• মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
Monday, October 13, 2025
নবজাগরণ
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ - জ্ঞান অর্জনের বিস্বস্থ সংস্থা
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ - জ্ঞান অর্জনের বিস্বস্থ সংস্থা
No Result
View All Result

কলকাতা নগরীর পত্তনের প্রাথমিক দিনগুলিঃ আলোচনা ও পর্যালোচনা

চৌধুরী আতিকুর রহমান by চৌধুরী আতিকুর রহমান
March 21, 2021
in ভারতবর্ষের ইতিহাস
0
কলকাতা নগরী

চিত্রঃ কলকাতা নগরী, Image Source: indiatoday

Share on FacebookShare on Twitter

৫০ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে ইংরেজরা বুঝতে পেরেছিল, বাংলায় সুষ্ঠুভাবে ব্যবসা করতে গেলে দুর্গসদৃশ একটি ঘেরা জায়গা জরুরী। ১৬৮৬ জব চার্নক দুর্গ নির্মাণের উপযুক্ত স্থান এর খোঁজ শুরু করলেন পুজোর পর সমালোচনা ও বাধা সত্ত্বেও শতাব্দীতে কলকাতা নগরীর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করল সুতানুটিকে বেছে নেওয়ার দুটি কারণ; ইংরেজরা আসার পূর্বে সুতানুটিতে ভালই ব্যবস্থাপত্র চলত, এটাও যেমন চার্নককে স্থানটিকে বেছে নিতে উৎসাহিত করে তেমনই আরও বেশি উৎসাহিত করে স্থানটি সামরিক দিয়েও ছিল নিরাপদ।

জব চার্নক
চিত্রঃ জব চার্নক, navrangindia

পৌরাণিক মতে দক্ষযজ্ঞের সময় নটরাজের তাণ্ডবনৃত্যের ফলে সতীর ডান পায়ের আঙ্গুল এসে পড়ে কালীঘাটে অর্থাৎ কলকাতায়। এর থেকে এটাও প্রমাণিত জব চার্নক ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করার বহু পূর্বে কলকাতার এখানে সেখানে জনবসতি ছিল, যার মধ্যে পৌরাণিক এলাকাও ছিল। তিনটি প্রধান এলাকা কলকাতা, সুতানুটি গোবিন্দপুর ছাড়াও আশপাশের চিৎপুর, কালীঘাট, সালকিয়া এবং প্রকৃত ব্যবসাস্থল গঙ্গার পশ্চিম ও পূর্ব পাড়ের বেতড়-গার্ডেনরিচ ছিল বিখ্যাত। বাংলা কাব্যে গার্ডেনরিচ নামটি ছাড়া কলকাতা পরগনা সহ বাকি নামগুলি বারবার পাওয়া গেছে। সেইসময় কলকাতার অভিজাত এলাকা চৌরঙ্গী জঙ্গলে ঢাকা থাকলেও কালীঘাটের অস্তিত্ব ছিল।

সি আর উইলসন ‘দ্য আরলি অ্যানালস অফ ইংলিশ ইন বেঙ্গল’ বইয়ে পঞ্চদশ শতকে জঙ্গলগির নামক জনৈক সাধক তৎকালীন খরস্রোতা আদিগঙ্গার তীরে পূজো আচ্চা করছিলেন, সেই সময় তাঁর চারিদিক ঘিরে একটি উজ্জ্বল আলো পড়তে থাকে এবং সেই রাতেই তাঁর ঘুমের মধ্যে তিনি কালী দর্শন করেন। সেই কালী নির্দেশ দেন তাঁর কর্তিত অঙ্গ খুঁজে বার করে সেখানে যেন মন্দির স্থাপন করা হয়। এরপর মন্দিরটি বিস্মৃতির অতলে চলে যায়। সুলতান হোসেন শাহর সময় সম্ভবত ১৪৯৫ খ্রিস্টাব্দে লিখিত বিপ্রদাস এর মঙ্গলকাব্যে গঙ্গার দুই পাশের বেশ কয়েকটি জনপদের নাম রয়েছে। চাঁদ সওদাগর ভাগলপুর (এক্ষেত্রে আমার মত, চাঁদ সওদাগর উজানী কোগ্রাম; বর্তমান মঙ্গলকোট থেকে অজয় নদের পথে তাঁর বাণিজ্যতরী ভাসিয়েছিলেন। এলাকার প্রচলিত ধারণাও তাই।) থেকে তাঁর বাণিজ্যতরী সমুদ্র অভিমুখে ভাসান। যাইহোক, সমস্ত নদীপথে গঙ্গার দুই পাশে যে সকল জনপদের উপর দিয়ে তিনি পার হয়েছিলেন সেগুলি হল, রাজঘাট, ইন্দ্রাঘাট, নদিয়া, আম্বুয়া, ত্রিবেণী, কুমারহাট, হুগলি, ভাটপাড়া, বোরো, কাঁকিনাড়া, মূলাজোড়, গারুলিয়া, পাইকপাড়া, ভদ্রেশ্বর, চাঁপদানি, ইচ্ছাপুর, বাঁকিবাজার, চানক, চিৎপুর, কোলকাতা, বেতড়, দালন্দা, কালীঘাট, চুরঘাট, জয়ঢালি, ধনস্থান, বারুইপুর, হুনিয়া ছত্রভোগ; সবশেষে হাতিয়াঘর হয়ে সমুদ্রে পড়েন। কবি বিপ্রদাসের বর্ণনার বহু নাম এখনও রয়েছে। তাঁর সময় আদি সপ্তগ্রাম ছিল বৃহৎ ব্যবসাক্ষেত্র বন্দর হিসাবে বিখ্যাত ছিল হুগলি। আরও ভাটিতে বাম তীরে পর পর চিৎপুর ও কলকাতা পার হয়ে সামান্য দূরে ডান তীরের বেতড় ছিল বড় বাজার। এখানে কেনাবেচার সঙ্গে সঙ্গে বেতাইচণ্ডীর পুজো হত। সুতানুটি ও গোবিন্দপুরের উল্লেখ করেননি। কালীঘাটের শুধুমাত্র নাম নিয়েছেন।

কলকাতা নগরীটি যেখানে অবস্থান করছে সেই এলাকাটি হঠাৎই কলকাতা নগরীতে পরিণত হয়ে যায়নি যা ব্রিটিশ ভারতের প্রথম রাজধানী ছিল, বরং গঙ্গার দুইপাশের দীর্ঘ পথটি জুড়ে ছিল বাংলার আর পাঁচটি নদী তীরবর্তী গ্রামের মত বেশ কয়েকটি ছোট-বড় গা গঞ্জ। এক সময় বর্তমান হুগলির আরও উজানে সরস্বতী ও ভাগিরথির সংযোগস্থলে আদিসপ্তগ্রাম ছিল প্রধান বন্দর। ১৫৩০ খ্রিষ্টাব্দে পর্তুগিজরা যখন বাংলা এলো তখন বন্দর হিসাবে সপ্তগ্রাম তার কৌলিন্য হারিয়ে ফেললেও প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্রের কৌলিন্য হারায়নি। বিদেশি বণিকেরা তাদের ছোট পাটাতনের বড় জাহাজগুলিকে (Galley) অগভীর নদীপথে পাঠিয়ে বিপদ ডেকে আনত না বরং ছোট ছোট নৌকায় করে তাদের ব্যবসাপণ্যগুলি আদি সপ্তগ্রামে পাঠাত।

পর্তুগিজদের বৃহৎ জাহাজগুলি বর্তমান গার্ডেনরিচ (যদিও গার্ডেনরিচ বহু পরে ইংরেজরা দিয়েছিল) এলাকায় নোঙ্গর ফেলত এবং নদীর অপর পাড়ে (উত্তর-পশ্চিম) শিবপুরের কাছে বেতড় নামক স্থানে বিদেশিদের বাজার গড়ে উঠেছিল। এই বিদেশী বাজারটির কেনা-বেচার বহর দেখে আকর্ষিত হয়ে আদিসপ্তগ্রাম ছেড়ে চারটি দেশজ বসাক পরিবার ও একটি সেঠ পরিবার বর্তমান ফোর্ট উইলিয়াম এলাকায় গোবিন্দপুরে বাসা বাঁধে এবং সুতানুটি বাজারের গোড়াপত্তন করে সেখান থেকেই পর্তুগীজদের সাথে তাদের ব্যবসা চালাত। এরপরই পর্তুগিজরা বেতড় এলাকাটিকে পরিত্যাগ করে আরও উজানে চলে যায়। কিন্তু সেঠ-বসাকরা সুতানুটিতে রয়ে যায়। উইলসন সাহেব বলেছেন, এই পর্যন্ত কলকাতা শহরের গোড়াপত্তনের দ্বিতীয় দশা ছিল। প্রথমে গার্ডেনরিচ-বেতড়ে পর্তুগীজদের অবস্থান, দ্বিতীয় দশায় বেতড় ছেড়ে সুতানুটিতে ব্যবসাস্থলেট পরিবর্তন।

পর্তুগিজরা বাংলায় এসে দুটি নৌবন্দর দেখে। প্রথমটি চট্টগ্রাম অর্থাৎ পোর্টো গ্র্যান্ডে (বৃহৎ বন্দর) দ্বিতীয়টি আদি সপ্তগ্রাম যার পর্তুগিজ নাম ছিল পোর্টো পিকুয়েনো (ছোট বন্দর)। শান্তির সময় চট্টগ্রামের মত বন্দরের জুড়ি ছিল না। কিন্তু বাংলার একেবারে শেষপ্রান্তে ছিল বলে মুঘল শাসন একটু শিথিল ছিল তাই মগ ও পর্তুগিজ জলদস্যুদের জুলুমও ছিল। আদিসপ্তগ্রামে সমস্ত উত্তর ভারত থেকে পণ্য আসত, নদীতে নৌকার ছড়াছড়ি ছিল, ছিল ব্যবসায়ী ও ক্রেতার গুঞ্জন। ১৫৪০-এ দেখা যাচ্ছে সপ্তগ্রামে জাহাজ নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ১৫৬৫ খ্রিস্টাব্দে সিজার ফেডারিকের বর্ণনা অনুযায়ী পণ্যবস্তুতে পরিপূর্ণ গুরুত্বপূর্ণ শহর, কিন্তু বন্দর হিসাবে গুরুত্ব হারিয়েছে। আদিসপ্তগ্রামের ব্যবসায়ীদের অধিকাংই নিকটেই হুগলিতে ডেরা বাঁধে। পাঁচটি পরিবার আরো দক্ষিনে বেতড়ের বৈভব ধরার জন্য হুগলি-আদিগঙ্গার মিলনস্থলে গোবিন্দপুরে বাসা বাঁধে। বর্তমানে যেমন হুগলি নদী দিয়ে গঙ্গার প্রধান ধারাটি বয়ে যায় সেই সময় তেমনই বইত। তবে বিপ্রদাসের বর্ণনা থেকে পাই, সেই সময় আদিগঙ্গা (টলির নালা) বেয়েও বড় বড় জাহাজ সমুদ্রে গিয়ে পড়ত, ছাত্রভোগ, বারুইপুর ইত্যাদি জনপদগুলি। যমুনা নদী ত্রিবেণী থেকে পূর্ব দিকে বইত, আর সরস্বতী আরও ভাটিতে গঙ্গার পশ্চিম দিক থেকে এসে মিশত। উলুবেড়িয়াতে মিশত দামোদর, আরও দক্ষিনে (গাদিয়াড়া) রূপনারায়ন। পর্তুগিজরা বড় জাহাজ নিয়ে সপ্তগ্রামে যেতে না পারলেও বেতড়ে তাদের আড্ডা গড়ে তুলেছিল। গোয়া থেকে মালপত্র এলে রাতারাতি বাঁশ-খড় দিয়ে চালা বানিয়ে বাজার বসে যেত। ছোট ছোট বাজরা পর্তুগিজ পণ্য নিয়ে বরানগর, দক্ষিণেশ্বর, আগরপাড়া হয়ে ছোট বন্দর সপ্তগ্রাম পৌঁছত এবং আনত মসলিন, লাক্ষা, চিনি ও চাউল। বেতড়ে গঙ্গার দুই পারে কর্মচঞ্চলতা তুঙ্গে উঠত। কিন্তু যেই শেষ পর্তুগিজ বাজরাটি সপ্তগ্রাম থেকে ফিরত অমনি বেতড়ের সেই সাময়িক বাজারটিকে পর্তুগিজরা আগুন লাগিয়ে ধ্বংস করে ফেলত। পর্তুগিজদের এই ব্যবহারই ভবিষ্যৎ কলকাতার বীজ বপন করেছিল।

পর্তুগিজরা বেতড়ের সাময়িক বাজার জ্বালিয়ে পুড়িয়ে চলে গেলেও স্থানীয় শেঠ বসাকরা গঙ্গার অপর পাড়ে তাদের ব্যবসা চালিয়ে যেত। কারণ পর্তুগিজ ছাড়াও দেশজ বড় জাহাজগুলি উক্ত এলাকায় নোঙর করে ছোট ছোট নৌকা ও বাজারায় পণ্য চাপিয়ে সপ্তগ্রামে নিয়ে যেত। ফলে গঙ্গার পশ্চিমপাড়ে কর্মচঞ্চলতা থেমে গেলেও পূর্বপাড়ে তা সারাবছরই বজায় থাকত। ৫ টি পরিবার গোবিন্দপুরে গোবিন্দজির মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে সুতানুটিতে তুলোর গাঁট বা সুতার নুটি নিযে ব্যবসা শুরু করেন। যদিও পর্তুগিজরা রোমান্স ভাষায় (ল্যাটিনের অপভ্রংশ) উচ্চারণ করত ছুটানাটি। একদিকে চিতপুর অপরদিকে সালকিয়া পর্যন্ত ধীরে ধীরে জনবসতি গড়ে উঠতে থাকে। কুচিনান ও কলকাতায় বাজার ও জেটি গড়ে ওঠে। ধর্ম করার জন্য বেতড়ে ছিল বেতাই চন্ডি, চিতপুরে সর্বমঙ্গলা, কালীঘাটে হা কালী মূর্তি। পর্তুগিজদের সঙ্গে বেতড়ের ব্যবসা সেঠ-বসাকরা বেশিদিন চালাতে পারেনি। কারণ, সম্রাট আকবরের উদার আহ্বানে পর্তুগিজরা হুগলি বন্দরকে ঘিরে গির্জা নির্মাণসহ ধর্মপ্রচারের ফরমান নিয়ে স্থায়ীরূপে বসবাসের অধিকার পায়, পরিবর্তে পর্তুগিজদের দস্যুবৃত্তি ছাড়ার আহ্বান জানানো হয়। সম্রাট শাহজাহান অবশেষে উৎপীড়ক পর্তুগিজ জনতাকে বন্দি করে আগ্রায় চালান দেন।

সম্রাট আকবরের সভাসদ আবুল ফজলের ‘আইন ই আকবরী’ অনুযায়ী সাতগাঁও সরকারের তত্ত্বাবধানে কলকাতা ছিল জেলা। যদিও স্যার যদুনাথ সরকার অনুবাদকারীদের ভুল বলে মনে করেছেন এবং এটি ক্যালকাটা না হয়ে কালনা হবে বলে মনে করেছেন। জলদস্যু ও সমুদ্র ডাকাতদের হাত থেকে রক্ষাকল্পে ষোড়শ শতকের শেষদিকে বেতড় ও তার উল্টো দিকের তীরে দুর্গ তৈরি করা হলে এই এলাকার গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়। কিন্তু সপ্তদশ শতকে বেতড় ক্রমে গুরুত্ব হারানোয় দুর্গের জন্য থানা নামটি থেকে যায়। এদিকে পাঁচজন সেঠ বসাক ও তাদের বংশধররা এবং অন্যান্য বহু ব্যবসায়ী বিদেশীদের সঙ্গে ব্যবসা শুরু করার জন্য উদ্যোগী হলে পর্তুগীজদের অভাবে ইংরেজদের দিকে ঝোঁকে। ইংরেজরাও ক্রমে হুগলি ছেড়ে বর্তমান গার্ডেনরিচ এলাকায় তাদের বড় জাহাজ গুলিকে নোঙর করাত।

১৬৭৬ খ্রিস্টাব্দের ৫-ই সেপ্টেম্বর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্মচারী স্ট্রেনসাম মাস্টার বালেশ্বর কুঠি থেকে শুরু করে কাশিমবাজার পর্যন্ত যাত্রা করেন। ভাগিরতি ধরে তাঁর সমস্ত যাত্রাপথটি হেজ সাহেব তাঁর দিনলিপিতে উল্লেখ করেছেন। ১৩-ই সেপ্টেম্বর মাস্টার হুগলি বন্দরে পৌঁছান, তাই অনুমান উক্ত তারিখের একদিন পূর্বে (১২ তারিখ) তিনি বর্তমান কোলকাতা মহানগরী পার হয়েছিলেন। সি আর উইলসন বলেছেন, ‘পরের দিন তাঁরা নিজেদের বেতড়ের উল্টোদিকে গার্ডেনরিচে দেখতে পেলেন। সিজার ফ্রেডরিক যখন এই রাস্তায় এসেছিলেন, এখানে প্রায় ১০০ বছর পূর্বে পর্তুগিজ জাহাজগুলি নোঙর করত। স্থানটির নাম এখন বড় থানা, এবং জলদস্যুদের অত্যাচার থেকে রক্ষার জন্য এখানে নদীর দুই পাশে নির্মিত পুরনো কেল্লার মাটির দেওয়াল গুলির দেখা পাবেন (যার একটি ছিল শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেনের সুপারিনটেনডেন্টের অফিসের জায়গাটিতে এবং অপরটি ছিল নদীর অপর পাড়ে মেটিয়াবুরুজে)। জনসাধারণ এখনও গল্প করে ১০ থেকে ১২ বছর পূর্বেও ভাইসরয় (শায়েস্তা খাঁ) দ্বারা আরাকানিদের দমন করার পূর্বে কারও পুরনো দুর্গের নিরাপদ আশ্রয়স্থলের আরও ভাটিতে বসবাসের সাহস ছিলনা, এবং ধ্বংসের হাত থেকে ও ধরা পড়ে পিপলিতে দাস হিসেবে বিক্রি হয়ে যাওয়ার ভয়ে কেমন করে জনতা নদীর কূল ছেড়ে জঙ্গলে পালিয়ে যেত, তা বলত”। হেজ সাহেবের ডাইরিতে এরপর গোবিন্দপুর, সেঠ-বসাকদের বাসস্থান, আদিগঙ্গা, কালীমন্দির ও আরও আগে কলকাতার কথা বলা হয়েছে এবং এটাও বলেছেন তৎকালীন কলকাতাকে দেখে এর ভবিষ্যৎ চমকের কথা কেউ বলতে পারত না।

যাই হোক, উপসংহারেে বলা যায় ক্রমশ চড়া পড়তে পড়তে একসময় আদিসপ্তগ্রাম বন্দর হিসাবে তার বৈভব হারিয়ে ফেলে এবং এই অবস্থা শুরু হয়েছিল ইউরোপীয়দের বাংলায় আসার আগেই। পরবর্তীতে হুগলিও একই কারণে পরিত্যক্ত বন্দরে পরিণত হয়েছে। তারও আগে আদি গঙ্গা দ্বারা বাহিত গঙ্গার ধারাটি ক্রমশ তার নাব্যতা হারিয়ে বর্তমানে কালো পচা জলের নালায় পরিনত হয়েছে। অথচ পঞ্চদশ শতকেও এই ধারাটিকে নিয়ে কবির রোমান্টিক কল্পনা গড়ে উঠেছিল। যদিও গঙ্গার বর্তমান ধারাটিই প্রধান ধারা ছিল। দেশি ও বিদেশি বণিকেরা পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে গঙ্গার আরও ভাটিতে নতুন এক বন্দর গড়ে ওঠার অপেক্ষায় ছিল।

এই বন্দরটি হল কলকাতা বন্দর। কোলকাতা বন্দরটি পুরোপুরি গড়ে ওঠার প্রায় দেড়শ-দুইশ বছর আগে থেকেই আশেপাশে বন্দর উপযোগী বহু স্থান তৈরি হয়েছিল। যেমন- বেতড় ও বর্তমান গার্ডেনরিচ মেটিয়াব্রুজ এলাকা। বর্তমান কোলকাতা মহানগরীর চৌহদ্দির মধ্যেই মেটিয়াব্রুজ-গার্ডেনরিচ এলাকাটি রয়েছে। আদিগঙ্গার মুখে গোবিন্দপুর ও আরও উত্তরে সুতানুটিতে দেশীয় বণিকদের ছোটখাটো ব্যবসা কেন্দ্র গড়ে উঠেছিল। তবে বড় বড় জাহাজ বাঁধা হত বেতড়-মেটিয়াব্রুজ, গার্ডেনরিচ এলাকায়। পরবর্তীতে এলাকাটির নাম হয়েছিল বড় থানা। আরও পরে ইংরেজরা জাঁকিয়ে বসলে এলাকার নাম হয় গার্ডেনরিচ। তবে শায়েস্তা খাঁ-র আমলেই মাটির বুরজ বা কেল্লা থেকে মেটিয়াব্রুজ নামটির উদ্ভব হয়। বেতড় নাম ও এলাকাটি এখনও রয়েছে তবে সেরকম উল্লেখযোগ্য নয়।

Post Views: 8,086
Tags: কলকাতা নগরীকলকাতা নগরীর পত্তন
ADVERTISEMENT

Related Posts

বর্গী এল দেশে: বাংলার অষ্টাদশ শতকের মারাঠা আক্রমণকারীদের সন্ত্রাস
ভারতবর্ষের ইতিহাস

বর্গী এল দেশে : বাংলার অষ্টাদশ শতকের মারাঠা আক্রমণকারীদের সন্ত্রাস

লিখেছেনঃ মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম বাংলার গ্রামে গ্রামে বহুদিন আগেও রাতে শিশুকে ঘুম পাড়াতে মায়েরা যে ছড়াটি গাইতেন—“ছেলে ঘুমালো, পাড়া...

by মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম
August 26, 2025
গোপাল পাঁঠা : ইতিহাসের অন্ধকারে এক বিতর্কিত চরিত্র
ভারতবর্ষের ইতিহাস

গোপাল পাঁঠা : ইতিহাসের অন্ধকারে এক বিতর্কিত চরিত্র

লিখেছেনঃ মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম কলকাতার বউবাজারের মঙ্গলা লেনে জন্মেছিলেন গোপাল পাঁঠা ওরফে গোপাল চন্দ্র মুখোপাধ্যায়। পারিবারিক পেশা ছিল পাঁঠার...

by মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম
August 24, 2025
সুলতানি যুগের ঐতিহাসিক পুনর্গঠনের নথি ও প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান
ভারতবর্ষের ইতিহাস

সুলতানি যুগের ঐতিহাসিক পুনর্গঠনের নথি ও প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান

লিখেছেনঃ মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম গজনীর মাহমুদ ও মহম্মদ ঘোরীর ধারাবাহিক ও সফল সামরিক অভিযানের ফলে ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনৈতিক মানচিত্রে...

by মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম
August 9, 2025
ময়ূরাক্ষী তীরবর্তী বীরভূম : ইতিহাস, সংস্কৃতি ও সমাজের সন্ধানে
ভারতবর্ষের ইতিহাস

ময়ূরাক্ষী তীরবর্তী বীরভূম : ইতিহাস, সংস্কৃতি ও সমাজের সন্ধানে

লিখেছেনঃ মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম বঙ্গদেশের অন্তঃস্থলে অবস্থিত বীরভূম জেলার ভূপ্রকৃতি, সংস্কৃতি ও ইতিহাস এক গভীর অন্তঃসার ধারণ করে আছে,...

by মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম
July 10, 2025

Facebook Page

নবজাগরণ

ADVERTISEMENT
No Result
View All Result

Categories

  • English (9)
  • অন্যান্য (11)
  • ইসলাম (28)
  • ইসলামিক ইতিহাস (23)
  • ইহুদী (3)
  • কবিতা (37)
  • খ্রিস্টান (6)
  • ছোটগল্প (6)
  • নাস্তিকতা (18)
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (24)
  • বিশ্ব ইতিহাস (26)
  • ভারতবর্ষের ইতিহাস (199)
  • রাজনীতি (39)
  • সাহিত্য আলোচনা (72)
  • সিনেমা (18)
  • হিন্দু (16)

Pages

  • Cart
  • Checkout
    • Confirmation
    • Order History
    • Receipt
    • Transaction Failed
  • Checkout
  • Contact
  • Donation to Nobojagaran
  • Homepage
  • Order Confirmation
  • Order Failed
  • Privacy Policy
  • Purchases
  • Services
  • লেখা পাঠানোর নিয়ম
  • হোম

No Result
View All Result
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi

©Nobojagaran 2020 | Designed & Developed with ❤️ by Adozeal

Login to your account below

Forgotten Password?

Fill the forms bellow to register

All fields are required. Log In

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In
Don't have an account yet? Register Now
1
Powered by Joinchat
Hi, how can I help you?
Open chat
wpDiscuz
0
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x
| Reply