• মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
Saturday, May 24, 2025
নবজাগরণ
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ
No Result
View All Result

প্রাচীন গ্রীস ও রোমের ক্রীতদাস প্রথার মর্মান্তিক ইতিহাস

নবজাগরণ by নবজাগরণ
June 10, 2021
in বিশ্ব ইতিহাস
2
প্রাচীন গ্রীস ও রোমের ক্রীতদাস প্রথার মর্মান্তিক ইতিহাস

Image Source: shongshoy

Share on FacebookShare on Twitter

লিখেছেনঃ সুপ্রতিম দাশ

প্রাচীন পৃথিবীতে কৃষিভিত্তিক বহু সমাজেই ক্রীতদাস প্রথার চল ছিল। তবে এ ব্যাপারে সবচেয়ে এগিয়ে ছিল গ্রীস এবং রােম। পশ্চিমি পন্ডিতদের চোখে গ্রীস হল ইউরােপের বিশুদ্ধ শৈশব। রােম তার উত্তরাধিকারী। প্রাচীন ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের এই দুই সভ্যতা (গ্রীক ও রােমান) নানা কারণে উত্তরকালের কাছে মস্ত বড় অনুপ্রেরণা। সাহিত্য, সংস্কৃতি, দর্শন, রাজনৈতিক ভাবনা, ব্যবসা-বাণিজ্য প্রভৃতি জীবনের নানা ক্ষেত্রে এদের অতি উজ্জ্বল উত্তরাধিকার। যাঁরা মনে করেন সব মিলিয়ে এই দুই ধ্রুপদী সভ্যতার উৎকর্ষ অতুলনীয় তাঁরা একটি জায়গায় এসে হোঁচট খান – গ্রীস ও রােমের ক্রীতদাসপ্রথা। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, প্রাচীন গ্রীস এবং রােমে দাসপ্রথা অভূতপূর্ব মাত্রায় পৌঁছেছিল। দুই সভ্যতাই ছিল ভীষণভাবে দাস-নির্ভর। অন্য কোনাে প্রাকশিল্প সভ্যতার এতখানি দাস-নির্ভরতা ছিল না। তাই সে কালের গ্রীক এবং রােমান সাহিত্যে ক্রীতদাসের প্রভূত উল্লেখ পাওয়া যায়। ধ্রুপদী যুগের গুণগ্রাহীদের কাছে বিষয়টি অস্বস্তিকর। কেননা দাস ব্যবস্থার পরতে পরতে জড়িয়ে আছে অন্তহীন শােষণ আর অত্যাচারের কাহিনী। একদিকে মুষ্টিমেয় ধনবান মানুষের প্রভুত্ব, অন্যদিকে সংখ্যাগরিষ্ঠের অসহায় বশ্যতা। সামাজিক পরিচয়ে এই ধনবান শ্রেণি হল স্বাধীন নাগরিক। অন্যান্যদের মধ্যে একটি বড় অংশ হয় ক্রীতদাস নইলে ভূমিদাস। উভয়ের মধ্যে অবশ্য যথেষ্ট পার্থক্য ছিল। সে কথা প্রসঙ্গক্রমে বলব। এখানে যেটা বলার, এমন এক অমানবিক প্রতিষ্ঠানের উপর যে সভ্যতা দাঁড়িয়ে ছিল সেই সভ্যতার নান্দনিক উৎকর্ষে একটু কালির ছিটে লাগে বই কি! মার্কসবাদী পন্ডিতরা বলে থাকেন, প্রাচীন গ্রীকদের অসামান্য সব কীর্তি যে সম্ভব হয়েছিল তার একটা কারণ হল, গ্রীকদের সভ্যতা গড়ে উঠেছিল অনেকটাই দাস ভিত্তির উপর।

প্রাচীন গ্রীস ও রোমের ক্রীতদাস প্রথার মর্মান্তিক ইতিহাস
চিত্রঃ দাসদের প্রতি নির্মম অত্যাচার, Image Source: ittefaq

পাঠকের সুবিধার জন্য জানিয়ে রাখি, গ্রীক সভ্যতার সূচনা যিশুর জন্মের আনুমানিক দুহাজার বছর আগে মাইনােয়ান যুগে। প্রায় ছ’শাে বছরের মাইনােয়ান সভ্যতার পর চলে আনুমানিক দুশাে বছরের মাইসিনিয় সভ্যতা। মাইনােয়ান এবং মাইসিনিয় গ্রীসে সম্ভবত ক্রীতদাস ছিল। তবে তখন ক্রীতদাস বলতে কি বােঝাত তা জানার মত তথ্যপ্রমাণ ঐতিহাসিকদের হাতে নেই। হােমারের দুই মহাকাব্য ইলিয়াড এবং ওডিসি-র রচনাকাল আনুমানিক ৭৫০-৭০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ। এই দুই মহাকাব্যে দাসত্ব এবং দাসপ্রথার টুকরাে টুকরাে ছবি পাওয়া যায়। হােমার বা হেসিয়ডের রচনা পড়লে বােঝা যায় গ্রীকরা কি অনিবার্যভাবে এবং নির্দ্বিধায় দাসপ্রথাকে মানুষের জীবনের একটি স্বাভাবিক ঘটনা বলে ধরে নিত। রােমান সভ্যতারও অনুষঙ্গ ছিল দাসব্যবস্থা। রােমান ঐতিহ্য অনুযায়ী রােমিউলাস ৭৫৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে রােম নগরীর পত্তন করেন। আধুনিক প্রত্নতত্ববিদরা এই সাবেক তথ্য মেনে নিয়েছেন। বলা যেতে পারে, রােমানরা শিল্প, স্থাপত্য, সাহিত্য, এবং দর্শনে গ্রীকদের যােগ্য উত্তরসূরী। যুদ্ধ এবংশান্তি উভয় ক্ষেত্রেই তাদের বিপুল উপস্থিতি। একই সঙ্গে দাসপ্রথার ঐতিহ্যটিও তাদের উত্তরাধিকার। আমাদের মূল আলােচ্য হল দাস বিদ্রোহ। এবং এই আলােচনার সময়কাল মূলত যিশুর জন্মের আগের দুটি শতক।

হােমারের যুগে গ্রীকরা ক্রীতদাস বা Slave বােঝানাের জন্য যে সব শব্দ ব্যবহার করতেন তাদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযােগ্য হল অ্যানড্রোপােডন, ইংরাজিতে যার অর্থ Chattel Slave. অ্যানড্রোপােডন কথাটির মানে মনুষ্যপদবিশিষ্ট জীব বা manfooted creature অর্থাৎ মানুষ। শব্দটি এসেছিল টেট্রাপােডা শব্দের উপমা হিসাবে। টেট্রাপােডার অর্থ চতুষ্পদী গবাদি প্রাণি (four-footed cattle)। গ্রীসে দাসপ্রথা বলতে যা বােঝানাে হত তা আসলে Chattel slavery. ক্রীতদাস হল সেই মানুষ যে আইন ও সমাজের চোখে অন্য একজন মানুষের একটি Chattel বা অধিকার। পলিবিয়াস লিখেছেন, জীবনের অত্যাবশ্যক প্রয়ােজন হল গবাদি পশু আর ক্রীতদাস। বাস্তবিক ক্রীতদাসরা ছিল জীবনের যাবতীয় অধিকার থেকে বঞ্চিত প্রান্তিক মানুষ, অ্যারিস্টটলের ভাষায়, জীবন্ত যন্ত্র।

বিশিষ্ট ইংরেজ মার্কসবাদী জিওফ্রে সাঁ ক্রোয়া প্রাচীন গ্রীস এর পরাধীন শ্রম বা unfree labour-কে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করেছেন। প্রথমটি দাসপ্রথা। দ্বিতীয়টি ভূমিদাস প্রথা এবং তৃতীয়টি ঋণজনিত দাসত্ব বন্ধন, এথেন্স রাষ্ট্রে রাষ্ট্রনায়ক সােলােনের আমলে যে প্রথাটির অবসান ঘটানাে হয়েছিল। সাঁ ক্রোয়ার মতে, গ্রীক এবং রােমান ইতিহাসের সেরা সময়গুলিতে ক্রীতদাসপ্রথাই ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরাধীন শ্রম। সে সময় ভূমিদাস প্রথা আদৌ ক্রীতদাসপ্রথার মত এতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল না।

স্বভাবতই প্রাচীন গ্রীস এবং রােমের সমাজ ও অর্থনীতিতে ক্রীতদাসরা ঠিক কি। ভূমিকা পালন করত সেই প্রশ্নে ঐতিহাসিক ও সমাজবিজ্ঞানীদের মধ্যে ভয়ঙ্কর বিতর্ক আছে। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ দিকে পশ্চিমী দুনিয়ায় শুরু হয় দাসপ্রথা বিরােধী আন্দোলন। স্বভাবতই প্রাচীন গ্রীস ও রােমের, বিশেষ করে গ্রীসের দাসব্যবস্থা নিয়ে পরস্পর বিরােধী বক্তব্য শােনা যায়। অনেকে বলেন, দাসপ্রথা-বিরােধী ভাবনা সর্বপ্রথম প্রাচীন পৃথিবীতেই গড়ে উঠেছিল। এঁদের মতে, কিছু কিছু গ্রীক সফিস্ট এবং রােমান জুরিস্ট যখন বলেন যে, দাসপ্রথা কোনাে স্বাভাবিক প্রতিষ্ঠান নয়, বরং একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান, তখন তারা আসলে দাসপ্রথার নিন্দা করার জন্যই বলেন। অন্য অনেকের বক্তব্য হল, প্রাচীন সভ্যতার মধ্যে থেকে উঠে আসা দুই মহান নৈতিক শক্তি — স্টোইক দর্শন (দার্শনিক জেনাে প্রবর্তিত বৈরাগ্যদর্শন) এবং খ্রিস্টধর্ম – দাসপ্রথাকে পরিমার্জিত করে এর মানবিকীকরণ ঘটিয়েছিল। অন্যদের মতে, দাসপ্রথাকে নৈতিক নয়, বরং অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে হবে। এঁরা মনে করেন প্রাচীন পৃথিবী যে অর্থনীতিতে পুঁজিবাদী উন্নয়ন ঘটাতে পারল না তার জন্য দাসপ্রথাই দায়ী। এঁদের মতে, দাসব্যবস্থা শােষণের এমন এক পদ্ধতি যা মানবসভ্যতার বিকাশের পথে একটি বিশেষ পর্যায়কে চিহ্নিত করে। পরে এই ব্যবস্থাকে অতিক্রম করে এসেছিল শােষণের অন্য দুই পর্যায়—সামন্ততন্ত্র এবং পুঁজিবাদ। মাকর্স এই শেষ বক্তব্যটি গ্রহণ করেছিলেন। দাসপ্রথাকে তিনি মনে করতেন প্রাথমিকভাবে একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। মার্কসের এই অবস্থান পরবর্তীকালে পুব ও পশ্চিমে মার্কসবাদী ঐতিহাসিকদের মধ্যে বিপুল গবেষণা ও লেখালেখির সূচনা করেছে। ১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়েছিল মাকর্স এবং এঙ্গেস – এর কমিউনিস্ট ইস্তাহার। ঘােষিত হয়েছিল, আজ পর্যন্ত সমস্ত সমাজের ইতিহাস হল শ্রেণি সংগ্রামের ইতিহাস। ফলে প্রভু ও ক্রীতদাস, এলিট ও নিম্নবর্গ, গিল্ডপ্রধান ও জানিম্যান—এক কথায় শােষকও শােষিত পরস্পরের বিরুদ্ধে চিরকালীন সংগ্রামে লিপ্ত হয়েছিল। সেই থেকে আজ পর্যন্ত ধ্রুপদী যুগের দাসপ্রথা মার্কসবাদী এবং অমার্কসবাদীর লড়াই-এর ক্ষেত্র হয়ে আছে।।

ক্রীতদাসরা ছিল প্রভুদের একচেটিয়া সম্পত্তি। প্রভুর উপরে ক্রীতদাসের সামগ্রিক নির্ভরতা অনেকটা পিতার উপরে পুত্রের নির্ভরতার মত। প্রাচীন পৃথিবীতে প্রভু নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশের জন্য বাস্তবিকই ক্রীতদাসকে “সন্তান” বলে সম্বােধন করতেন (গ্রীক ভাষায় বলা হত “পাই”, লাতিনে “পুয়ের’)। তবে পার্থক্যটা হল, একজন সন্তান বড় হয়ে উঠত ভবিষ্যতে প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক হয়ে ওঠার জন্য। আর ক্রীতদাস এমন কিছুর কথা কল্পনাই করতে পারত না। ভবিষ্যতে তার সামাজিক অবস্থানে কোনাে পরিবর্তনের প্রত্যাশাও সে করতনা। বাস্তবে, খুব অল্প কিছু গ্রীক এবং রােমান ক্রীতদাসই তাদের স্বাধীনতা ফিরে পেয়েছিল। প্রভুর উপর তার ক্রীতদাসের যে নৈতিক দাবিই থাক না কেন, তা দিয়ে তার চুড়ান্ত অধিকারহীনতার কোনাে পরিবর্তন ঘটত না। আগেই বলেছি, দাস ছিল তার প্রভুর সম্পত্তি। এবং একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে দাসপ্রথার মধ্যে সীমাহীন জোরজুলুম এবং শােষণের অনুমােদন ছিল।

প্রাচীন গ্রীসের এক প্রধান রাষ্ট্র স্পার্টায় দাসব্যবস্থার চেহারা ও চরিত্র ছিল আলাদা। খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীতে গ্রীসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও আলােচিত রাষ্ট্র এথেন্স গণতান্ত্রিক। কিন্তু স্পার্টায় কোনােদিন গণতন্ত্র ছিল না। স্পার্টা ছিল অভিজাত, অলিগার্কিক রাষ্ট্র। খ্রিস্টপূর্ব সপ্তম শতকে স্পার্টানরা মেসেনিয়া অঞ্চলটি জয় করে নেওয়ার পর সেখানকার বিজিত গােষ্ঠীগুলির উপর বিপুল অর্থনৈতিক বােঝা চাপানাে হয়। ঐ সব গােষ্ঠীকে তাদের কৃষি উৎপাদনের অর্ধেক ছেড়ে দিতে হয়। এদের পরিচয় হয় হেলট বা ভূমিদাস। গ্রীসের অল্প কয়েকটি রাষ্ট্রেই কেবল ভূমিদাসপ্রথা চাল, স্পার্টা এদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এখানকার হেলটরা এথেন্সের ক্রীতদাসদের মত ব্যক্তি মানুষের ব্যক্তিগত সম্পত্তি ছিল না। ক্রীতদাসদের মত এদের বিক্রি করা যেত না যেহেতু এরা যে জমি চাষ করত সেই জমি ছেড়ে কখনাে অন্যত্র যেতে পারত না। তাই ভূমিদাসরা নিজেদের পারিবারিক গােষ্ঠীর মধ্যেই স্থায়ীভাবে বসবাস করতে পারত। এই সুযোেগক্রমাগত বিক্রি হয়ে যাওয়ার ফলে ক্রীতদাসদের জুটত না। জিওফ্রে সা ক্রোয়া স্পার্টার হেলটদের “State Serf” বা রাষ্ট্রীয় ভূমিদাস বলেছেন। এই হেলটদের উপর স্পার্টানদের বর্বর অত্যাচারের বহু প্রমাণ আছে। এই প্রসঙ্গে একটি চালু তথ্য হল, প্রতি বছর স্পার্টার শাসকরা রীতিমত নিয়ম করে হেলটদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘােষণা করত। খােদ অ্যারিস্টটল জানিয়েছেন যে, প্রত্যেক বছর ‘ইফর’ নামে পরিচিত স্পার্টার মুখ্য ম্যাজিস্ট্রেটরা হেলটদের রাষ্ট্রের শত্রু (গ্রীক ভাষায় পােলেমিয়য় [polemioi]) বলে ঘােষণা করতেন। স্পার্টাতে কেবলমাত্র আইনসঙ্গতভাবেই কাউকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যেত বা কারুর মৃত্যু ঘটানাে যেত। তা নাহলে ধর্মীয় পবিত্রতা ক্ষুন্ন হত। একমাত্র পােলেমিয়য় বা রাষ্ট্রের শত্রুদের ইচ্ছামত হত্যা করা যেত। তাই হেলটদের জন্য এই ঘােষণা। এইভাবে নিজেদেরই শ্রমশক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘােষণা করাটা এতটাই বিরল একটি ঘটনা যে তা থেকে স্পার্টানদের সঙ্গে তাদের হেলটদের সম্পর্ককে গ্রীক দুনিয়ায় একটি আশ্চর্য বিষয় হিসাবে বর্ণনা করা যায়।

প্রাচীন গ্রীস ও রোমের ক্রীতদাস প্রথার মর্মান্তিক ইতিহাস
Roman slaves were mainly Greek, but could also be Roman if they were criminals or poor enough to voluntarily become slaves. (Image: Niall O’Donoghue/Shutterstock)

যেহেতু সার্বিকভাবে স্পার্টান রাষ্ট্রই ছিল হেলটদের প্রভু তাই হেলটদের উপর রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ ও পীড়নও ছিল সীমাহীন। পল কার্টলেজ লিখেছেন, স্পার্টান রাষ্ট্র হেলটদের শ্রমকে নিঙড়ে নিয়ে বিপুল উন্নতি করেছিল। হেলটরা ছিল প্রধানত মেসেনিয়া এবং ল্যাকোনিয়ার বাসিন্দা, স্পার্টানরা যাদের পদানত করেছিল। মেসেনিয়রাই ছিল দলে ভারী। কার্টলেজ মেসেনিয় হেলটদের অর্থনৈতিকভাবে একটি সুস্পষ্ট শ্রেণি বলে চিহ্নিত করেছেন। তাঁর মতে, মেসেনিয় হেলটদের ক্রমাগত বিদ্রোহ শ্রেণিসংগ্রাম ছাড়া কিছু নয় যার লক্ষ্য ছিল রাষ্ট্রের ক্ষমতা ছিনিয়ে নেওয়া। বাস্তবে অবশ্য ঠিক এটাই ঘটেছিল। হেলটরা স্পার্টানদের বিরুদ্ধে সুযােগ পেলেই বিদ্রোহ করত। তারা তাদের প্রভুদের প্রচন্ড ঘৃণা করত। অন্যদিকে স্পার্টানরাও সব সময় হেলট বিদ্রোহের আশঙ্কায় সন্ত্রস্ত থাকত। বিশেষ করে মেসেনিয়ার হেলটদের তারা কখনাে বিশ্বাস করত না। থুকিডিডিস জানিয়েছেন, স্পার্টান রাষ্ট্রের হয়ে নানা যুদ্ধবিগ্রহে হেলটরা যথেষ্ট বীরত্ব দেখালেও আখেরে কিন্তু তাদের কোনাে লাভ হত না। তিনি লিখেছেন, ৪২৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দে স্পার্টান রাষ্ট্র দুহাজার দুঃসাহসী হেলট যােদ্ধাকে পুরস্কার স্বরূপ স্বাধীনতা দেওয়ার কথা ঘােষণা করেছিল। এই প্রতিশ্রুতি রাখা হয় নি। উল্টে এদের মধ্যে অনেককেই রাতের অন্ধকারে হত্যা করা হয়েছিল। হেলট বিদ্রোহ তাই খুব স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া ছিল। এই প্রসঙ্গে আমরা পরে আসছি।

এথেন্স নিঃসন্দেহে সেকালের মাপকাঠিতে বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ছিল। তার ছিল বিরাট নৌ-বল, বাণিজ্য-বল এবং সাম্রাজ্য-বল। খ্রিস্ট পূর্ব পঞ্চম শতকে তার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যও ছিল চোখ ধাঁধানাে। ক্রীতদাসদের ব্যাপারে অবশ্য এথেন্সও কম উৎপীড়ক ছিল না। এথেনীয় লেখক জেনােফন লিখেছেন, কাজ, খাবার আর শাস্তি – এই তিনে মিলে দাসের জীবন। বাস্তবিক গ্রীক সাহিত্য থেকে একটা বিষয় স্পষ্ট যে, ক্রীতদাসদের চাবকাননা, তাদের উপর অত্যাচার করার ঘটনার কোনাে অভাব ছিল না। প্রয়ােজনে মানসিক পীড়নও চলত। ক্রীতদাসের বরাদ্দ কাজ তাকে করতেই হত। সাম্প্রতিক গবেষণা থেকে দেখা যাচ্ছে, মামলা মােকদ্দমার বিচারের সময় সাক্ষ্যপ্রমাণ ও তথ্য বের করার জন্য গ্রীকরা রীতিমত নিয়ম করে ক্রীতদাসদের উপর অত্যাচার করত। গ্রীকদের বিশ্বাস ছিল এইভাবে অত্যাচার করে যে তথ্য মিলত স্বাধীন মানুষের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের তুলনায় তা অনেক বেশি কার্যকরী। কেননা স্বাধীন মানুষের উপর অত্যাচার চালানাে যেত না। এই ধরনের অত্যাচারকে গ্রীক ভাষায় বলা হত ব্যাসানস (basanos)। আধুনিক গবেষকরা আরাে দেখিয়েছেন, ক্রীতদাসদের কাছ থেকে এজাহার নেওয়ার জন্য বিশেষ আইন ছিল। এই আইন অনুযায়ী, ক্রীতদাসরা আদালতে হাজির হতে পারত না। কিন্তু অত্যাচার করে একজন ক্রীতদাস বা ক্রীতদাসীর কাছ থেকে যে বিবৃতি আদায় করা হত তা দিব্যি সাক্ষ্যপ্রমাণ হিসাবে আদালতে পেশ করা চলত।

রােমান সাম্রাজ্যের বিভিন্ন আইন এবং রাষ্ট্রীয় সনদ থেকে জানা যায়, কোনাে ক্রীতদাস কখনাে তার প্রভুর বিরুদ্ধে অভিযােগ বা নালিশ করার চেষ্টা করলে তা আদৌ শােনা হত না। বরং তাকে কঠোর শাস্তি দেওয়া হত। কদাচিৎ খুব ব্যতিক্রমী কোনাে পরিস্থিতিতে হয়ত আদালত এমন অভিযােগ শুনতে প্রস্তুত থাকত। যেমন, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ বা শাস্ত্রীয় কদাচারের মত ঘটনা। একবার খােদ রােমান সম্রাট অগাস্টাস মনে করেন কিছু নাগরিকের রাষ্ট্রদ্রোহিতা সম্পর্কে তথ্যপ্রমাণ পাওয়ার জন্য তাদের দাসদের জিজ্ঞাসাবাদ করাটা জরুরি। তিনি ঐ ক্রীতদাসদের স্বয়ং ক্রয় করে নেন। রােমান আইনে অবশ্য এটা বলা হয়েছিল যে শেষ পন্থা হিসাবে কোনাে কিছু প্রমাণের জন্য দাসদের উপর অত্যাচার করা যেতে পারে। আধুনিক মাপকাঠিতে বিচার করলে প্রাচীন পৃথিবীতে বর্বরতার মাত্রা নিঃসন্দেহে খুব বেশি ছিল। আসলে গ্রীস এবং রােমে ক্রীতদাস ছিল প্রান্তিক মানুষ। সে অত্যাচার ছাড়া সত্য বলবে এ কথা কেউ বিশ্বাস করত না। স্বাধীন মানুষের জন্য যদি প্রয়ােজন হয় যুক্তিবাদী আচরণের, তাহলে ক্রীতদাসের জন্য প্রয়ােজন হিংস্রতার। নাট্যকার অ্যারিস্টোফানিস ঠাট্টা করে বলেছিলেন, পাইস (pais) শব্দটি এসেছে পেইন (paiein) থেকে। প্রসঙ্গত, পাইস মানে ক্রীতদাস বা শিশু। আর পেইন মানে প্রহার। রােমান লেখকরা একটি গল্প শুনিয়েছেন। একবার ভিডিয়াস পােলিও নামে এক ধনী রােমান নাগরিক সম্রাট অগাস্টাসকে নৈশভােজে আপ্যায়িত করেন। ভােজ চলাকালে বয়সে প্রায় বালক এক ক্রীতদাস একটি কাচের দামী পানপাত্র ভেঙে ফেলে। ক্রুদ্ধ পােলিও বালকটিকে একটি মাছের চৌবাচ্চায় নিক্ষেপ করার আদেশ দেন। ঐ চৌবাচ্চায় ছিল হিংস্রসব মাছ যারা বালকটিকে খেয়ে ফেলত। দাসটি অবশ্য প্রাণে বেঁচে গিয়েছিল সম্রাট তৎক্ষণাৎ তাকে মুক্ত বলে ঘােষণা করায়। দ্বিতীয় শতাব্দীর গ্রীক চিকিৎসক গ্যালেন জানাচ্ছেন, তাঁকে তাঁর বহু বড়লােক বন্ধুবান্ধবের চিকিৎসা করতে হয়েছিল। কেননা এরা এদের দাসদের মারধাের করতে গিয়ে নিজেরাও অল্পবিস্তর আহত হত। আর এই ধরনের অত্যাচারের জন্য প্রভুরা কারুর কাছে কৈফিয়ত দিত না।এ হেন অত্যাচারের বিরুদ্ধে দাসরা যে সুযােগ পেলেই বিদ্রোহ করবে তাতে আর আশ্চর্য কি!

 

আরও পড়ুন,

১। মিশরীয় হায়ারোগ্লিফিক লিপি ও তার পাঠোদ্ধারে আবুবাকার আহমদ ইবন আলী ইবন আল উসায়বিয়া আল কালদানি (৯ ম-১০ম শতক)

২। ত্যুর -পয়তিয়ার (৭৩২ খ্রি.) থেকে ফ্রান্সের ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর ক্রুসেড

 

‘নবজাগরণ’ অ্যান্ড্রোয়েড অ্যাপ্লিকেশনটি প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।

‘নবজাগরণ’ এর টেলিগ্রাম চ্যানেলে জয়েন হতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।

‘নবজাগরণ’ এর ফেসবুক পেজে লাইক করতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।

Post Views: 8,059
Tags: HistoryNobojagaranইতিহাসক্রীতদাস প্রথাক্রীতদাসপ্রথাগ্রীকগ্রীক সভ্যতাদাস বিদ্রোহদাসপ্রথাদাসব্যবস্থানবজাগরণপ্রাচীন গ্রীসপ্রাচীন গ্রীস ও রোমের ক্রীতদাস প্রথার মর্মান্তিক ইতিহাসরােমান সাম্রাজ্যরোমের ক্রীতদাস প্রথা
ADVERTISEMENT

Related Posts

রহস্য উদ্ঘাটন মূলক বিশ্বাস খ্রিস্টানদের ইজরাইল সমর্থনের বড় কারণ
ইসলাম

‘রহস্যউদ্ঘাটনমূলক’ বিশ্বাস আমেরিকান খ্রিস্টানদের ইহুদি ও ইজরাইল সমর্থনের বড় কারণ

লিখেছেনঃ মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম রহস্য উদ্ঘাটন পন্থী খ্রিস্টান মৌলবাদীরা ‘বাইবেল সংক্রান্ত কারণে’ আরও ব্যপকভাবে ফিলিস্তিন-ইজরাইল সংঘাত বৃদ্ধি পাচ্ছে। [Apocalypse...

by মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম
November 8, 2024
আফগান জিহাদ, তালেবানের উত্থান ও আমেরিকার আফগানিস্তান আক্রমণের যতকথা
বিশ্ব ইতিহাস

আফগান জিহাদ, তালেবানের উত্থান ও আমেরিকার আফগানিস্তানে আগ্রাসন

১৯৭৯ সালে ইরানে বিপ্লবের পর ইরান ও সৌদি আরবের স্নায়ুযুদ্ধ বা শীতল যুদ্ধ শুরু হয়। অন্যদিকে আমেরিকা ও সোভিয়েত...

by অতিথি লেখক
September 4, 2021
গুপ্তহত্যার মাধ্যমে মোসাদ যেসব বিখ্যাত ব্যক্তিদের খুন করেছিল
বিশ্ব ইতিহাস

গুপ্তহত্যার মাধ্যমে যেসব বিখ্যাত ব্যক্তিদের খুন করেছিল ইজরাইলের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদ

লিখেছেনঃ মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম মৌর্য সাম্রাজ্যের রাজ পরামর্শক কৌটিল্য বলেছিলেন, “প্রতিপক্ষকে ধ্বংস করে দাও, দরকার হলে গুপ্তহত্যা করেও।” কৌটিল্যের...

by মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম
May 19, 2021
মােসাদ
বিশ্ব ইতিহাস

মােসাদ : বিশ্বের সবচেয়ে বীভৎসতম ও ভয়ঙ্কর গােয়েন্দা সংস্থার ইতিকথা

একসময় অ্যাডলফ হিটলার বলেছেন, দুনীয়ায় যেকোনাে উল্লেখযােগ্য অপরাধকান্ডের পেছনে থাকে কোনাে কোনাে ইহুদীর হাত। হিটলার যখন একথা বলেন তখন...

by আবু রিদা
May 14, 2021

POPULAR POSTS

  • সুলতান মাহমুদ

    সুলতান মাহমুদের ভারত অভিযান ও সোমনাথ মন্দির প্রসঙ্গ (১ম পর্ব)

    181 shares
    Share 181 Tweet 0
  • বাউরী সম্প্রদায়ের উৎপত্তির ইতিহাস ও ঐতিহাসিক পর্যালোচনা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • আর্যদের ভারত আগমন, বিস্তার, সমাজ ও সভ্যতা: এক ঐতিহাসিক পর্যবেক্ষণ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে বৌদি কাদম্বরী দেবীর সম্পর্ক আদৌ কি প্রেমের ছিল?

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • হিন্দু পদবীর উৎপত্তির ইতিহাস, বিবর্তন ও ক্রমবিকাশঃ বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

Facebook Page

নবজাগরণ

ADVERTISEMENT
নবজাগরণ

'Nobojagaran' is a website of its kind where you can gather knowledge on all the unknown facts of the world. We human beings always have a thirst for knowledge. Nobojagaran takes its first steps to quench this thirst of ours. We are now in the era of digital world, where we get almost anything online. So how about a bit of knowlyfrom online?

Connect With Us

No Result
View All Result

Categories

  • English (9)
  • অন্যান্য (11)
  • ইসলাম (26)
  • ইসলামিক ইতিহাস (22)
  • ইহুদী (1)
  • কবিতা (37)
  • খ্রিস্টান (6)
  • ছোটগল্প (6)
  • নাস্তিকতা (18)
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (24)
  • বিশ্ব ইতিহাস (24)
  • ভারতবর্ষের ইতিহাস (194)
  • রাজনীতি (38)
  • সাহিত্য আলোচনা (68)
  • সিনেমা (17)
  • হিন্দু (16)

Pages

  • Cart
  • Checkout
  • Checkout
    • Confirmation
    • Order History
    • Receipt
    • Transaction Failed
  • Contact
  • Donation to Nobojagaran
  • Homepage
  • Order Confirmation
  • Order Failed
  • Privacy Policy
  • Purchases
  • Services
  • লেখা পাঠানোর নিয়ম
  • হোম
No Result
View All Result
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi

©Nobojagaran 2020 | Designed & Developed with ❤️ by Adozeal

Login to your account below

Forgotten Password?

Fill the forms bellow to register

All fields are required. Log In

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In
Don't have an account yet? Register Now
wpDiscuz
2
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x
| Reply
Open chat
1
Powered by Joinchat
Hi, how can I help you?