হলুদ রঙের শাড়িটা পড়ে,
মাথায় পলাশমালা দিয়ে,
হাতের দু – মুঠোয় আবীর নিয়ে
সেবারে শান্তিনিকেতনে উন্মত্ত রঙের খেলায়
তোমার সাথে আমার প্রথম আলাপ।
প্রথমটা কিছুটা অপ্রস্তুত হলেও ধীরে ধীরে
আলাপচারিতায় বেশ সরল হয়ে উঠলো
তোমার – আমার সেই প্রথম আলাপ।
কেমন যেনো মহুলের মাতাল নেশার মত
একে অপরের দিকে আকর্ষিত হতে থাকলাম দুজনে,
মদমত্ত হয়ে চেয়ে থাকলাম একে অপরের দিকে।
মনে আছে সেই মাদলের তালে তালে
একসাথে হাত ধরে সেকি নৃত্য!
আজ ভাবলেই ভীষণ হাসি পায়,
হঠাৎ ই একলা ঘরে খিলখিলিয়ে উঠি অন্য মনে।
সারাদিন টা কেমন করে পেরিয়ে গেলো
ভাবনার পুকুরে ডুব দিয়ে
বুঝেই উঠতে পারিনা দুজনে।
ঠিক সুয্যি অস্ত যাবার মুখে, সহসা
তোমার হাতঘড়ি টার দিকে চোখ পড়তেই
দেখি বেলা তখন প্রায় শেষ।
বাড়ি যাবার তাড়ায় শেষ আলাপ টুকুও
সারা হয়ে ওঠেনা ঠিক মত।
ইতি মধ্যে তড়িঘড়ি ফোন নম্বর টার
আদান- প্রদান টুকু সেরে ফেলে
ফিরে যাই যে যার ঘরে।
সেদিন সারা রাত শুধুই তোমার কথা
আমার এলোমেলো ভাবনাতে,
তোমার হাসি, তোমার চাহনি, আরো কত কি।
দুচোখে তখন শুধুই তুমি শুধুই তখন রঙিন স্বপ্ন।
পরদিন ঠিক সকাল ৮:১০, ফোনটা টুং করে
ছোট্ট একটা শব্দ হতেই হাতে নিয়ে দেখি-
আমার ফোনে তোমার প্রথম সুপ্রভাত বার্তা।
তারপর চলতে থাকে হাজারও কথা
ঘণ্টার পর ঘন্টা দীর্ঘ ফোনালাপ।
ধীরে ধীরে শুরু হলো আমাদের প্রেম।
তুমি ছিলে কলকাতা নিবাসী,
আর আমি এক গ্রাম্য বালিকা।
দিনগুলো বেশ ভাবনার দেশে
স্বপ্নের মত কেটে যাচ্ছিল।
ময়ূরের পেখোমের মত রঙ – বেরঙের
স্বপ্ন ভির করেছিলো দুচোখ জুড়ে।
তারপর হঠাৎ একদিন
কোথায় হারিয়ে গেলে তুমি?
জানো অনেক খুঁজেছি তোমায়?
চেষ্টা করেছি বহুবার তোমার কণ্ঠস্বর
খুঁজে পেতে সেই চেনা ফোন নম্বরে।
আমার সব- ই বৃথা হয়ে যায় এক সময়।
কোনো ভাবেই কিছু করে উঠতে পারিনি।
আজ ঋতুর রঙ্গমঞ্চে আবার বসন্ত
এসেছে ফিরে তার যৌবনতা সঙ্গে করে।
ডালে ডালে পলাশে- শিমুলে ভরে উঠেছে।
চারিদিকে কোকিলের কুহু তানে
মুখরিত হয়ে উঠেছে প্রকৃতি।
গতবারের মত এবারও আমি –
সেই হলুদ রঙের শাড়িটা পরে,
পলাশ ফুল মাথায় দিয়ে ,
ঠিক সেবারের মত সাজিয়ে তুলবো নিজেকে।
উপস্থিত হবো শান্তিনিকেতনে সেই আসরে!
যদি আবারও দেখা পায় তোমার,
দুমুঠো আবীরের সাথে !
রচনাকাল – ৩ মার্চ, ২০২১
স্থান- বেঙ্গালুরু