• মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
Sunday, July 6, 2025
নবজাগরণ
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ
No Result
View All Result

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের রচনায় জাতি বিদ্বেষ ও সাম্প্রদায়িকতা

অতিথি লেখক by অতিথি লেখক
June 25, 2025
in সাহিত্য আলোচনা
0
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়

চিত্রঃ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, Image Source: kavishala

Share on FacebookShare on Twitter

লিখেছেনঃ সরকার শাহাবুদ্দীন আহমদ

ঊনবিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ ইংরেজ প্রভু ভক্ত, শ্রেষ্ঠ হিন্দু জাতীয়তাবাদী এবং শ্রেষ্ঠ কট্টর মুসলিম বিদ্বেষী গদ্য লেখক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। এই চরম সাম্প্রদায়িক লেখক তার সাহিত্যকর্মে অত্যন্ত কুৎসিত ও অশালীন ভাষায় নিরবচ্ছিন্নভাবে মুসলমান শাসক এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ঘৃণা প্রচার করেছেন।

গ্রামে-গঞ্জে মুসলমানদের পাড়ায় পাড়ায়, আগুন লাগিয়ে তাদের বাড়ি-ঘর পােড়াতে এবং তাদের সমূলে ধ্বংস করতে উৎসাহিত করেছেন। মুসলিম শাসকের বিরুদ্ধে অশ্লীল ভাষায় সভ্যতার-বৈভ্যতার সীমা ছাড়িয়ে অত্যন্ত নগ্নভাবে মিথ্যা কলংক লেপন করেছেন। তার রচিত উল্লেখযােগ্য উপন্যাসগুলাে হলাে সীতারাম, মৃণালীনী, রাজসিংহ, কৃষ্ণকান্তের উইল, দুর্গেশ নন্দিনী, কপালকুন্ডলা, আনন্দমঠ, দেবী চৌধুরানী, বৃষবৃক্ষ প্রভৃতি।

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
চিত্রঃ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, Image Source: wikipedia

তিনি যতগুলাে উপন্যাস রচনা করেন, তন্মধ্যে শ্রেষ্ঠ উপন্যাস ‘আনন্দমঠ’। এ উপন্যাসে তিনি যে শুধু হিন্দু মহাপুরুষের প্রতি পাঠকের ভক্তি উদ্রেক করার চেষ্টা করেছেন তা-ই নয়, ইংরেজ শাসকদের প্রতি বিদ্বেষভাব পরিত্যাগ করার উপদেশও দিয়েছেন। কারণ তার মতে, ইংরেজ হিন্দুর কল্যাণার্থে এদেশে আবির্ভূত হয়েছে (?)।

অনেক দিন আগে একজন মাওলানার ওয়াজে শুনেছিলাম হযরত মুহাম্মদ একদিন শয়তানকে ডেকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন,

“তােমার প্রধান শত্রু কে?”

জবাবে বলেছিলেন – “আপনি। এরপর আপনার অনুসারী। অর্থাৎ মুসলমান সম্প্রদায়।”

ঠিক তেমনি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রধান শত্রু ছিল মুসলমান। বঙ্কিমের মতে, শত্রু মুসলমান এবং মুসলমান শাসক। উৎপীড়ক, শােযণকারী শুধু মুসলমান শাসকই নয়— সমস্ত মুসলমান জনসমষ্টিও! ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসে সন্ন্যাসিগণ যুদ্ধে জয়ী হবার পর সকলে বলিল, ‘মুসলমান পরাভূত হইয়াছে, দেশ আবার হিন্দুর হইয়াছে। সকলে এবার মুক্তকণ্ঠে হরি হরি বল। গ্রাম্য লােকেরা মুসলমান দেখিলেই তাড়াইয়া মারিতে যায়। কেহ কেহ সেই রাত্রে দলবদ্ধ হইয়া মুসলমানদিগের পাড়ায় গিয়া তাহাদের ঘরে আগুন দিয়া সর্বস্ব লুণ্ঠিয়া লইতে লাগিল। অনেক যবন নিহত হইল, অনেক মুসলমান দাড়ি ফেলিয়া গায়ে মৃত্তিকা মাখিয়া হরিরাম করিতে আরম্ভ করিল। জিজ্ঞাসা করিলে বলিতে লাগিল, ‘মুই হেঁদু। হিন্দুরা বলিতে লাগিল, “আসুক, সন্ন্যাসীরা আসুক, মা দূর্গা করুন, হিন্দুর অদৃষ্টে সেই দিন হউক।

আনন্দমঠে বঙ্কিম মানস মুসলিম বিদ্বেষ আচ্ছন্ন। এ গ্রন্থের এক স্থানে ভবানন্দের মুখ দিয়ে বলা হয়েছে, এ নেশাখাের নেড়েদের না তাড়াইলে আর কি হিন্দুর হিন্দুয়ানী থাকে। অন্যত্র সন্তান সম্প্রদায়ের নেতা সত্যানন্দ নতুন Convert মহেন্দ্রকে বােঝাচ্ছেন, – “আমরা রাজ্য চাই না। কেবল মুসলমানেরা ভগবানের বিদ্বেষী বলিয়া তাদের সর্বাংশে নিপাত করিতে চাই।” [আনন্দমঠ]

সন্তান সম্প্রদায়ের এক বৈঠকের পরিচয় প্রসঙ্গে লেখা হয়েছে তখন বড় কোলাহল হইতে লাগিল। কেহ চিৎকার করিতে লাগিল, মার মার, নেড়ে মার।… কেহ বলে এমন দিন কি হইবে, মসজিদ ভাঙ্গিয়া রাধা মাধবের মন্দির গড়িব। [আনন্দমঠ, ৭৬৮]

কাপ্তান টমাস ভাবানন্দের হাতে বন্দী। ভবানন্দ তাকে বলছেনঃ “কাপ্তান সাহেব তােমাকে মারিব না। ইংরেজ আমাদের শত্রু নহে। কেন তুমি মুসলমানদের সহায় হইয়া আসিয়াছ? ইংরেজের জয় হউক, আমরা তােমাদের সুহৃদ।” [দ্রষ্টব্যঃ আনন্দমঠ]

‘আনন্দ মঠ’-এর এ চিত্র এক নােংরা দাঙ্গার চিত্র। বঙ্কিম বাবু ‘আনন্দমঠে’ আরাে লিখেছেনঃ “ধৰ্ম্ম গেল, জাতি গেল, মান গেল, কুল গেল, এখন তাে প্রাণ পর্যন্তও যায়। এ নেড়েদের না তাড়াইলে আর কি হিন্দুর হিন্দুয়ানী থাকে?” [আনন্দমঠ, প্রথম খণ্ড, দশম পরিচ্ছেদ]

আল্লাহ, কোরআন শরীফ ও পাঁচ ওয়াক্ত নামাযকে উপহাস করে ‘আনন্দমঠে’ বঙ্কিম বাবু লিখেছেন: “মুসলমানেরা বলিতে লাগিল, “আল্লা-আকবর! এতনা রােজের পর কোরআন শরীফ বেবাক কি ঝুটা হলাে? মােরা যে পাঁচওয়াক্ত নামাজ করি, তা এই তিলক কাটা হিন্দুর দল ফতে করতে নারলাম। [ঐ, চতুর্থ খণ্ড, পঞ্চম পরিচ্ছেদ]।

শুধু তাই নয়, এই বঙ্কিম বাবু ঢাকা সফর শেষে কলিকাতা গিয়ে পূর্ব বঙ্গের মুসলমানদেরকে কাক ও কুকুরের সাথে তুলনা করে ১২২৭ সালের অগ্রহায়ণের ‘বঙ্গ দর্শনে’ লিখেছেন, “ঢাকাতে দুই চারিদিন বাস করলেই তিনটি বস্তু দর্শকদের নয়ন পথের পথিক হইবে। কাক, কুকুর এবং মুসলমান। এই তিনটিই সমভাবে কলহপ্রিয়, অতি দুর্দম, অজেয়। ক্রিয়া বাড়ীতে কাক আর কুকুর। আদালতে মুসলমান।” [বঙ্কিম চন্দ্র, বঙ্গ দর্শন, অগ্রহায়ণ সংখ্যা, পৃঃ ৪০১]।

এ ধরনের সংকীর্ণ ও ধর্মান্ধ চিন্তা ও মানসিকতা মানুষের বৃহত্তর এবং মহত্তের কল্যাণ সাধন করতে পারেন কি-না সে প্রশ্ন সুস্থ বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের মনে জাগা অস্বাভাবিক নয়।

এখানে উল্লেখ্য, ১৮৫৭ সালে বঙ্কিমের মসজিদ ভাঙ্গার ইচ্ছে হিন্দু সম্প্রদায় পূর্ণ করেছিলাে ১৯৯২ সালে ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদ ভেঙ্গে ফেলে।

সীতারাম উপন্যাসের প্রথম পৃষ্ঠাতেই হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত করেছেন। গঙ্গারাম নামে এক হিন্দু যুবক তার মুমূর্ষ মায়ের চিকিৎসার জন্য কবিরাজ ডাকতে যাবার সময় পথে এক মুসলমান ফকির শুয়েছিলেন। গঙ্গারাম তাকে পথ ছাড়তে বললে তিনি পথ ছেড়ে দিলেন না। মুসলমান ফকিরগণ তখনকার দিনে অত্যন্ত সম্মানিত ছিলেন। বঙ্কিমচন্দ্রের ভাষায়ঃ “সে-কালে মুসলমান ফকিরেরা বড় মান্য ছিল। খােদ আকবর শাহ ইসলাম ধর্মে অনাস্থাযুক্ত হইয়াও একজন ফকিরের আজ্ঞাকারী ছিলেন।” [পৃ : ৮৭৩ ]।

এহেন সম্মানিত ব্যক্তি সংকীর্ণ পথের ধূলায়, “আড় হইয়া একেবারে পথ বন্ধ করিয়া শুইয়া আছেন।” গঙ্গারাম তাকে পথ ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরােধ করলেও ফকির সরলেন না। অগত্যা গঙ্গারাম তাকে লংঘন করে কবিরাজের বাড়ি গেল। “লংঘন করিবার সময় গঙ্গারামের পা ফকিরের গায়ে ঠেকিয়েছিল।” সঙ্গে সঙ্গে বঙ্কিমচন্দ্র মন্তব্য করেছেন, “বােধ হয় সেটুকু ফকিরের নষ্টামি।” [পৃ : ৮৭৩]।

অন্যত্র বঙ্কিমচন্দ্র বলেছেন, ঔপন্যাসিক, “ইচ্ছামত, অভিষ্ট সিদ্ধির জন্য কল্পনার আশ্রয় লইতে পারেন। কাজেই মুসলমান ফকির সম্মানিত ব্যক্তি হলেও তাকে সংকীর্ণ গলি পথে প্রত্যুষে আড় হয়ে শুয়ে থাকতে হবে এবং তাকে লংঘন করার সময় তার গায়ে গঙ্গারামের পা লেগেছে বলে মিথ্যা অভিযােগ করে নষ্টামি করতে হবে। এজন্য তিনি কাজী অর্থাৎ বিচারকের কাছে অভিযােগ করবেন এবং বিচারকও “আজ্ঞা প্রচার করিলেন ইহাকে জীবন্ত পুঁতিয়া ফেল।” সর্বোপরি বিচারকের আদেশ ঘােষণার সঙ্গে সঙ্গে ‘গঙ্গারাম শাহ সাহেবের মুখে এক লাথি মারিল। তােবা তােবা বলিতে বলিতে শাহ সাহেব মুখে হাত দিয়া ধরাশায়ী হইলেন। এ বয়সে তার যে দুই-চারটি দাঁত অবশিষ্ট ছিল, গঙ্গারামের পাদস্পর্শে তাহার মধ্যে অনেকগুলােই মুক্তিলাভ করিল।”

এই কট্টর সাম্প্রদায়িক চিন্তার লেখক বঙ্কিম বাবু যত কিসিমের গালি রপ্ত করেছিলেন বা শিখেছিলেন তার উপন্যাসে মুসলমানদেরকে তা-ই উপহার দিয়েছেন। যেমন : হীন, নীচ, কাপুরুষ, যবন, ম্লেচ্ছ। এমনকি প্রাচীনকালে বৌদ্ধদেরকে দেয়া নেড়ে গালিটিও মুসলমানদের কপালে জুড়ে দিয়েছেন।

এই বঙ্কিমবাবু ‘কৃষ্ণকন্তের উইল’ গ্রন্থে ওস্তাদজী দানেস খাঁকে দিয়ে মুসলমানদেরকে ‘শূয়ার’ বলে গালি দিয়েছেন। ‘রাজসিংহ’ উপন্যাসে মহাত্মা আকবর বাদশাহের বাড়িতে একটি যুবতী মেয়ে দিয়ে ঝাড়ু মেরেছেন এবং ধর্মাত্মা আওরাঙ্গযেব বাদশাহের মুখে কতিপয় কল্পিত সখী বা স্ত্রীলােক দ্বারা লাথি মারারও বন্দোবস্ত করেছেন। ‘মৃণালিনীতে’ বখতিয়ার খিলজীকে ‘অরণ্য নর’, ‘বানর’ বলতেও বিবেকে বাধে নি। কবিতা পুস্তকে মুসলমান জাতিকে লক্ষ্য করে বঙ্কিমচন্দ্র লিখেছেন,

“আসে আসুক না আরবী বানর

আসে আসুন না পারশী পামর।”

‘ষোলশ’ শতাব্দীর কোন এক সময়ের ঘটনা। পারস্য সম্রাট স্বপ্নে কবিতার একটি চরণ মুখস্থ করলেন। কবিতার চরণটি হলাে “দুররে আবলাককাসে কমদিদাম মওজুদ।” অর্থাৎ “সাদা কালােয় মেশাননা রঙ্গের মােতির প্রত্যক্ষদর্শী বিরল।” তিনি তার রাজ্যের সমস্ত কবি-সাহিত্যিককে আহবান জানালেন স্বপ্নে পাওয়া ঐ কবিতার চরণটির সাথে সঙ্গতি রেখে-অর্থ, ছন্দ, তাৎপর্য সমমানসম্পন্ন আর একটি চরণ লিখে দরবারে পেশ করার জন্য। অনেক কবি-সাহিত্যিক লিখলেন। কিন্তু সেগুলাে সম্রাটের মনঃপুত হলাে না এখন অনেকের পরামর্শ মত সম্রাট কবিতার লাইনটি হিন্দুস্তানের কবিদের জন্য দিল্লীর সম্রাট আওরঙ্গয়েবের দরবারে পাঠিয়ে দিলেন। মােগল দরবারের সকল কবি। যখন কবিতাটি নিয়ে চিন্তিত, তখন অন্তপুরের সম্রাট দুহিতা কবি যেব-উন-নিসা কবিতাটির চরণে একবার চোখ বুলিয়েই দিতীয় ছত্র লিখলেন,

“মাগার আশকে বুনে সুরমা আলুদ।” অর্থাৎ সুরমা মাথা আঁখির বিন্দুতে ঐ মােতির প্রাচুর্য।”

কবিতাটি পারস্য সম্রাটের কাছে পৌঁছালে সম্রাটসহ দরবারের সকল জ্ঞানী-গুণী আনন্দে ‘মারহাবা’ বলে ওঠেন। তারা শ্রদ্ধাবনত চিত্তে হিন্দুস্থানী বিদূষী কবির যশকীর্তন করেন এবং সেই সঙ্গে সম্রাটকে অনুরােধ করেন, তিনি যেন ঐ মহান নারীকে সম্মান প্রদর্শনের জন্য পারস্যে আমন্ত্রণ জানান। সম্রাট সে যুগের বিখ্যাত কবিদের সাহায্যে রচিত এক আমন্ত্রণলিপি দিল্লীতে পাঠালেন। লিপিতে লেখা ছিলাে,

“তুর এ্যায় মহজেবী বে পরদা দিদান, আরজু দাবামা।” অর্থ হল “হে চাদ শ্ৰেষ্ঠা সুন্দরী, আমাদের ব্যবধান দূরীভূত হােক, পর্দার বাইরে আপনার দর্শনের আশা নিতে যেতে চাই।”

উত্তরে বিদূষী যেব-উন-নিসা পারস্য সম্রাটকে লিখলেন,

“বুয়ে শুলদার বারগে গুলপুশিদাহ, আম দরশােখন বিনাদ মােরা।” অর্থাৎ “ফুলের সৌরভের মত ফুলেই আমি লুকিয়ে আছি, আমায় যদি কেউ দেখতে চায়, সে দেখুক আমার লেখায়।”

এই পর্দানশীন, মেধাবী, মহিয়সী ললনাশ্রী দিল্লীশ্বর আওরঙ্গযেবের কন্যা যেব-উন-নিসা সারাজীবন কুমারীব্রত পালন করে, কঠোর সাধনায় কাব্যচর্চা ও গবেষণাকর্ম চালিয়ে গেছেন। কোরআন শরীফ কণ্ঠস্থকারিনী হাফেযা, অনন্য-সাধারণ পাণ্ডিত্যের অধিকারিণী, প্রতিভাবতী, চরিত্রবতী, গুণবতী যেব-উন-নিসার বিয়ে হলে অধ্যয়ন, গবেষণা, কাব্যচর্চা ক্ষুন্ন হবে ভেবে তিনি বিয়ে করেননি। চিরজীবন কুমারী থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। অন্তঃপুরবাসিনী এ পুণ্যশীলা রমণী যিনি দূর থেকে ছড়িয়ে দেয়া কাব্য সৌরভে ভারতের কাব্য গগণকে বিমােহিত করেছিলেন, সেই পুণ্যবতী রমণীকেও নিদারুণ মুসলিম বিদ্বেষের খড়গাঘাতে ক্ষত-বিক্ষত করতে ছাড়েননি মুসলিম বিদ্বেষীরা। সাহিত্য সম্রাট বলে খ্যাত, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তার রাজসিংহ উপন্যাসে এই মহীয়সী রমণীকে ভ্ৰষ্ঠা, পতিতা, চরিত্রহীনা এক কুলটার রূপদান করেছেন। তিনি যেব-উন-নিসাকে মোবারক খান নামক এক সাধারণ মনসবদারের প্রণয়ী হিসেবে চিত্রিত করে লিখেছেন-

“যেব-উন্নিসা তোমার কি ভিক্ষা প্রাণাধিক।

মবারকঃ ভিক্ষা এই যে, যেন মোল্লার হুকুমে ঐ শব্দে আমার অধিকার হয়।

যেব-উন্নিসা হাসিয়া বলিল, “ঐ পুরাতন কথা। বাদশাহজাদীরা কখন বিবাহ করে?

মবারকঃ এই মহাপাপ।

যেব-উন্নিসা উচ্চ হাসিল। বলিল বাদশাজাদীর পাপ!– আল্লা এ সকল ছােটলােকের জন্য করিয়াছেন—কাফেরের জন্য। আমি কি হিন্দুদের বামনের মেয়ে, না রাজপুতের মেয়ে যে, এক স্বামী করিয়া, চিরকাল দাসিত্ব করিয়া শেষ আগুনে পুড়িয়া মরিব? আল্লা যদি আমার জন্য সেই বিধি করিতেন, তবে আমাকে কখনও বাদশাজাদী করিতেন না।”

এহেন ইতিহাস বিকৃতি, এহেন সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষপ্রসূত কুৎসিত ও কুরুচিপূর্ণ লেখার পরও বঙ্কিমচন্দ্র সাহিত্য সম্রাট, ঋষি। মুসলিম বিদ্বেষী বক্তব্যে ঠাসা বঙ্কিমচন্দ্রের বিরুদ্ধে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একটি শব্দও ব্যয় করেননি। বরং তিনি বিভিন্ন শব্দের মালা গেঁথে বঙ্কিমচন্দ্রের উচ্চ প্রশংসা করেছেন। এই কুরুচিপূর্ণ মুসলিম বিদ্বেষী বঙ্কিমচন্দ্রকে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অন্ধভাবে সার্টিফিকেট দিয়েছেন। তিনি কট্টর সাম্প্রদায়িক লেখক বঙ্কিমচন্দ্রকে শিক্ষিত শ্রেষ্ঠ, সাহিত্যের কর্মযােগী, সাহিত্য মহারথী, ভগীরথের ন্যায় সাধনাকারী, বাংলা লেখকদিগের গুরু ইত্যাদি বিশেষণে ভূষিত করেছেন। [বঙ্কিমচন্দ্র সম্বন্ধে রবীন্দ্রনাথের সমালােচনা-সমালােচনা সংগ্রহ, ১৯৫৫, পৃঃ ২৪৪-৪৫]

‘নবজাগরণ’ অ্যান্ড্রোয়েড অ্যাপ্লিকেশনটি প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।

‘নবজাগরণ’ এর টেলিগ্রাম চ্যানেলে জয়েন হতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।

‘নবজাগরণ’ এর ফেসবুক পেজে লাইক করতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।

Post Views: 5,641
Tags: BankimchandraBankimchandra Chattopaddhaybankimchandras anti muslim sentimentsবঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়বঙ্কিমচন্দ্রের মুসলিম বিদ্বেষসাম্প্রদায়িকতা ও বঙ্কিমচন্দ্র
ADVERTISEMENT

Related Posts

সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ : বাংলাসাহিত্যের এক অনন্য কথাশিল্পী
সাহিত্য আলোচনা

সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ : বাংলাসাহিত্যের এক অনন্য কথাশিল্পী

লিখেছেনঃ মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ বাংলা সাহিত্যের এক বিশিষ্ট নাম, যাঁর সাহিত্যিক জীবনপথ রচিত হয়েছে একাধারে প্রকৃতির...

by মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম
July 5, 2025
নজরুল ইসলামের উপন্যাসে মানবতাবাদ
সাহিত্য আলোচনা

নজরুল ইসলামের উপন্যাসে মানবতাবাদ

লিখেছেনঃ মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম মহৎ ঔপন্যাসিক মাত্রই মানবতার পথপ্রদর্শক। সাহিত্য মানেই মানুষের কথা, তার জীবনযাপন, আনন্দ-বেদনা, প্রেম-সংঘর্ষ, বিশ্বাস-অবিশ্বাসের এক...

by মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম
June 25, 2025
বনলতা সেন ও জীবনানন্দ দাশের নায়িকারা
সাহিত্য আলোচনা

বনলতা সেন ও জীবনানন্দ দাশের নায়িকারা

লিখেছেনঃ আহমদ রফিক শ-পাঁচেক বছর আগে চিত্রশিল্পের অন্যতম ‘গ্রেট মাস্টার’ লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির আঁকা আবক্ষ নারীপ্রতিকৃতি ‘মোনালিজা’কে নিয়ে ইতালি-প্যারিস...

by অতিথি লেখক
November 19, 2024
কাজি নজরুল ইসলাম ও আন্তর্জাতিকতা
সাহিত্য আলোচনা

কাজি নজরুল ইসলাম ও আন্তর্জাতিকতা

লিখেছেনঃ সুমিতা চক্রবর্তী কাজি নজরুল ইসলামকে অনেক ভাবেই আমরা চিনি। তিনি উৎপীড়িতের পক্ষে দাঁড়ানো একজন সাহিত্যিক; তিনি অসাম্প্রদায়িক মনের...

by অতিথি লেখক
November 5, 2024

POPULAR POSTS

  • সুলতান মাহমুদ

    সুলতান মাহমুদের ভারত অভিযান ও সোমনাথ মন্দির প্রসঙ্গ (১ম পর্ব)

    181 shares
    Share 181 Tweet 0
  • বাউরী সম্প্রদায়ের উৎপত্তির ইতিহাস ও ঐতিহাসিক পর্যালোচনা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • আর্যদের ভারত আগমন, বিস্তার, সমাজ ও সভ্যতা: এক ঐতিহাসিক পর্যবেক্ষণ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে বৌদি কাদম্বরী দেবীর সম্পর্ক আদৌ কি প্রেমের ছিল?

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • হিন্দু পদবীর উৎপত্তির ইতিহাস, বিবর্তন ও ক্রমবিকাশঃ বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

Facebook Page

নবজাগরণ

ADVERTISEMENT
নবজাগরণ

'Nobojagaran' is a website of its kind where you can gather knowledge on all the unknown facts of the world. We human beings always have a thirst for knowledge. Nobojagaran takes its first steps to quench this thirst of ours. We are now in the era of digital world, where we get almost anything online. So how about a bit of knowlyfrom online?

Connect With Us

No Result
View All Result

Categories

  • English (9)
  • অন্যান্য (11)
  • ইসলাম (27)
  • ইসলামিক ইতিহাস (23)
  • ইহুদী (3)
  • কবিতা (37)
  • খ্রিস্টান (6)
  • ছোটগল্প (6)
  • নাস্তিকতা (18)
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (24)
  • বিশ্ব ইতিহাস (26)
  • ভারতবর্ষের ইতিহাস (196)
  • রাজনীতি (38)
  • সাহিত্য আলোচনা (69)
  • সিনেমা (18)
  • হিন্দু (16)

Pages

  • Cart
  • Checkout
  • Checkout
    • Confirmation
    • Order History
    • Receipt
    • Transaction Failed
  • Contact
  • Donation to Nobojagaran
  • Homepage
  • Order Confirmation
  • Order Failed
  • Privacy Policy
  • Purchases
  • Services
  • লেখা পাঠানোর নিয়ম
  • হোম
No Result
View All Result
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi

©Nobojagaran 2020 | Designed & Developed with ❤️ by Adozeal

Login to your account below

Forgotten Password?

Fill the forms bellow to register

All fields are required. Log In

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In
Don't have an account yet? Register Now
1
Powered by Joinchat
Hi, how can I help you?
Open chat
wpDiscuz
0
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x
| Reply