মহৎ) রাষ্ট্রে এটা কখনো স্থায়িত্ব লাভ করে নি।”
১১) ফাতিমা মারনিসি (মরক্কান লেখক) [Fatima Mernissi (1941 -)]
“Western democracy, although it seems to carry within it the seeds of life, is too linked in our history with the seeds of death.” (Islam and Democracy)
অর্থাৎ “পাশ্চাত্য গণতন্ত্র, যদিও মনে হয় এর অভন্তরে জীবনের বীজ বহন করে, তবে আমাদের ইতিহাসে এটা মৃত্যুর বীজই বহন করে এনেছে।”
১২) আর ডব্লু বাকের (R.W. Baker)
“The democracy is foundamentally different and contrary to Islam because of having its root in western liberalism.” (Islam without feer, R.W. Baker, USA, 2005)
অর্থাৎ “গণতন্ত্র ভিত্তগতভাবে ইসলামের সাথে পৃথক ও বৈপরীত্যপূর্ণ আদর্শ। কেননা এটা পশ্চিমা উদারতাবাদের মাঝে মূলীভূত।
এছাড়াও দার্শনিক প্লেটোর সময়কাল থেকে হেনরী মেইন, লেকি, টেরিল্যান্ড, এমিল ফাগুয়ে এরুপ বহু অমুসলিম দার্শনিক ও বুদ্ধিজীবি গণতন্ত্রের সমালোচনা করেছেন। তাঁদের দৃষ্টিতে গণতন্ত্র একটি ভ্রান্ত মতবাদ।
[বিঃ দ্রঃ – এখানে গণতন্ত্র বলতে সংসদীয় গণতন্ত্রকেই বোঝানো হয়েছে]কট্টরপন্থার উত্থান, সাজানো পুলিশী সঙ্ঘর্ষ ও বিচারব্যবস্থা