• মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
Wednesday, July 30, 2025
নবজাগরণ
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ - জ্ঞান অর্জনের বিস্বস্থ সংস্থা
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ - জ্ঞান অর্জনের বিস্বস্থ সংস্থা
No Result
View All Result

সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক শক্তির অনুপ্রবেশের রাজনীতি রূপকথা না সত্য

চৌধুরী আতিকুর রহমান by চৌধুরী আতিকুর রহমান
June 25, 2025
in রাজনীতি
0
সাম্প্রদায়িক শক্তির অনুপ্রবেশের রাজনীতি রূপকথা না সত্য

Image Source: alamy

Share on FacebookShare on Twitter

‘৭০ দশকের শেষদিকে অনুপ্রবেশ এই শব্দটি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয় আসামসহ উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে। উত্তর-পূর্ব ভারত বিশেষত আসামে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা আসামের জনবিন্যাসকে বিপর্যস্ত করে দিচ্ছে অতএব আসামের ভোটার তালিকা সংস্কার করে বিদেশীদের চিহ্নিত করে তাদের নাম বাদ দিতে হবে। এই দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু হলে অচিরেই রক্তাক্ত চেহারা নেয়। ভারতের অখন্ডতা ও ঐক্যে প্রশ্নচিহ্ন পড়ে যায়।

‘অনুপ্রবেশ’ এই শব্দটিকে জাতীয় রাজনীতিতে নিয়ে আসার বর্তমান কৃতিত্ব ভারতীয় জনতা পার্টির। বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকারীরা দেশের জনসংখ্যার ধর্মীয় সম্প্রদায়গত বিন্যাসকে পাল্টে দিচ্ছে এই মূল অভিযোগকে সামনে রেখে বিষয়টি নিয়ে শোরগোল তোলা হচ্ছে।

আসামে যা বাঙালি (হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে) অনুপ্রবেশকারী পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির ভাষ্যে তারাই ধর্মের দিক দিয়ে মুসলিম। আর বিজেপি এই ধরনের গোলযোগপূর্ণ বিন্যাসের ধারণাটি শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয় বরং দিল্লি মুম্বাইয়ে ছড়িয়ে দিয়েছে।

দিল্লিতে বা মুম্বাইয়ে যতই বাংলাদেশি থাকুক না কেন এ ব্যাপারে সব পক্ষই একমত বাংলাভাষী অনুপ্রবেশকারী যদি থাকে তাহলে সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় আছে পশ্চিমবাংলায়। শারীরিক বৈশিষ্ট্য, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক পটভূমিকা রাজনৈতিক সীমান্তে দুই পারের মধ্যে হুবহু এক থাকায় আলাদা করে অনুপ্রবেশকারী কে? এবং আদি বাসিন্দাই বা কে? চিনে নেওয়া প্রায় দুঃসাধ্য। এছাড়া অনুপ্রবেশকারী সংজ্ঞার মধ্যে আছে ঠুনকো একটা সময়ের সীমা রেখা। ‘৭২ সালে পাকিস্তানিদের হাত থেকে বাংলাদেশ মুক্ত হওয়ার পর ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি হয়। এতে ধরে নেওয়া হয় যে মুক্তির পরে বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক শাসন চালু হবে এবং রাজনৈতিক কারণে কোন বাংলাদেশী নাগরিককে আর ভারতে চলে আসতে হবে না। মোদ্দাকথা বিষয়টা এরকম দাঁড়ায় ‘৭২- এর আগে যারা এসেছে তারা আইনানুগ উদ্বাস্তু একাত্তরের পরে যদি কেউ আছেন তাকে বাংলাদেশের পাসপোর্ট এবং ভারতের ভিসা নিয়ে আসতে হবে ফিরে যেতে হবে ভিসার মেয়াদ শেষ হবার মধ্যে।

অবশ্য বিজেপি তার সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে অনুপ্রবেশকারী সম্পর্কে এই সংজ্ঞাটি গ্রহণ করে না। বিজেপির বক্তব্য বাংলাদেশ থেকে যে সমস্ত হিন্দু প্রবেশ করে তারা অনুপ্রবেশকারী নয়, তারা উদ্বাস্তু। অর্থাৎ তাকে ভারতবর্ষের নাগরিকত্ব দিতে হবে। আর যে সমস্ত মুসলিম প্রবেশ করছে তারা অনুপ্রবেশকারী, তাদেরকে ভারতবর্ষ থেকে অবিলম্বে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে হবে। ২০১৯-এ সংসদে শীতকালীন অধিবেশনে সি এ এ পাস করে তার এজেন্ডা পূরণ করেছে।

অবশ্য বিজেপির ঝুলিতে অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা কত তার কোন নির্দিষ্ট সীমারেখা নেই। ১৬-ই ফেব্রুয়ারী ১৯৯৩ বিজেপি নেতা মুরলী মনোহর যোশী বলেছেন এ দেশে বসবাসকারী বাংলাদেশীর সংখ্যা ১ কোটি ৭৫ লক্ষ। মুরলী মনোহর যোশী অন্য উপলক্ষে এই সংখ্যাটিকে বলেছেন দু’কোটি। আমাদের দেশের প্রাক্তন বিদেশ সচিব এবং বাংলাদেশ সম্পর্কে প্রাজ্ঞ হিসাবে পরিচিত মুচকুন্দ দুবে অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা বলেছেন ৪ থেকে ৫ লাখ। সাম্প্রতিক সায়ন্তন বসু সংখ্যাটিকে বলেছেন আড়াই কোটি (পশ্চিম বাংলার সমস্ত মুসলিম জনতা)। ৪ লাখ থেকে আড়াই কোটি যখন বিতর্কিত সংখ্যার পরিমাণগত ফারাক তখন বিতর্কের তীব্রতা, প্রয়োগের বিভিন্নতা কতটা হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়।

বিতর্ক হচ্ছে, কেন বাংলাদেশ থেকে মানুষ পালিয়ে আসছে?

বিজেপি এবং মুষ্টিমেয় বুদ্ধিজীবীর মত হল বিষয়টা হচ্ছে রাজনৈতিক। বিজেপির বক্তব্য বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণের ফলে তারা বাধ্য হচ্ছে দেশ ত্যাগ করতে এবং বাংলাদেশের মুসলিমরা অনুপ্রবেশ করছে, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে জনসংখ্যায় হিন্দুদের সম্প্রদায়গত বিন্যাসকে পরিবর্তন করে দেওয়ার চক্রান্ত থেকে।  দেশের সামনে হাজারটা তীব্র সমস্যা থাকা সত্ত্বেও বিজেপি কেন এই সমস্যা নিয়ে এতটা উতলা হচ্ছে। এর একটাই কারণ, এই সমস্যা নিয়ে বাড়তি উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারলে ইতিমধ্যেই উত্তপ্ত দেশের রাজনীতিকে আরো উত্তপ্ত করা যায়। একটি মুসলিম অধ্যুষিত প্রতিবেশী দেশের থেকে ব্যাপক অনুপ্রবেশ ঘটে এটা এদেশে হিন্দুদের মুসলমানদের সম্পর্কে আরও সন্দিহান করে তুলতে পারে। অন্য আরও একটি দিক, অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে হিন্দু অংশটিকে দেখিয়ে এটা প্রচার করা যায় যে ইসলামিক রাষ্ট্র বাংলাদেশে হিন্দুদের কোনও নিরাপত্তা নেই। এটা ইতিমধ্যে সংঘটিত দাঙ্গার পক্ষে বলিষ্ঠ সাফাই এবং আগামী দিনগুলোর পক্ষে একটি সুনির্দিষ্ট প্ররোচনা।

যদিও বিজেপিকে দাঙ্গার জন্যে আর বেশি মাথা খেলানোর প্রয়োজন পড়বে না। কারণ, বিরোধী সাংসদ কুক্ষিগত করে ইউএপিএ (সংশোধন), তাৎক্ষনিক তিন তালাক রদ ও শাস্তিযোগ্য করা, কাশ্মিরের বিশেষ ক্ষমতা বিলোপ আর নাগরিকত্ব প্রমাণের অসাস্প্রদায়িক চরিত্রটি বিনাশ করে সিএএ আনয়ন বিজেপিকে সরকারি ব্যবস্থাপনা ব্যবহার করার ক্ষমতা দিয়ে দিয়েছে। তাই অমিত শাহর মুখে ঘুষপেটিয়া, এন আর সি শুনে আশ্চর্য হওয়ার কিছুই নেই।

বাংলাদেশে সরকারি নীতি নির্ধারণ ও চাকুরে হিসাবে হিন্দুরা তাদের জনসংখ্যার তুলনায় বহু বেশি প্রতিনিধিত্ব করে। এদের স্বাভাবিক প্রবনতা রয়েছে, বাংলাদেশে চাকরির জন্যে যতটুকু থাকা যায় থাকে আর টাকা পাঠিয়ে পশ্চিমবঙ্গে জমি ক্রয়ের ব্যবস্থা করা। কুচবিহার, দিনাজপুর, নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগণা সর্বত্রই এই প্রবণতা দেখা যায়। পঞ্চায়েত, পৌরসভা যে দলেরই হোক এরা স্বচ্ছন্দে ভোটার কার্ড, আধার কার্ড নিখুঁত ভাবে তৈরী করে নেয়।

প্রশ্ন, এইরকম হয় কেন? কারণটি হল ভারতবর্ষের মত বিশাল দেশে উন্নত লেখাপড়া, কর্মসংস্থান, চিকিৎসা ইত্যাদির সুবিধা নেওয়া আর এর সঙ্গে অতি সামান্য পরিমাণে ম্লেচ্ছ সংস্রব ত্যাগ করা।

বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সীমান্ত ২১৪৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই দীর্ঘ সীমান্ত বরাবর ২৪ ঘন্টা টহলদারি প্রায় অসম্ভব এবং সীমান্ত বরাবর এমন কোন প্রাকৃতিক বাধা নেই যা পার হওয়া একজন মানুষের পক্ষে কঠিন। সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর পক্ষে অনুপ্রবেশ ঠেকানোর দক্ষতা এবং সদিচ্ছা দুটিই গুরুতর প্রশ্নচিহ্নের মুখে।

অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা সরাসরি হিসাব করা সম্ভব নয়। দিল্লি, মুম্বাইয়ে বাংলাভাষাভাষী যে কোন ব্যক্তিকেই অনুপ্রবেশকারী বলে দেগে দেওয়া হয়। বাংলাভাষী এবং দরিদ্র এরকম কোন মানুষকেই বাংলাদেশেি চিহ্নিত করার বিষয়টিতে নেতৃত্ব দিচ্ছে বিজেপির লোকজন। এ এক বিপজ্জনক প্রবণতা।

১৯০১ ও ১৯৪১ আদমশুমারি বলছে -অবিভক্ত বাংলা, আসাম ও ত্রিপুরার জন বিন্যাসের এক পরিবর্তন দেখা যায়। দেখতে পাচ্ছি কলকাতা ও সংলগ্ন ২৪ পরগনা এবং হাওড়াতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার অত্যন্ত বেশি। একইভাবে আসাম ও ত্রিপুরাতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার অত্যন্ত বেশি।

কোলকাতা ও সংলগ্ন এলাকার জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার সম্বন্ধে বলা হচ্ছে যে শিল্পায়ন আর নগরায়ন দ্রুত হওয়ার ফলে কলকাতা এবং তার সংলগ্ণ এলাকায় পূর্ববঙ্গ থেকে শিক্ষিত হিন্দু বাঙালির আগমন একই সঙ্গে বাংলার পশ্চিম ও দক্ষিণ থেকে হিন্দি উর্দু ও ওড়িয়া ভাষী শ্রমিকের আগমন। আসাম ও ত্রিপুরার জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার সম্বন্ধে বলা হচ্ছে আসামে চা বাগানে কাজ করার জন্য প্রচুর শ্রমিক ও কৃষিশ্রমিকের আগমন।

১৯০১  ১৯৪১  বৃদ্ধি %
লক্ষ                   লক্ষ
কোলকাতা       ৮.৪৮ ২১.০৯ ১৪৮.৮
হাওড়া             ৮.৫০  ১৪.৯০  ৭৫.২ ২৪ পরগণা ২০.৭৮ ৩৫.৩৬  ৭০.২
ত্রিপুরা             ১.৭৩  ৫.১৩     ১৯৬
আসাম            ৫৮.৪২  ১০৪.৮১ ৭৯.৪

পরিসংখ্যান বলছে স্বাধীনতার আগে থেকেই কলকাতামুখি জনস্রোত ছিল। নগরায়ণ হয়েছিল ঢাকা এবং চট্টগ্রাম কেন্দ্রিকও। কিন্তু কলকাতার তুলনায় তা নগণ্য। কলকাতা ও ত্রিপুরামুখি বাঙালির আগমন নতুন কিছু ঘটনা নয় বরং স্বাধীনতার আগে থেকেই চলে আসছিল। কলকাতার নগরায়নের সুবিধা নেওয়ার জন্য শিক্ষিত বাঙালি যার অধিকাংশই হিন্দু ভদ্রলোক শ্রেণীর পূর্ববঙ্গ থেকে আগত। এটা বলার কারণ হল; পূর্ববঙ্গ নদীমাতৃক, জমিতে কৃত্রিম জল সেচের খুব একটা প্রয়োজন হয় না, যার ফলে সেখানে কৃষিকার্য অত্যন্ত লাভজনক ছিল এবং এই কৃষিকার্যের ফলে সেখানে একটি মধ্যবিত্ত শ্রেণী তৈরি হয়েছিল যার অধিকাংশই ছিল হিন্দু বাঙালি (মানব মুখার্জি, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ রাজনীতি ও বাস্তবতা পৃষ্ঠা ১৯)।

আসামের জনসংখ্যা বেড়েছিল, কিভাবে বেড়েছিল তার প্রবণতা ছক আকারে দেওয়া যাক।
জনসংখ্যা প্রতি বর্গকিলোমিটারে।
১৯০১  ১৯৪১ বৃদ্ধির হার
কামরূপ        ১৫৩   ৩২৮       ১১৪.৪
দরং               ৯৯     ২৬৩       ১৬৫.৭
শিবসাগর       ১২০   ৩০১      ১৫০.৮
লখিমপুর       ৮২    ২১৯       ১৬৭.১
নওগাঁ            ৬৮    ২৯৯       ৩৩৯.৭
গোয়ালপাড়া   ১১৭ ২৫৪    ১১৭.১

আসামের এই অস্বাভাবিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণ দুটি, ১) বাংলা থেকে অভিবাসন ২) চা-বাগানের শ্রমিক আমদানি।

দরং ,শিবসাগর ও লখিমপুর মূলত চা শ্রমিকদের জন্য জনসংখ্যায় স্ফীত হয়েছিল। ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় আসাম সংলগ্ন বাংলার জেলা দুটি প্রধানত রংপুর ও ময়মনসিংহ। এই দুটি জেলা সংলগ্ন আসামের জেলা হল নওগাঁ ও গোয়ালপাড়া। ১৯০১-এ প্রতি বর্গমাইলে রংপুরের জনসংখ্যা ৬৫৫, ময়মনসিংয়ের জনসংখ্যা ৬৩৮ জন। সংলগ্ন আসামের দুই জেলা অপেক্ষা বহুগুণ বেশি। বাংলার এই দুই জেলার জনবিস্ফোরণ জমির উপর যে চাপ রেখেছিল সেই চাপ কমাবার জন্য তারা আসামমুখী হয়। তাই সংলগ্ন আসামের ২ জেলাতে জনবিস্ফোরণ ঘটে।

নদীমাতৃক বাংলার কৃষকেরা ঐতিহাসিকভাবেই কৃষিকার্যে পটু ছিল। ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় যে জমি অনাবাদি ফাঁকা ছিল বা জঙ্গলাকীর্ণ ছিল বা জলাজমি ছিল সেই জায়গাগুলিতে বাংলা থেকে কৃষকেরা গিয়ে সোনা ফলাতে থাকে। আসামের মানুষ উচ্চভূমির জুম চাষে দক্ষ ছিল কিন্তু জলাভূমি চাষে সেরকম দক্ষ ছিল না। বাঙালি কৃষকরা এসে পাট, উন্নত প্রজাতির ধান, ডাল ইত্যাদি চাষ করে আসামের স্থানীয় মানুষ অপেক্ষা আর্থিকভাবে সমৃদ্ধশালী হয়ে ওঠে।

১৯০১-এ গোয়ালপাড়ায় বাঙালি অভিবাসী ছিল ৫১ হাজার, ১৯২১-এ বাঙালি জনসংখ্যা ৯০ হাজার বেড়ে হল ১ লক্ষ ৪১ হাজার। আসামে চাষের জমি বাড়ে ৫৪%। কৃষি উৎপাদন দ্বিগুণের বেশি হয়ে যায়।

১৯০৫-০৬-এ আসামে পাট চাষ হত ৩০ হাজার একর জমিতে, ১৯২০-২১-এ তা বেড়ে হল ১ লক্ষ ৬ হাজার একর। ১৯৩৬-এ শুধু নওগাঁ জেলাতে বাঙালির হাতে জমি ছিল ৩৭.৭%। জমি যখন সোনা উৎপাদন করতে থাকে তখন জমির দাম স্বাভাবিক ভাবেই বেড়ে যায়। স্থানীয় অহমিয়ারাও বেশি দাম পাওয়ায় তাদের জমি বিক্রি করতে থাকে। কার্জনের বঙ্গভঙ্গ পরিকল্পনায় আসামের সঙ্গে বাংলার কয়েকটি জেলা জুড়ে দেওয়ার কারণ হিসাবে বলেছিলেন,

“আাসামের সমৃদ্ধি এবং সেইসঙ্গে সরকারের আয় বৃদ্ধির জন্য এই সংযুক্তি জরুরী” (প্রাগুক্ত পৃষ্ঠা ২২)।

অমলেন্দু দে মহাশয় বলেছেন, ১৯২০-২১ থেকে ১৯২৯-৩০ এই ১০ বছরে আসামে ময়মনসিং থেকে গিয়েছেন ৭,৩৭,৩১৩ জন যার ৮৭.৯%  মুসলিম এবং ১২% হিন্দু।

প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশ ১৯৪১-এর আদমশুমারির একটি সম্প্রদায়গত বিশ্লেষণ করেন। তখন ময়মনসিংহ জেলার মোট জনসংখ্যার ৭৭.৪% মুসলিম এবং হিন্দু ছিল ২১.৫%। রংপুরে মুসলিম ছিল ৭১.৪% আর হিন্দু ছিল ২৭.৯%। স্বাভাবিকভাবেই আসামগামি জনতার বেশিরভাগই ছিল মুসলিম। ১৮৯১ ও ১৯৪১ এই ৫০ বছরে গোয়ালপাড়া জেলায় মুসলিম শতকরা হার ছিল যথাক্রমে ২৭.৫ ও ৪৬.২। নওগাঁ জেলাতে মুসলিমদের শতকরা হার ৪.১ থেকে বেড়ে ৩৫.২% হয়। বরাক উপত্যকার কাছাড় ও শ্রী হট্টে ১৯৪১-এ ৩৬.৪% ও ৬০.৭% মুসলিম জনতা ছিল।

চা বাগানের শ্রমিক হিসাবে আদিবাসী ও নেপালিরা আসামে প্রবেশ করেছিল। ১৯২০-৩০ এই দশ বছরে চা বাগানের শ্রমিক হিসাবে আদিবাসী ও নেপালি প্রবেশ করেছিল ৩ লক্ষ ০৯ হাজার ৪৪৪ জন (একই সময়ে বাঙালির প্রবেশ ৭,৩৭,৩১৩ জন)। দরং, লখিমপুর ও শিবসাগর জেলায় এদের  শতকরা হার ছিল যথাক্রমে ৩৬.৪%, ৩৯% এবং ৩৫.৪%।

রাধা কমল মুখোপাধ্যায় ১৮৮১ থেকে১৯৩১ আদমশুমারির তথ্য বিশ্লেষণ করে বাংলায় শিক্ষিতদের জাতিগত ও সম্প্রদায়গত একটি চিত্র দেন। তাঁর মতানুযায়ী, (৫-৭ বছরের শিশু থেকে আরও বয়স্ক)

জাতি              শতকরা হার
ব্রাহ্মণ                ৪৫
কায়স্থ                ৪০
বৈদ্য                   ৬৩
মাহিষ্য                ১৮
নমসুদ্র                 ৮
রাজবংশী             ৫
মুসলিম                ৭

উপরের তালিকা দেখলে বোঝা যায় শিক্ষিতের হার বর্ণহিন্দুদের (বৈদ্য, ব্রাহ্মণ, কায়স্থ) মধ্যেই বেশি। আসাম মুখি বাঙালিদের ৮৫% ছিল মুসলিম, বাকি দরিদ্র হিন্দু।  পূর্ববঙ্গ থেকে শিক্ষিত হিন্দুরা অধিকাংশই তৎকালীন বাংলা শুধু নয় ভারতবর্ষের শিক্ষা, সংস্কৃতির পীঠস্থান কলকাতামুখি হলেও কিছু কিছু আসামমুখি হয়েছিল। এর থেকে একটি সিদ্ধান্তে আসা যায় স্বাধীনতার আগে থেকেই পূর্ববঙ্গে হিন্দুর সংখ্যা ক্রমে হ্রাস পাচ্ছিল।

আরও একটি সিদ্ধান্তে আসা যায় মানুষ সবসময়ই তার সহজ ও অল্পায়াসে রুটি-রুজির প্রাপ্তি স্থানের দিকেই ধাবিত হয়। বিজেপি কথিত পরিকল্পিত জনবিন্যাস পরিবর্তনের জন্য মুসলিমদের আগমন একটি হাস্যকর ভাবনা।

১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হয়। পূর্ববঙ্গ থেকে ১৯৪১ আদমশুমারি পর্যন্ত দেখেছি কোলকাতামুখী এবং আসামমুখী অভিবাসন। কলকাতা মুখী অভিবাসন ছিল শিক্ষিত জনের এবং আসাম মুখী অভিবাসন ছিল কৃষকদের।

১৯৫১ আদমশুমারিত এসে আমরা আর অভিবাসন বলবো না বলবো উদ্বাস্তু। কারণ ততদিনে কলমের খোঁচায় পূর্ববঙ্গ ও পশ্চিমবঙ্গের দুটি ভিন্ন দেশে পরিণত হয়েছে। দুই দেশ থেকে দলে দলে মানুষ বিশেষ করে প্রান্তিক মানুষ পাগলের মত আশ্রয়ের খোঁজে এপার ওপার করেছে।

উদ্বাস্তুদের পশ্চিমবাংলায় চলে আসার বিষয়টিকে অধ্যাপক অমলেন্দু দে ভাগ করেছেন সময় হিসাবে চারটি ভাগে।

প্রথম ভাগ-, ১৯৪৬ থেকে১৯৪৮।  অধ্যাপক ‘দে-র হিসাব অনুযায়ী এই সময় ১১ লক্ষ উদ্বাস্তু এ রাজ্যে প্রবেশ করেছিল। নোয়াখালী এবং কুমিল্লায় দুটি বড় দাঙ্গা হয় এই সময়। দ্বিতীয় ভাগ- টি হল ১৯৫০-এর ফেব্রুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর ১৯৫২ পর্যন্ত। ১৯৫০-এর শীতে এবং ১৯৫২-র শরৎকালে পূর্ববঙ্গে দাঙ্গা হয়। এখন পর্যন্ত প্রায় ৩৫ লক্ষ উদ্বাস্তু পশ্চিমবঙ্গে এসে পৌঁছায়। তৃতীয় ভাগ- ১৯৫২ সালে শরৎকাল থেকে ১৯৬০ এই সময়কালে ছোটখাটো কয়েকটি দাঙ্গা হয়। বিশেষত্ব সংখ্যালঘুদের সম্পত্তি ক্রয় বিক্রয় সংক্রান্ত কিছু আপত্তিকর আইন সংখ্যালঘুদের মধ্যে নিরাপত্তার অভাব তীব্রতর করে। চতুর্থ ভাগ- ১৯৬১ থেকে ১৯৭০ এই সময়কালে ছোটখাটো দাঙ্গা হলেও দাঙ্গা প্রতিরোধের ক্ষমতাও অর্জিত হয়।

পশ্চিমবঙ্গে উদ্বাস্তু সংখ্যা কত?

এই বিষয়ে ১৯৭৪-এ প্ল্যানিং কমিশনের সামনে পশ্চিম বঙ্গ সরকার হিসাব দেয়;৫৯,৯৯,৪৭৫ জন। কিন্তু উদ্বাস্তুদের জন্ম-মৃত্যু হিসাব ছাড়াই এই সংখ্যাটি দেওয়ার ফলে একটি ভ্রম তৈরি হয়। তাই বিশেষজ্ঞগণ বলে থাকেন উদ্বাস্তু সংখ্যা ৪৫ লক্ষের বেশী হবে না।

জেলা    ১৯৭৪          ১৯৭১   মোট জনতা উদ্বাস্তু সংখ্যা %
নদীয়া                    ১৫.৭৫ ১৩.৮৫ ৬২.১%
কুচবিহার                ৪.৪২  ৪.০৮    ২৯%
কলকাতা                 ৯.০০   ৮,৩০ ২৬.৪%
২৪ পরগনা              ১৬.৫ ১৫.২২ ১৮%
পশ্চিম দিনাজপুর     ২.৯২ ২.৭০ ১৪.৫%
জলপাইগুড়ি             ২.৪৯ ২.২৯ ১৩.১%

জনসংখ্যার হিসাব লক্ষ ধরে-

এইভাবে ১৯৭৪ (৫৯,৯৯,৪৭৫)- এর হিসাবে ও ১৯৭১ (৫৫,৩৪,৫৭১)- এর আদমশুমারির হিসাবে প্রায় ৫ লক্ষ্যের গরমিল দেখা যায়। শতকরা হিসাবে সমস্ত পশ্চিমবঙ্গে ১২.৫ ভাগ উদ্বাস্তু ছিল।  স্থানীয় জনসংখ্যার তুলনায় নদীয়াতে উদ্বাস্তু বেড়ে যায়, প্রতি তিনজনে দু’জন ছিল উদ্বাস্তু। কুচবিহারে প্রতি তিনজনে একজন। হিস্টরি অফ বাংলাদেশ-এ আতহারুল ইসলাম বলেছেন, দুই দশকে উদ্বাস্তু সংখ্যা হবে ২৯ লক্ষ। বংশবৃদ্ধির ফলে ১৯৭১-এ তা দাঁড়াবে ৩৯ লক্ষে। হিসাবে গরমিল থাকলেও ১০ থেকে ১৩ শতাংশ জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেলে রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়। যদিও একটি বিপরীতমুখী পরিচালন হয়েছিল কিন্তু তা অতি নগণ্য।

মনে রাখতে হবে স্বাধীনতার আগেও পূর্ববঙ্গ থেকে অভিবাসন হত। কিন্তু ১৯৪৭- এ যে পরিচালন শুরু হয় তা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক। এটা কোন স্বাভাবিক পরিচালন ছিল না, বরং চাপিয়ে দেওয়া।

 

‘নবজাগরণ’ অ্যান্ড্রোয়েড অ্যাপ্লিকেশনটি প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।

‘নবজাগরণ’ এর টেলিগ্রাম চ্যানেলে জয়েন হতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।

‘নবজাগরণ’ এর ফেসবুক পেজে লাইক করতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।

Post Views: 5,058
Tags: Infiltrationঅনুপ্রবেশঅনুপ্রবেশের রাজনীতিবাংলাদেশি অনুপ্রবেশবিজেপিবিজেপি সরকারভারতীয় জনতা পার্টি
ADVERTISEMENT

Related Posts

RAW-কে নিষিদ্ধ করার পিছনে আমেরিকা উদ্দেশ্য কি?
রাজনীতি

RAW-কে নিষিদ্ধ করার পিছনে আমেরিকা উদ্দেশ্য কি?

লিখেছেনঃ মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম সাম্প্রতিক কালে ভারতের বৈদেশিক গুপ্তচর সংস্থা ‘রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং’— সংক্ষেপে ‘র’ (RAW) —কে কেন্দ্র...

by মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম
June 25, 2025
রহস্য উদ্ঘাটন মূলক বিশ্বাস খ্রিস্টানদের ইজরাইল সমর্থনের বড় কারণ
ইসলাম

‘রহস্যউদ্ঘাটনমূলক’ বিশ্বাস আমেরিকান খ্রিস্টানদের ইহুদি ও ইজরাইল সমর্থনের বড় কারণ

লিখেছেনঃ মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম রহস্য উদ্ঘাটন পন্থী খ্রিস্টান মৌলবাদীরা ‘বাইবেল সংক্রান্ত কারণে’ আরও ব্যপকভাবে ফিলিস্তিন-ইজরাইল সংঘাত বৃদ্ধি পাচ্ছে। [Apocalypse...

by মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম
July 10, 2025
প্রজাতন্ত্র দিবসে প্রজারাই অরক্ষিত : পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ
রাজনীতি

প্রজাতন্ত্র দিবসে প্রজারাই অরক্ষিত : পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ

আমরা প্রতি বছর বেশ ঘটা করেই প্রজাতন্ত্র দিবস পালন করে থাকি, কিন্তু সেই প্রজারা তথা দেশের নাগরিকরা আজও কতটা...

by আমিনুল ইসলাম
June 26, 2025
চিত্তরঞ্জন দাশ
ভারতবর্ষের ইতিহাস

চিত্তরঞ্জন দাশঃ সত্যিকারের গণতন্ত্রের প্রকৃত প্রবক্তা

দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের স্বপ্ন ছিল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ভিত্তিতে এক সর্বভারতীয় যুক্তরাষ্ট্র গঠন। তিনি বলেছিলেন, ‘হিন্দু- মুসলমানের মিলন ভিন্ন স্বরাজের...

by আমিনুল ইসলাম
June 25, 2025

Facebook Page

নবজাগরণ

ADVERTISEMENT
No Result
View All Result

Categories

  • English (9)
  • অন্যান্য (11)
  • ইসলাম (28)
  • ইসলামিক ইতিহাস (23)
  • ইহুদী (3)
  • কবিতা (37)
  • খ্রিস্টান (6)
  • ছোটগল্প (6)
  • নাস্তিকতা (18)
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (24)
  • বিশ্ব ইতিহাস (26)
  • ভারতবর্ষের ইতিহাস (196)
  • রাজনীতি (38)
  • সাহিত্য আলোচনা (72)
  • সিনেমা (18)
  • হিন্দু (16)

Pages

  • Cart
  • Checkout
  • Checkout
    • Confirmation
    • Order History
    • Receipt
    • Transaction Failed
  • Contact
  • Donation to Nobojagaran
  • Homepage
  • Order Confirmation
  • Order Failed
  • Privacy Policy
  • Purchases
  • Services
  • লেখা পাঠানোর নিয়ম
  • হোম

No Result
View All Result
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi

©Nobojagaran 2020 | Designed & Developed with ❤️ by Adozeal

Login to your account below

Forgotten Password?

Fill the forms bellow to register

All fields are required. Log In

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In
Don't have an account yet? Register Now
1
Powered by Joinchat
Hi, how can I help you?
Open chat
wpDiscuz
0
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x
| Reply