• মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
Sunday, June 1, 2025
নবজাগরণ
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ
No Result
View All Result

ভারতীয় চলচ্চিত্রে ইতালীয় ধারাঃ বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা

নবজাগরণ by নবজাগরণ
August 4, 2020
in সিনেমা
1
ভারতীয় চলচ্চিত্রে

Image Source: monster

Share on FacebookShare on Twitter

লিখেছেনঃ মীরা সেন

সিনেমার চরিত্রের একটি বিশেষ দিক হচ্ছে এই যে তার পঞ্চাশ বছরের সংক্ষিপ্ত ইতিহাসে তার প্রেরণার কেন্দ্র দেশ থেকে দেশান্তরে গতিশীল। চলচ্চিত্রের কখনাে এর অঙ্কশায়িতা কখনাে ওর; পর পর হলিউড, জার্মানি, রাশিয়া, ব্রিটেন এবং ফ্রান্স এই শিল্পের শ্রেষ্ঠ রপকে প্রকাশ করেছে। আরাে দেখা যায় যে সিনেমার শ্রেষ্ঠ পরিণতি হয়েছে ব্যবসায়িক শৃঙ্খলার চৌহদ্দির মধ্যে নয়; বরঞ্চ ব্যবসায়িক ছাঁদের বাইরে ছবি তৈরি যেখানে আর্থিক অনিশ্চয়তায় সঙ্কটাপন্ন, সেখানেই তার আশ্চর্য পরিণতি। তাই যুদ্ধের পর্বে ফরাসী সিনেমা যখন সারা পৃথিবীর শিক্ষাগুরু, তখন রেনােয়া, কার্ণে, প্রেভে ও ভিগাে এবং সেযুগের শ্রেষ্ঠ শিল্পীরা পথিবীর একাধিক শ্রেষ্ঠ চিত্র নির্মাণ করেছেন দারুণ আর্থিক দুর্গতির মধ্যেই। ডকুমেন্টারি ছবির চরম উৎকর্ষ যে ইংরেজ সিনেমাশিল্পীরা দেখিয়েছিলেন আর্থিক সগতির দিক থেকে সারা পৃথিবীতে তাঁরা ছিলেন সবচেয়ে দুর্দশাগ্রস্ত।

কিন্তু ইতালিতে ডি সিকা, রসেলিনী বা লাতুয়াদা প্রমুখ শিল্পীদের সিদ্ধিলাভের পিছনে আর্থিক অনটন এবং অনিশ্চয়তা ছাড়াও আরাে অনেক কারণ ছিল। ইতালি তখন প্রকৃতপক্ষে জার্মানির কবলে। তার ফলে এদের শিল্পীমন পদে পদে লাঞ্ছিত হচ্ছিল। তারপর যখন যুদ্ধ লাগল দেখতে দেখতে সারা দেশটা ভেঙেচুরে একাকার হয়ে গেল। চতুর্দিকে তখন শুধ, অরাজকতা আর নির্মম দারিদ্র্য। এদিকে ফাশিস্ট আমলের নানা বিধিনিষেধ তখনাে দেশ থেকে একেবারে বিদায় নেয়নি। ছবি তৈরির কোনােরকম সুবিধেই তখন ছিল না, কারণ ইতালির গােটা চলচ্চিত্রশিল্পটাই তখন লুপ্তপ্রায়।

কিন্তু এই প্রতিকূল অবস্থারই ফল হয়ে দাঁড়াল মহৎ। দিনের পর দিন অত্যাচার সয়েও ভিক্ষা এবং ঋণলব্ধ মালমশলার সাহায্যে এই শিল্পীরা যে সব ছবি সৃষ্টি করলেন তার তুলনা নেই। রাতারাতি ইতালি চলচ্চিত্র শিল্পের পীঠস্থান হয়ে দাঁড়াল। বিখ্যাত অভিনেত্রী ভ্যালেন্টিনা কাজের ভাষায়, ডি সিকার ‘শূ শাইন’, রসেলিনীর ‘ওপেন সিটি‘ এবং লাতুয়াদার ‘উয়িদাউট পিটি’ আশ্চর্য সাফল্যের সঙ্গে জীবনের অতর্কিত রুপটিকে ধরেছে। এই ছবি কখানি নিয়ে শুধু যে সমালােচক, চিত্রবিশারদ ও বাছাই করা দর্শকেরাই মেতে উঠেছিলেন তা নয়, ইংলণ্ডের অতি সাধারণ দর্শকেরা পর্যন্ত এদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে উঠেছিল। যার ফলে ইংলণ্ডের চিত্রনির্মাতারা এমন সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন যে ইংলণ্ডে ভালাে বিদেশী ছবি দেখানােই প্রায় বন্ধ হয়ে গেল, কারণ তাতে তাদের তৈরি ছবির দৈন্য বড় প্রকট হয়ে পড়ে। একটা কথা এখানে বলে রাখা ভালাে। বিদেশের কথা বাদ দিলেও খােদ ইতালিতেই উপরােক্ত তিন শিল্পী বা অন্য যে কোনাে নামকরা নব্য-বাস্তববাদী পরিচালকের কোনাে সার্থক ছবি দেখতে পাওয়া এক দুরুহ ব্যাপার। স্থানীয় শিল্পপতিরা এবং শহরে দর্শকেরাও এসব ছবিকে পাত্তা দিতে নারাজ। তারা বরঞ্চ হলিউডের ছাঁচে ইতালীয় বিয়ােগান্ত নাটকের রস পরিবেশন করে হলিউডের সংস্কৃতির সঙ্গে পাল্লা দেবেন।

চিত্রঃ ইউদাউট পিটি, Image Source: amazon

ডি সিকা, রসেলিনী এবং লাতুয়াদা তিন জনেরই শিল্পদৃষ্টিতে যথেষ্ট মিল দেখতে পাওয়া যায়, যথা, কৃত্রিম পরিবেশের চাইতে বাস্তবের দিকে এবং অপেশাদারী অভিনেতাদের নিয়ে ছবি তােলার দিকে এদের সকলেরই ঝোঁক বেশি। ইতালীয়দের একটা স্বাভাবিক অভিনয়-ক্ষমতা থাকার দরুন এবং ইতালীয় পরিবেশের স্বাভাবিক সৌন্দর্যটকু ছবিতে সহজেই ধরা পড়ে বলে অবিশ্যি এদের কাজের অনেক সুবিধে হয়েছে। বেশিরভাগ ইতালীয়কেই যে নির্মম বাস্তবতার সঙ্গে অহর্নিশি লড়াই করতে হয় তার সম্বন্ধে এরা অতিমাত্রায় সচেতন এবং সুন্দর স্বচ্ছল জীবনের উল্লেখ এদের ছবিতে যতটুকু পাওয়া যায় শ্লেষই তাতে মুখ্য।

ইতালির চলচ্চিত্রশিল্প যেভাবে মার্কিন এবং ইতালীয় মূলধনের আওতায় পড়ে স্রেফ ব্যবসায় পরিণত হবার উপক্রম করেছে তাতে এই তিন জন শিল্পী বেশ একট, শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তবে আশার কথা এই যে এখন পর্যন্ত শিল্পটিকে পূর্বোক্ত মূলধনীরা একেবারে গ্রাস করতে পারেনি। তাছাড়া তিন জনেরই ব্যক্তিত্ব এত প্রখর যে হলিউডের একাধিক লােভনীয় আমন্ত্রণেও তাঁদের মন টলেনি। আবার আর একটা ব্যাপারও এদের পক্ষে শাপে বর গােছের। সেটা হল ইতালীয় প্রতিষ্ঠানমাত্রেরই স্বাভাবিক শৃঙ্খলাহীনতা। এছাড়া শিল্পের প্রতি ইতালীয়দের জন্মগত মর্যাদাবােধ তাে আছেই। এই শিল্পের কদর ইতালির বাইরেও বর্তমান।

উৎসাহের আতিশয্যে যাঁরা এককালে বলেছিলেন, ‘চলচ্চিত্রশিল্পে গত বিশ বছরে রসেলিনীর মতাে প্রতিভা আর জন্মায়নি’, তাঁরাই এখন স্বীকার করেন যে ডি সিকার প্রতিভা আরাে গভীর আরাে ব্যাপক। ভিক্টোরিয়াে ডি সিকা শিক্ষিত সুদর্শন মানুষ। সাতচল্লিশের কোঠায় বয়স। অতি অমায়িক। ১৯৪০ সালে প্রথম ছবি তৈরির কাজে হাত দেন। তার আগে বহ, ইতালীয় ছবিতে তিনি বালক চরিত্রে এবং হাল্কা ধরনের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। তাঁর নিজের তৈরি ছবির ক্ষেত্রে সাধারণত তিনি অনেকের সহযােগিতায় চিত্রনাট্য লিখে থাকেন। তবে তার স্বরচিত চিত্রনাট্যও কিছু আছে। গােড়ার দিকে অর্থাৎ ‘শূ শাইনে’র আগে পর্যন্ত তাঁর কোনাে ছবিই তেমন উল্লেখযােগ্য নয়। মােটামুটি উপভােগ্য। কিন্তু ১৯৪৬ সালে তােলা ‘শূ শাইন’ ছবিটিতেই তাঁর দৃষ্টিভঙ্গী সম্পূর্ণ বদলে গেল। আগেকার ছবিতে যে সস্তাভাব ছিল সে সব কাটিয়ে উঠে তিনি যেন নবচেতনা লাভ করলেন। জীবনের বাস্তবতাকে হব, ফুটিয়ে তুলতে তিনি তাঁর ছবি থেকে পেশাদার অভিনেতাদের পর্যন্ত বর্জন করলেন।

তাঁর নতুন ছবি ‘লাদ্রি দি বিসিক্লেত্তে’, বা ‘বাইসিকল থিভস’ তাঁর এই বাস্তব দৃষ্টির একটি আশ্চর্য নিদর্শন। তাঁর প্রতিভার আশ্চর্য বিকাশ এই ছবিটিতে মত হয়ে উঠেছে। প্রথমবার রােমে এই ছবিটি দেখবার পর মনে হয়েছিল ‘ল্য জর স্য লেভ’ (১৯৩৪) ছবির পর এত সার্থক সৃষ্টি আর হয়নি। আর একবার দেখলে নিশ্চয়ই রেনে ক্লেয়ারের সঙ্গে একমত হব যে গত বিশ বছরের মধ্যে এটিই সব চেয়ে সার্থক সষ্টি। এই ছবির নায়ক হাসের বাস্তবঘেষা অন্য যে কোনাে ইতালীয় ছবির নায়কের মতােই এক নগন্য ব্যক্তি। যে-নিয়তি তাকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে, দুঃখের অগ্নিতে দগ্ধ করছে, সেই নিয়তির বিরুদ্ধেই তার জেহাদ। শঙ্কিতচিত্ত ভাগ্যনিপীড়িত এই হতভাগ্য যেন ইতালির ভাগ্যবিপর্যয়ের প্রতীক। ‘বাইসিকল থিভস’এ ডি সিকা ‘শূ শাইনে’র ভাবালতা এবং দশ্যসৌন্দর্যের মােহ সম্পর্ণে কাটিয়ে উঠেছেন। কোথাও কোনােরকম কারুকার্য করে গল্পটিকে তিনি সরাসরি বলে গেছেন এবং তাতে সাফল্য লাভ করেছেন আশ্চর্যরকম।

বাইসিকল থিভস
চিত্রঃ বাইসিকল থিভস ছবির একটা দৃশ্য, Image Source: deviantart

‘বাইসিক থিভস’ ছবিটিতে শােনবার চাইতে দেখবার জিনিসই বেশি। রােমের এক শ্রমিক ও তার শিশুপুত্রের জীবনের এক মলিন ভাগ্যলাঞ্ছিত দিনের কাহিনী নিয়েই এই ছবি। ল্যামবার্তো ম্যাজিওরানি, যিনি শ্রমিকের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন, একজন সাধারণ কামার। বেকারত্বের গ্লানি তাঁর মন থেকে গিয়েও যায়নি। বালক এঞ্জো তাইওলা, যার অবিশ্বাস্য অভিনয় প্রতিভা, অতি সাধারণ পরিবারের ছেলে।

গল্পটিও অত্যন্ত সরল সুন্দর। ছবির নায়ক বহুকাল যাবৎ বেকার। হঠাৎ সে রাস্তায় রাস্তায় প্ল্যাকার্ড মারার একটা কাজ পেয়ে গেল। কিন্তু একাজ করতে গেলে একটি সাইকেল দরকার। তার নিজের বাধা দেওয়া সাইকেলটিকে ছাড়িয়ে আনতে সে পরিবারের সকলের জামাকাপড় বাঁধা দিলে। তার জীবনের মােড় ঘুরে গেল। কিন্তু প্রথমদিনই সকালে রিটা হেওয়ার্থের পােস্টার লাগাবার সময়ে সাইকেলটি চুরি গেল। রােমের অলিতে গলিতে হারানাে সাইকেলের খোঁজে পুত্রকে সঙ্গে নিয়ে এলােমেলােভাবে বৃথাই ঘুরে বেড়াল। শেষটায় উপায়ান্তর না দেখে বাড়িতে স্ত্রীর গালাগালের হাত থেকে রেহাই পাবার জন্য বােকার মতাে আর একজনের সাইকেল চুরি করে বসল। ধরাও পড়ল। শেষটায় সাইকেল মালিকের কাছে প্রচুর গালমন্দ খেয়ে ছেলের হাত ধরে মুখচুন করে বাড়ি ফিরে এল। এই একটি দিনের উদয়াস্তের মধ্যেই ইতালীয় জীবনের স্বরুপটি সম্পূর্ণভাবে ধরা পড়েছে – চতুর্দিকে আছে শুধু, হতাশা আর শ্রীহীনতা, আর আছে চার্চের দায়সারা নিস্পৃহ কৃপা, আর সর্বদঃখের সস্তা ওষধি –ব্যাধিবর্জিত সরকারী বেশ্যালয় ও বস্তির গণকঠাকুরের দল। বিদেশী ভ্রমণকারীর চোখে-দেখা সে রােমনগরী এ নয়, এর স্বরুপ ভিন্ন। আলােচ্য ছবিতে এই মর্মান্তিক অবস্থার কোনাে সমাধান না মিললেও একেবারে নিরাশার সুরে কাহিনীর শেষ হয়নি। হতভাগ্য শ্রমিকটি শেষ পর্যন্ত সঙ্গীসাথীদের সহানুভূতি ও অন্তরঙ্গতার গুণে নিয়তির নিষ্ঠুর আঘাতকেও কাটিয়ে উঠল। এটাই আশার কথা।

রবার্তো রসেলিনীর বয়স তেতাল্লিশ। রােমের এক অবস্থাপন্ন এঞ্জিনীয়ারের ছেলে। যেমন অদম্য তার উৎসাহ, তেমনি উদ্দাম অসহিষ্ণু তাঁর চরিত্র। ১৯৩৫ সালে তিনি প্রথম ইতালির চলচ্চিত্র শিল্পে যােগ দেন একেবারে নিচের ধাপে। তাঁর আগে তিনি স্রেফ হেসেখেলেই সময় কাটাতেন। ১৯৩৮ সালে তিনি চিত্রনাট্য লিখতে শুরু করে দিয়েছেন এবং ছােটো ছােটো ডকুমেন্টারি ছবিও তুলছেন। সারা যুদ্ধের সময়টা তিনি বহ, বড় ছবির (ফিচার) উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন। কিন্তু তাঁর কবিমন বেশিদিন বাঁধাধরা গণ্ডিতে বদ্ধ রইল না। ফলে চলচ্চিত্রব্যবসায়ীদের সঙ্গে তাঁর বিচ্ছেদ ঘটল। ১৯৪৪ সালে তিনি ‘ওপেন সিটি’ ছবির কাজে হাত দেবেন স্থির করলেন। কিন্তু মালমশলা, যন্ত্রপাতি বা অর্থ কোনােটাই তার নেই। অগত্যা টাকা ধার করলেন, যথাসর্বস্ব বিক্রি করলেন নয় বাঁধা দিলেন। ছবি তৈরি হল। বিক্রিও হয়ে গেল। কিন্তু রসেলিনী যে কপর্দকহীন সেই কপর্দকহীন। এটাই তার জীবনের ধরন। চিত্রনির্মাতার পক্ষে এধরনের জীবন হয়তাে বা বাঞ্জনীয়, কারণ এতে আর যাই হােক বৈচিত্র্যের অভাব হবে না।

সমসাময়িক অন্য সব দেশের ছবির একঘেয়ে পালিশকরা রুপের পাশে ‘ওপেন সিটি’, ‘পাইসান’ ও ‘জার্মানি ইয়ার জিরাে’ ছবি তিনটির সহজ অমার্জিত রুপে আশ্চর্য তৃপ্তিদায়ক। ধরাবাঁধা নিয়মে আঁকাঁ নিপ্রাণ কোনাে ছবির পাশে যেন হদয়ের উত্তাপে প্রাণবন্ত একটি বিচিত্র খসড়া স্বতঃস্ফূর্ত ও স্বয়ংসম্পূর্ণ। দুঃখের বিষয় ‘পাইসান’-এর পর রসেলিনী তেমন উল্লেখযােগ্য কোনাে ছবি করেননি। আনা মানিয়ানির অভিনয়-প্রতিভাকে ভিত্তি করে তােলা দুখণ্ডে সম্পর্ণ ছবি ‘আমােরে’-র প্রথম এবং দীর্ঘতর খণ্ডটিতে (‘দি মিরাকল’) রসেলিনীর প্রতিভার স্বাক্ষর কিছুটা মেলে। এই সু-অভিনীত এবং মর্মস্পর্শী চিত্রটিতে কাহিনীকার হিসেবে রসেলিনী অনেকখানি এগিয়েছেন। এ জন্য প্রচলিত শিল্পরীতিকে বহুলাংশে তিনি হয়তাে উপেক্ষা করেছেন। সরল এক কৃষককন্যাকে নিয়ে এই ছবির কাহিনী। কৃষককন্যার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন আনা মানিয়ানি। কুসংস্কারের ঘােরে এই সরল মেয়েটি সেন্ট জোসেফ এমে এক অপরিচিত ব্যক্তিকে দেহদান করেছে। গ্রামশ, লােকের টিটকিরি সত্ত্বেও মেয়েটির ঘাের আর কাটতে চায় না। অধীর আগ্রহে সে তার ভগবৎদত্ত সন্তানের শুভজন্মের প্রতীক্ষা করছে। এই হল সংক্ষেপে ছবির কাঠামাে। ‘দি মিরাকল’-এ শতি, সৌন্দর্য ও করুণার আশ্চর্য সমন্বয় ঘটেছে। এই ছবি এবং পরবতী স্ট্রম্বলি’র মাঝে চিরাচরিত সম্বলহীন অবস্থায় রসেলিনী একটি রুপকথাঘেষা হালকা ছবি করেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত এই ছবির কোনাে হদিশই পাওয়া যায়নি। কারণ সম্পাদকেরা নাকি বহু চেষ্টা করেও ছবিটিকে দর্শনযােগ্য করে দাঁড় করাতে পারেননি।

আলবার্তো লাতুয়াদার বয়স মাত্র পয়ত্রিশ। ছােট্টখাটো কৃষ্ণকায় মানুষটি। গােড়ায় ছিলেন স্থপতি। কিন্তু অল্পদিনের মধ্যেই সিনেমার মােহে পড়ে যান। ১৯৪৬ ও ১৯৪৭ সালে লাতুয়াদা যুদ্ধােত্তর ইতালির ঘটনাবলী নিয়ে ‘ইল ব্যানডিটা’ (‘দি ব্যানডিট’) ও ‘সেনজা পিয়েতা’ (উয়িদাউট পিটি) নামে দুখানি অতি দুর্ধর্ষগগাছের ছবি তৈরি করেন। যুদ্ধবিধস্ত ইতালির তিক্ততা এবং রক্ষতাই এই ছবি দটির প্রাণসম্পদ। এর অন্য সব ছবিতে হদয়ের উত্তাপ তত লাগতে পারেনি কারণ চলচ্চিত্র য়ের মনােরঞ্জনের জন্য এসব ছবিতে তিনি আশিক নিয়েই বেশি মাথা ঘামিয়েছেন।

লাতুয়াদার সাম্প্রতিক ছবি ‘ইল মলিনাে দেল পাে’তে (দি মিল অন দি পাে’) কল্পনার সঙ্গে দৃশ্যসম্পদের অপব যােগাযােগ ঘটেছে। যে যুগের কাহিনী নিয়ে এই মনােজ্ঞ ছবিটি তৈরি হয়েছে সেটি চিত্রনির্মাণের পক্ষে সবচেয়ে কঠিন যুগ, কারণ আমাদের স্মৃতিতে সেই যুগ এখনাে জীবন্ত। যুগটি ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষার্ধ। পাে উপত্যকার করুণ সুন্দর পরিবেশে সামাজিক ও ব্যক্তিগত সংঘাতের একটি কাহিনী নিয়ে এই ছবি। কাহিনীর পরিণতি শােকে এবং অবিস্বাস্যভাবেই, কারণ লাতুয়াদার উদ্দেশ্যই ছিল দারিদ্র এবং শান্তির মরীচিকার প্রলােভনে দোলায়িত একটি সমাজের জালাযন্ত্রণা এবং বাসনাকামনাকে ছবিতে ফুটিয়ে তােলা। এর পর ‘মিস ইতালি’ নামে একটি ছবি তৈরি করবার জন্য লাতুয়াদা প্রায় কেপে উঠেছিলেন। পাশ্চাত্য সমাজে যাদের সৌন্দর্যের রাণী (বিউটি কুঈন) বলা হয় তাদের উত্থান ও পতন নিয়ে ব্যঙ্গ করাই ছিল এই ছবিটির উদ্দেশ্য। কাহিনীর শেষাংশটুকু লাতুয়াদা বিদ্রুপাত্মক না করে আনন্দময়ই করেছিলেন –মােহ ভাঙলে বিউটি কুঈন বা সৌন্দর্যের রাণী আবার তার পরিবেশে ফিরে যায়। কিন্তু তা সত্ত্বেও ‘লাক্স ফিলমস’ নামক চিত্রপ্রতিষ্ঠান এই ছবি তুলতে রাজী হননি। লাতুয়াদা এজন্য ‘লাক্স ফিলমস’কে ক্ষমা করেননি, ডি সিকা এবং সেলিনীর মতাে তিনিও নিজের ছবি নিজেই তুলতে শুরু করেছেন আমাদের দেশের পরিচালকেরা যেটা কল্পনাও করতে পারেন না।

জিকােরিয়া ডি সিকা হালের যে তিনজন ইতালীয় পরিচালক চলচ্চিত্রজগতে নাম করেছেন তাদের মধ্যে ‘শূ শাইন’ এবং ‘বাইসিকল থিভস’ ছবি দুটির নামজাদা পরিচালক ভিত্তোরিয়াে ডি সিকাই বােধহয় সবচেয়ে প্রতিভাশালী। চলচ্চিত্রজগতের নেতৃস্থানীয় অনেকেই ডি সিকাকে চ্যাপলিনের সঙ্গে তুলনা করেছেন। কাহিনী এবং কাহিনীকে চিত্তাকর্ষক করে সাজাবার কৌশল চ্যাপলিনের মতােই তাঁর করায়ত্ত, আর চ্যাপলিনের মতােই এমন সহজ ছন্দে তিনি তার কাহিনীকে বিবত করেন যে ইতালীয় ভাষা যারা বােঝে না তাদেরও কাহিনী অনুসরণ করতে বিন্দুমাত্র বেগ পেতে হয় না বা টিপনির সাহায্য নিতে হয় না। দৈনন্দিন জীবনের খুঁটিনাটি হাজারাে ঘটনা থেকে মালমশলা সংগ্রহ করে তাতে দরকার মতাে রঙ চড়িয়ে আশ্চর্য মুনশীয়ানার সঙ্গে ডি সিকা তাঁর ছবিতে শ্লেষ, বিদ্রপ, তামাশা বা গভীর বেদনাবােধ ফুটিয়ে তােলেন। এ ব্যাপারে তাঁর বাস্তববােধ সাধক। যে-রকম স্বচ্ছন্দে তিনি দর্শকের মনকে তাঁর কল্পনালােকে টেনে নিতে পারেন এবং অভিভূত করে ফেলেন তাতে তাঁকে চ্যাপলিনের সমপর্যায়ে অনায়াসেই ফেলা যায়।

 

Post Views: 1,544
Tags: ইতালিয়ান সিনেমাইতালীয় চলচ্চিত্রউইদাউট পিটিওপেন সিটিরসেলিনীলাতুয়াদাসিনেমা
ADVERTISEMENT

Related Posts

মোহাম্মাদ রফিঃ ভারতীয় সঙ্গীত জগতে এক অবিস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব
সিনেমা

মোহাম্মাদ রফিঃ ভারতীয় সঙ্গীত জগতে এক অবিস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব

আপনি কি কখনও ভেবেছেন, একটি কণ্ঠস্বর কীভাবে কোটি কোটি মানুষের হৃদয় জয় করতে পারে? ভারতীয় সঙ্গীত জগতে এমনই এক...

by নবজাগরণ
December 23, 2024
সলমন খান ও কৃষ্ণ হরিণ শিকারঃ সলমন খানের এক বিতর্কিত অধ্যায়
সিনেমা

সলমন খান ও কৃষ্ণ হরিণ শিকারঃ সলমন খানের এক বিতর্কিত অধ্যায়

বলিউডের 'ভাইজান' সলমন খান - যার নাম শুনলেই মনে ভেসে ওঠে তাঁর বক্স অফিস হিট সিনেমা, দানশীলতা, এবং বিতর্কিত...

by নবজাগরণ
November 8, 2024
রাজ কাপুর: বলিউডের কিংবদন্তী ও শো ম্যান
সিনেমা

রাজ কাপুর: অভিনেতা ও বলিউডের কিংবদন্তী শো ম্যান

বলিউডের স্বর্ণযুগে এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম - রাজ কাপুর । চার্লি চ্যাপলিনের মতো হাসি-কান্নার দোলায় দুলিয়ে দিতেন দর্শকদের। কিন্তু...

by নবজাগরণ
November 7, 2024
ক্যামেরার দিব্যদৃষ্টি : ইওরােপীয় চলচ্চিত্রের শিল্পনিরিখ
সিনেমা

ক্যামেরার দিব্যদৃষ্টি : ইওরােপীয় চলচ্চিত্রের শিল্পনিরিখ

লিখেছেনঃ সােমেন ঘােষ চলচ্চিত্রের নন্দনতাত্ত্বিক আন্দ্রে বাজা তার সাড়া জাগানাে গ্রন্থে বলেছিলেন “All the arts depend on the presence...

by অতিথি লেখক
April 5, 2022

POPULAR POSTS

  • সুলতান মাহমুদ

    সুলতান মাহমুদের ভারত অভিযান ও সোমনাথ মন্দির প্রসঙ্গ (১ম পর্ব)

    181 shares
    Share 181 Tweet 0
  • বাউরী সম্প্রদায়ের উৎপত্তির ইতিহাস ও ঐতিহাসিক পর্যালোচনা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • আর্যদের ভারত আগমন, বিস্তার, সমাজ ও সভ্যতা: এক ঐতিহাসিক পর্যবেক্ষণ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে বৌদি কাদম্বরী দেবীর সম্পর্ক আদৌ কি প্রেমের ছিল?

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • হিন্দু পদবীর উৎপত্তির ইতিহাস, বিবর্তন ও ক্রমবিকাশঃ বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

Facebook Page

নবজাগরণ

ADVERTISEMENT
নবজাগরণ

'Nobojagaran' is a website of its kind where you can gather knowledge on all the unknown facts of the world. We human beings always have a thirst for knowledge. Nobojagaran takes its first steps to quench this thirst of ours. We are now in the era of digital world, where we get almost anything online. So how about a bit of knowlyfrom online?

Connect With Us

No Result
View All Result

Categories

  • English (9)
  • অন্যান্য (11)
  • ইসলাম (26)
  • ইসলামিক ইতিহাস (22)
  • ইহুদী (1)
  • কবিতা (37)
  • খ্রিস্টান (6)
  • ছোটগল্প (6)
  • নাস্তিকতা (18)
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (24)
  • বিশ্ব ইতিহাস (24)
  • ভারতবর্ষের ইতিহাস (194)
  • রাজনীতি (38)
  • সাহিত্য আলোচনা (68)
  • সিনেমা (17)
  • হিন্দু (16)

Pages

  • Cart
  • Checkout
  • Checkout
    • Confirmation
    • Order History
    • Receipt
    • Transaction Failed
  • Contact
  • Donation to Nobojagaran
  • Homepage
  • Order Confirmation
  • Order Failed
  • Privacy Policy
  • Purchases
  • Services
  • লেখা পাঠানোর নিয়ম
  • হোম
No Result
View All Result
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi

©Nobojagaran 2020 | Designed & Developed with ❤️ by Adozeal

Login to your account below

Forgotten Password?

Fill the forms bellow to register

All fields are required. Log In

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In
Don't have an account yet? Register Now
wpDiscuz
1
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x
| Reply
Open chat
1
Powered by Joinchat
Hi, how can I help you?