• মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
Saturday, June 21, 2025
নবজাগরণ
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ
No Result
View All Result

আজটেক সভ্যতা : হারিয়ে যাওয়া এক প্রাচীন সভ্যতার অজানা ইতিহাস

মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম by মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম
June 10, 2021
in বিশ্ব ইতিহাস
0
আজটেক সভ্যতা

মেক্সিকো সিটিতে আজটেক দিনপঞ্জি বা আজটেক ক্যালেন্ডার, Image Source:, wikipedia

Share on FacebookShare on Twitter

লিখেছেনঃ মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম

খ্রীষ্টীয় ১৩৪৫ থেকে ১৫২১ শতাব্দীর মধ্যে আজটেক সভ্যতার (Aztec Civilization) উৎপত্তি হয়েছিল। এই সভ্যতাটি উত্তর আমেরিকার বেশিরভাগ অংশ জুড়েছিল এ সভ্যতার বিস্তৃতি ছিল। সভ্যতার সূচনালগ্নে আজটেক যোদ্ধারা তাদের প্রতিবেশী রাজ্যগুলিকে দখল করতে সক্ষম হয়েছিল। শুধু তাই নয় এ সময় আজটেক সভ্যতার শাসক দ্বিতীয় মোটিচুজ্জোমার পুরো মেক্সিকো অঞ্চল জুড়ে তাদের আদর্শ ও ধর্ম প্রচার এবং সাধারন নাগরিকদের উপর চাপিয়ে দেওয়ার নির্দেশ জারি করেছিল। আজটেক সভ্যতার তার অন্তিম লগ্নে শিল্প ও স্থাপত্যের দিক দিয়ে চরম উন্নতির শিখরে উন্নীত হয়েছিল।

খ্রীষ্টীয় প্রথম সহস্রাব্দে যখন গুয়াতেমালা ও ইউকাতান অঞ্চলে মায়া সভ্যতার বিকাশ ঘটছিলাে, তখন মধ্য-মেক্সিকো অঞ্চলে আনুমানিক ৩০০ খ্রীষ্টাব্দের দিকে টেওটিহুয়াকান শহরকে কেন্দ্র করে এক সভ্যতা গড়ে উঠেছিলাে। বর্তমান ‘মেক্সিকো সিটি’ নগর থেকে পঁচিশ মাইল উত্তর-পশ্চিম দিকে অবস্থিত ছিলাে টেওটিহুয়াকান নগরটি। তারপর আনুমানিক ৯০০ খ্রীষ্টাব্দে মধ্য-মেক্সিকোতে টোলটেক সভ্যতা গড়ে ওঠে। সবশেষে মেক্সিকো অঞ্চলে আজটেক সভ্যতা (Aztec Civilization) গড়ে উঠেছিলাে। [মায়া, আজটেক ও ইনকো সভ্যতা, আব্দুল হালিম, পৃষ্ঠা – ২০]

আজটেক সভ্যতা
Image by Ken Nelson from Pixabay

খ্রীষ্টীয় ৯০০ শতাব্দীর দিকে মেক্সিকো দেশের মধ্য অঞ্চলে টোলটেক জাতির একটা সভ্যতা গড়ে উঠেছিলাে। টোলটেকরা সেইসব অঞ্চলে বড় বড় শহর নির্মাণ করেছিলাে। টোলটেকদের রাজধানী বা প্রধান শহর ছিলাে টোলান নগরী যেটি বর্তমান টুলা নামে অধিক পরিচিত। টোলান নগরীটি অবস্থিত ছিলাে মেক্সিকো সিটি নগরী থেকে ষাট মাইল উত্তর-পশ্চিম দিকে। তারা বৃহৎ আকারের দালান-কোঠা, মন্দির ও পিরামিড নির্মাণ করতো। এরা মায়া সভ্যতার লোকেদের অনুকরণ করে লেখার কৌশল ও পঞ্জিকা তৈরির কৌশল আয়ত্ত করেছিলো।

নহুয়া ভাষাভাষী কতগুলাে জাতির আক্রমণে ১০০০ খ্রীষ্টাব্দের দিকে টোলটেক সভ্যতা ধ্বংস হয়ে যায়। এ সকল জাতির মধ্যে কলুহুয়া জাতি ছিলাে বিশেষ পরাক্রমশালী। কুলহুয়াদের প্রধান শহরের নাম ছিলাে কুলহুয়াকান। এ শহরটা ছিলাে টেক্সকোকো হ্রদের দক্ষিণ তীরে। এ সময়ে টেক্সকোকো হ্রদের পূর্ব তীরে আরেকটা শক্তিশালী নগর রাষ্ট্র গড়ে উঠেছিলাে, তার নাম ছিলাে টেক্সকোকো নগর। এ শহরের মানুষরাও ছিলাে নহুয়া ভাষাভাষী। বর্তমান মেক্সিকো দেশের রাজধানী মেক্সিকো সিটি’ নগরটি যেখানে অবস্থিত সে জায়গাতেই তখন ছিলাে টেক্সকোকো হ্রদ। আসলে এ হ্রদের প্রকৃত নাম কি তা বলা কঠিন। কোনাে কোনাে ঐতিহাসিক একে মেক্সিকো হ্রদ বলেছেন, অন্য কোনাে ঐতিহাসিক হয়তাে একে বলেছেনা টেক্সকোকো হ্রদ। হ্রদটি এখন শুকিয়ে গেছে আর হ্রদের মধ্যবর্তী নগরগুলাের ধ্বংসস্তুপের উপর গড়ে উঠেছে বর্তমান কালের ‘মেক্সিকো সিটি’ নগরী। [মায়া, আজটেক ও ইনকো সভ্যতা, আব্দুল হালিম, পৃষ্ঠা – ২১]

উপরােক্ত নহুয়া ভাষাভাষীরা মধ্য মেক্সিকো অঞ্চলে যে সভ্যতা ও সংস্কৃতি গড়ে তুলেছিলাে তার নাম আজটেক সভ্যতা। প্রথমে ১০০০ খ্রীষ্টাব্দের অল্পকাল পরেই কুলহুয়া জাতির মানুষ, টেক্সকোকো রাজ্যের মানুষ, টেপানেক জাতির মানুষ ও অন্যান্যরা মধ্য মেক্সিকো উপত্যকায় মূলত একই ধরনের সভ্যতা ও সংস্কৃতি গড়ে তুলেছিলাে। এ সংস্কৃতিরই নাম দেয়া হয়েছে আজটেক সভ্যতা ও সংস্কৃতি। ১২০০ খ্রীষ্টাব্দের দিকে এ অঞ্চলে টেনােকা নামে আরেকটি নহুয়া ভাষাভাষী জাতি এসে বসবাস স্থাপন করে। টেনােকারা টেক্সকোকো হ্রদের মাঝখানে একটা দ্বীপে বাস করতে শুরু করেছিলাে। কালক্রমে, আনুমানিক ১৩২৫ খ্রীষ্টাব্দে বা তার কিছু আগে, টেনােকারা ঐ দ্বীপ টেনােচটিটলান নামে একটা নগর স্থাপন করে। এ টেনােকারাই ক্রমে ক্রমে শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং সমগ্র মেক্সিকো অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তার করতে সক্ষম হয়। টেনােচকারা মধ্য মেক্সিকোতে দেরিতে এলেও তারা আজটেক সভ্যতাকে সফলভাবে গ্রহণ করেছিলাে এবং সমগ্র মেক্সিকো অঞ্চলে তার প্রসার ঘটিয়েছিলাে। তাই টেনােকাদেরও আজটেক নামে অভিহিত করা হয়। টেনােকাদের রাজধানী ছিলাে টেনােচূটিটলান। এ টেনােচ্‌টিটলান নগরের ধ্বংসাবশেষের উপরেই গড়ে উঠেছে বর্তমান মেক্সিকো দেশের রাজধানী মেক্সিকো সিটি’ নগরটি। তাই টেনােচকাদের বলা চলে ‘মেক্সিকো নগরের আজটেক’।

১৫১৯ খ্রীষ্টাব্দে যখন স্পেনীয়রা মেক্সিকো আক্রমণ করেছিলাে তখন তারা দেখতে পায় যে টেনােকারাই সমগ্র মধ্য মেক্সিকো অঞ্চলে আজটেক সভ্যতার উপর আধিপত্য বিস্তার করে আছে। এ টেনােকা জাতির রাজারাই ইউরােপীয়দের কাছে আজটেক রাজা নামে পরিচিত হয়েছিলাে। এখনও সাধারণভাবে আজটেক রাজা বা আজটেক স্রাট বলতে টেনােকা জাতির রাজাদেরই বােঝান হয়ে থাকে, যদিও ঐ একই সময়ে মধ্য মেক্সিকো অঞ্চলে টেনােকাদের পাশাপাশি অন্য দু একটি রাজবংশের রাজারাও (যথা, টেক্সকোকো ও টাকুবা রাজ্যের রাজারা) রাজত্ব করে গেছেন। আমরা এখানে অবশ্য আজটেক রাজা হিসেবে শুধুমাত্র টেনােকা জাতির রাজাদের ইতিহাসই বর্ণনা করবাে।

টেনােচারা কোথা থেকে এল টেনােকারা (অর্থাৎ মেক্সিকো শহর অঞ্চলের আজটেকরা) দাবি করে যে তারা আগে মেক্সিকো দেশের পশ্চিম অঞ্চলে আজলান নামে একটা স্থানে বাস করতাে। ১১৬৮ খ্রীষ্টাব্দে তারা এখান থেকে বের হয়ে নতুন বাসভূমির সন্ধানে পূর্ব দিকে যাত্রা করে। চলতে চলতে তারা কিছু দূর অন্তর অন্তর এক একটা স্থানে থামতাে এবং সেখানে এক বছর বা দু’বছর থাকতাে। তারপর আবার অগ্রসর হয়ে নতুন জায়গার সন্ধান করতাে। এভাবে অগ্রসর হতে হতে টেনােকারা শেষ পর্যন্ত মেক্সিকোর মধ্য অঞ্চলের টেক্সকোকো হ্রদের তীরে এসে পৌছায়। এখন যেখানে মেক্সিকো শহরটি অবস্থিত সেখানেই আগে ছিলাে টেক্সকোকো হ্রদ। এ অঞ্চলে তখন টেপানেকদের আধিপত্য ছিলাে। টেপানেকদের অনুমতি নিয়েই শুধু টেনােকারা টেক্সকোকো হ্রদ অঞ্চলে আসতে পেরেছিলাে। [মায়া, আজটেক ও ইনকো সভ্যতা, আব্দুল হালিম, পৃষ্ঠা – ২১/২২]

আজটেক অর্থনীতি

আজটেকদের জীবনযাত্রার ভিত্তি ছিলাে কৃষিকাজ। ভুট্টা ছিলাে তাদের প্রধান খাদ্যশস্য। আজটেকদের মধ্যে গােষ্ঠী এবং গােত্র প্রথা বজায় ছিলাে। গােষ্ঠী প্রধানরা বিভিন্ন গােত্রের মধ্যে চাষের জমি বিতরণ করে দিতেন। গােত্র প্রধানরা আবার গােত্রের অন্তর্গত বিভিন্ন পরিবারের কর্তাদের মধ্যে ন্যায্যভাবে জমি ভাগ করে দিতেন। জমির একটা অংশ সর্দার ও পুরােহিতদের জন্য, যুদ্ধের রসদের। জন্য ও রাজার খাজনা দেয়ার জন্য রাখা হতাে। সমাজের সব মানুষ মিলে বেগার খেটে এসব জমিতে ফসল ফলাতাে। কোনাে কৃষকের মৃত্যু হলে তার জমি তার ছেলেরা পেতাে। কোনাে কৃষক অপুত্রক অবস্থায় মারা গেলে অথবা জমিতে আবাদ করলে তার জমি গােত্রের হাতে ফিরে যেতাে এবং নতুন ভাবে সে জমিকে বিতরণ করা হতাে।

জনসংখ্যা বেড়ে গেলে ক্রমশ জমির অভাব দেখা দেয়। আজটেকরা তখন মেক্সিকোর মধ্যভাগে অবস্থিত উপত্যকায় চলে আসে। এখানে তারা টেক্সকোকো হ্রদের তীরে এবং হ্রদের মাঝখানেও বসতি স্থাপন করে। হ্রদের মধ্যে বাস করার জন্য তারা কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করতাে। হ্রদের মধ্যে বেড়া দিয়ে তার ভিতরে মাটি ফেলে ফেলে দ্বীপ তৈরি করা হতাে। হ্রদের উপকূলের বিস্তীর্ণ জলাভূমির মাটি দিয়ে এভাবে উর্বর দ্বীপ তৈরি করা হয়। এসব দ্বীপের জমিতে চাষ করে ভালাে ফসল পাওয়া যেতাে। চাষের এ পদ্ধতিকে বলা হয় চিনাম্পা। চিনাম্পা মানে হলাে ভাসমান বাগান।

আজটেকদের মধ্যে হস্তশিল্প এবং ব্যবসার কিছুটা বিকাশ ঘটেছিলাে। আজটেকদের কোনাে কোনাে শহর ও গ্রাম হয়তাে এক এক ধরনের পণ্য উৎপাদনে দক্ষতা অর্জন করেছিলাে। কেউ হয়তাে ভাল মাটির পাত্র তৈরী করতাে, কেউ মরিচের চাষ করতাে, কেউ ভাল পাথরের হাতিয়ার তৈরি করতাে। এ সকল পণ্য বিক্রি বা বিনিময় করার জন্য এক এক অঞ্চলে মেলা বা বাজার বসততা। অনেক দূর দূর অঞ্চল থেকে মানুষ এসব মেলায় আসত জিনিসপত্র কেনার জন্য। টলালটেলােকো শহরে একটি স্থায়ী বাজার ছিলাে। রােজ শহরে সেখানে বাজার বসতাে। এ বাজারে এত সব অপূর্ব পণ্যের সমাহার ঘটতাে যে স্পেনীয়রা পর্যন্ত তা দেখে মুগ্ধ ও ঈর্ষাকাতর হয়েছিলাে।

আজটেকদের সমাজে মুদ্রা বা টাকা পয়সার প্রচলন ছিলাে না। তারা বিনিময়ের মাধ্যমেই ব্যবসা করতাে। তবে বিনিময়ের কাজে সহায়তার জন্য কয়েকটা জিনিসকে মুদ্রার বিকল্প হিসাবে ব্যবহার করা হতাে। যথা, কাকাও-এর দানা; সােনার গুড়াে ভর্তি পাখির পালক এবং তামার তৈরি পাতলা ছুরি। তবে এ তিনটের মধ্যে কাকাও-এর দানাই লােকে বেশি পছন্দ করতাে। দুটো জিনিস বিনিময় করতে গেল হয়তাে দেখা যেত যে তাদের দামের মধ্যে সামান্য পার্থক্য হচ্ছে। তখন কাকাও-এর দানা দিয়ে ঐ পার্থক্যটুকু মিল করা হতাে।

আজটেকদের কাছে সবচেয়ে মূল্যবান পদার্থ ছিলাে জেড পাথর। তারা সােনাকে খুব মূল্যবান মনে করতাে না। তাদের কাছে শুধু গয়না হিসেবেই সােনার দাম ছিলাে। আজটেকদের কাছে সােনার চেয়ে রূপার দাম সম্ভবত বেশি ছিলাে, কারণ রূপার খণ্ড তাদের দেশে দুষ্প্রাপ্য ছিলাে। উল্লেখ করা যেতে পারে যে আজটেকরা রূপার আকর গলিয়ে রূপা তৈরি করতে পারতাে না। তাই তারা পাহাড়ের গায়ের ভিতরে লুকিয়ে থাকা রূপা বা সােনার শিরা থেকে ঐসব ধাতু সংগ্রহ করতাে। আজটেকরা সােনার চেয়ে জেড পাথরকে বেশি মূল্যবান মনে করতাে বলে এক পর্যায়ে খুবই বিপদগ্রস্ত হয়ে ছিলাে। স্পেনীয়রা আজটেকদের রাজ্য দখল করে যখন সমস্ত মূল্যবান সম্পদ হাজির করতে বলে তখন আজটেকরা সােনা না এনে জেড পাথর, টারকয়েজ পাথর প্রভৃতি এনে হাজির করে। তাদের এ আনুগত্যকে অবাধ্যতা ভেবে কটেজ ও তার সৈন্য সামন্ত খুবই বিরক্ত হয়েছিলাে। আজটেকরা অবশ্য তখনও জানতাে না যে স্পেনীয়রা সােনার লােভেই আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে মেক্সিকোতে গিয়েছিলাে।

আজটেকরা ভুট্টা ছাড়াও অনেক রকমের তরিতরকারি ও ফসলের চাষ করতাে। তারা টমেটো, লাউ, মটরশুটি জাতীয় ফসল, কোকো, লঙ্কা মরিচ, তামাক, তুলা প্রভৃতির চাষ করতাে।

আজটেকরা ম্যাগুয়ে নামে একটা গাছের চাষ করতাে। এ গাছের রস থেকে তারা একরকম মদ তৈরি করে খেতাে। এ মদের কিছুটা পুষ্টিগুণও ছিলাে। এ গাছের ছাল থেকে সূতা এবং কাপড়, আর পাতা দিয়ে ঘরের ছাদ ও গাছের কাঁটা দিয়ে সুই তৈরি করা হতাে।

আজটেকরা নলখাগড়ার ফাঁকা নলে তামাক পুরে সিগারেটের মতাে করে ধূমপান করতাে। তারা গাছের রস থেকে রাবার তৈরি করতাে, সে রাবার দিয়ে বল তৈরি করতাে। আজটেকরা বল খেলতাে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের অঙ্গ হিসেবে।

আজটেকরা লাঙলের ব্যবহার জানতাে না। তারা কোদাল বা শাবল দিয়ে মাটি খুঁড়ে চাষ করতাে। তবে আজটেকরা পানি সেচ করার কৌশল আয়ত্ত করেছিলাে। আজটেকরা চাষের কাজে দক্ষতা অর্জন করলেও পশুপালন বা পশুশক্তিকে কাজে লাগানাের ব্যাপারে তারা বিশেষ কৃতিত্বের পরিচয় দিতে পারেনি। আজটেকরা মহিষ জাতীয় কোনাে প্রাণীকে পােষ মানাতে শেখে নি। তারা অবশ্য কয়েক ধরনের কুকুর পুষতাে। এক ধরনের কুকুরকে তারা খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার করতাে, তবে কুকুরকে তারা কখনও স্লেজ গাড়ি টানার কাজে ব্যবহার করেনি। টার্কি নামক মুর্গী জাতীয় প্রাণীকে তারা পােষ মানিয়েছিলাে; তারা হাঁসকে পােষ মানিয়েছিল এমন প্রমাণও কিছু কিছু পাওয়া যায় ।

আজটেকদের হাতিয়ার ও যন্ত্রপাতি ছিলাে আদিম ধরনের। কাঠের খােন্তা বা শাবল ছিলাে তাদের প্রধান কৃষিযন্ত্র, এ কথা আগেই বলা হয়েছে। গম পেশার জন্য তারা যে যাতা ব্যবহার করতাে তা ছিলাে আমাদের মশলা পেশার শিল নােড়ার মতাে। আমরা যেটাকে শিল বা পাটা বলি আজটেকরা তাকে বলতাে মেটাটে; আর আমরা যাকে পুতা বা নােড়া বলি তারা তাকে বলতাে মাননা।

চামড়া, মাংস ও অন্যান্য জিনিস কাটার জন্য আজটেকরা পাথরের হাতিয়ার ব্যবহার করতাে। তামা দিয়ে সুই, কুড়াল ও গয়না বানাতাে। আজটেকরা মিশরীয় অথবা ব্যবিলনীয়দের মতাে আকর গলিয়ে তামা বানাতে পারতাে না। তারা পাহাড়ের গায়ের ভিতর যে বিশুদ্ধ তামা পেতাে তাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে পিটিয়ে বিভিন্ন আকৃতির জিনিস বানাতাে। তবে আজটেকরা বিশুদ্ধ তামাকে গলিয়ে তাকে ছাঁচে ঢেলেও কুড়াল প্রভৃতি বানাতে পারতাে। আজটেকরা সিরে পারডু’ বা ‘মমলুপ্তি’ পদ্ধতিতে ছাঁচে ঢেলে তামা বা সােনার গয়না, ঘণ্টা প্রভৃতি তৈরি করতাে। ইনকাদের ইতিহাস বর্ণনাকালে এ পদ্ধতির বিবরণ দেয়া হয়েছে। অবৃসিডিয়ান পাথর দিয়ে আজটেকরা ধারাল অস্ত্র ও হাতিয়ার বানাতে পারতাে। (অবৃসিডিয়ান আসলে এক ধরনের প্রাকৃতিক কাচ; আগ্নেয়গিরির লাভার মধ্যে এগুলাে পাওয়া যায়।)

আজটেকরা চরকার ব্যবহার জানতাে না। তারা কাঠি দিয়ে সূতা কাটতাে এবং আদিম ধরনের তাঁতের সাহায্যে কাপড় বুনতাে। তারা রান্নাবান্না এবং খাদ্যশস্য জমা করে রাখার জন্য মাটির পাত্র ব্যবহার করতাে। তারা তীর-ধনুক, বর্শা নিক্ষেপক যন্ত্র, বর্শা বা বল্লম, গদা প্রভৃতি অস্ত্র ব্যবহার করতাে। আজটেকদের সংস্কৃতিতে যান্ত্রিক আবিষ্কার বিশেষ বিকাশলাভ করে নি। তবে তাদের কারিগররা সাধারণ হাতিয়ার ব্যবহার করে নানা রকম জিনিসপত্র তৈরির ক্ষেত্রে অসামািন্য দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। [মায়া, আজটেক ও ইনকো সভ্যতা, আব্দুল হালিম, পৃষ্ঠা – ২৬/২৯]

আজটেকদের সমাজ ও জীবন

আজটেকরা যখন মেক্সিকোর উপত্যকাতে প্রথম এসেছিলাে তখন তাদের সমাজ সংগঠন ছিলাে উপজাতীয় পর্যায়ের। অর্থাৎ তাদের সমাজ গােত্র ও গােষ্ঠীতে বিভক্ত ছিলাে এবং সমাজে আদিম ধরনের গণতন্ত্র প্রচলিত ছিলাে। আত্মীয়স্বজনদের কয়েকটি পরিবার নিয়ে একটি গােত্র হতাে এবং প্রায় ২০টি গােত্র নিয়ে একটি গােষ্ঠী গঠিত হতাে। প্রত্যেক গােষ্ঠীর নিজস্ব সর্দার বা দলপতি থাকতাে। প্রত্যেক গােষ্ঠী নিজেদের বিষয় নিজেরাই পরিচালনা করতাে। তবে সমগ্র উপজাতীয় স্বার্থের বিষয় বিবেচনা করার জন্য গােষ্ঠী ও সর্দারদের নিয়ে একটা পরিষদ গঠিত হতাে। এ পরিষদ সামাজিক ও ধর্মীয় বিষয়সমূহ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য একজন সর্দার এবং যুদ্ধ পরিচালনার জন্য একজন সর্দার নিয়ােগ করতাে। আজটেকরা যখন চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করতাে তখন এই ছিলাে তাদের সমাজের গঠন বিন্যাস। পরে যখন আজটেকরা নগররাষ্ট্র গঠন করে এক বিরাট সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে তখন তাদের এ সমাজ সংগঠনই অনেক জটিল হয়ে দাঁড়ায়। তথাপি সাম্রাজ্যের যুগেও টেনােকা-আজটেকদের মধ্যে গােষ্ঠী জীবনের অনেক নিয়ম-কানুন ও রীতি-নীতি বজায় ছিল।

আজটেকদের সমাজে মেয়েদের স্থান ছিলাে পুরুষের চেয়ে নীচে, তবে মেয়েদের কতগুলাে অধিকার ছিলাে। মেয়েরা সম্পত্তির অধিকারী হতে পারতাে এবং প্রয়ােজনে আইনের আশ্রয় নিতে পারতাে। জীবনে উন্নতি করার সুযােগ অবশ্য শুধু পুরুষদেরই ছিলাে। অভিজ্ঞ কৃষক, চতুর শিকারী ও সাহসী যােদ্ধা ও দক্ষ কারিগরদের সম্মান ছিলাে সমাজে। আজটেক সমাজে যুবকদের সামনে কৃষিকাজ, কারিগরি ও ব্যবসা বাণিজ্যকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করার সুযোেগ ছিলাে।

আজটেকদের সমাজে দাস ছিলাে। যুদ্ধবন্দীদের অবশ্য সচরাচর দেবতার উদ্দেশে বলি দেয়া হতাে। কিছু যুদ্ধবন্দীকে আবার দাসও বানানাে হতাে। অনেক গুরুতর অপরাধীকে দাস বানানাে হতাে। অনেক গরীব লােক ছেলেমেয়েকে দাস হিসেবে বিক্রি করে দিত। চুরি ডাকাতির জন্য কঠোর শাস্তি দেয়া হতাে। নরহত্যা করলে এমন কি কোন দাসকে হত্যা করলেও মৃত্যুদণ্ড দেয়া হতাে।

টেনােকা-আজটেকদের আমলে মধ্য মেক্সিকোর বিভিন্ন শহরের অধিবাসীরা ভাষা, ধর্ম, রীতিনীতি ও সংস্কৃতিতে এক গােত্রীয় হলেও তাদের মধ্যে কোনাে ঐক্যের বােধ ছিলাে না। টেনােকারা অর্থাৎ মেক্সিকো নগরীর আজটেকরা মধ্যমেক্সিকো দেশের প্রায় পুরাে অঞ্চলকে অধিকার করলেও সে অঞ্চলকে আজটেকরা একটা সাম্রাজ্যে পরিণত করতে পারে নি। আজটেকরা বিজিত নগর ও রাজ্যগুলাে থেকে কর আদায় করতাে। কিন্তু সব রাজ্যের উপর কোনাে এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থা আজটেকরা আরােপ করতে পারে নি। এ কারণে আজটেক রাষ্ট্রকে সাম্রাজ্যরূপে অভিহিত করা চলে না। তবে টেনােকা-আজটেকদের আমলে মেক্সিকো অঞ্চলের সব নগর ও রাজ্য সমূহে একই ধরনের সভ্যতা ও সংস্কৃতির প্রকাশ দেখতে পাওয়া যেতাে। এ অর্থে বলা চলে যে টেনােকা-আজটেকদের রাজত্বকালে মেক্সিকো অঞ্চলে মােটামুটি ঐক্যবদ্ধ একটা সংস্কৃতি বিদ্যমান ছিলাে। [মায়া, আজটেক ও ইনকো সভ্যতা, আব্দুল হালিম, পৃষ্ঠা – ২৯/৩০]

আজটেকদের ধর্ম

অ্যাজটেক সভ্যতা (Aztec Civilization) ছিল মূলতঃ পৌরাণিক কাহিনী ও ধর্ম, প্রাচীন সংস্কৃতিগুলির মতোই প্যাগান ধর্মে বিশ্বাসী। তাদের বিশ্বাস ঈশ্বর হুইটজিলোপচিটলি (Huitzilopochtli) তাদের পথ দেখিয়েছিলেন।

আজটেকরা বিশ্বাস করত হুইটজিলোপচিটলি ক্যাকটাসের উপরে বসে একটি ঈগল পাঠিয়েছিলেন যাতে এই অভিবাসীরা তাদের নতুন বাড়ি কোন স্থানে নির্বাচন করা উচিত তা সঠিকভাবে নির্ধারণ করতে পারে।

অ্যাজটেক পূজা করা দুটি দেবতা প্রধান ছিল তারা যথাক্রমে হুইটজিলোপচটলি (যুদ্ধ ও সূর্যদেব দেবতা) এবং ত্লালোক (বৃষ্টির দেবতা)। উভয়ে দেবতারই মন্দির ছিল টেনোচিটট্লানের প্রাণকেন্দ্রে টেম্পলো মেয়র পিরামিডের উপরে।

আজটেক সভ্যতা
Image by Rodrigo de la torre from Pixabay

অ্যাজটেকদের আরও গুরুত্বপূর্ণ দেবতা হলেন, ওমেটোটল (সৃষ্টির দেবতা), তেজকাটলিপোকা (টেক্সকোকোর সর্বোচ্চ দেবতা), জিপ টোটেক (বসন্তের ও কৃষির দেবতা), মিক্ল্যাঙ্কটেকুহটলি (মৃত্যুর দেবতা), শিওহিটেকুহ্টলি (গ্রীষ্মকালীন ও ফুলের দেবতা), কোয়েটজলকোটল (বহু মেসোমেরিকান সংস্কৃতিতে দেখা যায় এমন সর্পযুক্ত সর্প দেবতা) এবং কোটলিকি (পৃথিবী-মাতা দেবী)।

অ্যাজটেকরা তাদের দেবতাদের উপলক্ষে উত্সব, ভোজ, সংগীত, নৃত্য, মূর্তি সজ্জা, ধূপ জ্বালানো, মূল্যবান জিনিসপত্রের কবর দেওয়া, রক্তদানের মতো তপস্যা এবং পশুবলি প্রভৃতি করত।

প্রাপ্তবয়স্ক এবং খুব কম শিশু উভয়ই মানুষকে দেবতাদের রূপকভাবে ‘খাওয়ানো’ এবং তাদেরকে খুশি রাখার জন্য প্রায়শই উত্সর্গ করা হত, যাতে তারা রাগান্বিত হয় না।

মায়া সভ্যতার (Maya Civilization) লোকেদের মতাে আজটেকরাও সূর্যের উপাসনা করত। আজটেকদের দেবতারা আজটেকদের মতােই রক্তপিপাসু ছিলাে। আজটেকদের বিশাল রাজ্যের অন্তর্গত সব নগরেই বড় বড় পিরামিড নির্মাণ করা হতাে। পিরামিডের মাথায় থাকতাে সূর্যদেবের মন্দির। মন্দিরের মধ্যে পাথরের বেদী থাকতাে। এ সকল বেদীতে সূর্যদেবের উদ্দেশে নরবলি দেয়া হতাে। আজটেকদের নরবলির ধরন ছিলাে জীবন্ত মানুষের হৃৎপিণ্ড কেটে বের করে সূর্যের উদ্দেশ নিবেদন করা । আজটেকদের একজন প্রধান দেবতা ছিলেন হুইট জিললাপিচটলি। তিনি ছিলেন যুদ্ধ ও সূর্যের দেবতা।

আজটেক সভ্যতা
quetzalcoatl, Image by Rodrigo de la torre from Pixabay

আজটেকদের আরেকজন দেবতা ছিলেন কোয়েটজাল কোহুয়াটল। তিনি ছিলেন বাতাস ও স্বর্গলােকের দেবতা। তার জন্য কোনাে নরবলির বিধান ছিলাে না। তিনি ছিলেন স্র স্বভাবের দেবতা। আজটেকদের শিল্পকলায় এ দেবতাকে পালকে ঢাকা সাপ হিসেবে আঁকা হয়েছে। এ সংযুক্ত প্রাণীটি ছিলাে পৃথিবী ও আকাশের প্রতীক। পৃথিবী হলাে সব মানুষের মা আর আকাশ হলাে পিতা। আজটেকরা ছিলাে পৃথিবী ও সূর্যের উপাসক।

মায়াদের মতাে আজটেকরাও জমাট রবারের বল নিয়ে খেলতাে। এ বল খেলা ছিলাে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের অঙ্গ। [মায়া, আজটেক ও ইনকো সভ্যতা, পৃষ্ঠা – ৩০/৩১]

আজটেকদের জ্ঞান বিজ্ঞান ও শিল্প-সংস্কৃতি

অ্যাজটেকরা জ্ঞান বিজ্ঞান ও শিল্প-সংস্কৃতিতে যথেষ্ঠ অবদান রেখেছিল। ক্ষুদ্র আকৃতির খোদাই করা মূল্যবান জিনিসপত্র থেকে শুরু করে বিশাল পাথরের মন্দির পর্যন্ত নির্মাণ করেছিল। আজটেকরা স্মৃতিসৌধ ও ভাস্কর্যগুলি নির্মাণ করেছিল। তারা প্রচুর কোটলিকু মূর্তির মতো ভয়ঙ্কর একধরনের মূর্তি তারা নির্মাণ করেছিল।

কৃষিকাজ ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান ইত্যাদি প্রয়ােজনে আজটেকরা জ্যোতিবিদ্যার চর্চা করতাে। আজটেকরা একটা পঞ্জিকা প্রণয়ন করেছিলাে। আজটেকরা ২০ দিনে মাস শুনতাে এবং এ রকম মাসের ১৮ মাসে বছর হতাে। এ বছরের শেষে ৫টা অশুভ দিন যােগ করা হতাে। তাই আজটেকদের সৌর বছর ছিলাে ৩৬৫ দিনে। আজটেকরা আরেকটা ধর্মীয় বছর অনুসরণ করতাে—তাতে ছিলাে ২৬০ দিন। ১৩ দিনে সপ্তাহ ধরে ২০টি সপ্তাহ হিসাব করে তারা ২৬০ দিন হিসাব করতাে। এ হিসাবটা কেবল ধর্মীয় অনুষ্ঠানেই ব্যবহার করা হতাে। একটা গােল পাথরের চাকতিতে আজটেকরা তাদের দিন- তারিখের হিসাব লিখে রাখতাে; তাকে বলা হয় শিলা পঞ্জিকা’।

আজটেকরা বড় বড় পিরামিড ও মন্দির, ধাতুর জিনিসপত্র প্রভৃতি নির্মাণ করার মততা কারিগরি জ্ঞান আয়ত্ত করেছিলাে। আজটেকরা এক ধরনের লেখন পদ্ধতি আয়ত্ত করেছিলাে। তারা চিত্রলিপি অর্থাৎ ছবির সাহায্যে লিখতাে। এ ধরনের লেখন পদ্ধতি প্রাচীন মিশর ও ব্যবিলনে প্রচলিত ছিলাে।

আজটেকদের গণনা পদ্ধতি ছিলাে ২০ ভিত্তিক। তারা সংখ্যা লিখন পদ্ধতিও আয়ত্ত করেছিলাে। তারা পর পর বিন্দু সাজিয়ে ১ থেকে ১৯ পর্যন্ত লিখতাে। ২০ বােঝাতে তারা একটা পতাকার ছবি আঁকতাে। পতাকার পর পতাকা সাজিয়ে তারা ১ কুড়ি, ২ কুড়ি প্রভৃতি লিখতাে। ২০ কুড়ি বা ৪০০ বােঝাতে তারা ফার গাছের মতাে একটা ছবি আঁকতাে, এর অর্থ ছিলাে অনেকগুলাে চুল। পরবর্তী উচ্চতর একক ছিলাে ৮০০০ (২০x২০x২০ বা ২০x৪০০)। একটা ঝােলা বা ব্যাগের ছবি দিয়ে ৮০০০ বােঝান হতাে—এর অর্থ ছিল ব্যাগ ভর্তি কোকো দানা।

শিল্পকলা আজটেকদের জীবন থেকে পৃথক বা বিচ্ছিন্ন কিছু ছিলাে না, শিল্পকলা ছিলাে তাদের জীবনের কার্যাবলীর সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত।

আজটেকদের শিল্প-চর্চার সবচেয়ে শক্তিশালী প্রকাশ ঘটেছিলাে স্থাপত্য ও ভাস্কর্যে। চিত্রাঙ্কনের ক্ষেত্রে আজটেকরা ছিলাে দুর্বল। সঙ্গীতের চেয়ে নাচের ক্ষেত্রে তারা ছিলাে বেশি পারদর্শী।

মন্দির, পিরামিড প্রভৃতিতে আজটেক স্থাপত্য শিল্পের প্রকাশ দেখতে পাওয়া যায়। একটা ধাপ পিরামিডের উপর মন্দিরটা নির্মিত হতাে। মায়ারা যেমনভাবে ধাপ পিরামিড ও মন্দির নির্মাণ করতাে আজটেকরাও সে কৌশলেই পিরামিডমন্দির তৈরি করতাে। পিরামিড ধাপ এবং মন্দিরের দেওয়ালের পাথরে নানারকম মূর্তি প্রভৃতির চিত্র খােদাই করা হতাে।

আজটেকরা ভাস্কর্য শিল্পেও উৎকর্ষের পরিচয় দিয়েছে। আজটেকরা দেবদেবীর বড় বড় পাথরের মূর্তি নির্মাণ করতাে, ছােট আকৃতির পাথরের মূর্তি প্রভৃতিও তৈরি করতাে। আজটেকরা গােল পাথরের চাকতিতে নানা দিনক্ষণের হিসাব ও ঐতিহাসিক সন তারিখ লিখে রাখতাে। একে বলা হয় পঞ্জিকা বা ক্যালেণ্ডার।

আজটেকরা পালক দিয়ে সুন্দর সুন্দর মাথার টুপি প্রভৃতি বানাতে পারতাে। তারা পশমের কাপড়ে পালক বসিয়ে সুন্দর রঙবেরঙের কাপড় ও পােষাক বানাতে পারতাে। আজটেকরা সুন্দর সুন্দর নক্সা কাটা মাটির পাত্র বানাতে পারতাে। তারা কুমারের চাক ব্যবহার করতে জানতাে না। পরতের পর পরত কাদামাটি বিছিয়ে তারা হাত দিয়ে সমান ও মসৃণ করে মাটির পাত্র বানাতাে। আজটেকরা কাঠের কাজে বিশেষ দক্ষতা অর্জন করেনি। তারা অবশ্য দালানের কড়ি বরগার জন্য কাঠ ব্যবহার করতাে, কাঠের ঢােলক এবং ছােট এক ধরনের চেয়ারও বানাতে পারতাে। তারা মূলত পাথরের যন্ত্র ও হাতিয়ার দিয়ে কাঠের কাজ করতাে।

আজটেকদের লেখন পদ্ধতি খুব উন্নত ছিল না বলে তাদের সাহিত্যের কোনাে লিখিত রূপ পাওয়া যায় না। তবে কথকতা এবং লােককাহিনীর মধ্যে তাদের যে সাহিত্য বেঁচে ছিলাে তা যথেষ্ট সমৃদ্ধ বলে পণ্ডিতগণ মনে করেন। [প্রাগুপ্ত, পৃষ্ঠা – ৩০/৩১]

 

‘নবজাগরণ’ অ্যান্ড্রোয়েড অ্যাপ্লিকেশনটি প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।

‘নবজাগরণ’ এর টেলিগ্রাম চ্যানেলে জয়েন হতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।

‘নবজাগরণ’ এর ফেসবুক পেজে লাইক করতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।

 

 

 

Post Views: 4,426
Tags: Aztec Civilizationআজটেক সভ্যতাআজটেক সভ্যতার ইতিহাসইতিহাসপ্রাচীন ইতিহাসপ্রাচীন সভ্যতার ইতিহাসবিশ্ব ইতিহাসসভ্যতার ইতিহাস
ADVERTISEMENT

Related Posts

রহস্য উদ্ঘাটন মূলক বিশ্বাস খ্রিস্টানদের ইজরাইল সমর্থনের বড় কারণ
ইসলাম

‘রহস্যউদ্ঘাটনমূলক’ বিশ্বাস আমেরিকান খ্রিস্টানদের ইহুদি ও ইজরাইল সমর্থনের বড় কারণ

লিখেছেনঃ মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম রহস্য উদ্ঘাটন পন্থী খ্রিস্টান মৌলবাদীরা ‘বাইবেল সংক্রান্ত কারণে’ আরও ব্যপকভাবে ফিলিস্তিন-ইজরাইল সংঘাত বৃদ্ধি পাচ্ছে। [Apocalypse...

by মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম
November 8, 2024
আফগান জিহাদ, তালেবানের উত্থান ও আমেরিকার আফগানিস্তান আক্রমণের যতকথা
বিশ্ব ইতিহাস

আফগান জিহাদ, তালেবানের উত্থান ও আমেরিকার আফগানিস্তানে আগ্রাসন

১৯৭৯ সালে ইরানে বিপ্লবের পর ইরান ও সৌদি আরবের স্নায়ুযুদ্ধ বা শীতল যুদ্ধ শুরু হয়। অন্যদিকে আমেরিকা ও সোভিয়েত...

by অতিথি লেখক
September 4, 2021
গুপ্তহত্যার মাধ্যমে মোসাদ যেসব বিখ্যাত ব্যক্তিদের খুন করেছিল
বিশ্ব ইতিহাস

গুপ্তহত্যার মাধ্যমে যেসব বিখ্যাত ব্যক্তিদের খুন করেছিল ইজরাইলের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদ

লিখেছেনঃ মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম মৌর্য সাম্রাজ্যের রাজ পরামর্শক কৌটিল্য বলেছিলেন, “প্রতিপক্ষকে ধ্বংস করে দাও, দরকার হলে গুপ্তহত্যা করেও।” কৌটিল্যের...

by মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম
May 19, 2021
মােসাদ
বিশ্ব ইতিহাস

মােসাদ : বিশ্বের সবচেয়ে বীভৎসতম ও ভয়ঙ্কর গােয়েন্দা সংস্থার ইতিকথা

একসময় অ্যাডলফ হিটলার বলেছেন, দুনীয়ায় যেকোনাে উল্লেখযােগ্য অপরাধকান্ডের পেছনে থাকে কোনাে কোনাে ইহুদীর হাত। হিটলার যখন একথা বলেন তখন...

by আবু রিদা
May 14, 2021

POPULAR POSTS

  • সুলতান মাহমুদ

    সুলতান মাহমুদের ভারত অভিযান ও সোমনাথ মন্দির প্রসঙ্গ (১ম পর্ব)

    181 shares
    Share 181 Tweet 0
  • বাউরী সম্প্রদায়ের উৎপত্তির ইতিহাস ও ঐতিহাসিক পর্যালোচনা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • আর্যদের ভারত আগমন, বিস্তার, সমাজ ও সভ্যতা: এক ঐতিহাসিক পর্যবেক্ষণ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে বৌদি কাদম্বরী দেবীর সম্পর্ক আদৌ কি প্রেমের ছিল?

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • হিন্দু পদবীর উৎপত্তির ইতিহাস, বিবর্তন ও ক্রমবিকাশঃ বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

Facebook Page

নবজাগরণ

ADVERTISEMENT
নবজাগরণ

'Nobojagaran' is a website of its kind where you can gather knowledge on all the unknown facts of the world. We human beings always have a thirst for knowledge. Nobojagaran takes its first steps to quench this thirst of ours. We are now in the era of digital world, where we get almost anything online. So how about a bit of knowlyfrom online?

Connect With Us

No Result
View All Result

Categories

  • English (9)
  • অন্যান্য (11)
  • ইসলাম (27)
  • ইসলামিক ইতিহাস (23)
  • ইহুদী (2)
  • কবিতা (37)
  • খ্রিস্টান (6)
  • ছোটগল্প (6)
  • নাস্তিকতা (18)
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (24)
  • বিশ্ব ইতিহাস (24)
  • ভারতবর্ষের ইতিহাস (195)
  • রাজনীতি (38)
  • সাহিত্য আলোচনা (68)
  • সিনেমা (17)
  • হিন্দু (16)

Pages

  • Cart
  • Checkout
  • Checkout
    • Confirmation
    • Order History
    • Receipt
    • Transaction Failed
  • Contact
  • Donation to Nobojagaran
  • Homepage
  • Order Confirmation
  • Order Failed
  • Privacy Policy
  • Purchases
  • Services
  • লেখা পাঠানোর নিয়ম
  • হোম
No Result
View All Result
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi

©Nobojagaran 2020 | Designed & Developed with ❤️ by Adozeal

Login to your account below

Forgotten Password?

Fill the forms bellow to register

All fields are required. Log In

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In
Don't have an account yet? Register Now
1
Powered by Joinchat
Hi, how can I help you?
Open chat
wpDiscuz
0
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x
| Reply