• মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
Saturday, May 24, 2025
নবজাগরণ
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ
No Result
View All Result

সম্রাট আওরঙ্গজেব ও মন্দির ধ্বংসের অজানা ও রোমাঞ্চকর ইতিহাস

নবজাগরণ by নবজাগরণ
August 28, 2022
in ভারতবর্ষের ইতিহাস
0
সম্রাট আওরঙ্গজেব

Detail of Miniature painting of Aurangzeb, late Mughal, 1850, National Museum, New Delhi, India. (Photo by: IndiaPictures/UIG via Getty Images)

Share on FacebookShare on Twitter

লিখেছেনঃ মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম

প্রচলিত ইতিহাসে সম্রাট আওরঙ্গজেব কে হিন্দুবিদ্বেষী শাসক হিসাবে উল্লেখ করা হলেও প্রকৃতপক্ষে সম্রাট আওরঙ্গজেব মন্দির ধ্বংসকারী ও মুর্তিসংহারক নন কারণ তিনি এর আগে বহু হিন্দু মন্দির নির্মাণ করে দিয়েছেন আহমেদাবাদের নগর শেঠকে শত্রুঞ্জয় মন্দির, গার্নার ও আবু মন্দিরের জন্য ভূমি দান করেছিলেন। শত্রুঞ্জয় মন্দিরে ভূমি মঞ্জুরী সনদের বায়ানে আছে –

“এবং যার সমাপ্তি হবে সুখকর, পবিত্র শাহী দরবারের সভাসদবর্গ বরাবর স্বর্ণকার সতীদাস সেই মহান, পবিত্রতম, মহিমান্বিত, অত্যুজ্জ্বল দরবারের গোচরে এনেছেন যে, যেহেতু মহিমান্বিত সুলাইমান সমমর্যাদাশীল, আল্লাহর প্রতিবিম্বের (মুহাম্মাদের) উত্তর পুরুষদের কর্ম – প্রতিপালক শাহানশার একত্রিশ বর্ষের, পবিত্র রমজান মাসের ঊনিশ তারিখের ফরমান বলে আহমদাবাদ সুবার অধীন সুরাট সরকারের অন্তর্গত পালিতানা জেলাটি (এবং যার মোট জমা দু লাখ) চিরস্থায়ী ইনাম স্বরুপ আবেদনকারীকে বন্দোবস্ত করে দেওয়া হয়েছে। এবং যেহেতু সে (আবেদনকারী) অতঃপর আশা করে যে, আমাদের দরবার কর্তৃক একখানি গৌরবজনক অনুজ্ঞাপত্রও মঞ্জুর করা হোক। বিধায় পুর্বানুরূপ, উপরোক্ত জেলাটি চিরস্থায়ী ইনাম স্বরুপ আমরা (আবেদনকারীকে) মঞ্জুর করলাম। অতএব সংশ্লিষ্ট সুবা ও উপরোক্ত সরকারের বর্তমান ও ভাবী কর্মাধ্যক্ষগণের ওপর দায়িত্ব বর্তাল যে, তারা যেন এই পবিত্র অধ্যাদেশ ও অবিরাম ও স্থায়ীভাবে পালন করার জন্য তৎপর হনার উপরোক্ত ব্যক্তি ও তার ওয়ারিশগণকে বংশানুক্রমে উল্লিখিত জেলার স্বত্ব ভোগ দখলের অনুমতি দেন, আর তাকে যাবতীয় দাবি, কর ও অন্যান্য বাকি বকেয়া মুক্ত বলে বিবেচনা করেন। এ ব্যাপারে ফি বছর নতুন কোনো সনদ যেন দাবি না করা হয়। লিখিত হল ১০৬৮ হিকরী (১৬৫৮) সনের জিলকদ মাসের ৯ তারিখে।”

এক যুদ্ধে নগর শেঠ আওরঙ্গজেবকে সাহায্য করেন। তার বিনিময়ে বন্ধুত্বের নিদর্শন স্বরূপ সম্রাট আওরঙ্গজেব নগর শেঠকে গার্নার ও আবুতে অবস্থিত মন্দিরের জন্য জমি দান করেন। ফরমানে বলা হয় –

“বর্তমান সময়ে মহিমান্বিত ফরমান জারি হল যে, যেহেতু শ্রাবক সম্প্রদায়ের সাহাসভাইয়ের পুত্র শান্তি দাস জওয়াহারী আন্তরিক আবেদন জানিয়েছেন আর বিশেষ অনুগ্রহ প্রাপ্তির প্রত্যাশা করেছেন, আর অভিযানকালে সেনাবাহিনীকে খাদ্য সরবরাহ করে সাহায্য করেছেন আর বিশেষ পুরস্কারে ভূষিত হওয়ার আশা পোষণ করেন, বিধায়, আহমেদাবাদের অধীন পালিতানা গ্রামখানি আর শত্রুঞ্জা নামে বিখ্যাত পালিতানা পাহাড় ও পাহাড় স্থিত মন্দির, সব কিছু শ্রাবক সম্প্রদায়ের উক্ত শান্তিদাস জওয়াহারীকে দিচ্ছি। আর শত্রুজা পাহাড়ে যে কাঠ ও জ্বালানী দেখা যায় তা শ্রাবক সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হবে, যাতে তারা খুশিমত যে কোনো কাজে এগুলি ব্যবহার করতে পারে। যে কেউ যদি শত্রুজা পাহাড় ও এর মন্দির পাহারা দেয় সে পালিতানা আয়ের আওতায় আসবে। আর তারা চিরন্তন সরকারের স্থায়িত্বের জন্য ক্রমাগত প্রার্থনা করবে। বর্তমান ও ভাবী প্রশাসন, আধিকারিক, জায়গীরদার ও ওয়ারিশগণ কোনো ক্রমেই যাতে এই আদেশের বিচ্যুতি ও পরিবর্তন হতে না দেন তা একান্ত জরুরী। এছাড়াজুনাগড় গার্নাল (গার্নার) নামে একটি বিখ্যাত পর্বত আছে আর শিরোহীর অধীনে আবুজীতে আর একটি পাহাড় আছে। আমরা বিশেষ উপহার হিসেবে এ দুটি পাহাড়ও শ্রাবক সম্প্রদায়ের শান্তিদাস জওয়াহারীকে দিচ্ছি, যাতে তিনি সম্পূর্ণরূপে সন্তুষ্ট হন। এ সবে অন্য কেউ যাতে হস্তক্ষেপ করতে না পারে, সরকারি কর্মচারীদের তা দেখা দরকার। আর কোনো রাজা তাঁকে যেন বাধা না দেন। আর তাঁরা তাঁকে সর্বোতভাবে সাহায্য করেন। কেননা এ ধরণের কাজ তাঁদের কাছে বাদশাহী প্রসন্নতা বয়ে আনবে। আর তাঁরা প্রতি বছর নতুন সনদ দাবি করবেন না। আমরা তাঁকে যে গ্রাম ও পাহাড় তিনটি দিয়েছি, কেউ যদি সে সম্বন্ধে কোন দাবি করে তাহলে সে জনগণ ও আল্লাহর কাছে বিচার্য ও অভিশপ্ত হবে।” (হিজরী সন ১০৭০, ১০ রজব; ১৬৬০, ১২ই মার্চ)

এছাড়াও সম্রাট আওরঙ্গজেব হিন্দু জনগণের শান্তিপূর্ণ বসবাসের বিষয়ে খুব আগ্রহী ছিলেন। ১০৯১ হিজরীর ১৭ই রবিউস সানী জারিকৃত ফরমানে বলা হয় –

“এই শুভক্ষণে একখানি মহান ফরমান জারি করা হচ্ছে – যেহেতু মহারাজাধিরাজ রাজা রামসিংহ পবিত্রতম এবং মহিমান্বিত শাহী দরবারে অভিযোগ বিবৃত করেছেন যে, বেনারস গঙ্গাতীরে মাধোরাম মহল্লায় তাঁর পিতা তদীয় ধর্মগুরু ভাগবত গোঁসাই – এর বাসস্থানের জন্য একটি প্রাসাদ নির্মাণ করেন এবং যেহেতু কতিপয় ব্যক্তি গোঁসাইকে হয়রান করেন, অতএব আমাদের শাহী হুকুম হল এই যে, এই উজ্জ্বল আদেশ পাওয়ার পর, বর্তমান ও ভাবী সরকারী কর্মচারীদের নির্দেশ দেওয়া হোক, ভবিষ্যতে কেউ যেন কোনোভাবেই গোঁসাইয়ের কাজে হস্তক্ষেপ বা উৎপাত না করে, যাতে করে তিনি আমাদের আল্লাহর প্রদত্ত সাম্রাজ্যের অনবচ্ছিন্নতার জন্য প্রশান্ত চিত্তে পুজার্চনা চালিয়ে যেতে পারেন, যে সাম্রাজ্য চির অবিনশ্বর হিসেবে পুর্ব – নির্ধারিত। এটি জরুরী বিষয় বলে বিবেচনা করবেন।”

বেনারসের মন্দির প্রসঙ্গে হিজরী ১০০৫, ২৫ জামাদিউল আওয়াল তারিখে সম্রাট আওরঙ্গজেব বেনারসের অধিপতি আবুল হাসানকে এক চিঠিতে লেখেন –

“আমাদের সত্য ধর্ম ও মাজহাবে অমুসলমানদের মন্দির ভাঙ্গা নিষিদ্ধ। বেনারসের কোনো কোনো শাসক পার্শ্ববর্তী হিন্দুদেরকে উৎপীড়ন, তাঁদের ধর্মীয় আচারবিধিতে হস্তক্ষেপ এবং প্রাচীন মন্দির সংসশ্লিষ্ট ব্রাহ্মণদেরকে তাঁদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছেন বলে গোচরে এসেছে। ভবিষ্যতে যেন কেউ কোনো হিন্দুকে এবং কোনো ব্রাহ্মণকে উৎপীড়ন না করে তার জন্য আমি নির্দেশ দান করছি।”

একবার বেনারসের শাসনকর্তা আওরঙ্গজেবকে গোপনে একটা অনুমতি নেবার জন্য চিঠি লিখেছিলেন যে,

“উচ্চ নিচ নির্বিশেষে সমস্ত শ্রেণীর উন্নতির চাবিকাঠি বেনারস মন্দিরের দেবতার হাতে আছে। এইজন্য মন্দিরের নিত্যনতুন নির্মাণকার্যের যেন অন্ত নেই। এক মন্দিরের সঙ্গে অন্য মন্দিরও যেন পাল্লা দেয়। অতএব এই মন্দিরের পুরোহিত বা ব্রাহ্মণদের ওপর শক্তিপ্রয়োগ করা যায় কিনা? কেউ কেউ মনে করেন, ব্রাহ্মণদের উপাসনা ভিত্তি শিথিল হলে তারা হয়তো ইসলাম ধর্মের দিকে আকৃষ্ট হতে পারে।”

সম্রাট আওরঙ্গজেব এর উত্তরে লিখে পাঠান –

“প্রজাদের উপকার সাধন এবং নিম্নসকল সম্প্রদায়ের উন্নতি সাধন আমাদের কর্তব্য। সেজন্য আমাদের পবিত্র আইনানুসারে আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছি যে, পুরাতন মন্দিরগুলি বিনষ্ট করা হবে না, কিন্যু নতুন কিছু সৃষ্টি করাও চলবে না। আর অন্যায়ভাবে কোনো ব্রাহ্মণ বা তাদের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ বা হামলা করা চলবে না। তারা যেন আগের মতো নিজ নিজ কাজে নিযুক্ত থাকতে পারে অথবা আমাদের আল্লাহ প্রদত্ত সাম্রাজ্যের স্থায়িত্বের জন্য সুস্থ মনে প্রার্থনা করতে পারে।”

অন্য একটি ফরমানে সম্রাট আওরঙ্গজেব ঘোষণা করেন –

“ইসলামের শরীয়ত অনুযায়ী আমরা আদেশ দিচ্ছি যে, হিন্দুদের মন্দির ও প্রতিমা পুজার স্থান অক্ষুন্ন থাকবে এবং আমাদের আশ্রয়প্রাপ্ত হবে। আমরা আদেশ দিচ্ছি যে, এই আদেশবাণী প্রচারের তারিখ থেকে কোন ব্যক্তি ব্রাহ্মণকে পুজা বিষয়ে অত্যাচার করতে পারবে না কিংবা হিন্দু মন্দিরে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।”

বেনারস হিন্দুদের তীর্থক্ষেত্র। হিন্দুদের কাছে অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থান। এখানে হিন্দু মুসলিমের প্রতিদ্বন্দিতা চরম। সময় সময় হার জিতের খেলা চলে। এক সময় কিছু লোক ইসলাম গ্রহণ করে হিন্দুদের প্রতি প্রতিশোধ স্পৃহায় মেতে ওঠে। সম্রাট আওরঙ্গজেবের দৃষ্টি সেদিকে আকর্ষিত হয়। তিনি সঙ্গে সঙ্গে বজ্রগম্ভীর ভাষায় ফরমান জারি করেন –

“প্রজাদের মঙ্গলের জন্য ব্যথিত হৃদয়ে আমরা ঘোষণা করছি যে, আমাদের ছোট বড় প্রত্যেক প্রজা পরস্পর শান্তি ও একতার সঙ্গে বাস করবে। এবং ইসলামী বিধান অনুসারে আমরা ঘোষণা করছি যে, হিন্দুদের উপাসনালয়গুলির রক্ষণাবেক্ষণ বা তত্ত্বাবধান করা হবে। যেহেতু আমাদের কাছে আকস্মিক সংবাদ এসেছে যে, কিছু লোক আমাদের বারানসী ধামে অবস্থিত হিন্দু প্রজাদের সঙ্গে অসম্মানজনক নিষ্ঠুর ব্যবহার করছে এবং ব্রাহ্মণদেরকে তাঁদের প্রাচীন ন্যায়সঙ্গত উপাসনার অধিকারে বাধা দিতে মনস্থ করছে। এবং আরো আমাদের কাছে জানানো হয়েছে যে, এই সমস্ত অত্যাচারের ফলে তাঁদের মনে দারুন ক্ষোভ, দুঃখ ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অতএব আমরা এই ফরমান জারি করছি এবং এটা সাম্রাজ্যের সর্বত্র জানিয়ে দেওয়া হোক যে, এই ফরমান জারি হওয়ার তারিখ থেকে কোনো ব্রাহ্মণকে যেন তার উপাসনার কাজে বাধা প্রদান বা কোনো প্রকার প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করা না হয়। আমাদের হিন্দু প্রজাগণ যেন শান্তির সঙ্গে বাস করতে পারে এবং আমাদের সৌভাগ্য ও উন্নতির জন্য আশীর্বাদ করে।”

এছাড়া বহু মন্দির ও মঠকে সাহায্য করেছিলেন সম্রাট আওরঙ্গজেব । চম্পারণের গোঁসাই মঠ, উজ্জয়িনীর মহাবালেশ্বর মন্দির, চিত্রকূটের বালাজী মন্দির, গৌহাটির উমানন্দ মন্দির, শত্রুঞ্জরীর জৈন মন্দির এবং অসংখ্য গুরুদ্বার সহ প্রতিটি বিখ্যাত ধর্মস্থানেই আওরঙ্গজেব অর্থ দান করেছেন কিংবা জায়গির দান করেছেন। কখনও কখনও মন্দিরগুলির দুরবস্থা দূর করার জন্য তিনি বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। কাশীর বাঙালীটোলায় জঙ্গমবাড়ী মঠে রক্ষিত আওরঙ্গজেবের তিনটি ফরমান থেকে জানা যায় যে তিনি এই মঠের জন্য তিনবার অর্থদান, ভূমিদান ও পূর্বেকার কোন অনুদানকে পুনরায় কার্যকরী করেছেন। ১৬৫৯ খ্রীঃ থেকে ১৬৮৫ খ্রীঃ মধ্যে এলাহাবাদের সোমেশ্বরনাথ মহাদেব মন্দির, মহারাষ্ট্রে নানদেড় জেলার মোহনপুরের দত্তাত্রেয় গুরুমন্দিরের জন্য ফরমান জারি করে জায়গির দিয়েছিলেন। উজ্জয়িনীর মহাবালেশ্বর মন্দিরে চব্বিশ ঘন্টা ঘীয়ের প্রদীপ জ্বালানোর জন্য দৈনিক চার সের ঘী বরাদ্দ করেছিলেন। কাশীর জঙ্গমদেবের (শিব) সম্পত্তি নজির বেগ নামে এক মুসলমান জবরদখল করায় শৈব সম্প্রদায় সম্রাটের কাছে নালিশ করলে আওরঙ্গজেব মুসলিমদের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ না করে শৈবদের সম্পত্তি ফিরিয়ে দেওয়ার আদেশ দিয়ে দিয়ে ন্যায় বিচারের পরিচয় দিয়েছিলেন। তাছাড়া মন্দিরের ব্রাহ্মণ পুরোহিতদের উপর উৎপীড়নের সংবাদ পেয়ে তিনি ১৬৫৯ খ্রীঃ ১০ মার্চ তাঁর বিখ্যাত বেনারস ফরমান জারি করে স্থানীয় শাসকদের জানিয়েছেন যে,

“এই সুস্পষ্ট আদেশ পাওয়ার পরে আপনি দেখবেন যে ঐসব জায়গায় কোনো ব্রাহ্মন অথবা অন্যান্য হিন্দু অধিবাসীর কার্যকলাপে যেন বেআইনীভাবে হস্তক্ষেপ না করা হয়। তারা যেন পূর্বের মতন নিজেদের ধর্মচর্চা চালিয়ে যেতে পারেন। যাতে আল্লাহ প্রদত্ত আমাদের এই সাম্রাজ্যকে চিরস্থায়ী করার জন্য তাঁরা শান্ত চিত্তে প্রার্থনা করতে পারেন। এই আদেশকে আপনি অত্যন্ত জরুরী জ্ঞান করবেন।”

সম্রাট আওরঙ্গজেব অনেক দুঃস্থ হিন্দুকে ভূমি ও সম্পত্তি দান করে গিয়েছিলেন। এই অনুদানগুলি সবই ছিল নিঃশর্ত এবং স্থায়ী, গ্রহীতারা ছিলেন হিন্দু সন্ন্যাসী ও অবসরপ্রাপ্ত বৃদ্ধ সৈনিক ও কানুনগোরা। প্রাপকদের মধ্যে যেমন ছিলেন হতদরিদ্র দুখরন মিশির, তেমনই ছিলেন করমুক্ত ৫৫ বিঘা জমির গ্রহীতা লীলা ব্রাহ্মন, বিনিময়ে এমনকি রাজানুগত্যের শর্তও আওরঙ্গজেব দাবি করেননি। তিনি উত্তর-পশ্চিম পাঞ্জাবের ছোট্ট গ্রাম জাখবরে বসবাসকারী নাম যোগীদের তিনি করমুক্ত জমি দান করেন।

এছাড়াও আওরঙ্গজেব গুরু রামদাসকে দেরাদুনে গুরুদোয়ারা নির্মাণের জন্য জমিদান করেছিলেন। বৃন্দাবনের বৈষ্ণব মন্দিরে, পাঞ্জাবের সরকার নগরের নাথপন্থী যোগীদের জমিদান করেছিলেন। রাজস্থানের সিওয়ানা পরগনার পন্থযোগীদের ১০০ বিঘা জমিদান করেছিলেন। বেনারসের ব্রাহ্মণদের নিস্কর জমিদান করতে রামসিংহকে আদেশ দিয়েছিলেন। তারকেশ্বরের মন্দিরের জমিটাও আওরঙ্গজেব দান করেছিলেন।
আর যেসব মন্দির আওরঙ্গজেব ধ্বংস করেছিলেন তার যথেষ্ট কারণ ছিল। যেসব মন্দির তিনি ভেঙ্গেছিলেন সেগুলি ধর্ম মন্দির না থেকে রাজনৈতিক মন্ত্রণাগারে পরিণত হয়েছিল। এছাড়া গুপ্ত মন্ত্রণাগার ছাড়াও অস্ত্রাগার এবং ধনাগারে পরিণত হয়েছিল। ফলে বিদ্বেষের আগুন জ্বলত সেইসব মন্দিরের অভ্যন্তরে। শান্তি ভঙ্গের আশঙ্কায় এবং বিদ্রোহ দমনের উদ্দেশ্যে সেখানে আওরঙ্গজেব সেনাবাহিনী পাঠাতেন। ফলে মন্দির মসজিদ ভাঙ্গা হয়েছে যুদ্ধের নিয়মেই।

মাথুরায় কেশব রায়ের যে মন্দিরটি ১৬৬৯ খ্রীষ্টাব্দে আওরঙ্গজেব ধ্বংস করেন তার কারণ হল, জাহাঙ্গিরের ইঙ্গিতে আকবরের বন্ধু আবুল ফজলকে ১৬০৬ খ্রীষ্টাব্দে প্রতারণামূলক হত্যা করে বীরসিংদেব বুন্দেলা প্রচুর টাকাপয়সা ও আসবাবপত্র লুণ্ঠন করেন। জাহাঙ্গির সিংহাসনে আরোহন করলে তিনি তাঁর অনুমতি পেয়ে সেই লুণ্ঠিত টাকায় মথুরায় কেশব রায়ের মন্দিরটি নির্মাণ করেন। আবুল ফজলের হত্যার স্মারক এই মন্দিরটি নিয়ে হিন্দু – মুসলিমে উত্তেজনা ছড়াত। তাছাড়া বীরসিংহ বুন্দেলা ছিলেন আওরঙ্গজেবের চরম শত্রু। তিনি রাজনৈতিক বিরোধীতা করতে গিয়ে ভারত সম্রাট আওরঙ্গজেবকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বসেন। তাঁর সেই ঔদ্ধত্য খর্ব করতে এবং সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বন্ধ করারা মানসে আওরঙ্গজেব মন্দিরটি ভেঙ্গে ফেলেন।
আওরঙ্গজেব তাঁর রাজত্বে ২২ বছর কোন ধর্মীয় নীতি গ্রহণ করেন নি এবং সিংহাসনে আরোহনের ১২ বছর কোন পর্যন্ত কোন হিন্দুদের সঙ্গে কোনো যুদ্ধ বিগ্রহ করেন নি। কিন্তু বিদ্রোহীদের সঙ্গে রাজপুতদের যোগসাজেস আওরঙ্গজেবকে বিক্ষুব্ধ করে তোলে। তারা মুঘল সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জ করে। কিছু কিছু হিন্দু কুলিদের উৎপাতে মুসলমানেরা আহমেদাবাদের জামে মসজিদে নামাজ পড়তে পারত না। এ সময় রাজপুত বিদ্রোহীরা অনেক মসজিদও ধ্বংস করে। তা ছাড়া গুজরাটে হিন্দুরা মসজিদ নির্মাণে বধা দেওয়ায় পরিস্থিতি আরও বদলে যায় এবং সেখানকার মন্দির ভাঙ্গা হয়। এছাড়া ১০৭৯ হিজরীতে খাণ্ডেলায় রাজপুতরাও বিদ্রোহ করে ও তাঁদের বিরুদ্ধে সৈন্য পাঠানো হয় এবং সেখানকার মন্দির ভেঙ্গে দেওয়া হয়। ওই বছরেই সর্বসাধারণের মধ্যে বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে এবং যোধপুর উদয়পুর তার কেন্দ্রে পরিণত হয়। আওরঙ্গজেব এই দুটি রাজ্যের বিরুদ্ধে সৈন্য প্রেরণ করেন এবং সেখানকার মন্দিরগুলি ধ্বংস করেন। যত মন্দির ধ্বংস হয়েছিল তার সমস্ত স্থানে আগে থেকেই বিদ্রোহ অত্যন্ত প্রবল আকারে দেখা গিয়েছিল।

সম্রাট আওরঙ্গজেব হিন্দু মন্দির ছাড়াও বিভিন্ন হিন্দু শিক্ষালয় ও ধর্মীয় স্থানগুলি ভেঙ্গে দিয়েছিলেন। প্রকৃতপক্ষে আওরঙ্গজেবের রাজত্বলাভের আগে থেকেই হিন্দুদের এক অংশ শক্তিশালী ও হিংস্র হয়ে উঠেছিল। আওরঙ্গজেব যখন তাদের অত্যাচার বন্ধ করার জন্য এগিয়েএলেন তখন তাদের মধ্যে বিদ্রোহ দেখা দেয়। ১০৭৯ হিজরীর জিলকদ মাসে তাঁর রাজ্যাভিষেকের দ্বাদশ বর্ষে (১৬৭৯ খ্রীষ্টাব্দে) আওরঙ্গজেব যখন জানতে পারলেন যে ওই সমস্ত হিন্দুরা মুসলিম শিশুদেরকে সাম্প্রদায়িক শিক্ষা দিচ্ছে এবং এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা ছড়াচ্ছে, তিনি সেগুলি বন্ধ ও ভেঙ্গে ফেলার আদেশ দিয়েছিলেন। তাছাড়াও সম্রাট আওরঙ্গজেব যখন জানতে পারলেন যে, থাট্টা ও মুলতান সুবায় বিশেষত বেনারসে মিথ্যাচারী ব্রাহ্মণের দল অলীক গ্রন্থ স্কুলে পড়াচ্ছে। হিন্দু ও মুসলিম বিদ্যার্থীরা বহু দূরবর্তী পথ অতিক্রম করে সেইসব অভিশপ্ত বিদ্যা অর্জনের জন্য ভ্রষ্টদের কাছে যাচ্ছে। তখন সম্রাট আওরঙ্গজেবসমস্ত সুবার পালনকর্তাদের কাছে আদেশ পাঠান যে, তাঁরা যেন ওই ব্রাহ্মণদের বিদ্যালয় ও উপাসনালয়গুলো ভেঙ্গে দেন।

তাই আওরঙ্গজেবের দ্বারা যেসব মন্দির ও হিন্দুদের শিক্ষালয় ধ্বংস করেছিলেন তা ছিল সম্পূর্ণ রাজনৈতিক। ধর্মের সাথে এর কোন সংযোগই ছিল না।

স্বাধীনতা সংগ্রামে মাওলানা হুসাইন আহমদ মাদানী (রহঃ) এর রোমাঞ্চকর অবদান

 

‘নবজাগরণ’ অ্যান্ড্রোয়েড অ্যাপ্লিকেশনটি প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।

‘নবজাগরণ’ এর টেলিগ্রাম চ্যানেলে জয়েন হতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।

‘নবজাগরণ’ এর ফেসবুক পেজে লাইক করতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।

Post Views: 4,997
Tags: AurangazebManidr Destroy by Aurangazebআওরঙ্গজেবআওরঙ্গজেবের ইতিহাস
ADVERTISEMENT

Related Posts

বিদ্যাসাগরের প্রতি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বিদ্বেষ ও বিরোধীতা
ভারতবর্ষের ইতিহাস

বিদ্যাসাগরের প্রতি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বিদ্বেষ ও বিরোধীতা

একজন বিদ্যার সাগর, আর একজন সাহিত্যের সম্রাট। উভয়েই উনিশ শতকের বিখ্যাত মনীষী ও লেখক এবং পরস্পরের সমকালীন। উনিশ শতকের...

by কামরুজ্জামান
November 13, 2024
মন্দির ধ্বংস এবং ইন্দো-মুসলিম রাষ্ট্রসমূহ
ভারতবর্ষের ইতিহাস

মন্দির ধ্বংস এবং ভারতে মুসলিম শাসনের ইতিবৃত্ত

লিখেছেনঃ রিচার্ড এম. ইটন সম্প্রতি, বিশেষ করে ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর, দক্ষিণ এশিয়ার মন্দির এবং মসজিদের রাজনৈতিক...

by অতিথি লেখক
November 12, 2024
প্রকৃতি, নান্দনিক চৈতন্য ও মরমিবাদ: বাংলার আরবি-ফার্সি শিলালিপির আধ্যাত্মিক দিক
ইসলামিক ইতিহাস

প্রকৃতি, নান্দনিক চৈতন্য ও মরমিবাদ: বাংলার আরবি-ফার্সি শিলালিপির আধ্যাত্মিক দিক

চিত্র ৪.১ (শিলালিপি নং): পাণ্ডুয়ার শায়খ নূর কুতব আল আলমের সমাধিফলকে ব্যবহৃত সাতটি আধ্যাত্মিক উপাধি...

by মুহাম্মাদ ইউসুফ সিদ্দিক
November 7, 2024
সিন্ধু-সভ্যতার অস্তিত্ব সম্পর্কে নতুন ও রোমাঞ্চকর তথ্য উন্মোচন
ভারতবর্ষের ইতিহাস

সিন্ধু সভ্যতার অস্তিত্ব সম্পর্কে নতুন ও রোমাঞ্চকর তথ্য উন্মোচন

মোহেন্-জো-দড়ো—হরপ্পার তথাকথিত সিন্ধু সভ্যতা সম্পর্কে ভারতের মানুষের গর্ববোধের শেষ নেই। ঐ সভ্যতার ‘আবিষ্কার’-এর সঙ্গে সঙ্গে ভারতীয় সভ্যতার বয়স এক...

by বিবস্বান আর্য
November 8, 2024

POPULAR POSTS

  • সুলতান মাহমুদ

    সুলতান মাহমুদের ভারত অভিযান ও সোমনাথ মন্দির প্রসঙ্গ (১ম পর্ব)

    181 shares
    Share 181 Tweet 0
  • বাউরী সম্প্রদায়ের উৎপত্তির ইতিহাস ও ঐতিহাসিক পর্যালোচনা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • আর্যদের ভারত আগমন, বিস্তার, সমাজ ও সভ্যতা: এক ঐতিহাসিক পর্যবেক্ষণ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে বৌদি কাদম্বরী দেবীর সম্পর্ক আদৌ কি প্রেমের ছিল?

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • হিন্দু পদবীর উৎপত্তির ইতিহাস, বিবর্তন ও ক্রমবিকাশঃ বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

Facebook Page

নবজাগরণ

ADVERTISEMENT
নবজাগরণ

'Nobojagaran' is a website of its kind where you can gather knowledge on all the unknown facts of the world. We human beings always have a thirst for knowledge. Nobojagaran takes its first steps to quench this thirst of ours. We are now in the era of digital world, where we get almost anything online. So how about a bit of knowlyfrom online?

Connect With Us

No Result
View All Result

Categories

  • English (9)
  • অন্যান্য (11)
  • ইসলাম (26)
  • ইসলামিক ইতিহাস (22)
  • ইহুদী (1)
  • কবিতা (37)
  • খ্রিস্টান (6)
  • ছোটগল্প (6)
  • নাস্তিকতা (18)
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (24)
  • বিশ্ব ইতিহাস (24)
  • ভারতবর্ষের ইতিহাস (194)
  • রাজনীতি (38)
  • সাহিত্য আলোচনা (68)
  • সিনেমা (17)
  • হিন্দু (16)

Pages

  • Cart
  • Checkout
  • Checkout
    • Confirmation
    • Order History
    • Receipt
    • Transaction Failed
  • Contact
  • Donation to Nobojagaran
  • Homepage
  • Order Confirmation
  • Order Failed
  • Privacy Policy
  • Purchases
  • Services
  • লেখা পাঠানোর নিয়ম
  • হোম
No Result
View All Result
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi

©Nobojagaran 2020 | Designed & Developed with ❤️ by Adozeal

Login to your account below

Forgotten Password?

Fill the forms bellow to register

All fields are required. Log In

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In
Don't have an account yet? Register Now
wpDiscuz
0
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x
| Reply
Open chat
1
Powered by Joinchat
Hi, how can I help you?