• মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
Friday, May 9, 2025
নবজাগরণ
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ
No Result
View All Result

আহলে হাদীস নয় এরা শিয়া – রাফেজী – খারেজী সম্প্রদায়

মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম by মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম
September 16, 2020
in ইসলাম
0
আহলে হাদিস

Image Source: nytimes

Share on FacebookShare on Twitter

লিখেছেনঃ মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম

আহলে হাদীস দলের প্রথম প্রতিষ্ঠাতা হলেন আব্দুল হক বেনারসী। আব্দুল হক বেনারসী উত্তর প্রদেশের বেনারস এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তিনি ভারতবর্ষের উলামা ছাড়াও ইয়ামেন থেকে যায়দিয়াহ শিয়া আলেম ইমাম শাওকানীর কাছ থেকে হাদিসের জ্ঞান অর্জন করেন। ইমাম শাওকানীর যায়দিয়াহ শিয়া হওয়ার প্রমাণ ‘তফসীর ফতহুল কাদীর’ এর মুকাদ্দামায় (ভূমিকা) বিদ্যমান আছে।

মুকাদ্দামা রচয়িতা লিখেছেন, “তিনি (ইমাম শাওকানী) ইমাম যায়দিয়ার (শিয়া) মজহাব অনুযায়ী ফিকাহর জ্ঞান অর্জন করেন। এমনকি তিনি তাতে পুরােপুরি ব্যুৎপত্তি অর্জন করেন। এরপর তিনি সেই মত (শিয়া) অনুযায়ী ফতওয়া দিতেন। এমনকি ইমাম শওকানী শিয়াদের অনুসারীও হয়ে যান। এবং হাদীসের জ্ঞান অর্জনের জন্য নিজের দেশ (ইয়ামেন) ত্যাগ করেন। এই পর্যন্ত তিনি নিজের গলা থেকে তাকলীদের বন্ধন খুলে ফেলে দেন। এবং নিজেকে মুজতাহীদ হওয়ার দাবীও করেন।” (ফতহুল কাদীর, পৃষ্ঠা – ৫)

এই হল ইমাম শাওকানীর যায়দিয়াহ শিয়া হওয়ার প্রকাশ্য প্রমাণ। আর আহলে হাদীস আলেম আব্দুল হক বেনারসীর ইমাম শাওকানীর শিষ্য হওয়ার প্রমাণ ঐ কিতাবের মধ্যেই বিদ্যমান রয়েছে।

মুকাদ্দামা রচয়িতা লিখেছেন, “তার (ইমাম শাওকানীর) কাছ থেকে জ্ঞান অর্জন কারীদের মধ্যে আল্লামা শায়খ আব্দুল হক বিন ফজলে হিন্দীও ছিলেন।” (মুকাদ্দামা ফতহুল কাদীর, মিশরী, পৃষ্ঠা – ৫)।

এই আব্দুল হক বিন ফজলে হিন্দীই হলেন আব্দুল হক বেনারসী। এই আব্দুল হক বেনারসীর আহলে হাদীস ও শিয়া হওয়া সম্পর্কে মাওলানা আব্দুল খালেক সাহেবের বক্তব্য শুনুন যিনি আহলে হাদীসদের শায়খুল কুল ফিল কুল মিয়াঁ নাযির হােসেন দেহলবী সাহেবের উস্তাদ ছিলেন। তিনি তার কিতাব ‘তাম্বিহুদ্বাল্লীন’ এর মধ্যে লিখেছেন, “আহলে হাদীস দলের দ্বিতীয় রূপকার আব্দুল হক বেনারসী। তিনি কিছুদিন থেকে বেনারসে রয়েছেন। ওহাবী দলের দ্বিতীয় নাম হল ‘মুহাম্মদী’। ওহাবী দলের উপর যখন ইংরেজদের কড়া নজর পড়ে, ধর-পাকড় শুরু হয় তখন সৈয়দ আহমদ শহীদ বেরেলবী (রহঃ) জেহাদী দলের বিরােধিতা করার জন্য মওলানা আব্দুল হক বেনারসীকে দল থেকে বিতাড়িত করেন। তিনি মক্কা শরীফ গিয়ে আশ্রয় নেন, কিন্তু তার জেহাদ বিরােধী আকিদা জানতে পেরে মক্কা মদীনার উলামাগণ তার হত্যার আদেশ ঘােষণা করেন। সেখান থেকে কোনােরূপে পলায়ন করে বেনারসে আশ্রয় নেন। তাঁর অধিকাংশ মতবাদ রাফেযীদের সাথে সাদৃশ্যতা ছিল। তিনি নিজেকে খলিফা ও আমিরুল মােমেনীন বলে ঘােষণা করেন।” (তম্বিহুদ্বাল্লীন, পৃষ্ঠা – ২)।

তিনি আরও লিখেছেন, “আব্দুল হক বেনারসী যিনি আহলে হাদীস তথা গায়ের মুকাল্লিদ ফিরকার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন, তিনি জীবনের মধ্যবর্তী সময়ের রাফেযী (শিয়া) হয়ে গিয়েছিলেন।” (তম্বিহুদ্বাল্লীন)

বিখ্যাত আহলে হাদীস আলেম ও লেখক নবাব সিদ্দিক হাসান খান ভূপালী লিখেছেন, “আব্দুল হক বেনারসী জীবনের মধ্যবর্তী সময়ে আকায়েদ ও দৃষ্টিভঙ্গিতে শিয়াদের প্রতি প্রভাবিত হওয়া বহুলভাবে প্রচারিত হয়েছিল।” (সালাসাতুল আসজিদ)

নবাব সিদ্দিক হাসান খান ভূপাল আব্দুল হক বেনারসীর ছাত্র ছিলেন। তিনি যখন ১২৮৫ সনে মক্কা শরীফ হজব্রত পালন করতে গিয়েছিলেন তখন আব্দুল হক বেনারসীর নিকট ও এজাজত প্রাপ্ত হয়েছিলেন।

আব্দুল হক বেনারসীর শিয়া হওয়ার খােলাখুলি ঘােষণা।

কারী আব্দুর রহমান মুহাদ্দিস পানিপতী লিখেছেন, “কিছুদিন পর মৌলবী আব্দুল হক বেনারসী মৌলবী গুলশান আলীর কাছে গেলেন। রাজা দিওয়ান বেনারসের শিয়া মতাবলম্বী ছিলেন। তিনি (আব্দুল হক বেনারসী) বললেন, “আমি শিয়া এবং আমি এখন থেকে প্রকাশ্যভাবে শিয়া মতবাদ গ্রহণ করলাম। এবং আমি হাদিসের প্রতি আমল করার নামে হাজার হাজার আহলে সুন্নতের মুসলমানদেরকে মাজহাবের বন্ধন থেকে বের করে দিয়েছি। তাদেরকে শিয়া করে দেওয়া খুবই সহজ। অতঃপর মৌলবী গুলশান আলী তাঁকে মাসিক ৩০ টাকার বেতনের চাকরী পাইয়ে দেন।” (কাশফুল হিজাব, পৃষ্ঠা – ১২)

প্রিয় পাঠক লক্ষ্য করুন আহলে হাদীসদের শিয়া হবার মৌখিক শিকার প্রমাণ হয়ে গেল। কেননা এই দলের প্রতিষ্ঠাতা মৌলবী আব্দুল হক বেনারসী প্রকাশ্যভাবে শিয়া হয়ে গিয়েছিলেন আর যে দলের প্রতিষ্ঠাতা সামান্য চাকরির জন্য শিয়া হয়ে যায়, সেই দল আহলে সুন্নত কিভাবে হতে পারে? আর তারা যে নিজেদেরকে আহলে হাদীস বলে দাবী করে তা হল এক ধরণের তাকিয়া। আর এই তাকিয়া হল রাফেযীদের (শিয়া) আকিদা।

মিয়া নাযির হােসেন দেহলবীর উস্তাদের বক্তব্য শুনুন।

আহলে হাদিসদের মহামান্য শায়খুল কুল ফিল কুল মিয়া নাযির হােসেন দেহলবীর উস্তাদ আব্দুল খালেক সাহেব লিখেছেন : “এই গায়ের মুকাল্লিদীনদের মতবাদ অধিকাংশ ব্যাপারে রাফেযীদের (শিয়া) মতবাদের সঙ্গে সাদৃশ্য পাওয়া যায়। যখন রাফেযীরা প্রথমে রাফেয়ে ইয়াদাইন এবং আমিন বিল জেহর (জোরে আমিন বলা) এবং ইমামের পিছনে সুরা ফাহেতা পাঠ সংক্রান্ত মাসআলায় ইমাম শাফেয়ী (রহঃ)-এর মজহাব থেকে প্রমাণ এবং গুরুত্ব দিত এবং জনগণকে খাস করে হানাফীদেরকে সন্দেহে ফেলত।” (তাম্বীহুল গাফেলীন, পৃষ্ঠা – ৫)।

এদিকে দেখা যায় আহলে হাদীসরাও ইমাম শাফেয়ী (রহঃ) এর মজহাবের দলীল দিয়ে সাধারণ হানাফী মুসলমানদেরকে গুমরাহ করে যা শিয়া অর্থাৎ রাফেযীদের নীতি।

আহলে হাদীসদের মহামান্য আলেম নবাব সিদ্দিক হাসান খান ভূপালী লিখেছেন, “যারা আয়েম্মায়ে উলামায়ে আখিরাত রয়েছেন, যে ব্যক্তি তাঁদের গীবত করে তাঁদের প্রতি অভিসম্পাত করে এটা রাফেযীদের নীতি এটা আহলে সুন্নতে ওয়াল জামাআতের নীতি নয়।” (মা’শিরে সিদ্দিকী, খণ্ড – ৪, পৃষ্ঠা – ২৩)।

অপরদিকে দেখা যায় আহলে হাদীসরা আয়েম্মায়ে কেরামদিগকে গালিগালাজ করে। হযরত আমিরুল মােমেনীন সৈয়দ আহমদ শহীদ বেরলবী (রহঃ) এর দলবলে এটা প্রচলিত ছিল যে আহলে হাদীস তথা গায়ের মুকাল্লিদরা হল ছােট রাফেযী। (কেসাসে আকাবির, পৃষ্ঠা – ২৬)

এটা অবশ্যই স্মরণ থাকে যে গায়ের মুকাল্লিদীন দলের মুখপত্র মৌলবী আব্দুল হক বেনারসী সৈয়দ আহমদ শহীদ বেরলবী (রহঃ)-এর কাফেলায় রফয়ে ইয়াদাইন, জোরে আমিন বলা নিয়ে ফিত্না সৃষ্টি করেছিল যার কারণে সৈয়দ আহমদ (রহঃ) তাঁকে দল থেকে বের করে দেন। এবং এটাও স্মরণ থাকে যে সেই যুগে ভারতবর্ষে রফয়ে ইয়াদাইন আমিল বিল জেহের শিয়াদের মধ্যে প্রচলিত ছিল। আর বাকী রইল শাফেয়ী অথবা হাম্বলী মজহাবের। তখন ভারতবর্ষে এই মজহাবের কোন অস্তিত্ব ছিল না এবং এখনও নেই। এবং তখন হারামাইন শরীফে হানাফীদের রাজত্ব ছিল সেই সময় যদি হাম্বলী-শাফেয়ী ছিলেন তখন তারা একা ছিলেন। তখন সেখানে ব্যাপক আকারে জামায়াতী ভাবে রফয়ে ইয়াদাইন হত না। তাই আব্দুল হক বেনারসীর এইসব মাসআলাগুলাে ভারতবর্ষে ব্যাপকহারে প্রচার করা ছিল শিয়া মজহাব প্রচার করত যদিও সে হাদিসের নামে এইসব করত কিন্তু সে কাজ রাফেযী অর্থাৎ শিয়াদের হয়ে কাজ করত।

মিয়া নাযির হােসেন দেহলবীর ফতওয়া।

মিয়া নাযির হােসেন দেহলবী বলেছেন, “যারা আয়েম্মায়ে দ্বীনের বেআদবী করে তারা ছােট রাফেযী অর্থাৎ শিয়া”। )তারিখ আহলে হাদীস, পৃষ্ঠা – ৭৩, মাওলানা ইবরাহীম শিয়ালকোটী)

এদিকে দেখা যায় গায়ের মুকাল্লিদদের জীবনের ব্রত হল আয়েম্মায়ে দ্বীনের বেআদবী করা।

শিয়াদের নিকট সাহায্য গ্রহণ

মিয়া নাযির হােসেন দেহলবী হযরত ইমাম আযম আবু হানীফা (রহঃ)কে বদনাম করার জন্য শিয়াদের কাছ থেকে সাহায্য নিয়েছিলেন। কারী আব্দুর রহমান মুহাদ্দিস পানিপতী লিখেছেন, “নাযির হােসেন দেহলবী সাহেব শিয়া সৈয়দ মুহাম্মাদ মুজতাহীদ থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন আবু হানিফা (রহঃ) কে বদনাম করার জন্য।” (হাশিয়া কাশফুল হিজাব, পৃষ্ঠা – ৯)

প্রত্যেক মানুষ বিরােধী দলের মুকাবিলা করার জন্য নিজের জামাআতের লােকের কাছে না সাহায্য নেয়, কিন্তু মিয়া নাযির হােসেন দেহলবী সাহেব ইমাম আবু হানীফার বিরােধীতা করার জন্য শিয়াদের কাছ থেকে সাহায্য নিয়েছিলেন। এর দ্বারা বুঝা যায় আহলে হাদীসরা শিয়াদেরকে ঐ নিজেদের দলের লােক বলেই মনে করেন। অর্থাৎ আহলে হাদীসদের শিয়া হওয়া সম্পর্কে কোনাে সন্দেহের অবকাশ নেই।

আমি এর আগে প্রমাণ করেছি ইমাম শাওকানী যায়দিয়াহ শিয়া ছিলেন এবং তাঁর ছাত্র ছিলেন আহলে হাদীস দলের আদি পিতা মৌলবী আব্দুল হক বেনারসী। আর যায়দিয়াহ শিয়া সম্পর্কে ফতওয়া আলমগীরীতে লেখা আছে, “সমস্ত যায়দিয়াহ শিয়াদেরকে কাফির বলা ওয়াজীব। তাদের কথা অনুযায়ী আরবের বাহির দেশ থেকে একজন নবী হবেন যিনি আমাদের নবী সাইয়েদেনা হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) -এর ও শরীয়াত মনসুখ করে দেবেন।” (ফতওয়া আলমগিরী, ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা – ২৭৩)।

যেহেতু আহলে হাদীস দলটি হল যায়দিয়াহ শিয়া দলের অন্তর্ভুক্ত সেজন্য তাদেরও আকিদা হল অনারব থেকে একজন নবী হবেন যিনি আমাদের নবী সাইয়েদেনা হয়রত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর শরীয়াতকে মনসুখ (রহিত) করে দেবেন। (নাউযুবিল্লাহ মিন জালেক)।

এজন্যই গায়ের মুকাল্লিদ মৌলবী মীর্জা গােলাম আহমদ কাদীয়ানী নিজেকে নবুওতের দাবী করেছেন এবং নবী মুহাম্মদ (সাঃ)-এর শরিয়তকে মনসুখ করার চেষ্টা করেছেন।

গায়ের মুকাল্লিদ ফিরকা কিয়ামতের একটি আলামত

হাদিস শরীফে আছে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেছেন আল্লাহর কসম আমি রসূলুল্লাহ (সাঃ)কে বলতে শুনেছি যে কিয়ামতের আগে দাজ্জাল আসবে এবং দাজ্জাল এর আগে ত্রিশজন বা তার থেকেও বেশী কজ্জাব (মিথ্যাবাদী) আসবে। আমরা আরয করলাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ (সাঃ) তাদের নিদর্শন কি হবে? তিনি বললেন, তারা তােমাদের মধ্যে এমন এমন নিয়ম কানুন নিয়ে আসবে যা তােমাদের মধ্যে প্রচলিত থাকবে না যার দ্বারা মিল্লাতের এবং দ্বীনকে পরিবর্তন করার চেষ্টা করবে। বাস তােমরা তাদের থেকে বেঁচে থাকবে এবং তাদের সঙ্গে পুরােপুরিভাবে দুশমনী করবে।” (তাবারানী)

প্রিয় পাঠক লক্ষ করুন, যে রফয়ে ইয়াদাইন, জোরে আমীন বলা, ইমামের পিছনে সূরা ফাতেহা পাঠ প্রভৃতি মাসআলাগুলি হানাফীদেরকে আমল করতে বলে তা আমাদের মাঝে প্রচলিত নয়। আর রসুলুল্লাহ (সাঃ)-এর কথা অনুযায়ী যে ব্যক্তি অপ্রচলিত হাদিসসমূহ এবং অপ্রচলতি সুন্নত সমূহের প্রতি আমল করার জন্য দাওয়াত দেবে তাদেরকে দাজ্জাল, কাজ্জাব মনে করা উচিৎ এবং তাদের থেকে বেঁচে থাকা উচিৎ এবং তাদের সঙ্গে দুশমনী করা উচিৎ। হাদীস শরীফে আরও বর্ণিত আছে, আমিরুল মােমেনীন হযরত আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে রসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন যে যখন আমার উম্মতের মধ্যে চোদ্দটি ত্রুটি তৈরী হবে তা যেন তাদের উপর মুসিবত অবতীর্ণ হওয়া শুরু হয়ে যাবে। তাদের মধ্যে চৌদ্দতম ত্রুটি হল এই উম্মতের পরবর্তী যুগের লােকেরা আগের যুগের লােকেদেরকে অভিসম্পাত করবে। (তিরমিযী শরীফ, খণ্ড – ২, পৃষ্ঠা -৪৪)।

আর এদিকে দেখা যায় গায়ের মুকাল্লিদ দলের লােকেরা আগেকার যুগের বুযর্গদেরকে অভিসম্পাত করে। এরা সাহাবাদেরকে গালিগালাজ করে এবং আয়েম্মায়ে কেরামদিগকে গালিগালাজ করে। যেমন আহলে হাদীস দলের মিরাজ রাব্বানী ‘সূফী আওর শয়তান’ নামক ক্যাসেটে ইমাম গাজ্জালী (রহঃ) ও খাজা মইনুদ্দীন চিসতী (রহঃ) সহ সারা পৃথিবীর সমস্ত আওলিয়াদের নাম ধরে কাফের ও জিন্দীক বলে ফতােয়া দিয়েছে। এর থেকে বুযুর্গানে দ্বীনদের প্রতি অভিসম্পাত আর কি হতে পারে?

আহলে হাদীসরা সাহাবায়ে কেরামগণকে শিয়াদের মত ফাসেক মােরতাদ বলে

বসুলুল্লাহ (সাঃ)-এর সাহাবাদের গালমন্দ করা ও তাদের কাফের বলাই হল শিয়াদের নীতি। যেমন আল কুলাইনি ‘ফুরু আল-কাফী’ কিতাবে জাফরের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন : “রসুলুল্লাহ (সাঃ)-এর মৃত্যুর পর তিন ব্যক্তি ব্যাতীত সমস্ত মানুষ মুরতাদ ছিলেন। আমি বললাম ঐ তিনজন কারা? তিনি জবাবে বললেন, মিকদাদ ইবনুল আসওয়াদ, আবু যর গিফারী ও সালমান ফারসী।”

আল মাজলেসী ‘বেহারুল আনওয়ার’ গ্রন্থে উল্লেখ করেন যে, আলী ইবনে হুসাইনের গােলাম বলেন, “আমি একদা একাকি অবস্থায় তাঁর সাথে ছিলাম, অতঃপর আমি তাকে বললাম, নিশ্চয় আপনার প্রতি আমার অধিকার রয়েছে, আপনি কি আমাকে দুই ব্যক্তি তথা আবু বকর ও ওমর সম্পর্কে বলবেন? তিনি বলেন, তারা দুজনেই কাফের এবং যারা তাদেরকে ভালবাসে তারাও কাফের।”

অপরদিকে আহলে হাদীস দলের লােকেরাও সাহাবাদেরকে ফাসেক ও মুরতাদ বলে ফতওয়া দেয়। আহলে হাদীস দলের আদি পিতা আব্দুল হক বেনারসী লিখেছিলেন, “হযরত আলী সে জঙ্গ করকে হযরত আয়েশা (রাঃ) মুরতাদ হাে চুকি থী অগর বিলা তওবা মরী তাে কুফর পর মরী।” অর্থাৎ হযরত আলী (রাঃ) সঙ্গে যুদ্ধ করে হযরত আয়েশা (রাঃ) মােরতাদ হয়ে গিয়েছিলেন। যদি তওবা না করে মারা যান তাহলে কাফের হয়ে মারা গেছেন।” (কাশকুল হিজাব, পৃষ্ঠা – ২১)

নিচে স্ক্রীন শট দেখুনঃ

কাশকুল হিজাব
চিত্রঃ কাশকুল হিজাব, Image Source: Google Image

এই আব্দুল হক বেনারসী আরও লিখেছেন, “সাহাবারা পাঁচ পাঁচটি হাদীস জানতেন আর আমরা সাহাবাদের হাদীস মুখস্থ করেছি, সাহাবাদের থেকে আমাদের বিদ্যা বেশি।” (কাশফুল, 2 – 13)

আহলে হাদীস দলের বিখ্যাত আলেম ওয়াহীদুজ্জামান হায়দ্রাবাদী লিখেছেন, “অনেক সাহাবা কাফের ছিলেন।” (নজলুল আরবার, তৃতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা – ৯৪)

আহলে হাদীস দলের আলেম নবাব সিদ্দিক হাসান খান ভূপালী লিখেছেন, “সাহাবাদের তফসীর গ্রহণযোগ্য নয়।”

এরকম ধরণের বহু গালিগালাজ আহলে হাদীস উলামাগণ সাহাবাদেরকে বলেছেন। বিস্তারিত জানতে পড়ুন মৎপ্রণীত ‘ওয়াজহুন জদীদ লি মুনকিরিত তাকলীদ’ অর্থাৎ ‘আহলে হাদীস ফিত্নার নতুন রূপ’।

সাহাবায়ে কেরাম সম্পর্কে শিয়া অর্থাৎ রাফেযীরা যে আকিদা পােষণ করে বর্তমান যুগের ছােট শিয়া অর্থাৎ ছােট রাফেযী আহলে হাদীসরাও সেই আকিদা পােষণ করে। সুতরাং এর দ্বারা প্রমাণিত হয় আহলে হাদীসরা শিয়া।

ওয়াহীদুজ্জামান সাহেবের স্বীকারােক্তি

আহলে হাদীসদের বিখ্যাত আলেম ওয়াহীদুজ্জামান হায়দারাবাদী সাহেব সহীহ বুখারী শরীফের তরজমায় ১ম খণ্ডের ১৯৩ পৃষ্ঠায় সুরা হিজর-এর ব্যাখ্যায় লিখেছেন, “আমরা হলাম হযরত আলী (রাঃ)-এর অনুসারী শিয়া অর্থাৎ আলী (রাঃ) এবং তাঁর বন্ধুগণ এবং তাঁকে যারা ভালবাসবে। হে আল্লাহ কিয়ামতের দিন হযরত আলী (রাঃ)-এর শিয়াদের সঙ্গে আমাদের হাশর কর এবং সারাজীবন হযরত আলী (রাঃ) এবং সমস্ত আহলে বায়েতের প্রতি মুহাব্বত কায়েম কর।”

তিনি আরও লিখেছেন, “আহলে হাদিসরা শিয়ানে আলী অর্থাৎ আলী (রাঃ) অনুসারী শিয়া”। (নজলুল আবরার, খণ্ড – ১, পৃষ্ঠা – ৭)

প্রিয় পাঠক লক্ষ্য করুন, আহলে হাদীস আলেম ওয়াহীদুজ্জামান হায়দরাবাদী সাহেব স্বয়ং নিজেদেরকে শিয়া বলে স্বীকার করেছেন। সুতরাং তাদের শিয়া ও রাফেযী হওয়া সম্পর্কে কোন ও সন্দেহের অবকাশ নেই।

আহলে হাদীসরা শিয়াদের মত মুতা বিবাহকে জায়েজ বলে

আহলে হাদীসরা শিয়াদের মত মুতা বিবাহকে জায়েজ বলে মনে করে। শিয়াদের মজহাবে মুতা হল অতীব পুন্যের কাজ। মুতা হল এক ধরনের সাময়িক বিবাহ। সাময়িক কিছু টাকার ও বিনিময়ে নারীকে স্ত্রীরূপে গ্রহণ এবং উপভােগের পর বর্জন। শিয়া বা রাফেযীদের মতে মতার (Contract Marriage)-এর মধ্যে অনেক বড় ফজিলত রয়েছে। শিয়াদের কিতাব মুল্লা ফাতহুলাহু আল কাশানীর ‘তাফসীর মিনহাজুস সাদেকীন’ গ্রন্থে লেখা আছে, নবী (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি একবার মুতা বিবাহ করবে সে মহান আল্লাহর অসন্তোষ থেকে নিরাপদ থাকবে, যে দুইবার মুতা বিবাহ করবে তাকে নেককার পূন্যবানদের সাথে হাশর করানাে হবে আর যে ব্যক্তি তিনবার মুতা বিবাহ করবে সে জান্নাতে আমার সাথে থাকবে।”

শিয়ারা মুতায় সংখ্যার কোনাে শর্ত আরােপ করে না। শিয়াদের ‘আত-তুকইয়া ফী ফিকহে আহলিল বায়ত’ গ্রন্থে আছে, তিনি আবু আব্দুল্লাহ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি তাকে মুতা বিবাহের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করি যে, মুতা বিবাহ কি চারটি? তিনি বলেন, তুমি একহাজার মুতা বিবাহ কর কেননা এরা তাে ভাড়াটিয়া। (অর্থাৎ তােমার সাধ্যনুযায়ী যত পারাে ভাড়া নাও।)

মুহাম্মদ বিন মুসলিম আবু জাফর হতে বর্ণনা করেন, তিনি মুতা’র ব্যাপারে বলেন এর সংখ্যা শুধু চারই নয়, কারণ মুতা বিবাহে তালাক নেই এবং সে উত্তরাধিকারীও হয় না এরা তাে দু শুধুমাত্র ভাড়ায় খাটে।

বর্তমান যুগের শিয়াদের অন্যতম বড় আলেম ইমাম খােমেইনী লিখেছেন, “সাধারণ বারবণিতা (বেশ্যা)-র সঙ্গেও মুতা জায়েয তিনি আরেও লিখেছেন, “মুতার জন্য কোনাে সময়সীমা নাই এক রাত্রি বা একদিন এমনকি দুই-এক ঘন্টারও জন্য এই মুতা বিবাহ চলতে পারে।” (তাহরীরুল আসিলা, খণ্ড – ২, পৃষ্ঠা – ২৯০)

শিয়াদের মত আহলে হাদীস উলামারাও মুতা বিবাহকে জায়েজ বলে ফতােয়া দিয়েছেন। আহলে হাদীস দলের বিখ্যাত আলেম ওয়াহীদুজ্জামান হায়দারাবাদী লিখেছেন, “মুতা কুরআন শরীফের অকাট্য আয়াত দ্বারা প্রমাণিত।” (নজলুল আবরার, ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা – ৩৩-৩৪)।

তিনি আরও লিখেছেন, “এবং ঠিক সেরকম আমাদের কিছু সাথী মুতা বিবাহকে জায়েয বলেছেন যদিও তা শারীয়াতে প্রমাণিত এবং জায়েয ছিল। যেমন আল্লাহ তাবারক তাআলা নিজের কিতাবে তার বর্ণনা এরকম করেছেন যে, তাদের মধ্যে তােমরা যার সঙ্গে চাও মুতা কর তাহলে তার পারিশ্রমিক দিয়ে দাও।” (নজলুল আবরার, খণ্ড – ২, পৃষ্ঠা – ৩৩)

এই মুতা বিবাহকে আহলে হাদীসদের মহামান্য আল্লামা ওয়াহীদুজ্জামান সাহেব তার ‘হাদিয়াতুল মাহদী’ কিতাবে ১১২ পৃষ্ঠায় জায়েজ বলেছেন।

আমরা জানি বর্তমানে যুগে আহলে হাদীসদের সংখ্যা খুবই কম যেজন্য তাদের আল্লামা ওয়াহীদুজ্জামান সাহেবের ফতওয়ার উপর আমল করে হাজার হাজার রমণীর সঙ্গে মুতা বিবাহ করে তাদের জনসংখ্যা বাড়ানাে উচিৎ যাতে তারা আমাদের সঙ্গে ভালভাবে পাল্লা দিতে পারে।

একটি জরুরী উপদেশ

আহলে হাদীস ঘরের লম্পট চরিত্রহীন যুবকদের একটি জরুরী উপদেশ দিচ্ছি শুনুন, আপনাদের মধ্যে যাঁদের পতিতালয়ে (বেশ্যাখানায় যাওয়ার কু-অভ্যাস আছে আপনাদের আর চিন্তা করার কোনাে কারণ নেই আপনারা এক কাজ করুন আপনারা যখন পতিতালয়ে যাবেন তখন সেখানকার মহিলাদের সঙ্গে দুই বা এক ঘন্টার জন্য মুতা বিবাহের চুক্তি করে নেবেন যেটা আপনাদের মজহাবে জায়েজ ও সওয়াবপূর্ণ। তাহলে আপনাদের মৌলবী মােল্লারা কোনাে বিরােধিতা করবেন না এবং আপনারা আপনাদের মাজহাব মুতাবিক আর চরিত্রহীন লম্পট বলে চিহ্নিত হবেন না।।

আসল রহস্য বুঝতে পেরেছি

এবার আমরা আসল রহস্য বুঝতে পেরে গেছি। বর্তমান যুগে যেসব কলেজ পড়ুয়া হানাফী ঘরের ছেলেরা আহলে হাদিস হয়ে যাচ্ছে তারা নিশ্চয় মুতা বিবাহ করার লােভেই আহলে হাদিস হচ্ছে। কারণ মুতা বিবাহ অত্যন্ত লােভনীয় জিনিস। হানাফী হয়ে থাকলে তাে সারাজীবন এক সঙ্গে চারজন ছাড়া বেশী রমণীর স্বাদ গ্রহণ করতে পারবে না আর আহলে হাদীস মজহাব গ্রহণ করলে সারাজীবনে কয়েক লক্ষ রমণীর সঙ্গে মুতা বিবাহ করে জীবনটাকে ভালভাবে উপভােগ করতে পারবে।

আর আমরা এও বুঝতে পেরে গেছি, বর্তমান যুগের যেসব আহলে হাদীস মুবাল্লিগগণ আহলে হাদীস মাজহাব প্রচার করছেন তারা নিশ্চয় নিজের পরিবারের মা, বােন, স্ত্রী, মেয়েদের সঙ্গে মুতা করিয়ে লােভ দেখিয়ে আহলে হাদীস মজহাব গ্রহণ করাচ্ছেন। কারণ মুতা তাে আহলে হাদীস মজহাবে জায়েজ ও সওয়াবের কাজ আর সওয়াব থেকে তাদের মা, বােন, স্ত্রী, মেয়েরা কেন বঞ্চিত থাকবে?

সত্যই আহলে হাদীস মজহাব বড়ই বিচিত্র। এদের মাজহাবে সবকিছু জায়েজ। এদের কাছে নাজায়েজ বলে কিছু নেই। কেবল মাজহাব মানাটাই নাজায়েজ।

ওয়াহীদুজ্জামান সাহেবের শিয়া হবার আর একটি প্রমাণ

আল্লামা ওয়াহীদুজ্জামান সাহেব লিখেছেন, “অর্থাৎ মৃত মুজতাহীদদের তাকলীদ জায়েজ নয় এবং কিছু লােক এর উপর ইজমা নকল করেছেন এবং এও বলেছেন যে এটা জায়েজ। ইবনে কায়্যিম (রহঃ) এটাকেই গুরুত্ব দিয়েছেন। কারণ রেওয়ায়েত তাে মরে না এবং সালাফে সালেহীনরা যে বর্ণনা সাহাবা তাবেয়ীনদের তকলীদ করেছেন তার জায়েজ হওয়ার উপর দালালত করে। এবং ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেছেন, কেউ যদি অনুসরণ করতে চায় তাহলে তার উচিৎ মৃতদের অনুসরণ করা। এই ব্যাপারে মুকাল্লিদীনরা আমাদের বিরােধী এবং ইমামিয়া ফিরকা (শিয়া) আমাদের সঙ্গে।” (হাদিয়াতুল মাহদী, খণ্ড – ১, B পৃষ্ঠা – ১১২)

পাঠকগণ লক্ষ্য করুন তাকলীদের হারাম হওয়ার ব্যাপারে ওয়াহীদুজ্জামান সাহেব শিয়াদের নিজেদের বলে উল্লেখ করেছেন। সুতরাং এর দ্বারা প্রমাণ হয় আহলে হাদীস ও শিয়ারা একই সম্প্রদায়ভুক্ত।

আহলে হাদীস ও শিয়াদের মাসআলার সাদৃশ্য

শিয়া ও আহলে হাদীস উলামাদের মধ্যে বহু সাদৃশ্য রয়েছে। সম্প্রদায় মাসআলা মাসায়েল একই যেমন,

১) শিয়ারা পায়ের উপর মাসাহ করাকে জায়েজ বলে। অপরদিকে আহলে হাদীসরাও পায়ের উপর মাসাহ করাকে জায়েজ বলে। যেমন আহলে হাদীসদের মহামান্য আল্লামা ওহীদুজ্জামান হায়দারাবাদী সাহেব লিখেছেন, “শায়খ ইবনে আরাবী (রহঃ) পায়ের উপর মাসাহ করাকে জায়েজ হওয়া নকল করেছেন এবং হযরত ইকরিমা (রাঃ)ও নকল করেছেন এবং আমি যায়দিয়াহ ও ইমামিয়া শিয়াদের গ্রন্থে আয়েম্মায়ে আহলে বায়েতের মুতাওয়াতির বর্ণনায় পেয়েছি সেখানে পায়ের উপর মাসাহ করা জায়েজ প্রমাণিত হয়।” (নজলুল আবরার, খণ্ড – ১, পৃষ্ঠা – ১৩)

সুতরাং এখানে আল্লামা ওয়াহীদুজ্জামান সাহেব স্বয়ং স্বীকার করছেন যে তিনি যায়দিয়াহ ও ইমামিয়াহ শিয়াদের কাছ থেকে পায়ের উপর মাসাহ করার মাসআলা নিয়েছেন। এর দ্বারা বােঝা যায় আহলে হাদীস ও শিয়ারা একই সম্প্রদায়ভুক্ত।

২) শিয়ারা আজানে ‘হাইয়া আলাল ফালা’র পর ‘হাইয়া আলি খাইরুল আমাল’ বলে। আহলে হাদীসদের মহামন্য ওয়াহীদুজ্জামান সাহেব এটাকে জায়েজ বলেছেন। তিনি লিখেছেন, “এতে কোন অসুবিধা নেই যদি ‘হাইয়া আলাল ফালা’র পর ‘হাইয়া আলী খাইরুল আমাল’ বলা হয়।” (নজলুল আরবার, খণ্ড – ২, পৃঃ- ৬৯)।

সুতরাং শিয়াদের আজান ও আহলে হাদীসদের আজানের সাদৃশ্য দেখে বােঝা যায় তারা শিয়া সম্প্রদায়ভুক্ত।

অনেকে হয়তাে মনে করতে পারেন বর্তমানে তাে আহলে হাদীসরা শিয়াদের মতাে আজান দেয় না। এর উত্তর একটাই, এটা হল আহলে হাদীসদের তাকিয়াবাজী। যা শিয়াদেরই একটি জঘন্য আকিদা। তারা শিয়াদের মতাে আজান না দিলে কি হবে, তাদের আল্লামা ওয়াহীদুজ্জামান সাহেব তাে জায়েজ বলে ফতােয়া দিয়েছেন।

৩) শিয়ারা লিখেছে, “হযরত আবু জাফর (আঃ) থেকে বর্ণিত আছে যদি কোনাে ব্যক্তি ও নিজের শ্বাশুড়ি অথবা তার আগের স্বামীর দরুন কন্যা অথবা নিজের শালীর সঙ্গে ব্যাভিচার করে তাহলে তার স্ত্রী তার জন্য হারাম হবে না।” (ফুরু কাফী, খণ্ড – ২, পৃষ্ঠা স্থ ১৭৪।

অপরদিকে আহলে হাদীস আলেম আল্লামা ওয়াহীদুজ্জামান হায়দারাবাদীও লিখেছেন, “যদি কেউ এমনিতেই নিজের স্ত্রীর মায়ের সঙ্গে সহবাস করে তাহলে তার স্ত্রী তার জন্য হারাম হবে না।” (নজলুল আবরার, খণ্ড – ২, পৃষ্ঠা – ২৭)

সুতরাং এই মাসআলাতেও আহলে হাদীস ও শিয়া সম্প্রদায়রা একমত।

৪) শিয়াদের কিতাবে লেখা আছে, “ইমাম জাফর সাদিককে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে শুকরের চুলের দড়ি তৈরী করি যদি কুঁয়াে থেকে পানি তােলা হয় তাহলে তার দ্বারা ওজু করা যাবে কি না। তিনি বললেন, এতে কোনাে অসুবিধা নেই। তিনি বললেন (শুকরের) চুল এবং সবকিছুই পাক।” (ফুরু কাফী, খণ্ড – ২, পৃঃ- ১০, দ্বিতীয় খণ্ড)

অপরদিকে আহলে হাদীস আলেম আল্লামা ওয়াহীদুজ্জামান হায়দারাবাদী লিখেছেন, “মৃতের ও এবং শুকরের চুল পাক। ঠিক অনুরূপ তার হাড়, গলাবন্ধনী তার দাঁত এবং তার সিং পাক।” (নজলুল আবরার, খণ্ড – ১, পৃঃ- ৩০)

৫) শিয়ারা লিখেছে, “আলী ইবনুল হাফাসের উদ্ধৃতিতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, “আমি সাফওয়ানকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, আমি রেযাকে বলি যে, জনৈক ব্যক্তি একটি মাসআলা সম্পর্কে আপনাকে জিজ্ঞেস করার জন্য আমাকে নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু আমি তা আপনাকে জিজ্ঞেস করতে লজ্জাবােধ করছি। রেযা বলেন সে প্রশ্নটি কি? তিনি বলেন, পুরুষ কি নারীর পায়খানার দ্বারে যৌন সঙ্গম করতে পারে? তিনি বলেন, হ্যাঁ পারবে, এটা তার অধিকার।” (আল-ইস্তেবছার, খণ্ড – ২, পৃঃ-১৩০)

এই ফতােয়া আহলে হাদীসদের মহামান্য আলেম আল্লামা ওয়াহীদুজ্জামান সাহেব তাঁর বুখারী শরীফের অনুবাদের দ্বিতীয় খণ্ডের ৩৬ ও ৩৭ পৃষ্ঠায় লিখেছেন যে স্ত্রীলােকের পায়খানার দ্বারে সহবাস করায় কোনাে সমস্যা নেই।

৬) প্রত্যেকেই জানেন যে কুকুর নাপাক জন্তু। যদি কুকুর কুয়ােতে পড়ে যায় তাহলে কুঁয়াের সমস্ত পানি ফেলে দেওয়া জরুরী। কিন্তু শিয়াদের মাজহাবে পাঁচ বালতি পানি ফেলে দিলেই কুয়াে পাক হয়ে যাবে। এই ফতােয়া শিয়াদের ‘ফুরু কাফী’ কিতাবের প্রথম খণ্ডের ৪৪ পৃষ্ঠায় লেখা আছে।

অপর দিকে আহলে হাদীস আলেম ওয়াহীদুজ্জামান সাহেব লিখেছেন, “যদি কুকুর পানির মধ্যে পড়ে যায় আর পানির রং যদি পরিবর্তন না হয় তাহলে তা নাপাক নয় যদি তার (কুকুরের) মুখ পানির মধ্যে ডুবে যায়।” (নজলুল আবরার, খণ্ড – ১, পৃঃ- ৩০)

দেখুন শিয়ারা তাে কুকুর কুয়াের পানিতে পড়ে গেলে পাঁচ বালতি পানি ফেলে দেওয়ার ফতােয়া দিয়েছেন কিন্তু আহলে হাদীসদের আল্লামা সাহেব শিয়াদেরকে টেক্কা মেরে সাফ ফতােয়া দিয়ে দিলেন কুকুর জন্তুটাই পাক। সুতরাং পানি ফেলারই প্রয়ােজন নেই। আহলে হাদীসদের এই আল্লামা সাহেব তাে আরও বলেছেন, “কুকুরকে উঠিয়ে নামাজ পাঠকারীর নামাযে ত্রুটিপূর্ণ নয়।” (ঐ গ্রন্থ)

৭) শিয়ারা তিন তালাককে এক তালাক মনে করে। অপরদিকে আহলে হাদীসরাও তিন তালাককে এক তালাক মনে করে। বর্তমান যুগের আহলে হাদীসদের অন্যতম বড় আলেম আইনুল বারী আলিয়াভী সাহেব লিখেছেন : “কিন্তু কুরআন ও সহীহ হাদীসকে সরাসরি অনুসরণকারী আহলে হাদীস এবং ইমামপন্থী ও শিয়াদের মতে ঐ অবস্থায় তিন নয়, বরং এক তালাকে রজয়ী পড়বে।” (ইসলামী তালাকবিধি, পৃঃ- ৩৮)

সুতরাং এখানে আইনুল বারী সাহেব স্বয়ং স্বীকার করছেন তিন তালাকের মাসআলার ব্যাপারে আহলে হাদীস ও শিয়াপন্থী এক সম্প্রদায়ভুক্ত। সুতরাং এর দ্বারা বােঝা যায় আহলে হাদীসরা শিয়া।

৮) শিয়াদের কিতাবে লেখা আছে, “ইমাম জাফর সাদিককে হস্তমৈথুন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল তাে তিনি বলেছিলেন, হস্তমৈথুন করা কোনাে অপরাধের কাজ নয়।” (ফুরু কাফী, খণ্ড – ২, পৃষ্ঠা – ২৩৪)

অপর আহলে হাদীসদের কিতাব ‘উরফুল জাদী’তে সিদ্দিক হাসান খানের পুত্র নবাব মীর নুরুল হাসান খান লিখেছেন যে হস্তমৈথুন করা জায়েজ এবং মুবাহ কাজ। (পৃঃ- ২০৮)

শিয়ারা তাে হস্তমৈথুন করাকে শুধুমাত্র জায়েজ বলল আর আহলে হাদীসরা তাে এটাকে মুবাহ বলে ফেললেন। অর্থাৎ আহলে হাদীসরা শিয়াদেরকেও টেক্কা মেরে দিলেন।

৯) শিয়াদের মতাে আহলে হাদীসরাও দুই নামাজকে একত্রিত করে পড়াকে জায়েজ বলে। যেমন আহলে হাদীসদের মহামান্য আল্লামা ওয়াহীদুজ্জামান হায়দারাবাদী লিখেছেন, “আহলে হাদীসদের নিকট কোনাে কারণ ছাড়াই কোনাে সফর ছাড়া, কোনাে বর্ষা না হলেও দুই নামায একত্রিত করে পড়া জায়েজ এবং কিছু ক্ষেত্রে এটা উত্তম। কিছু লােক এর উপর শর্ত আরােপ করেছেন যে এটাকে অভ্যাস না বানিয়ে দুই নামাযকে একত্রিত করা পড়া ইমামিয়ার (শিয়া) ও নবীর বংশ পরম্পরায় প্রমাণিত।” (হাদিয়াতুল মাহদী, খণ্ড – ১, পৃঃ- ১০৩)

পাঠকগণ লক্ষ্য করুন এখানে ওয়াহীদুজ্জামান সাহেব স্বয়ং স্বীকার করেছেন যে দুই নামাযকে একত্রিত করে পড়া ইমামিয়া শিয়াদের দ্বারা প্রমাণিত। তাহলে আহলে হাদীসদের শিয়া হওয়া সম্পর্কে কোনাে সন্দেহ নেই।

১০) অনেকেই জানেন যে জানাযার নামাজ হল একধরণের দুয়া এবং জমহুর আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআতের নিকট জানাজার নামাজ হল দুয়া। আর জানাযার নামাজ দুয়ারই স্ত্র একটি অংশ। আর দুয়াকে আস্তে পড়ার হুকুম কুরআনে মহান আল্লাহপাক দিয়েছেন। সেজন্য জানাযার নামাজ আস্তে পড়া উচিৎ।

আল্লামা ইবনে কাদামা হাম্বলী লিখেছেন, “জানাজার নামাজে কিরআত ও দুয়া আস্তে পড়ার ব্যাপারে আহলে ইলম-এর মধ্যে কোনাে মতবিরােধ নেই।” (মুগনী, খণ্ড – ২, পৃঃ- ৪৭৬)

কিন্তু আহলে হাদীসরা শিয়াদের মতাে জানাজের নামাজে দুয়াকে জোরে পড়াকে সুন্নত বলে মনে করে। (প্রমাণ ফতােয়া উলামায়ে আহলে হাদীস, খণ্ড – ৫, পৃঃ- ১৫২)

আহলে হাদীসদের মহামান্য আলেম মাওলানা সানাউল্লাহ অমৃতসরীও লিখেছেন, “জানাজার নামাজে সূরা ফাতেহা এবং তার পরের সূরা জোরে আওয়াজ করে পড়া জায়েজ এমনকি সুন্নত।” (ফতােয়া সানাইয়া, খণ্ড – ২, পৃঃ- ৫৬)

পাঠকগণ এতগুলাে মাসআলা-মাসায়েলের মাধ্যমে পরিস্কার প্রমাণ হয়ে গেল যে আহলে হাদীস ও শিয়া উভয়ই একই সম্প্রদায়ভুক্ত। দুই দলের মধ্যে কোনাে পার্থক্য নেই। আর যে পার্থক্য দেখা যায় সেটা আহলে হাদীসদের তাকিয়াবাজী। যাতে সাধারণ মানুষ আহলে হাদীস ও শিয়াদের মধ্যে পার্থক্য করতে না পারে। সুতরাং আহলে হাদীস নামধারী শিয়াদের এই শাখা থেকে আমাদের প্রত্যেককেই সাবধান থাকতে হবে।

আহলে হাদীসদের শিয়া রাবী থেকে হাদীস গ্রহণ

১) এটা ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত সত্য যে আহলে হাদীস সম্প্রদায়টি ইংরেজদের তৈরী করা মহারাণী ভিক্টোরিয়ার গর্ভজাত নাজায়েজ সন্তান। আহলে হাদীসদের মৌলবী মুহাম্মদ হােসেন বাটালবী মহারাণী ভিক্টোরিয়ার কাছে ‘আহলে হাদিস’ নামকরণটি রেজস্ট্রি করিয়ে নেন। (সিরাতে সানায়ী, পৃঃ- ৩৭২)। বিস্তারিত জানতে পড়ুন আমার লেখা ‘ওয়াজহুন জাদীদ লিমুনকিরিত তাকলীদ’ অর্থাৎ “আহলে হাদীস ফিৎনার নতুন রূপ।”

যখন এদেরকে বলা হয় আহলে হাদীস শব্দটি কোন হাদীসে আছে তা প্রমাণ করুন। তখন তারা বাইহাকী শরীফের শুআবুল ইমান গ্রন্থের একটি হাদীস পেশ করে। হাদীসটি হলাে : “বিখ্যাত সাহাবী হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) কোনাে মুসলমান যুবককে দেখতে পেলে বলতেন, মারহাবা, হযরত রসুলে কারীম (সাঃ)-এর অসিয়ত অনুযায়ী তােমাকে সাদর সম্ভাষণ জ্ঞাপন করছি। রসুলুল্লাহ (সাঃ) আমাদেরকে তােমাদের জন্য মজলিশ প্রশস্ত করে দেওয়ার (অর্থাৎ স্থান দেওয়ার) ও তােমাদেরকে হাদীস বুঝিয়ে দেওয়ার হুকুম করে গেছেন। তােমরা আমাদের স্থলাভিষিক্ত ও আমাদের পরবর্তী আহলে হাদীস।”

অথচ এই হাদীসটি হল নিতান্ত মওযু হাদীস। এই হাদীসের একজন রাবী হলেন আবু হারুন আল আবদী। যার জন্য তাকরীব’ কিতাবে লেখা আছে, পরিত্যক্ত, মিথ্যাবাদী, শিয়া। তার জন্য ইমাম শাে’বা (রহঃ) বলেছেন, “উক্ত রাবীর হাদীস গ্রহণ করার চেয়ে নিজের গর্দান কেটে নেওয়া ভালাে। অন্যান্য রিজালবিদরা বলেছেন, দুর্বল, আর হাদীস বিশ্বাসযােগ্য নয়। পরিত্যক্ত বহুরুপী শিয়া বা খারিজী। মিথ্যাবাদী, মনগড়া হাদীস বর্ণনাকারী। তার কাছে একটি কিতাব ছিল যাতে লেখা ছিল হযরত উসমান গণী (রাঃ)-কে যখন কবরে প্রবেশ করানাে হয়, তিনি কাফের ও জাহান্নামী ছিলেন। উক্ত রাবী হারুন অল আবদী ফেরাউনের থেকেও বেশী মিথ্যাবাদী। (মিজানুল এ’তেদাল, ৩য় খণ্ড, পৃঃ- ১৭০)

এই হল আহলে হাদীসদের আবু হারুন আল আবদীর মতাে পরিত্যক্ত, মিথ্যাবাদী, বহুরুপী শিয়া বা খারেজী, হযরত উসমান গণী (রাঃ) কে জাহান্নামী কাফের বলনেওয়ালা লেখকের কিতাব সংগ্রহকারী আহলে হাদীস। এরা ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-এর মতাে মুজতাহীদ ইমামের মাজহাব মানেন না কিন্তু তারা তাদের স্বার্থের অনুকুলে আবু হারুন আল আবদীর মতাে শিয়া থেকে হাদীস সংগ্রহ করে থাকে। কারণ তাদের দলের প্রত্যেক কর্ণধারই হলেন আবু হারুন আল আবদীর ক্যাটাগরীর লােক।

২) আহলে হাদীসরা তিন তালাককে এক তালাক প্রমাণ করার জন্য একটি মারফু হাদীস পেশ করে থাকেন। হাদিসটি হলাে : “হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, রুকানা নামক এক সাহাবী একই মজলিসে তাঁর বিবিকে তিন তালাক দেন। অতঃপর তিনি খুব দুঃখিত হন। তাই রাসুলুল্লাহ (সাঃ) জিজ্ঞেস করেন তুমি কিভাবে তালাক দিয়েছিলে, তিনি বললেন, তিন তালাক। অতঃপর রসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেন, একই মসলিসে কি? সাহাবী বললেন, হ্যা। এবার তিনি (সাঃ) বললেন, তাহলে ওটা কেবলমাত্র এক তালাকই। অতএব তুমি যদি চাও তাহলে বিবিকে ফিরিয়ে নাও। তাই তাকে (বিবি হিসাবে) ফিরিয়ে নিলেন। (মুসনাদে আহমদ, ১ম খণ্ড, পৃঃ ১৬৫)

এই হাদিসটিও নিতান্ত মাওযু হাদীস। এই হাদিসটি দুরকম সনদে বর্ণিত আছে।

১) ইবনে জুরাইজ নামক রাবীর সূত্রে

২) মুহাম্মাদ বিন ইসহাক নামক রাবীর সূত্রে।

ইবনে জুরাইজের সূত্রে একজন রাবী রয়েছেন যার নাম মুহাম্মাদ বিন উবাইদিল্লাহ। যার জন্য ইমাম ইবনে আদী বলেছেন, “মুহাম্মাদ বিন উবাইদিল্লাহ কুফআর একজন শিয়া।” (মীযান)

এই হাদীসের রাবী ইবনে জুরাইজের জন্য রিজাল বিদরা বলেছেন যে সে ৭০ কিংবা ৯০ জন ৪ দু রমণীর সঙ্গে মুতা বিবাহ করেছে। ‘তাকরিব’ কিতাবে লেখা আছে যে সে রাত্রে ঘুমােবার সময় পাছাতে তেল লাগিয়ে ঘুমােতাে যাতে জিমা (সহবাস) করার শক্তি অর্জন করতে পারে।

অপর সূত্রে রাবী রয়েছেন মুহাম্মাদ বিন ইসহাক যাকে ইমাম মালিক (রহঃ) দাজ্জাল বলেছেন। সেও শিয়া ছিল।

এই হল আহলে হাদীসদের ইবনে জুরাইজ ও মুহাম্মদ বিন ইসহাকের মতাে শিয়া রাবীর দু নিকট হাদীস গ্রহণের নিকৃষ্ট নমুনা। এরা ইমাম আবু হানীফার মাজহাব মানেন না কিন্তু ইবনে জুরাইজের মতাে ৭০ কিংবা ৯০ জন রমণীর সঙ্গে মুতাকারী মুতাবাজ পাছায় তেল লাগিয়ে সহবাসের শক্তি অর্জনকারীর হাদিস গ্রহণ করেন। এইরকম ধরণের রাবীর হাদিস মাননেওয়ালারাই বর্তমানে আহলে হাদীস নামে পরিচিত।

এই হাদীসের শিয়া রাবী ইবনে জুরাইজ তাে রাত্রে ঘুমােবার সময় পাছায় তেল লাগিয়ে ঘুমােতেন সহবাস করার শক্তি অর্জন করার জন্য। না জানি বর্তমান যুগের আহলে হাদীসরা তাদের মাননীয় রাবীর মতাে কতবার রাত্রে সহবাস করার শক্তি অর্জন করার জন্য পাছায় তেল লাগিয়ে ঘুমিয়েছেন। একমাত্র তারাই জানেন।

শিয়াদের মতাে আহলে হাদীসরাও তারাবীহকে অস্বীকার করে।

শিয়াদের মতাে আহলে হাদীস সম্প্রদায়ের লােকেরাও তারাবীহর নামাযকে অস্বীকার করে। শিয়াদের মজহাবে তারাবীহর নামাজ বলে কোনাে নামাজই নেই। আর আহলে হাদীসরা তারাবীহ ও তাহাজ্জুদের নামাজকে একই নামাজ বলে তারাবীহর নামাযটাকেই অস্বীকার করে ফেলেছে। এরা তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে আর তারাবীহের নাম দেয় অর্থাৎ শিয়াদের মতাে আহলে হাদীসদের নিকটও তারাবীহ বলে কোনাে নামাজ নেই। সুতরাং তারাবীহ সংক্রান্ত মাসআলাই আহলে হাদীস ও শিয়ারা একই সম্প্রদায়ভুক্ত।

আহলে হাদীসরা সাবধান

এতক্ষণ দীর্ঘ আলােচনার মাধ্যমে পরিস্কার প্রমাণ হয়ে গেল যে আহলে হাদীস ফিরকা আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআতের অন্তর্ভুক্ত নয়। তারা প্রকৃতপক্ষে শিয়া অথবা রাফেযীদেরই একটা অংশ। আমি এখানে আহলে হাদীস সম্প্রদায়কে সাবধান করে বলব যে তারা যেভাবে ভারতীয় উপমহাদেশে ফিৎনা আর করেছে এবং আহনাফ আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআত ও আকাবিরে উলামায়ে দেওবন্দের বিরুদ্ধে বিষােদগারণ শুরু করেছে যদি তারা তাদের এই মানসিক ভাবধারা পরিবর্তন না করে তাহলে আমি আমার মহান আল্লাহর জাতের উপর ভরসা করে বলছি আহলে হাদীসদের এখনও সময় আছে তারা সাবধান হয়ে যাক। যদি তারা সাবধান না হয় তাহলে উলামায়ে দেওবন্দ যেরকম সাহাবাদের বিরুদ্ধে গালিগালাজকারী রাফেযীদেরকে সমাজের বুকে গালি বানিয়ে দিয়েছে, খতমে নবুওয়াতকে অস্বীকারকারী মির্জা গােলাম আহমাদ কাদীয়ানীকে সমাজের বুকে গালি বানিয়ে দিয়েছে, ঠিক সেই রকম গায়ের মুকাল্লিদদেরকেও ভারতবর্ষের সরজমিনে গালি বানিয়ে দেওয়া হবে। আর আহলে হাদীসদের মুনাযিররা যদি তাদের ক্রিয়াকলাপকে সংযত না করে তাহলে তাদের প্রত্যেক মুনাযিরিনদেরকে দালায়েলের ময়দানে লটকিয়ে দেওয়া হবে ইনশাল্লাহ্।

এখনও গায়ের মুকাল্লিদ ফিরকার লােকরা যদি ফিতনাবাজী বন্ধ না করে এবং যদি তারা আকাবির উলামায়ে দেওবন্দের প্রতি গালিগালাজ বন্ধ না করে, হানাফী ফিকাহর গ্রন্থ হেদায়া, শামী, ফতওয়া আলমগিরি প্রভৃতি গ্রন্থের প্রতি যদি কুসমালােচনা করা বন্ধ না করে তাহলে আমি আমার রব মহান আল্লাহর জাতের প্রতি ভরসা করে বলছি, এই আহলে হাদীস নামধারী লা- মাজহাবী বা গায়ের মুকাল্লিদ বা ছােট রাফেযীদেরকে ভারতবর্ষ থেকে তেড়ে ইরান পালাতে বাধ্য করা হবে ইনশাল্লাহ। তার কারণ, ইরানই হল শিয়াদের প্রকৃত দেশ। আর এটা করতে তাদের এ ইমাম আয়াতুল্লাহ খােমেইনিও বাঁচাতে পারবে না।

পরিশিষ্ট

প্রিয় পাঠকগণ, এবার আপনারা নিশ্চয় এই দীর্ঘ আলােচনার পর বুঝতে পেরে গেছেন বর্তমানে যে আহলে হাদীস দলটা সহীহ হাদীসের লেবেল লাগিয়ে আস্ফালন করে বেড়াচ্ছে তারা আসলে শিয়াদেরই একটি শাখা। এরা শিয়াদের মতাে মুতা বিবাহকে জায়েয বলে, এরা হস্তমৈথুন করাকে জায়েজ বলে, পায়ের উপর মাসাহ করাকে জায়েজ বলে, ‘হাইয়া আলাল ফালা’র পর ‘হাইয়া আলী খয়রুল আমাল’ বলাকে জায়েজ বলে, শুকর ও কুকুরকে পাক বলে, স্ত্রীলােকের পায়খানার দ্বারে সহবাস করাকে জায়েজ বলে, শিয়াদের মত তিন তালাককে এক তালাক বলে মনে করে, এরা শিয়া রাবী থেকে হাদীস গ্রহণ করে প্রভৃতি।

আর বর্তমানে যেসব আহলে হাদীস উলামা রয়েছেন যেমন, তালিবুর রহমান যায়দী, তওসীকুর রহমান যায়দী, যুবাইর আলী যায়ী, আব্দুল্লাহ বাহাওয়ালপুরী, মিরাজ রাব্বানী, জরজীস আনসারী, জালালুদ্দীন কাসেমী, আসাদুল্লাহ আল গালিব, আব্দুর রওফ সালাফী এরা প্রত্যেকেই শিয়াদের এজেন্ট। সুতরাং এইসব শিয়া উলামাদের বায়ানাত শােনা ও কিতাব পড়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

আর বর্তমানের আহলে হাদীস দলের সঙ্গে সেইরকম আচার আচরণ করতে হবে যে আচার আচরণ শিয়াদের সঙ্গে করা হয়। কারণ এটা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত যে বর্তমান যুগের আহলে হাদীসরা শিয়া ও রাফেযী সম্প্রদায়ভুক্ত।।

(রচনাকালঃ ২০১২)

Post Views: 4,450
Tags: আব্দুল হক বেনারসীআহলে হাদীসআহলে হাদীস নয় এরা শিয়া - রাফেজী – খারেজী সম্প্রদায়ইমাম শাফেয়ী (রহঃ)নবাব সিদ্দিক হাসান খান ভূপালীশিয়া
ADVERTISEMENT

Related Posts

রহস্য উদ্ঘাটন মূলক বিশ্বাস খ্রিস্টানদের ইজরাইল সমর্থনের বড় কারণ
ইসলাম

‘রহস্যউদ্ঘাটনমূলক’ বিশ্বাস আমেরিকান খ্রিস্টানদের ইহুদি ও ইজরাইল সমর্থনের বড় কারণ

লিখেছেনঃ মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম রহস্য উদ্ঘাটন পন্থী খ্রিস্টান মৌলবাদীরা ‘বাইবেল সংক্রান্ত কারণে’ আরও ব্যপকভাবে ফিলিস্তিন-ইজরাইল সংঘাত বৃদ্ধি পাচ্ছে। [Apocalypse...

by মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম
November 8, 2024
বাঙালি মুসলিম সমাজে আধুনিকীকরণ—রামমােহন বা বিদ্যাসাগরের প্রসঙ্গ
ইসলাম

বাঙালি মুসলিম সমাজে আধুনিকীকরণ—রামমােহন বা বিদ্যাসাগরের প্রসঙ্গ

অনেকেই বলেন, মুসলিম নেতাগণ প্রগতিশীল চিন্তা-চেতনার ছাপ রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন এবং তারা সমাজে আধুনিক শিক্ষা বিস্তারের কথা ভাবেননি। এও...

by আমিনুল ইসলাম
November 7, 2024
ফুরফুরা শরীফের প্রতিষ্ঠাতা আবু বকর সিদ্দিকী (রহঃ) এর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
ইসলাম

ফুরফুরা শরীফের প্রতিষ্ঠাতা আবু বকর সিদ্দিকী (রহঃ) এর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

হুগলী জেলায় বালিয়াবাসন্তী গ্রামে ১২৩৬ হিজরী সনে মওলুবী হাজী মােঃ মােকতাদির সাহেবের আবু বকর নামে এক সুযােগ্য সন্তান জন্মগ্রহণ...

by গোলাম আহমাদ মোর্তাজা
December 24, 2021
ইসলাম এবং মহানবি হজরত মোহাম্মদ (সঃ) স্বামী বিবেকানন্দের ভাবনায়
ইসলাম

ইসলাম এবং মহানবি হজরত মোহাম্মদ (সঃ) স্বামী বিবেকানন্দের ভাবনায়

স্বামী বিবেকানন্দ (১৮৬৩-১৯০২) সারাজীবন জাতিকে অন্য ধর্মীয় মতবাদকে শ্রদ্ধাশীল দৃষ্টিতে দেখার শিক্ষাই দিয়ে গেছেন। নিজ ধর্মের প্রতি অবিচল আস্থা,...

by আমিনুল ইসলাম
June 17, 2021

POPULAR POSTS

  • সুলতান মাহমুদ

    সুলতান মাহমুদের ভারত অভিযান ও সোমনাথ মন্দির প্রসঙ্গ (১ম পর্ব)

    181 shares
    Share 181 Tweet 0
  • বাউরী সম্প্রদায়ের উৎপত্তির ইতিহাস ও ঐতিহাসিক পর্যালোচনা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • আর্যদের ভারত আগমন, বিস্তার, সমাজ ও সভ্যতা: এক ঐতিহাসিক পর্যবেক্ষণ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে বৌদি কাদম্বরী দেবীর সম্পর্ক আদৌ কি প্রেমের ছিল?

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • হিন্দু পদবীর উৎপত্তির ইতিহাস, বিবর্তন ও ক্রমবিকাশঃ বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

Facebook Page

নবজাগরণ

ADVERTISEMENT
নবজাগরণ

'Nobojagaran' is a website of its kind where you can gather knowledge on all the unknown facts of the world. We human beings always have a thirst for knowledge. Nobojagaran takes its first steps to quench this thirst of ours. We are now in the era of digital world, where we get almost anything online. So how about a bit of knowlyfrom online?

Connect With Us

No Result
View All Result

Categories

  • English (9)
  • অন্যান্য (11)
  • ইসলাম (26)
  • ইসলামিক ইতিহাস (22)
  • ইহুদী (1)
  • কবিতা (37)
  • খ্রিস্টান (6)
  • ছোটগল্প (6)
  • নাস্তিকতা (18)
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (24)
  • বিশ্ব ইতিহাস (24)
  • ভারতবর্ষের ইতিহাস (194)
  • রাজনীতি (38)
  • সাহিত্য আলোচনা (68)
  • সিনেমা (17)
  • হিন্দু (16)

Pages

  • Cart
  • Checkout
  • Checkout
    • Confirmation
    • Order History
    • Receipt
    • Transaction Failed
  • Contact
  • Donation to Nobojagaran
  • Homepage
  • Order Confirmation
  • Order Failed
  • Privacy Policy
  • Purchases
  • Services
  • লেখা পাঠানোর নিয়ম
  • হোম
No Result
View All Result
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi

©Nobojagaran 2020 | Designed & Developed with ❤️ by Adozeal

Login to your account below

Forgotten Password?

Fill the forms bellow to register

All fields are required. Log In

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In
Don't have an account yet? Register Now
wpDiscuz
0
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x
| Reply
Open chat
1
Powered by Joinchat
Hi, how can I help you?