লিখেছেনঃ জয়নাল আবেদিন
ছাড়ির কাঁটায় দুলছে সময় ধরতে পারি কই
ব্যাঙের মতো লাফাই শুধু ভাঙা আমার মই
হাত টেনে পা ভাঙতে গেলে দেয়াল যায় বেড়ে
পলকহীন তাকিয়ে থেকে রোজ আমি যাই হেরে।
এক গা ফেলে সামনে যেতে দু-পা ফেলি পিছে
মোড়ের মাথায় হারায় শুধু একটা জীবন মিছে
সামনে আলো শীত জুড়াবে সে আশাতে ছাই
কাদা জলে মাছের মতো একলা খাবি খাই।
উতাল হাওয়ায় বাঁশের পাতা খেলে, ছিড়ে পড়ে
তবু আমার শরীর বেয়ে দরদর ঘাম ঝরে
দুঃখ পেলে কাঁদে সবাই ভিজে থাকে বুক
দেখলে এমন আমার মনে উথলে ওঠে সুখ।
বাচ্চা ছেলের মুখের হাসি সোনার চেয়েও দামি
কে বলেছে এমন কথা-বাঁদরামি বাঁদরামি
পথটা পেলে নিচের থেকে নিজেই হাঁটে জল
জেনো ওসব কথার কথা ধোঁকা দেওয়ার ছল।
করুণাময় কোথায় আছো শোনো আমার ডাক
তোমার দয়ায় সব্বাইকে লাগিয়ে দিই তাক
সাইদি আমি তোমার কাছে জড়িয়ে ধরে পা
ভিখিরি করো আমাকে গো আর কিছু চাই না।
হাজার জনের সামনে গিয়ে পাতবো আমি হাত
দাও আমাকে সেই সে সুযোগ এই নিবেদন নাথ
আপন ভেবে সবাই আমায় দিক একটু ছুঁয়ে
ঝোলা কাঁধে করজোড়ে থাকবো আমি নুয়ে।
অন্ধ করে দাও না প্রভু ওষুধ যন্ত্রণার
মিলবে তখন সবার কাছে চাওয়ার অধিকার
বুঝলে ভালো দুহাত কাটো না হয় করে খোঁড়া
প্রাণের প্রভু দেখতে তো পাও হচ্ছি বেগুন পোড়া।
সামনে পিছে দিনরাত্রি অসংখ্য প্রব্লেম
কাঠফাটা রোদ মাথার ওপর শুকিয়ে মরে প্রেম।
ভালোবাসা চাইলে মেয়ে কামড়ে ছিলো হাতে
এখনো সেই ক্ষত থেকে রক্ত ঝরে রাতে।
ছড়িয়ে থাকা বাতাসগুলোর কিসের অভিমান
আমার ডাকে দেয় না সাড়া ডাকে না তা প্রাণ
উপরে চোখ রাখলে তুলে তা হয়ে যায় ফিকে
তবু কেন রঙিন আকাশ তাকায় না এই দিকে।
বন্ধুরা সব পাশে বসে সৎ উপদেশ ঝাড়ে
তাদের ভালো চিনি বলেই বুকের ব্যথা বাড়ে
সিগ্রেট খায় অর্ধেকটা আমাকে দেয় খেতে
কর্মহীন আবর্জনা গোটাটা নিই পেতে।
ছোট ভায়ের কড়কড়ে চোখ রাখছি কেবল তুলে
বড় বোনটা ভাবছে দাদা যাচ্ছে শুধুই ভুলে
আমার জন্যে না খেয়ে রোজ মায়ের গায়ে জ্বর
দেখলে নিচে তাকায় বাবা মারে না আর চড়।
দুলছে সময় যাচ্ছে হেঁটে আমি কেবল বসে
আকাশ থেকে সন্ধ্যা তারা পড়ছে খসে খসে
সেই যে ঝিলিক আমায় যদি একটু দিতো ছুঁড়ে
চার দেওয়ালের খড়ের চালে যেতাম কি হায় পুড়ে।
পাইনি আলো নেইকো বাতাস তবু আমি সুখী
ফুঁ দিয়ে সব উড়িয়ে দিয়ে নিচ্ছি এখন ঝুঁকি
ডান হাতে রাত বাঁ হাতে দিন তার উপরে আমি
খেয়াল হলে ছুটে বেড়াই ইচ্ছে মতন নামি।
চোখের ভাঁজে আকাশ রাখি মুঠোয় আলোর রেখা
খেলছি যাদু হাতের খেলা নাইবা থাকুক লেখা
ফুস মন্তর আগুন ধোঁয়া ছুমন্তর যাই
পেটের ভেতর চরম খিদে মারছে মারুক ঘাই।
ঘড়ির কাটা ছুটছে ছুটুক তাতে কি যায় আসে
কাল গোখরো তুলুক ফণা দু’কানের দুই পাশে
ফনার ছায়া ঠেকিয়ে দেবে রোদ বর্ষা ঝড়
নিতেও পারো সেই সে ছায়া তোমরা কি কেউ পর?
সবার শেষে বলছি শোনো থাকবে না আর রাত
রোযা রাখো নামায পড়ো জুটবে পাতে ভাত
শরীর মন শুদ্ধ করো উঠবে নেচে প্রাণ
উপবাসে সবাই মাতো এ যে খোদার দান।