• মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
Sunday, June 1, 2025
নবজাগরণ
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ
No Result
View All Result

চলচ্চিত্রে গানের ব্যবহারঃ আলোচনা সমালোচনা ও বিশ্লেষণ

নবজাগরণ by নবজাগরণ
August 10, 2020
in সিনেমা
0
চলচ্চিত্রে

Image Source: wallpaperflare

Share on FacebookShare on Twitter

লিখেছেনঃ কমল মজুমদার

এ-দেশটার মতাে এমন গান পাগলা দেশ আর কোথাও নেই। ইস্কুল যেতে যেতে সারা পথ হিজিবিজি কথার ফাঁকে ফাঁকে, এ-গলা সে-গলায় সরু মােটায় মিহিতে মিলিয়ে মিশিয়ে বিচিত্র সুরের রেশ; দান-ঘরে ছােট বােনের গলা যখন রিনরিন করে, সারা বাড়িতে ঢেউ তুলে উপর থেকে বড় বােন গুনগুন করতে করতে নেমে আসে নিচে। পাশের বাড়িতে তখন কেউ প্রাণপণে চিৎকার করে রেকর্ডের সঙ্গে গলা মিলিয়ে। কি সুন্দর সকাল হয় এদেশে! মাটিতে তখনাে আবছা আঁধার। বাড়ির দরােয়ান, ঠাকুর-চাকর ‘ভজ গােবিন্দ নাম’ গাইতে গাইতে গঙ্গাস্নানে যায় বাড়ির পাশ দিয়ে দলে দলে বিভক্ত হয়ে। সমস্ত বাড়ির ঘুম তারপর ভাঙে। আবার তারা স্নান থেকে ফিরে আসে রাম-সীতার নাম গাইতে গাইতে। আশ্চর্য আলােয় ভরা এমন ভাের আর কোথাও হয় না। টহলদার গান গাইতে গাইতে আসে :

‘রাই জাগাে, রাই জাগাে

আর কত নিদ্যে যাবে গাে ধনী

কালাে মানিকের কোলে’রে

দুপুরে ভিক্ষে চায় যে লােক সেও খালি গলায় দরজায় দাঁড়ায় না। ভিক্ষে দিয়েও রেহাই নেই, তার গানটিও শুনতে হবে। এ যেন আবদার। আমাদের দেশেই এ আবদার চলে। জীবনে তার দুঃখ আছে; কিন্তু জীবন তারও বড়। জীবন শুধু, শহরে নয়, গাঁয়েও। খাল-বিল-নদী ঘেরা গাঁয়ে। এলােমেলাে পথে হঠাৎ সাঁকো। সাঁকো মচমচ করে কোমরে ভারি ভারি মাটি-পিতলের কলসী নিয়ে সকাল-সাঁঝে মেয়েরা গনগন করে। অনেক ভােমরার মতাে শােনায় দুর থেকে, মাঝে মাঝে সরু গলায় হাসি আবার গনগন। হয়তাে অনেক পুরােনাে গাঁয়ের কবির রচনা পুরােনাে সুরে গান করে তারা। তবু তারা গান করে। বাস্তবিক অনেক দুঃখ সুখ ছাড় আমাদের জীবনই অনেক বড়। নৌকোর মাঝি আমাদের নাম ধরে চেনে, ডেকে বসায় পাটাতনে, হকো তুলে দেয় হাতে, তার পর পৌছে দেয় গান শুনিয়ে। লক্ষ্ণৌতে দেখেছি মুলাে হাঁকছে গান করে, ‘লে লাে মলি ডবল ডবল’। নিজেরই রচিত নিজেরই দেওয়া সুর। এতে আমরা অবাক হই না। বরং গানের আসরেই আমরা সহজ হই। যেখানে গান নেই সেখানে আমাদেরও ফাঁকা ফাঁকা লাগে। আমাদের দেশ ছাড়া সব দেশের লােক আশ্চর্য হবে শুনে, তাদের একমাত্র শােকের জায়গা যে শ্মশান সেখানেও আমরা গান করি। আগেই বলেছি, জীবন আমাদের অনেক বড়। আমরা কথা বলি কম; অর্থাৎ আমরা কম বলায় অনেক বলি। গভীর আমাদের জীবনের সুর তাই কথাও কম, তাই অনেক কথার অবকাশ।

তাই, আমাদের দেশের ছবিতে যে গান থাকবে এ আর এমন আশ্চর্য কি। আমাদের দেশের ছবিতেই তাে গান থাকবে। পথিবীর অন্য কোনাে দেশের ছবিতেই এতাে গান নেই। তারা গানের জন্য, বিশেষ করে গানের জন্যই, আলাদা করে ছবি তােলে; তার নাম দেয় ‘গীতি-চিত্র’। তারা গান বলতে বােঝে হয়তাে চটল আনন্দের রূপকে। আমাদের গানে আনন্দের চটলতাও আছে গভীরতাও আছে; আবার বেদনার অতলস্পর্শী শুদ্ধতাও আছে সুরে। তখন অবাক হয়ে কথা হারায়। তাই আমরা যেখানে-সেখানে যখন-তখন কথার আগে গান খুঁজে পাই। কিছু বা বলি কিছু, বা শনি গানে। আমাদের ছবির এটা নিজস্ব রূপ, একমাত্র রূপ বলতে পারি; যাকে কেন্দ্র করে আমরা ডুবে থাকতে পারি। হােক না হাসির ছবি, হােক সুখের কি দুঃখের, গান আছে কিনা জানতে চাই সবার আগে আমরা; পরিচালনার অভাব হলে ক্ষমা করি, ফোটোগ্রাফী আশ্চর্য না হলেও বসে থাকি, তার পরেও একটা গানও যদি ভালাে না হয়, সহ্য হয় না আমাদের।

আমাদের ছবির এই নিজস্ব রপটাই ভারতীয় ছবির প্রাণ। একথা আমার মতাে সকলেই বােঝেন। কিন্তু এই বােঝারও প্রভেদ আছে। অর্থাৎ ‘ভালাে গান চাই’ কথাটা অনেকেই বলেন, কোনটা ভালাে গান সে সম্বন্ধে অনেকেরই ধারণা স্পষ্ট নয়। ছবির সব প্রযােজকের মুখেই শনি, ভালাে গান দিতে হবে। ভালাে গান বলতে ঠিক যা বােঝা যায় এরা যে তা বােঝেন না, এদের ছবির গান শুনলেই তা বােঝা। যায়। তবে ভালাে গান কি? ভালাে গানে কি শুধ, ভালাে সুর থাকবে? শুধ, কথা ভালাে হবে গানের? না। উপরন্তু, ভালাে গানে ভালাে সুর বা ভালাে কথা তাে থাকবেই, আরাে কিছু থাকতে হবে ভালাে গানে। সে হচ্ছে এ দুইয়ের মিলন অর্থাৎ কথা ও সুরের সাহায্য। মনে হবে না এ গানে সুর আছে কথা নেই: আবার শুধ ভালাে কথা ভালাে গানের একমাত্র লক্ষ্য হবে না। রবীন্দ্রনাথকে আদর্শ মানতে পারি। আমাদের দেশের প্রযােজকরা এবিষয়ে এখনাে যথেষ্ট সচেতন নন। ভালাে গানের অর্থ এরা একেবারে আলাদা করে তৈরি করেছেন। কোনাে গান হিট করল কিন্তু সেইদিকে শুধ, লক্ষ্য গেছে। গানটি আদৌ গান হল কিনা, এ প্রশ্নের বালাই নেই। যে গান হিট করল না তার দাম নেই। ফলে বেশির ভাগ শুধুই হিটযােগ্য গান হচ্ছে। (মনে হয় একই কারণে, প্রায় প্রত্যেক স্টুডিওতে অনেক পােষা লােক আছেন যাঁরা এদের ফরমাসী গান লেখেন। একটুও দ্বিধা না করে তাঁরা এমনও লেখেন, যেমন – ‘মাধবী রাত, বকুল লগন’, কিম্বা ‘ফিক করে চাঁদ উঠল সই’। সুরও তৈরি আছে, লাগিয়ে দিলেই হল।) ফরমাসী লেখকের লেখা গানই একমাত্র ত্রুটি নয়। এই ত্রুটি থেকে মুক্তি পেতে হলে সঙ্গীত-পরিচালকের দায়িত্ববােধ জেগে ওঠা উচিত। অবাক লাগবে শুনলে, সঙ্গীত-পরিচালকও খুঁজে বার করা হয়, যারা হিটযােগ্য সুর দিতে পারবেন।

সঙ্গীত-পরিচালকের কাজ শুধু কোনাে একটি কি দুটি গানে ভালাে সুর দিতে চেষ্টা করা নয়; আবহসঙ্গীত সৃষ্টি করে তােলাই তাঁর দায়িত্ব। যে সুর ব্যঞ্জনা গােটা কাহিনীকে ধরে রাখবে পিছন দিক থেকে; কাহিনীর কাঠামাের কাজ করবে আবহসঙ্গীত। কিন্তু এই ব্যাপারে এখনাে সঙ্গীত-পরিচালকরা উদাসীন তাে বটেই, কোনাে প্রযােজকও এর মূল্য দেন না। তাই কোনাে ছবিতে দেখি কাহিনীর কোনাে সংযােগ না রেখেই হঠাৎ সানাই পোঁ পোঁ করে পুরবী বাজায়। অথবা ফোনটা বেজে ওঠে। কোন যন্ত্রে কেমন আওয়াজ, কোন যন্ত্রে কেমন রাগ ভালাে শােনায় বা শােনায় এদিকেও লক্ষ্য নেই। যেমন শ্রী রাগ সেতারে বাজাননা বা বাঁশিতে তােলা কঠিন। সাধারণ হাতে এ রাগের রুপ আসে না। তাই সেতারে অথবা বাঁশিতে এ রাগ বাজানাের চেষ্টা হলে বেখাপা শােনায়। আর তান, তান সারেঙ্গীতে খুব ভালাে আসে। এগুলাে একটু মনােযােগ কান বুঝতে পারবে। কিন্তু এই সাধারণ বিচারগুলােকে যখন এরা ভুল করেন তখন বলার কথা থাকে না। শ্রুতিকটু, কিছু সুর দিয়ে এরা ভাবেন আবহসঙ্গীত সৃষ্টি করেছেন। এদের একমাত্র উদ্দেশ্য গান, কোনাে একটা কি দুটো গান নিয়ে মাথা ঘামান এরা। হয়তাে কারাে সরে কোনাে একটা গান বাজারে বেশ সাড়া ফেলেছে, তিনি রাতারাতি বড় সঙ্গীত-পরিচালকের শ্রেষ্ঠ আসনটি পেয়ে গেলেন। পাঞ্চোলী আর্টস-এর নাম করা সঙ্গীত-পরিচালক আবদুল হায়দারের ‘তু কোন সে বাদিল মেরে’ গানটি ভালাে হয়েছিল, সে গান আজ অনেকেরই মনে আছে। কিন্তু তাঁরই পরিচালিত আবহসঙ্গীত যে কত নিন্মশ্রেণীর হতে পারে, তা সত্যি ভাবা যায় না। এ দোষ প্রায় সব সগীতপরিচালকের মধ্যেই আছে। ‘গােলাপ হয়ে উঠকে ফুটে’ গানটির সুর দিয়েছিলেন রাইচাঁদ বড়াল। তার নাম-ডাক আছে আমাদের দেশে, প্রবাসেও। গানটির সুর ভালাে হয়েছিল, আশ্চর্য জনপ্রিয়তাও পেয়েছিল। কিন্তু তিনিও এ দোষ থেকে মুক্ত নন। তাঁর আবহসঙ্গীত মূল কাহিনীকে অনেক বারই ধরে রাখতে পারেনি, বিচ্যুত হয়েছে সম্বন্ধ সঙ্গীতের সঙ্গে মূল গল্পের।

‘অছ্যুত কন্যা’-র ‘বনকে চিড়িয়া’-র মতাে বাজে কথা ও সুরের গান আমাদের দেশে বেশ হিট করেছিল। আবার ‘শেষ উত্তর’-এর ‘এ চাঁদ বীত না যানা’ গানটার সুর ও কথার দিকে তবু দৃষ্টি দেওয়া হয়েছিল বােঝা যায়। মেহপ্রভার ‘নদী কিনারে হাে তারে ভরি রাতরে তারে ভরি রাত’ অথবা খুরশিদের ‘কিথ্যে যাউরে মন ও মন’ ইত্যাদি, লীলা চিটনিশের ‘জল ভরনে চলি রি গইয়া’ –এ গানগুলাে পর পর লক্ষ্য করলে বােঝা যায় আমাদের দেশে মন ও রুচি এখনাে তৈরি হয়নি। যদি হত তাহলে খারাপ ও ভালাে দু’রকমের গানই এক সঙ্গে বাজারে প্রচলিত হত না। এরই ভিতর কোনাে ছবিতে ‘অল্প বয়সে পিরীতি করিয়া রহিতে নারিনু ঘরে’-এর মতাে আশ্চর্য কথা ও সুর যখন শােনা যায়, তখন আরাে স্পষ্ট হয়ে ওঠে একটা প্রশ্ন, এগান কারাে ভালাে লাগলে, ‘জেরা জলদিসে তালা লাগালে’-র মতাে গান কি করে কারাে রুচিকে স্পর্শ করতে পারে? পারে তখনই, কারাে কোনাে রুচির বালাই যখন তৈরি হয়নি। তারপর বিদেশী গান থেকে কিছু, নোংরামিও এসেছে। জায়গা হােক না হােক গানের কোথাও-না-কোথাও হাে হাে করে চেঁচিয়ে ওঠা চাই। দর্শকরা এতেও প্রতিবাদ জানাতে ভুলে যান একই কারণে।

গান আমরা ভালােবাসি, অক্লান্ত খাটনির তিক্ততার ভিতরে আমরা জড়িয়ে নিই গান গেয়ে; গান শুনতেই যাই সিনেমা; কিন্তু দুর্ভাগ্য এই যে ভালাে গান আমরা সবচেয়ে কম শুনি। ভালাে কি খারাপের তফাত বােধ নেই। আমাদের নিজস্ব ধারণা গঠন হয়নি। তার কারণ এখনাে সঙ্গীত-পরিচালকেরা কেবল ফাঁকি দেন বলে। আবার দর্শকও প্রতিদিন বাড়ছে। কাজেই এই ফাঁকিগুলিকেই গ্রহণ করবার জন্য প্রতিদিনই নতুন লােক কিছু না কিছু আছেই। তারা একেই সুন্দর বলে মেনে নিচ্ছে। সকলের প্রত্যাখ্যান পাওয়ার আঘাত চট করে তাই আসছে না। কিন্তু এই ফাঁকিতে শুধুমাত্র দর্শককে তার ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে তা নয়, আমাদের দেশের গানেরও গলা চেপে ধরা হচ্ছে। পুরােনাে ছবিতে আমরা কিছু ভালাে গান শুনেছি। আজও সেসব গান লােকের মনে আছে; সেই সরে সম্পূর্ণ গানটাই লােকে গায়। কিন্তু আজকাল তাও পাওয়া যাচ্ছে না। আজকাল চলতি ছবির একটা-আধটা লাইন ছাড়া কেউ মনে রাখতে পারে না। কেউ গায় না। কারণ, শুধু ভালাে গান যে হচ্ছে না তা নয়, সমস্ত গানেই আজে-বাজে বাজনার ভিড় থাকাতে গানের কোনাে রূপই প্রকাশ পায় না।

ছবিতে গানের পরিস্থিতির কথা মনে হয় ভাবাই হয়নি। ধরা গলায় কোনাে কথা বললে দর্শক ভাবেন প্রেম হচ্ছে, ঠিক সেই মুহুর্তে একটি গানও যে শুনবেন নায়ক অথবা নায়িকার গলা থেকে এটাও তাঁরা আগে থেকেই জানেন। ঠিক এই পরিস্পিতির মতাে গানের অন্য সব পরিস্থিতিগুলােও বাঁধা; তার বাইরে গান গাওয়ানাে যায় না। কিন্তু এই বাঁধা পরিস্থিতি থেকে বার হতে না পারলে গানের ভবিষ্যৎ নেই। সে জন্য চাই ভালাে কাহিনী। কাহিনী ভালাে হলে, এই ধরা-বাঁধা পরিস্থিতিকে উৎরে গান যে কোনাে স্থানেই স্থান পেতে পারে। এই প্রসঙ্গে, নবীন সেন গিরিশ বাবকে একখানি ভালাে চিঠি লিখেছিলেন। গিরিশবাবু তাঁর রচিত সিরাজদ্দৌলা নাটকে সিরাজের মৃত্যুর পর লঙ্কার মুখে একটি গান জুড়ে দিয়েছিলেন। নবীন সেন তাঁকে অত্যন্ত প্রশংসা করে লেখেন, “তুমি সাহসের পরিচয় দিয়েছ…যা আমি পারিনি।” গানের সঙ্গে গল্পের সম্বন্ধ যে কি আশ্চর্য তা আমরা উপলব্ধি করতে পারব এ কথা থেকে।

ধরা যাক, একটি ছেলে বা মেয়ে জানলায় দাঁড়িয়ে আছে। সানাই শােনা যাচ্ছে। এখানে নাটকের প্রায় অনেকখানি বলা হল। সানাই শুনে, ছেলেটিকে বা মেয়েটিকে দেখে কেউ সহজেই ভাবতে পারেন প্রিয়জনের বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। এখানে মন কথা চায় না, চায় গান। গান সমস্ত ব্যথাকে তুলে ধরে। যদিও এদশ্য আমাদের পরিচিত, আমাদের পূর্বেও পরিচিত ছিল, তব, গান এই পরিচিত পরিস্থিতির ভিতরেই সীমাবদ্ধ নয়। কেননা, যে কোনাে পরিস্থিতির বাইরের রূপ এক হলেও তার ভিতরের রূপ বদলায় কালে। ভিতরের এই রূপটি হচ্ছে আমাদের মন। আমাদের মন বদলাবে, বদলাচ্ছে। আমাদের চারপাশের যা কিছু, তা আমরা প্রতিদিন নতুন করে দেখি। তাই একই পরিস্থিতির ভিতরে থাকে নতুন সমস্যা, যে সমস্যা সেই কালের। অর্থাৎ গল্প বা নাটক যদিও কোনাে দেশীয় সমস্যাকে যে কালে বড় করে রপ দেবে, হয়তাে সে সমস্যা পর্বেও ছিল, কিন্তু তার রূপ একান্ত সেই কালেই। তাই প্রয়ােজন দেশকে বােঝা, সম্যকরূপে বােঝা। দৃশ্য সুখের হােক দুঃখের হােক, গান সমস্ত গল্পকে জড়িয়ে সেই মহতের বেদনাকে জানাবে; কারাে মনের অনেক কথার শিখণ্ডী হয়ে একা দাঁড়াবে। একদিকে সে আত্মার বত্তিকে বােঝাবে, অন্যদিকে গল্পের সত্ৰকে ধরে রাখবে। প্রমথেশ বড়ুয়ার ‘শাপমুক্তির একটি পয়সা দাও গাে বাবু’ অথবা ‘শেষ উত্তর’-এর ‘রুমঝুম নপুর পায়ে বাজে গাে বাজে’ গানগুলির তবু পরিস্থিতির সঙ্গে মিল আছে। ভালাে লাগে তাই শুনতে। কয়েকটি হিন্দী ছবির কয়েকটা গান এরকম ছবির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু তবু আমরা এখনাে ধরা-বাঁধা পরিস্থিতিকে ডিঙ্গোতে শিখিনি। ভিখারীর মুখে গান গাওয়ানাে ছবিরও চলতি প্রথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আরাে, বেশির ভাগ ছবিতে দেখা যায়, গল্পের পরিণতির আগেই গানে এসেছে পরিণতি। গান দেওয়ার ভিতরে যে খাটুনী আছে, অনেক পরিশ্রম ও চিন্তা আছে, এ বােঝা যায় না। দিতে হবে গান তাই দেওয়া। তাই দেখা যায় সাঁওতালী নাচে সাঁওতালী ঝুমুর নেই। অনেক ভালাে গানকে এভাবেও নষ্ট করা হয়েছে।

আরো বিদেশী ছবিকে শুধুই নকল করতে গিয়ে ভালাে কিছু আমরা পাইনি। আমাদের মনে রাখা দরকার আমাদের রিয়্যালিটি আলাদা। কণ্ঠসঙ্গীত ছাড়া আমাদের উপায় নেই। আমাদের গানের ট্র্যাডিশন সম্পূর্ণ ভিন্ন বিদেশীদের থেকে। ছবিতেও তাই আমাদের প্রধান অবলম্বন এই কণ্ঠঙ্গীত। এই অসুবিধা আছে, তাই, অকেসীর সঙ্গে আমাদের গান চাপা পড়ে; রুপ পায় না। আমাদের বাজনা থাকে গানের পিছনে, গানকে আঘাত না করে। রবীন্দ্রনাথ এর একমাত্র উদাহরণ। রবীন্দ্রসঙ্গীতকে আমরা জীবনে উপলবি করেছি তাই সে গান ভালাে। তাঁর কথা গভীর সুরকে ছুটি দিয়ে, ছােট সুরকে ধরে রেখে দাঁড়িয়ে আছে। তাই তাঁর কথা ও সুরের এমন সঙ্গম আমরা আর কোথাও দেখি না। আমাদের দেশে যে রাগ-রাগিনীর সৃষ্টি হয়েছিল একদা, রবীন্দ্রনাথ আরাে দুটো রাগ বাড়িয়ে যাননি। বরং সেই রাগরাগিনীগুলিকেই নতুনভাবে মিশিয়েছেন তাঁর অনুভবের সঙ্গে। বেহাগের সঙ্গে বাউল মিশিয়ে বিচিত্র সরের সষ্টি করেছেন। তেমনি, সুরের সঙ্গে মিলিয়ে, রাগ-রাগিনীর রপগুলিকে অনুভব করে, কথাও সৃষ্টি করতে হয়েছে তাকে। বেহাগ মধ্যরাতের, সুর অত্যন্ত বেদনার আভাস এই সুরে। একটি গানে তাঁর কথা হল, ‘আজি বিজন ঘরে নিশীথ রাতে, আসবে যদি শুন্য হাতে’। তাই তাঁর গানে দেখি কথা ও সুরের মাঝে শত্রুতা নেই। স্বামী-স্ত্রীর মতাে তারা পরস্পর অবিচ্ছিন্ন। ‘রবিছায়া’-র ভূমিকায় মিত্র মহাশয় ঠিকই লিখেছেন, ‘ভালাে গানের অভাব দূর হল’।

রবীন্দ্রনাথের গান আমাদের গানেরই সম্ভার বাড়ালাে। বাঙলার সমস্ত গানের রেশই তাঁর গানে পরিষ্কার। উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের গমকের ব্যবহারও যে এমন অপূর্ব হতে পারে রবীন্দ্রনাথের আগে কে তা জানত! অথচ তিনি গ্রহণ করেছেন সব ক্ষেত্র থেকেই কিছু-না-কিছু, যতটুকু প্রয়ােজন ততটুকুই; বেশিকে সরিয়ে দিয়েছেন বিনা দ্বিধায়, অপ্রয়ােজনীয় বলেই। রবীন্দ্রনাথ তাই একালের হয়েও সর্বকালের, সর্বজনের।

পুরােনােকে নতুন ছাঁচে ঢালবার এই উদাহরণ রবীন্দ্রনাথ থেকেই আমরা পেয়েছি। ‘বসন্ত’ ছবিটির কতকগুলি গান জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। সেগুলাে এদেশের একদা চলতি পরােনাে গান। কাজেই, সমস্ত গানকেই সময়ের অর্থাৎ বর্তমান কালের রূপ পেতে হবে। একালের অনুভবকেই সুরের ও কথার ভিতর দিয়ে তুলে ধরতে হবে। কবি জয়দেবের গান তাঁর নির্দেশ মতােই গাওয়া হত শখ রাগ-রাগিনীতে। কালে তা বদলেছে; কীর্তনীয়ারা নিজেদের ঢঙে গেয়েছে। গানের রূপ তাই বদলাতে পারে। নিধুবাবু গােপাল উড়ের টম্পা নানা ধরনের কীর্তন, মনােহরসাই, এগুলােকে ভেঙে আবার তৈরি করা প্রয়ােজন। গানের রুপ না বদলালে গান ভাষা পাবে না কারাে মনে। ছবির গান সম্পর্কেও এই কথা।

 

Post Views: 1,992
Tags: গানচলচ্চিত্রচলচ্চিত্রে গানের ব্যবহার
ADVERTISEMENT

Related Posts

মোহাম্মাদ রফিঃ ভারতীয় সঙ্গীত জগতে এক অবিস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব
সিনেমা

মোহাম্মাদ রফিঃ ভারতীয় সঙ্গীত জগতে এক অবিস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব

আপনি কি কখনও ভেবেছেন, একটি কণ্ঠস্বর কীভাবে কোটি কোটি মানুষের হৃদয় জয় করতে পারে? ভারতীয় সঙ্গীত জগতে এমনই এক...

by নবজাগরণ
December 23, 2024
সলমন খান ও কৃষ্ণ হরিণ শিকারঃ সলমন খানের এক বিতর্কিত অধ্যায়
সিনেমা

সলমন খান ও কৃষ্ণ হরিণ শিকারঃ সলমন খানের এক বিতর্কিত অধ্যায়

বলিউডের 'ভাইজান' সলমন খান - যার নাম শুনলেই মনে ভেসে ওঠে তাঁর বক্স অফিস হিট সিনেমা, দানশীলতা, এবং বিতর্কিত...

by নবজাগরণ
November 8, 2024
রাজ কাপুর: বলিউডের কিংবদন্তী ও শো ম্যান
সিনেমা

রাজ কাপুর: অভিনেতা ও বলিউডের কিংবদন্তী শো ম্যান

বলিউডের স্বর্ণযুগে এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম - রাজ কাপুর । চার্লি চ্যাপলিনের মতো হাসি-কান্নার দোলায় দুলিয়ে দিতেন দর্শকদের। কিন্তু...

by নবজাগরণ
November 7, 2024
ক্যামেরার দিব্যদৃষ্টি : ইওরােপীয় চলচ্চিত্রের শিল্পনিরিখ
সিনেমা

ক্যামেরার দিব্যদৃষ্টি : ইওরােপীয় চলচ্চিত্রের শিল্পনিরিখ

লিখেছেনঃ সােমেন ঘােষ চলচ্চিত্রের নন্দনতাত্ত্বিক আন্দ্রে বাজা তার সাড়া জাগানাে গ্রন্থে বলেছিলেন “All the arts depend on the presence...

by অতিথি লেখক
April 5, 2022

POPULAR POSTS

  • সুলতান মাহমুদ

    সুলতান মাহমুদের ভারত অভিযান ও সোমনাথ মন্দির প্রসঙ্গ (১ম পর্ব)

    181 shares
    Share 181 Tweet 0
  • বাউরী সম্প্রদায়ের উৎপত্তির ইতিহাস ও ঐতিহাসিক পর্যালোচনা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • আর্যদের ভারত আগমন, বিস্তার, সমাজ ও সভ্যতা: এক ঐতিহাসিক পর্যবেক্ষণ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে বৌদি কাদম্বরী দেবীর সম্পর্ক আদৌ কি প্রেমের ছিল?

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • হিন্দু পদবীর উৎপত্তির ইতিহাস, বিবর্তন ও ক্রমবিকাশঃ বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

Facebook Page

নবজাগরণ

ADVERTISEMENT
নবজাগরণ

'Nobojagaran' is a website of its kind where you can gather knowledge on all the unknown facts of the world. We human beings always have a thirst for knowledge. Nobojagaran takes its first steps to quench this thirst of ours. We are now in the era of digital world, where we get almost anything online. So how about a bit of knowlyfrom online?

Connect With Us

No Result
View All Result

Categories

  • English (9)
  • অন্যান্য (11)
  • ইসলাম (26)
  • ইসলামিক ইতিহাস (22)
  • ইহুদী (1)
  • কবিতা (37)
  • খ্রিস্টান (6)
  • ছোটগল্প (6)
  • নাস্তিকতা (18)
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (24)
  • বিশ্ব ইতিহাস (24)
  • ভারতবর্ষের ইতিহাস (194)
  • রাজনীতি (38)
  • সাহিত্য আলোচনা (68)
  • সিনেমা (17)
  • হিন্দু (16)

Pages

  • Cart
  • Checkout
  • Checkout
    • Confirmation
    • Order History
    • Receipt
    • Transaction Failed
  • Contact
  • Donation to Nobojagaran
  • Homepage
  • Order Confirmation
  • Order Failed
  • Privacy Policy
  • Purchases
  • Services
  • লেখা পাঠানোর নিয়ম
  • হোম
No Result
View All Result
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi

©Nobojagaran 2020 | Designed & Developed with ❤️ by Adozeal

Login to your account below

Forgotten Password?

Fill the forms bellow to register

All fields are required. Log In

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In
Don't have an account yet? Register Now
wpDiscuz
0
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x
| Reply
Open chat
1
Powered by Joinchat
Hi, how can I help you?