লিখেছেনঃ আবু রিদা
হারুন ইয়াহইয়ার প্রকৃত নাম আদনান উতার। লেখক হিসাবে (কলমী নাম) তিনি তার নাম রাখেন হারুন ইয়াহইয়া। যা বনী ইসরাঈলের দুই নবী- হারুন ও ইয়াহইয়া-র নাম নিয়ে গঠিত। যাঁরা কুফরীর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক সংগ্রাম করেন। তিনি তুরস্কের শীর্ষস্থানীয় পণ্ডিতদের অন্যতম।
তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় তার জন্ম। ১৯৫৬ সালে। নৈতিক শিক্ষার প্রসার ও সমাজ সংস্কারে তিনি নিজেকে ওয়াকফ করে রেখেছেন। বিশ্বের প্রভাবশালী ইসলামী মুয়াল্লীগের তিনি অন্যতম। ইসলামের তবলীগ, এর প্রচারপ্রসার ও হিফাযতের জন্য আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান, বিশেষ করে বিজ্ঞানের গভীর গবেষণায় তিনি লিপ্ত।
তাঁর এই গবেষণামূলক কাজকর্মের সূত্রপাত ১৯৭৯ সালে যখন তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমি অব ফাইন আর্টসের ছাত্র ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠরত অবস্থায় তাঁর মনে এই অনুভূতি জাগে যে, বস্তুবাদ মানুষকে নামিয়ে এনেছে জীবজন্তুর কাতারে। মানবসমাজের শিক্ষিত সম্প্রদায় আল্লাহর অস্তিত্বে অবিশ্বাসী হয়ে উঠতে থাকে। আর এর ফলেই মানবচরিত্রে চরম অবনতি ঘটে।
হারূন ইয়াহইয়া জেহাদ শুরু করেন এর বিরুদ্ধেই। তিনি একের পর এক বই লিখতে শুরু করেন। ডারউইনের বিবর্তনবাদকে ভিত্তিহীন প্রমাণ করার লক্ষ্যে লিখিত এসব বই খুবই জনপ্রিয়তা লাভ করে। বিশ্ববিখ্যাত বহুল প্রচারিত ‘নিউ সাইন্টিটিস্ট’-এর ২২ এপ্রিল ২০০০ সালের সংখ্যানুযায়ী বস্তুবাদ ও ডারউইনবাদের বিরুদ্ধে তাঁকে বিশ্বনায়ক বানিয়ে দিয়েছে। এমনকী, ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সায়েন্স, নিউ সাইন্টিস্ট এবং এন.এস.সি.ই রিপোর্টারের মতো বিশ্বখ্যাত পত্রপত্রিকায় তাঁর প্রবন্ধ-নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। অথচ এতদিন ধরে বিশ্বব্যাপী ডারউইনবাদকেই প্রচার-প্রসারিত করে আসছে। অন্যদিকে, হারুন ইয়াহইয়ার কৃতিত্ব এখানেই যে তার বৈজ্ঞানিক গবেষণার গভীরতার সুবাদেই এসব পত্রপত্রিকা তার কথা শুনতে বাধ্য হয়।
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ম্যাগাজিনের ২০০৪-এর নভেম্বর সংখ্যা ইংরেজি ও জার্মান সংস্করণ হারুন ইয়াহইয়ার এই গবেষণাকে সৃষ্টিতত্ত্বের একটি প্রত্যক্ষ ও মজবুত দর্শন বলে অভিহিত করে। হারূন ইয়াহইয়া তাঁর গ্রন্থসমূহে যিয়নবাদেরও গভীর সমালোচনা করেন। তিনি ইহুদী ধর্মের অযৌক্তিক দর্শন ও অবৈজ্ঞানিক দাবিদাওয়াকে খণ্ডন করেছেন তাঁর গ্রন্থসমূহে। তাঁর গ্রন্থসমূহ অনূদিত হয়েছে বিভিন্ন ইউরোপীয় ও পৃথিবীর বড় বড় ভাষায়— যেমন ইংরেজি, ফ্রেঞ্চ, জার্মানী, ইতালীয়, রুশ, স্পেনীয়, পর্তুগীজ, আলবানীয়, বোসনীয়, পোলিস, আরবী, উর্দু, ইন্দোনেশীয়, কাযাখস্তানী, আযারী, মালয়, মালয়লম ইত্যাদি ভাষাতে।
হারুন ইয়াহইয়ার তামাম গ্রন্থ লেখা হয়েছে কুরআন-হাদীসের আলোকে। কিন্তু এস লেখা তুলনামূলক বৈজ্ঞানিক দৃষ্টান্তে ভরপুর। এসবে তিনি একেবারে সাম্প্রতিক বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার ও গবেষণা পর্যন্ত তার দৃষ্টান্ত টানেন। এখানেই তাঁর কৃতিত্ব, এখানে তাঁর শক্তি। সেজন্যই বাতিল মতবাদ এবং নাস্তিক ও আল্লাহ-অস্বীকারকারীদের নাড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।
‘নবজাগরণ’ অ্যান্ড্রোয়েড অ্যাপ্লিকেশনটি প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।
‘নবজাগরণ’ এর টেলিগ্রাম চ্যানেলে জয়েন হতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।
‘নবজাগরণ’ এর ফেসবুক পেজে লাইক করতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।