• মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
Friday, May 9, 2025
নবজাগরণ
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ
No Result
View All Result

হরপ্পা-মহেঞ্জোদারো বর্তমানে পাকিস্তানের ভৌগলিক সীমারেখার অন্তর্ভূক্ত

আমিনুল ইসলাম by আমিনুল ইসলাম
June 10, 2021
in বিশ্ব ইতিহাস, ভারতবর্ষের ইতিহাস
1
হরপ্পা-মহেঞ্জোদারো বর্তমানে পাকিস্তানের ভৌগলিক সীমারেখার অন্তর্ভূক্ত

Image Source: flickr

Share on FacebookShare on Twitter

যেভাবে ভারতীয়ত্বের নামে হিন্দুত্বকে চালাতে চাইছে তাতে ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতা কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। তাদের প্রচারের মূলতত্ত্ব হচ্ছে হিন্দুত্ব, যার অর্থ ভারতীয় সংস্কৃতি মানে হিন্দু সংস্কৃতি ও ভারতীয় মন হচ্ছে হিন্দুমন। কাজেই যদি সংখ্যালঘুদের বিশেষ করে মুসলমান ও খ্রিষ্টানদের ভারতে বাস করতে হয় তা হলে তাদের হিন্দু সভ্যতা ও হিন্দুধর্মের মূলস্রোতের সংগে একাত্ম হতে হবে। নতুবা ‘রামচন্দ্রের ভারতে’ তারা থাকতে পারবে না।

ইতিহাসের মাপকাঠিতে হিন্দুত্ব তত্ত্ব টেকে না। ইতিহাস বলে, ভারতীয় সভ্যতা বলতে কেবল হিন্দু সভ্যতা নয়। ভারতীয় সংস্কৃতি একমুখী নয়। ইতিহাসগতভাবে ভারতীয় সংস্কৃতি যেভাবে গড়ে উঠেছে তা বহু ধারার সংমিশ্রণ। বহু ঘাতপ্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে গড়ে উঠেছে দৃঢ় সম্প্রীতি, এক মিশ্র ভারতীয় সংস্কৃতি। যৌথ সংস্কৃতি হঠাৎ করে আকাশ থেকে ঘসে পড়েনি। গড়ে উঠেছে দীর্ঘদিনের দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই। সম্প্রতি ভারতের নৃতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণ এর তরফে ভারতের জনসমষ্টি নিয়ে প্রায় এক দশকের গবেষণার বিপুল তথ্যপ্রকাশ করা হয়েছে। দেশব্যাপী ৫০০ জন বিশেষজ্ঞ গবেষক এই তথ্য জোগাড় করেছেন। কয়েকটি লক্ষণীয় তথ্য হল,

  • ১) জনগণ হিসেবে ভারতীয়রা সমরূপ, সমধর্মী নন। কমপক্ষে ৪৬৩৫টি সম্প্রদায়ের চিহ্নিতযােগ্য বৈচিত্র্য রয়েছে।
  • ২) এদেশে কেউ ‘বিদেশী’ নন, খাঁটি ‘আর্য’ও নন। বেশিরভাগ সম্প্রদায় মিশ্র বংশােদ্ভূত। বিভিন্ন জাতিগত উপাদান এমনভাবে মিশ্রিত যে তাদের বিশদ্ধ বৈশিষ্ট্য খুঁজে পাওয়া আজ অসম্ভব।
  • ৩) পরিবেশ বসতি, খাদ্যাভাস, বিবাহ পদ্ধতি, পেশা, সংযােগের ধরন, সামাজিক প্রথার মত এমন ৭৭৫টি অভিন্ন বৈশিষ্ট্য আছে যা ধর্মের গন্ডি মানে না।
  • ৪) হিন্দুদের সঙ্গে মুসলমানদের অভিন্ন বৈশিষ্ট্য ৯৬.৯৭ শতাংশ। বৌদ্ধ ও মুসলিমদের ৯১.১৮ শতাংশ, শিখ ও মুসলমানদের ৮৯.৯৫ শতাংশ।

আরএসএস কিন্তু স্বীকার করে না, ভারত বহু সংস্কৃতির মিলনে মিশ্রণে সমৃদ্ধ। মানতে চায় না, বৈচিত্র্য সত্বেও ঐক্যই ভারতের বৈশিষ্ট্য। ধর্মীয় সত্ত্বা ছাপিয়ে ভারতীয়দের মধ্যে এক সাংস্কৃতিক মিলন আছে—মানতে চায় না তাও। তাদের কাছে যা কিছু অহিন্দু তা ভারতীয় নয়। তাহলে ভারতের সংস্কৃতিতে মুসলিমদের কোনও অবদান নেই? ভারতের সংস্কৃতি মধ্যযুগে তাে বটেই বর্তমানেও প্রতিনিয়ত নতুন নতুন মুসলিম সমাজ ও ব্যক্তিগতভাবে মুসলিম বুদ্ধিজীবীদের অবদানে উন্নত হচ্ছে না? ভারতীয় সংগীত, সাহিত্য, স্থাপত্য, শিল্পকলা, চিত্রকলা, সিনেমা কখনও কি মুসলিমদের বাদ দিয়ে ভাবা যায়। মুসলিম রাজাবাদশাহরা এসেছে, এখানেই থেকে গিয়েছে এবং ভারতীয় সভ্যতার অঙ্গীভূত হয়েছে—একদিন যেমনটা হয়েছিল আর্য, অনার্য, দ্রাবিড়, চীন, শক, হুন, প্রভৃতি জনগােষ্ঠী।

হরপ্পা-মহেঞ্জোদারো
‘INDUS JOURNEY’, RUINS OF THE GREAT BATH AT THE ANCIENT CITY OF MOHENJODARO., Image Source: alamy

আসলে ধর্মের ভিত্তিতে জাতিভেদ কোনও বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব নয়। একই জাতির মধ্যে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষ থাকতে পারে। যেমন বাঙালি বা মালয়ালী বা তামিল—তারা হিন্দু, মুসলিম, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ যাই হােক না কেন জাতিতে এক। একই হিন্দু ধর্মের মধ্যে বাঙালি জাতি, ওড়িয়া জাতি, তামিল জাতি, এমনকি নেপালের নেপালী জাতি আছে। ধর্মে খ্রিষ্টান অথচ জাতিতে পৃথক যেমন ইংরেজ, আমেরিকান, জার্মান ইত্যাদি। মুসলিমদের মধ্যেও বাঙালি, ওড়িয়া, তামিল প্রভৃতি জাতি আছে। ধর্মের ভিত্তিতে জাতিভেদ করা ইচ্ছাকৃত একট ভয়ঙ্কর ভুল। আর সেই কারণেই হিন্দু জাতির তত্ত্বটি একটি নিপাট বুজরুকি, কেননা, হিন্দুরা কোনও জাতি নয়। ভারতের কিরাত ও নিষাদ ভূমিপুত্রদের সঙ্গে ভূমধ্যসাগরীয় দ্রাবিড়, নর্ডিক, আলপিনয়েড ও আর্মেনয়েডদের দ্রবণে উদ্ভূত এক মিশ্র জাতি। যে অর্থে ইহুদিরা একটি জাতি, সে অর্থে হিন্দু কোনও জাতি নয়। জাতি হিসাবে হিন্দুরা যেমন অখন্ড নয়, হিন্দুর ধর্মও তেমনই কোনও সুসংজ্ঞায়িত ধর্ম নয়। এমন বহুত্ববাদী ধর্ম আর হয় না। শৈব, শাক্ত, গাণপত্য বা বৈষ্ণব—কেউ কারও চেয়ে কম হিন্দু নয়, এমনকি ঈধরে অবিধাসী চার্বাকরাও হিন্দু। অঞ্চল ভেদে, জনগােষ্ঠী ভেদের হিন্দু ভিন্নরূপ পরিগ্রহ করে থাকে। এদের কাছে হিন্দু সংস্কৃতি বলতে কিছু বােঝায় না—যা বােঝার তা হল ভারতীয় সংস্কৃতি। তাদের কাছে হিন্দু সংস্কৃতির সন্ধান তত জরুরী নয় যত জরুরি ভারত ও তার সংস্কৃতিকে আবিস্কার করা। বেশি জরুরি ওয়াজেদ আলির ‘ভারতীয় ট্রাডিশন’–যা ভারতীয় নাগরিকদের যুগ যুগ ধরে সঞ্জীবিত করে চলেছে। এদেশ যতটা হিন্দুদের ততটাই মুসলমান, শিখ ও খ্রিষ্টানের, ততটাই দলিত আদিবাসী ও পশ্চাপদদের। এরা সকলে এক হয়ে নয়, একাত্ম হয়ে নিজ নিজ বৈশিষ্ট্য বজায় রেখে ভারতীয় বৈচিত্র্যকে প্রকাশ করে চলেছে। এই বৈচিত্র্যতার আদর্শ ভারতকে মহান করেছে। তাই তাে আর্যরা একদা বহিরাগত হলেও তাদের ধর্ম সংস্কৃতি ও পুরান যেমন ভারতীয় সভ্যতার অঙ্গ, তেমনই ভক্তিবাদ অবিভাজ্য ভারতীয় সভ্যতারই অংশ হয়ে গেছে। এই উপমহাদেশে মুসলিম সভ্যতা-সংস্কৃতির যাবতীয় কেন্দ্রগুলি এই ভারতেরই। নিয়তির পরিহাস হলেও এটাই সত্য যে, প্রাচীনতম ভারতীয় সভ্যতার বিকাশ কেন্দ্র হরপ্পা মহেঞ্জোদারাে আজ পাকিস্তানের ভূগােলের অন্তর্গত।

ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ হিন্দু এবং তারা তাদের ধর্মীয় আচার, সংস্কৃতি মেনে নিজেদের জীবন চালাবে সেটা তাদের অধিকার। কিন্তু আর এস এস ‘হিন্দুত্ব’ বলে যা চালাবার চেষ্টা করছে সেটা আসলে কি জিনিস? রামকৃষ্ণের হিন্দুত্বের সঙ্গে ভাগবতের হিন্দুত্বের কতটা মিল? উত্তর ভারতে যেমন রাম জনপ্রিয়, দক্ষিণ ভারতের অনেক অংশে তেমনই রাবণ জনপ্রিয়। অদ্বৈতবাদে বিধাসী হলে, একজন ভগবান আছে বিধাসী হলে আপনি হিন্দু। আবার ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহের এই তিন ভগবানে বিধাস করলেও আপনি হিন্দু। আপনি যদি তেত্রিশ কোটি দেবদেবীর সত্ত্বায় বিধাসী নাও হন তাহলেও আপনি হিন্দু। ভগবান, দেবদেবী না মানলেও আপনি হিন্দু। নিজেকে হিন্দু না বললেও, মুসলমান বা খ্রিষ্টান না হয়ে গেলে, আপনি হিন্দুই থাকবেন। হিন্দুধর্ম চিরকালই এরকম ঢিলেঢালা, ছড়ানাে—এটাই হিন্দুধর্মের শক্তি। হিন্দুর বিধাস একটা নয়, নানা হিন্দুর নানা পরস্পর বিরােধী বিধাস। এই বৈচিত্র্যটাই হিন্দুধর্মের ভিত্তি। দেখুন বেদ, বেদাঙ্গ, বেদান্ত, পুরাণ, উপনিষদ কোথাও হিন্দু কথাটা পাওয়া যাবে না। ব্রাহ্মণ্য ধর্ম কথাটা আছে, যার মূলকথা সমাজে ব্রাহ্মণরা অগ্রণী। রামায়ণে রামের পরিচয় আর্যপুত্র।

হরপ্পা-মহেঞ্জোদারো
PAKISTAN – DECEMBER 10: Ruins of the archaeological site of Harappa, Indus Valley civilisation, 3rd millennium BC, Punjab, Pakistan. (Photo by DeAgostini/Getty Images)

ইউরােপীয়রা ‘মুসলমান’ কাকে বলে জানত। কিন্তু তারা হিন্দু কথাটার সঙ্গে পরিচিত ছিল না। আলবেরুনি, ইবন বতুতা, হিউয়েন সাঙ, ফা হিয়েন, ম্যানরিক এইসব ভূপর্যটকদের কারও লেখাতেই ‘হিন্দু’ কথাটা পাওয়া যাবে না। কারণ অন্য ধর্মগুলি যেভাবে সংগঠিত রূপ নিয়ে গড়ে উঠেছে, সেভাবে হিন্দুধর্ম গড়ে ওঠেনি। প্রথম দিকে ‘হিন্দু’ ছিল একটা ভৌগােলিক সংজ্ঞাসিন্ধুনদীর পূর্ব দিকে যাদের অবস্থান। সিন্ধ থেকে হিন্দু—এ কৃতিত্ব তাে বিদেশীদের, আরও স্পষ্ট করে পারসিক বা আরবীয়দের। তাহলে হিন্দু উৎস বলতে কি বােঝাচ্ছে? যা বােঝায় তা হল ভারতীয় উৎস, যা বােঝায় তা হল ভারতীয় সংস্কৃতি। এই ভারত যতটা হিন্দুর, ততটাই মুসলমান, খ্রিষ্টান, শিখ ও বৌদ্ধদের, ততটাই দলিত আদিবাসী ও অনগ্রসরদের। এই ভারত শুধু হিন্দুর নয় কিংবা মুসলমান-খ্রিষ্টান-বৌদ্ধদের নয়। নানান সংস্কৃতির মিশ্রণ এই ভারত। একে হিন্দু উৎস বলে না, বলে ভারতীয় ঐতিহ্য। আর এস এস কিন্তু এই ঐতিহ্যকে স্বীকার করে না। তারা হিন্দুত্বকেই ভারতীয়ত্ব বলে জাহির করতে চান। তারা যখন ভারতীয় মূলধারার কথা বলেন তখন প্রকারন্তরে হিন্দুত্বকেই প্রচার করেন। সেই হিন্দুত্বকে গ্রহণীয় করার জন্য নানারকম সূক্ষ্ম ব্যাখ্যার ধুম্রজাল রচনা করেন। সাধারণ মানুষ কিন্তু এতসব সূক্ষ্মকথার মারপ্যাঁচ বােঝে না। তারা জানে হিন্দুত্ব, খ্রিষ্টান বা ইসলাম ধর্মের মত একেশ্বরবাদী ধর্ম হলেও এটা এমন একটা বহুত্ববাদী ধর্মাচার যা অনেকগুলি গ্রন্থ, বহু মুনি-ঋষি ও অসংখ্য দেবদেবী নির্ভর। হিন্দুত্বের যাবতীয় দার্শনিক ব্যাখ্যা পন্ডিতদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। সাধারণ মানুষ সে সব নিয়ে বিশেষ মাথা ঘামায় না। সুতরাং হিন্দুত্বকে ভারতীয়ত্ব বলে চালাতে চাইলে মুসলমান বা খ্রিষ্টানদের দ্বারা সেটা কিছুতেই গ্রহণীয় হয় না। অথচ আর এস এস প্রধান সেটাই চান—সংখ্যালঘুরা হিন্দুত্ব মেনে নিক।।

আরএসএস ইন্দোনেশিয়ার দোহায় দিয়ে ভারতের মুসলমানদের হিন্দু সংস্কৃতির অন্যতম অঙ্গ রামায়ণ-মহাভারত সুকৌশলে গলাধঃকরণের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা বলছে, ইন্দোনেশিয়ার মুসলমানেরা যদি হিন্দু সংস্কৃতি মেনে নেয় তাহলে ভারতীয় মুসলমানদেরও সেটাই মেনে নিতে হবে। মােহন ভাগবতরা বােধহয় জানেন না ইন্দোনেশিয়ার মুসলমানেরা ধর্মগ্রন্থ হিসেবে ঐ দুই মহাকাব্যকে পাঠ করেন না। তবে এটা ঠিক যে, ওদের দেশের লােকসংস্কৃতির ভিত্তি রামায়ণ ও মহাভারত। ইন্দোনেশিয়ার নাটক, থিয়েটার, কবিগান এসবেরও মূল উপাদান ঐ দুই মহাকাব্য। এসবই আমােদ-প্রমােদের জন্য পরিবেশিত হয়। আমাদের ভারতেও বাইবেল ও অন্যান্য ধর্মগ্রন্থের বহু কাহিনিগুলি অনুরূপভাবে পরিবেশিত হয়ে থাকে। আবার অনেক হিন্দুরা শিশুর মুখে ভাত অনুষ্ঠানে সত্যপীরের সিরনি অত্যাবশ্যক মনে করেন। শুধু তাই নয়, হাজার হাজার হিন্দুরা আজমীর, হিজলী বা অন্যপীরের মাজারে ছুটে যান মনােবাসনা পূরণের জন্য। এই শ্রদ্ধা নিবেদনের অর্থ এই নয় যে, ঐ সমস্ত হিন্দুরা মুসলিম সংস্কৃতি মেনে নিল। আসলে ইন্দোনেশিয়ার অধিবাসীরা ধর্মবােধের বিচারে যেমন মুসলমান তেমনই ঐ দুই মহাকাব্যকেও তারা ভালবাসে—এই দুই ভালবাসার মধ্যে কোনাে দ্বন্দ্ব ওরা এতদিন দেখেনি। এখন বিজেপি-র আত্মা আর এস এস-এর সাম্প্রদায়িকতাকে নিয়ে ওদের ভাবতে হবে (একইভাবে ভাবাবে থাইল্যান্ড, লাওস, কম্বােডিয়া ও ব্রহ্মদেশের বৌদ্ধদেরও)। যেখানে পুরাতন সাংস্কৃতিক যােগসূত্রকে ভিত্তি করে আমাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ককে বাড়াতে পারতাম, যেমন পেরেছি নেহেরুর সময়ে, সেখানে আর এস এসএর সাম্প্রদায়িকতা ওদের হয়তাে ভারত থেকে দূরে ঠেলে দিবে।

আসলে ভারতবাসীর মধ্যে ‘হিন্দু সংস্কৃতি’র অনুসন্ধান করতে গেলে গলদঘর্ম হতে হবে। বেশভূষার ক্ষেত্রে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে যে বিভিন্নতা রয়েছে তার কী হবে? দক্ষিণীদের কি লুঙ্গির মত কাপড় না পরে বাঙালিদের মতাে কেঁচা করে কাপড় পরতে হবে, নাকি সবাইকেই উত্তর ভারতের মত শেরওয়ানি পাঞ্জাবী পরতে হবে? তবে অভিন্ন ভাষা, অভিন্ন উপাসনা পদ্ধতি, জীবনযাত্রার অভিন্ন পদ্ধতি বা অভিন্ন অন্ত্যেষ্টি প্রক্রিয়াই বা কী দোষ করল? যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার প্রয়ােজনই বা কোথায়? ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের কোনও রাজ্যে আজও দায়ভাগ চলে, যেমন পশ্চিমবাংলায় কোনও রাজ্যে চলে মিতারা, যেমন ওড়িশায় ও ভারতের বেশীরভাগ অঞ্চলে মিতা রাতে নারী তার উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত। আবার মেঘালয়ে কনিষ্ঠ কন্যাই সম্পত্তির তত্ত্বাবধায়ক। কিন্তু মেঘালয়ের খাসি বিধি কোনওভাবেই হিন্দু বিধির অন্তর্ভুক্ত নয়। ভারতের এক এক নাগরিকের বেলায় অঞ্চল বা জন্মস্থান অনুসারে অর্থাৎ এক এক রাজ্য ক্ষেত্র অনুসারে এবং এক এক লিঙ্গ অনুসারে এক এক রকম বিধির আজও বহাল থাকা সংবিধানের ব্যর্থদ্যোতক নয় কি? দত্তক গ্রহণ, উইল না রেখে মৃত্যু ও উত্তরাধিকার, যৌথ পরিবার ও বিভাজন প্রভৃতি বিষয়গুলির বেলায় লিঙ্গ বৈষম্য তথা স্ত্রী-পুষের জন্য পৃথক পৃথক ব্যবস্থা নাগরিকের মূল অধিকার ভঙ্গের দৃষ্টান্ত নয় কি? বিভিন্ন উপজাতিই বা নিজেদের ঐতিহ্য অনুযায়ী প্রথাগত নানা অধিকার ভােগ করবে কেন? উল্লেখ্য, দেশের ৮ শতাংশ উপজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষের জন্য আলাদা আইন রয়েছে। অরুণাচল প্রদেশে উপজাতিদের মধ্যে বহু বিবাহ প্রচলিত। এমন পর্যন্ত দেখা গেছে যে, একজন পুরুষ ১০ জন স্ত্রীকে নিয়ে আছেন। সেখানে বিয়ে হলে মেয়ের পরিবার যৌতুক পায়। গােয়াতে বহুবিবাহ আইন সিদ্ধ। এমন বিভিন্নতার কী হবে?

গােলওয়ালকার ও তার উত্তরসূরীদের কাছে জিজ্ঞাসা—আমাদের জাতীয় প্রতীক অশােকস্তম্ভর ভবিষ্যৎ কী হবে? এটা তাে বৌদ্ধ সংস্কৃতির অঙ্গ। বর্তমানকালে মােদী-শাহরা ভারতীয় যে সব অট্টালিকা ব্যবহার করেন সেগুলাের কি হবে? কারণ সবই প্রায় ইউরােপীয় বা ইসলামিক স্থাপত্যের অনুকরণে নির্মিত। হিন্দু স্থাপত্যের ধারে কাছে নেই। আর রামলালার স্থান তাে ভারতে হবে না। ভাষাতত্ত্বের বিচারে লালাকে তাে বর্তমানে ইরানে ফিরে যেতে হবে। একইভাবে ইরানে ফিরতে হবে ‘শাহ’কেও। মহাভারত বা অন্যান্য পৌরাণিক গ্রন্থে পাশাখেলা, সােজা কথায় জুয়াখেলার উল্লেখ আছে। এদের হিন্দুরাষ্ট্রে জুয়া খেলা আর বে-আইনি থাকবে মনে হয় না। এমনকি জাতীয় খেলারও মর্যাদা পেতে পারে।

সংঘ পরিবার বুঝতে পারছে না, করসেবকদের উর্দ্ধতন পূর্বপুরুষের ক্ষমতা নেই আজ আবার নতুন করে ভারতীয় সভ্যতাকে তথাকথিত হিন্দু সভ্যতায় রূপান্তরিত করা। তা করতে গেলে নিজেদের উত্তরাধিকারকেই অস্বীকার করতে হবে। আগে ‘মানুষ’ না হলে যেমন হিন্দু বা মুসলিম কিছুই হওয়া যায় না, হলেও তাতে কিছু আসে যায় না, তেমনই আগে ভারতীয় হলে ‘হিন্দু’ হওয়া অর্থহীন।

 

‘নবজাগরণ’ অ্যান্ড্রোয়েড অ্যাপ্লিকেশনটি প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।

‘নবজাগরণ’ এর টেলিগ্রাম চ্যানেলে জয়েন হতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।

‘নবজাগরণ’ এর ফেসবুক পেজে লাইক করতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।

 

Post Views: 3,555
Tags: Harappa mohenjo daroharappa mohenjo daro in pakistanHarappan civilizationMohenjo Daroআরএসএসপাকিস্তানপ্রাচীনতম ভারতীয় সভ্যতাবৈদিক সভ্যতামহেঞ্জোদারোসংঘ পরিবারসভ্যতার ইতিহাসহরপ্পাহরপ্পা-মহেঞ্জোদারোহরপ্পা-মহেঞ্জোদারো বর্তমানে পাকিস্তানের ভৌগলিক সীমারেখার অন্তর্ভূক্ত
ADVERTISEMENT

Related Posts

বিদ্যাসাগরের প্রতি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বিদ্বেষ ও বিরোধীতা
ভারতবর্ষের ইতিহাস

বিদ্যাসাগরের প্রতি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বিদ্বেষ ও বিরোধীতা

একজন বিদ্যার সাগর, আর একজন সাহিত্যের সম্রাট। উভয়েই উনিশ শতকের বিখ্যাত মনীষী ও লেখক এবং পরস্পরের সমকালীন। উনিশ শতকের...

by কামরুজ্জামান
November 13, 2024
মন্দির ধ্বংস এবং ইন্দো-মুসলিম রাষ্ট্রসমূহ
ভারতবর্ষের ইতিহাস

মন্দির ধ্বংস এবং ভারতে মুসলিম শাসনের ইতিবৃত্ত

লিখেছেনঃ রিচার্ড এম. ইটন সম্প্রতি, বিশেষ করে ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর, দক্ষিণ এশিয়ার মন্দির এবং মসজিদের রাজনৈতিক...

by অতিথি লেখক
November 12, 2024
প্রকৃতি, নান্দনিক চৈতন্য ও মরমিবাদ: বাংলার আরবি-ফার্সি শিলালিপির আধ্যাত্মিক দিক
ইসলামিক ইতিহাস

প্রকৃতি, নান্দনিক চৈতন্য ও মরমিবাদ: বাংলার আরবি-ফার্সি শিলালিপির আধ্যাত্মিক দিক

চিত্র ৪.১ (শিলালিপি নং): পাণ্ডুয়ার শায়খ নূর কুতব আল আলমের সমাধিফলকে ব্যবহৃত সাতটি আধ্যাত্মিক উপাধি...

by মুহাম্মাদ ইউসুফ সিদ্দিক
November 7, 2024
রহস্য উদ্ঘাটন মূলক বিশ্বাস খ্রিস্টানদের ইজরাইল সমর্থনের বড় কারণ
ইসলাম

‘রহস্যউদ্ঘাটনমূলক’ বিশ্বাস আমেরিকান খ্রিস্টানদের ইহুদি ও ইজরাইল সমর্থনের বড় কারণ

লিখেছেনঃ মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম রহস্য উদ্ঘাটন পন্থী খ্রিস্টান মৌলবাদীরা ‘বাইবেল সংক্রান্ত কারণে’ আরও ব্যপকভাবে ফিলিস্তিন-ইজরাইল সংঘাত বৃদ্ধি পাচ্ছে। [Apocalypse...

by মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম
November 8, 2024

POPULAR POSTS

  • সুলতান মাহমুদ

    সুলতান মাহমুদের ভারত অভিযান ও সোমনাথ মন্দির প্রসঙ্গ (১ম পর্ব)

    181 shares
    Share 181 Tweet 0
  • বাউরী সম্প্রদায়ের উৎপত্তির ইতিহাস ও ঐতিহাসিক পর্যালোচনা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • আর্যদের ভারত আগমন, বিস্তার, সমাজ ও সভ্যতা: এক ঐতিহাসিক পর্যবেক্ষণ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে বৌদি কাদম্বরী দেবীর সম্পর্ক আদৌ কি প্রেমের ছিল?

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • হিন্দু পদবীর উৎপত্তির ইতিহাস, বিবর্তন ও ক্রমবিকাশঃ বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

Facebook Page

নবজাগরণ

ADVERTISEMENT
নবজাগরণ

'Nobojagaran' is a website of its kind where you can gather knowledge on all the unknown facts of the world. We human beings always have a thirst for knowledge. Nobojagaran takes its first steps to quench this thirst of ours. We are now in the era of digital world, where we get almost anything online. So how about a bit of knowlyfrom online?

Connect With Us

No Result
View All Result

Categories

  • English (9)
  • অন্যান্য (11)
  • ইসলাম (26)
  • ইসলামিক ইতিহাস (22)
  • ইহুদী (1)
  • কবিতা (37)
  • খ্রিস্টান (6)
  • ছোটগল্প (6)
  • নাস্তিকতা (18)
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (24)
  • বিশ্ব ইতিহাস (24)
  • ভারতবর্ষের ইতিহাস (194)
  • রাজনীতি (38)
  • সাহিত্য আলোচনা (68)
  • সিনেমা (17)
  • হিন্দু (16)

Pages

  • Cart
  • Checkout
  • Checkout
    • Confirmation
    • Order History
    • Receipt
    • Transaction Failed
  • Contact
  • Donation to Nobojagaran
  • Homepage
  • Order Confirmation
  • Order Failed
  • Privacy Policy
  • Purchases
  • Services
  • লেখা পাঠানোর নিয়ম
  • হোম
No Result
View All Result
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi

©Nobojagaran 2020 | Designed & Developed with ❤️ by Adozeal

Login to your account below

Forgotten Password?

Fill the forms bellow to register

All fields are required. Log In

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In
Don't have an account yet? Register Now
wpDiscuz
1
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x
| Reply
Open chat
1
Powered by Joinchat
Hi, how can I help you?