• মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
Sunday, June 1, 2025
নবজাগরণ
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ
No Result
View All Result

আমাদের জ্ঞানচর্চা আজও দ্বিখণ্ডিত, পক্ষপাতদুষ্ট ও সাম্প্রদায়িকতায় পরিপূর্ণ

আমিনুল ইসলাম by আমিনুল ইসলাম
May 12, 2021
in অন্যান্য
0
আমাদের জ্ঞানচর্চা আজও দ্বিখণ্ডিত, পক্ষপাতদুষ্ট ও সাম্প্রদায়িকতায় পরিপূর্ণ

Image Source: theteenagertoday

Share on FacebookShare on Twitter

আমাদের পাঠ্যক্রমে যে পাঠ্যসূচি পড়ুয়াদের জন্য নির্দিষ্ট রয়েছে, সেখানে অখণ্ড বাঙালি চেতনা কোথায়? অবিভক্ত বাংলায় ১৯৩৭ থেকে ১৯৪৭ পর্যন্ত চারটি মন্ত্রিসভা গঠিত হয়েছিল। এর মধ্যে দুবার ফজলুল হক মন্ত্রিসভা (১৯৩৭-১৯৪৩), একবার করে নাজিমুদ্দিন মন্ত্রিসভা (১৯৪৩-১৯৪৫), সুরাবর্দি মন্ত্রিসভা (১৯৪৬-১৯৪৭)। ওই সময়ে ব্যবস্থাপক সভায় স্পিকার নওসর আলি, আজিজুল হক সংসদীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে স্মরণীয় নাম। বলা বাহুল্য, ব্যবস্থাপক সভায় মুসলিম সদস্যরা বিপুল সংখ্যায় তখন গরিষ্ঠ ছিলেন। উল্লেখ্য, ব্রিটিশ শাসনের শেষার্ধে মুসলিম নেতৃত্ব ক্রমশ শাসকগােষ্ঠীর সহায়ক হয়ে উঠেছিল। তথাপি রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ব্রিটিশ শাসন ব্যবস্থার চৌহদ্দির মধ্যে থেকেও বাংলার প্রধান নিয়ন্ত্রক শক্তি ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ। যাঁরা ধর্মে মুসলমান। অথচ আমাদের ইতিহাস চর্চা, সাহিত্য-সংস্কৃতি, রাজনৈতিক ও অন্যান্য ক্ষেত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসমষ্টি ভীষণভাবে উপেক্ষিত। প্রতিবেশী মানুষের দৈনন্দিন জীবন সম্পর্কে কোনও ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া সমগ্র বাঙালি জীবনে কোনও ছাপ ফেলতে পারেনি একথা কখনও সত্য ছিল না, এখনও নয়।

আসলে স্বাধীনতা-উত্তর এই ভারতে জ্ঞানচর্চা বস্তুত দ্বিখণ্ডিত, পক্ষপাতদুষ্ট। খণ্ডিত দেশ, তাই সব ক্ষেত্রে খণ্ড ভাবনা। তত্ত্বগতভাবে দ্বিজাতিতত্ত্বের বিরােধিতা। কিন্তু চিন্তা-চেতনায় দ্বিজাতিতত্ত্বের প্রচণ্ড প্রভাব, দ্বিচারিতা। আমরা (বা আমজনতা) কৈশাের থেকেই প্রফুল্ল ঘােষ, বিধানচন্দ্র রায়, সুভাষচন্দ্র, শরৎ বসু, দেশবন্ধু, দেশপ্রিয়, শ্যামাপ্রসাদের নাম জেনে এসেছি। কিন্তু শহীদ সুরাবর্দি, ফজলুল হক, আবুল হাসিম, নিজামুদ্দিন প্রভৃতি নাম বর্তমান প্রজন্মের অজানা। সৈয়দ বদরুদ্দোজা, এ কে এম জাকারিয়া, স্যার মুহাম্মদ আজিজুল হক, ব্যারিষ্টার মাজহারুল হক, রেজাউল করিম সাহেবের নাম ভুলতে বসেছি। মাস্টারদা সূর্যসেন, ক্ষুদিরাম, ভগত সিং, প্রফুল্ল, চাকি, বিনয়-বাদল-দিনেশের নাম মুখে মুখে। কিন্তু গিয়াসুদ্দিন, কাজেম আলী মাস্টার, আব্দুল গফুর, আব্দুস সালাম, সুরেন্দ্রনাথ বড়ুয়া, মহেন্দ্র বড়ুয়া, আব্দুর রাজ্জাক, কুতুবুদ্দিন আহমেদ বিস্মৃত। আচার্য সুনীতি চট্টোপাধ্যায়ের নাম জানি। কিন্তু মুহম্মদ শহীদুল্লাহ প্রায় অপরিচিত। মেঘনাদ সাহার নাম জানা থাকলেও কুদরতে খােদার নাম বর্তমান অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীরা জানে না। কারণ পত্র-পত্রিকায় আলােচনা খণ্ডিত ভৌগােলিক সীমারেখার মধ্যে সীমাবদ্ধ। নাগরিক চেতনা সম্পর্কে নির্দ্বিধায় এ সব কথা প্রযােজ্য হতে পারে। সব ক্ষেত্রেই এই বঙ্গের বুদ্ধিজীবীদের বিচরণ ক্ষেত্র একটি বৃত্তের মধ্যেই। মুখ্য হিন্দু জীবন, হিন্দু সমাজ, হিন্দু দর্শন-ঐতিহ্যকেন্দ্রিক। সুতরাং সবক্ষেত্রে খণ্ডিত বীক্ষণ, এই খণ্ডিত চেতনা অনেক সর্বনাশ করেছে। খণ্ড খণ্ড ভাবনা আমাদের শুধু বিভক্তই নয়, পরস্পর অনেক দূরত্ব রচনা করেছে। অথচ ভারতবর্ষের মনীষার স্বপ্ন সাধনা অখণ্ডতার পথেই।

নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু
নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু, Image Source:, agefotostock

পাঠ্যসূচিতে মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক স্তরে এই খন্ডিত ভাবনার পরিচয় পাওয়া না গেলেও, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্বে রয়েছে বড় রকমের অসঙ্গতি। যেমন বাংলা উপন্যাসের ইতিহাস আলােচনায় প্যারীচাঁদ মিত্রের ‘আলালের ঘরের দুলাল’কে প্রত্নতাত্ত্বিক মহিমা সব লেখকই দিয়েছেন, কিন্তু ‘আলালের’ এক বছর পর রচিত রেভারেন্ড লালবিহারী দে-র ‘চন্দ্রমুখীর উপাখ্যান’ থেকে গেছে ব্যতিক্রমী, এক আধজন ছাড়া সকলের নজরের অগােচরে। একই রকমভাবে বঙ্কিমচন্দ্র-রচিত ‘রাজসিংহ’কে প্রথম সার্থক ঐতিহাসিক উপন্যাস হিসেবে স্বর্ণসিংহাসন দিলেও পাঠ্যবই লেখকেরা এর তিন বছর পর রচিত মীর মশারফ হােসেনের ‘বিষাদসিন্ধু’কে নির্দ্বিধায় নিবার্সনে রেখেছেন। অথচ প্রাসঙ্গিক প্রেক্ষিতে গ্রন্থ দুটির তাৎপর্যপূর্ণ উৎকর্ষ রয়েছে। দুই লেখক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বলেই কি তাঁদের প্রতি এই দুয়ােরানি সুলভ ব্যবহার? অন্য পক্ষে ‘রাজসিংহ’ কিংবা ‘তুঙ্গভদ্রতার তীরে’-র মত উপন্যাসকে আমাদের সিলেবাস-প্রণেতারা অনায়াসে পাঠ্য করে দেন, যার পঠন-পাঠনে বিশেষ এক সম্প্রদায় সম্পর্কে পড়ুয়ারা বিরূ প ও বিকৃত ধারণায় বিধাসী হয়ে উঠতে পারে।।

শুধু কি খন্ড ভাবনা? সাহিত্যে সাম্প্রদায়িকতার প্রসঙ্গ বারবার এসেছে। সংকীর্ণ জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ হওয়ার ফলে উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে ‘হিন্দু ভদ্রলােক’ শ্রেণী হিন্দু-খ্রীষ্টান-মুসলমান ও অন্যান্য সমস্ত লােককে নিয়ে এক ভারতীয় জাতির কথা ভাবতে পারেনি। এই সংকীর্ণ স্বাদেশিকতার প্রেরণাতেই ঈর্থর গুপ্ত-রঙ্গলাল-হেমচন্দ্র-নবীনচন্দ্র প্রভৃতি কবি, জ্যোতিরিন্দ্রনাথ মনােমােহন-গিরিশচন্দ্র প্রভৃতি নাট্যকার এবং বঙ্কিমচন্দ্রের মত ঔপন্যাসিক তাদের কাব্য, নাটক এবং উপন্যাসসমূহে মুসলমান বিদ্বেষ উদ্দীপন করেছেন। তারা জাতীয়তাবাদ বলতে হিন্দু-মুসলমানের সম্মিলিত জাতীয়তাবাদের মর্ম উপলব্ধি করতে সক্ষম হননি। মুসলমান লেখকরাও তেমনি তার প্রতিবাদ করে তীব্র প্রত্যাঘাত হানলেন হিন্দু বিদ্বেষমূলক নানা রচনার মাধ্যমে। ১৮৯৯ খ্রীষ্টাব্দে ‘মহামেডান এডুকেশন কনফারেন্স’–এর অধিবেশনে সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী ‘বঙ্গে মাতৃভাষা শিক্ষা’ প্রবন্ধে হিন্দুদের লেখায় মুসলমান বিদ্বেষের একটা চিত্র তুলে ধরেন। রমেশচন্দ্র, বঙ্কিমচন্দ্র, ঈশ্বরগুপ্ত প্রভৃতি লেখকদের যেসব রচনা থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি তাঁর বক্তব্য প্রতিষ্ঠিত করেন তার তখন অধিকাংশই বিদ্যালয়ে পাঠ্য ছিল। এই কবিতা, নাটক, উপন্যাসগুলির কোন কোনটা বর্তমানেও আমাদের রাজ্যে শিক্ষার কোনও কোনও স্তরে (স্নাতক ও স্নাতকোত্তর) পাঠ্য রয়েছে। এগুলি পাঠে স্বাভাবিকভাবেই হিন্দু ছাত্রদের মনে মুসলমানদের সম্বন্ধে বিরূপ ধারণা হয়।

সব থেকে বেশি গলদ ও একপেশেমি রয়েছে ইতিহাসের পাঠ্যক্রমে। সাম্প্রদায়িক চেতনার সবচেয়ে বড় আশ্রয় ইতিহাসের পঠন-পাঠন। ইতিহাস রচনা ও শিক্ষাদানের কৃৎ-কৌশলের মধ্যেই থাকে তাকে লালন-পালনের সবচেয়ে বড় সুযােগ। তাই সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে যদি জেহাদ ঘােষণা করতেই হয়, তাহলে অবশ্যই তাকাতে হবে, ভারতবর্ষের যে ইতিহাস আমরা পড়ি ও মুখস্ত করিয়া পরীক্ষা দিই তার চরিত্র ও প্রকৃতির দিকে। ইতিহাসবিদ বিপানচন্দ্র বলেছেন,

“আজ এটা ব্যাপকভাবে স্বীকৃত যে গত ১০০ বছর ধরে সাম্প্রদায়িকতার বিস্তারের ক্ষেত্রে ভারতীয় ইতিহাস শিক্ষার একটা বিরাট ভূমিকা রয়েছে। …নিষ্কলুষ সত্যের রঙ যদি সাদা হয় তাহলে বলতেই হবে, আমাদের প্রচলিত ও পাঠ্য ইতিহাসের রঙ আর যাই হােক সাদা নয়।”

১৯৩২ সালে নিযুক্ত ‘কানপুর রায়টস এনকোয়ারি কমিটি’র রিপাের্টের মুখবন্ধে পরিষ্কার করে বলা হয়েছে,

“স্কুলের ও অন্যান্য ইতিহাস বইয়ে মধ্যযুগ ও আধুনিক যুগের ইতিহাসের মধ্যে যেভাবে পক্ষপাতদুষ্ট দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ ঘটেছে তা সম্প্রদায় দুটিকে পরস্পর বিচ্ছিন্ন করার ক্ষত্রে একটি উল্লেখযােগ্য ভূমিকা পালন করেছে। ভারত ইতিহাসের গৌরবময় অধ্যায় ও সংগ্রাগুলােতে সংখ্যাগরিষ্ঠের পাশাপাশি সংখ্যালঘিষ্ঠেরও যে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে তার উল্লেখে পাঠ্যবই রচয়িতারা কৃপণতার পরিচয় দিয়েছেন। কোথাও থেকেছেন চরম উদাসীন।”

গুরুতর ত্রুটি দেখা যাবে আধুনিক অর্থাৎ ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতের ইতিহাসের ক্ষেত্রে। এই পর্বের ইতিহাসের মূল ভিত্তি হওয়া উচিত ছিল জাতীয়তাবােধ। আমাদের পাঠ্য-ইতিহাসে কিন্তু তা হয়নি। ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে যাবতীয় অবৈজ্ঞানিক, সাম্প্রদায়িক, সঙ্কীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গির উৎস সেখানেই। প্রচলিত ইতিহাস আমাদের শেখায় না যে, ৪৫০০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম ভারতবর্ষের মানুষ শিকার হল ঔপনিবেশিকতার। শক-হুন-পাঠান-মুঘল বিজয়ের সঙ্গে ব্রিটিশ শক্তির ভারত-বিজয়ের মৌলিক পার্থক্য উল্লিখিত হয় না আমাদের ইতিহাসে। এই ইতিহাস পাঠে তাই তৈরী হয় না সাম্রাজ্যবাদীদের প্রতি ক্ষোভ, জন্ম নেয় না জাতীয়তাবােধ। যে নিষ্ঠুর নৃশংসতায় ভারতবর্ষের আপামর মানুষকে লুণ্ঠন করেছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি, ধ্বংস করেছিল এদেশের সমৃদ্ধ শিল্পকে, মুজে দিয়েছিল এদেশের বহুকাল প্রচলিত শিক্ষা-ব্যবস্থা, ঢাকা-মুর্শিদাবাদের মত জনাকীর্ণ শহরকে পরিণত করেছিল প্রায় শ্মশাণে, তার প্রায় কোনও বিবরণই থাকে না আমাদের ইতিহাসে। ১৭৬৫ খ্রিঃ থেকে মূলত বাংলাকে লুণ্ঠন করে যে সম্পদ তারা নিয়ে গিয়েছিল সাগর পাড়ি দিয়ে, সেই সম্পদ না পেলে ইংল্যান্ডের সাধের শিল্প বি-ব সফল হত না। এ জন্য কোনও কোনও ঐতিহাসিক এই যুগটার নাম দিয়েছেন বাংলায় লুণ্ঠনের যুগ। এসব কথা আমাদের ছাত্র-পাঠ্য ইতিহাসে স্থান পায় না।

আমরা মুখে অসাম্প্রদায়িকতা বা ধর্মনিরপেক্ষ তার কথা যতই বলি না কেন আমাদের গােটা শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে তার কোনও ছাপ দেখা যায় না। শক-হুন-পাঠান-মুঘল বিজয়ের সঙ্গে ব্রিটিশ শক্তির ভারত-বিজয়ের মৌলিক পার্থক্য উল্লিখিত হয় না আমাদের ইতিহাসে। ভারত ইতিহাসের গৌরবময় অধ্যায় ও সংগ্রামগুলিতে সংখ্যাগরিষ্ঠের পাশাপাশি সংখ্যালঘিষ্ঠেরও যে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে তার উল্লেখে কৃপণতার পরিচয় দেওয়া হয়। যেমন, নীল বিদ্রোহের ইতিহাসে দিগম্বর বিধাস, বিষ্ণুচরণ বিশ্বাস, মথুরনাথ আচার্য, রামরতন মল্লিক প্রমুখের কথা মাধ্যমিক স্তরের বইতে বিশেষভাবে বিবৃত হলেও রফিক মন্ডল, রহিমুল্লাহ, আমিমুদ্দিন, পাঁচু শেখ প্রমুখের নাম উল্লেখ করতেও লেখকরা ভুলে গেছেন। ১৮৫৭-র মহাবিদ্রোহের প্রাসঙ্গিক আলােচনায় তাতিয়া তােপি, নানাসাহেব, কুঁয়ার সিংহরা মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিকের পাঠ্যবইয়ে প্রাপ্য মর্যাদা পেলেও অযােধ্যার বেগম হজরত মহল, দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ, ফিরােজ শাহ, আজিমুল্লাহ, আহমদুল্লাহ, মহম্মদ নজিব, মাওলানা জাফর, রজব আলি, মৌলবি সরফরাজ প্রমুখের ভূমিকার উল্লেখ নম নম করে সারা হয়েছে। স্নাতক স্তরের পাঠ্যক্রমে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিবর্তন’ অধ্যায়ে মুসলিম লিগের ভূমিকা সবিস্তারে বর্ণিত হলেও হিন্দু মহাসভা সম্পর্কে লেখকরা নীরব থেকেছেন। মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যসূচীতে ‘মুসলিম রাজনীতির গতি প্রকৃতি’ শীর্ষক অধ্যায় নির্দিষ্ট করা থাকলেও ‘হিন্দু রাজনীতির গতি প্রকৃতি’ বিষয়ক কোনও অধ্যায় নেই।

একথাও সত্য যে, ইতিহাসের সব সত্যকে কোনও একটি রচনার আধারে ধারণ করা যায় না, তবু ইতিহাস প্রণয়নে ও তথ্য নির্বাচনে দৃষ্টিভঙ্গির প্রণ থেকেই যায়, কারণ দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই বিকশিত হয় ইতিহাসের বহু ব্যাপ্ত জটিল ঘটনা-জাল থেকে মুল ঘটনাস্রোতটিকে চিনে নেওয়ার কুশলতা। মনীষীগণের পথে সে কুশলতা যেমন স্বাভাবিক তেমনই অস্বাভাবিক রাজনীতিজীবীদের পথে। তাই আমরা ইতিহাসের পাঠ্যপুস্তকগুলিতে প্রাক্-ব্রিটিশ বিদেশিদের যে চরিত্র দেখি তা সাধারণত বিধ্বংসী চরিত্র। অবশ্যই বিদেশিরা অনেক সময় আক্রমণকারীরূপে এসেছে, আবার অনেক সময় শান্তির বার্তা বহন করেও এসেছে। কিন্তু পাঠ্যপুস্তকগুলিতে শান্তির বার্তা বহনকারী বিদেশিরা সম্পূর্ণ অনুপস্থিত বললেই হয়। সত্যের একটা দিককে উল্লেখ করলে এবং অপর দিককে উপেক্ষা করলে কী হয়? সত্যের অপলাপই হয়।

আমাদের জ্ঞানচর্চা আজও দ্বিখণ্ডিত, পক্ষপাতদুষ্ট ও সাম্প্রদায়িকতায় পরিপূর্ণ
Beautiful woman looking at books in a library. Ambient light to emphasize the mood and location. Converted from RAW.

আমাদের প্রশ্ন, যে পুস্তক কোনও সম্প্রদায়ের মনে অবজ্ঞার জন্ম দেওয়ার বীজ বহন করে, জাতীয়তাবােধ শেখায় না, তা কেন পাঠ্যে আসবে? এসব নিয়ে কেন সিলেবাস-কর্তারা ভাবেন না? এই খণ্ড দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন এলে জাতি হিসেবে বাঙালি অনেক অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সামনা-সামনি মােকাবিলা করতে সক্ষম হবে। অনায়াসেই কাটিয়ে দিতে পারবে সম্প্রদায়গত ভুল বােঝাবুঝি ও অসুবিধাসকে। উচ্চবিত্ত কিংবা মধ্যবিত্ত সংখ্যগুরু বাঙালির সঙ্গে এ স্তরের সংখ্যালঘুর যাপনপদ্ধতির সে অর্থে কোনও ফারাক থাকা সত্ত্বেও খ্রিষ্টান বা মুসলমান সম্পর্কে যে বিরূপ ধারণা হাতা গেড়ে বসে আছে, তার নিরসন ঘটাতে পারে ওই সম্প্রদায়ের সুস্থ-সার্বিক জীবনাচরণ-সমৃদ্ধ গল্প-উপন্যাস-নাটককে সিলেবাসে আনলে—যা আজকের কোনও স্তরের সিলেবাসে নেই। ফলে একই ভৌগােলিক সীমার মধ্যে বসবাসকারী বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে চেনাজানার অভাব আজও রয়ে গেছে। এ অভাব জন্ম দিচ্ছে। অবিবাসের। গ্রেট ব্রিটেনের একটি ঘটনার কথা এ প্রসঙ্গে স্মরণ করা যায়। ১৯৮১ সালে ব্রাইটনে সাদা-কালাের মধ্যে দাঙ্গা হওয়ার পর ওদেশের সমাজবেত্তারা কারণ হিসেবে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যেকার পারস্পরিক জানাশােনার অভাবকে নির্দেশ করেছিলেন এবং অনতিবিলম্বে ওই সম্প্রদায়ের জীবনচর্যাকে সিলেবাসে এনে সমস্যার সমাধান করেছিলেন। বাঙালি তথা ভারতীয় জীবনের খণ্ডিত ভাবনাকে কি ব্রাইটনের প্রদর্শিত পথে অপনােদন করা যায় না? দুর্ভাগ্য আমাদের, পাঠ্যে আমরা আজও অখন্ড জীবনের পরিচয় তুলে ধরতে সক্ষম হয়নি।

 

‘নবজাগরণ’ অ্যান্ড্রোয়েড অ্যাপ্লিকেশনটি প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।

‘নবজাগরণ’ এর টেলিগ্রাম চ্যানেলে জয়েন হতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।

‘নবজাগরণ’ এর ফেসবুক পেজে লাইক করতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।

 

Post Views: 1,657
ADVERTISEMENT

Related Posts

হুমায়ুন কবীর : যুগসন্ধিক্ষণের শ্রেষ্ঠ প্রতিনিধি
অন্যান্য

হুমায়ুন কবীর : যুগসন্ধিক্ষণের শ্রেষ্ঠ প্রতিনিধি ও একজন বিদগ্ধ বাঙালী বুদ্ধিজীবি

বাঙালি মুসলমানদের মধ্যে প্রথম ব্যক্তি যিনি একদিকে আধুনিক শিল্প-সাহিত্যের জগতে বিচরণ করেছেন সবলীলভাবে, পাশাপাশি রাষ্ট্রিক-সামাজিক ক্ষেত্রে লাভ করেছেন ঈর্ষণীয়...

by আমিনুল ইসলাম
December 25, 2021
শিক্ষায় অনিলায়ন
অন্যান্য

শিক্ষায় অনিলায়ন : পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ

শিক্ষায় অনিলায়ন নিয়ে অনেকদিন ধরেই লেখার ইচ্ছা আমার আছে। অনিলায়নের প্রভাব শুধু আমার উপর নয় সমস্ত পশ্চিমবঙ্গবাসীর উপর পড়েছিল।...

by চৌধুরী আতিকুর রহমান
May 12, 2021
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে বৌদি কাদম্বরী দেবীর সম্পর্ক আদৌ কি প্রেমের ছিল?
অন্যান্য

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে বৌদি কাদম্বরী দেবীর সম্পর্ক আদৌ কি প্রেমের ছিল?

লিখেছেনঃ পুলক চট্টোপাধ্যায় “ফুলের তােড়ার ফুলগুলিই সবাই দেখিতে পায়, যে বাঁধনে তাহা বাঁধা থাকে তাহার অস্তিত্বও কেহ জানিতে পারে...

by অতিথি লেখক
May 12, 2021
কাদম্বরী দেবী
অন্যান্য

কাদম্বরী দেবীঃ রবী ঠাকুরের নতুন বউঠানের কিছু অজানা তথ্য

লিখেছেনঃ মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম ‘কুশারী বংশের পঞ্চানন ঠাকুর পাথুরেঘাটা, জোড়াসাঁকো ও কয়লাঘাটের ঠাকুর গােষ্ঠীর আদি পুরুষের অন্যতম। পঞ্চাননের পুত্র...

by মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম
October 15, 2022

POPULAR POSTS

  • সুলতান মাহমুদ

    সুলতান মাহমুদের ভারত অভিযান ও সোমনাথ মন্দির প্রসঙ্গ (১ম পর্ব)

    181 shares
    Share 181 Tweet 0
  • বাউরী সম্প্রদায়ের উৎপত্তির ইতিহাস ও ঐতিহাসিক পর্যালোচনা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • আর্যদের ভারত আগমন, বিস্তার, সমাজ ও সভ্যতা: এক ঐতিহাসিক পর্যবেক্ষণ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে বৌদি কাদম্বরী দেবীর সম্পর্ক আদৌ কি প্রেমের ছিল?

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • হিন্দু পদবীর উৎপত্তির ইতিহাস, বিবর্তন ও ক্রমবিকাশঃ বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

Facebook Page

নবজাগরণ

ADVERTISEMENT
নবজাগরণ

'Nobojagaran' is a website of its kind where you can gather knowledge on all the unknown facts of the world. We human beings always have a thirst for knowledge. Nobojagaran takes its first steps to quench this thirst of ours. We are now in the era of digital world, where we get almost anything online. So how about a bit of knowlyfrom online?

Connect With Us

No Result
View All Result

Categories

  • English (9)
  • অন্যান্য (11)
  • ইসলাম (26)
  • ইসলামিক ইতিহাস (22)
  • ইহুদী (1)
  • কবিতা (37)
  • খ্রিস্টান (6)
  • ছোটগল্প (6)
  • নাস্তিকতা (18)
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (24)
  • বিশ্ব ইতিহাস (24)
  • ভারতবর্ষের ইতিহাস (194)
  • রাজনীতি (38)
  • সাহিত্য আলোচনা (68)
  • সিনেমা (17)
  • হিন্দু (16)

Pages

  • Cart
  • Checkout
  • Checkout
    • Confirmation
    • Order History
    • Receipt
    • Transaction Failed
  • Contact
  • Donation to Nobojagaran
  • Homepage
  • Order Confirmation
  • Order Failed
  • Privacy Policy
  • Purchases
  • Services
  • লেখা পাঠানোর নিয়ম
  • হোম
No Result
View All Result
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi

©Nobojagaran 2020 | Designed & Developed with ❤️ by Adozeal

Login to your account below

Forgotten Password?

Fill the forms bellow to register

All fields are required. Log In

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In
Don't have an account yet? Register Now
wpDiscuz
0
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x
| Reply
Open chat
1
Powered by Joinchat
Hi, how can I help you?