• মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
Friday, August 22, 2025
নবজাগরণ
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ - জ্ঞান অর্জনের বিস্বস্থ সংস্থা
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ - জ্ঞান অর্জনের বিস্বস্থ সংস্থা
No Result
View All Result

স্বামী বিবেকানন্দের দৃষ্টিতে ইসলাম ধর্ম ও হজরত মুহাম্মাদ (সাঃ)

নবজাগরণ by নবজাগরণ
June 25, 2025
in ইসলাম, হিন্দু
0
স্বামী বিবেকানন্দের দৃষ্টিতে ইসলাম ধর্ম ও হজরত মুহাম্মাদ (সাঃ)

চিত্রঃ স্বামী বিবেকানন্দ, Image Source: wikimedia

Share on FacebookShare on Twitter

লিখেছেনঃ কুতুবুদ্দিন মোল্লা

ধর্ম বাক্যাড়ম্বর নয়—আত্মার সঙ্গে পরমাত্মার সম্বন্ধ। ধর্ম শুধু শ্রদ্ধা ও বিশ্বাসের উপর স্থাপিত। প্রত্যেক ধর্মের তিনটি করে ভাগ আছে। যথা—দার্শনিক, পৌরাণিক ও আনুষ্ঠানিক। প্রত্যেক ধর্মের সার হল দার্শনিক ভাগ। পৌরাণিক ভাগ দার্শনিক ভাগের বিবৃতিমাত্র। এখানে মহাপুরুষদের অল্প-বিস্তর কাল্পনিক জীবনী ও অলৌকিক কাহিনি থাকে। আর আনুষ্ঠানিক দর্শনেরই স্থূল রূপ।

বিবেকানন্দ সব ধর্মের ও ধর্মপুরুষদের এবং ধার্মিকদের শ্রদ্ধা ও সম্মান জানিয়েছেন। কাউকেই তিনি ছােট বা খাটো করে দেখেননি। ধর্ম নিয়ে মাতামাতি করে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পে মানুষ ও মনুষ্যত্বকে হনন করার ঘাের বিরােধী ছিলেন তিনি। ‘ধর্ম’ নামক প্রবন্ধে তিনি সেই শ্রদ্ধাপূর্ণ কথা ব্যক্ত করেছেন :

“বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে কখনও বিরােধ ছিল না, অথচ প্রত্যেক ধর্মই স্বাধীনভাবে নিজ নিজ কার্যসাধন করিয়া গিয়াছে—সেইজন্যই এখানে প্রকৃত ধর্মভাব এখনও জাগ্রত। …সকল ধর্মে ভালাে ভালাে লােক আছে, এই কারণেই সেইসব ধর্ম লােকের শ্রদ্ধা আকর্ষণ করিয়া থাকে, সুতরাং কোনও ধর্মকেই ঘৃণা করা উচিত নয়।” (‘ধর্ম’, স্বামী বিবেকানন্দ, ‘স্বামী বিবেকানন্দের বাণী সঞ্চয়ন’, উদ্বোধন কার্যালয়, কলকাতা, পৃষ্ঠা-৫৩)

—আসলে ধর্মের আনুষ্ঠানিক ভাগ নিয়ে বাড়াবাড়ি বা মাতামাতি না করে মূলত দার্শনিক ভাগকে গুরুত্ব ও প্রাধান্য দিয়েছেন বলেই স্বামীজি এমন সর্বধর্মর্সমন্বয়ী মানসিকতা পােষণ করতে পেরেছেন এবং এর ফলে পক্ষান্তরে তাঁর প্রখর মানবপ্রেমী ও মানবতাবাদী মানসিকতার সুচারু প্রকাশ বড় হয়ে দেখা দিয়েছে।

স্বামী বিবেকানন্দের দৃষ্টিতে ইসলাম ধর্ম ও হজরত মুহাম্মাদ (সাঃ)
চিত্রঃ স্বামী বিবেকানন্দ, Image Source: artplusmarketing

১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে ১১ সেপ্টেম্বর চিকাগাে ধর্ম-মহাসভার প্রথম দিনের অধিবেশনে সভাপতি কার্ডিন্যাল গিবস শােতৃমণ্ডলীর কাছে পরিচয় করিয়ে দিলে অভ্যর্থনার উত্তরে স্বামী বিবেকানন্দ আমেরিকাবাসীকে ভগিনী ও ভাতৃ-সম্বােধন করে শিবমহিমাজ্ঞাপক স্তোত্র উচ্চারণ করে সব ধর্মের সার ভগবদ্ভক্তি-শ্রীশ্রীঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের ‘যত মত তত পথ’- এর বিষয়টি ব্যঞ্জনায় সুপরিস্ফুট করেন—যা শুধু ইসলাম ধর্ম নয়, সমস্ত ধর্মের প্রতি আন্তরিক সম্মান ও স্বীকৃতির সূচক:

“রুনাচিং বৈচিত্র্যাজুকুটিল-নানাপথজুযাং।

নৃণামেকো গম্যস্ত্বমসি পয়সামর্ণব ইব।।” (শিবমহিন্ন স্তোত্রম’)।

স্বামীজি এই শ্লোকের ব্যাখ্যা করে বলেন:

“বিভিন্ন নদীর উৎস বিভিন্ন স্থানে, কিন্তু তাহারা সকলেই যেমন এক সমুদ্রে তাহাদের জলরাশি ঢালিয়া মিলাইয়া দেয়, তেমনি হে ভগবান্ নিজ নিজ রুচির বৈচিত্র্যবশতঃ সরল ও কুটিল নানা পথে যাহারা চলিয়াছে, তুমিই তাহাদের সকলের একমাত্র লক্ষ্য।”

উগ্র সাম্প্রদায়িকতার গোঁড়ামি একসময় মানুষকে ধর্মোন্মত্ত করে তােলে এবং তার পরিণতি হয় ভয়াবহ ও করুণ। ধর্ম ভালাে, কিন্তু ধর্মোন্মত্ততা কখনওই ভালাে নয়। ধর্মোন্মত্ত মানুষ এই পথিবীকে চিরকাল হিংসায় পূর্ণ করছে, নরশােনিতে সিক্ত করেছে, সভ্যতাকে ধ্বংস করেছে। এবং সমগ্র জাতিকে হতাশায় মগ্ন করেছে। তাই স্বামীজি ধর্মোন্মত্ততা দূর করে সহৃদয়তার সঙ্গে নিজের ধর্মকে পালন করে অন্য ধর্ম ও ধর্মাবলম্বীকে মান্য ও সম্মান প্রদর্শনের উপর জোর দিয়েছেন। আর তার দৃঢ় বিশ্বাস এরই ফলে প্রতিষ্ঠিত হবে সার্বিক মানবপ্রেম ও মানবকল্যাণ। এইজন্য হিন্দু ও ইসলাম ধর্মের পার্থক্য থাকলেও উৎস ও ভগবৎগত কোনও পার্থক্য নেই বলে তিনি মনে করতেন। কারণ, উপনিষদে আছে— “একমেবাদ্বিতীয়া দ্বিতীয় নাস্তি” এবং ‘কঠোপনিষদে’ নিরাকার ঈশ্বরের কথা ব্যক্ত হয়েছে। আর ইসলাম ধর্মের মূলমন্ত্র “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ মােহম্মদুর রাসুলল্লাহ (সঃ)”, যার অর্থ আল্লাহ এক এ অদ্বিতীয়, মহম্মদ (সঃ) তারই প্রেরিত রসুল (বার্তাবাহক)। স্বামীজি তাই ধর্ম, শাস্ত্র ও ঋষি সম্পর্কে আলােচনা করতে গিয়ে বিশ্বজনীন ধর্মের আদর্শ, গীতাতত্ত্ব, ভারতীয় মহাপুরুষ, ঈশদূত যিশুখ্রিস্ট, হজরত মহম্মদ প্রভৃতিকে নিয়ে আলােচনা করেছেন। পাশ্চাত্যের বিরাট সম্মেলনে তিনি উদারতা ও সমন্বয়ের ভাবাদর্শ ব্যক্ত করেছেন :

“একটি ধর্ম যদি সত্য হয়, তবে সবগুলিই সত্য হইবে। …সেইজন্য হিন্দুধর্ম যতটা আমার, ততটা তােমাদেরও।”

উপরােক্ত মন্তব্যের ভাবসম্প্রসারণ করে তিনি বলেন :

“আমরা হিন্দুরা কেবল যে পরমত সহ্য করি, তাহা নয়, আমরা সকল ধর্মের সঙ্গে নিজেদের মিলিত করি। আমরা মুসলমানদের মসজিতে প্রার্থনা করি, পার্শীদিগের অগ্নির পূজা করি এবং খ্রীষ্টানদের ক্রুশের সম্মুখে নতজানু হই। আমরা জানি নিম্নতম বস্তুরতি হইতে উচ্চতম অদ্বৈতবাদ পর্যন্ত, সকল ধর্মই সমভাবে অসীমকে উপলব্ধি এবং অনুভব করিবার বিভিন্ন প্রচেষ্টামাত্র। সেই জন্য এই সকল কুসুম চয়ন করিয়া, প্রেমের সূত্রে একত্র গ্রথিত করিয়া পূজার জন্য একটি অপূর্ব স্তবক রচনা করি।”

—মহাপুরুষ-সিদ্ধপুরুষ যখন ঈশ্বরের নৈকট্য বা অস্তিত্ব পেয়ে যান, যখন তার মধ্যে আর ধর্মাচ্ছাদন বড় হয়ে দেখা দেয় না সব ধর্মের মূলে বা পরিণতিতে তারা ঈশ্বরকে প্রত্যক্ষ করেন; দ্বন্দ্ব-কলহ-বিবাদ শুধু ধর্মান্ধ ধর্মোন্মত্তদের। স্বামীজি তাই হজরত মহম্মদ সম্পর্কে যেবক্তব্য দিয়েছিলেন স্বামী নির্জরানন্দের প্রকাশনায় স্বামী ‘বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা সংকলন’ এ তা বাংলায় ‘হজরত মহম্মদ’ শিরােনামে সংক্ষেপে প্রকাশিত হয়। সেখানে হজরত মহম্মদ, ইসলাম ধর্ম এবং প্রসঙ্গত অন্য ধর্মকথা আলােচিত হয়েছে।

শুরুতেই স্বামীজি বলেছেন হজরত মহম্মদ যৌবনে ধর্ম বিষয়ে বিশেষ আগ্রহী ছিলেন না। সৎ ও প্রিয়দর্শন যুবক মহম্মদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে বিত্তবান বিধবা খাদিজা তাঁকে বিয়ে করেন। প্রভূত অর্থের অধিকারী হয়ে তিনি রােম-পারস্যে আধিপত্য বিস্তার করেন। পাপাচরণ, পৌত্তলিকতা, উপাসনার নামে ভণ্ডামি, কুসংস্কার, নরবলি প্রভৃতি দেখে ব্যথিতচিত্তে তিনি ইসলাম ধর্মের প্রচার ও প্রসারে নিজেকে নিয়ােজিত করেন।

স্বামী বিবেকানন্দের দৃষ্টিতে ইসলাম ধর্ম ও হজরত মুহাম্মাদ (সাঃ)
চিত্রঃ স্বামী বিবেকানন্দ, Image Source: ekushey

স্বামীজি ধর্ম-সংস্কারমুক্ত উদারভাবাপন্ন মন নিয়ে ইসলাম ধর্ম ও হজরত মহম্মদকে সমীক্ষা করেছেন। তিনি বলতে চেয়েছেন কুসংস্কার ও গোঁড়ামিযুক্ত মন দিয়ে কাউকে দেখলে যথার্থরূপে দেখা হয় না। মহম্মদের মতাে বার্তাবহগণ নিশ্চয়ই ঈশ্বরের কাছ থেকে আসেন, তা না হলে তাঁরা মহান হতে পারতেন না। দোষ-ত্রুটি প্রত্যেকেরই আছে। নির্দোষ কোনও মানুষ হয় না। দুর্জনেরা সর্বদাই দোষ-ত্রুটি খোঁজে তিনি উপদেশ দিয়েছেন:

“…মাছি ক্ষত অন্বেষণ করে, আর মধুমক্ষিকা শুধু ফুলের মধুর জন্য আসে। মক্ষিকাবৃত্তি অনুসরণ করবেন না, মধুমক্ষিকার পথ ধরুন।…” (‘হজরত মহম্মদ’, ‘স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা সংকলন’ পৃষ্ঠা-১২৭)

স্বামীজি বলেছেন, কোনও কিছু হঠাৎ বা সব সময়ে অনায়াসে হয় না। মহৎ কাজ করতে বিরাট প্রস্তুতির প্রয়ােজন। দিন-রাত প্রার্থনার পর হজরত মহম্মদ স্বপ্নে অনেক কিছু দর্শন করতেন। জিব্রাইল স্বপ্নে আভির্ভূত হয়ে বলেন, হজরত মহম্মদই সত্যের বার্তাবহ যিশু-মুশা ও অন্যান্য নবী বা প্রেরিত পুরুষদের বাণী লুপ্ত হয়ে যাবে। তাই ঈশ্বর মহম্মদকেই ধর্মপ্রচারের আদেশ দেন। তখন খ্রিস্টানরা যিশুর নামে রাজনীতি এবং পারসিকরা দ্বৈতভাব প্রচার করছেন দেখে হজরত মহম্মদ বলেন :

“আমাদের ঈশ্বর এক। যাহা কিছু আছে, সবকিছুরই প্রভু তিনি। ঈশ্বরের সঙ্গ অন্য কাহারও তুলনা হয় না।” (তদেব, পৃষ্ঠা-১২৬)।

মহম্মদ এই মত প্রচার ও প্রতিষ্ঠা করতে অনেক নির্যাতন সহ্য করেছিলেন। অনেক ত্যাগ ও পরিশ্রমে তাঁরই নেতৃত্বে একদিন সমগ্র আরবজাতি ঐক্যবদ্ধ হয় এবং আল্লার নামে মহম্মদের ধমর্জগৎ প্লাবিত করে।

ধর্মগুরু হজরত মহম্মদের একাধিক পত্নী-গ্রহণকে অনেকে কটুক্তি করে থাকে। প্রত্যুত্তের স্বামী বিবেকানন্দ বলেন :

“মহাপুরুষেরা প্রত্যেকে দুই শত পত্নী গ্রহণ করিতে পারেন। আপনাদের মতাে দৈত্যকে এক পত্নী গ্রহণ করিতেও আমি অনুমতি দিব না। মহাপুরুষদের চরিত্র রহস্যাবৃত। তাহাদের কার্যধারা দুর্জ্ঞেয়। তাঁহাদিগকে বিচার করিতে যাওয়া আমাদের অনুচিত। খ্রিস্ট বিচার করিতে পারেন মহম্মদকে। আপনি আমি কে?—শিশুমাত্র। এই সকল মহাপুরুষকে আমরা কি বুঝিব?” (তদেব, পৃষ্ঠা-১২৭)

—বিবেকানন্দের এ উক্তি অবশ্যই শ্রদ্ধার সঙ্গে মান্য করতে হয়। সহৃদয়শীল ছাড়া হৃদয়ের ভাব উপলব্ধি করতে পারে না যেমন, ঠিক তেমনি ধর্মীয় ভাবে পূর্ণতা ছাড়া অন্য ধর্মগুরুকে যথার্থভাবে উপলব্ধি করা যায় না। আর যা উপলব্ধি নয়, তা নিয়ে বিচার-বিশ্লেষণেও সত্যতা। থাকে না, যথার্থও হয় না। বিবেকানন্দের এই উক্তি শুধু মহম্মদ কেন—যে-কোনও ধর্মগুরু সম্পর্কে সমানভাবে প্রযােজ্য। ও বিবেকানন্দ ইসলাম ধর্মকে সম্মান রেখে বলেছেন, হজরত মহম্মদের বাণী মানুষকে আকৃষ্ট করেছে। তিনি বলেছেন, হজরত মহম্মদের প্রথম বাণী হল সাম্য। স্বর্গ-মর্তের স্রষ্টা এক ঈশ্বরে বিশ্বাস রাখা সেই সাম্যের প্রধান সােপান। এক ব্যক্তির পিছনে অসংখ্য ব্যক্তি সারবদ্ধ হয়ে নামাজ পড়ে—সাম্যের এ এক বড় দৃষ্টান্ত।

হজরত মহম্মদ এবং তার প্রচারিত ইসলাম ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা-ভক্তি-ভালােবাসা রেখে হজরত মহম্মদের গুণকীর্তন বিস্তারিত না করে আত্মসমীক্ষা ও বর্তমানে মানুষের করণীয় কী তা বলেছেন স্বামীজি। তিনি বলেছেন:

“এইসব প্রাচীন মহাপুরুষেরা সকলেই ছিলেন ঈশ্বরের দূত। আমি নতজানু হইয়া তাহাদের পূজা করি, তাহাদের পদধূলি গ্রহণ করি। কিন্তু তাহারা মৃত। …আর আমরা জীবিত। আমাদের আগাইয়া যাইতে হইবে। যীশু অথবা মহম্মদের অনুকরণ করাই ধর্ম নহে। অনুকরণ ভালাে হইলেও তাহা কখনও খাঁটি নহে। যীশুর অনুকরণকারী হইবেন না, কিন্তু যীশু হউন। আপনারা যীশু বুদ্ধ অথবা অন্য কোন মহাপুরুষের মতােই মহা!” (তদেব, পৃষ্ঠা-১২৭)।

বিবেকানন্দ মানুষের ইচ্ছাশক্তি, জ্ঞানযােগ ও কর্মযােগের উপর গুরুত্ব দিয়েছেন বেশি। প্রাচীন ধর্মগুরুদের তিনি কোনও অংশে ছােট করেননি; কিন্তু মানুষের গুরুত্ব কোনওভাবেই কমাননি। হজরত মহম্মদ, যিশুখ্রিস্ট, কৃষ্ণ, বুদ্ধ প্রমুখ ধর্মগুরুরা তাে মানুষ। তারা প্রথমত মানুষ; পরে ধর্মগুরু, সিদ্ধপুরুষ, ঈশ্বরের প্রিয়পাত্র বা অবতার। শুধু সেকালে মানুষের মধ্যে এই ঈশ্বরের অবতার রূপ ছিল—এযুগে কি নেই? না, হবে না? স্বামীজির দৃঢ় বিশ্বাস এই বর্তমানের মানুষের মধ্যেও মহম্মদ, যিশু, কৃষ্ণ, বুদ্ধ প্রমুখের মতাে কেউ হতে পারেন। তাই নিছক অনুসরণ ও অনুকরণ নীতিতে শুধু চর্বিত চবণ নয়, নতুনভাবে আস্বাদন করতে হবে। অনুকরণে বা অনুসরণে শুধু তাদের মতাে হওয়া যায়, কিন্তু কিছু হওয়া যায় না। আর নতুন কিছু না হলে প্রাচীন মহাপুরুষদের পরে অন্য এক মহাপুরুষ হিসেবে মান পাওয়া যাবে না এবং সাধনা বা কর্মপ্রচেষ্টার সার্থকতা পাওয়া যাবে না। প্রাচীন ধর্মগুরুদের মত ও পথের অনুসারী না হয়ে নতুন মত ও পথ অন্বেষণের উপর জোর দিয়ছেন স্বামীজি। শুধু বহন নয়, বাহনের উপর গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি। তিনি বলতে চেয়েছেন এই চেষ্টা ও সাধনায় আমরা ঠিক যিশু বা মহম্মদের মতাে নাও হতে পারে, কিন্তু অন্য কিছু তাে হতে পারি! তাই তিনি জোর দিয়েছেন ব্যক্তির নিজস্বতার উপর। তিনি বলেছেন:

“নিজ নিজ প্রকৃতির নিকট খাঁটি হওয়াই সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ ধর্ম। নিজের উপর বিশ্বাস রাখুন। যদি আপনার নিজের অস্তিত্বই না থাকে, তবে ঈশ্বর অথবা অন্য কাহারও অস্তিত্বই বা কিরূপে থাকিবে?” (তদেব, পৃষ্ঠা-১২৭)।

—আমরা যেখানেই থাকি না কেন, মানুষের মনই অসীম-অনন্ত ঈশ্বরকে অনুভব করে। মানুষ ঈশ্বরকে অনুভব করে বলেই ঈশ্বর আছেন। তা না হলে ঈশ্বরের অস্তিত্ব থাকত না। সুতরাং মানুষও কম বড় নয়—মানব প্রগতির বিরাট জয়যাত্রা এই মানুষের মহত্ব।

ইসলাম ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ কথা হল ‘আমল’ করা। শুধু শুনলে বা বললে হবে না— পালনে তা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। বিবেকানন্দও বলেছেন-ধর্ম-বিশ্বাস-মতবাদ সম্বন্ধে অনেক কথা বলা সহজ, কিন্তু চরিত্রগঠন ও ইন্দ্রিয়সংযম খুব কঠিন। ধর্ম কোনও মতবাদ বা নিয়ম নয়, —একটা প্রক্রিয়া। মতবাদ ব্যায়ামবিশেষ। অনুশীলনের দ্বারা আত্মা পূর্ণত্ব পায়। ‘গীতা’-তে আছে যখন ধর্মের গ্লানি ও অধর্মের অভ্যুত্থান হয়, তখনই ঈশ্বর মনুষ্যদেহ ধারণ করে দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন করেন; ধর্মসংস্থাপনের জন্য তিনি যুগে যুগে আবির্ভূত হন এই পৃথিবীতে-

“যদা যদা হি ধর্মস্য গ্লানির্ভবতি ভারত।

অভ্যুত্থানমধর্মস্য তদাত্মানং সৃজাম্যহম্।।” (শ্রীমদ্ভাগবদগীতা)

—এ যুগে সেই নররূপী নারায়ণ বা ঈশ্বরের বার্তাবহ কোনও দূত বা ধর্মগুরু তাে আসবেই। এবং সে তাে পৃথিবীর এই মানুষর মধ্যেই। তাই মানুষকে সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে— ‘হজরত মহম্মদ’ সম্পর্কে আলােচনায় স্বামীজি সেই কথাই ব্যক্ত করেছেন:

“জ্ঞানালােকের মহান্ বার্তাবহগণের ইহাই পরিচয়। তাহারা আমাদের মহান্ আচার্য, আমাদের জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা; কিন্তু আমাদিগকে নিজ নিজ পথে চলিতে হইবে। (তদেব, পৃষ্ঠা-১২৮)

—হজরত মহম্মদের মতাে মহাপুরুষগণ শূন্যে ভেসে আসেননি এই পৃথিবীতে তারা মাতৃগর্ভে জন্ম নিয়েছেন। এযুগেও এবং বিভিন্ন যুগে মহাপুরুষরা আসবেন এবং সেই এই মাতৃগর্ভে জাতদের মধ্যেই। তাই আমাদের প্রত্যেককে সেই পথে ও লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে, সাধনা করতে হবে। সুতরাং বিবেকানন্দ মহাপুরুষ বা ধর্মপুরুষদের সঙ্গে সঙ্গে মানুষকে এবং যেকোনও ধর্মাবলম্বী মানুষকেই গুরুত্ব ও প্রাধান্য দিয়েছেন। তাই বিবেকানন্দ আমাদের সকলের কাছে শ্রদ্ধেয় ও মর্যাদার সঙ্গে স্মরণীয়।

 

স্বামী বিবেকানন্দ সম্পর্কে আরও পড়ুন,

স্বামী বিবেকানন্দ ইসলাম ও সমকালীন ভারতীয় জাতীয়তাবাদ

 

Download the Nobojagaran App

Post Views: 3,636
Tags: Swami Vivekanandaইসলামবিবেকানন্দ ও ইসলামস্বামী বিবেকানন্দস্বামী বিবেকানন্দের দৃষ্টিতে ইসলাম ধর্ম ও হজরত মুহাম্মাদ (সাঃ)হজরত মুহাম্মাদহজরত মুহাম্মাদ (সাঃ)
ADVERTISEMENT

Related Posts

হজরত হুসাইন (রাঃ) এর হত্যাকারী কে? – ইতিহাসের আলোকে বিশ্লেষণ
ইসলাম

হজরত হুসাইন (রাঃ) এর হত্যাকারী কে? – ইতিহাসের আলোকে বিশ্লেষণ

লিখেছেনঃ মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম প্রথমেই একটি কথা স্পষ্ট করে বলা প্রয়োজন—এই আলোচনা কোনো ব্যক্তি বিশেষের পক্ষাবলম্বন করে লেখা নয়।...

by মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম
July 6, 2025
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত কি ২৫০০ বছরের পুরোনো ‘হামান-মরদখাই’র দ্বন্দ্বের আধুনিক রূপ?
ইসলাম

ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ কি প্রাচীন ‘হামান-মরদখাই’র দ্বন্দ্বের আধুনিক রূপ?

লিখেছেনঃ মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম গত ১২ জুন, বৃহস্পতিবার ভোররাতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু পৌঁছালেন জেরুজালেমের পবিত্রতম ও প্রাচীন ধর্মীয়...

by মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম
June 19, 2025
রহস্য উদ্ঘাটন মূলক বিশ্বাস খ্রিস্টানদের ইজরাইল সমর্থনের বড় কারণ
ইসলাম

‘রহস্যউদ্ঘাটনমূলক’ বিশ্বাস আমেরিকান খ্রিস্টানদের ইহুদি ও ইজরাইল সমর্থনের বড় কারণ

লিখেছেনঃ মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম রহস্য উদ্ঘাটন পন্থী খ্রিস্টান মৌলবাদীরা ‘বাইবেল সংক্রান্ত কারণে’ আরও ব্যপকভাবে ফিলিস্তিন-ইজরাইল সংঘাত বৃদ্ধি পাচ্ছে। [Apocalypse...

by মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম
July 10, 2025
বাঙালি মুসলিম সমাজে আধুনিকীকরণ—রামমােহন বা বিদ্যাসাগরের প্রসঙ্গ
ইসলাম

বাঙালি মুসলিম সমাজে আধুনিকীকরণ—রামমােহন বা বিদ্যাসাগরের প্রসঙ্গ

অনেকেই বলেন, মুসলিম নেতাগণ প্রগতিশীল চিন্তা-চেতনার ছাপ রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন এবং তারা সমাজে আধুনিক শিক্ষা বিস্তারের কথা ভাবেননি। এও...

by আমিনুল ইসলাম
November 7, 2024

Facebook Page

নবজাগরণ

ADVERTISEMENT
No Result
View All Result

Categories

  • English (9)
  • অন্যান্য (11)
  • ইসলাম (28)
  • ইসলামিক ইতিহাস (23)
  • ইহুদী (3)
  • কবিতা (37)
  • খ্রিস্টান (6)
  • ছোটগল্প (6)
  • নাস্তিকতা (18)
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (24)
  • বিশ্ব ইতিহাস (26)
  • ভারতবর্ষের ইতিহাস (198)
  • রাজনীতি (39)
  • সাহিত্য আলোচনা (72)
  • সিনেমা (18)
  • হিন্দু (16)

Pages

  • Cart
  • Checkout
  • Checkout
    • Confirmation
    • Order History
    • Receipt
    • Transaction Failed
  • Contact
  • Donation to Nobojagaran
  • Homepage
  • Order Confirmation
  • Order Failed
  • Privacy Policy
  • Purchases
  • Services
  • লেখা পাঠানোর নিয়ম
  • হোম

No Result
View All Result
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi

©Nobojagaran 2020 | Designed & Developed with ❤️ by Adozeal

Login to your account below

Forgotten Password?

Fill the forms bellow to register

All fields are required. Log In

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In
Don't have an account yet? Register Now
1
Powered by Joinchat
Hi, how can I help you?
Open chat
wpDiscuz
0
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x
| Reply