লিখেছেনঃ চৌধুরী আতিকুর রহমান
আর এস এস ও হিন্দুত্ব উল্লেখ করার মধ্যে মূল কারণটি হল, হিন্দুত্বর উত্থানে ইতিবাচক ও নেতিবাচকের পার্থক্য বোঝানো। হিন্দুত্বর একটি আধ্যাত্মিক দিক আছে যেখানে জীবাত্মা ও ঈশ্বরাত্মা সমার্থক। আধ্যাত্মিকতার এই দিকটি অন্য কিছু মতের বা ধর্মের কাছে গ্রহণযোগ্য না হলেও এর মধ্যে শান্ত অন্তর্মুখি ভাবটিকে কেউ অস্বীকার করতে পারে না। কিন্তু আর এস এস নিয়ন্ত্রিত বা পরিচালিত হিন্দুত্বে এই অন্তর্মুখি ভাবটিই নেই বরং রয়েছে একটি সর্বগ্রাসী, সর্বনেশে ভাব যা বর্তমান ভারতের কাছে একটি সঙ্কট তো বটেই, মার্কিন নির্বাচনে সলভ কুমার ও ট্রাম্পের অভিবাসী বিরোধিতা, মুসলিম বিরোধিতা ইত্যাদি মানবতা বিরোধিতা একটি অন্য মাত্রা দেয়।
মনে পড়ে আজ থেকে সত্তর-আশি বছর আগে হিটলার নামক দৈত্যের উত্থান পর্বটি। হিটলারও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত হয়ে এসেছিলেন। এই জিতের পিছনে ছিল সেমিটিক বিরোধিতা। জিতে আসার পরই হিটলার আর আড়াল রাথেননি, সরাসরি ইহুদি নিধনে নেমে পড়েন। তবে তার আগে হিটলারকে কিছু বন্ধু-বান্ধব জোগাড় করতে হয়েছিল। এই বন্ধুরা হল অ্যাংলো-স্যাক্সন জনগোষ্ঠী, যাদের বাস স্থল হল গ্রেট ব্রিটেন। আরও নির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে ইংরেজরা। মধ্যযুগের যে বর্বর জার্মান জাতি সভ্য রোমক সাম্রাজ্যকে ভেঙে দিযেছিল তারাই কালক্রমে ইউরোপের নিয়ন্ত্রক হয়ে পড়ে। এদেরই একটি অংশ জার্মানিতে রয়ে যায় অপর অংশ চলে যায় ইংল্যান্ডে। কালক্রমে ইংরেজরা ছিল হিটলারের সময় বিশ্বের সর্ববৃহৎ শক্তিশালী জাতি। এদের সঙ্গে অ্যাংলো স্যাক্সন জাতিত্বের সাযুজ্য দেখিয়ে দলে টানে। কিন্তু প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরাজয়ের জন্যে যখন ইহুদিদের দাযী করে ইহুদি নিধন শুর করল তখনও ইংল্যান্ড কিছু বলেনি। পরে পোল্যান্ড ও ফ্রান্স আক্রমণ ও দখল করার পর এদের টনক নড়ল। শুরু হল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। মারা গেল ছয় কোটি মানুষ। যুদ্ধের আগের পৃথিবী পরের পৃথিবী আর একরকম ছিল না। ব্রিটেন ছিল মহাশক্তিধর, ব্রিটেনকে সরিয়ে হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অপরদিকে রইল সোভিয়েত রাশিয়া।
গুজরাট কে বলা যেতে পারে ভারতের ধনী রাজ্যগুলির মধ্যে একটি। প্রকৃতপক্ষে গুজরাটিরা হল ব্যবসায়ী জাতি। লোথাল, কালিবঙ্গান ইত্যাদি হরপ্পা সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ বলে দেয় গুজরাটিরা প্রাগৈতিহাসিক যুগেও বাণিজ্য এমনকি সমুদ্র বাণিজ্যে পটু ছিল। হিউ য়েন সাঙও এদের ব্যবসাবুদ্ধির কথা বলে গেছেন। আমরা জানি বাণিজ্যে বসত লক্ষ্মি। গুজরাটিরা সুদূর আফ্রিকা থেকে ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র, ওমান, আরব আমিরাত সর্বত্র তাদের ব্যবসা সাম্রাজ্য বিস্তার করে রেখেছে। গুজরাটিরা মুনাফার টাকা দেশে পাঠিযেছে এবং বিদেশে যতই তারা প্রতিকুলতার সামনে পড়েছে ততই ভারতে ফিরে আসার রাস্তাটা পরিষ্কার রাখতে চেয়েছে। ঠিক এই জায়গাটিতে আর এস এস তাদের নাক গলিয়ে গুজরাটকে হিন্দুত্বের পটভূমি ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জায়গা করে নিয়েছে। এই পরীক্ষাতে তারা সাময়িক উর্তীর্ণ। এই পরীক্ষার লব্ধ ফল তারা সমস্ত দেশে প্রয়োগ করতে চায়। গুজরাট আরও নির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে আহমেদাবাদ হল আর এস মার্কা হিন্দুত্বের পরীক্ষাগার। ১৯৬৯, ১৯৮০, ১৯৮৫, ১৯৮৬, ১৯৯০, ১৯৯২ এই বছরগুলিতে লাগাতার দাঙ্গা লাগানো হয়েছে। এর ফল হল আহমেদাবাদের প্রাচীর ঘেরা পুরনো শহরটি মুসলিম গন্ধি এবং প্রাচীরের বাইরে ইসলামের বিপরীত অবস্থা। এই দাঙ্গা পরীক্ষাগারের সর্বশেষ ও বৃহত্তম সংযোজন হল ২০০২-এর দাঙ্গা। যে দাঙ্গার পর তিস্তা শীতলাবাদের মত ব্যক্তি মুসলিমদের কাছে অক্সিজেন ছিলেন। গুজরাট বা আহমেদাবাদ হিন্দুত্বের পরীক্ষাগার হলে সাম্প্রাদায়িক দৃষ্টিভঙ্গিতে পুলিশী সঙ্ঘর্ষে হত্যার পরীক্ষাগারও গুজরাট ।
২০০২-এ বেশ কিছু নারকীয় ঘটনার মধ্যে একটি হল আহমেদাবাদের রন্ধিকপুরে পাঁচ মাসের গর্ভবতি বিলকিস বানুর উপর শারীরিক নির্যাতন ও একই পরিবারের ১৪ জনকে হত্যা এবং একইসঙ্গে গ্রামের আরও ১৭ জনকে হত্যা করা হয়। মৃত্যুদন্ড দেওযার জন্যে একটি ঘটনাই যথেষ্ট ছিল। কিন্তু তা হয়নি, এমনকি মাকে আঁকড়ে ধরে থাকা তিন বছরের শিশুকন্যাটিকে পাথরে আছড়ে মাথা চূর্ণ-বিচূর্ণ করে মেরে ফেলার জন্যে দায়ী নরপশু শৈলেশ ভাটেরও সর্বোচ্চ শাস্তি হল যাবজ্জীবন কারাদন্ড। বিলকিস এরপর ধর্ষিতা হন মৃত বলে ফেলে রাখা হয়…দেখে ফেলেছেন একে একে মা ও বোনের গণধর্ষণ এবং হত্যা। পাপ চাপা থাকে না। এই বিলকিসই নিম্ন আদালত ও মুম্বাই আদালতে প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য দিয়ে শাস্তির দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছে। একটিই আশার কথা তথ্য-প্রমাণ লোপের প্রচেষ্টায় ভুযো ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্ট ও ভুয়ো পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট দেওয়ার জন্যে ৫ পুলিশ অফিসার ও ২ ডাক্তারের বিরুদ্ধে বিচার শুরু করার কথা বলা হয়েছে যারা নিম্ন আদালতে ছাড়া পেয়ে যায়। তবে ৩-রা মার্চ ২০০২-এ ধর্ষণ, হত্যা ও লুঠপাটের ঘটনাতে মোট ১৯ জন শাস্তি পেয়েছে। সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড না হয়ে যাবজ্জীবন হল।
পরের দিন আরও একটি নারকীয় ঘটনার জন্যে ৪ জনকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হল। জ্যোতি সিং নামক ছাত্রীর গণ ধর্ষণ ও নৃশংস হত্যার জন্যে এরা শাস্তি পেল তবে একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায ছাড় পেয়ে গেছে। ২০১২-র ডিসেম্বরের সারা দেশ আলোড়িত করা নির্ভয়া মামলাটিতে এর আগে দিল্লি হাইকোর্ট মৃত্যুদন্ড দিয়েছিল, সুপ্রিম কোর্ট তা বহাল রাখল। নিশ্চয় এই মর্মান্তিক ঘটনার জন্যে যোগ্য শাস্তি হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে জাতিগত ও ধর্মীয় দাঙ্গা এবং গণহত্যাগুলি কি আরও মর্মান্তিক নয়? যা একপ্রকার ভারতীয় সংবিধানের উপর আঘাত। এর আগে মহসিন নামক এক যুবকের হত্যাকান্ডে মুম্বাই কোর্ট দাঙ্গা বলে লঘু শাস্তি দিয়েছিল। আর রন্ধিকপুরের ঘটনাটি দাঙ্গা নয় পুলিশ,, প্রশাসন ও বজরঙি, আর এস এস সংযোগে একতরফা গনহত্যা ছিল। এ ক্ষেত্রে আরও কঠোর শাস্তি প্রদান ছিল যুগের দাবি। আদালত চত্বরে একটা জনপ্রিয় বাগধারার প্রচলন আছে ‘জাস্টিস ডিলেইড জাস্টিস ডিনায়েড’। সঙ্ঘ পরিবারের বিরুদ্ধে মামলাগুলির দীর্ঘসূত্রিতা এই ধরনের বাগধারার উৎকৃষ্ট প্রমাণ।
২০০৪ সালে ইশরাত জাহান হত্যাকে ভুয়া সংঘর্ষের মাইলস্টোন হিসাবে ধরলে দেখা যাবে এর আগে-পরে গুজরাট পুলিশ দ্বারা আরও ২১ টি সাজানো পুলিসি সঙ্ঘর্ষে হত্যা হয়েছিল, আর ৩৭ জন নিহতের সকলেই মুসলিম। নকশাল আন্দোলনটি ছিল সাধারণ মানুষের অধিকারের আন্দোলন যার জন্যে ধর্মীয় বিষয়গুলি উহ্য ছিল। খালিস্তান আন্দোলনটি বিচ্ছিন্নিতাবাদী ছিল এবং ধর্মীয় গোষ্ঠীর আন্দোলন ছিল। বিচ্ছিন্নিতাবাদী ছিল বলে সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের কার্যকলাপ কিছুটা বৈধতা পায়। গুজরাটে অল্প সংখ্যক মুসলিম বাস করে এবং মুসলিমদের মধ্যেই বিভাজন রয়েছে, এদের মধ্যে অন্তত একটি গোষ্ঠী মোদির বরাবরের সমর্থক। তাই দেখা যায় গুজরাটে মুসলিমদের রাজনৈতিক প্রভাব খুব সামান্যই। প্রভাব যতই কম থাকুক হিটলারের ইহুদি বিরোধী গুজবের মত মুসলিম বিরোধী গুজবকে কাজে লাগিয়ে আর এস এস সহ সমস্ত হিন্দুত্ব ব্রিগেড তাদের রাজনৈতিক মুখ বিজেপি-র উত্থানে কাজে লাগায়। তাই মুসলিম বিরোধী ভুযো সঙ্ঘর্ষ ও হত্যাগুলি আর কিছু নয় সন্ত্রাসী হত্যা বলে প্রচার করে বিজেপি-র দিকে ভোটের ঝোল টানার একটা পদ্ধতি। এখন মনে হচ্ছে ২০০২-এর গুজরাট দাঙ্গা ছিল মুসলিম নিধন ও গণতন্ত্র নিধন যজ্ঞের প্রস্তুতি। এই হত্যাকান্ডকেই হিন্দুত্ব ব্রিগেড ব্যবহার করেছে রাগত প্রতিষোধস্প্রহ মুসলিমদের ‘নরেন্দ্র মোদি বিরোধী মুসলিম সন্ত্রাস’-এর তত্ত্ব হিসাবে। ডিজি বানজারা যদি না গ্রেফতার হতেন তবে এই তত্ত্ব ও ভুযো সঙ্ঘর্ষগুলির হদিসই পাওয়া যেত না। আশ্চর্যের ব্যাপার গুজরাট এর প্রতিটি ভুয়ো সঙ্ঘর্ষ হত গভীর রাতে বা শেষ রাতে, যখন পৃথিবী নিদ্রাভিভূত থাকে, সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওযা যায় না, গেলেও হত্যা করা হয়।
২০০২-এর ২২ অক্টোবর সমীর খান পাঠানকে লশকর ই তাইয়েবার এজেন্ট বলে রাত ২ টোর সময় হত্যা করা হয়। পাঠান নাকি পালিয়ে যাচ্ছিল। ২০০৩-এর ১৩-ই জানুয়ারী আহমেদাবাদের এক মেকানিক সাদিক জামালকে হত্যা করা হয়। এঁর বিরুদ্ধেও লশকর ই তাইয়েবার জঙ্গি ছাপ মেরে দেওযা হয়। ১৫-ই জুন ২০০৪-এর সর্বাপেক্ষা যুগান্তকারী ভুয়ো সঙ্ঘর্ষটি পরে প্রকাশ পেয়ে যায়। এক্ষেত্রেও চারজন নিহতকেই লশকর ই তাইযেবার জঙ্গি বলে প্রচার করা হয়। ঘটনাটি হল ১৯ বছর বয়স্ক কিশোরী কলেজ ছাত্রী ইশরত জাহানকে মুম্বাইযের মুম্বরা থেকে তুলে আনা হয়। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্বামী জাভেদ গোলাম (প্রাণেশ কুমার), এঁদের পুলিশ উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে পুলিশি হেফাজতেই ইশরাতকে ধর্ষণ করে পরে আমজাদ আলি রানা (রাজকুমার) ও যীশান জওহর নামক আরও দুইজনের সঙ্গে এঁদের রাত তিন থেকে চারটের মধ্যে হত্যা করা হয়। ১ লা আগস্ট ইশরাত জাহানের মা গুজরাট হাইকোর্টে মামলা করেন। ১৭-ই সেপ্টেম্বর ২০০৯ বিচারক এই ঘটনাকে সাজানো সঙ্ঘর্ষ বলে রায় দেন। ২৫-শে নভেম্বর ২০০৫ সোহরাব উদ্দিন ও প্রত্যক্ষদরশী তাঁর স্ত্রী কাওসার বানুকে পুলিশ হত্যা করে। সোহরাবউদ্দিন নাকি নরেন্দ্র মোদিকে হত্যা করতে আসছিল। বস্তুত ২০০২ থেকে ২০০৬ এই পাঁচ বছর গুজরাটে কোন মুসলিম বাড়ি থেকে বার হয়ে ফিরে আসার আশা করত না। যখন-তখন তাকে লশকর ই তাইয়েবা বা অন্য কোন জঙ্গি সংগঠনের সদস্য বলে প্রথমে গ্রেফতার পরে পুলিশ হেফাজত থেকে পালানোর নাটক করে হত্যা করা হত। প্রতিটি ক্ষেত্রে বলা হত ওরা নাকি সেলিব্রিটি মুখ্যমন্ত্রী মোদিকে হত্যার জন্যে সুপারি নিয়েছিল। ডি জি বানজারা গ্রেফতার ও তার কবুল এই ষড়যন্ত্রের ভান্ডা ফোড় করে দেয়। আগেই বলেছি গুজরাট হল আর এস এস পরিচালিত হিন্দুত্বের বীক্ষণাগার যার প্রধান বিজ্ঞানী এখন সর্বভারতীয় মঞ্চে বিরাজমান। তাই সর্বভারতীয় ক্ষেত্রেও এই উগ্র হিন্দুত্ব প্রসার লাভ করবে এ আর বিচিত্র কি?
এবার মধ্যপ্রদেশ, একসঙ্গে আট জন জেল পলাতক জিনস-স্নিকার পরিহিত সিমি জঙ্গি। যে সংস্থাটি সম্বন্ধে নিষিদ্ধ হওযার কোন গ্রহণযোগ্য সূত্রই পাওযা যায়নি। অথচ আর এস এস, বজরঙ দলের ব্যক্তিহত্যা, গণহত্যা এবং সশস্ত্র কুচকাওযাজ ও মিছিলগুলি চোখে ঠুলি পরে উপেক্ষা করা হয়। আটজন প্রথম শ্রেণির জেলের ৩০ ফুটের উপর প্রাচীর টপকে পালিযে গেল, মরার জন্যে এক জায়গায জমা হল, জেলের সি সি ক্যামেরা একসঙ্গে খারাপ হয়ে গেল, আর ভারি ভারি তালা খোলার ডন্যে কাঠের চাবি বা টুথব্রাশ ব্যবহার করা হল। কোনটাই বিশ্বাসযোগ্যতার কাছাকাছি এসেছে বলে মনে হয় না। এরপর তাদের হত্যা করা হল। কি ভাবে? না ওদের হাতে অস্ত্র ছিল। অস্ত্র কি ? না কয়েকটি চাকুর থেকেও নিরিহ বস্তু। এই চাকু সদৃশ নিরিহ অস্ত্রের জন্যেই পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জে তাদের হত্যা করা হল। এমন জঙ্গি যে তারা খালাস পাওযার মুখে। মুখ্যমন্ত্রী বলে ফেললেন জেলে বসে বিরিয়ানি ধ্বংস অপেক্ষা এটাই ভালো। ভারতীয় জেলে বিরিয়ানিও দেওযা হয়!!! এখন যা অবস্থা বাইরে ঘোরা-ফেরা করে জঙ্গি তকমা পাওয়া অপেক্ষা মুসলিম যুবকরা জেলেই নিরাপদ। পালালেও বিপদ। তাই জেলে বসে বিরিযানি খাওয়ায় শ্রেয়। অন্তত পৈত্রিক প্রাণটা রক্ষা পায়।
এর আগে সাধ্বি প্রজ্ঞা, অসীমানন্দ বা কর্ণেল পুরোহিতের এবং ঈসরত জাহানের হত্যাকারীর বা অমিত শাহ ও আরও বড় কুশীলবের বেকশুর খালাস দেখে কিংবা সাম্প্রতিক দুটি রায় দেখে মনে হতে পারে বিচারব্যবস্থার মধ্যেই দ্বিচারিতা রয়েছে। প্রশাসন বা পুলিশি ব্যবস্থাকে যে কোন ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল আগেই কুক্ষিগত করে রাখে। তাই এই ভরসাটিও বহু মানুষ ধর্তব্যর মধ্যে রাখে না। কিন্তু বিচারব্যবস্থাটিই এখনও পর্যন্ত অনেকটাই নিরেপেক্ষ রয়েছে। তাই দলিত, মুসলিম বা অন্যান্য পিছিযে পড়াদের হাতিয়ার এখনও বিচারব্যবস্থা, রয়েছেন শীতলাবাদের মত জাগ্রত জনতা।