• মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
Sunday, June 22, 2025
নবজাগরণ
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ
No Result
View All Result

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিতে দেশীয় কর্মচারীগণঃ আলোচনা ও বিশ্লেষণ

চৌধুরী আতিকুর রহমান by চৌধুরী আতিকুর রহমান
October 11, 2020
in ভারতবর্ষের ইতিহাস
0
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি

চিত্রঃ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী

Share on FacebookShare on Twitter

ইতিহাসের এক টুকরো সংগ্রহ করার মূল বইটি হল, এশিয়াটিক সোসাইটি পাবলিশিং-এর সি আর উইলসন লিখিত ‘দি আর্লি অ্যানালস অফ দি ইংলিশ ইন বেঙ্গল (প্রথম খন্ড)’ বই থেকে। বাংলায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কার্যকলাপ শুরু হয় হুগলি, কাসিমবাজার ইত্যাদি কুঠিগুলি কেন্দ্র করে। ১৬৩৮-এ বাংলার হুগলিতে প্রথম ইংরেজ কুঠি খোলা হয়। কোলকাতা তখনও ইতিউতি গজিয়ে ওঠা সেঠ-বসাকদের গঞ্জ ছাড়া আর কিছু নয়। উইলসন সাহেব বর্তমান কলকাতা নগরী গড়ে ওঠার পিছনে তিনটি ধাপের উল্লেখ করেছেন। ১৫৩০ নাগাদ পর্তুগিজরা তাদের বড় জাহাজগুলি হুগলি বন্দরের অল্প জলে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে ঝুঁকি নেয়নি। তারা বড় জাহাজগুলি বর্তমান কলকাতার গার্ডেনরিচ-মেটিয়াবুরুজ এলাকায় নোঙ্গর করিয়ে হাওড়ার বেতড়ে অস্থায়ী বাজার তৈরি করে কেনাবেচা করে ছোট ছোট নৌকা বা জাহাজে করে হুগলি বন্দরে নিয়ে যেত। বেতড়ে পর্তুগিজদের সঙ্গে বাণিজ্য করার জন্য গঙ্গার পূর্বপাড়ে সুতানুটিতে কয়েকজন সেঠ ও বসাক গঞ্জ স্থাপন করে। এটাই হল কলকাতা নগরীর পত্তনের প্রথম দশা। এরপর পর্তুগিজরা বসাকদের সঙ্গে আরও ভালোভাবে বাণিজ্য করার জন্য বেতড়ের পরিবর্তে সুতানুটিতে তাদের বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করে। কলকাতা নগরী পত্তনের এটা দ্বিতীয় দশা। যদিও চারটি বসাক পরিবার ও একটি সেঠ পরিবার গঙ্গা ও আদিগঙ্গার সংযোগস্থলে (বর্তমান হেস্টিংস, খিদিরপুর) তাঁদের বসতি স্থাপন করেছিলেন। এঁরা জঙ্গল পরিষ্কার করেছিলেন, পুকুর খনন করেছিলেন, ঘরবাড়ি বানিয়েছিলেন, মন্দির তৈরি করে গোবিন্দজির মূর্তি স্থাপন করেছিলেন। এরপর স্টাফোর্ড সাহেবের ১৬৭৯-তে গার্ডেনরিচে নোঙ্গর করে গোবিন্দপুরে দোভাষী খোঁজা ছিল কলকাতা নগরী পত্তনের তৃতীয় ও অন্তিম দশার শুরু। বাংলা তথা ভারতবর্ষ দখলের প্রথম প্রয়াসে মুঘলদের হাতে পিটুনি খেয়ে মুঘলদের থেকে দূরে প্রশস্ত গঙ্গা নদীর পূর্বপাড়ে জোব চার্নক কুঠি স্থাপনে মনস্থ করেন। কলকাতা নগরীর পত্তনে সেঠ-বসাকদের মূল কৃতিত্ব ছিল।

জব চার্নক
চিত্রঃ জব চার্নক, navrangindia

নাম ধরে কোম্পানির দেশজ কর্মচারীদের কার্যকলাপ বর্ণনায় প্রথমেই শুরু করি ৭৪,৭৫ পাতা থেকে। সেখানে বালচাঁদ নামে এক মুঘল কর্মচারীর নাম পাচ্ছি। কুঠিয়াল হেজেস সাহেব তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার জন্যে এবং ভিন্ন এক ইংলিশ কোম্পানি খোলার কারণে পিট আর ডোরেলের বিরুদ্ধে ঢাকায় শায়েস্তা খাঁ ও হুগলির মুঘল কাস্টম অফিসার বালচন্দ্রকে অভিযোগ করে। তবে বালচন্দ্র কিছুই করেনি। উইলসন সাহেব বালচাঁদ, বালচন্দ্র এবং বুলচান্দ এই তিনটি নাম একই ব্যক্তির ক্ষেত্রে বোঝাতে চেয়েছেন। ১৬৮২- তে হুগলি পৌঁছে তিনি দেখলেন বুলচান্দের অসহযোগিতার কারণে কোম্পানির ব্যবসা পুরোপুরি স্তব্ধ হয়ে গেছে। তিনি বলেছেন ঢাকায় গিয়ে শায়েস্তা খাঁর সঙ্গে বৈঠক করেও সমস্যার বিন্দুমাত্র সমাধান হয়নি। এমনকি এটাও বলেছেন, ঘুষ দিয়েও ঠিক কাজ হয় না। বাংলা দখলের প্রথম প্রয়াসেই তাই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল বালচন্দ্র ও তার সহকারী পরমেশ্বরকে বন্দি করে মুঘলদের সঙ্গে শক্তিপরীক্ষা শুরু হোক।

বোঝাই যাচ্ছে মুঘলরাজে হিন্দু কর্মচারীরা এইরকম উল্লেখযোগ্য ছিলেন যে তাঁদের আটক করলেই মুঘলদের গায়ে আঁচড় পড়ত। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিও তাঁদের দেশজ কর্মচারীদের মধ্যে হিন্দু কর্মচারী বেশি রেখেছিল।

১৬৫০-৫৭-র মধ্যে এক বর্ণনায় দেখতে পাচ্ছি, নারায়ণ নামক ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির এক ব্রোকার যিনি ১৬৩৩ থেকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে রয়েছেন। খুব একটা দক্ষ কর্মচারী না হলেও কোম্পানি তাকে পুষে রেখেছে।

২৫-শে সেপ্টেম্বর ১৬৭৬ বাংলার নতুন কুঠিয়াল স্ট্রেনসাম মাস্টার কাশিমবাজারে পৌছেই একটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু সমাধানে ব্যপৃত হন। মাস্টারের পূর্বতন কুঠিয়াল ভিনসেন্ট রঘু পোদ্দার নামক কোম্পানির হিসাব রক্ষককে বন্দি করে রেখে যান। রঘু হিসাবে গরমিল করায় ভিনসেন্ট ভেবেছিলেন তার কাছেই হিসাব বহির্ভূত বাড়তি টাকা রয়ে গেছে তাই সেই টাকা উদ্ধারের জন্যই তাকে বন্দী করে রাখা হয়েছিল। কিন্তু ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মধ্যস্থতাকারী, একইসঙ্গে হাজতের সর্বেসর্বা অনন্তরাম রঘুকে এমন প্রহার করে যে রঘু মারা যায়। এই কান্ডে কোম্পানির দেশজ নিম্নপদস্থ কর্মচারীরা বিশাল আন্দোলন শুরু করে। মুঘল সরকারের কানে যাতে এই হত্যাকাণ্ড না পড়ে তার জন্য ১৩ হাজার টাকা কর্মচারীদের দিতে হল। এক পক্ষকাল ধরে কোম্পানির ইংরেজ কর্মচারীদের নিজস্ব বিবাদ ও রঘু হত্যার তদন্ত করে এই রায় দেওয়া হল। হেজেস কোম্পানির কুঠিয়াল হয়ে এলে অনন্তরাম পুনরায় পাদপ্রদীপে আসে। অনন্তরাম সেই সময় জব চার্নকের কাজ করত। হেজেস যখন বললেন, অনন্তরাম ভিনসেন্টের সময়ও অপরাধি ছিল, চার্নক তাকে কোম্পানির ব্যবসা সংক্রান্ত কাজে যুক্ত করেছেন। স্বাভাবিকভাবেই চার্নক অস্বীকার করতে লাগলে অনন্তরামকে সামনে ডেকে এনে বলানো হলো চার্নকের সঙ্গে প্রথম থেকেই ব্যবসা সংক্রান্ত কাজে সে যুক্ত আছে।

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী
চিত্রঃ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী, Image Source: wikimedia

১৬৭৯-তে ক্যাপটেন স্টাফোর্ড ফ্যালকন জাহাজে করে হুগলি নদীর নাব্যতার খোঁজে যাত্রা করেন। তিনি দেশি-বিদেশি জাহাজীদের প্রিয় নোঙরের স্থান গার্ডেনরিচে পৌঁছান। এরপর গোবিন্দপুরের সেঠ-বসাকদের কাছে খোঁজ করতে থাকেন একজন দোভাষীর। দেশীয় মানুষরা দোভাষ কথাটির মানে করেন ধোবা। তাই রতন সরকার নামে এক ধোবাকে স্টাফোর্ডের কাছে পাঠান হয়। রতন সরকার ছিলেন বুদ্ধিমান। পরবর্তীকালে তিনিই ইংরেজ কোম্পানির দোভাষী নিযুক্ত হন।

১৬৮০-তে স্ট্রেনসাম মাস্টার কর্তৃক কাশিমবাজার কুঠি নির্মাণকালে বেশ কিছু ঠিকাদার নিযুক্ত করেন। এই সময়ই এক ঠিকাদার ছিলেন রাজা রায়চৌধুরী। তিনি পরিত্যক্ত গৌড়ের ধ্বংসাবশেষ থেকে ইঁট ও মূল্যবান পাথর খুলে নিয়ে নৌকা যোগে কাশিমবাজার কুঠিতে নিয়ে যেতেন। এর জন্য তিনি যাতায়াতের পারিশ্রমিক পেতেন ৩০০ টাকা। পড়ে পাওয়া চৌদ্দ আনা নির্মাণ সামগ্রীর জন্য ইংরেজ কুঠিয়ালরা কোন খরচ করতেন না।

ইংরেজদের প্রথমবার বাংলা তথা ভারত দখলের প্রয়াসে হুগলিতে গন্ডগোল শুরু হলে শায়েস্তা খান হুগলিতে বিশাল অশ্বারোহী বাহিনী তৈরি করে রাখলেন, পাটনায় হুকুম পাঠালেন সমস্ত ইংরেজ সম্পত্তি ও কুঠি দখল করে নিতে এবং নিজে ঢাকায় কুঠিয়াল ওয়াটসকে আটক করে কুঠির সমস্ত সম্পত্তি দখল করলেন। কিন্তু ঢাকায় বারামল নামক এক ইংরেজ ঘনিষ্ঠ হিন্দু ব্যবসায়ী মাঝখানে পড়ে বিষয়টি মেটাবার চেষ্টা করেন। ১৬৮৬-র ঘটনাক্রমে দেখি হুগলিতে একপ্রকার পরাজিত ও বিব্রত হয়ে জব চার্নক সুতানুটিতে এসে পৌঁছান। সেখানে ২৫-শে ডিসেম্বর পালন করার পর ওই মাসের শেষের দিকে ঢাকা থেকে ওয়াটসকে নিয়ে বারামল এলেন। সুতানুটিতে বসে ১২ টি দাবি পেশের পরামর্শ হল। দাবিগুলি ছিল; কেল্লা বানাবার জন্য ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে পর্যাপ্ত জায়গা খুঁজে দিতে হবে, কোম্পানিকে টাকশাল বসাবার অধিকার দিতে হবে, কোম্পানিকে কোন শুল্ক ছাড়াই ব্যবসা করতে দিতে হবে, হুগলি কান্ডের ফলে মুঘল সৈন্য দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত মালদা কুটির ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। শায়েস্তা খাঁ কিছু সময় নিয়ে জবাব দিলেন, ইংরেজদের ঔদ্ধত্যর জবাব হল তাদের ভারত থেকে বহিষ্কার করা হবে।

১৬৯৮-এ কলকাতার তিনটি গ্রাম সাবর্ণ চৌধুরীদের নিকট থেকে কিনে নিয়ে রাজস্ব আদায়ের অধিকার পাওয়ার পর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি একজন নির্ভরযোগ্য দেশীয় খাজনা আদায়কারীর (Black Collector) খোঁজে ছিল। প্রথম ১০ বছর এই পদে লোক এসেছে আর বিদায় নিয়েছে। যতদিন রালফ সেলডন মূল আদায়কারী ছিলেন ততদিন তত্ত্বাবধায়ক বা সহকারি হিসাবে নন্দরামকে রাখা হয়েছিল। সেলডনের পর বাউচার নিযুক্ত হলে নন্দরামকে সন্দেহের চোখে দেখতে লাগলেন। ১৭০৫-এ নন্দরামকে হটিয়ে জগৎ দাসকে ব্ল্যাক কালেক্টর নিযুক্ত করা হল। বাউচারের মতে আত্মসাৎ করার টাকার পরিমান ৩২০০ টাকার মত। বছর দুয়েক পর ১৭০৭-এ জগৎ দাসের কাজেও অসন্তুষ্ট হয়ে তাঁকে হটিয়ে দেওয়া হল। পুনরায় কাজটি নন্দরামই পেয়েছিলেন। কিন্তু শীঘ্রই টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তাঁকে অভিযুক্ত করা হল। সে যেন পালিয়ে হুগলির মুঘল আধিকারিকের আশ্রয়ে যেতে না পারে তার জন্য বন্দী করা হল। কোলকাতার চৌহদ্দির মধ্যে ঢেঁড়া পিটিয়ে দেওয়া হল কেউ যেন নন্দরাম ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে কোন লেনদেন না করে। ওয়েল্টডেন পুনরায় জগৎ দাসকে নিয়োগ করলেন।

জগৎ দাসও একই অভিযোগে অভিযুক্ত হলেন। এরপর উইলসন সাহেব তাঁর বইয়ে লিখেছেন, দেশীয় উচ্চ বা নিম্ন পদের কর্মচারীরা কেন অসাধুতা অবলম্বন করে? তিনি বলেছেন, কোম্পানি যে বেতন দেয় তা ইংরেজদের কাছেও যথেষ্ট নয় বলে তারা ব্যক্তিগত বাণিজ্যে লিপ্ত হত। দেশজ কর্মচারীদের বেতন আরও কম হওয়ায় তাদের ভিন্ন পথ নিতে হত। ১৭৫২ নাগাদ হলওয়েল দেশীয় খাজনা আদায়কারী গোবিন্দরাম মিত্রকে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে অভিযুক্ত করলে গোবিন্দরাম উত্তর দেন তাঁর পদ অনুযায়ী ঠাট-বাট বজায় রাখার জন্য তাঁকে আদায়কৃত খাজনা থেকে কিছু নিতেই হবে এবং বেতন কম হওয়ায় এটাই সবাই করে। দেশীয় খাজনা আদায়কারীরা শুধু আদায়কারীই ছিলেন না তাঁরা দেশীয়দের বিচারকও ছিলেন। তাঁদের অধীনে একদল পুলিশও থাকত। এই পুলিশ দলের নিয়োগ আদায়কারীর হাত দিয়েই হত।

উইলসন সাহেব প্রায়ই একটি শব্দ ওয়াকিল (Vakil) ব্যবহার করেছেন। সাধারণত উকিল বোঝাতে এই শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। তবে উকিলের পাশে এজেন্ট, অ্যাটর্নি ইত্যাদি শব্দও লিখে রেখেছেন। আমার যা মনে হয়েছে তা হল এই উকিলের কাজ হল কোম্পানির সঙ্গে মুগল দরবারের যোগাযোগ রাখা এবং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পক্ষে কাজ করা। এঁরা সকলেই কোম্পানির বেতনভুক ছিলেন। লতমন্দ (লক্ষ্মণ) উকিল ১৭০৩-এর অক্টোবর মাসের খরচ হিসাবে পেয়েছেন ১ টাকা বেতন। ডিসেম্বর ১৭০৩, জানুয়ারি ১৭০৪-এ বেতন পাচ্ছেন পাঁচ টাকা করে। মার্চ মাসে ঠিক হল হুগলির মুঘল দরবারে একজন উকিলকে পাঠানো হবে। কারণ, একটি ফরমান আসছে এবার থেকে রাজমহলে শাহজাদা ও তাঁর কাজি সমস্ত ইউরোপীয় নিযুক্ত উকিলদের নিকট থেকে শ্রবণ করে অভিযোগগুলি সমাধানের চেষ্টা করবেন। রামচন্দ্রকে কোম্পানির উকিল নির্বাচিত করে হুগলিতে পাঠানো হল। তিনি ফৌজদার, বক্সি ও ওয়াক্কিয়ানবীশকে জানাবেন, তিনি ইংরেজ পক্ষ থেকে উকিল নির্বাচিত হয়েছেন। যদি ফৌজদার তাঁদের কাছে কিছু কামনা করেন, তা জানানোর জন্য একটি নোটিশ পাঠালে ভালো হয় এবং তাতে উল্লেখ করে দেন কখন, কোন স্থানে দেখা করা যেতে পারে। যদি প্রয়োজন হয় তবে ঢাকার দেওয়ানি কার্যালয় থেকে খরচ কমানোর জন্য উকিলকে সরিয়ে নেওয়া হবে। রামচন্দ্রর বেতন ঠিক হল কুড়ি টাকা প্রতি মাস। এছাড়াও তিনি অতিরিক্ত পাঁচ টাকা পাবেন, নিয়মানুযায়ী ২ পিয়ন -এর জন্য। যদিও রামচন্দ্রের উপর অভিযোগ আনা হয় তিনি কোম্পানির বিষয়গুলিকে হুগলির মুঘল দরবারে ঠিকমত বলতে পারেননি। রামচন্দ্রর কথা মত হুগলির ফৌজদার মির ইবরাহিম দেওয়ান মুর্শিদকুলি খানের সঙ্গে দেখা করবেন। কিন্তু যেহেতু এই মুহূর্তে দেওয়ানের কাছে কোন উকিল নেই তাই একজন উকিল নিযুক্ত করতে হবে। ফৌজদার অভিযোগ করেছেন তাঁর সঙ্গে কোন ইংরেজ দেখা করেননি এবং কোন উপহার পাঠান হয়নি। রামচন্দ্রের মাধ্যমে ইংরেজ পক্ষ খবর পাঠাল সময় এবং স্থান ঠিক করলে শীঘ্রই একজন ইংরেজ দেখা করবেন এবং উপহার হিসাবে হুগলিতে তাদের গুদাম থেকে যে কোনো বস্তু নিতে পারেন। বিনিময়ে দেওয়ানের সঙ্গে দেখা করে একটি সনদের ব্যবস্থা করেন যাতে মুঘল ছোটখাটো অফিসাররা তাদের ব্যবসায় হস্তক্ষেপ না করে।

প্রকৃতপক্ষে ব্যবসা, বহিঃ বাণিজ্য, কাস্টমস, আর্থিক কর্মকাণ্ডের দায়দায়িত্ব ছিল দেওয়ান মুর্শিদকুলি খানের উপর। জুন মাসে দেওয়ান উড়িষ্যা থেকে ফিরলে কোম্পানি রাজারামকে উকিল হিসাবে মুর্শিদকুলি খানের কাছে পাঠাবে এবং কঠোর ভাষায় আর্জি জানানো হবে কোম্পানি এখন একটিই তাই ৬০০০ টাকার পরিবর্তে ৩০০০ টাকা শুল্ক দেবে এবং অতিরিক্ত ১৫০০ টাকা দেবে না। কারণ ছোটখাটো অফিসাররা তাদের ব্যবসাতে হস্তক্ষেপ করে টাকা আদায় করে নেয়।

আগস্ট মাসে রাজারামকে নির্দেশ দেওয়া হল মেদিনীপুর থেকে যাত্রা করে বালেশ্বরে দেওয়ানের সঙ্গে দেখা করতে। অক্টোবরে রাজারামের নিকট থেকে চিঠি এল দেওয়ানের সঙ্গে দেখা হয়েছে তবে ডাচরা ইতিমধ্যেই ব্যবসার পরোয়ানা পেয়ে গেছে। আরো লিখেছেন, শাহজাদাকে উপহার দিয়ে সন্তুষ্ট করলে কাজ উদ্ধার করা যাবে। কোম্পানি চিঠি লিখল, তাঁকে সন্তুষ্ট করতে কি কি উপহার বা অন্যান্য বস্তু পাঠাতে হবে? যদি অসম্ভব না হয় তো তা পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এই উপহার সামগ্রীতে ইউরোপের কোন বস্তু থাকা রাখা যাবে না। এটাও লক্ষ্য রাখতে হবে যে সকল শর্ত রাখা হয়েছে তা পূর্ণ করতে হবে এবং পাটনার ব্যবসারও অনুমোদন দিতে হবে।

এদিকে রামচন্দ্র হুগলি থেকে লিখলেন সম্রাটের কাছে ঋণী এক ব্যক্তি কলকাতায় আশ্রয় নিয়েছে। যদি কোম্পানি তাকে বন্দী করে না পাঠায় তবে কোম্পানিকেই তার দায় নিতে হবে। তাকে কলকাতা থেকে ধরা হলো এবং রক্ষী দিয়ে হুগলিতে পাঠিয়ে দেওয়া হল। রামচন্দ্রের কাছ থেকে চিঠি এলো শাহজাদাকে দুটি কোম্পানির জন্য এই বিশাল অংকের উপহার পাঠাতে হবে। কোম্পানি মনস্থ করল, ৩০০০ টাকার ইউরোপীয় বস্তু সামগ্রী মুঘল দরবারের বিভিন্ন পদস্থ কর্মচারীদের জন্য পাঠানো হবে।

রাজারাম বালেশ্বর থেকে লিখলেন, দেওয়ান কোন বস্তুতে উপহার নেবেন না বরং টাকা পয়সায় নেবেন। তিনি এমনকি দুটি কোম্পানির একটি কোম্পানিতে পরিণত হওয়ার বিষয়টিই মানতে চাইছেন না। তিনি দুটি কেম্পানির সমসাময়িক ৩০০০০ টাকা চেয়েছেন। লিখেছেন আমরা দেওয়ানকে ১৫ হাজার টাকাতে রাজি করিয়ে নিতে পারব। ইংরেজরা রাজি হয়ে ব্যবসার সনদের সঙ্গে সঙ্গে পাটনার ব্যবসার সনদও জুড়ে দিল।

১৭০৩-১৭০৪-এই মুর্শিদকুলি খান ঢাকার দেওয়ানি দপ্তর তুলে নিয়ে এসে মুর্শিদাবাদে স্থাপন করেন। কারনই হল আর্থিক কর্মকান্ডের বেশিরভাগই বাংলার পশ্চিম অংশে হত। ইংরেজদের সঙ্গে ৩০০০ টাকার চুক্তি শাহ সুজার আমলে হয়। আওরঙ্গজেব ৩.৫ পার্সেন্ট হিসাবে আরও ১৫০০ টাকা কর চাপান। এই কর দেবে না বলেই ইংরেজরা ১৬৮৬-৯০ ভারত দখলের একটি প্রয়াস করেছিল এবং বিতাড়িত হয়েছিল। পরে আর্থিক কারণই তাদের পুনরায় বাণিজ্য করতে দেওয়া হয়। ১৭০৪-এ এসে কোম্পানি এই অতিরিক্ত ১৫০০ টাকা দেবে না বলেই ঝামেলা শুরু করে। কিন্তু মুর্শিদকুলি খাঁ এই আব্দার কানেই তোলেননি। ১৭১৭-তে ফারুকশিয়ার ইংরেজদের দাবি মেনে নেন।

১৭০৬-এর জুলাই ১৮ মানিকচাঁদের নিকট থেকে পরামর্শ এল, পাটনা স্থিত দেওয়ানকে ৩০০০ (উইলসনের মতে ৩০ হাজার টাকা হবে, ভুল করে ৩ হাজার লেখা হয়েছে) টাকা পেশকস হিসাবে দিলে কোম্পানি যেমনভাবে ব্যবসা করছিল সেই ভাবেই করবে। তবে বাদশাহর শুল্ক অফিসার বাধা দিতে পারে তাই তার জন্য ২০০ টাকার ইউরোপীয় বস্তু রাখা হল।

সি আর উইলসনের মতে, ষোড়শ শতকে মুকুন্দরাম সেঠ চারজন বসাকের সঙ্গে গোবিন্দপুরে বসবাস শুরু করেন। মুকুন্দরামের অষ্টম উত্তরপুরুষ ছিলেন কেনারাম। কেনারামের তিন পুত্র জনার্দন, বারানসি ও নন্দরাম। এদের মধ্যে জনার্দন বড়; শক্তপোক্ত, দীর্ঘাকার, শ্বেতকায় ও সুদর্শণ। জনার্দন কোম্পানির নির্বাচিত চক্রাকার সরকারের উকিল, বেনিয়ান ও ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি উদার ও উচ্চমনের অধিকারী ছিলেন। তাঁর সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিরা তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা এবং আস্থা জ্ঞাপন করতেন। স্ত্রীর নাম ছিল টুনুমণি। তিনি দান ও বৃন্দাবনে দেবোত্তর সম্পত্তি এবং কোতরঙে ১২ টি শিব মন্দির নির্মাণের জন্য বিখ্যাত ছিলেন। বৈষ্ণবচরণ ছিলেন জনার্দনের পুত্র এবং তিনিও সুনাম অর্জন করেছিলেন। ১৭০৭-এর ১৮-ই অক্টোবর জনার্দন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির উকিল নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি কোম্পানির দেশীয় কর্মচারীদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য ছিলেন। ৯ ফেব্রুয়ারী ১৭১২ তিনি মারা গেলে তাঁর ভাই বারানসি কোম্পানির উকিল নিযুক্ত হন। জনার্দন সেঠ, হুগলির নতুন ফৌজদার হয়ে জয়নুদ্দিন খান এলে কোম্পানির তরফ থেকে দেখা করেন। ফিরে এসে তিনি কোম্পানিকে বলেন, ফৌজদার অত্যন্ত হৃদতার সঙ্গে তাঁকে গ্রহণ করেছিলেন এবং বলেন কলকাতা ঘুরে যাবেন। তবে বোঝায় যায় কোম্পানির উচিৎ তাঁর কাছে প্রথমে প্রতিনিধি পাঠানো। জনার্দনের কথামত কোম্পানির তরফ থেকে মিস্টার চিট্টি ও মি. ব্লাউন্ট হুগলি গিয়ে ফৌজদারের সঙ্গে দেখা করেন। অক্টোবর মাসেই জনার্দন সেঠ, গোপাল সেঠ, জাদু সেঠ, বারানসি সেঠ ও জয়প্রকাশকে দায়িত্ব দেওয়া হল কেল্লার চৌহদ্দি থেকে উত্তরে শহরের শেষ পর্যন্ত রাস্তাটি মেরামত করার। জুন মাসেই কোম্পানির মিটিং-এ ঠিক করা হয়েছিল শহর পত্তনের আগেই এই এলাকাটিতে তাদের বাগান ছিল। তাই তারা কোম্পানির ব্যবসায়ী এবং এলাকার বাসিন্দা হওয়ায় ভাড়া হিসাবে ৮ আনা প্রতি বিঘা তবে ৫৫ টাকার বেশি হবে না, দেওয়া হবে (হিসাব মত ১১০ বিঘা হয়)। ১৭০৯-এর মে মাসে খবর পাওয়া গেল মীর মোহাম্মদ রেজা যিনি শাহজাদার কোষাগারের তত্ত্বাবধায়ক হুগলিতে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার উচ্চপদস্থ কর্মচারী সরবুলান্দ খানের সঙ্গে দেখা করতে আসছেন। মোহাম্মদ রেজা মুঘল কর্মচারী হয়েও কোম্পানির প্রতি নরমপন্থী ছিলেন। উকিল জনার্দন সেঠ ও আখন্দকে হুগলি পাঠানো হল। জনার্দনের সঙ্গে রেজার জন্য ৫০০ টাকার মত উপঢৌকন পাঠানো হল। কারণ, গতবছর রেজা সাহেব হুগলি ফৌজদারের সঙ্গে কোন একটি বিষয়ে সমঝোতা করে দিয়েছিলেন। যদি তিনি দু-তিনদিন থাকেন তাহলে মিস্টার চিট্টিকে পাঠানো হবে যাতে সরবুলান্দ খানের কাছ থেকে সনদ হাসিল করা যায়। জনার্দন সেঠ হুগলি থেকে ফিরে এসে বললেন, মহম্মদ রেজা হৃদতার সঙ্গে তাঁদের গ্রহণ করেছিলেন এবং প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, কোম্পানির জন্য যা করার তিনি করবেন। তিনি কাউন্সিলকে একটি চিঠিও পাঠিয়েছেন, ‘তিনি কোম্পানিকে তাদের নিজের মত ব্যবসা করতে দিতে চান।’

১৭০৭-এর ৩-রা অক্টোবর গোবিন্দসুন্দর (গোবিন্দ সুঁড়ি) ও মঞ্জু আশকে মদ্য প্রস্তুতি ও প্রমোদ ভবনের জন্য লাইসেন্স দেওয়া হল। ১৭০৭-এ লাইসেন্স বাবদ ১৩০০ টাকা পরিমান আয় হয়েছিল, গোবিন্দ সুন্দরের অংশ ছিল ৫০০ টাকা। কোম্পানির কর্মচারীদের বলা হত উকিল, বেনিয়ান, মুৎসুদ্দি, পোদ্দার, লেখক, তাগাড়গির ইত্যাদি। ১৭১০-এর এদের প্রত্যেকেরই নির্দিষ্ট বেতন ছিল। যদিও নিশ্চয়তা দেওয়া হল যে তাদেরকে সরিয়ে দেওয়া হবে না বা চাকরি চলে যাবে না, তবে বেতনের পরিবর্তে দস্তুর হিসাবে ব্যবসার এক টাকার এক আনার চতুর্থাংশ পাবে। পদ অনুযায়ী তা ভাগ করে দেওয়া হবে। বেতন মোগল দরবারের থেকে কম হলেও কোম্পানির দেশজ ব্যক্তিবর্গ ১৭৫৭-র পলাশী প্রহসনের পর, ১৭৬৫-র দেওয়ানি পর আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছিল। এরাই ইংরেজদের শোষণের ফলে মৃত কৃষক, তাঁতি, সেনাদল ও প্রাচীন জমিদার বর্ধমানের রাজা, বীরভূমের খাঁ রাজা, কৃষ্ণনগরের রায় রাজা, বিষ্ণু পুরের মল্ল রাজা ইত্যাদিদের স্থানে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে নব্য জমিদার হয়ে বসে। এদের লক্ষ্য প্রজাহিতৈষণা ছিল না বরং লক্ষ্য ছিল সব রকমভাবে দেশীয় ব্যক্তিবর্গকে শোষণ করে ইংরেজদের কল্যাণে লাগা।

পঞ্চানন কুশারী কাকা শুকদেব কুশারীকে নিয়ে ভাগ্যান্বেষণে যশোর থেকে সপ্তদশ শতকের শেষ দশকে গোবিন্দপুরে চলে আসেন। তখনও ইংরেজরা মুঘলদের দয়ার মুখাপেক্ষী। তবে গোবিন্দপুরে, বর্তমান গার্ডেনরিচে বেতড়ের আশেপাশে ষোড়শ শতকে প্রথমে পর্তুগিজ ও পরে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির জাহাজগুলি এসে ভিড়ত। নাব্যতা হারিয়ে আদি সপ্তগ্রাম হুগলির রমরমা কমতে থাকলে সেখানকার সেঠ বসাকরা তাদের ব্যবসা পত্র নিয়ে সুতানুটি, গোবিন্দপুরে ব্যবসা করতে এসেছিল। কুশারী পরিবার ব্রাহ্মণ ছিলেন পূজা আচ্চা ছাড়া হাতের কাজ জানতেন না। তাই বিদেশি জাহাজ গুলিতে জল, খাদ্য, পণ্য সরবরাহ করে জীবিকা অর্জন শুরু করলেন। লেখাপড়া জানতেন, তাই ইংরেজি শিখে ফেললেন, সেঠ বসাক ও অন্ত্যজ শ্রেণীর যজমানি করে ঠাকুর উপাধি পেলেন। গোরা ইংরেজরাও বলতে লাগলেন ঠাগুর বা টেগর। এতক্ষণে বুঝতে পারছেন আমি কাদের কথা বলতে চাইছি। কবিগুরুর পরিবারের কলকাতায় পদার্পণের প্রাথমিক দিনগুলো ছিল এইরকমই। পঞ্চাননের ২ ছেলে জয়রাম ও সন্তোষ রাম। পঞ্চানন জয়রামকে ১৭০৭ সালে চক্রাকার কোম্পানি সরকারের কালেক্টার রালফ সেলডনের সহকারী রূপে কর আদায় ও জমি জরিপের কাজ জুটিয়ে দিলেন। পরে সন্তোষরামও এই কাজে যুক্ত হলেন। তখনও ইংরেজরা মুঘলদের মুখাপেক্ষী। তবে তিনটি গ্রামের ইজারা নিয়ে ছোটখাটো জমিদার হয়ে বসেছে। সুতানুটি, কলকাতা, গোবিন্দপুর আড়ে-দিঘে বাড়ছে, ব্যবসায়ীরা আসছে, খাজনা আদায় হচ্ছে, জমি জরিপ হচ্ছে নগর পত্তন হচ্ছে। পঞ্চানন, জয়রাম, সন্তোষ রামরা ফুলেফেঁপে উঠছেন। বর্তমান ধর্মতলায় ছিল তাঁদের আদি বাড়ি। গঙ্গার পাড়ে গোবিন্দপুরে ছিল তাঁদের বাগানবাড়ি। ১৭৪১-৪২-এ বর্গী আক্রমণ রুখতে যে মারাঠা ডিচ খোঁড়া হয় তার ঠিকাদারী ও তদারকির কাজ পান জয়রাম। পলাশী প্রহসনের পর বছর ফোর্ট উইলিয়াম সম্প্রসারণের কাজে গোবিন্দপুরে বহু মানুষ ভিটেমাটি ছেড়ে অন্যত্র চলে যান। ঘোষাল, ঠাকুররাও চলে যান। জয়রামের ছেলে গোবিন্দ রাম পান ফোর্ট উইলিয়াম নির্মাণ তদারকির কাজ। জয়রামের অপর দুই ছেলে নীলমনি ও দর্পনারায়ন। ১৭৬৫-র সনদ লাভের পর দুই ভাইয়ের একান্নবর্তী পরিবারের নীলমণি ওড়িশার কালেক্টরের সেরেস্তাদার রূপে কটক চলে যান। এরপর একই কাজ নিয়ে যান চট্টগ্রামে। তিনি খাই খরচা বাদে সমস্ত টাকা পাঠাতেন ভাই দর্পনারায়নকে। দর্প নারায়নও পাথুরিয়াঘাটের গঙ্গাতীরের জমি জায়গা, বাড়ি দেখাশোনা করতেন আর চন্দননগরের ফরাসি কুঠির দেওয়ান রূপে কাজ করতেন। দশ বছর পর নীলমণি ঘরে ফিরলে ভাইয়র সঙ্গে সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ শুরু হয়। নিষ্ঠাবান ধার্মিক, বৈষ্ণব নীলমণি পাথুরিয়াঘাটার বাড়ি ছেড়ে শিষ্য বৈষ্ণবদাস শেঠ কতৃক জোড়াসাঁকোতে লিখে দেওয়া দেবোত্তর সম্পত্তির উপর ছোট্টোখাট্টো একটি বাড়ি বানালেন। এর পরের ইতিহাস আমাদের জানা। ইংরেজদের তাঁবেদারী করলেও মুঘল বা নবাব বিরোধী বিশ্বাসঘাতকতা কবির পরিবারে সে রকম দেখা যায়নি।

ক্ষমতায় আসার পর কোম্পানি বাহাদুর এই কর্মচারীদের প্রভূত সাহায্য করে। লালাবাবু বা কৃষ্ণ চন্দ্র সিংহ ছিলেন সর্বত্যাগী বৈষ্ণব সাধু। এতই পয়সা ছিল যে বৃন্দাবনে জমি কিনে সেখানেই শেষ জীবন কাটান। এঁর পিতামহ ছিলেন গঙ্গাগোবিন্দ সিংহ। গঙ্গাগোবিন্দ সিংহ ছিলেন পলাশি কান্ডের অন্যতম বিশ্বাসঘাতক রাজবল্লভের দেওয়ান। রাজবল্লভ বিশ্বাসঘাতক ছিলেন তার দেওয়ানও নিশ্চয়ই হবেন। চক্রান্তকারীরা পরস্পরের বিরুদ্ধেও চক্রান্ত করতেন। প্রমাণ, হেস্টিংসের যত গুপ্ত পরামর্শের অন্যতম পরামর্শদাতা ছিলেন গঙ্গাগোবিন্দ। তিনি পলাশী কান্ডের অন্যতম কুশীলব নন্দকুমারের হেস্টিংস কর্তৃক ফাঁসিতে ঝোলানোর অন্যতম পরামর্শদাতা ছিলেন। পুরস্কার স্বরূপ গঙ্গাগোবিন্দ হেস্টিংসের নিকট থেকে পেয়েছিলেন কোলকাতার রাজস্ব কাউন্সিলের দেওয়ান পদ। তা থেকেই পয়সা যা পৌত্র পর্যন্ত ফেলে-ছড়িয়ে খাওয়ার মত ছিল।

রামদুলাল দেব দমদমের নিকটবর্তী রেকজানি গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। প্রথম জীবনে হাটখোলার দত্ত ৫ টাকা মাইনের বিল সরকার ছিলেন। পরে ১০ টাকা বেতনে কোম্পানির জাহাজ সরকারের কাজ নেন। একসময় নিজের জাহাজ কেনেন, একসময় নিজের জাহাজ কেনেন, মার্কিন জাহাজের মুৎসুদ্দি ও বেনিয়ান হন। প্রচুর টাকা কামান। খিদিরপুরের ভুকৈলাশ রাজবাড়ির প্রতিষ্ঠাতা জয়নারায়ণ ঘোষাল। এঁর পিতামহ কন্দর্প ঘোষাল কোম্পানি আসার আগে থেকেই গোবিন্দপুরের বাসিন্দা ছিলেন। সেঠ-বসাকদের পুরুত ঠাকুর ছিলেন। গোবিন্দপুরে ফোর্ট উইলিয়াম প্রতিষ্ঠার সময় (পলাশি কান্ডের আগে-পরে) খিদিরপুরে চলে আসেন। এই পরিবারের গোকুল চন্দ্র ঘোষাল ছিলেন ফোর্ট উইলিয়ামের গভর্ণর (১৭৬৭-১৭৬৯) ভেরেলস্ট সাহেবের দেওয়ান। দেওয়ানী করে সন্দীপ, ভুলুয়া, ঢাকা, ২৪ পরগনা, ত্রিপুরাতে বিশাল জমিদারীর অধিকারী হন।

এতক্ষন পলাশী প্রহসনের আগে ও পরে ইংরেজ কোম্পানির কর্মচারীদের বিষয় নিয়ে লিখেছি। এখন লিখব ফ্রেঞ্চ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্মচারীর কথা। ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরী ছিলেন চন্দননগরের ফরাসি বাণিজ্যের প্রধান সহায়। বাণিজ্য সহায়তার পাশাপাশি তিনি ছিলেন বড় বেনিয়ান, রাজস্ব আদায়ের ইজারাদার। তাঁর প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন স্বনামধন্য ফরাসি ডুপ্লে সাহেব। ডুপ্লে ১৭৫৪ নাগাদ ভারত ছেড়ে চলে যান। এর থেকে প্রমান হয়, পলাশী প্রহসনের আগে থেকেই ফরাসিদের দক্ষিন হস্ত ছিলেন ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরী। ১৭৪০-এ চন্দননগরে নন্দদুলাল মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। মন্দিরের অতিথিশালায় না জেনে এক জলঅচল দাসীকে রাখায়, এই দাসীকে কেন্দ্র করে তিনি চন্দননগরের ব্রাহ্মণ সমাজে ঠেকো বা পতিত ঘোষিত হন।

১৬৫১ খ্রিস্টাব্দে বাংলার সুবেদার শাহ সুজা মাত্র ৩০০০ টাকার বিনিময়ে ইংরেজদের যে বাণিজ্যিক সুবিধা দিয়েছিলেন তা শুধু ইউরোপীয় দেশগুলির বাণিজ্যিক সুবিধা খর্ব করেনি বরং দেশীয় বণিকদেরও ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল। ইন্ডিয়া কোম্পানির এই বাণিজ্যিক সুবিধা আদায়ের পিছনে ছিলেন গ্যাব্রিয়েল ব্রাউটন নামক এক ইংরেজ চিকিৎসক। আওরঙ্গজেব দেশি-বিদেশি বাণিজ্যিক সংস্থাগুলির ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পেরে, অন্যান্য বিদেশি বাণিজ্যিক সংস্থা গুলির সঙ্গে সঙ্গে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির উপরেও সমহারে কর দানের আইন করেন। এর ফলে ইংরেজ কোম্পানি ভারত দখলের একটা স্বপ্ন দেখেছিল যদিও তা ফলপ্রসূ হয়নি।

কিন্তু ১৭১২ খ্রিস্টাব্দে ফারুকশিয়ার তাঁর স্বল্পকালীন সময়ে ইংরেজ চিকিৎসক (শাহ সুজাও ইংরেজ ডাক্তারের খপ্পরে পড়েছিলেন) হ্যামিল্টনের আর্জি মত সেই ৩০০০ টাকা শুল্কের বিনিময়ে ইংরেজদের বাণিজ্য সুবিধা দেন। ইংরেজরা এই সুবিধা পেয়ে যতই ফুলেফেঁপে উঠতে লাগল ততই তাদের ভারতে রাজ্য সাম্রাজ্য বিস্তারের ইচ্ছা প্রকট হতে লাগলো। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার অঙ্গ হিসাবে বহু ভেবেচিন্তেই তাদের কর্মচারী বহরে উচ্চবর্ণীয়দের নিযুক্ত করেছিলেন।

মুর্শিদকুলি খাঁ আওরঙ্গজেব নিযুক্ত রাজস্ব আদায়কারী ছিলেন। ১৭১৭ থেকে দিল্লির সিংহাসন নিয়ে লড়াই দেখেশুনে স্বাধীন আচরণ করতে স্বাধীন আচরণ করতে থাকেন। তিনিও রাজকার্য, জমিদারী ও ব্যবসাতে হিন্দু প্রাধান্যর নীতি নেন। বিশ্ব ব্যাঙ্ক ছিলেন জগত শেঠ পরিবার, কোলকাতায় মুঘল তথা নবাবের আদায়কারী ছিলেন ছিলেন আদায় কারী ছিলেন উমিচাঁদ। জমিদারীও কাড়া হয়। নদিয়া-যশোহরের মাহমুদপুর ও জালালপুর পরগণার মুসলিম জমিদারী কেড়ে দেওয়া হয় নাটোরের রামজীবনকে। বারভুঁইয়ার ঈসা খাঁ-র বংশধরদের নিকট থেকে আলপ শাহী ও মোমেন শাহী কেড়ে নিয়ে দুই হিন্দু রাজস্ব কর্মচারীর হাতে দেওয়া হয়। এইভাবে বর্ধমান, নদীয়া, দিনাজপুর, নাটোর, দীঘাপতিয়া, মুক্তাগাছা, মোমেনশাহী হিন্দু জমিদারী বা রাজস্ব আদায়কারী সৃষ্টি হয়।

সম্রাট ঔরঙ্গজেব
চিত্রঃ ঔরঙ্গজেব, Image Source: indiaolddays

নবাব আলিবর্দীর সময় কোম্পানীর গোলন্দাজ বাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার কর্নেল স্কট বিলেতের কর্তৃপক্ষের নিকট এক পত্রে লিখলেন, ‘যদি ইউরোপীয় সৈন্যগণ ভালোভাবে অভিযান শুরু করে এবং হিন্দুদিগকে উৎসাহিত করা হয় তারা ইংরেজদের সঙ্গে যোগ দেবে। এই কার্যে উমিচাঁদ ও অন্যান্য হিন্দু প্রধানদের সহযোগিতা পাওয়া যাবে। হিন্দু জমিদার ও কর্মচারীদের উপর তাদের যথেষ্ট প্রতিপত্তি আছে।’ (ব্রিজেন কে গুপ্ত, সিরাজদৌল্লা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিি- পৃষ্ঠা-৪১)

কৃতজ্ঞতা স্বীকার:

  • ১) দি আর্লি অ্যানালস অফ ইংলিশ ইন বেঙ্গল-সি আর উইলসন, এশিয়াটিক সোসাইটি, পার্ক স্ট্রিট।
  • ২) কলকাতার বাবু ও তাদের মৃত্যু বৃত্তান্ত, ক্রীতদাস ও কোলকাতার বাবুদের দাসি বিলাস- সিদ্ধার্থ বসু।
  • ৩) দ্বারকানাথ ঠাকুর, কৃষ্ণ কৃপালনি-এনবিটি।
  • ৪) বাংলার মুসলমানদের ইতিহাস-এম এ রহিম।

 

লিখেছেনঃ চৌধুরী আতিকুর রহমান

Post Views: 4,602
Tags: ইতিহাসইংরেজইস্ট ইন্ডিয়াকোম্পানিজব চার্নকব্রিটিশ সাম্রাজ্য
ADVERTISEMENT

Related Posts

সম্রাট আওরঙ্গজেবের শাসনকাল : (১৬৫৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৭০৭ খ্রিস্টাব্দ)
ভারতবর্ষের ইতিহাস

সম্রাট আওরঙ্গজেবের শাসনকাল : (১৬৫৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৭০৭ খ্রিস্টাব্দ)

লিখেছেনঃ মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম মুঘল সম্রাট শাহজাহানের পুত্রদের মধ্যে সর্বাধিক শক্তিশালী, বুদ্ধিমান ও রাজনৈতিকভাবে দক্ষ ছিলেন সম্রাট আওরঙ্গজেব। ইতিহাসে...

by মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম
June 19, 2025
বিদ্যাসাগরের প্রতি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বিদ্বেষ ও বিরোধীতা
ভারতবর্ষের ইতিহাস

বিদ্যাসাগরের প্রতি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বিদ্বেষ ও বিরোধীতা

একজন বিদ্যার সাগর, আর একজন সাহিত্যের সম্রাট। উভয়েই উনিশ শতকের বিখ্যাত মনীষী ও লেখক এবং পরস্পরের সমকালীন। উনিশ শতকের...

by কামরুজ্জামান
November 13, 2024
মন্দির ধ্বংস এবং ইন্দো-মুসলিম রাষ্ট্রসমূহ
ভারতবর্ষের ইতিহাস

মন্দির ধ্বংস এবং ভারতে মুসলিম শাসনের ইতিবৃত্ত

লিখেছেনঃ রিচার্ড এম. ইটন সম্প্রতি, বিশেষ করে ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর, দক্ষিণ এশিয়ার মন্দির এবং মসজিদের রাজনৈতিক...

by অতিথি লেখক
June 19, 2025
প্রকৃতি, নান্দনিক চৈতন্য ও মরমিবাদ: বাংলার আরবি-ফার্সি শিলালিপির আধ্যাত্মিক দিক
ইসলামিক ইতিহাস

প্রকৃতি, নান্দনিক চৈতন্য ও মরমিবাদ: বাংলার আরবি-ফার্সি শিলালিপির আধ্যাত্মিক দিক

চিত্র ৪.১ (শিলালিপি নং): পাণ্ডুয়ার শায়খ নূর কুতব আল আলমের সমাধিফলকে ব্যবহৃত সাতটি আধ্যাত্মিক উপাধি...

by মুহাম্মাদ ইউসুফ সিদ্দিক
November 7, 2024

POPULAR POSTS

  • সুলতান মাহমুদ

    সুলতান মাহমুদের ভারত অভিযান ও সোমনাথ মন্দির প্রসঙ্গ (১ম পর্ব)

    181 shares
    Share 181 Tweet 0
  • বাউরী সম্প্রদায়ের উৎপত্তির ইতিহাস ও ঐতিহাসিক পর্যালোচনা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • আর্যদের ভারত আগমন, বিস্তার, সমাজ ও সভ্যতা: এক ঐতিহাসিক পর্যবেক্ষণ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে বৌদি কাদম্বরী দেবীর সম্পর্ক আদৌ কি প্রেমের ছিল?

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • হিন্দু পদবীর উৎপত্তির ইতিহাস, বিবর্তন ও ক্রমবিকাশঃ বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

Facebook Page

নবজাগরণ

ADVERTISEMENT
নবজাগরণ

'Nobojagaran' is a website of its kind where you can gather knowledge on all the unknown facts of the world. We human beings always have a thirst for knowledge. Nobojagaran takes its first steps to quench this thirst of ours. We are now in the era of digital world, where we get almost anything online. So how about a bit of knowlyfrom online?

Connect With Us

No Result
View All Result

Categories

  • English (9)
  • অন্যান্য (11)
  • ইসলাম (27)
  • ইসলামিক ইতিহাস (23)
  • ইহুদী (2)
  • কবিতা (37)
  • খ্রিস্টান (6)
  • ছোটগল্প (6)
  • নাস্তিকতা (18)
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (24)
  • বিশ্ব ইতিহাস (24)
  • ভারতবর্ষের ইতিহাস (195)
  • রাজনীতি (38)
  • সাহিত্য আলোচনা (68)
  • সিনেমা (17)
  • হিন্দু (16)

Pages

  • Cart
  • Checkout
  • Checkout
    • Confirmation
    • Order History
    • Receipt
    • Transaction Failed
  • Contact
  • Donation to Nobojagaran
  • Homepage
  • Order Confirmation
  • Order Failed
  • Privacy Policy
  • Purchases
  • Services
  • লেখা পাঠানোর নিয়ম
  • হোম
No Result
View All Result
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi

©Nobojagaran 2020 | Designed & Developed with ❤️ by Adozeal

Login to your account below

Forgotten Password?

Fill the forms bellow to register

All fields are required. Log In

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In
Don't have an account yet? Register Now
1
Powered by Joinchat
Hi, how can I help you?
Open chat
wpDiscuz
0
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x
| Reply