কাবা শরীফের প্রসারণ ও নির্মাণের কাজ চলছিল। আর এ অনভিজ্ঞ যুবক মাত্র কিছুদিন আগে লেবাননের আনন্দমুখর জীবন থেকে মুখ ফিরিয়ে পিতার কনস্ট্রাকসান কোম্পানীর তত্ত্বাবধায়ক হিসাবে মক্কার পবিত্র ভূমিতে আবির্ভূত হন। কাবার প্রভুর মাহাত্মের ঘােষণা এবং কল্যাণের পথে ফিরে আসার আহ্বানে তার ব্যাকুল হৃদয়ে এক অদ্ভুত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। সম্ভবতঃ তখন ছিল আসরের নামাযের ওয়াক্ত এবং দিনের শেষ পর্ব। মুয়াযিন যেমনই আল্লাহর মাহাত্মের ঘােষণা দেন তিনি ‘লাব্বাইক’ বলতে বলতে অগ্রসর হন। মুহাম্মদ বিন লাদেনের ৫৩ জন সন্তানসন্ততির মধ্যে ১৮ তম পুত্র যখন কাবা শরীফের গেলাফ জড়িয়ে আল্লাহর দরবারে সাহায্যপ্রার্থী হন তখনই যারা চেনার চিনেই নিয়েছিলেন যে এই ১৭ বছরের যুবকটিকে একদিন পৃথিবীর বুকে সকলেই একবাক্যে চিনবে। উসামা বিন লাদেন আজ আমেরিকা ও গােটা পশ্চিম দুনীয়ায় সবচেয়ে অপছন্দীয় ব্যক্তি। নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটনে হানাদারীর পরে তাকেই দায়ী করে তাকে জীবিত অথবা মৃত হাসিল করার জন্য প্রয়াস অব্যাহত। আর এ প্রসঙ্গে আশ্রয়দানকারী আফগানিস্তানের তালিবান সরকারকে ধমকী দিয়ে তৎপরতা আগে বাড়ানাের প্রয়াসও অব্যাহত। হতে পারে আমেরিকার এই হামলা উসামার ৪৪ বছরের জীবন অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটাবে। কিন্তু দুনীয়া এটাও বােঝে, মুসলিম বিদ্বেষী পশ্চিমা শক্তিবর্গের বিরুদ্ধে তিনি যে আন্দোলন শুরু করেছেন তার সফর অব্যাহত থাকবে তার হত্যার পরেও। যতক্ষণ না মার্কিন ও যিয়নবাদী শক্তিগােষ্ঠী বিশ্ব-মুসলিমের বিরুদ্ধে তাদের বর্তমান দৃষ্টিভঙ্গির কোনাে সদর্থক বুনীয়াদী পরিবর্তন আনতে প্রস্তুত হয়।
উসামা বিন লাদেনের জন্ম হয় সৌদী আরবের রাজধানী রিয়াদ শহরে। ১৯৫৭ সালের প্রথম পর্বে। সে সময় রুজি রােজগারের সন্ধানে ইয়ামেন থেকে আগত তার পিতা মুহাম্মদ বিন লাদেন নির্মাণকাজের একজন মামুলী ঠিকাদার ছিলেন। তার ৫৩ জন সন্তানসন্ততি ছিল। যাদের মধ্যে উসামা তার পিতার একজন প্রিয়পাত্র ছিলেন। ছেলেমেয়েদের পড়াশুনাে ও প্রশিক্ষণের প্রতি তার বিশেষ ন্যর ছিল। সেজন্য তিনি ছেলে-মেয়েদের সুশিক্ষার ব্যবস্থা করেন।
১৯৬০ সালে এই পরিবার রিয়াদ থেকে হেজাজে আসেন এবং শেষ পর্যন্ত মদীনা মাননাওওয়ারাকে তাদের স্থায়ী বাসস্থান হিসাবে নির্বাচিত করেন। উসামা তার বেশীরভাগ প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন করেন মদীনায়। এরপর জেদ্দায় উচ্চতর শিক্ষা অর্জন করেন। ১৯৭০ সালে মুহাম্মদ বিন লাদেনের অবস্থা বদলে যায়। তৈল সম্পদে সমৃদ্ধ ধনী সৌদী পরিবারের সঙ্গে তার বিশেষ সম্পর্ক স্থাপিত হয়। শাসক পরিবার পর্যন্ত তার পরিচয়ের ফলে তার নির্মাণমূলক কারবার খুবই ফুলেফেঁপে যায়। অবশেষে তার কোম্পানী বিন লাদেন করপােরেশন গােটা মধ্যপ্রাচ্যে বৃহত্তম কনস্ট্রাকসন কোম্পানী হিসাবে খ্যাতি অর্জন করে। মক্কা ও মদীনার মসজিদদ্বয়ের নির্মাণ ও প্রসারণের বৃহৎ প্রজেক্ট শাহ অর্পণ করেন এই কোম্পানীর হাতে।
জেদ্দায় কিং আবদুল আযীয ইউনিভার্সিটি থেকে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করার পরে তিনি তাঁর পিতার ব্যবসার ভার গ্রহণ করেন। যার পরে তার সম্পর্কের পরিধি বেড়ে যেতে থাকে।
১৯৭৫ সালে লেবাননে যখন গৃহযুদ্ধ চলছিল তুঙ্গে এবং ইসলামপন্থীদের এ জেহাদ প্রাথমিক পর্যায়ে ছিল তখনই যুবক উসামার সাক্ষাৎ হয় এমন একজন ধার্মিক ব্যক্তিত্বের সঙ্গে যিনি তার জীবনের গতি পরিবর্তন করে দেন। এটাই ছিল সেই যুগ যখন তিনি ফিলিস্তীনী ময়দানে তার যৌবনােদ্দীপ্ত নৈপুন্য প্রদর্শনকারী শায়েখ আবদুল্লাহ ইউসুফ ইযামের সংস্পর্শে আসেন। যিনি সে সময় তার অত্যন্ত সফল জীবনকে পরিত্যাগ করে ইসরাঈলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য শিক্ষিত আরব যুবকদের একত্রিত করছিলেন। যদিও ইউসুফ ইমামের সঙ্গে সাক্ষাতের আগেই তিনি বক্তিগতভাবে আফগানিস্তানে জারী রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে অংশগ্রহণ করেন। বস্তুতঃ তার এই অংশগ্রহণকে শায়েখ ইযামের সংস্পর্শ আরাে অর্থবহ করে তােলে।
উসামা বিন লাদেন ওই সমস্ত কতিপয় প্রাথমিক পর্যায়ের আরবদের অন্তর্ভূক্ত যারা আফগানিস্তানে রুশ আগ্রাসনের পরে আগমন করে জেহাদের তাগিদে। উসামা তার জীবনে আফগানিস্তানে রুশ হামলার ঘটনাকে সবচেয়ে প্রভাবশালী ঘটনা বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, আফগানিস্তানে তার অবস্থানের একদিন সাধারণ মসজিদসমূহে ইবাদত্রত হাজারাে দিনের চেয়ে উত্তম। রুশ হামলার কয়েক দিন পরেই ২২ বছরের উসামা পাকিস্তানে পৌঁছে যান। সেখানে আরব মুজাহিদীনদের সংগঠিত করে তাদের মধ্যে দৃঢ়তা সৃষ্টি করেন। এছাড়া, যুদ্ধে অংশগ্রহণে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের জন্য শিবির স্থাপন করে তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন। এরই ফলশ্রুতিতে কয়েক বছরের মধ্যে গােটা আরব দুনীয়া থেকে আগত হাজারাে জীবন উৎসর্গকারী আফগান জেহাদে শরীক হয়ে রাশিয়ার মৃত্যুর পয়গাম বয়ে আনে।
১৯৮০ সালের প্রথম পর্বে উসামা ‘মায়াসেদাতুল আনসার’ নামে একটি সংগঠন কায়েম করে আফগানিস্তানে অবস্থানকারী আরব মুজাহিদীনদের সংগঠনমূলক একটি পরিকাঠামাে গড়ে তােলেন। এটাই পরবর্তীকালে ‘আল কায়েদাহ’ নামে খ্যাতি অর্জন করে। এটা সেই সময় যখন পেশােয়ারে শায়েখ ইউসুফ ইযাম ‘বায়তুল আনসার’ কায়েম করে তামাম আরব মুজাহিদীনদের জন্য একটি আন্তর্জাতিক সাপ্লাই লাইনের ভিত্তি স্থাপন করছিলেন। উসামা তার একজন নিখাত শাগরিদের মত তার এই প্রয়াসকে সফল করার জন্য মনপ্রাণে চেষ্টা করতে থাকেন। উসামার কাছে সম্পদ ছিল। শিক্ষা ছিল। ছিল কিছু করে দেখানাের মত সংকল্পও। এইসব তামাম বৈশিষ্ট একত্রিত হয়ে ইযামের পরিকল্পনাসমূহ দিগন্ত খুঁজে পায়। উসামার সহযােগিতায় ইযামের ‘মকবুল খিদমত’ গঠন করেন। যার সাহায্যে উসামা মুজাহিদীন সার্ভিস ব্যুরাে গঠন করে বিশ্বস্তরে তামাম ইসলামী মুজাহিদীনদের একটি নেটওয়ার্ক কায়েম করেন। যাতে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার এবং অন্যান্য জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিশেষজ্ঞদের একত্রিত করে আফগানিস্তানের পুনঃনির্মাণের কাজ শুরু করেন। ১৯৮০ সালের মধ্যে উসামা বিন লাদেন তার প্রচেষ্টায় অন্ততঃ ৫০টির মত দেশে তার সংগঠনের শাখা ও ভর্তি কেন্দ্র কায়েম করেন। যাতে আমেরিকা, ব্রিটেন, মিসর, সৌদী আরব এবং কিছু ইউরােপীয় দেশসমূহের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। ১৯৮০-র প্রথম পর্বে উসামা তার স্বদেশে ফিরে আসেন। সেখানে তিনি আফগান মুজাহিদীনদের জন্য আর্থিক সাহায্য অর্জনের লক্ষ্যে এবং ট্রান্সপাের্ট ও নির্মাণ কাজের জন্য সাজ-সরঞ্জাম সংগ্রহের জন্য দিনরাত এক করে দেন। তার পরিবারের দৃঢ় প্রতিষ্ঠার সাহায্য গ্রহণ করে শাসক সৌদী পরিবারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি পর্যন্ত পৌছাতে সক্ষম হন এবং দ্রুতলয়ে বাদশাহর ভাই শাহযাদা সালমান ও গােয়েন্দা বিভাগীয় প্রধান শাহযাদা তারকী ছাড়াও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বের ঘনিষ্ঠতা অর্জন ও তার সহযােগী বানাতে সক্ষমতা অর্জন করেন। কিন্তু তার প্রকৃত কর্মক্ষেত্র ছিল আফগানিস্তান। সুতরাং কিছু দিনের মধ্যেই তার তামাম কাঙ্খিত সাজসরঞ্জাম ও আর্থিক সাহায্য সহ তিনি ফিরে আসেন আফগানিস্তানে। পুনরায়।এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অংশগ্রহণ করতে শুরু করেন। মনেপ্রাণে।
১৯৮৬ তে তিনি জালালাবাদের লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৮৭-র যুদ্ধে পাকতীয়া রাজ্যে তার যােদ্ধাদের সাথে নিয়ে তিনি এমন বীরত্ব প্রদর্শন করেন যে তার উপস্থিতির খবরে রাশিয়া নিরন্তর তাদের যুদ্ধফ্রন্ট পরিবর্তন করতে বাধ্য হতে থাকে। অবশেষে ১৯৮৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারী রাশিয়া পরাজয় স্বীকার করে নেয়।
উসামা বিন লাদেনের জীবনীকার ইউসুফ বুদান বলেন, রাশিয়ার সৈন্য প্রত্যাহারের সময় উসামার কর্মীর সংখ্যা ছিল ২০ হাজারেরও বেশী। যারা আরব দুনীয়া ছাড়াও ফিলিপাইন, মালেশিয়া এবং অন্যান্য ২০টি দেশের অন্তর্ভূক্ত ছিল। ইতিমধ্যে আমেরিকার নযরে উসামা বিন লাদেন এক বিপজ্জনক ব্যক্তি হিসাবে প্রতিভাত হয়ে ওঠে। এরপরে যখন তিনি সুদানে বসবাসের পরিকল্পনা করেন তখন আমেরিকার চাপে সৌদী আরব ব্যতীত সূদানও তার বসবাসের ওপরে নিষেধাজ্ঞা আরােপ করে। অবশেষে বুরহানুদ্দীন রব্বানী পুনরায় তাকে আফগানিস্তানে আসার আবেদন জানান। এরপরেই তিনি নঙ্গহারে তুরাবুরা আগাম ক্যাম্প কায়েম করে সেখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। তালিবান ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পরে ১৯৯৬ সালে পুরানাে দোস্ত মােল্লা মুহাম্মদ উমারের সঙ্গে তার সম্পর্ক ব্যক্তিগত পর্যায়ে উন্নীত হয়। তিনি তার পশতু বংশােদ্ভূত পত্নীর গর্ভজাত কন্যার বিয়ে দেন তালিবান আমীর মােল্লা মুহাম্মদ উমারের সঙ্গে। এভাবে এ সম্পর্ক আত্মীয়তার বন্ধনে রূপান্তরিত হয়। তালিবান এবং বিশেষ করে মােল্লা উমার আফগানিস্তান প্রসঙ্গে তার খিদমত এবং তার বিশেষ সম্পর্ককে হামেশা তাদের জানমালের থেকে প্রিয়তর মনে করেন। এই সন্মান ও ভালােবাসারই এটা প্রদর্শন যে মার্কিন যুদ্ধ তৎপরতায় তালিবান তাদের জান কোরবান করতে প্রস্তুত। কিন্তু তীব্র আন্তর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও উসামা বিন লাদেনকে তারা বিনা প্রমাণে আমেরিকা কিম্বা অন্য কোনাে দেশের হাতে অর্পণ করতে রাজী নয়।
উসামা বিন লাদেনের পরিবার
৪৪ বছরের উসামা বিন লাদেন তার কর্মব্যস্ত জীবনের সময়কালে চারটি বিয়ে করেন। এই পত্নীদের মাধ্যমে তার ১৫ জন সন্তান। তার কনিষ্ঠতম পুত্র হামযা। প্রকৃতিগতভাবে যার সাদৃশ্য সব থেকে বেশী তার পিতার সঙ্গে। তার সন্তান-সন্ততিদের মধ্যে জ্যেষ্ঠা কন্যা বৈবাহিক সুত্রে আবদ্ধ তালিবান নেতা মােল্লা মুহাম্মদ উমরের সঙ্গে। তার বড় ছেলে মুহাম্মদের বিয়ে হয় তার ঘনিষ্ঠ মুহাম্মদ আতিফের মেয়ের সঙ্গে (এপ্রিল ২০০১)। এই বিয়ের অনুষ্ঠানে তাকে শেষমেষ দেখা যায় জনতার মজলিসে।
তার ইয়ামানী বংশাদ্ভূত পিতা মুহাম্মদ বিন লাদেনের ৫৩ জন সন্তানসন্ততি। যাদের মধ্যে উসামা ১৮ তম। তার মা ফিলিস্তীনী বংশােদ্ভূত। উসামা তার পিতা মুহাম্মদের অত্যন্ত প্রিয় ছিলেন। আর সেজন্যই মাসাজেদুল হারামের নির্মাণ ও প্রসারণের প্রজেক্টের দায়িত্ব তিনি অর্পণ করেন উসামার হাতে।
উসামার এক ভাই হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ল’ (আইন) এর স্নাতক। অন্য ভাই ওখানকার একটি পানি প্রজেক্টের দায়িত্বশীল। ৫৩ ভাইবােন সমন্বিত এ পবিবার সৌভাগ্যবশত পৃথিবীর প্রায়। অধিকাংশ বড় বড় দেশে বসবাসরত।
বিন লাদেন পরিবার দশ লক্ষ মার্কিন ডলারের সাহায্যে হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ল’ স্কুলে একটি ইসলামী আইন, বিভাগ কায়েম করেন। এছাড়াও হাভার্ড গ্রাজুয়েট স্কুল অব ডিজাইন বিভাগকেও এই পরিবার দশ লক্ষ মার্কিন ডলার অনুদান দেন, যা ওইসব ছাত্র ও শিক্ষকদের স্কলারশিপ দেওয়া হয় যারা এখানে ইসলামী আর্ট ও নির্মাণমূলক বিষয়ে গবেষণা করেন। তার ভাই আবদুল্লাহ বিন লাদেন, যিনি হার্ভার্ড ‘ল’ স্কুলের গ্রাজুয়েট, কেমব্রিজে যার রয়েছে একটি শানদার দফতর। তার আর এক ভাই একটি উন্নত কমপ্লেসের ৬টি ইউনিটের মালিক। হাভার্ডের সেবায় এই পরিবার ১৯৯০ -এর দশক থেকে সংযুক্ত। এজন্য বর্তমান কাজীয়ায় উসামা বিন লাদেনকে অভিযুক্ত করা সত্ত্বেও বিন লাদেন পরিবারের সদস্যদের এখানে সন্দেহের চোখে দেখা হয় না। কেননা ইউনিভার্সিটির মুখপাত্র মি. বিরওয়নের কথানুযায়ী এই পরিবার উসামার সাথে তামাম পারিবারিক সম্পর্ক ছিন্ন করে দেয় ১৯৮০-র দশক থেকে। ১৯৬৮ সালে পিতা মুহাম্মদ বিন লাদেনের ইন্তিকালের পরে ভাইয়েরা উসামার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে শুরু করে দেয়। উসামার ছােট ভাই বকর মুহাম্মদ বিন লাদেন সৌদী আরবের এক বড় ব্যবসায়ী। যিনি বেশীরভাগ সময় লণ্ডনে থাকেন। তার একটি বােনও লণ্ডনে থাকেন যার বিরুদ্ধে সম্প্রতি অভিযােগ করা হয়েছে যে তিনি প্রায়ই ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে আফগানিস্তানে যাতায়াত করেন।
উসামা বিন লাদেন ব্যতিরেকে তার পরিবারের সকল সদস্য তাদের পসন্দ মত নেহায়েত আনন্দময় জীবনযাপন করেন। অন্যদিকে উসামা এর আগে পর্যন্ত (আমেরিকা আক্রান্ত হওয়ার আগে পর্যন্ত) তার চার পত্নী ও ১৫ জন সন্তানসন্ততি সহ আফগানিস্তানের এক ছােট পাহাড়ের গুহায় এমন এক বাড়িতে বসবাস করছিলেন যেখানে না ছিল পানি সরবরাহের ব্যবস্থা, না অন্যান্য সযােগ-সুবিধা। অবশ্য শীতকালে কনকনে ঠাণ্ডা থেকে বাঁচার জন্য স্থানীয় পর্যায়ে নির্মিত হিটার লাগিয়ে দেওয়া হয় যা বেশীরভাগ সময় অকেজো হয়ে পড়ে থাকত বিদ্যুৎ না থাকার কারণে।
এখন দেখার বিষয় হল আফগানিস্তানে অতিবাহিত একদিন মসজিদে অতিবাহিত হাজারাে দিনের থেকে উত্তম বলার প্রবক্তা উসামা বিন লাদেনের অনুগ্রহের মূল্য আফগানী জনগণ কিভাবে পরিশােধ করে!
অনুবাদঃ আবু রিদা
‘নবজাগরণ’ অ্যান্ড্রোয়েড অ্যাপ্লিকেশনটি প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।
‘নবজাগরণ’ এর টেলিগ্রাম চ্যানেলে জয়েন হতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।
‘নবজাগরণ’ এর ফেসবুক পেজে লাইক করতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।