ভারতের ইতিহাসকে উদ্দেশ্যপ্রণােদিতভাবে বিকৃত করেছেন ব্রিটিশ ঐতিহাসিকেরাই। আর ভারতীয় ঐতিহাসিকদের অনেকেই সচেতন বা অচেতনভাবে ইতিহাসের সেই ব্যাখ্যা যাচাই না করে গ্রহণ করেছেন। ফলে ভারতের ইতিহাসে অনেক ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতার অভাব থেকে গেছে। আর এই পক্ষপাতদুষ্ট ইতিহাস ভারতে বিভেদ সৃষ্টিতে পরা অনুঘটকের মত কাজ করে চলেছে। তাই জাতীয় স্বার্থে তথা দেশে সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখতে ইতিহাসের ওইসব বিকৃতি বা অতিরঞ্জিত কথন অপনােদন করা জরুরি হয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে ঐতিহাসিকদের বেশি করে যত্নশীল ও দায়িত্বশীল হতে হবে। যাতে করে সাম্প্রতিক গবেষণালব্ধ সর্বজনগ্রাহ্য ইতিহাস বিপুল সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়।
মনে রাখতে হবে, অন্ধবিশ্বাস আর আবেগ দিয়েই ইতিহাস রচিত হতে পারে না। যুগের সঙ্গে সঙ্গে গবেষণার বিকাশ ও নানা অজানা তথ্য উন্মােচনের মধ্য দিয়ে ইতিহাসের বহু অতিকথা ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়, বহু অভিনব মাত্রা সংযােজিত হয়ে আলােকিত হয় অন্ধকারময় ইতিহাস। মধ্যযুগের ভারত ইতিহাসের ক্ষেত্রেও ঠিক এটাই ঘটেছে। হেনরি ইলিয়ট, ডওসন, হেনরি বেভারিজ, রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, যদুনাথ সরকার, রমেশচন্দ্র মজুমদার, জগদীশ নারায়ণ সরকার, আলতাফ হােসেন, জেড এ সুলেরি, তােফায়েল আহমদ, আর ডি ভাণ্ডারকর, শ্রীরাম শর্মা ও সীতারাম গােয়েলদের ঐতিহাসিক প্রমাদ ঘুচিয়ে দিয়েছে ডি ডি কোশাম্বী, সৈয়দ নুল হাসান, এ বি এম হাবিবুল্লাহ, রামশরণ শর্মা, সতীশচন্দ্র, আতাহার আলি, ইকতিদার আলম খান, ইরফান হাবিব, রমিলা থাপার, বিপানচন্দ্র, হরবংশ মুখিয়া, বি এন পাণ্ডে, নীহাররঞ্জন রায়, আর এম ইটন, রিচার্ড এইচ ডেভিস, গৌতম ভদ্র ও ডি এন ঝা-দের গবেষণালব্ধ সমন্বয়ধর্মী ইতিহাসচর্চা। কিন্তু উচ্চতর শ্রেণির পাঠ্যসূচির বাইরে এই সব গবেষণা অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় সর্বজনপাঠ্য ইতিহাস গ্রন্থের ব্যাপক পাঠক এখনও আগেকার ভুলই আওড়ে চলেছে। আর এই ইতিহাসের পাঠই মৌলবাদী রাজনীতিবিদদের জন্যে উর্বর ক্ষেত্র তৈরি রাখছে, যেখানে হিংসাবিদ্বেষের বীজ বুনে চলেছেন বর্তমানে এক শ্রেণির পণ্ডিত।
মুসলিম শাসকদের মন্দির ভাঙার বিষয়টিকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি জলঘােলা হয়। অথচ বিষয়টির সত্যাসত্য নিয়ে মােটেই ভাবনা চিন্তা করি না। হিন্দু মন্দির ধ্বংস করার উদ্দেশ্য আর যাই হােক না কেন, হিন্দুদের ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করা নিশ্চয় নয়! মন্দির ধ্বংসক্রিয়া তাদের মনে ইসলাম সম্বন্ধে প্রেম নয়, বরং ঘৃণারই উদ্রেক করে। তা হলে এ ধরনের কার্যকলাপের উদ্দেশ্য তাদের মন্দির ধ্বংস করা নিশ্চয় নয়, নিশ্চয়ই অন্য কোনও অভিপ্রায় ছিল। এটা লক্ষণীয় যে, সাধারণত কেবলমাত্র শত্রুপথের এলাকার মন্দিরগুলিই ধ্বংস করা হয়েছে। মন্দিরগুলি ষড়যন্ত্র বা বিদ্রোহের কেন্দ্র না হয়ে দাঁড়ালে সম্রাটের নিজের এলাকার মধ্যে কখনওই তা ধ্বংস করা হত না।
তুর্কি ও মুঘলরা শাসন-প্রশাসন চালিয়েছে হিন্দুদের দিয়েই, গােটা ভারত কখনও তুর্কি-মুঘল অধিকারেও ছিল না। হিন্দু প্রজা রইল, তার পারিবারিক জীবন রইল, গ্রামেগঞ্জে, শহরে-নগরে মন্দিরও রইল। কয়েকটি মসজিদে কয়েক টুকরাে মূর্তি অঙ্কিত পাথর দেখেই কি বলা যায় তুর্কি-মুঘলরা মন্দির ভেঙেছে? অথবা বলা যায়, সংশ্লিষ্ট মসজিদের স্থলে পূর্বে মন্দির ছিল? কালের নিয়মে জরাজীর্ণ হয়ে বহু বৌদ্ধ-জৈন স্থাপত্য ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। অনেক হিন্দু মন্দিরও কালের গ্রাসে গুরুত্বহীন হয়ে ধ্বংস হয়েছিল। এককালে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল জুড়ে বৌদ্ধ বা হিন্দুরা ইসলামধর্ম গ্রহণ করেছিল, যেটা বিবেকানন্দসহ বহু মনীষী স্বীকার করেছেন। এক্ষেত্রে ওইসব অঞ্চলে বৌদ্ধ বা হিন্দু মন্দির নব মুসলিমদের কাছে প্রয়ােজনীয়তা হারিয়েছিল। কালক্রমে সেগুলি জরাজীর্ণ হয়ে ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়েছিল। সেই ধ্বংসাবশেষ ব্যবহার করে হয়ত পরে মুসলিম স্থাপত্য গড়ে উঠেছিল। এ কথা বিশেষভাবে মনে রাখা প্রয়ােজন যে, কোনও প্রাচীন ইসলামীয় সৌধে অ-ইসলামীয় অলংকরণের অবস্থিতি অনিবার্যভাবে প্রমাণ করে না যে, সেই সৌধটি নির্মাণে নিকটবর্তী কোনও অ-ইসলামীয় ধর্মস্থানের যেখানে তখনও ধর্মাচরণ চলছিল—তাকে ধ্বংস করেই সেই সব অলংকরণ আহৃত হয়েছিল।
প্রাচীন বা মধ্যযুগে ঘটে যাওয়া এইসব ঘটনার কোনাে মীমাংসা খুঁজতে যাওয়া আধুনিক যুগে অসম্ভব—ভারতের দীর্ঘ বিচিত্র ইতিহাসে অঘটনের কোনও শেষ নেই, কোনও সম্প্রদায়ের উপর কবে কে অত্যাচার করেছে, এই চাপান উতােরের শেষ খুঁজে পাওয়া ভার। ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দু শাসকদের কেউ কেউ বৌদ্ধ-জৈনদের ধর্মস্থান ধ্বংসে দ্বিধা করেনি। মুসলিম শাসকদের কেউ কেউ হিন্দু মন্দির ধ্বংসেও কার্পণ্য করেননি। আবার কোনও ক্ষেত্রে হিন্দু শাসকদের কেউ কেউ মসজিদও ধ্বংস করেছেন। এই রক্তাক্ত ইতিহাস নিয়ে টানাটানি করে সংশােধনের চক্রব্যুহে ঢােকা বােকামি ছাড়া কিছু নয়। খেয়াল রাখতে হবে উত্তর ভারতের অযােধ্যাসহ আশেপাশের এলাকায় একসময় বৌদ্ধ ধর্মের প্রবল দাপট ছিল। বৌদ্ধরা হিন্দু পুরাণকথা এবং দেবদেবী মানত না। তবে মহাযান বৌদ্ধদের প্রচুর সংখ্যক দেবদেবী ছিল। এইসব দেবদেবীর মূর্তি ও মন্দিরও ছিল। প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের ঘটনাপ্রবাহ সাক্ষ দেয়, একসময় বৌদ্ধরা ভারত ভূখণ্ডের বেশিরভাগ জায়গা থেকে ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দু শাসকদের দ্বারা বিতাড়িত হয়েছিল। তখন মহাযান বৌদ্ধদের মন্দির এবং দেবদেবীদের হিন্দুকরণ ঘটিয়ে ফেলা হয়। সেই কারণেই মাটির তলায় খনন কার্য চালিয়ে ঐতিহাসিক নিদর্শন খুঁজতে গেলে যেসব প্রত্নতাত্বিক নিদর্শন পাওয়া যায় সেগুলির সবই হিন্দু নিদর্শন হবে এমন কোনও গ্যারান্টি নেই।
অবশ্য প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের ভিত্তিতে কোনও বিশেষ ভূমিখণ্ডকে কোনও ধর্মীয় সম্প্রদায় নিজেদের বলে দাবি করতেই পারেন। কিন্তু সেই দাবি গ্রাহ্য হলে শুধু বৌদ্ধরা কেন, সাঁওতাল, কোল, ভিল, মুণ্ডা ইত্যাদি আদিবাসীরাও এমন অনেক ধর্মস্থানকেই তাদের বলে দাবি করে বসতে পারে, যেগুলি বাস্তবে এখন তাদের নয়। এরকম সম্ভাবনাকে কাল্পনিক মনে করার কোনও কারণ নেই। ভারতের এমন কিছু কিছু ধর্মস্থান আছে যেগুলি প্রকৃত মালিকদের হাত থেকে কার্যত জবর দখল হয়ে গেছে বলে বিশেষ করে সাঁওতাল-আদিবাসী এবং বৌদ্ধরা দাবি করে। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের স্থলে তাে এক সময়ে প্রাচীন বৌদ্ধ মন্দির ছিল। এ বিষয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতভেদ নেই। এখন বৌদ্ধরা যদি পুরীতে উৎখননের দাবি তােলেন এবং ভারতীয় প্রত্নতাত্বিক বিভাগ সেখানে ভুল করেও বৌদ্ধ স্থাপত্যের দু-একটি টুকরাে পেয়েও যায়, তাহলে কি সেক্ষেত্রে বৌদ্ধদের দাবি মেনে নেওয়া হবে? এমন বহু ঘটনা ইতিহাসের সাক্ষবাহী। এক্ষেত্রে তাহলে আমরা কি সিদ্ধান্ত নেব? ইতিহাস কি আমাদের অতীতের পুননির্মাণের অধিকার দেয়? সমস্ত ধ্বংসের পর যেটা নবনির্মিত হয়েছে, সেটাকে মান্যতা দেওয়াই তাে সভ্যতা।
আজ যদি মুসলিম শাসকদের মন্দির ধ্বংস নিয়ে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ প্রচার যুক্তিযুক্ত হয়, তাহলে সম্রাট শশাঙ্ক, রাজা হর্ষ, রাজা পুষ্যমিত্র, অজাতশত্রু, রাজা সুভাতবর্মন, চন্দ্রগুপ্ত, হর্ষবর্ষন, দ্বিতীয় পুলকেশী, মহেন্দ্রবর্মা, রাজেন্দ্র চোল কর্তৃক ধ্বংসপ্রাপ্ত হিন্দু-বৌদ্ধ-জৈন মন্দিরগুলির কথাও উত্থাপিত হওয়া আবশ্যক। সমুদ্রগুপ্তের কথা ধরুন না। ঐতিহাসিক স্মিথ প্রশংসার অর্থে তাকে ‘ভারতের নেপােলিয়ন’ বলে উল্লেখ করেছেন। ঐতিহাসিক মজুমদার-রায়চৌধুরী-দত্ত তাকে মহান বলেছেন। অথচ ওই ঐতিহাসিকেরা এটা জানাননি—সমুদ্রগুপ্তের দক্ষিণ ভারত অভিযানের কারণ ছিল নিছক রাজ্যলিপ্সা ও ধনলিপ্সা। সমুদ্রগুপ্তের অভিযানের ফলে সেখানকার সমাজ ও অর্থনীতি কি বিপর্যস্ত হয়নি? অথচ ভারত ইতিহাসে এই সমুদ্রগুপ্তের বন্দনার শেষ নেই! আর মাহমুদ কিন্তু একই কাজের জন্য নানাভাবে নিন্দিত। কেন সমুদ্রগুপ্ত ও মাহমুদের ঐতিহাসিক মূল্য নিরুপণে এমন বৈষম্য?
এমন বৈষম্য ঔরঙ্গজেব ও শিবাজীর ক্ষেত্রেও দেখা যায়। শিবাজী বলেই কি তার নিষ্ঠুরতা ও তাঁর লুণ্ঠনবৃত্তিকে উপেক্ষা করা হবে? তবে এটা মনে করার কোনও কারণ নেই যে, ঔরঙ্গজেবের জীবনে কোনও কালাে দিক ছিল না। আমাদের ইতিহাসের পাঠ্যপুস্তকেও তার প্রমাণ মিলবে যথেষ্ট পরিমাণে। কিন্তু প্রশ্ন হল, ঔরঙ্গজেবের রাজত্বকালে বিদ্যমান ধর্মীয় সহিষ্ণুতার বিশাল ইতিবাচক দিকগুলি কেন উপেক্ষা করা হবে? আমাদের পাঠ্যপুস্তকে ওই দিকগুলিকে কেন বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে না? কেন তাঁর নেতিবাচক দিকগুলিকে অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে দেখান হবে? কেন ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিকগুলির মধ্যে একটা সামঞ্জস্য থাকবে না? তাহলে আমরা কি ভারতবর্ষের ইতিহাসকে হিন্দুদের জন্য একরকম আর মুসলমানদের জন্য অন্যরকম মানদণ্ডে দেখব? আর এই দু’রকম মানদণ্ড কি ভারতীয় জনগণের মনে সাম্প্রদায়িক বিভেদ ও ব্যবধান সৃষ্টি ও বর্ধন করবে না বা করেনি?
তবে একথা মনে করার হেতু নেই যে, সাম্প্রদায়িক মানসিকতা থেকে রচিত ইতিহাসে সব ভুল তথ্য পরিবেশিত হয়, তবে একথা অবশ্যই বলা যায় যে, ওইসব ইতিহাস অর্ধ সত্য শিক্ষা দেয়। কারণ ইতিহাসে যেমন সংঘর্ষ আছে, সমন্বয়ও তেমন আছে, বিরােধ যেমন আছে, মিলনও তেমনই আছে। অতীতের অতি বিশাল ঘটনা ভান্ডারে ঐতিহাসিক যেটা খুঁজবেন তিনি সেটাই পাবেন। সমস্ত ও পরিপূর্ণ তথ্যের একত্রিতকরণ অসম্ভব, যা সম্ভব তা হল—মানুষের পক্ষে মঙ্গলকর, সামঞ্জস্যপূর্ণ বা সমন্বয়মূলক একটা সংস্থানের উপস্থাপন।
তবে রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে মধ্যযুগে রাজশক্তির পক্ষে থেকে এই সমন্বয়মূলক তত্ত্ব সচেতনভাবে প্রয়ােগ করা হয়েছিল কিনা। যদিও ভারতের প্রাচীন ধর্মীয় ঐতিহ্যের মধ্যে সমন্বয় ভাবনার বহু উপাদান পাওয়া যায়, কিন্তু আধুনিক ভারতীয় সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতার প্রেক্ষাপট হিসেবে বেশি প্রাসঙ্গিক বলেই মধ্যযুগীয় শাসকদের বিশেষ করে সুলতানি ও মুঘল শাসকদের রাষ্ট্র পরিচালনায় রাজশক্তির সমন্বয়মূলক তথা ধর্মনিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি ও প্রবণতাকে অধ্যাপক ইকতিদার আলম খান বেশি করে গুরুত্ব দিয়েছেন। মধ্যযুগে ভারতের রাষ্ট্রপ্রধান মুসলিম হলেও, রাষ্ট্র কিন্তু ইসলামি ছিল না। রাষ্ট্র কখনই ইসলামের চার মযহাবের বিধিবদ্ধ বিধান অনুসরণ করেনি। বিখ্যাত ঐতিহাসিক মুহাম্মদ হাবিব তাই বলেছেন,
“বিদেশাগত হলেও মুসলিম বাদশাহরা যে ৬০০/৭০০ বছর হিন্দুস্তানের মসনদে গদিয়ান থাকতে পেরেছিলেন, তার কারণ তাদের শাসন কোনওভাবেই ইসলামি ছিল না। থাকলে এক প্রজন্মও তারা টিকতে পারতেন না।”
শাসকরা ইসলাম ধর্মাবলম্বী ছিলেন বলে অনিবার্যভাবে তাদের হিন্দুবিরােধী হতে হবে, এরকম ধারণা ভুল। আর ইতিহাসবােধের এই বিভ্রান্তি বিভেদের জন্ম দেয়।
‘নবজাগরণ’ অ্যান্ড্রোয়েড অ্যাপ্লিকেশনটি প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।
‘নবজাগরণ’ এর টেলিগ্রাম চ্যানেলে জয়েন হতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।
‘নবজাগরণ’ এর ফেসবুক পেজে লাইক করতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।