লিখেছেনঃ তন্ময় সিংহ রায়
আন্ত মহাশূন্যে ভাসমান এ নীল গ্রহের প্রতি তবে কি আমাদের অধিকার ক্রমশ হয়েই আসছে শেষ? হয়তাে বিভিন্ন বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে পৃথিবীর তা আমাদের জানান দিচ্ছে মাঝেমধ্যেই। একদিকে বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাবে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে আন্টার্টিকার বরফ গলনের পরিমাণ, নষ্ট হচ্ছে। পরিবেশের ভারসাম্য এবং এভাবে চলতে থাকলে এর ভবিষ্যৎ পরিণাম যে কতটা বিপদজনক, তা আজ আমরা প্রায় অনেকেই বুঝি।
এদিকে ভারত তথাসমগ্র বিশ্বব্যাপী, মারণ করােনা ভাইরাসের ত্রাসের মাধ্যমে মৃত্যুমিছিল এখনও অব্যাহত। দেশে-বিদেশে আর্থিক ব্যবস্থা ভেঙে-চুরে, দুমড়ে-মুচড়ে প্রায় একাকার। বিশেষত এমতপরিস্থিতিতে, দিনের পর দিন ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে বেকারত্বের সংখ্যাটা। কর্মহীন সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষগুলাের জীবন যেন ক্রমশই তলিয়ে যাচ্ছে। গহীন অন্ধকারের অতল গহ্বরে। অন্যথায় পৃথিবীর থেকে ক্রমশ নিশ্চিহ্ন হয়ে আসার অকৃত্রিম সংকেত বহন করে চলেছে মিষ্টি জলের উৎস, অথচ ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যানুযায়ী বেড়ে চলেছে সেই জলের-ই চাহিদা।
অপরদিকে আন্তর্জাতিক রাজনীতি স্তরে বৃহৎ শক্তিধর দেশগুলাে পরস্পরকে নানা ধরনের হুমকি দিয়ে আসছে বহুদিন ধরেই। এছাড়াও ইরাক, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, মিসর, তুরস্ক, সােমালিয়া, নাইজেরিয়া, লিবিয়া, নাইজার ও চাদ-সহ বিশ্বের বেশ কিছু দেশ সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, বিচ্ছিন্নতাবাদ ও জাতিগত সংঘাতে একেবারে জর্জরিত। মৃত্যু ও রক্তক্ষয় এ সমস্ত দেশে যেন পরিনত হয়েছে। প্রায় নিত্যদিনের এক স্বাভাবিক ঘটনায়। বিশ্বের প্রায় প্রতিটা দেশই আজ ভীষণ ব্যস্ত তাদের সামরিক শক্তি বৃদ্ধিতে। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ থেকে শুরু করে ইরাক আমেরিকা, চিন, রাশিয়া, উত্তর কোরিয়া প্রভৃতিতে চাপানউতাের চলছেই। আন্তর্জাতিক আইনকে তুচ্ছ করেই যে কোন মুহুর্তে যেন ঘটে যেতে পারে মহাবিপর্যয় বা প্রলয়কান্ড। এই বুঝি আঙুলের চাপ পড়ে গেল পরমাণু অস্ত্রের বােতামে, এমনই এক ভয়াবহ পরিস্থিতি। কিছুদিন আগেই, লেবাননের বেইরুট বন্দরের একটি ওয়্যারহাউসে ২ হাজার ৭৫০ টন অ্যামােনিয়াম নাইট্রেট-এরভয়াবহ ও মর্মান্তিক বিস্ফোরণ। এখানেই থেমে নেই প্রকৃতি, আরাে বড় অর্থাৎ মহা-বিপর্যয়ের ঈঙ্গিত দিলেন ভূ-বিজ্ঞানীরা।
বিভিন্ন সংবাদ সূত্রে জানা গেছে যে, ভারত মহাসাগরের নিচে সু-বিশাল টেকটনিক প্লেটে সৃষ্টি হয়েছে ফাটল! ভূ-বিজ্ঞানীদের এক অংশের দাবী, ফাটল নয় বরং ভেঙে দুখটুকরাে হয়ে গেছে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মাঝে থাকা এই প্লেট, আর টেকটনিক প্লেটের এই পরিবর্তনের ফলেই পৃথিবীর বুকে ঘটে যেতে পারে বড়সড় কোন ভূমিকম্প ও প্রবল জলােচ্ছাস। বিজ্ঞান বিষয়ক এক ওয়েবসাইট ‘লাইভ সায়েন্স’-এর তথ্য অনুযায়ী, আট বছর আগে ভারত মহাসাগরের নীচে একের পর এক ভূমিকম্প হওয়ার ঘটনার পর থেকেই ওই প্লেটের চলনে লক্ষ্য করা যায় পরিবর্তন।
[সৌজন্যেঃ দিন দর্পণ]