• মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
Saturday, June 21, 2025
নবজাগরণ
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ
No Result
View All Result

নজরুল ইসলাম : ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে এক আপোষহীন কলম সৈনিক

গোলাম আহমাদ মোর্তাজা by গোলাম আহমাদ মোর্তাজা
June 19, 2025
in ভারতবর্ষের ইতিহাস
0
কাজী নজরুল ইসলাম

চিত্রঃ কাজী নজরুল ইসলাম, Image Source: dhakatribune

Share on FacebookShare on Twitter

লিখেছেনঃ গোলাম আহমাদ মোর্তাজা

১৮৯৯ সালের ২৪শে মে জন্মগ্রহণ করেন এই বিখ্যাত কবি। পরলােকগ করেন ১৯৭৬ সালের ২৯শে আগস্ট। খুব গরীব ছিলেন তিনি। অন্নের জ্বালায় তাঁকে বা অয়সে রুটির দোকানে খেটে খেতে হয়েছে। পরে মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি সৈন্য বিভাগে যােগ দেন। আরাে পরে তিনি হাবিলদারের পদ পান। ১৯২১ সালে তিনি কাজে ইস্তফা দিয়ে দেশে ফিরে আসেন। শুরু হয় তাঁর সাহিত্য সাধনা।

অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় পড়াশুনায় অকৃতকার্য হয়ে অনেকে পড়া ছেড়ে দেয়। কিন্তু নজরুল ১৯১৭ খৃষ্টাব্দে যখন রাণীগঞ্জে শিয়ারশােল স্কুলে দশম শ্রেণীতে পড়তেন তখন কিন্তু তিনি ক্লাসের প্রথম ছাত্র অর্থাৎ ফার্টবয় ছিলেন। সুতরাং বােঝা যায়, তাঁর পথ পরিবর্তনের কারণ একমাত্র দারিদ্রতা, অন্য কিছু নয়।

কাজী নজরুল ইসলাম
চিত্রঃ কাজী নজরুল ইসলাম, Image Source: wikimedia

বাঙ্গালীরা যখন সৈন্য বিভাগে সহজে ঢুকতে পারতাে না, শুধু সাধারণ পুলিশ হতে পারতাে তখন খুব লেখালেখি করে ইংরেজ সরকার রাজি করানো গেল যে, বাঙালী ফৌজ গঠন করা হবে। তখন দেশের নেতারা বাঙালী যুবকদের সৈন্য বিভাগে নাম দিতে উৎসাহিত ও উদ্বুদ্ধ করেন। ঠিক সেই সময় ১৯১৭-তে নজরুল ইসলাম দেশের ডাকে দশের স্বার্থে মিলিটারীতে নাম দেন। [দ্রঃ মুজফফর আহমদঃ ‘কাজী নজরুল ইসলাম স্মৃতিকথা’ পৃ.৯]

নজরুল প্রথমে আরবী ও পার্শী ভাষায় বেশ কিছু অভিজ্ঞতা লাভ করেছিলেন। ফলে তাঁর ধর্মীয় ভাব বেশ গাঢ় ছিল। তাঁর প্রথম কবিতায় ধর্মের ঘ্রাণ বেশ তীব্র ভাবে অনুভূত হয়। তাঁর জীবনের প্রথম কবিতা ‘মুক্তি’ ১৯১৯ সালের জুলাই মাসে ‘বঙ্গীয় মুসলমান’ পত্রিকাতে প্রথম ছাপা হয়; যেটা একটা মুসলমান ফকীরের অলৌকিক কাহিনী নিয়ে রচিত। তার একটা অংশ হচ্ছে, “রক্তাক্ত সেচুর্ণ বক্ষে বন্ধ দুটি হাত – ধুয়ে ফকির পড়ছে শুধু কোরানের আয়াত।” দারিদ্রের তাড়নায় সৈন্য বিভাগে যাওয়ার পূর্বে রেলওয়ে গার্ড সাহেবের চাকর থাকতেও তাঁর আটাকয়নি। দারিদ্রের দায়ে তাঁকে লেটোর দলের গান তৈরি করে সুর দেওয়ার কাজও করতে হয়েছিল। [দ্রঃ ঐ, পৃ. ১১]

তখন সন্ত্রাসবাদী দল যুগান্তর ও অনুশীলন দলের কর্মী হতে হলে নিয়ম ছিল— সেখানে গীতা হাতে করে ঠাকুরের সম্মুখে তরবারি নিয়ে পরিপূর্ণ হিন্দু পদ্ধতিতে দীক্ষা নিতে হােত। দেশের স্বার্থে স্বধর্মের বিশ্বাস ও বাঁধন ছিন্ন করেও নজরুল ঐ ‘যুগান্তরে’ নিজেকে যুক্ত করার জন্য এগিয়ে যান। কিন্তু তখন তাঁর লেখা অমুসলমান সমাজে আশানুরূপ চিত্তাকর্ষক হয়নি। নদীয়ার শান্তিপুরের মােজাম্মেল হকের ‘মােসলেম ভারত’ পত্রিকা ও কিছু মুসলমান পরিচালিত পত্রিকা নজরুলের গল্প, প্রবন্ধ ও কবিতা ছাপতে আরম্ভ করে। ‘মােসলেম ভারতে’ নজরুলের তেরটি লেখা বেরিয়েছিল। নজরুল যতই তাঁর ধর্মীয় উদারতা প্রদর্শন অথবা ধর্মের মস্তক মুণ্ডন করুন না কেন, সাম্প্রদায়িকতা তখন বেশ শিকড় গেড়ে বসেছিল ভারতের মাটিতে। সেই সময়ের অবস্থা এমন ছিল—মুসলমানরা অনেকে হিন্দুদের সঙ্গে মিশতে চাইতেন, কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ দল মুসলমানদের কেমন চোখে দেখতে তার প্রমাণে ডক্টর শহীদুল্লার ভাষায়, “আমরা কয়েকজন [মুসলমান] বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সভ্য ছিলাম। সেখানে হিন্দু মুসলমান কোন ভেদ না থাকলেও আমরা বড়লােকের ঘরে গরীব আত্মীয়ের মতন তর সভায় যােগদান করতাম। আমাদের মনে হােল বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সঙ্গে সম্বন্ধ বিলােপ না করেও আমাদের [মুসলমানদের] একটি নিজস্ব সাহিত্য সমিতি থাকা উচিত। এই উদ্ধেশ্যে কলিকায় ৯নং আস্তনিবাগান লেনে মৌলবী আব্দুর রহমান খাঁনের বাড়ীতে ১৯৯১ সনের ৪ঠা সেপ্টেম্বর এক সভা আহত হয়।” [বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাস, চতুর্থ খণ্ড, পৃ. ২১৭]

নজরুল প্রবন্ধ গদ্য রচনা ও কবিতাই সৃষ্টি করেন নি, তিনি একজন বক্তাও ছিলেন। বহু সভায় তিনি ইংরেজ-বিরােধী বক্তৃতা করেছিলেন। তাঁর বিরােধী মনের পরিচয়ের জ্বলন্ত প্রমাণ তাঁর কবিতা। তাই তাঁকে আমরা ‘বিদ্রোহী কবি’ নাম দিয়ে কৃতার্থ করে দিয়েছি।

আমাদের ইতিহাসে স্বাধীনতা আন্দোলনের নায়ক তাঁরাই যাঁরা জেল খেটেছেন, প্রাণ দিয়েছেন, যাঁদের বই পত্রিকা বা প্রেস বাজেয়াপ্ত হয়েছে প্রভৃতি। এদের মধ্যে বঙ্কিম, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, নবীন সেন, দেব মুখােপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ, আশুতোষ মুখােপাধ্যায় প্রভৃতি বুদ্ধিজীবীদের নাম না থাকলেও গাজী, জহরলাল, প্যাটেল প্রভৃতির নাম উল্লেখ করা যায়। কারণ তাঁরা যে কারাবরণ করেছিলেন তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু কবি নজরুল শুধু শুকনাে কবি নন, তাঁর একদিকে ছিল দারিদ্র অন্যদিকে সাম্প্রদায়িকতার বাধা। তাও তিনি তাঁর প্রচণ্ড ক্ষমতা থাকা সত্বেও তাঁর লেখায় হিন্দু মানসে আঘাত দিয়েই শুধু লিখে গেছেন তাই নয় বরং সাম্প্রদায়িকতার উর্ধ্বে উঠেই তিনি কলম ধরেছেন। দেশের একতা এবং ইংরেজ বিতাড়নে তিনি স্বধর্মের বিরােধিতা করতেও কুণ্ঠাবােধ করেননি। কোরআন, হাদিসও আলেমসমাজকেও আঘাত দিয়েছেন অনেক ক্ষেত্রে। তবুও আশানুরূপ সমর্থন তিনি পাননি।

মােহিতলালের ‘শনিবারের চিঠি’ পত্রিকায় তাঁর বিরুদ্ধে নানা ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করে লেখা আরম্ভ হয়। তবু কবি আঘাতের পরিবর্তে পাল্টা আঘাত না দিয়ে আরও নমনীয় হলেন। সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়কে মুগ্ধ করতে তাঁর কবিতা বের হতে লাগলাে; শুধু ঠাকুর দেবতার কথা, রামায়ণ মহাভারতের কথা, প্রাচীন মুনি ঋষিদের কথায় ঠাসা সম্ভার ছিল। এইবার যেন তাঁর উপর অনেকের দৃষ্টি পড়লাে। তবুও তা যথেষ্ট নয় বলে তিনি মনে করলেন। তাই নার্গিসের সঙ্গে তাঁর বিবাহ বাতিল হওয়ার পর তিনি শ্ৰীযুক্তা গিরিবালা দেবীর কন্যা প্রমীলাকে বিয়ে করলেন। তাতে একদল হিন্দু খুশী হলেন বটে, কিন্তু আর একদল অসন্তুষ্ট হলেন এই জন্য যে, হিন্দুর মেয়ে মুসলমানদের হাতে চলে গেল। কমপক্ষে একজন হিন্দু কমে গেল এবং তার গর্ভজাত সন্তানরা আসবে মুসলমান হয়ে।

কবি আরাে নমনীয় হয়ে আরাে নেমে এলেন পূর্বপুরুষের ধর্মীয় গণ্ডির সীমা থেকে। নামাজ রােজা তােআড়াল করে দিলেনই উপরন্তু তাঁর পুত্রদের হিন্দু কায়দায় নাম রাখলেন। যেমন ছেলেদের নাম রাখলেন সব্যসাচী, অনিরুদ্ধ, বুলবুল প্রভৃতি। তাছাড়া ছেলেদের জন্য এমন পরিবেশ তিনি গড়লেন যাতে তাঁর পুত্রেরা কল্পনা করতে পারতেন না যে তাঁরা মুসলমান পাত্রীকে বিয়ে করবেন। আর হােলও তাই। তাঁর ছেলেরা পুরােপুরি হিন্দু কায়দায় বড় হলেন, হিন্দু মেয়ে বিয়ে করলেন এবং তাঁরাও তাঁদের ছেলেমেয়েদের নাম হিন্দু পদ্ধতিতেই রাখলেন। ফলে এতদিনে প্রমাণিত হােল যে, তিনি মুসলমান সমাজ হতে নিজেকে বের করতে চান। এর পরেও নজরুল আরাে দেবতাভক্ত হলেন, কালী দেবীর নামে অনেক শ্যামাসঙ্গীত সৃষ্টি করলেন, তাতে সুর লাগালে, নিজে ভাবাবেগের সঙ্গে গেয়েও শােনালেন। অনেকে তাঁকে তাঁদের মত মনে করে বরণ করলেও কঠিন হৃদয়ে এ কথ মনে হয়েছিল যে, লেখা আর কাজ এক নয়।

তাই নজরুল আরও নেমে এলেন-কালী সাধনায় নিমগ্ন হওয়ার দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। তারপর কবি বাকহীন ও পঙ্গু হয়ে গেলেন। এবার ভক্তিমাল্য ঝরতে লাগলােজানবিলুপ্ত কবির উপর। আজ কবির পুত্র, পৌত্র ও কন্যাদের হিসেবের অঙ্ক বড় জটিল হয়ে পড়েছে না তাঁদের মুসলমানত্বের কোন মর্যাদা আছে, না তাঁরা পরিপূর্ণ হিন্দু হতে পেরেছেন মোট কথা, ঠিক বেঠিক যাই হােক, নজরুল হিন্দু মানসে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সব কিছু ত্যাগ করেছিলেন। জীবিতবস্থায় রামমােহন, বিদ্যাসাগর, বঙ্কিমের মত ধনী হতে পারেননি। সারা জীবন শুধু ঋণ করে গেছেন আর বুকের বেদনা ভুলতে মদ্যপান করেছেন। গান গেয়ে হাসির আবরণে সুপ্ত কান্নার মিনার গড়েছেন। নিজের বংশ ধ্বংস হওয়ার দিকে দৃষ্টি দিতে ফুরসত পানন।

তাঁর জন্ম হয়েছিল পুরােপুরি মুসলিম পরিবেশে, মুসলিম বাবা-মা’র সন্ধিক্ষণে। আর মৃত্যুর পর মুসলিম পদ্ধতিতে তাঁর ও তাঁর স্ত্রীর কবরও রচনা হয়েছিল—এটা কবির দুভাগ্য না সৌভাগ্য তা নিয়ে বিতর্কের অবকাশ থেকে গেল।

নরুল ইংরেজের রােষে জেলে গেলেন, প্রহারের পুরস্কার পেলেন, জেলের অবিচার ও অনাচারের বিরুদ্ধে অনশন করলেন, কত লুকিয়ে বেড়ালেন, তবু তাে তিনি কাপুরুষের মত ইংরেজের সঙ্গে হাত মেলান নি। তাঁর অগ্নিবর্ষক কলমে লিখে চললেন কবিতা, প্রবন্ধ ও গল্প। অবশ্য গল্প ও প্রবন্ধের চেয়ে তিনি কবিতাতেই বেশি সুখ্যাত বা বিখ্যাত।

নজরুলের বিখ্যাত বই ‘ভাঙ্গার গান’ ইংরেজের দরবারে কুখ্যাত বলে বিবেচিত হওয়ায় বাজেয়াপ্ত হয় ১৯৩১ খৃষ্টাব্দে। অনেক সুপুরুষকে দেখা গেছে তাঁর বই বা লেখা বাজেয়াপ্ত হওয়ার পর তিনি ভীত হয়ে পড়েন অথবা কোন দুর্বলতায় কলমের গতির পরিবর্তন করেন। কিন্তু নজরুল এই অভিযােগ থেকে বিমুক্ত। যেহেতু তাঁর ‘যুগবাণী’ বইও বাজেয়াপ্ত হয় ঐ বছরেই। তবুও তিনি থামলেন না। তাঁর ‘চন্দ্রবিন্দু’, ‘বিষের বাঁশি’ও বাজেয়াপ্ত হল।

বঙ্কিমের-গুরু ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের হাতে অনেক পত্রিকা ছিল—সেগুলাে শুধুমুসলমানদের বিরুদ্ধে ও ইংরেজদের স্বপক্ষে গর্জে উঠেছিল কি না সে আলােচনা পূর্বে করা হয়েছে। তেমনি নজরুলের অঙ্গুলি হেলনে তখন যে পত্রিকাগুলাে চলতাে সেগুলাে হচ্ছে নবযুগ, ধূমকেতু, লাঙ্গল প্রভৃতি। এগুলাের পিছনে ছিল তাঁর সম্পাদনা ও প্রচেষ্টা। এই প্রত্যেকটি পত্রিকা অত্যাচারী সরকার নিষ্ঠুর হাতে বাজেয়াপ্ত করেছিল। তাছাড়া তাঁর ‘অগ্নিবীণা’ বইটিও সরকার বরদাস্ত করতে পারেনি।

ইংরেজের আমল থেকে নিয়ে তাদের চলে যাবার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত প্রায় চারশাে বই ও পত্রপত্রিকা বাজেয়াপ্ত হয়েছে। শুধু ১৯২০-১৯৩৪ পর্যন্ত ১৭৪টি বাংলা বই নিষিদ্ধ হয়েছে। ১৯৩৪ সলেম পরও ১৯৩৭-১৯৪৭ সাল পর্যন্ত একশােরও বেশি বই বাজেয়াপ্ত হয়েছে। কোন কোন মুসলমান ও হিন্দু মনীষীর বাংলা-অবাংলা বই ভারতের ইংরেজ সরকার বাজেয়াপ্ত করেছিল তার মােটামুটি আলােচনা আমার লেখা ‘বাজেয়াপ্ত ইতিহাসে’ করেছি।

যাঁরা ইংরেজের কাছ থেকে তাঁদের লেখনীর জন্য পুরস্কার, প্রচুর উপাধি, ধনী ও মানী হওয়ার সুযোগ পেলেন এবং ইতিহাসে তাঁরা অনেকে স্বাধীনতার নায়ক বলে ‘হিরাে’ হয়ে পড়লেন, সেখানে তুলনামূলক ভাবে নজরুল ইসলামকে উচ্চাসনে বসানাে তাে দূরের কথা সেই তথাকথিত ‘হিরাে’দের পদপ্রান্তেও তাঁর স্থান কতটুকু হয়েছে তার হিসেব করার অবকাশ আছে।

এবারে নজরুলের লেখনীর কিছু নমুনা দিচ্ছি মাত্র। হিন্দু-মুসলমানের উদ্দেশ্যে তিনি লিখলেন।

“ঘর সামলে নে এই বেলা তােরা ওরে ও হিন্দু-মুসলেমীন!

আল্লা ও হরি পালিয়ে যাবে না, সুযােগ পালালে মেলাঠিন,

ধর্ম কলহ রাখ দুদিন।

নখ ও দন্ত থাকুক বাঁচিয়া, গণ্ডুষ ফের করিবি কাঁচিয়া,

আসিবে না ফিরে এই সুদিন

বদনা গাড়ুতে কেন ঠোকাঠুকি কাছ কোচা টেনে শক্তি ক্ষীণ

সিংহ যখন পঞ্চলীন।”

তিনি হিন্দুধর্ম ও ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে বিদ্রুপ করে লিখে বােঝাতে চাইলেন হিন্দু-মুসলমানে মিলেমিশে একাকার হওয়া উচিত। তাই পুরােহিত ও উলামা গােষ্ঠীকে সমানভাবে আঘাত দিয়ে তিনি লিখলেনঃ “হিন্দুত্ব ও মুসলমানত্ব দুই সওয়া যায়, কিন্তু তাদের টিকিত্ব ও দাড়িত্ব অসহ্য, কেননা ঐ দুটোই মারামারি বাধায়। টিকিত্ব হিন্দুত্ব নয়, ওটা হয়ত পণ্ডিত্ব। তেমনি দাড়িত্ব ইসলামত্ব নয়, ওটা মােল্লাত্ব। এই দুই ‘ত্ব’ মাকা চুলের গােছা নিয়েই আজ এত চুলােচুলি। আজ যে মারামারিটা বেধেছে সেটাও এই পণ্ডিত-মােল্লার মারামারি। হিন্দু-মুসলমানে মারামারি নয়।”

তিনি কালী-ভক্তদের খুশী করতে কালীকীর্তন লিখলেন :

“আমার কালাে মায়ের পায়ের নীচে দেখে যা আলাের নাচন

মায়ের রূপ দেখে দেয় বুক পেতে শিব যার হাতে মরণ বাঁচন।

আমার কালাে মেয়ের আঁধার কোলে শিশু রবি শশী দোলে।

মায়ের একটুখানি রূপের ঝলক ঐ স্নিগ্ধ বিরাট নীল গগন।।”

তাঁর কলমে তিনি আরও লিখলেন—

“মসজিদ আর মন্দির ঐ শয়তানের মন্ত্রণাগার

রে অগ্রদূত, ভাঙ্গতে এবার আসছে কি জাঠ কালাপাহাড়।”

এটা ঠিক নজরুলের ইতিহাস লেখা হচ্ছে না। নজরুলের মৃত্যুর পরও তাঁর মূল্যায়ন এখনাে যে বাকী আছে শুধু এই ইঙ্গিত দিয়ে তার দায়িত্ব নিরপেক্ষ অসাম্প্রদায়িক বিচারকমণ্ডলীর হাতেই ছেড়ে দেওয়া হােল।

নজরুল ‘ধুমকেতু’ কাগজে ১৯২২ খৃষ্টাব্দের অক্টোবর মাসে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতার দাবী জানান। বাংলাদেশে নজরুলই প্রথম কবি যিনি সর্বপ্রথম পূর্ণ স্বাধীনতার দাবী তুলে ধরেন (বাঙালী বুদ্ধিজীবী ও বিচ্ছিন্নতাবাদঃ ডঃ অমলেন্দু দে, পৃ. ৩০৩]।

অথচ আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাসেরদামীও নামী নেতাদের অনেকের বুলি ছিল—শুধু স্বরাজ চাই। তাঁদের ‘স্বরাজ’ ও নজরুলের স্বাধীনতায় যে কত গভীর পার্থক্য তা পরবর্তী আলােচনায় পরিষ্কার হবে।

 

Post Views: 3,179
Tags: কাজী নজরুল ইসলামবাংলা সাহিত্যবিদ্রোহী কবিব্রিটিশ সাম্রাজ্য
ADVERTISEMENT

Related Posts

সম্রাট আওরঙ্গজেবের শাসনকাল : (১৬৫৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৭০৭ খ্রিস্টাব্দ)
ভারতবর্ষের ইতিহাস

সম্রাট আওরঙ্গজেবের শাসনকাল : (১৬৫৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৭০৭ খ্রিস্টাব্দ)

লিখেছেনঃ মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম মুঘল সম্রাট শাহজাহানের পুত্রদের মধ্যে সর্বাধিক শক্তিশালী, বুদ্ধিমান ও রাজনৈতিকভাবে দক্ষ ছিলেন সম্রাট আওরঙ্গজেব। ইতিহাসে...

by মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম
June 19, 2025
বিদ্যাসাগরের প্রতি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বিদ্বেষ ও বিরোধীতা
ভারতবর্ষের ইতিহাস

বিদ্যাসাগরের প্রতি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বিদ্বেষ ও বিরোধীতা

একজন বিদ্যার সাগর, আর একজন সাহিত্যের সম্রাট। উভয়েই উনিশ শতকের বিখ্যাত মনীষী ও লেখক এবং পরস্পরের সমকালীন। উনিশ শতকের...

by কামরুজ্জামান
November 13, 2024
মন্দির ধ্বংস এবং ইন্দো-মুসলিম রাষ্ট্রসমূহ
ভারতবর্ষের ইতিহাস

মন্দির ধ্বংস এবং ভারতে মুসলিম শাসনের ইতিবৃত্ত

লিখেছেনঃ রিচার্ড এম. ইটন সম্প্রতি, বিশেষ করে ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর, দক্ষিণ এশিয়ার মন্দির এবং মসজিদের রাজনৈতিক...

by অতিথি লেখক
June 19, 2025
প্রকৃতি, নান্দনিক চৈতন্য ও মরমিবাদ: বাংলার আরবি-ফার্সি শিলালিপির আধ্যাত্মিক দিক
ইসলামিক ইতিহাস

প্রকৃতি, নান্দনিক চৈতন্য ও মরমিবাদ: বাংলার আরবি-ফার্সি শিলালিপির আধ্যাত্মিক দিক

চিত্র ৪.১ (শিলালিপি নং): পাণ্ডুয়ার শায়খ নূর কুতব আল আলমের সমাধিফলকে ব্যবহৃত সাতটি আধ্যাত্মিক উপাধি...

by মুহাম্মাদ ইউসুফ সিদ্দিক
November 7, 2024

POPULAR POSTS

  • সুলতান মাহমুদ

    সুলতান মাহমুদের ভারত অভিযান ও সোমনাথ মন্দির প্রসঙ্গ (১ম পর্ব)

    181 shares
    Share 181 Tweet 0
  • বাউরী সম্প্রদায়ের উৎপত্তির ইতিহাস ও ঐতিহাসিক পর্যালোচনা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • আর্যদের ভারত আগমন, বিস্তার, সমাজ ও সভ্যতা: এক ঐতিহাসিক পর্যবেক্ষণ

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে বৌদি কাদম্বরী দেবীর সম্পর্ক আদৌ কি প্রেমের ছিল?

    0 shares
    Share 0 Tweet 0
  • হিন্দু পদবীর উৎপত্তির ইতিহাস, বিবর্তন ও ক্রমবিকাশঃ বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা

    0 shares
    Share 0 Tweet 0

Facebook Page

নবজাগরণ

ADVERTISEMENT
নবজাগরণ

'Nobojagaran' is a website of its kind where you can gather knowledge on all the unknown facts of the world. We human beings always have a thirst for knowledge. Nobojagaran takes its first steps to quench this thirst of ours. We are now in the era of digital world, where we get almost anything online. So how about a bit of knowlyfrom online?

Connect With Us

No Result
View All Result

Categories

  • English (9)
  • অন্যান্য (11)
  • ইসলাম (27)
  • ইসলামিক ইতিহাস (23)
  • ইহুদী (2)
  • কবিতা (37)
  • খ্রিস্টান (6)
  • ছোটগল্প (6)
  • নাস্তিকতা (18)
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (24)
  • বিশ্ব ইতিহাস (24)
  • ভারতবর্ষের ইতিহাস (195)
  • রাজনীতি (38)
  • সাহিত্য আলোচনা (68)
  • সিনেমা (17)
  • হিন্দু (16)

Pages

  • Cart
  • Checkout
  • Checkout
    • Confirmation
    • Order History
    • Receipt
    • Transaction Failed
  • Contact
  • Donation to Nobojagaran
  • Homepage
  • Order Confirmation
  • Order Failed
  • Privacy Policy
  • Purchases
  • Services
  • লেখা পাঠানোর নিয়ম
  • হোম
No Result
View All Result
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi

©Nobojagaran 2020 | Designed & Developed with ❤️ by Adozeal

Login to your account below

Forgotten Password?

Fill the forms bellow to register

All fields are required. Log In

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In
Don't have an account yet? Register Now
1
Powered by Joinchat
Hi, how can I help you?
Open chat
wpDiscuz
0
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x
| Reply