• মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
Wednesday, May 14, 2025
নবজাগরণ
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ
No Result
View All Result

নজরুল ইসলামের প্রেমের কবিতা : বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা

অতিথি লেখক by অতিথি লেখক
October 30, 2022
in সাহিত্য আলোচনা
0
নজরুল ইসলামের প্রেমের কবিতা : বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা

চিত্রঃ কাজি নজরুল ইসলাম, Image Source: pngtree

Share on FacebookShare on Twitter

লিখেছেনঃ স্বপ্না রায়

প্রেম এক ধরনের বিমূর্ত অনুভূতি বিশেষ। মানব-মানবীর পারস্পরিক আকর্ষণ সদ্ভূত মনের আবেগ যখন অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে, দর্শন মিলন ব্যতিরেকে জীবনাচরণ অবান্তর বলে মনে হয়, তখনই তাকে বলা যায় প্রেম। মিলন, বিরহ, বেদনার অন্তৰ্গঢ় রক্তক্ষরণ এর অনুসঙ্গ। প্রেমের উৎস রূপ কিংবা গুণে, কিংবা উভয়ে। এই প্রেম শিল্পীর সৃষ্টি প্রয়াসের অন্যতম প্রধান উপকরণ। যুগ যুগ ধরে চিত্র, ভাস্কর্য, সঙ্গীত, সাহিত্য-এসব শিল্প মাধ্যমের বিকাশ একে ভিত্তি করেই। পরিবর্তিত জীবন ও পরিবেশের সঙ্গে সঙ্গতি রাখতে গিয়ে সাধিত হয়েছে এর নানামাত্রিক বৈচিত্র্য। কাজি নজরুল ইসলাম (১৮৯৯-১৯৭৬) তাঁর কবিতা, গান, গল্প, উপন্যাসে এ বিষয়টিকে আশ্রয় করেছেন অসংখ্যবার এবং বিচিত্র বিন্যাসে।

নজরুল-কাব্যে আরবী-ফারসী শব্দঃ বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা [পর্ব ১]
চিত্রঃ কাজি নজরুল ইসলাম, Image Source: pngtree

নজরুল ইসলামের যুগ একদিকে ভাঙনের, অন্যদিকে এই ভাঙ্গনসূত্রে গড়ে ওঠারও যুগ। দেশের অভ্যন্তরে এবং বহির্বিশ্বে যুদ্ধ, রাজনৈতিক আন্দোলন, অর্থনৈতিক বিপর্যয়-সব মিলিয়ে বিরাজমান ছিলো ঝঞ্ঝা-বিক্ষুব্ধ এক সময় ও পরিবেশ। দেশবাসীর জীবনকে তা অস্থির ও বিপন্ন করে তুলেছিলো। আবার পৃথিবী জুড়ে দার্শনিক, বৈজ্ঞানিক, মনস্তাত্ত্বিক নানামাত্রিক আবিষ্কার ও নতুন নতুন চিন্তা-চেতনার প্রসার বিশ্ববাসীর মতো এদেরও মনোলোককে করে তুলেছিলো নতুন বোধে উদ্দীপিত। এর প্রভাব অনিবার্য হয়ে প্রতিফলিত হয়েছিলো—শিল্প ও সাহিত্যে। ভাঙ্গাগড়ার এমনিতরো এক সন্ধিলগ্নকে আশ্রয় করেই গড়ে উঠেছে ও অতিবাহিত হয়েছে নজরুলের সৃষ্টির কালসীমা। যদিও এ সীমা ১৯২০ থেকে ‘৪২, মাত্র বাইশ বছর ব্যাপ্ত।’ ১৯৪২-এর মাঝামাঝি সময়ে মস্তিষ্কের অবশীর্ণতায় আক্রান্ত হয়ে কবির সৃষ্টি থেমে যায় চিরতরে।

নজরুল কাব্য পর্যালোচনা করলে এর দুটো স্থূলবিন্যাস লক্ষ্য করা যায়। একভাগে তাঁর কবিসত্তা বিদ্রোহের লক্ষণধারী, অন্যভাগে তিনি রোমান্টিক, মিস্টিক। সমকাল সংলগ্নতা সূত্রে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং প্রত্যক্ষ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়ার কারণে বিদ্রোহ-বিপ্লব তার সৃষ্টির প্রধান লক্ষণ হয়ে ধরা পড়েছিলো সন্দেহ নেই। কিন্তু প্রধান না হলেও অন্যতম প্রধান রোমান্টিক প্রেমের অন্য ধারাটিকে অস্বীকার করা চলে না। একদিকে যৌবনের প্রমত্তশক্তি ও উদ্দামতা, অন্যদিকে রোমান্টিক প্রেমের গুঞ্জনধ্বনি। বিদ্রোহের ঘোষণায় যেমন, প্রেমনির্ভর ব্যক্তি অনুভূতি প্রকাশেও তেমনি তিনি সবাক ও সোচ্চার। তাঁর দুটো সত্তাকেই অভিন্নতায় গ্রথিত করে বিচার করা যায়। কারণ উভয়টিই তারুণ্যের ধর্ম। এই তারুণ্যের উদ্দামতায় তিনি কখনো বিদ্রোহী ভৃগু কিংবা ক্ষ্যাপা দুর্বাসা, কখনো প্রেমাবেগতপ্ত শোড়শীর হৃদি সরসিজ- সবকিছুর যোগফল যুগলগ্ন প্রাণচাঞ্চল্যে অস্থির এক মানুষ। ‘বিদ্রোহী’ (১৯২১) কবিতায় তাঁর নিজেরই শিল্পভাষ্যে রয়েছে এর প্রমাণ,

মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী আর হাতে রণতূর্য

দুই বিরোধী বস্তুর সমবায়ে অর্থাৎ মানস গঠনের দিক দিয়ে কোমলে কঠোরে গড়া, দ্বৈতসত্তায় বিন্যস্ত এক মিশ্রমনের মানুষ তিনি। কবির প্রেম আর বিদ্রোহী সত্তা – দুটোই পরস্পর অন্তগূঢ়সূত্রে গ্রথিত। কবির পত্রসাক্ষ্যে জানা যায়- হৃদয় নিভৃতের প্ৰেমাশ্রিত যন্ত্রণার অগ্নিক্ষরণই তার ‘অগ্নিবীণা’র কবিতাবলীর উৎসমূল। কবির ‘বিদ্রোহী’ কবিতা জুড়ে বিদ্রোহ-বিক্ষোভ, বজ্রকণ্ঠ-প্রতিবাদ, স্বীয় শক্তি প্রমাণের সোচ্চার প্রয়াস,

আমি      মানি নাকো আইন,

আমি      ভরা তরী করি ভরাডুবি,

আমি      টর্পেডো, আমি ভীম ভাসমান মাইন,

আবার কোথাও তা প্রেমাবেগ-প্রকম্পিত, উষ্ণ, অধীর,

চিতচুম্বন চোর কম্পন আমি থর-থর-থর প্রথম পরশ কুমারীর

নজরুলের কবিতার মেজাজ বিচার করতে গিয়ে তার মানস প্রবণতার এই দ্বৈত লক্ষণকে গৌণ বিচার করা যায় না।

নজরুল সাহসী। ব্যক্তি জীবন ও প্রবণতার প্রতিফলন ঘটেছে তাঁর কবিতার পর্যায়ে পর্যায়ে এবং নানামাত্রিকতায়। প্রাচীন ভারতীয় ও পশ্চিম এশীয় ঐতিহ্যকে ব্যবহার করেছেন, ব্যবহার করেছেন সংস্কৃত-আরবী-ফারসী শব্দ কখনো আলাদাভাবে, কখনো আবার একই কবিতায়, অথচ কাব্যশিল্পে তা বিরোধ বাধায় নি কোথাও। বরং তার অপূর্ব ধ্বনিতরঙ্গমাধুর্য বিষয়ের অনুসারীই হয়েছে। আর ঠিক এমনি করেই একাধারে লিখে গেছেন; আনন্দ, বেদনা, বিদ্রোহ, প্রেম ও ধর্ম ইত্যাকার নানা মেজাজের কবিতা। বলাবাহুল্য এ সবের সর্বত্রই তিনি এক সফলশিল্পী। আসলে সমকালকে আশ্রয় করে তার প্রতিভার বিকাশ ঘটলেও বিচিত্রধর্মী সৃষ্টি ও তার সাফল্যের জন্যে তিনি কালাতিক্রমী শিল্পী প্রতিভা।

নজরুল ইসলামের প্রেমের কবিতা : বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা
বিজ্ঞাপনের জন্য

নজরুলের স্বল্পায়তন কাব্যজীবনকে বিভিন্ন পর্বে বিন্যস্ত করা যায়। এই সব পর্বেও আবার নানা ধরনের স্তর বিন্যাস রয়েছে। কোনো কোনো সমালোচক কবির রোমান্টিক প্রেমের কবিতা ও গানের দিকটিকে প্রধান ধারারূপে বিবেচনা করেছেন। আনন্দ, বেদনা, যন্ত্রণামথিত এই সৃষ্টিরাজির মধ্যে যুক্ত হয়েছে তার অপরিমেয়। ভাবোস আর স্বপ্নালুকল্পনার শৈল্পিক পরিবেশনা। অবশ্য রোমান্টিক প্রেমের এই ধারাটিকে তার সৃষ্টির অন্যদিকগুলো থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে দেখা যায় না। কারণ ‘নজরুল কাব্যের প্রেমের রোমান্টিকতা তার অন্যান্য ধারার কবিতা এবং গানে যথেষ্ট সঞ্চারিত হয়েছিল।’১

ব্যক্তিজীবন ও শিল্পপ্রবণতায় বৈচিত্র্যপিয়াসী কবি তার স্বধর্ম রক্ষা করেছেন প্রেমের কবিতায়ও। ভাবাবেগ নজরুল মানসের এক উল্লেখযোগ্য লক্ষণ। এর প্রকাশ কবির স্বতঃস্ফূর্ত প্রকৃতিতে, বক্তব্য বিষয়ের অভিনবত্বে, একে পাঠকমনে মুদ্রিত করে দেবার আকুলতায় সবচেয়ে বড়োকথা বাংলা সাহিত্য-ধারার প্রচলিত ধ্যান-ধারণা থেকে বেরিয়ে আসার অস্থির আকতক্ষায়।২ অভিজাত মূল্যবোধের বিপরীত মাত্রা নিয়ে তিনি আবির্ভূত হয়েছিলেন বাংলা সাহিত্যের কাব্যাঙ্গনে। বিপুল জনজীবনসংলগ্নতা তাঁর কাব্যের এক বিশেষ ধর্ম। আমাদের সাহিত্যের মূলধারার প্রথাসিদ্ধ প্রবণতার মূলে আঘাত করে সমাজের নিম্নস্তরের নিপীড়িত শোষিত শ্রেণীর মানুষেরই প্রতিনিধিত্বকারী বক্তব্য নিয়ে এসেছিলেন তিনি। অত্যাচারিত, শোষিত, দুর্গত জন মানুষের দুঃখ বেদনার সঙ্গে একাত্মতা নজরুলের কবিতার মর্মসুর। বিদ্রোহীরূপে নজরুলের যে পরিচয় তার স্বরূপ বিশ্লেষণ করলে যেসব লক্ষণ স্পষ্টতা পায় তা হচ্ছে—অত্যাচারী, শোষক ও বঞ্চনাকারীর বিরুদ্ধে, শক্তিমানের মদমত্ততার বিরুদ্ধে, জাতি-বর্ণ-ধর্ম ইত্যাদি সব ধরনের দম্ভ ও অহংকারের বিরুদ্ধে অসহিষ্ণুতাজনিত উচ্চকণ্ঠ উচ্চারণ। অত্যাচারীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ রয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১-১৯৪১), যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের (১৮৮৭-১৯৫৪) কবিতায়ও। কিন্তু নিপীড়িতের দুঃখ যন্ত্রণার যারা উৎস, তাদের বিরুদ্ধে দুঃখী মানুষদেরকে সগ্রামে উদ্বুদ্ধ করার কাজটি একমাত্র নজরুলই করেছিলেন। নজরুলের কবিতায় যে বিদ্রোহের আবেগ, আবেগের বেগ, তা বাংলা সাহিত্যে এক অভিনব সংযোজন। তাঁর ‘বিদ্রোহী’ কবিতার পংক্তিতে পংক্তিতে লক্ষ্য করা যায় অস্থির অশান্ত এক প্রাণশক্তির উদ্দামতা। কোনো নিয়মকানুন, শাসন বারণ না মানার উচ্ছল-অবারিত উস। এই অবারিত-উচ্ছসিত আবেগ তার প্রেমের কবিতারও মর্মলক্ষণ।

স্বভাব ধর্মে নজরুল মূলত রোমান্টিক। অনুভূতির প্রাবল্য, সুদূরের প্রতি, অদৃশ্য অধরার প্রতি সুতীব্র ব্যাকুলতা, অতীতচারিতা, সৌন্দর্যতৃষ্ণা, বিদ্রোহ, ব্যক্তিস্বাতন্ত্র চেতনা, প্রকৃতিপ্রীতি ইত্যাদি রোমান্টিকতার পরিচয়বাহী লক্ষণগুলো নজরুলের কবিতায় সহজলভ্য। এরই অন্তপ্রেরণায় তার কণ্ঠে স্ফুরিত হয়েছে কখনো বিদ্রোহ, কখনো বা প্রেমের অনাবিল উচ্চারণ। একদিকে অদম্য ভাবাবেগ, অন্যদিকে রোমান্টিক চেতনা-সব মিলেই তাঁর বিচিত্রমাত্রিক সৃষ্টির উৎস। হৃদয়াবেগের স্বত:স্ফুর্ত প্রকাশ তার রচিত এসব কবিতা।

নজরুলের বিদ্রোহী সত্তা ও প্রেম চেতনা আপাতত বিসদৃশ মনে হলেও আসলে দুটি সত্তাই অন্তৰ্গঢ়সূত্রে গ্রথিত। ব্যক্তিগত কিংবা বৃহত্তর প্রেমের টানেই তো তিনি বিদ্রোহীর ভূমিকা পালন করেছেন। নার্গিসের সঙ্গে বিচ্ছেদের মর্মদাহসূত্রেই উৎসারিত হয়েছিলো তার বিপ্লব সন্ত্রাসের অনেকগুলো অগ্নিক্ষরা কবিতা।৩ সংসারের যাবতীয় অশুভশক্তির বিরুদ্ধ-উচ্চারণের মূলে নিহিত রয়েছে তার মর্মগত প্রেম ও মানবতারাদের মন্ত্র। কাজেই তার বিদ্রোহ আর প্রেম প্রায়ই পৃথক বিন্যস্ত কোনো বিষয় নয়, বরং তা অভিন্ন এবং পরস্পরের পরিপূরকও বটে। রোমান্টিক কবি প্রতিভার মর্মলক্ষণ এই, একদিকে সৌন্দর্য ও প্রেমের আকাভক্ষা, আকাক্ষার ব্যর্থতাজনিত হতাশা-পরাজয়যন্ত্রণা, অপর দিকে একেই বাস্তবায়িত করার জন্য সংগ্রাম, বিদ্রোহ।৪ উভয় ধারাতেই নজরুলের অনায়াস বিচরণ। তার একমাত্র ‘বিদ্রোহী’ কবিতায়ই রয়েছে-এর অনেকগুলো প্রমাণ,

আমি      ধুর্জটি, আনি এলোকেশে ঝড় অকাল বৈশাখীর!

আমি      বিদ্রোহী, বিদ্রোহী সূত বিশ্ববিধাত্রীর।

আবার,

আমি      গোপন-প্রিয়ার চকিত চাহনি, ছল করে দেখা-অনুখন,

আমি      চপল-মেয়ের ভালবাসা, তার কাঁকন-চুড়ির কন্-কন্।

বিদ্রোহী মেজাজের পাশেই তার প্রেমাবেগের প্রোজ্জ্বল-প্রকাশ, মর্মসুরের দারুণ ব্যবধান সত্ত্বেও রোমান্টিক আবেগের অন্তর্মূঢ় যোগসূত্রের কারণে উভয়টিই সুন্দরভাবে মিশে গেছে। নজরুলের মর্মবাণী এই সত্তাটিই তার সৃষ্টির শরীরে চিহ্নিত।

তাঁর প্রেমপর্যায়ের কবিতা সংকলনগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘দোলনচাঁপা’ (১৯২৩), ‘ছায়ানট’ (১৯২৫), ‘পূবের হাওয়া’ (১৯২৫), ‘সিন্ধু হিন্দোল’ (১৯২৭), ‘চক্রবাক’(১৯২৯)। এখানকার কোনো কোনো কবিতায় পূর্বরাগ, মিলন ও বিচ্ছেদের সুরস্পষ্ট। কোথাও প্রিয়াকে ঘিরে সঞ্চারিত হয়েছে কবির আবেগ-বিহ্বল মিলনানুভূতি, প্রেমবিমুগ্ধতা, মধুর ব্যথা ও বিচ্ছেদ- এসবের বিচিত্র অনুভূতির পরিচয়। কোথাও বা বঞ্চনা-প্রতারণায় ক্ষিপ্ত তাঁর প্রেমিক সত্তা – অভিশাপে মুখর। যদিও এ অভিশাপে হিংস্র-আক্রোশ নেই, রয়েছে অভিমানের মর্মমথিত বেদনার প্রস্রবণ,

পড়বে মনে আমার সোহাগ,

কণ্ঠে তোমার কাঁদবে বেহাগ।

পড়বে মনে অনেক ফাঁকি,

অশ্রুহারা কঠিন আঁখি।

ঘন ঘন মুছবে

বুঝবে সেদিন বুঝবে। (‘অভিশাপ’, ‘দোলন-চাঁপা’)

আবার প্রেমাবেগ সুতীব্ৰ অধীর হয়ে নার্সিসাসসুলভ অভিব্যক্তি লাভ করেছে কোথাও,

তখন মুকুর-পাশে একলা গেহে

আমারি এই সকল দেহে

চুমবো আমি চুমবো নিজেই অসীম স্নেহে গো,

আহা পরশ তোমার জাগছে যে গো এই সে দেহে মম,

(‘পরশ পূজা’, ‘ছায়ানট’)

স্বকৃত অপরাধের বেনামে পুরুষের চিরন্তন নিষ্ঠুরতার অনুশোচনাও দুর্লক্ষ্য নয়,

অনন্তকুমারী সতী তব দেব-পূজার থালিকা

ভাঙিয়াছি যুগে যুগে ছিঁড়িয়াছি মালা

খেলাচ্ছলে, চিরমৌনা শাপভ্রষ্টা ওগো দেববালা

নীরবে সয়েছ সবি- (‘পূজারিণী’, ‘দোলন-চাঁপা’)

কবিতাগুলোর সর্বত্র ছড়িয়ে রয়েছে প্রেমের অতৃপ্ত, অদম্য ও আদি-অন্তহীন পিপাসা, যা কিনা তাঁর অনুভবের সামগ্রিক লক্ষণ,

ভগবান! ভগবান! একি তৃষ্ণা অনন্ত অপার!

কোথা তৃপ্তি? কোথা তৃপ্তি? কোথা মোর তৃষ্ণাহরা প্রেমসিন্ধু

অনাদি পাথার,

মোর চেয়ে স্বেচ্ছাচারী দুরন্ত দুর্বার!

কোথা গেলে তারে পাই

যার লাগি, এত বড় বিশ্বে মোর নাই শান্তি নাই।

(‘পূজারিণী’, ‘দোলন-চাঁপা’)

নজরুলের প্রেম পর্যায়ের কবিতাগুলোর অধিকাংশই রচিত হয়েছে দৌলতপুরে ও কুমিল্লায় অথবা কুমিল্লা দৌলতপুরের ঘটনাসূত্রে অন্য কোথাও। কবির জীবন ও কাব্যের সঙ্গে কুমিল্লা ও দৌলতপুর মর্মসূত্রে সম্পর্কিত। অবশ্য প্রেমের কবিতায় নজরুলের অনুভূতির বৈচিত্র্য লক্ষ্য করলে অনুমান করা যায় এসব কবিতার উৎসমূল শুধুই কুমিল্লা-দৌলতপুরে সীমাবদ্ধ নয়। কাজি মোতাহার হোসেনকে লেখা কবির অনেকগুলো পত্র পর্যালোচনায় এ প্রমাণ মেলে,

ক. আচ্ছা বন্ধু, এত শক্ত মনের পুরুষ তার কান্না পায় আমার এতটুকু অবহেলায়, আর একজন নারী—হোকনা সে পাষাণ-প্রতিমা তার কিছু হয় না? (পৃষ্ঠা ৪০৮)

খ. যে দেবতাকে পূজা করব— তিনি পাষাণ হন, তা সওয়া যায়, কিন্তু তিনি যেখানে আমার পূজার অর্ঘ্য উদ্রব বলে পায়ে ঠেলেন, সেখানে আমার সান্ত্বনা কোথায় বলতে পার? (পৃষ্ঠা-৪১০)

গ. ওকে একটা অনুরোধ করবে বন্ধু আমার হয়ে বলো-“যাকে ভাসিয়ে দিয়েছ স্রোতে, তাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে ভাসিওনা। ওকে তরঙ্গের সাথে ভেসে যেতে দাও, পাহাড় কি চোরাবালি কি সমুদুর এক জায়গায় গিয়ে সে ঠেকবেই।” যেই সে স্রোতে ভাসতে যাবে, অমনি দড়ি ধরে টানবে— এ হয়ত তার খেলা, আমার কিন্তু এ যে মৃত্যু। (পৃষ্ঠা-৪১৪)

ঘ. একটা কথা, কিছু মনে করোনা। তুমি হঠাৎ আমাদের ভাই-বোন পাতিয়ে দেবার জন্য ব্যস্ত হয়েছ কেন, বলত! যদি ব্যবধানের নদী সৃষ্টিই হয়ে যাবে আমাদের মধ্যে আমি এ পারেই থাকব…তার ইঙ্গিতে যদি ও কথা লিখে থাক, তাহলে তাকে বললা- আমাকে ভয় করার তার কিছু নেই। আমি তার বিনা অনুমতিতে গিয়ে বিরক্ত করব না বা শাস্তির ব্যাঘাত করব না।৫

সবগুলো চিঠিরই রচনাকাল জানা যায় ১৯২৮ এবং উল্লিখিত এ ‘পাষাণ’ প্রতিমা নারী অবশ্যই নার্গিস কিংবা প্রমীলা নন। তাঁর নাম ফজিলাতুননেসা। সমালোচকের মতে, প্রেমের কবিতার প্রেরণাদাত্রী নার্গিস-প্রমীলা ব্যতীত ফজিলাতুন্নেসাসহ আরও অনেকের নিকট নজরুল কৃতজ্ঞ। নজরুলের তুলিতে সৃষ্টি হয়েছিল রহস্যময়ী, ‘কৌতুকময়ী’ ‘এ মোর অহংকার’-এর মত বর্ণবহুল নিখুঁত হৃদয়গ্রাহী চিত্রাবলীর মতো কবিতাসমূহ।৬

‘নজরুলের চিঠি’ ও ‘সুন্দরী’ কবিতা দুটোয় কিশোর প্রেমের রোমাঞ্চকর এবং বর্ণাভ চিত্রকল্প লক্ষ্য করেছেন সমালোচক। ১৯১০ সালের দিকে পঞ্চম শ্রেণীতে পাঠকালে তার হৃদয় নিভৃতে প্রেমের গুঞ্জরণ শুরু হয়েছিলো বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। কিন্তু তার প্রেমের কবিতার সর্বত্র আরোপিত হয়েছে এক বিষন্ন তুলির আঁচড়। শৈশবে দুখুমিয়া নামকরণের মধ্য দিয়েই সূচিত হয়েছিলো তার ভবিষ্যৎ জীবনের পূর্বাভাস। তার ব্যক্তি জীবনের ভাজে ভাজে লক্ষ্য করা যায় আঘাত-সংঘাত আর ব্যর্থতা বেদনার পুনরাবর্তন। এরই প্রতিফলন ঘটেছে তার প্রেমের কবিতাগুলোয়। প্রেমে অতৃপ্তিজনিত মানসিক ক্ষুধার প্রমাণ এগুলোর প্রায় সর্বত্র। দেহাশ্রিত রোমান্টিক মানসিক ক্ষুধার তৃপ্তি সাধনে তিনি ‘নিত্য-অভিসারী’ প্রমত্ত; অথচ স্থিতিহীন। প্রেমে একনিষ্ঠতার বিপরীত ‘উদ্বেলিত বুকে মোর অতৃপ্ত যৌবন ক্ষুধা’র প্রমাণ তার নিজেরই শিল্পভাষ্যে,

প্রেমসত্য চিরন্তন, প্রেমের পাত্র সে বুঝি চিরন্তন নয়,

* * * * * * * * * * * * * * * * * * * *

প্রেম এক প্রেমিকা সে বহু,

বহুপাত্রে ঢেলে পি’ব সেই প্রেম—

সে শরাব লোহ। (‘অনামিকা’, ‘সিন্ধু-হিন্দোল’)

একই কবিতায়, কখনো আবার,

…ঘঁয়েছি অধর

তিলোত্তমা, তিলে তিলে! তোমারে যে করেছি চুম্বন

প্রতি তরুণীর ঠোটে।

তাই তার প্রেমের কবিতায় উসময়তা, অনুভূতির প্রাবলা সত্ত্বেও কোনো বিশেষ ধারা, বিশেষ পরিণতি খুঁজে পাওয়া মুশকিল। পার্থিব প্রিয়ার সঙ্গে প্রত্যাশিত মিলনে ব্যর্থতা এলে আন্তরগঠনে রোমান্টিক কবি কখনো বা নিমগ্ন হন মৃত্যুচিন্তায় যার মধ্যে নিহিত তার অপার্থিব প্রিয়মিলন বাসনা। এমনি ধরনের মানস লক্ষণ ধরা পড়ে তার ‘সাজিয়াছি বর মৃত্যুর উৎসবে’ কবিতায়।

নজরুলের কবিতায় নিঠুরা প্রিয়ার উপমা ‘পাষাণ-প্রতিমা’, ‘দেবতা এবং দেবী’, কিন্তু এ উপমা প্রায়ই তার প্রেমের আত্যন্তিক উচ্ছাসের প্রমাণ বহন করে না, বরং তার বিপরীত ক্ষোভে বিক্ষুব্ধ কিংবা সুতীব্র অভিযোগে বিন্যস্ত,

এরা দেবী, এরা লোভী, এরা চাহে সর্বজন প্রীতি!

ইহাদের তরে নহে প্রেমিকের পূর্ণপূজা, পূজারীর পূর্ণ সমর্পণ,

* * * * * * * * * * * * * * * *

নারী নাহি হতে চায় শুধু একা কারো,

এরা দেবী, এরা লোভী, যত পূজা পায় এরা চায় তত আরো।

(‘পূজারিণী’, ‘দোলন-চাঁপা)

এখানে ‘ইহাদের’ বলে সাধারণীকরণ সত্ত্বেও লক্ষ্য আসলে একজনই, কবির নির্দিষ্ট সেই ‘নারী’, অর্থাৎ ওই সময়ে যার কাছ থেকে তিনি প্রতারিত কিংবা প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন।

দেওবন্দ আন্দোলন/ নজরুল ইসলামের প্রেমের কবিতা : বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা
দেওবন্দ আন্দোলন, বিজ্ঞাপনের জন্য

কখনো প্রেমের অনুসঙ্গ হয়ে এসেছে প্রকৃতি, প্রকৃতির বিচিত্র উপাদানের মধ্যে খুঁজে পেয়েছেন প্রিয়ার প্রতিরূপ, আর এর মধ্যে কবির বাণী-অলঙ্কৃত উপমা, রূপক, চিত্রকল্পও দুর্লক্ষ্য নয়। কবির মর্মমথিত শূন্যতা আভাসিত হয়েছে তাতে,

শূন্য ছিল নিতল দীঘির শীতল কালোজল,

কেন তুমি ফুটলে সেথা ব্যথার নীলোৎপল?

আঁধার দীঘির রাঙলে মুখ,

নিটোল ঢেউ-এর ভাঙলে বুক,

কোন্ পূজারী নিল ছিঁড়ে ছিন্ন তোমার দল

ঢেকেছে আজ কোন্ দেবতার কোন্ সে পাষাণ তল?

(চৈতী হাওয়া’, ‘ছায়ানট’)

‘বাতায়ন পাশে গুবাক তরুর সারি’ কবিতায় গুবাক তরুর প্রতীকে, ‘কর্ণফুলী’ কবিতায় কর্ণফুলী নদীর প্রতীকে, ‘তোমারে পড়িছে মনে’ কবিতায় প্রকৃতির বিচিত্র রূপসুষমার ভিড়ে প্রিয়াকে কল্পনা করেছেন, প্রিয়ার স্মৃতিচারণ করেছেন। প্রেমের কবিতায় অধিকাংশ উপমা রূপকই তার মর্মনিহিত বেদনার অনুষঙ্গ। এইসব কবিতার ভাব এবং বিষয় বিন্যাসে যেমন, প্রকরণগত কৌশল প্রয়োগেও তেমনি তার এই প্রবণতারই প্রমাণ মেলে। এখানে প্রিয়ার চেয়ে প্রিয়াকে ঘিরে কবির যে অনুভূতি তাই বর্ণ ও চিত্রময় হয়ে ধরা পড়েছে। একদিকে বৈচিত্র্যধর্মী প্রেমানুভূতির নিবিড়তা, অন্যদিকে শিল্পপ্রকরণ— সব মিলে তার অনন্য-প্রতিভার স্বাক্ষর প্রেমের কবিতাগুলো। এই কবিতাগুলো যেসব কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত, যেমন- ‘দোলন-চাঁপা’, ‘ছায়ানট’, ‘সিন্ধুহিন্দোল’–এইসব কাব্যে কবির রোমান্টিক আবেগ অনেকটা অসংযত বিন্যাসে উচ্চারিত হয়েছে। আবার ‘চক্রবাক’ কাব্যে এসে এই আবেগ লাভ করেছে সংহতরূপ।

‘চক্রবাক’ কাব্যে প্রেমিকার কাছে দোলন-চাঁপা’র প্রবল উচ্ছাস, ‘ছায়ানট’-এর আত্মমগ্নতার উচ্চকণ্ঠ ঘোষণা কিংবা সিন্ধু হিন্দোল’-এর মান অভিমান আর চিত্তবিক্ষোভ নেই, বরং আছে প্রজ্ঞালালিত এবং অভিজ্ঞতালব্ধ এক বিশ্বাত্ম প্রেমবোধ, যার মূলকথা মানবাত্মার শাশ্বত-বিরহ। বস্তুত, নজরুল ইসলামের প্রেম চেতনার চিত্রময়, সংহত এবং শিল্পিত প্রকাশ হিসাবে ‘চক্রবাক’ এক বিশিষ্ট নির্মাণ।৭

নজরুল ইসলামের কবিতায় প্রেমের স্বরূপ কখনো রূপে, কখনো রূপাশ্রিতকামে। সুদূর অতীত থেকে একাল পর্যন্ত মানুষের শিল্পে সাহিত্যে এ প্রেমের সাক্ষ্য রয়েছে অসংখ্য, আর তা এসেছে নানা মাত্রিক ধরনে— দাম্পত্য প্রেম, পরকীয়া প্রেম, অবিবাহিত তরুণ-তরুণীর প্রেম। একদিকে সমাজ শৃঙ্খলা রক্ষা, অন্যদিকে এই প্রেমকে আদর্শ ও মহিমান্বিত করার প্রয়াস— সবমিলে দেবদেবীর প্রতীকে নানারকম অধ্যাত্মতত্ত্বকে আশ্রয় করেছে সামাজিক মানুষ। আর তা করতে গিয়ে। নিজেদের জীবন ও অন্তৰ্গঢ় প্রেমের আকৃতিকেই তুলে ধরেছেন তারা। দেহজ মিলনও এসেছে এই অধ্যাত্মছদ্মাবরণে। ঊনবিংশ শতাব্দী থেকে কাব্য সাহিত্যে এর ব্যতিক্রম সূচিত হতে লক্ষ্য করা যায়। রবীন্দ্রনাথের পূর্ব পর্যন্ত প্রায়ই এই প্রেম হয় অনুপস্থিত অথবা শুধুমাত্র পত্নীপ্রেম প্রান্তিক গণ্ডীতে সীমাবদ্ধ। রবীন্দ্রনাথের উপন্যাসের কথা বাদ দিলে বলা যায়, তাঁর কবিতায় প্রেম থাকলেও তা দেহাতীত মহিমায় বিন্যস্ত। প্রেমে রক্ত-মাংসে সজীব দেহকে উপস্থিত করার যথার্থ দুঃসাহস দেখালেন প্রথমে গোবিন্দ্র চন্দ্র দাস (১৮৫৫-১৯১৮), পরে নজরুল সমসাময়িকদের মধ্যে যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের (১৮৮৭-১৯৫৪) নামও করা যায়। মোহিতলাল মজুমদার (১৮৮৮-১৯৫২) প্রথমদিকে শারীর প্রেমের কথা বললেও শেষ পর্যন্ত এ ক্ষেত্রে দ্বিধা কাটাতে সমর্থ হননি।

নজরুলের যুগ নানাভাবেই বিদ্রোহের যুগ। সামাজিক বিদ্রোহের পতাকা তুলে এগিয়ে এসেছিলেন রবীন্দ্রোত্তর অতি-আধুনিক সাহিত্য স্রষ্টাগণ। ‘কল্লোল’ (১৯২৩) এবং তার পরবর্তী সমধর্মী ‘কালিকলম’ (১৯২৭), ‘প্রগতি’ (১৯২৭), ‘ধুপছায়া’, (১৯২৭) প্রভৃতি পত্রিকাকে আশ্রয় করে সূচিত হয়েছিলো তাঁদের যাত্রা। রবীন্দ্রনাথের দেহাতীত ভাববাদী প্রেমের বিরুদ্ধে এবং সনাতন মূল্যবোধের বিপরীত এক নতুন সমাজ সত্য প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় ছিলো তাঁদের প্রয়াসে। গোটা মানুষের মানে খুঁজতে গিয়ে তারা তার রক্ত, মাংস, হাড়, মেদমজ্জা,… কোনো কিছুকেই বাদ দেননি। তাঁরা বলেছেন,

এই দেহ তোর দেবতা শুধু,

দিন দুয়েকের স্বর্গ রে।

অর্ঘ্য দে।

মর দেহের চেয়ে মূর্খ, মোক্ষ নয় মহার্ঘ রে,

অর্ঘ্য দে! (প্রেমেন্দ্র মিত্র, ‘ইহবাদি’, প্রথমা)

নজরুল এঁদের থেকে দূরে ছিলেন না। অবশ্য এই অতি আধুনিক সাহিত্য স্রষ্টাদের মতো যন্ত্র-সভ্যতা-পীড়িত নাগরিক জীবনের ক্লান্তি ও বিকার-স্পর্শিত নয় তার সৃষ্টি। তবু কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাদের সঙ্গে তাঁর অভিন্নতাকে অস্বীকার করা যায় না। আর এই অভিন্নতা লক্ষ্য করা যায় প্রেমের কবিতায় তার দেহবাদিতায়। প্রেমের ক্ষেত্রে ভূমি থেকে ভূমা কিংবা দেহ থেকে দেহাতীত ইত্যাদি সূক্ষ্ম গভীর, দার্শনিক তত্ত্বের ধার ধারেননি নজরুল, বরং মৃত্তিকা সংলগ্ন নারী এবং তার শরীরী আবেদনকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। মানস গঠন বিন্যাসে তিনি দেহবাদী শিল্পী চেতনা আশ্রয়ী রক্ত মাংসময়ী মানবী প্রিয়াকে প্রত্যক্ষ করেছেন, অনুভব করেছেন ও পাঠক হৃদয়ে সরাসরি সঞ্চারিত করে দিয়েছেন চিরকালীন আবেদনের মাধ্যমে। যৌবনবতী নারীর দেহগত রূপ তার সৃষ্টি প্রেরণাকে উজ্জীবিত করেছে। কবিতায় এই দেহ চেতনার যথেষ্ট প্রমাণ মেলে। তাঁর প্রেমতত্ত্ব সরাসরি দেহনির্ভর, কামজ আকর্ষণই তাতে মুখ্য। বিমুখ প্রিয়াকে সংখ্যাধিকবার ‘পাষাণ-প্রতিমা’ উপমায় বিভূষিত করলেও তার স্বরূপ আসলে রক্ত-মাংসের মানবী নারীর। তাকে ঘিরে কবির ইন্দ্রিয়াশ্রয়ী দেহনির্ভর মিলন-অনুভূতি রূপলাভ করেছে কোনো কোনো কবিতায়,

তখন এমন যেমন কেমন কেমন কোন্ তিয়াসে কোঙারি?

ঐ শরম-নরম গরম ঠোটের অধীর মদির হেঁয়ারি।

* * * *

ঐ বেদন বুকে যে সুখ চোয়ায়, ভাগ দিয়ে তার কোঙারি।

আমার কুমার হিয়া মুক্তি মাগে অধর-ছোঁয়ায় তোমারি।

(‘প্রণয় নিবেদন’, ‘পূবের হাওয়া’)

প্রায় প্রতিটি প্রেমের কবিতায় অধর বিলাসী কবির বিশেষত্বের সংখ্যাধিক প্রমাণ বর্তমান। কদাচিৎ দেহের বাঁধন মুক্ত হলেও সে মুক্তি স্থায়ী হয়নি, পরক্ষণেই তা আবার বিপুল আবেগে ধরা পড়েছে দেহের বাঁধনে। এ ছাড়াও উল্লেখ করা যায় তার ‘সিন্ধু হিন্দোল’ কাব্যগ্রন্থের ‘মাধবী প্রলাপ’ কবিতাটির কথা! যা কিনা দেহবাদী প্রেমের কবিতারূপে একাধারে বিখ্যাত ও বিতর্কিত,

আজ     লালসা-আলস-মদে বিবশা রতি

শুয়ে     অপরাজিতায় ধনী স্মরিছে পতি।

তার     নিধুবন-উন্মন

ঠোটে কাঁপে চুম্বন

বুকে পীত যৌবন

উঠিছে কুঁড়ি

মুখে কামকন্টক ব্রণ মহুয়াকুঁড়ি। (‘মাধবী প্রলাপ’ ‘সিন্ধু হিন্দোল’)

‘অতি-আধুনিক’ সাহিত্য স্রষ্টাগণ দেহবাদ ও অশ্লীলতার দায়ে তাদের সমকালে অভিযুক্ত ও আক্রান্ত হয়েছিলেন, বলাবাহুল্য নজরুলও তা থেকে মুক্ত ছিলেন না। তার কারণ ওই, তার ‘কামকণ্টক ব্রণ-দুষ্টতা’ আশ্রয়ী দেহবাদ। ‘কল্লোল’ ও তার সমধর্মী পত্রিকাগুলোয় প্রকাশিত যেসব রচনা সেই সময়ে বাংলা সাহিত্য-জগতে ঝড় তুলেছিলো, তার সূচনা বোধ হয় নজরুলের এই কবিতা দিয়ে। অশোক চট্টোপাধ্যায়ের প্রবর্তনায় সৃষ্ট এবং প্রবাসীর (১৩০৮) অনুগ্রহপুষ্ট পত্রিকা ‘শনিবারের চিঠি’ (১৯২৪৪৩) এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে। আধুনিক তরুণ-সাহিত্য স্রষ্টাদের বিরুদ্ধ-ভূমিকা পালনে এর জুড়ি মেলা ভার। পত্রিকাটির সূচনালগ্ন থেকেই এর আক্রমণের লক্ষ্য হয়েছিলেন নজরুল। এর ‘গাড়োয়ানী রসিকতা’ ও ‘মেছোটা থেকে টুকে আনা গালি’র কথা জানা যায় স্বয়ং নজরুলের উক্তিতে,

এই গালির গালিচাতে বোধ হয় আমি একালের সর্বশ্রেষ্ঠ শাহানশাহ।৮

শনিবারের চিঠির অন্যতম সম্পাদক সজনীকান্ত দাসের (১৯০০-৬২) ‘আত্মস্মৃতি’ (১৯৫৪) তেও এর সমর্থন মেলে,

‘কালি-কলম’ শুরু হইতেই ‘কল্লোল’ অপেক্ষা মার্জিত ও ভদ্ররুচির পরিচয় দিয়াছিল। কিন্তু প্রথম সংখ্যাতেই হাবিলদারী ‘কামকণ্টক ব্রণ’ দুষ্টতার জন্য আমাদের আক্রমণের বিষয় হইয়াছিল। রাধিকা যেমন সারা বৃন্দাবন কৃষ্ণময় দেখিতেন, হাবিলদার কবি তেমনি সারা বনভূমি ‘সুরত কেলি’ময় দেখিয়া উন্মত্ত হইয়া ‘প্রলাপ’ বকিয়াছিলেন,

করে বসন্ত বনভূমি সুরতকেলি

পাশে কাম-যাতনায় কাঁপে মালতি বেলি।

আসে ঋতুরাজ ওড়ে পাতা জয় ধ্বজা ।

হ’ল অশোক শিমূলে বন পুষ্পরজা।৯

‘শনিবারের চিঠি’র ১৩৩৪-এর ভাদ্র সংখ্যায় নজরুলের ‘অনামিকা” কবিতাটিকে নিয়েও বিদ্রুপ করা হয়,

কবির প্রেয়সীই অনামিকা। অর্থাৎ নামহীনা, তাহার কারণ তাঁহার প্রেম-তৃষ্ণা কোন নামনির্দিষ্টা নায়িকাতে আবদ্ধ নহে। বিশ্বের যাহা কিছু মৈথুনযোগ্য তাহাকেই পাত্র ধরিয়া তিনি তাঁহার কাম পরিবেশন করিতেছেন।

তবে নজরুলের সকল প্রেমের কবিতায় সজনীকান্ত দাস-কথিত ‘কাম পরিবেশন’ নেই। অনেক কবিতায়ই প্রিয়ার প্রতি প্রাণের আকুতি প্রকাশিত হয়েছে আত্মনিবেদন এবং তার চরণতলে নিজেকে সমর্পণের ইচ্ছায়,

ক.        এবার আমায় সঁপে দিলাম তোমার চরণ তলে।

তুমি শুধু মুখ তুলে চাও, বলুক যে যা বলে।

(‘সমর্পণ’ ‘দোলন-চাঁপা’)

খ.        এ দীন কাঙাল এসেছিল তোমার পায়ের আঙ্গুল চুমে।

চরণ আঘাত করলে রেগে,

* * * * * * * * * * * * * *

এমনি তোমার পদ্মপায়ের আঘাত সোহাগ দিয়ো দিয়ো

এই ব্যথিত বুকে আমার, ওগো নিঠুর পরাণ প্রিয়!

(‘ব্যথাগরব’ ‘দোলন-চাঁপা’)

কিন্তু প্রিয়ার পদস্পর্শিত কবির এ দীন-সমর্পণকে পছন্দ করেননি সমালোচক ড: আহমদ শরীফ। বলেছেন, পূজার নামে এই চরণ সেবাই ছিলো ‘আত্মসম্মান বোধশূন্য’ কবির প্রিয়া তোষণের পদ্ধতি।১০ নিজের যোগ্যতায় আস্থাবান নন বলেই নাকি তিনি প্রণয়কামী পদলেহী। তবে একথাও তো সত্য যে, প্রেমের সঙ্গে আত্মসমর্পণের সম্পর্ক চিরকালীন।

কখনো রূপাসক্তি, রোমান্টিক বিরহবিলাস; অপ্রাপ্তিজনিত বেদনাও এসেছে কখনো কখনো তাঁর কবিতায়। অতৃপ্ত মিলনাকাক্ষার গভীরে তত্ত্বানুসন্ধান নয়, বরং বিদ্রোহ যেমন একটা নির্দিষ্ট লক্ষ্য আশ্রয়ী, প্রেমের কাব্য শুধুই লক্ষ্যহীন বিলাস। হৃদয় নিঙড়ে রক্ত ঝরিয়েছেন কোথাও, ক্ষোভ অভিমানও উচ্চারিত হয়েছে, কিন্তু কখনোই তা দার্শনিক উপলব্ধিজাত নয়। প্রিয়ার প্রতি আকুতি-মিনতি কিংবা প্রত্যাখ্যাত তিক্ততার একান্ত ব্যক্তিগত অনুভবে তাঁর সৃষ্টির ভান্ডার পূর্ণ। মর্তের মানবী প্রিয়া তাঁকে লুব্ধ করেছে, ক্ষুব্ধও করেছে। মর্মগভীরে আপাদ-মস্তক রোমান্টিক হয়েও এই রোমান্টিক আবেগকে শৃঙ্খলিত করেছেন বাস্তবতার অনুশাসনে। প্রেমের কবিতায় যুক্তি, বুদ্ধি, তত্ত্ব ও বোধের চেয়ে তাৎক্ষণিক আবেগমথিত মানস অবস্থাকেই তিনি প্রাধান্য দিয়েছেন, এ প্রসঙ্গে এটাই বোধহয় সবচেয়ে বড়ো কথা।

চিত্রঃ কাজী নজরুল ইসলাম, Image Source: commons.wikimedia.

ভাব, ভাষা, বিষয়ের সঙ্গে নজরুলের উপযুক্ত কবিতাগুলোর প্রকরণ পরিচর্যার বিশেষত্বও লক্ষণীয়। পূর্বেই বলা হয়েছে যে, রোমান্টিক মানস প্রবণ কবি তার প্রিয়ার বর্ণনায় প্রায়ই আশ্রয় করেছেন প্রকৃতির বিচিত্র সব উপকরণ-অনুষঙ্গ। ফলে একদিকে তার প্রেমবোধ, অন্যদিকে প্রকৃতি চেতনার পরিচয় আভাসিত হয়েছে। অলঙ্কার সৃজনেও তাঁর একই রোমান্টিক স্বভাব লক্ষণ প্রতিফলিত। বিভিন্ন প্রেমের কবিতায় ‘রোমান্টিকতার অন্যতম বৈশিষ্ট্য বেদনা যন্ত্রণা আর পরাভবের চিত্র নির্মাণ করেছেন নজরুল’।১১ চিত্রকল্প প্রধানত বিষয়ের মর্মগত দিকের চেয়ে আঙ্গিকগত দিকটিকেই পরিস্ফুট করে তোলে। অনেক সময় একে সহায়তা করে উপমা, রূপক, প্রতীক-সব মিলে চিত্রকল্প। চিত্রকল্পের মানে অবশ্যই ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য সরাসরি চিত্রায়ণ নয়, বরং একে বলা যায় কল্পনাকে অধিকতর উজ্জীবিত করার মাধ্যম। বর্ণনার দেয়াল ঘেরা উদ্যান নয়, ব্যঞ্জনার ব্যাপক বাগান আমরা দেখতে চাই একটি কবিতার আভাতমসার চক্রে।১২ নজরুল কাব্যের সার্থকতার প্রধান কারণ তার চিত্রকল্প সৃজনদক্ষতার মধ্যে নিহিত। এ যেমন বিদ্রোহী মেজাজের কবিতায়, তেমনি প্রেমের কবিতায়। বলাবাহুল্য, উভয়ক্ষেত্রেই কবিতার বিষয় কিংবা প্রসঙ্গের সার্থক অনুষঙ্গরূপেই বিবেচিত হয়েছে এবং লালিত্য ও মাধুর্যে এর তুলনা মেলা ভার। তার কিছু কিছু প্রেমের কবিতা থেকে এর উদাহরণ দেওয়া যায়,

ক. উপমা,

১।     অন্তরের অগ্নি-সিন্ধু ফুল হয়ে হেসে উঠে কহে- “চিনি চিনি”

(পূজারিণী’ ‘দোলন-চাঁপা)

২.     বিজলী-শিখার প্রদীপ জ্বেলে ভাদর রাতের বাদল-মেঘ

দিগ্বিদিকে খুঁজছে তোমায় ডাকছে কেঁদে বজ্র-বেগ

দিগ্বিদিকে খুঁজছে মেঘ।

(‘আশান্বিতা’, ‘দোলন-চাঁপা)

৩.     শূন্য ছিল নিতল দীঘির শীতল কালোজল,

কেন তুমি ফুটলে সেথা ব্যথার নীলোৎপল?

(‘চৈতী হাওয়া’ ছায়ানট’)

৪.     মোর বেদনার কপূর-বাস ভরপুর আজ দিশ্বলয়ে,

(‘শেষের গান’ ছায়ানট’)

খ. উৎপ্রেক্ষা,

১।     ধুলি-অন্ধ ঘূর্ণিসম

দিবাযামী।

ঘরে আমি নেচে ফিরি রুধিরাক্ত মরণ-খেলায়

(পূজারিণী’ ‘দোলন-চাঁপা’)

২।     সাঝের আকাশ মায়ের মতন ডাকবে নত চোখে

(‘বেদনা -অভিমান’, ‘ছায়ানট’)

৩।     দুইটি হিয়াই কেমন কেমন বদ্ধ ভ্রমর পদ্মে যেমন।

(‘মরমী’-’ছায়ানট’)

৪।     অগ্নিগিরি এসে যেন মরুর কাছে হায় জল-ধারা চাবে

(‘বেলাশেষে’ ‘দোলন-চাঁপা’)

গ. অনুপ্রাস,

১।     সর্বহারার হাহাকার আর কাঁদবে নাকো চিত্ত-কূলে

(‘ব্যথাগরব’ ‘দোলন-চাঁপা’)

২।     দাবানলের দারুণ দাহ তুষার-গিরি আজকে দহে

(‘অবেলার ডাক’ ‘দোলন-চাঁপা’)

৩।     আগল ভেঙে আসবে পাগল, চুমবে সজল নয়ন-পাত

(‘আশান্বিতা’ ‘দোলন-চাঁপা’)।

৪।     সিঁথির বীথির খসে পড়া কপোল-ছাওয়া চপল-অলক

পলক-হারা, সে মুখ চেয়ে নাচ ভুলেছে নাকের নোক

(‘মানসবধু ছায়ানট’)

ঘ. অন্ত্যমিল

১।     অলস বৈশাখে/ কলস কই কাঁখে

(‘দুপুর-অভিসার’, ‘ছায়ানট’)

২।     মরম-কথা/ শরম-নতা।

(পাঁপড়ি-খোলা ছায়ানট’)

৩।     নাসায় তিলফুল/ হাসায় বিলকুল।

(‘প্রিয়ার রূপ’ ‘ছায়ানট’)

৪।     নদীজল/ অবিরল

(‘পূজারিণী’ ‘দোলন-চাপা’)।

আন্তরধর্মে রোমান্টিক কবি নজরুল ভাব ও বিষয়গত দিকে যেমন, অলঙ্কারাদির শিল্পিত সৃজনেও তেমনি এক উজ্জ্বল স্রষ্টা।

 

তথ্যসূত্রঃ

  • ১. বশীর আল হেলাল, ‘নজরুল-কাব্যের দুই ধারা’ নজরুল ইন্সটিটিউট পত্রিকা, এয়োদশ সংকলন, পৌষ ১৩৯৮, পৃষ্ঠা-১১।
  • ২. নারায়ণ চৌধুরী ‘বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুলের কাব্যশৈলী’ ‘নবপর্যায়ে সাহিত্য ভাবনা’, কলিকাতা: পপুলার লাইব্রেরী-১৯৮১ পৃ: ৪২;
  • ৩. নার্গিসের সঙ্গে বিচ্ছেদেব পরপরই কামাল পাশা, বিদ্রোহী, ভাঙার গান, প্রলয়োল্লাস-এই মহৎ সৃষ্টিগুলো উৎসারিত হয়েছিলো কবির লেখনী থেকে।
  • ৪. সৈয়দ আকরম হোসেন, ‘বাংলাদেশের সাহিত্য ও অন্যান্য প্রসঙ্গ’ বাঙলা একাডেমী; ঢাকা, ১৯৮৫, পৃ:৮২
  • ৫. আনিসুজ্জমান ও অন্যান্য সম্পাদিত ‘নজরুল রচনাবলী’ (ঢাকা: বাংলা একাডেমী, ১৯৮৪) পৃ: ৪০৮, ৪১০, ৪১৪, ৪২২।
  • ৬. কাজী মোজাম্মেল হোসেন, প্রেমের কবিতায় নজরুলের বর্ণ বৈচিত্র্যঃ চিত্র শিল্পের দৃষ্টিতে, নজরুল ইন্সটিটিউট পত্রিকা, চতুর্দশ সংকলন, ভাদ্র-১৩৯৯, পৃ: ৯৬।
  • ৭. বিশ্বজিৎ ঘোষ, নজরুল মানস ও অন্যান্য প্রসঙ্গ বাংলা একাডেমী; ঢাকা, ১৯৯৩, পৃ: ৪৬ ৪৭
  • ৮. আবদুল কাদির সম্পাদিত ‘নজরুল রচনা সম্ভার’ দ্বিতীয় সংস্করণ, ঢাকা, ১৯৬৯, পৃ: ২০৮।
  • ৯. সজনীকান্ত দাস, ‘আত্মস্মৃতি’ প্রথম খণ্ড, কলিকাতা: ডি, এম লাইব্রেরী, ১৩৬১, পৃ:২৩০।
  • ১০. আহমদ শবীফ, ‘একালে নজরুল’ মাওলা ব্রাদার্স, ঢাকা, ১৯৯৩।
  • ১১. বিশ্বজিৎ ঘোষ, প্রাগুক্ত, পৃ: ৫১।
  • ১২. আব্দুল মান্নান সৈয়দ, ‘নজরুল চিত্রকল্প’, মুস্তাফা নূরউল ইসলাম সম্পাদিত ‘নজরুল ইসলাম’, করাচী বিশ্ববিদ্যালয়: বাংলা বিভাগ, ১৯৬৯ পৃ: ২৭৯।

(সূত্রঃ নজরুল ইন্সটিটিউট পত্রিকা – বিংশ সংকলন)

‘নবজাগরণ’ অ্যান্ড্রোয়েড অ্যাপ্লিকেশনটি প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।

‘নবজাগরণ’ এর টেলিগ্রাম চ্যানেলে জয়েন হতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।

‘নবজাগরণ’ এর ফেসবুক পেজে লাইক করতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।

 

Post Views: 4,725
Tags: Kazi Najrul Islamকাজি নজরুল ইসলামনজরুল ইসলামের প্রেমের কবিতা : বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা
ADVERTISEMENT

Related Posts

নজরুল ইসলামের উপন্যাসে মানবতাবাদ
সাহিত্য আলোচনা

নজরুল ইসলামের উপন্যাসে মানবতাবাদ

লিখেছেনঃ মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম মহৎ ঔপন্যাসিক মাত্রই মানবতার পথপ্রদর্শক। সাহিত্য মানেই মানুষের কথা, তার জীবনযাপন, আনন্দ-বেদনা, প্রেম-সংঘর্ষ, বিশ্বাস-অবিশ্বাসের এক...

by মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম
March 29, 2025
বনলতা সেন ও জীবনানন্দ দাশের নায়িকারা
সাহিত্য আলোচনা

বনলতা সেন ও জীবনানন্দ দাশের নায়িকারা

লিখেছেনঃ আহমদ রফিক শ-পাঁচেক বছর আগে চিত্রশিল্পের অন্যতম ‘গ্রেট মাস্টার’ লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির আঁকা আবক্ষ নারীপ্রতিকৃতি ‘মোনালিজা’কে নিয়ে ইতালি-প্যারিস...

by অতিথি লেখক
November 19, 2024
কাজি নজরুল ইসলাম ও আন্তর্জাতিকতা
সাহিত্য আলোচনা

কাজি নজরুল ইসলাম ও আন্তর্জাতিকতা

লিখেছেনঃ সুমিতা চক্রবর্তী কাজি নজরুল ইসলামকে অনেক ভাবেই আমরা চিনি। তিনি উৎপীড়িতের পক্ষে দাঁড়ানো একজন সাহিত্যিক; তিনি অসাম্প্রদায়িক মনের...

by অতিথি লেখক
November 5, 2024
জীবনানন্দ দাশের নারীপ্রেমঃ বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা
সাহিত্য আলোচনা

জীবনানন্দ দাশের নারীপ্রেমঃ বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা

লিখেছেনঃ বাসন্তীকুমার মুখখাপাধ্যায় জীবনানন্দ যেমন প্রকৃতির বেদনার আঘাতের ও হিংস্রতার দিকটি সম্বন্ধে সম্পূর্ণ সচেতন থেকেও প্রকৃতিলীন জীবনে আস্থা স্থাপন...

by নবজাগরণ
November 7, 2024

POPULAR POSTS

  • সুলতান মাহমুদ

    সুলতান মাহমুদের ভারত অভিযান ও সোমনাথ মন্দির প্রসঙ্গ (১ম পর্ব)

    181 shares
    Share 181 Tweet 0
  • বাউরী সম্প্রদায়ের উৎপত্তির ইতিহাস ও ঐতিহাসিক পর্যালোচনা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • আর্যদের ভারত আগমন, বিস্তার, সমাজ ও সভ্যতা: এক ঐতিহাসিক পর্যবেক্ষণ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে বৌদি কাদম্বরী দেবীর সম্পর্ক আদৌ কি প্রেমের ছিল?

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • হিন্দু পদবীর উৎপত্তির ইতিহাস, বিবর্তন ও ক্রমবিকাশঃ বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

Facebook Page

নবজাগরণ

ADVERTISEMENT
নবজাগরণ

'Nobojagaran' is a website of its kind where you can gather knowledge on all the unknown facts of the world. We human beings always have a thirst for knowledge. Nobojagaran takes its first steps to quench this thirst of ours. We are now in the era of digital world, where we get almost anything online. So how about a bit of knowlyfrom online?

Connect With Us

No Result
View All Result

Categories

  • English (9)
  • অন্যান্য (11)
  • ইসলাম (26)
  • ইসলামিক ইতিহাস (22)
  • ইহুদী (1)
  • কবিতা (37)
  • খ্রিস্টান (6)
  • ছোটগল্প (6)
  • নাস্তিকতা (18)
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (24)
  • বিশ্ব ইতিহাস (24)
  • ভারতবর্ষের ইতিহাস (194)
  • রাজনীতি (38)
  • সাহিত্য আলোচনা (68)
  • সিনেমা (17)
  • হিন্দু (16)

Pages

  • Cart
  • Checkout
  • Checkout
    • Confirmation
    • Order History
    • Receipt
    • Transaction Failed
  • Contact
  • Donation to Nobojagaran
  • Homepage
  • Order Confirmation
  • Order Failed
  • Privacy Policy
  • Purchases
  • Services
  • লেখা পাঠানোর নিয়ম
  • হোম
No Result
View All Result
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi

©Nobojagaran 2020 | Designed & Developed with ❤️ by Adozeal

Login to your account below

Forgotten Password?

Fill the forms bellow to register

All fields are required. Log In

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In
Don't have an account yet? Register Now
wpDiscuz
0
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x
| Reply
Open chat
1
Powered by Joinchat
Hi, how can I help you?