দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের স্বপ্ন ছিল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ভিত্তিতে এক সর্বভারতীয় যুক্তরাষ্ট্র গঠন। তিনি বলেছিলেন, ‘হিন্দু- মুসলমানের মিলন ভিন্ন স্বরাজের স্বপ্ন শুধু স্বপ্নই হবে আমাদের কাছে।’ এজন্য তিনি ‘বেঙ্গল প্যাক্ট’ বা ‘বাংলা চুক্তি’ রচনা করেন। ‘বাংলা চুক্তি’ চিত্তরঞ্জনের ধর্মীয় উদারতা ও ধর্মনিরপেক্ষতার এক অপূর্ব সমন্বয়। ১৯২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে শিক্ষাবিদ আবদুল করিম হিন্দু-মুসলমান সমঝোতার জন্য যে খসড়া প্রস্তাব চিত্তরঞ্জন দাশের নিকট পেশ করেন (৯ ডিসেম্বর ১৯২৩) আবুল কালাম আজাদ, নাজিম আলি, ওয়াহিদ হোসেন ও স্যার আবদুর রহিমের সাথে আলোচনার পরে চিত্তরঞ্জন দাশের উদ্যোগে তা বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেসের অধিবেশনে পাশ করা হয়। ১৯২৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জ প্রাদেশিক কংগ্রেস সম্মিলনীতে চুক্তির প্রস্তাব পাশ হয়। এই চুক্তির মাধ্যমে আইনসভায় ও সরকারি চাকুরিতে হিন্দু ও মুসলমানরা কি অনুপাতে আসন পাবে এই বিষয়গুলি ঠিক হয়। ওই প্যাক্ট অনুসারে স্থির হয়, বাংলা কাউন্সিলের সদস্যরা পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থায় জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে নির্বাচিত হবেন। বিভিন্ন স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে প্রতিটি জেলার সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের আসন সংখ্যা হবে শতকরা ৪০ ভাগ আর সংখ্যালঘিষ্ঠ সম্প্রদায়ের আসন সংখ্যা হবে শতকরা ৪০ ভাগ। সমস্ত সরকারি চাকুরীর প্রতিটি বিভাগে চাকুরির শতকরা ৫৫ ভাগ মুসলমানরা লাভ করবেন। যতক্ষণ পর্যন্ত চাকুরীতে মুসলমান সংখ্যা শতকরা ৫৫ ভাগ না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত সরকারি পদে শতকরা ৮০ ভাগ করে মুসলমান নিয়োগ করা হবে। এছাড়া মসজিদের সামনে গান-বাজনা নিষিদ্ধ করা হবে বলেও স্থির করা হয়। সেইসঙ্গে এই চুক্তিতে এও বলা হয় যে, এমন স্থানে গো-হত্যা করতে হবে যেন হিন্দুদের কোনভাবে আঘাত না লাগে।
‘বেঙ্গল প্যাক্ট”-এর সমর্থনে চিত্তরঞ্জন আইন পরিষদে বলেন : “স্বরাজের বুনিয়াদ রচনা আমাদের প্রধান লক্ষ্য। স্বরাজলাভের পর আমাদের সরকার হিন্দু সরকার না মুসলমান সরকার এরূপ কোনো সংশয় যাতে আমাদের মনে জাগ্রত না হয় সেজন্য আমরা এই চুক্তিতে প্রত্যেক সম্প্রদায়ের ন্যায়সঙ্গতভাবে প্রাপ্য অংশ নির্ধারণ করেছি… আমাদের মধ্যে যদি আত্মসম্মানবোধ থাকে তাহলে আমাদের বলা উচিত যে যতদিন না আমাদের অধিকারের স্বীকৃতি দেওয়া হয় ততদিন আমরা সবকিছু ত্যাগ করব… আমরা আমাদের অধিকার অর্জন করতে চাই, তা হলো মৌলিক অধিকার। আমি চাই এজন্য হিন্দু মুসলিম উভয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পারস্পরিক অবিশ্বাস নির্মূল করার জন্য সংগ্রাম করে যাবে।”
জনসাধারণের কল্যাণের স্বার্থে তিনি যথসম্ভব প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের সপক্ষে মতপ্রকাশ করেন। প্রশাসনের বিকেন্দ্রায়ন হলে অমাত্যতন্ত্রের আধিপত্য হ্রাস পাবে এবং তার ফলে জনপ্রতিনিধিগণ অধিকতর দায়িত্বের সঙ্গে জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে আত্মনিয়োগ করতে সক্ষম হবে। সংসদীয় ব্যবস্থায় রাজনৈতিক দলের প্রয়োজনীয়তাও তিনি অস্বীকার করেননি। তবে যেখানে রাজনৈতিক দল থাকবে সেখানে লিখিত সংবিধান থাকতে হবে। চিত্তরঞ্জন সম্ভবত মনে করেন যে লিখিত সংবিধানে রাজনৈতিক দলের স্বীকৃতি থাকা আবশ্যক। বোঝা যায়, সংসদীয় গণতন্ত্রে রাজনৈতিক দলের ভূমিকাকে তিনি খাটো করে দেখেননি। তিনি স্বীকার করেন যে ভারতীয় রাজনীতিতে মুসলিম সম্প্রদায়ের ন্যায়সঙ্গত দাবির প্রতি উপেক্ষা প্রদর্শনের অর্থ তাদের প্রতি অবিচার করা। কাজেই সংখ্যানুপাত ভিত্তিতে ধর্মীয় সম্প্রদায়সমূহের জন্য আইন পরিষদে আসনসংখ্যা বন্টন এবং একই ভিত্তিতে সরকারি চাকরিতে নিয়োগদানের নীতি-গ্রহণের প্রশ্নে তিনি দ্বিমত পোষণ করেননি।
‘বেঙ্গল প্যাক্ট’ বাংলার মুসলমানদের সমর্থন লাভ করেছিল। ‘দ্য মুসলমান’ পত্রিকার সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছিল: ‘The Mussalman as a Community must be made to understand that Swaraj does not mean the predominance of any one community over another, but that it means freedom for all. Only a Pact could make them so understand,’ ‘ইসলাম দর্শন’-এর একটি প্রবন্ধেও বলা হয়েছিল: “আমরা কপট মিলনের বিরোধী…বর্তমানে হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে যে কঠিন সমস্যা জাগিয়া উঠিয়াছে, তাহার সমাধান করিয়া উভয় জাতির প্রকৃত মিলন প্রতিষ্ঠিত করিতে হইলে হিন্দু-মুসলমান উভয় জাতিকেই অকপট ও উদার ভিত্তির উপর ভর করিয়া জাতীয় মিলনের দিকে অগ্রসর হইতে হইবে। যে পিছে পড়িয়াছে তাহাকে হাত ধরিয়া টানিয়া তুলিবার মতো উদারতা প্রকাশ করা যদি একান্তভাবে সম্ভবপর না হয়, তবে সে উঠিতে চাহিলে তাহাকে পথরোধ না করিয়া উহা ছাড়িয়া দেবার মতো ত্যাগ স্বীকার একান্তই আবশ্যক।” (ফাল্গুন ১৩২৯)। যাই হোক, চুক্তির ফলে মুসলমানদের একটা বড় অংশ খুশি হলেন এবং হিন্দু-মুসলমান সম্প্রীতির একটা আবহাওয়া সৃষ্টি হল। কিন্তু শিক্ষিত মধ্যবিত্ত এবং জমিদার শ্রেণির হিন্দুরা এই চুক্তির বিরুদ্ধে ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠেন ও সবচেয়ে বেশি ক্ষুব্ধ হলেন সন্ত্রাসবাদী বিপ্লবী দল, যাঁদের হাতে চিত্তরঞ্জন কংগ্রেসের পরিচালন ভার অর্পণ করে নিশ্চিন্ত হয়েছিলেন। নরমপন্থী ও চরমপন্থী কংগ্রেসের নেতৃবৃন্দ, অপরিবর্তনবাদী কংগ্রেসী হিন্দুসভা এবং আর্যসভার সদস্যবৃন্দ, বাংলার কংগ্রেসের প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দ এবং বহু অরাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এই চুক্তির বিরোধিতা করেছিলেন।
লালা লাজপত রায় প্যাক্টকে ঐক্যবদ্ধ ভারত ও ভারতীয় জাতীয়তাবাদ বিরোধী হিসাবে মন্তব্য করেছেন। প্রখ্যাত কংগ্রেস নেতা সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী তাঁর ‘এ নেশান ইন মেকিং’ গ্রন্থে মন্তব্য করেছেন যে, প্যাক্ট প্রদত্ত পরিবর্তন হিন্দুদের রাজনৈতিক আধিপত্যের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টিকারী হবে। তিনি আঞ্চলিক স্তরে সাম্প্রদায়িক প্রতিনিধিত্বের বিষয়টিও তীব্র সমালোচনা করেছিলেন, যেমন বেঙ্গল প্যাক্ট কর্তৃক কলকাতা পুরসভার ৯০টি আসনের মধ্যে ৩৬টি আসন মুসলমান সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষিত করার অন্যায্য দাবির কঠোর সমালোচনা করেন। এছাড়া গো-হত্যা বিষয়টি বেঙ্গল প্যাক্টে অন্তর্ভুক্তিকরণের বিষয়টিও অন্যায় বলে সমালোচনা করেন। পণ্ডিত মদন মোহন মালব্যও বেঙ্গল প্যাক্ট গঠনকে অপরিণত সিদ্ধান্ত বলে সমালোচনা করেন। এমনকি গান্ধীজিও পার্টি এর প্রতি উৎসাহ প্রদর্শন করেননি। এমনও মন্তব্য করা হয়েছে যে, এই প্যাক্ট-এর মাধ্যমে ‘মুসলিম সমর্থকদের ঘুষ দেওয়া হয়েছে।’ বিপিনচন্দ্র পালও উক্ত চুক্তিকে ভারতীয় জাতীয়তাবাদের পক্ষে ক্ষতিকারক হিসাবে মন্তব্য করেন। কৃষ্ণকুমার মিত্রও এ বিষয়ে বলেন, প্যাক্টের মাধ্যমে গো- হত্যার অনুমতিদান দেশে ধর্মীয় অস্থিরতা সৃষ্টি করবে।
চুক্তির ধর্মীয় দিকটি হিন্দুধর্মীয় আবেগের ক্ষেত্রে আঘাত হিসাবে প্রতিভাত হয়েছিল। ঠিক এই ধর্মীয় কারণেই উত্তর ভারতীয় হিন্দু জনসাধারণ প্যাক্টের বিরোধিতায় বাঙালি হিন্দুদের সাথে সংঘবদ্ধ হয়েছিল। বিশেষত শিক্ষা, সরকারি চাকুরী, গ্রামাঞ্চলে রাজনৈতিক শক্তিকে কেন্দ্র করে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি আঘাত হেনেছিল হিন্দু-মুসলিম প্যাক্টটি। ১৯২১ সালের পরিসংখ্যান অনুসারে বাংলার মোট জনসংখ্যার শতকরা ৫৩ ভাগ মুসলিম সম্প্রদায়ভুক্ত হলেও সরকারি চাকুরীতে তাঁদের অংশ ছিল শতকরা ৩০ ভাগ। সংরক্ষিত আসনের ফলে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রশাসনিক ক্ষমতার অবনমন সাধিত হয়েছিল।
দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন সাম্প্রদায়িক সমস্যাকে ধর্মের দিক থেকে দেখেননি, দেখেছিলেন আর্থ-সামাজিক দিক থেকে। শিক্ষা ও চাকরিতে অনগ্রসর মুসলমানদের আস্থা অর্জনের জন্য ও তাদের হিন্দু-ভীতি কাটাবার জন্য তিনি ওই চুক্তিতে বাঙালি মুসলমানদের কিছু অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন। জনসংখ্যার অনুপাতে বাঙালি মুসলমানদের একটু বেশি সুযোগ দিয়ে চিত্তরঞ্জন দাশ মনে করলেন না যে মুসলমানদের ‘তোষণ’ করা হল। উল্টে তিনি মনে করলেন যে, এইটাই সত্যিকারের গণতন্ত্র। কারণ, সত্যিকার গণতন্ত্র অগ্রসর- অনগ্রসর দুই স্তরের মানুষকে বিকাশের একই স্তরে তুলে আনতে চায়। সেদিন অখন্ড বাংলায় মুসলমানেরা সংখ্যাগুরু হলেও সব দিক দিয়ে ছিলেন অনগ্রসর—শিক্ষার দিক দিয়ে অনগ্রসর, অর্থনীতির দিক দিয়েও অনগ্রসর।
চিত্তরঞ্জন প্রবর্তিত হিন্দু মুসলিম চুক্তি নিয়ে বাংলার কংগ্রেসী রাজনৈতিক মহল ১৯২৬-এর গোড়া থেকেই ছিল অতীব উষ্ণ। কংগ্রেসের পরিচালন ভার সন্ত্রাসবাদী বিপ্লবীদের হাতে। তাঁরা একবাক্যে চান – চিত্তরঞ্জনের হিন্দু মুসলমান চুক্তি যথাশীঘ্র বাতিল করে দেওয়া হোক। এই পরিপ্রেক্ষিতে কৃষ্ণনগরে বঙ্গীয় প্রাদেশিক রাষ্ট্রীয় সম্মিলনী বসলো ২২-এ মে। সভাপতি বীরেন্দ্রনাথ শাসমল ছিলেন হিন্দু-মুসলিম চুক্তির প্রধান শক্তি-স্তম্ভ। সভার উত্তপ্ত আবহাওয়া দেখে ঠিক হলো যে, যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত প্রস্তাব আনবেন : চুক্তির প্রশ্নটি বিবেচনা এখন স্থগিত রাখা হোক।’ সন্ত্রাসবাদী বিপ্লবীরা এর বিরোধিতা করলেন। তাঁরা চান, চুক্তির প্রশ্নটি তুলে তখনই ওটি বাতিল করা হোক। উভয় পক্ষে সমান সমান ভোট হলো—সভাপতি বীরেন্দ্রনাথ কাস্টিং ভোট দিয়ে প্রস্তাবটি পাশ করিয়ে দিলেন। সন্ত্রাসবাদী বিপ্লবীরা এইভাবে বিফল হয়ে তাঁর উপর সাংঘাতিক চটলেন। সভাপতি তাঁর ভাষণে এক জায়গায় বলেছিলেন, যাঁরা ভায়োলেন্সে বিশ্বাস করেন, তাঁদের কংগ্রেস কার্যনির্বাহক সমিতি থেকে সরে দাঁড়ানো উচিত, কারণ কংগ্রেসের আদর্শ অহিংসা। তিনি সন্ত্রাসবাদী বিপ্লবীদের নিন্দাও করেছিলেন। এই মন্তব্যের জন্য সন্ত্রাসবাদী বিপ্লবীরা বীরেন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব আনলেন। নিন্দা প্রস্তাব পাশ হতে সভাপতি পদত্যাগ করে কৃষ্ণনগর ছেড়ে চলে গেলেন। যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত ও অন্যান্য নেতারাও কৃষ্ণনগর ত্যাগ করলেন। তখন সন্ত্রাসবাদী বিপ্লবীরা ব্যারিস্টার যোগেশ চৌধুরীকে (‘ক্যালকাটা উইকলি নোটসে’র প্রতিষ্ঠাতা) সভাপতি করে সম্মেলন বসালেন এবং চিত্তরঞ্জন-প্রবর্তিত হিন্দু-মুসলিম চুক্তি বাতিল করে দিলেন।
বেঙ্গল প্যাক্ট বাতিল হওয়ার ঘটনা বাংলার মুসলমানদের কংগ্রেস থেকে দূরে সরে যেতে বাধ্য করেছিল। বস্তুত এরপর থেকে বাঙালি মুসলমানরা আর কংগ্রেসে থাকলেন না। আসরাফউদ্দিন চৌধুরী, নুরুল হক চৌধুরী, আমনাত খান, মহিমুদ্দিন খান, শামসুদ্দিন আহমেদ প্রমুখেরা ১৯২৬-এর ৩০ আগস্টে বাংলা প্রাদেশিক কংগ্রেস কমিটির কার্যকরী সমিতির সদস্যপদ ত্যাগ করেন। মাওলানা আক্রম খানও বাংলা প্রাদেশিক কংগ্রেস কমিটির কার্যকরী সমিতির সদস্যপদ হতে ইস্তফা দেন। বাংলার মুসলমানদের কংগ্রেস ত্যাগ প্রসঙ্গে ‘দ্য মুসলমান’ পত্রিকা ১৬ সেপ্টেম্বর ১৯২৬ মন্তব্য করে : ‘We have ceased to be Congressmen, because… Congress has lost its national Character.’ আবুল কালাম আজাদ ইন্ডিয়া উইনস ফ্রিডম’-এ লিখেছেন, “এই সাহসিক ঘোষণা বঙ্গীয় কংগ্রেসের ভিত্তি পর্যন্ত কাঁপিয়ে তুলেছিল। বহু কংগ্রেস নেতা তুমুলভাবে এর বিরোধিতা করলেন এবং মিঃ দাশের বিরুদ্ধে প্রচার শুরু করে দিলেন। তাঁকে সুবিধাবাদের এবং মুসলমানদের প্রতি পক্ষপাতিত্বের জন্য অভিযুক্ত করা হল। কিন্তু তিনি অটল পাহাড়ের মত খাড়া হয়ে রইলেন। এটা খুবই দুঃখের বিষয় যে, তিনি দেহত্যাগ করবার পর তাঁর কিছু সংখ্যক শিষ্য তাঁর আদর্শকে খর্ব করে দিলেন এবং তাঁর এই ঘোষণাটিকে বাতিল করে দেওয়া হল । ফল এই হল যে, বাংলার মুসলমানেরা কংগ্রেস থেকে সরে দাঁড়াল এবং দেশবিভাগের প্রথম বীজ বপন করা হল।”
তৎকালীন ভারতের সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের রাজনৈতিক দল ও প্রভাবশালী নেতৃত্ব যদি চিত্তরঞ্জনের মত উদার মনোভাব নিয়ে হিন্দু- মুসলিম সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করতেন তাহলে হয়তো উপমহাদেশের রাজনীতির ধারা সম্পূর্ণ ভিন্নখাতে প্রবাহিত হত। তা হয়নি বলেই উভয় সম্প্রদায়ের ব্যবধান আজও স্বাভাবিক হয়নি। আজকের রাজনৈতিক নেতারা চিত্তরঞ্জনের জন্মদিনে (৫ নভেম্বর) এ নিয়ে কি ভাবছেন? তারা আজও যে দেশবন্ধুর মত উদারতা দেখাতে পারেননি কিংবা তাঁর প্রদর্শিত পথে চলতে পারেননি বা তাঁর মতো ভাবতে পারেননি এটা বলাই যায়। রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের প্রশ্নেই বলুন আর চাকরির প্রশ্নেই বলুন, কোন ক্ষেত্রেই রাজ্যে বা দেশে সংখ্যালঘু বিশেষ করে মুসলিমরা উল্লেখ করার মতো অবস্থানে আজও আসীন হতে পারেনি। ভারতীয় গণতন্ত্রের পক্ষে এটা মোটেই শুভপ্রদ নয় ।
‘নবজাগরণ’ অ্যান্ড্রোয়েড অ্যাপ্লিকেশনটি প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।
‘নবজাগরণ’ এর টেলিগ্রাম চ্যানেলে জয়েন হতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।
‘নবজাগরণ’ এর ফেসবুক পেজে লাইক করতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।