• মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
Wednesday, May 14, 2025
নবজাগরণ
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ
No Result
View All Result

ইমাম বুখারী রহঃ ও খলকে কুরআন (কুরআন সৃষ্টি) এর বিবাদ

নবজাগরণ by নবজাগরণ
March 24, 2021
in ইসলাম
0
ইমাম বুখারী রহঃ ও খলকে কুরআন (কুরআন সৃষ্টি) এর বিবাদ

Al quran

Share on FacebookShare on Twitter

লিখেছেনঃ মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম

২৫০ হিজরী সনে ইমাম বুখারী (রহঃ) নিশাপুর (ইরান) আসেন। নিশাপুর সেই যুগে ইলমে হাদীসের মারকাজ ছিল। ইমাম মুসলিম (রহঃ) এবং তাঁর উস্তাদ ইমাম মুহাম্মাদ বিন ইয়াহইয়া জুহালী (রহঃ) এর মত মুহাদ্দিস সেই মাটি থেকেই উঠে এসেছিলেন। এবং তাঁদের জ্ঞান ও ফজিলতের দ্বারা নিশাপুরকে বহুদুর পর্যন্ত খ্যাতিসম্পন্ন করে দিয়েছিল। তাই ইমাম বুখারী (রহঃ) নিশাপুর পৌঁছে হাদীসের শিক্ষা দান-প্রদানে লেগে গেলেন। শহরের উলামারা বেশীরভাগ সময় সেখানে উপস্থিত হতেন। ইমাম সাহেবের হাদীসের জ্ঞান থেকে লাভবান হতেন। স্বয়ং ইমাম মুসলিম (রহঃ) এর এমন অবস্থা ছিল যে, ইমাম সাহেবের প্রাত্যহিক মজলিসে কখনো তিনি অনুপস্থিত থাকতেন না। একদিন ইমাম সাহেবের হাদীসের ভাণ্ডার এবং ইলমের অনর্গলতার দ্বারা তিনি এতটাই প্রভাবিত হলেন যে, নিজেকে সামালতে পারলেন না। কপালে চুম্বন করলেন এবং তিনি উৎফুল্ল হয়ে বললেন, “হে হাদীসের সাম্রাজ্যের বাদশাহ! আমাকে অনুমতি দিন যে আমি কদমবুশি করার সৌভাগ্য অর্জন করতে পারি।”

ইমাম মুহাম্মাদ বিন ইয়াহইয়া জুহালী রহঃ এর মজলিসের ঘটনা

ইমাম মুহাম্মাদ বিন ইয়াহইয়া জুহালী (রহঃ) এমন পর্যায়ের ব্যাক্তি ছিলেন যে ইমাম মুসলিম (রহঃ) এর উস্তাদ এবং নিশাপুরের প্রতিষ্ঠিত মুহাদ্দিস ছিলেন। তিনি নিজের সমস্ত ছাত্রদেরকে হুকুম দিয়েছিলেন যে, ইমাম সাহেবের মজলিসে উপস্থিত হবে। স্বয়ং ইমাম সাহবের খ্যাতি ফজল এবং কামাল এমনভাবে লোকেদেরকে আকর্ষিত করছিল যে, ইমাম জুহালীর মত বুযুর্গের মজলিস নিস্তেজ হয়ে পড়েছিল।

একদিন ইমাম জুহালী (রহঃ) নিজের মজলিসে বললেন, “আমি কাল মুহাম্মাদ বিন ইসমাইল বুখারী (রহঃ) এর সাথে সাক্ষাৎ করতে যাব। যার যাওয়ার ইচ্ছা আছে আমার সঙ্গে যেতে পারো।” এর সাথে ইমাম জুহালী (রহঃ) এর খেয়ালও ছিল যে ইমাম বুখারী (রহঃ) এর জন্যই আমার শিক্ষাঙ্গনে যে নিস্তেজতা ছেয়ে গেছে তার প্রভাব ছাত্রদের উপরও পড়েছে। এই জন্য আমার সাথীদের মধ্যে কেউ এমন কোন প্রশ্ন যেন জিজ্ঞাসা না করে বসে তাতে আমার সাথে এবং মুহাম্মাদ বিন ইসমাইল বুখারী (রহঃ) এর সাথে মনোমালিন্য হয়ে যায়। এবং অমুসলিমদের আহলে সুন্নাতের মতভেদের ব্যাপারে ঠাট্টা করার সুযোগ হাতে না এসে যায়।

সেই জন্য তিনি তাঁর সাথীদেরকে জোর দিয়ে বলেন যে, ইমাম বুখারীর কাছে কোন মতভেদী মাসআলায় প্রশ্ন করবে না। দ্বিতীয় দিন ইমাম জুহালী (রহঃ) নিজের জামাআতের সাথে ইমাম সাহেবের কাছে পৌঁছালেন। কারণবশতঃ সেই পরিস্থিতিরই সৃষ্টি হল যা তিনি ভয় করছিলেন । এক ব্যাক্তি উঠে ইমাম সাহেবকে প্রশ্ন করলেন যে, হে আল্লাহর বান্দা কুরআনের যে শব্দ আমাদের মুখ থেকে বের হয়, সে কি মাখলুক (আল্লাহর সৃষ্টি)? এর প্রকৃত শব্দ ছিল, “লফযী বিল কুরআনী মাখলুকুন”? ইমাম সাহেব চুপ থাকলেন । এরপর সেই ব্যাক্তি পুনরায় প্রশ্ন করলেন। ইমাম সাহেব বাধ্য হয়ে উত্তর দিলেন।

“আফআলুনা মাখলুকাতুন ওয়া আলফাযুনা মিন আফআলিনা” অর্থাৎ আমাদের কর্মগুলো মাখলুক, এবং যে শব্দ আমাদের মুখ থেকে বের হয় সেগুলো আমাদের মুখের ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া হওয়ার কারণে সেগুলো আমাদের ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া। এই সুক্ষ্ণ জবাবকে জনসাধারণ অনুধাবন করতে পারেনি। সেই জন্য ঘটনাকে এমন বাড়িয়ে দেওয়া হল যে, ইমাম সাহেবের প্রতি মানুষের মনে গভীর ভালবাসা ছিল তার মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি হয়ে গেল। কিন্তু যেসমস্ত ব্যাক্তিরা বুদ্ধিজীবি ও সমীক্ষক ছিলেন তাঁরা এই জবাবের গভীরে প্রবেশ করলেন এবং আগের থেকে বেশী ইমাম সাহেবের সম্মান করতে লাগলেন । তাঁদের মধ্যে ইমাম মুসলিম (রহঃ)ও ছিলেন। তিনি যখন বুঝতে পারলেন যে ইমাম জুহালীও এই জবাবের জন্য ইমাম সাহেবের বিরোধী হয়ে গেছিলেন। এবং তিনি নিজের মজলিসে ঘোষনা করে দেন যে, যে ব্যাক্তি “লফযী বিল কুরআনী মাখলুকুন” এর পক্ষাপাতি তারা যেন আমাদের মজলিসে অংশগ্রহণ না করে। তখন তাঁরা কঠিন মনক্ষুন্ন হলেন এবং সমস্ত বসে থাকা ছাত্ররা উঁটে চেপে ফিরে গেলেন। এর দ্বারা ইমাম জুহালী নিজের বক্তব্য সমাপ্ত করেন। (হাদিউস সারী, পৃষ্ঠা-৪৯১)

ইমাম ইয়াহইয়া বিন সায়ীদ ইমাম বুখারী (রহঃ) কে বলেন যে, লোকেরা এসে বলল, আপনি আপনার এই মত থেকে প্রত্যাবর্তন করুন। সমস্ত শহরবাসী আপনার বিরোধী। ইমাম বুখারী (রহঃ) বললেন, “এটা আমার দ্বারা কি করে সম্ভব? কোন জিনিস যদি আমার মত থেকে প্রত্যাবর্তন করতে পারে সেটা হল দলীল।” (তারিখে বাগদাদ, খণ্ড-২, পৃষ্ঠা-৩০, সিয়ারু আলামিন নুবালা, খণ্ড-১২, পৃষ্ঠা-৪৫৪)

আল কুরআন
Al Quran/ Image Source: PIXABAY

আব্বাসী খলিফা মামুনের ঘটনা

আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের ইজমায়ী আকিদা হল কুরআন শরীফকে আল্লাহর মখকুক বা সৃষ্টি বলা যাবে না। আল্লাহ যেমন চিরন্তন ঠিক তেমনি আল্লাহর বানী কুরআনও চিরন্তন। আল্লাহ যেমন মখলুক নন অনুরুপ আল্লাহর বানী কুরআন শরীফও মখলুক নয়। কিন্তু মু’তাজিলাপন্থীদের আকিদা হল আল্লাহ মখলুক নন তবে আল্লাহর বানী আল কুরআন মখলুক। কুরআন শরীফকে মখলুক বলার বিবাদ এক মারাত্মক পর্যায়ের বিবাদ। এই মাসআলার জন্য শত শত আলেমদের প্রাণনাশ হয়েছে। সেই যুগে পাশ্চাত্য দর্শনের প্রভাব বিস্তার করেছিল। আব্বাসী বংশের খলিফা বিশেষ করে সুন্নী খলিফা হারুনুর রশীদের চতুর্থ পুত্র খলিফা মামুন মু’তাজিলা পন্থি ছিলেন এবং পাশ্চাত্য দর্শনের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন। সেজন্যই তার দরবারে মুতাজিলাদের আগমন বেড়েছিল। তাঁর পুরো রাজসভা মু’তাজিলাদের দ্বারা পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল।

খলিফা মামুন তাঁর সাম্রাজ্যের সমস্ত বাসিন্দাদেরকে কুরআন শরীফকে মখলুক বলায় বাধ্য করা হয়েছিল। যাঁরা কুরআনকে মখলুক বলতেন না তাঁদেরকে শূলিতে চড়ানো হত নাহয় নির্মমভাবে হত্যা করা হত। এছাড়া আর কোন পথ ছিল না। সমস্ত ইসলামী সাম্রাজ্য জুড়ে ঘোষণা করা হল যাঁরা আলেম উলামা রয়েছেন তাঁরা যেন কুরআন শরীফকে মখলুক বলে স্বীকার করে নেন। এও ঘোষণা করা হল যে, যাঁরা কুরআন শরীফকে মখলুক স্বীকার করবে না তাঁরা যেন এবং এই আকিদার বিকক্ষে দলীল (প্রমাণ) পেশ করেন এবং মুনাযারা (বিতর্ক) করার জন্য রাজসভায় আনা হয়।  কেউ বেশী বিরোধীতা করলে তাঁকে যেন সেখানেই হত্যা করা হয়।

এই খলকে কুরআনের ফিৎনা শুরু হওয়ার পর মুহাদ্দিসদের প্রাণের সংকট শুরু হয়ে গেল। এই খলকে কুরআনের ফিৎনা খলিফা মামুনের খেলাফতের শুরুতে ২১৮ হিজরী সনে শুরু হয় এবং ২২৮ হিজরী পর্যন্ত চরম পর্যায়ে থাকে। খলিফা মামুনের অন্তরে খলকে কুরআনের মাসআলা এমনভাবে গেঁথে যায় যেন এটাকে অস্বীকার করা মানেই প্রকৃত তওহীদকে অস্বীকার করা। যখন সে শাম প্রদেশের একটি জেলায় ছিল তখন সে বাগদাদের গভর্ণর ইসহাক খাযায়ীকে একটি ফরমান পাঠায়। যেটি হল,

“আমিরুল মোমেনীন এটা বুঝতে পেরে গেছে যে সম্ভবত সমস্ত মুসলমান যারা শরীয়াতের সুক্ষ্ণ বিষয়বস্তু বুঝতে পারেনি তারা কুরআন চিরন্তন হওয়ার পক্ষপাতি। যদিও কুরআন শরীফের আয়াতে এর বিপরীত প্রমাণ রয়েছে। এরা কঠিন জঘণ্য ব্যাক্তি এবং ইবলিশের বার্তাবাহক। বাগদাদের সমস্ত বিচারকদেরকে একত্রিত করে এই ফরমান শুনিয়ে দাও। যারা এটাকে অস্বীকার করবে তাদেরকে বিচারে অক্ষম ঘোষণা করে দাও।”

খলিফা মামুনের এতেও আত্মতৃপ্তি হল না। তিনি সাতজন বিচক্ষন আলেমকে নিজের কাছে ডাকলেন এবং তাঁদের সম্মুখে বসে আলোচনা করলেন। এই বিচক্ষন আলেমরা মামুনের মতবাদের বিরোধী ছিলেন। কিন্তু তরবারির ভয়ে তাঁরা মামুনকে সমর্থন করলেন যদিও তাঁরা অন্তর থেকে এটা মেনে নেন নি। এই আলেমগণও যখন মামুনের বাহ্যিক পক্ষতাপি হয়ে গেলেন তখন তিনি ইসহাকের নামে দ্বিতীয় ফরমান পাঠালেন যে, ইসলামী সাম্রাজ্যের সমস্ত উলামা মাযহাবী পেশওয়াদেরকে এটাকে (কুরআন আল্লাহর মখলুক) স্বীকার করানো হয়। খলিফা মামুনের এই হুকুমের পুরোপুরি পালন করা হয়।

তাঁর যুগে কোন মুহাদ্দিস রেহাই পাননি। শুধুমাত্র ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহঃ)  এবং মুহাম্মাদ বিন নুহ (রহঃ) নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল থাকলেন । তিনি আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআতের ইজমায়ী আকিদা থেকে পিছু হাটলেন না। খলিফা মামুন বুঝতে পারলেন যে যারা তাঁর পক্ষ অবলম্বন করেছেন তাঁরা কেউ অন্তর থেকে তাঁর মতকে মেনে নেননি। শুধুমাত্র প্রাণ বাঁচানোর জন্যই তাঁর মতকে সমর্থন করেছেন। এটা জানতে পেরে তিনি খুবই অসন্তুষ্ট হলেন এবং তিনি হুকুম দিলেন যে তাদেরকে যেন সম্রাটের আস্তানায় আনা হয়। উপস্থিত ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন আবু হাসান যিয়াদী, নজর বিন শামিল, কাওয়ারিয়ী, আবু নসর তামার, আলী বিন মুকাতিল, বশর বিন আল ওলীদ প্রভৃতি মুহাদ্দিসগণ। সম্রাটের সেনারা তাঁদেরকে গ্রেফতার করে শামদেশে নিয়ে যায়।

একদিন ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহঃ) এবং মুহাম্মাদ বিন নুহ (রহঃ) ইমামদ্বয়কে খলিফা মামুন এর সম্মুখে উপস্থিত করা হল এবং খলিফার নিকটবর্তী এক স্থানে তাঁদেরকে অবস্থান করানো হল। কিছুক্ষন পরেই মামুনের এক খাদিম কান্না করতে করতে সেখানে উপস্থিত হলেন এবং ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহঃ)কে লক্ষ্য করে বলতে লাগলেন, “হে আবু আব্দুল্লাহ, আপনার সম্মুখে মহা কঠিন পরীক্ষা । মামুন তরবারি খাপমুক্ত করেছেন। আর রাসুল (সাঃ) এর নামে শপথ করেছেন যে, আহমদ যদি সমর্থন না করেন, তবে এ তরবারি দ্বারা তাঁকে দ্বিখণ্ডিত করবে।”

ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহঃ) এটা শুনে আকাশের দিকে তাকিয়ে বললেন, “হে খোদা তোমার ধৈর্য্য এই দুরাচারকে অত্যক্ত অহঙ্কারী করে তুলেছে। আর আজ তোমার বন্ধুর উপরও তরবারি চালাতে দ্বিধাবোধ করছে না । হে খোদা, তোমার কালাম যদি হয়ে থাকে, তবে তুমি আমাকে সত্যের উপর কায়েম রাখিও । আজ আমি এটার নিমিত্ত সবকিছু বরদাস্ত করতে বদ্ধপরিকর।”

ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহঃ) প্রার্থনা শেষ করার কাছাকাছি পৌঁছেছেন এমন সময় রাত্রিকালের মধ্যেই মামুনের মৃত্যু সংবাদ সারা দেশময় প্রচারিত হয়ে পড়ল। ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহঃ) বললেন, “উক্ত সংবাদে আমি মহাখুশি হলাম। কিন্তু পরক্ষণেই আমি জানতে পারলাম যে মু’তাসিম খলিফারুপে নির্বাচিত হয়েছে। আর মুহাম্মাদ বিন আবী দাউদ উজিররুপে নিযুক্ত হয়েছে। আমার ধারণা জন্মিল যে, এখন পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।”

সত্যিই পরিস্থিতি খারাপ হয়েছিল। খলিফা মামুনের মৃত্যুর পর খলকে কুরআনের ফিৎনা কিছুদিনের জন্য থেমে গিয়েছিল। কিন্তু মামুনের পুত্র মু’তাসিম রাজসভায় আরোহন করলে খলকে কুরআনের বিবাদ আরও তুঙ্গে উঠে এবং সে পিতার থেকে আরও কঠিন এই বিবাদকে উস্কে দেয় এবং মুহাদ্দিসীনগণ কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হন।

একদিন খলিফা মু’তাসিম ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহঃ)কে ডাকল। ইমাম সাহেবকে খলিফার নিকটবর্তী হবার আদেশ দেওয়া হল। তিনি সালাম দিয়ে চুপ করে রইলেন। খলিফা এবং ইমাম সাহেবের মধ্যে কিছু আলাপ আলোচনা হল। ইমাম সাহেবের জবাবের গভীরতা দেখে খলিফা মু’তাসিম মুগ্ধ হল। এমনকি ইমাম সাহেবকে মুক্তি দানের কথাও সে ভেবেছিল কিন্তু সে সুবুদ্ধি তার হয়নি।

খলিফা মামুন মুতাজিলাপন্থী ছিলেন

খলিফা মু’তাসিমের আদেশে ইমাম সাহেবকে আব্দুর রহমান অনেক প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করল। আব্দুর রহমান প্রশ্ন করল, “আচ্ছা, এমন সময় কি ছিল যে, আল্লাহ ছিলেন এবং কুরআন ছিল না?” ইমাম সাহেব উত্তরে বললেন, “এমন সময় কি ছিল যে, আল্লাহ ছিলেন এবং তাঁর জ্ঞান ছিল না?” এই প্রশ্নের উত্তর দিতে না পেরে আব্দুর রহমান নিরুত্তর হয়ে গেল।

ইমাম সাহেব আল্লাহর কিতাব ও আল্লাহর রাসুলের সুন্নতের দলীল চাইলেন। এটা শুনে আবু দাউদ বলে উঠল, “তর্ক করতে গেলে নকল ব্যাতিত বুদ্ধিরও প্রয়োজন হয়।” ইমাম সাহেব শুনে বললেন, “কিতাব ও সুন্নত ব্যাতিত অপর কোন কিছুর উপর কি ধর্মের ভিত্তি স্থাপন করা হয়েছে?” তখন তারা ইমাম সাহেবের সম্মুখে দলীল পেশ করল। ইমাম সাহেব সেসব দলীলের দন্ত চুর্ণকারী জবাব দেন। তারা নিরুত্তর হয়ে গেল। কিন্ত কথায় বলে, চোর না শুনে ধর্মের কাহিনী।

ইবনে আবী দাউদ মু’তাজিলা পন্থীদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা দুরাচার ব্যাক্তি ছিল। সে ইমাম সাহেবের জ্ঞান গরিমা দ্বারা মু’তাজিলাদেরকে মুগ্ধ করতে দেখে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠল। সে খলিফা মু’তাসিমকে বলল, “আমীরুল মোমেনীন, এ ব্যাক্তি পথভ্রান্ত এবং অপরদেরকেও বিভ্রান্তকারী। আপনার ফকীহ ও কাযীদেরকে এখানে সমবেত হয়েছে। আপনি এ সম্বন্ধে তাঁদের অভিমত জিজ্ঞাসা করুন।” তখন ফকীহ ও কাযীরা ইমাম সাহেবকে পথভ্রান্ত বলে ফতোয়া দিল। তখন খলিফা তর্ক মূলতবী করে দিলেন। এরুপ ক্রমাগত কয়েক অধিবেশন হয়ে গেল। ইমাম সাহেব একাকী সকলের মুকাবিলা করলেন। ইমাম সাহেব বলেন, “তর্ক ব্যাপারে আমাকে এমন কথাও শুনতে হয়েছিল যে, যা বলা আলেমের পদমর্যাদানুযায়ী দূরের কথা বলাও সম্ভবপর নয়।”

ইমাম সাহেবের সামনে মু’তাজিলাদেরকে অতভম্ব হতে দেকে খলিফা মু’তাসিম বার বার ইমাম সাহেবকে বলেছিলেন, “হে ইমাম সাহেব, আপনি যদি আমার একটিমাত্র প্রশ্ন সম্বন্ধে একমত হন, তবে আমি আপনাকে বিশিষ্ট বন্ধুরুপে গ্রহণ করব।” ইমাম আহমদ বিন হাম্বল তাতে রাজী হননি, তিনি বলেন, “আল্লাহর কিতাব ও রাসুলের সুন্নতের বাইরে আমি এক বিন্দুও অগ্রসর হতে রাজী নই।”

‘মু’তাজিলারা ইমাম খলিফাকে বলে, “আমীরুল মোমেনীন, এই ব্যাক্তি কাফের পথভ্রান্ত এবং বিভ্রান্তকারী।” খলিফা ইমাম সাহেবকে উদ্দেশ্য করে বললেন, “হে ইমাম সাহেব, আমি আপনার বহু মঙ্গল সাধন করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আপনি জিদের বশবর্তী হয়ে আমার কোন কথার প্রতিই মনোযোগ দান করেন নি। কাজেই আপনাকে কোড়া মারার আদেশ না দিয়ে পারলাম না।”

শেষ পর্যন্ত মু’তাজিলাদের চক্রান্তে হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহঃ)কে কোড়া মারা হয়। মু’তাজিলারা ফতোয়া দেয়, “আহমদ বিপথগামী এবং কাফের । তাঁকে কিছুতেই ক্ষমার চোখে দেখা যায় না।”

ইমাম সাহেবকে কোড়া মারা আরম্ভ হয়। প্রথম কোড়ার আঘাতে তিনি বিসমিল্লাহ পাঠ করেন। দ্বিতীয় আঘাতের সময় ‘লা-হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলীইয়িল আজীম’ পাঠ করেন। দ্বিতীয় ও চতুর্থ আঘাতের সময়ও তিনি এই শব্দই উচ্চারণ করেন।

হাম্বলী মাজহাবের বিখ্যাত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহঃ এর ঘটনা

ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহঃ) এর একটাই অপরাধ ছিল যে তিনি কুরআন শরীফকে মখলুক মানতে রাজী ছিলেন না। এই অপরাধের জন্যই তাঁকে অত্যাচারের স্ট্রীম রোলার চালানো হয়। যা ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে।

এই খলকে কুরআনের বিবাদের বিপক্ষে দ্বিতীয় ফিরকা ছিল। তারা এটা মনে করত যে কুরআন মখলুক নয় এমনকি আমাদের মুখ থেকে যে কুরআনের কিরআতের শব্দগুলি বের হয় সেগুলিও মখলুক নয়। বরং সেগুলিও কুরআনের মত চিরন্তন। এই ফিরকাটি প্রথম ফিরকাটির পুরোপুরি বিপরীত ছিল এবং দুটি ফিরকায় একে অপরের প্রতিদ্বন্দী ছিল।

ইমাম বুখারী রহঃ
ইমাম বুখারী রহঃ

ইমাম বুখারী (রহঃ) উভয় ফিরকার বিপরীত সহীহ এবং সঠিক মতটিকে গ্রহণ করেছিলেন এবং বিরোধীদের কোন পরোয়াই তিনি করেন নি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশতঃ ইমাম বুখারী (রহঃ) ও এই ফিৎনার হাত থেকে সুরক্ষিত থাকতে পারেন নি। এবং তিনিও কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হন। যদিও তিনি ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহঃ) এর মত শাসকগোষ্ঠীর হাতে খলকে কুরআনের বিবাদ নিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হননি। তবে তিনি মুহাদ্দিস ইমাম মুহাম্মাদ বিন ইয়াহইয়া জুহালী (রহঃ) এর সাথে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন যা এর আগে বর্ণনা করা হয়েছে।

ইমাম বুখারী (রহঃ) এর লেখা সমস্ত বই সমর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন।

Post Views: 4,920
Tags: Imam BukhariKhalke quranইমাম বুখারীকুরআন সৃষ্টির বিবাদ
ADVERTISEMENT

Related Posts

রহস্য উদ্ঘাটন মূলক বিশ্বাস খ্রিস্টানদের ইজরাইল সমর্থনের বড় কারণ
ইসলাম

‘রহস্যউদ্ঘাটনমূলক’ বিশ্বাস আমেরিকান খ্রিস্টানদের ইহুদি ও ইজরাইল সমর্থনের বড় কারণ

লিখেছেনঃ মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম রহস্য উদ্ঘাটন পন্থী খ্রিস্টান মৌলবাদীরা ‘বাইবেল সংক্রান্ত কারণে’ আরও ব্যপকভাবে ফিলিস্তিন-ইজরাইল সংঘাত বৃদ্ধি পাচ্ছে। [Apocalypse...

by মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম
November 8, 2024
বাঙালি মুসলিম সমাজে আধুনিকীকরণ—রামমােহন বা বিদ্যাসাগরের প্রসঙ্গ
ইসলাম

বাঙালি মুসলিম সমাজে আধুনিকীকরণ—রামমােহন বা বিদ্যাসাগরের প্রসঙ্গ

অনেকেই বলেন, মুসলিম নেতাগণ প্রগতিশীল চিন্তা-চেতনার ছাপ রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন এবং তারা সমাজে আধুনিক শিক্ষা বিস্তারের কথা ভাবেননি। এও...

by আমিনুল ইসলাম
November 7, 2024
ফুরফুরা শরীফের প্রতিষ্ঠাতা আবু বকর সিদ্দিকী (রহঃ) এর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
ইসলাম

ফুরফুরা শরীফের প্রতিষ্ঠাতা আবু বকর সিদ্দিকী (রহঃ) এর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

হুগলী জেলায় বালিয়াবাসন্তী গ্রামে ১২৩৬ হিজরী সনে মওলুবী হাজী মােঃ মােকতাদির সাহেবের আবু বকর নামে এক সুযােগ্য সন্তান জন্মগ্রহণ...

by গোলাম আহমাদ মোর্তাজা
December 24, 2021
ইসলাম এবং মহানবি হজরত মোহাম্মদ (সঃ) স্বামী বিবেকানন্দের ভাবনায়
ইসলাম

ইসলাম এবং মহানবি হজরত মোহাম্মদ (সঃ) স্বামী বিবেকানন্দের ভাবনায়

স্বামী বিবেকানন্দ (১৮৬৩-১৯০২) সারাজীবন জাতিকে অন্য ধর্মীয় মতবাদকে শ্রদ্ধাশীল দৃষ্টিতে দেখার শিক্ষাই দিয়ে গেছেন। নিজ ধর্মের প্রতি অবিচল আস্থা,...

by আমিনুল ইসলাম
June 17, 2021

POPULAR POSTS

  • সুলতান মাহমুদ

    সুলতান মাহমুদের ভারত অভিযান ও সোমনাথ মন্দির প্রসঙ্গ (১ম পর্ব)

    181 shares
    Share 181 Tweet 0
  • বাউরী সম্প্রদায়ের উৎপত্তির ইতিহাস ও ঐতিহাসিক পর্যালোচনা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • আর্যদের ভারত আগমন, বিস্তার, সমাজ ও সভ্যতা: এক ঐতিহাসিক পর্যবেক্ষণ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে বৌদি কাদম্বরী দেবীর সম্পর্ক আদৌ কি প্রেমের ছিল?

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • হিন্দু পদবীর উৎপত্তির ইতিহাস, বিবর্তন ও ক্রমবিকাশঃ বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

Facebook Page

নবজাগরণ

ADVERTISEMENT
নবজাগরণ

'Nobojagaran' is a website of its kind where you can gather knowledge on all the unknown facts of the world. We human beings always have a thirst for knowledge. Nobojagaran takes its first steps to quench this thirst of ours. We are now in the era of digital world, where we get almost anything online. So how about a bit of knowlyfrom online?

Connect With Us

No Result
View All Result

Categories

  • English (9)
  • অন্যান্য (11)
  • ইসলাম (26)
  • ইসলামিক ইতিহাস (22)
  • ইহুদী (1)
  • কবিতা (37)
  • খ্রিস্টান (6)
  • ছোটগল্প (6)
  • নাস্তিকতা (18)
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (24)
  • বিশ্ব ইতিহাস (24)
  • ভারতবর্ষের ইতিহাস (194)
  • রাজনীতি (38)
  • সাহিত্য আলোচনা (68)
  • সিনেমা (17)
  • হিন্দু (16)

Pages

  • Cart
  • Checkout
  • Checkout
    • Confirmation
    • Order History
    • Receipt
    • Transaction Failed
  • Contact
  • Donation to Nobojagaran
  • Homepage
  • Order Confirmation
  • Order Failed
  • Privacy Policy
  • Purchases
  • Services
  • লেখা পাঠানোর নিয়ম
  • হোম
No Result
View All Result
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi

©Nobojagaran 2020 | Designed & Developed with ❤️ by Adozeal

Login to your account below

Forgotten Password?

Fill the forms bellow to register

All fields are required. Log In

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In
Don't have an account yet? Register Now
wpDiscuz
0
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x
| Reply
Open chat
1
Powered by Joinchat
Hi, how can I help you?