• মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
Friday, August 22, 2025
নবজাগরণ
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ - জ্ঞান অর্জনের বিস্বস্থ সংস্থা
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi
No Result
View All Result
নবজাগরণ - জ্ঞান অর্জনের বিস্বস্থ সংস্থা
No Result
View All Result

নজরুল-কাব্যে আরবী-ফারসী শব্দঃ বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা [পর্ব ১]

অতিথি লেখক by অতিথি লেখক
July 18, 2025
in সাহিত্য আলোচনা
0
নজরুল-কাব্যে আরবী-ফারসী শব্দঃ বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা [পর্ব ১]

চিত্রঃ কাজি নজরুল ইসলাম, Image Source: pngtree

Share on FacebookShare on Twitter

লিখেছেনঃ আবদুস সাত্তার

[যুগস্রষ্টা কবি কাজী নজরুল ইসলাম বাংলা কাব্যে শুধু নতুন ভাবধারা এবং বিষয়বস্তুই আমদানী করেননি, তিনি নিজস্ব ভাষা, আঙ্গিক এবং রূপরীতিও নির্মাণ করে নিয়েছেন। বক্তব্য-প্রকাশ ও উপজীব্য-বিষয় যথার্থরূপে ফুটিয়ে তোলার এবং কাব্য-শিল্প নির্মাণের প্রয়োজনে তিনি আরবী-ফারসী-উর্দু প্রভৃতি ভাষার ভাণ্ডারেও নির্দ্বিধায় হাত পেতেছেন, শরন নিয়েছেন সে-সব ভাষার কাব্য-ঐতিহ্যের। বস্তুতঃ, নজরুল-সাহিত্যে বাংলা, সংস্কৃত, হিন্দী, আরবী-ফারসী-উর্দু তুর্কী-এমনকি গ্রীক শব্দাবলীও সহাবস্থান করেছে, এবং বিচিত্র ও সুদক্ষ ব্যবহারে অর্থপূর্ণ এবং কাব্য ঐশ্বর্যমণ্ডিত হয়ে আছে।

নজরুল-কাব্যে ভাষা-ব্যবহার-বিশেষ করে আরবী-ফারসী শব্দ-ব্যবহার সম্পর্কে কাব্যবেত্তা, ভাষা-বিশেষজ্ঞ ও সুপণ্ডিত ব্যক্তিরা অনেককাল ধরেই নানাভাবে আলোচনা করে আসছেন। এ দিক থেকে বিষয়টি একেবারে নতুন না হলেও কবি, গবেষক ও আরবী ফারসী ভাষায় বিশেষ জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার অধিকারী জনাব আব্দুস সাত্তারের। ‘নজরুল-কাব্যে আরবী-ফারসী শব্দ’ শীর্ষক এই তথ্যপূর্ণ রচনাটি পত্রস্থ করা হলো এই কারণে যে, এতে আরবী-ফারসী শব্দ-ব্যবহারে নজরুলের নৈপুণ্যই শুধু তুলে ধরা হয়নি, তুলনামূলক পর্যালোচনা এবং কবির শব্দ ব্যবহার রীতির স্বাতন্ত্রও উপস্থাপিত হয়েছে। – স. ন, ই, প,]

[এক]

কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন একজন ভাষাশিল্পী। তাঁর কবিতায় তিনি অজস্র আরবী-ফারসী-উর্দু বা বিদেশী শব্দ বিশেষ দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করেছেন। এই শব্দের প্রয়োগ, ব্যাখ্যা এবং কাব্যের নন্দন-তাত্ত্বিক আলোচনার আগে, বাংলা অক্ষরক্রম অনুযায়ী আভিধানিক সূত্রে সাজিয়ে কিছু শব্দের উল্লেখ এখানে করা হলো। তাঁর ব্যবহৃত সবগুলো শব্দের উল্লেখ এখানে অবশ্যই সম্ভব নয়। কারণ তাঁর কাব্যে ব্যবহৃত আরবী-ফারসী শব্দের সংখ্যা এতই বেশী যে, সেগুলো পুরোপুরি সংগ্রহ করলে ‘ফরহঙ্গে রব্বানী’ বা বাংলায় ‘আরবী-ফারসী-উর্দু অভিধান’ হয়ে যাবে এবং তার কলেবরও নেহাৎ কম হবে না।

নজরুলের কবিতা পাঠ করে যা কিছু সামান্য শব্দ আমার পক্ষে সগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে তা-ই এ আলোচনায় পেশ করা হলো। শব্দগুলোর পাশে বন্ধনিতে আরবী এর জন্য ‘আ’, ফারসীর ‘ফা’, উর্দুর জন্য ‘উ’ তুর্কীর জন্য ‘তু’ উল্লেখ করা হয়েছে। কিছু শব্দ আছে যেগুলোতে আরবী-ফারসীর সমন্বয় ঘটেছে এবং সেখানে বন্ধনিতে ‘আ, ফা’ দুটোই উল্লেখিত হলো। কি জন্য আরবী ফারসীর সমন্বয় ঘটেছে তার ব্যাখ্যা শব্দগুলোর অর্থ জ্ঞাপন করতে গিয়ে অর্থের পাশাপাশি দেওয়া হয়েছে। বাংলা অক্ষরক্রম অনুযায়ী শব্দ, শব্দের বাংলা অর্থ এবং কবির কবিতা থেকে একটি করে উদাহরণও উপস্থাপন করা হলো, যদিও একই শব্দের ব্যবহার কবির বহু কবিতার বহু পংক্তিতে উজ্জ্বল হয়ে আছে, এমনকি একই পংক্তিতে কয়েকটি করে আরবী-ফারসী-উর্দু শব্দ আছে।

বিজ্ঞাপনের জন্য

সমগ্র প্রকাশিত নজরুল-সাহিত্যের উপর জরিপ চালিয়ে মোটামুটিভাবে যা উদ্ধার করা গেছে তা ‘অগ্নিবীণা’র স্বরবর্ন ‘অ’ থেকে শুরু করে ‘মরু-ভাস্কর’, ‘সর্বহারা’ বা অন্যান্য গ্রন্থের ব্যঞ্জনবর্ন ‘হ’ পর্যন্ত (অক্ষরক্রম অনুযায়ী ‘অ’ থেকে ‘হ’ পর্যন্তই বাংলা অভিধান তৈরী করা হয়) অথবা আরবী-ফারসী-উর্দু-খ্যাত ‘আমপারা’র ‘আলিফ থেকে শুরু করে ‘ইয়ে’ পর্যন্ত যেমন ‘য়্যা আল্লাহ আমি আন্ধা’, ‘য়্যা নবী সালাম আলায়কা’ ইত্যাদি (এখানে বলে রাখা ভালো ‘আমপারা’ (কাব্য অনুবাদ)-এর আম আরবী শব্দ এবং-এর অর্থ সাধারণ এবং ‘পারা’ ফারসী শব্দ এবং এর অর্থ অংশ, খণ্ড, ভাগ ইত্যাদি। যেমন পবিত্র কোরান তিরিশ পারা বা খণ্ডে বিভক্ত এবং এর মধ্যে ‘আমপারা’ সাধারণ খণ্ড। ‘আম’-এর বানান ‘আইন ও মিম’। আইনের উপর আছে খারা জবর এবং ‘মিম’-এর উপর ‘সাকেন’ চিহ্ন। এই খাড়া জবর আলিফ হিসাবে ধরা হয় এবং এখানে এই খাড়া জবরকে ‘আলিফ’ ধরে ইয়া পর্যন্ত আরবী-ফারসী-উর্দু অভিধানের সূত্র বজায় রাখা হয়েছে। যেসব শব্দের সন্ধান পাওয়া গেছে তাতে আরবী-ফারসী-উর্দু বা অন্যান্য শব্দের সংখ্যা প্রায় তিন হাজার। এই তিন হাজার শব্দের মধ্যে শতকরা ৬০% ভাগ আরবী শব্দ, শতকরা ৩০% ভাগ ফারসী শব্দ এবং শতকরা ১০% ভাগ উর্দু বা অন্যান্য শব্দ। এই শব্দসমূহ আমাদের দেশে এবং আমাদের দৈনন্দিন জীবনে যেভাবে প্রচলিত ঠিক সেই ভাবেই কবি নজরুল তাঁর সাহিত্যকর্মে ব্যবহার করেছেন।

হ্যাঁ, শব্দ ব্যবহারের ব্যাপারে নজরুল, বলা চলে, রাজমিস্ত্রীর ভূমিকা পালন করেছেন। রাজমিস্ত্রী বলছি এই কারণ যে, রাজমিস্ত্রীরা ইমারত বা প্রাসাদ তৈরীর সময় হাতুড়ি দিয়ে ইট পরীক্ষা করে তবে ইমারত গাঁথা শুরু করেন। ইট খারাপ মনে হলে প্রথম টোকাতেই বুঝতে পেরে সেটা বাতিল ঘোষণা করে ফেলে দেন। আবার কোন ছোট জায়গায় যেখানে পুরো ইটের প্রয়োজন নেই, সেটা হাতুড়ি দিয়ে ভেঙে বা ছেঁটে-ছেঁটে ছোট করে ঠিক মানানসই মতো বসিয়ে দেন।

কাজী নজরুল ইসলামও তাঁর কাব্য তথা সাহিত্য প্রাসাদ তৈরীতে বাছাই করা শব্দের ইঁট তো ব্যবহার করেছেনই, তদুপরি ছন্দ, মাত্রা, তাল, লয় ইত্যাদি জনিত কারণে কোনো কোনো শব্দ-ইঁট ভেঙে একটু ছোট করেছেন। অথচ সেই শব্দ বুঝতে আমাদের কোনোই কষ্ট হয় না। একটি মাত্র উদাহরণ দিলেই আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট হবে আশা করি। যেমন ‘অদূরে দলিজে’ মুত্তালিবের শোনা গেল ঘোর কাঁদন বোল। এই বাক্যে ব্যবহৃত ‘দলিজ’ শব্দটি ফারসী এবং এর মূল হচ্ছে ‘দহলিজ’। চার মাত্রার এই ‘দহলিজ’-কে মাত্রা রক্ষা করতে গিয়ে তিনি তিন মাত্রায় ‘দলিজ’ করেছেন এবং উক্ত পংক্তিতে দলেরও কোনো পতন ঘটেনি। অথচ শব্দটির চেহারা দেখে ও অর্থ থেকে আমরা বুঝতে পেরেছি ওটা ‘দহলিজ’ থেকে উদ্ভুত হয়েছে। অনুরূপ ভাবে দরিয়া থেকে ‘দরী’ যেমন ‘গিরিদরী’ (পর্বত-সমুদ্র), দাওয়াত থেকে ‘দাওয়াত’ যেমন, ‘দাওত’ এসেছে ‘নয়া জামানার’, ‘তাওফিক’ থেকে ‘তৌফিক’ যেমন’ ‘তৌফিক দাও খোদা ইসলামে’, রওশন’ থেকে ‘রোশন’ বা ‘রোশনী’ যেমন ‘ঘুচাল কি অমা ‘রোশনী’তে, নওজোয়ান থেকে ‘নৌজোয়ান’ যেমন শুনরে পাতিয়া কান’ ‘নৌজোয়ান’, ইত্যাদি আরও অনেক উদাহরণ দেওয়া যায়।

নজরুল ইসলামের পূর্বে বাংলা সাহিত্যে আরবী-ফারসী-উর্দু শব্দ ব্যবহৃত হয়নি এমন কথা আমরা বলবো না। কারণ মধ্যযুগের কাব্য তথা পৃথি-সাহিত্যে প্রচুর আরবী-ফারসী-উর্দু শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে এবং এসবের নায়ক ছিলেন শাহ গরীবুলাহ, সৈয়দ হামজা, মুনসী শেখ মোহাম্মদ, মুনসী ওয়াজেদ আলি, মোহাম্মদ দানেশ, মুনসী এরাদত আলি এবং আরও অনেকে। তাদের শব্দ প্রয়োগ-কৌশল এবং প্রকাশ ভঙ্গিতে সুঘ্রাণ থাকলেও বসরার গোলাপের সুঘ্রাণ ছিল না। কাজী নজরুল এই সব শব্দ ব্যবহারে শুধু রাজমিস্ত্রীর ভূমিকাই পালন করেন নি, তৈরী করেছেন সুদৃশ্য এবং শৌখিন ইমারত, আধুনিক কালের নতুন প্যাটার্নে। আর সেই শৌখিন ইমারতের সম্মুখে বিকৃত করেছেন বসরার গোলাপের মনোমুকর বাগান। এখন নজরুল-কাব্যে ব্যবহৃত আরবী-ফারসী শব্দাবলীর দিকে দৃষ্টি দেয়া যাক,

অ

অক্ত (আ)—সময়, কাল।

জেন্দার পূবে মক্কা মদিনা চৌদিক পর্বত।

তারি মাঝে কাবা আল্লার ঘর দুলে আজ হর ‘অক্ত’।

[ফাতেহা-ই-দোয়াজ দহমা]

অজুহাত (আ)—কারণ, ওজর, আপত্তি

উমর যেদিন বিনা অজুহাতে পাঠাইল ফরমান। [খালেদ]

 

আ

আইন (আ)—বিধি, নিয়ম, কানুন।

‘আইন’ খাতায় পাতায় পাতায় মৃত্যুদণ্ড লেখা,

নিজের মৃত্যু এড়াতে কেবলি নিজেরে করেছি একা। [চিরঞ্জীব জগলুল]

আউয়াল (আ)—প্রথম, আদি

এ কি দ্বাদশীর চাঁদ আজ সেই

সেই রবিউল-আউয়াল?

[নতুন চাঁদ]

আওরত (আ)—মহিলা, রমণী

ঝুটা তেরি তলোয়ার ছিন লিয়া যব দেশ,

‘আওরত’ সম ছি ছি ক্রন্দন রব পেশ। [আনোয়ার]

আওলিয়া (আ)—সাধু, দরবেশ।

লাখো ‘আওলিয়া’ দেউলিয়া হলো যাহার কাবা দেউলে

কত রূপবতী যুবতী যাহার লাগি কালি দিল কুলে।

আওয়াজ (ফা)—শব্দ, ধ্বনি

করে তসলিম হর কুর্নিশে শোর-আওয়াজ

শোন্ কোন মুঝদা সে উচ্চারে হেরা আজ

ধরা মাঝ। [ফাতেহা-ই-দোয়াজ দহম]

আকিকা (আ)—শিশুর নব জন্ম উপলক্ষে পশু জবাই, উৎসব

সাত দিন যবে বয়স শিশুর, আরবের প্রথা মতো।

আসিল ‘আকিকা’ উৎসবে প্রিয় বন্ধু স্বজন যতো। [মরু-ভাস্করঃ দাদা]

আখের (আ)—শেষ

নামাজ পড়, রোজা রাখ/কলমা পড় ভাই,

তোর আখেরের কাজ করে নে/সময় যে আর নাই। [গানের মালা সংযোজন]

আখেরী (আ. ফা.)—শেষ। আরবী ‘আখের’-এর সঙ্গে ফারসী ‘ই’ মানে ‘ইয়ে’ যোগ হয়েছে।

উমর ফারুক! আখেরী নবীর ওগো দক্ষিণ বাহু। [চিরঞ্জীব ও উমর ফারুক]

আঁখি (উ)—চোখ মুছাতে এলে যে উৎপীড়িতে এ নিখিলের ‘আঁখি’-জল,

সে এলো গো মাখি’ শুভ্রতনুতে বিষাদের পরিমল। [মরু-ভাস্করঃ আলো আঁধারি]

আগ/আগুন (উ)—অগ্নি

যে ‘আগুন’ ছড়ায়েছে এ বিশ্বে, তারি দাহ ফিরে এসে,

ভীম দাবানল রূপে জ্বলিতেছে তাহাদেরি দেশে দেশে।

আজব (আ)—আশ্চর্যজনক

খাইবে পোলাও কোর্মা কাবাব!

আয় কে শুনিবি কথা ‘আজব’! [জীবনে যাহারা বাঁচিল না]

আজম (আ)—শ্রেষ্ঠ, মহৎ বড়

বয়ে তোমার লোহিত বন্যা।

ইরাক আজমে’ করেছ ধন্যা।

আজল (আ)—মৃত্যু

কোথা সে আজল? কোথা সে পূর্ণ মুক্ত মুসলমান।

আল্লাহ ছাড়া করে না কারেও ভয়, কোথা সেই প্রাণ । [আজাদ]

আজাদ (ফা) <আজাদী-স্বাধীন, মুক্ত

পশু কোরবানী দিস, তখন

‘আজাদ’ মুক্ত হবি যখন

জুলুমমুক্ত হবে রে দ্বীন।।

আজান (আ)—ডাক, আহ্বান

শুনি তখন আজানের কি বস্তু-গম্ভীর স্বর

আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর। [আজান]

আতর (আ)—সুঘ্রান, সুগন্ধি

‘আতর’ সুবাসে কাতর হলো গো পাথর দিল।

আদব (আ)—শিষ্টতা, দ্রতা

‘শিখে নিক’ কভু সভ্যতা কোনো

‘আদব’ কায়দা কোনো দেশের। [জীবনে যাহারা বাঁচিল না]

আদম (আ)—মানব, মানুষ, নর

বাবা আদমের আদিম পথ। [জীবনে যাহারা বাঁচিল না]

আফতাব (ফা)—সূর্য, সুরজ

মককার হাতে চাঁদ এলো যবে তকদিরে আফতাব

কুল মখলুক দেখিতে লাগিল শুধু ইসলামী খাব। [খালেদ]

আফসোস (ফা)—দুঃখ, কষ্ট

ওরে সব যায়

তবু কবজায় তোর শমশের নাহি

কাঁপে ‘আফসোসে’ হায়।

আব (ফা)—পানি, জল

আজো উথলায় ‘আব’ জমজম কাবা শরীফের কাছে

সেই সে নামাজ রোজা আছে আজও আজও সে কলেমা আছে। [আজাদ]

আবাদ (আ)—চাষ, কর্ষণ, ফলান

তওফীক দাও খোদা ইসলামে

মুসলিম জাহা পুনঃ হোক ‘আবাদ’। [জুলফিকার]

আবে কাওসার (আ. ফা)—বেহেশতের কাওসার নামক প্রস্রবণের পানি। ফারসী ‘আব’ আরবী কাওসারের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।

প্রস্তত হও আসিছেন তিনি অভয় শক্তি লয়ে

আল্লাহ থেকে আবে কাওসার নবীন বার্তা বয়ে।

আবে হায়াত (আ.ফা)—জীবন রস, জীবন পানি। এই শব্দেও আরবী ও ফারসীর সংমিশ্রণ ঘটেছে। ‘আব’ ফারসী এবং ‘হায়াত’ আরবী।

তুমি এলে, সাথে এলে না দস্ত/করিল শত্রু বাজু শহীদ

তব হাত হতে ‘আবে হায়াত’ লুটে নিল মুরূপ-এজিদ। [রীফ সর্দার]

আঞ্জাম (ফা)—আয়োজন

চলে আঞ্জাম

দোলে তাঞ্জাম। [ফাতেহা-ই-দোয়াজ দহম]

আতশ<আতশী (ফা)—অগ্নি, আগ্নেয়

জিবরাইলের ‘আতশী’ পাখা সে ভেঙে যেন খান খান,

দুনিয়ার দেনা মিটে যায় আজ তবু জান আনচান। [ফাতেহা-ই-দোয়াজ দহম]

আনার দানা (ফা)—ডালিম জাতীয় ফলের দানা

এলো কি চোর কাঁটা? না আনার দানা’ পাথরকুচি। [আগুনের ফুলকি ছুটে]

আমদানী (ফা)—আয়, লাভ

মেঘ চাইতেই পায় পানি

এ কোন মায়ার ‘আমদানী’ [মরু ভাস্কর্য]

আমল নামা (আ, ফা)—কর্ম তালিকা। ‘নামা’ ফারসী শব্দ। আরবী-ফারসী যুক্ত শব্দ।

মিলিবে ‘আমল নামা’ ডান হাতে যার

সহজে দিবে সে তার হিসাব-নিকাশ। [কাব্য আমপারা : সুরা ইনকিলাব]

আমামা (আ)—পাগড়ী, শিরস্ত্রাণ

মেঘের ছিন্ন কথায় শুয়ে যে আজিকে ঈদের চাঁদ

স্বপ্ন হেরিছে লক্ষ টাকার আমামা-পাগড়ী বাঁধ। [ঈদের চাঁদ]

আমির (আ)—নেতা, রাজা

পামীর ছাড়িয়া আমির আজিকে।

পথের ধূলায় খোঁজে মণি। [সুবেহু উম্মীদ]

আমিরুল মুমেনিন (আ)—বিশ্বাসী নেতা

হায়রে আধেক ধরার মালিক ‘আমিরুল মুমেনিন’

শুনে সে খবর একাকী উষ্ট্রে চলেছে বিরামহীন। [উমর ফারুক]

আমীন (আ)—বিশ্বাসী

ক্রমে ক্রমে সব কোরেশ জানিলঃ মোহাম্মদ ‘আমীন’,

করে নাকো পূজা কাবার ভূতেরে ভাবিয়া তাদেরে হীন। [সাম্যবাদী]

আম্বিয়া (আ)—নবীগণ, পয়গম্বরগণ

মুনি ঋষি আউলিয়া আম্বিয়া দরবেশ মহাজ্ঞানী

প্রচারিল যার আসার খবর। [নও কাবা]

আয়াত (আ)—নিদর্শন, চিহ্ন

তোমায় পাওয়ার পথ খুঁজি গো

কোরানের ‘আয়াতে’। [গীতি শতদল]

আয়েব (আ)—দোষ

শিক্ষা দিয়ে দীক্ষা দিয়ে

ঢাকেন মোদের সকল ‘আয়েব’। [মৌলবী সাহেব]

আরজি (আ)—নিবেদন

ফুল মালা দিয়া না করিব বরণ

করিতে মামুলি ‘আরজ’ পেশ। [আমানুল্লাহ]

আরব (আ)—দেশের নাম

সহসা বাজিল রণদুন্দুভি ‘আরব’ দেশে।

ফেজার যুদ্ধ আসিল ভীষণ করাল বেশে।

আরাবীর (আ)—আরব দেশীয়

উষ্ণীষ কোরানের হাতে তেগ ‘আরাবীর’,

দুনিয়াতে নত নয় মুসলিম কারো শির।

আরশ (আ)—আল্লাহর সিংহাসন

জমিন-আসমান জোড়া শির পাও তুলি তাজি বোররাক

চিথ মেরে কাঁদে আরশের পানে চেয়ে মারে জোর হাঁক।

[ফাতেহা-ই-দোয়াজ দহম]

আরাম (ফা)—বিশ্রাম

জুতো গুতো লাথি ঝাঁটা খেয়ে খেয়ে

‘আরাম’সে যার কাটিল দিন। [জীবনে যাহারা বাচিল না]

আল্ আমীন (আ)—বিশ্বাসী, রাসুলে করীমের খেতাব

এই জানিয়াছি এই দেখিয়াছি, এই শুনিতেছি রাত্রিদিন,

আসিছেন তিনি, তৌহিদের মহাজ্যোতি লয়ে ‘আল-আমীন’। [মহা সমর]

আল-আহাদ (আ)—এক, অদ্বিতীয়

তেমনি পরম আদি কবি তিনি-নিরাসক্ত ও ‘আহাদ’,

মনসুখ করি দেন অসুরের, আনেন জগতে সাম্যবাদ। [মহাসমর]

আলবৎ (আ. আলবাত্তা থেকে)—নিশ্চয়ই, অবশ্যি

শহীদ হয়েছে। ওফাত হয়েছে? ঝুটবাত ‘আলবাৎ’,

খালেদের জান কবজ করিবে ঐ মালেকুল মৌৎ [খালেদ]

আল্লাহ (আ)—সৃষ্টিকর্তা, স্রষ্টা

আল্লাহ রক্ষা করুন মোদেরে, ও পথে যেন না যাই কভু,

নিত্য পরম সুন্দর এক আল্লাহ আমাদের প্রভু।

আল্লাহু আকবর (আ)—আল্লাহ সবচেয়ে বড়, মহান

উমর আনিল ঈমান? গরজি গরজি উঠিল স্বর,

গগন পবন মন্থন করি ‘আল্লাহু আকবর’ [উমর ফারুক]

আশিক (আ)—প্রেমিক

মাশুকের বাহু ছাড়ায়ে আশিক

কসম করিছে হবে শহীদ। [সুবেহ্ উম্মিদ]

আহমদ (আ)—প্রশংসিত

নাম শুনে কহে আমিনা, স্বপ্নে হেরিয়াছি কালরাতে

আহমদ’ নাম রাখিও যেন ওর। [মরু ভাস্করঃ দাদা]

আহাদ (আ)—এক, অদ্বিতীয়

জাতিতে জাতিতে মানুষে মানুষে অন্ধকারের এ ভেদে জ্ঞান,

অভেদ, ‘আহাদ’ মন্ত্রে টুটিবে, সকলে হইবে এক সমান। [মহাসমর]

আঁসু (উ)—চোখের জল, অশ্রু

সেনাদের চোখে ‘আঁসু’ ধরে না কো হেসে কেঁদে তারা বলে,

খালেদ আছিল মাথায় মোদের, এবার আসিল কোলে। [খালেদ]

আহাজারি (ফা)—আর্তনাদ

খালেদ, খালেদ, শুনিতেছ নাকি সাহারার ‘আহাজারি’।

কত ওয়েসিস রচিল তাহার মরু নয়নের বারি। [খালেদ]

ই

ইজ্জত (আ)—সম্মান, মান

রাখিতে ‘ইজ্জত’ ইসলামের শির চাই তোর, তোর ছেলের

দেবে কি? কে আছ মুসলমান? [শহিদী ঈদ]

ইনসান (আ)—মানব, মানুষ

ধরার জিন্দানে বন্দী ইনসান

আজাদী দিতে এলে, হে প্রিয় আল-আরাবী। [সঙ্গীতাঞ্জলী]

ইনসাফ (আ)—ন্যায় বিচার।

নাই তুমি নাই, তাই সয়ে যাই জামানার অভিশাপ,

তোমার তখতে বসিয়া করিছে শয়তান ‘ইনসাফ’। [উমর ফারুক]

ইফতার (আ)—রোজা শেষে আহার-পানীয়

এই উপবাসী আত্মা, এই যে উপবাসী জনগণ

চিরকাল রোজা রাখিবে না-আসে শুভ ‘ইফতার’ ক্ষণ।

ইবলিস (আ)—শয়তান

রোয়ে ওজ্জা হুবল ‘ইবলিস’ খারেজীন

কাঁপে জীন্।

ইমান (আ)—বিশ্বাস

ইমান! ইমান! বল রাত দিন ইমান কি এত সোজা?

ইমানদার হইয়া কি কেহ বহে শয়তানী বোঝা?

ইমাম (আ)—ধর্মীয় নেতা

কোথা সে আরিফ কোথা সে ‘ইমাম’ কোথা সে শক্তিধর?

মুক্ত যাহার বাণী শুনে কাঁদে ত্রিভুবন থর থর।

ইয়া (আ)—হে, ওহে

‘ইয়া’ এলাহী বলল সে কবে

আমার স্বপন সফল হবে। [গীতি শতদল]

ইরান (ফা)—দেশ, এশিয়া মহাদেশের অংশ।

বিরান মুলুক ইরান ও সহসা

জাগিয়াছে দেখি ত্যাজিয়া নিদ।

ইলাহী (আ)—প্রভু, স্রষ্টা

আমি, ঐ নামে মুসাফির রাহি তাই, চাহিনা তখত শাহানশাহী

নিত্য ও নাম য়্যা এলাহিযেন হৃদে জাগে। [বন গীতি]

ইশক (আ)—প্রেম

ওরা খোদার রহম মাগে

আমি খোদার ‘ইশক’ চাই। [জুলফিকার]

ইশারা (আ)—ইঙ্গিত

হাসিয়া বলিলে, ‘তোর তরে নর আমি যদি হেথা আজ

নামাজ আদায় করি তবে কাল অন্ধ লোক-সমাজ

ভাবিবে, খলিফা করেছে ‘ইশারা’ হেথায় নামাজ পড়ি

আজ হতে যেন এই গির্জারে মোরা মসজিদ করি। [উমর ফারুক]

ইসলাম (আ)—ধর্ম, শান্তির ধর্ম

মানুষেরে দিতে তাহার ন্যায্য প্রাপ্য ও অধিকার

ইসলাম এসেছিল দুনিয়ায় যারা কোরবান তার।

ঈ

ঈদ (আ)—খুশী, উৎসব, আনন্দ

সেই সে পরম শক্তিরে লয়ে আসিবার ছিল সাধ,

যে শক্তি লভি এল দুনিয়ায় প্রথম ঈদের চাঁদ। [ঈদের চাঁদ]

ঈদগাহ (আ, ফা)—ঈদের মাঠ।

আজিও তেমনি জমায়েত হয় ‘ঈদগাহে’ মসজিদে

ইমাম পড়েন খোৎবা, শ্রোতার আঁখি ঢুলে আসে নিদে। [আজাদ]

ঈদুল আজহা (আ)—বড় ঈদ, কোরবানীর ঈদ

ঈদুজ্জোহার চাঁদ হাসে ওই এলো আবার দোসরা ঈদ। [গুলবাগিচা]

ঈদুল ফিতর (আ)—ফিতরা আদায়ের ঈদ, রোজার ঈদ

‘ঈদুল ফিতর’ আনিয়াছে তাই নব বিধান। [ঈদের চাঁদ]

উ

উম্মেদ, উম্মিদ (ফা)—আশা, আকাঙ্খা

এক আল্লার সৃষ্টিতে আর রহিবে না কোন ভেদ,

তার দান কৃপা কল্যাণের কেহ হবে না না-উম্মেদ। [সুবেহ উম্মেদ]

উম্মত (আ)—সম্প্রদায়, অনুসারী

আল্লা! এরাও মুসলিম, এরা রসুলের উম্মত,

কেন পায় নিক প্রেম আর ক্ষমা শান্তি ও রহমত।

উম্মী (আ)—নিরক্ষর

সেই সে পূর্ণ মুসলমান, সে পূর্ণ শক্তিধর,

‘উম্মী’ হয়েও জয় করিতে পারে সে বিশ্বচরাচর। [আজাদ]

এ

একদম (ফা)—একেবারে, এক নিঃশ্বাসে

সাব্বাস ভাই, সাব্বাস দিই, সাব্বাস তোর শমশেরে

পাঠিয়ে দিলি দুশমনে সব যম-ঘর একদম’ সেরে।

এছমে আজম (আ)—শ্রেষ্ঠ নাম (একমাত্র আল্লার)

‘এছমে আজম’ এনে মৃত

মুসলিমে তুই কর সজীব [জুলফিকার]

এতীম (আ)—অনাথ।

আশ্রয় দান ধুলি-লুষ্ঠিত।

কাঙালে ‘এতীম’ আত্মীয়েরে। [কাব্য আমপারা : সুরা বালাদ]

এলহান (আ)—স্বর, সুমিষ্ট স্বর

পাহাড়ী তরুর শুকননা শাখায়

গাহে বুলবুল খোশ ‘এলহান’। [সুবেহ উম্মেদ]

এশা (আ)—রাত্রির প্রথম ভাগের নামাজ।

তিমির রাত্রি, ‘এশার’ আজান শুনি দূর মসজিদে,

প্রিয় হারা কার কান্নার মতো এ বুকে আসিয়া বিধে। [উমর ফারুক]

ও

ওজন (আ)—মাপ, পরিমাণ

সর্বনাশ তাহাদের হ্রাসকারী যারা

যখন লোকের কাছে মেপে নেয় তারা

তখন পূর্ণ করে চায় মেপে নিতে

তাদেরে ওজন করে হয় যবে দিতে,

তখন কম সে করে মাপে ও ওজনে’। [কাব্য আমপারা ও সুরা তাৎফিক]

ওজু (আ)—ধৌত, প্রক্ষালন

আব জমজম উথলি উঠিছে তোমার ওজুর তরে

সারা ইসলাম বিনা ইমামেতে আজিকে নামাজ পড়ে। [এখালেদ]

ওকাজ (আ)—মেলা, অধিবেশন

এ মহারণের জন্য প্রথম ‘ওকাজ’ মেলায়

মাতিত যেখানে সকল আরব পাপের খেলায়।

ওফাত (আ)—মৃত্যু, মরণ

শহীদ হয়েছ? ‘ওফাত’ হয়েছ। ঝুটবাত আলবৎ,

খালেদের জান কবজ করিবে ঐ মালেকুল মৌৎ [খালেদ]

ওয়াজ (আ)—বক্তৃতা, ভাষণ

‘ওয়াজ’ নসিহত করে তিনি

ঠিক রেখেছেন মোদের গ্রামে। [মৌলভী সাহেব]

ওয়ালেদ (আ)—জন্মদাতা, বাবা

ওয়ালেদেরই মত বুজর্গ

মক্তবের ঐ মৌলবী সাহেব। [মৌলভী সাহেব]

ওহী (আ)—ঐশীবাণী, (আ, ওয়াহি থেকে)

পাও নিকো ওহী হও নিকো নবী তাই তো পরাণ ধরি

বন্ধু ডাকিয়া আপনার বলি বক্ষে জড়ায়ে ধরি। [উমর ফারুক]

ওমরাহ (আ)—নেতা, প্রধান, রাজা

ফকীর বাদশা আমির ‘ওমরাহে’

কাঁদে তেমনি আজো, তারি মর্সিয়া গাহে। [গুল বাগিচা]

দেওবন্দ আন্দোলন
দেওবন্দ আন্দোলন, বিজ্ঞাপনের জন্য

ক

কওসর (আ)—বেহেশতের স্রোতধারা।

আল্লাহ আকবর! আল্লাহু আকবর!

আল্লার কাছ থেকে এলো, আজ রহমত ‘কওসর’।

কওম, কৌম (আ)—জাতি, গোষ্ঠী

সব আছে তবু শবের মতন অগাড়ে পড়িয়া কেন?

ভেবেছ কি কেউ কৌমের পীর নেতা কেন হয় হেন।

কতল (আ)—হত্যা, বধ।

দানব দৈত্য কতল করিতে আসে তলোয়ার লয়ে

ফেরদৌস হতে এসেছে যাহারা ধরায় মানুষ হয়ে।

কতলগাহ (আ. ফা)—বধ্যভূমি, হত্যার মাঠ

রাজ্য ও দেশ গেছে ছারে খারে। দুর্বল নরনারী।

কোটি কোটি প্রাণ দিয়াছে নিত্য ‘কতলগাহে’তে তারি। [খালেদ]

কদম (আ)—পা।

ইমামতি তুমি করিবে না জানি, তুমি গাজী মহাবীর

দিন দুনিয়ার শহীদ নোয়ায় তোমার ‘কদমে’ শির। [খালেদ]

কঞ্জু, (ফা)—কৃপণ

আনোয়ার মুশকিল।

জাগা ‘কঞ্জু’ দিল। [আনোয়ার]

কবর (আ)—সমাধি

ইসলামে তুমি দিয়ে ‘কবর’

মুসলিম বলে করে ফখর।

কবরস্তান (আ. ফা)—সমাধিস্থান।

আল্লার সাথে নিত্য যুক্ত পরম শক্তিধর,

এই মুসলিম ‘কবরস্তানে’ পেয়েছে তার খবর।

কবুল (আ)—গ্রহণ, স্বীকার

তুমিই শক্তি, ভক্তি ও প্রেম, জ্ঞান আনন্দ দাও,

কবুল কর এ প্রার্থনা, প্রভু কৃপা কর, ফিরে চাও।

কমি (ফা, উ.) + উ, ই’ —স্বল্পতা, অল্প

দেখ সতী তব কোলে কোন্ চাঁদ।

সব ভরপুর ‘কমি’ নাই। [নতুন চাঁদ]

কমজাত (ফা)—পাজী, বদমাশ, নিম্নমানের

ধুকে মলো, আহা, তবু পানি এক কাত্রা

দেয় নিরে বাছাদের মুখে কমজাতরা। [মোহররম]

কমজোর (ফা)—অল্পশক্তি

শমশের হাতে ‘কমজোর’ নয় শিরীন জবান, জান তুমি,

হাসি দিয়ে তাই করিতেছে জয় অসির অজেয় রণভূমি।

কমবক্ত (ফা)—অভাগা, দুর্ভাগা।

তখতে তখতে দুনিয়ায় আজি কমবক্তের মেলা

শক্তিমাতাল দৈত্যরা সেথা করে মাতলামী খেলা।

করজ (আ)—ঋণ, ধার

ফরজ তরক করে করলি

‘করজ’ ভবের দেনা

আল্লাহ ও রসুলের সাথে

হলো না তোর চেনা। [গীতি শতদল]

কলেমা (আ)—মুসলিম বিশ্বাসের অকাট্য বাণী

মুখে যেন জপি আমি

কলেমা তোমার দিবস-যামী। [বন-গীতি]

কসম (আ)—শপথ।

খদিজারে কন-আল্লাহতালার ‘কসম’ কাবার ঐ

লাৎ ওজ্জার করিব না পূজা জানি না আল্লা বই। [সাম্যবাদী]

কহর (আ)—দুর্যোগ, বিপদ

হাসানের মতো পিব পিয়ালা সে জহরের,

হোসেনের মতো নিব বুকে ছুরি ‘কহরে’র। [মোহরম]

কাগজ (ফা)—লেখার কাগজ।

কাগজে লিখিয়া সভায় কাঁদিয়া গু শ্মশ্রু ছিড়ে,

আছে কেউ নেতা, লবে ইহাদের অমৃত সাগর তীরে? [আজাদ]

কাফন (আ)—শবাচ্ছাদন

আসমান জোড়া কাল কাফনের আবরণ যেন টুটে,

এক ফালি চাঁদ ফুটে আছে, মৃত শিশু অধর পুটে।

কাফের (আ)—অবিশ্বাসী।

ওই অসুরের দল দেখ যত, ছন্দপতন সংসারের,

সুন্দর এই সৃষ্টিতে তার এরাই দৈত্য, এরা ‘কাফের’। [মহাসমর]

কাফেলা (আ)—মিছিল, দল।

কাঁদিছে ‘কাফেলা’ কারবালায়।

কে গাহিছে গান বন্দনার। [রীফ সর্দার]

কাবা (আ)—পবিত্র ঘর।

মিথ্যা শুনিনি ভাই

এই হৃদয়ের চেয়ে বড়ো কোনো মন্দির ‘কাবা’ নাই। [সাম্যবাদ]

কাবাব (ফা)—ভাজা মাংস

কলিজা ‘কাবাব’-সম ভুনে মরু-রোদ্দুর,

খাঁ খাঁ করে কারবালা, নাই পানি খর্জুর।

কাঙাল (ফা)—দুঃখী, দুর্ভাগা

তোমাদের এই জ্ঞানের প্রদীপ মালা,

করে নাকো কেন কাঙালের ঘর আলো?

কামান (ফা)—গোলা বন্দুক

কামানের চাকা যথা অচল

রৌপ্যের চাকী ঢালে সেথায়,

এরাই যুগোপী বীরের জাত

শুনে লজ্জাও লজ্জা পায়। [রীফ সর্দার]

কামাল (আ)—কর্ম, পূর্ণতা।

কামাল তু নে কামাল কিয়া ভাই। [কামাল পাশা]

কিতাব (আ)—বই

তাই উহাদের ‘কিতাবে’ কয়

হজরত রসুলের নায়েব। [মৌলবী সাহেব]

কিয়ামত (আ)—প্রলয়ের দিন, ধ্বংস-দিবস

যে ইসরাফিল প্রলয় শিঙ্গা বাজাবেন ‘কিয়ামতে’

তারি লালাটের চাদ আসিয়াছে আলো দেখাইতে পথে।

কিম্মত (আ)—মূল্য, দাম।

চক্ষে সুর্মা বক্ষে খোর্মা বেদুঈন কিশোরীরা

বিনি ‘কিম্মতে’ বিলালে সেদিন অধর চিনির সিরা। [মরু ভাস্কর্য]

কিশতী (ফা)—নৌকা, জাহাজ

ছিল নবীর নূর পেশানিতে,

তাই ডুবলো না ‘কিশতী’ নূহের। [জুলফিকার]

কুরবান (আ)—উৎসর্গ

আসগর সম বাচ্চারে দেব ‘কুরবান’,

জালিমের দাদ নেব, দেব আজ গোর জান।

কুরবানী (আ)—উৎসর্গ করা। আরবী কুরবান’-এর সঙ্গে ফারসী ‘ই’ যোগ করা হয়েছে।

আন মহিমা হজরতের

শক্তি আন শেরে খোদার।

কুরবানী’ আন কারবালার

আন রহমত মা ফাতেমার। [জুলফিকার]

কুল (আ.ফা)—সম্পূর্ণ, পূর্ণ।

আজাদ মানুষ বন্দী করে অধীন করে স্বাধীন দেশ,

কুল’ মুলুকের কৃষ্টি করে জোর দেখালে ক’দিন বেশ। [কামাল পাশা]

কুরণিশ, কুর্ণিশ (ফা)—অভিবাদন, সালাম।

করে তসলিম হর কুর্ণিশে’ শোর আওয়াজ…[ফাতেহা-ই-দোয়াজ দহম]

কুরসি (আ)—সিংহাসন।

খোদার হাবিব হলেন নাজেল খোদার ঘর ঐ কাবার পাশে,

ঝুঁকে পড়ে আরশ কুরসি’ চাঁদ সুরুজ তায় দেখাতে আসে। [গুলবাগিচা]

কোরান (আ)—মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ, আল্লাহর বাণী

আছে সে কোরান মজিদ আজিও পরম শক্তিভরা,

ওরে দুর্ভাগা, এক কণা তার পেয়েছিস কেউ তোরা? [আজাদ]

কোহিনুর (ফা, আ)—উজ্জল মণি (ফা, ‘কোহ’ মানে পাহাড় এবং আ. ‘নূর’ মানে আলো- দুটো মিলে ‘উজ্জ্বলমনি’ বোঝানো হয়েছে)।

রতন মাণিক হয় না ত মাটি, হীরা সে হীরাই থাকে,

মোদের মাথার ‘কোহিনুর’-মণি কি করিব বল তাকে? [চিরঞ্জীব জগলুল]

খ

খঞ্জর (ফা)—ছুরি, চাকু

অঞ্জলি হতে পানি পড়ে গেল ঝরঝর

লুটে ভূমে মহাবাহু ‘খঞ্জর’ জর্জর।

খরিদ (আ)—ক্রয়, কেনা

হায় গণনেতা ভোটের ভিখারী নিজের স্বার্থ তরে

জাতির যাহারা ভাবী আশা, তারে নিতেছে ‘খরিদ’ করে। [আজাদ]

খাক (ফা)—মাটি

‘খাক’ বলিল, না, জানি না ত আমি আব বুঝি তা জানে।

জলেরে পুছিনু, তুমি কি দেখেছ মোর বধু কোনখানে? [আর কত দিন]

খাল (আ)—চামড়া

খালেদ! খালেদ! সর্দার আর শির পায় যদি মৃঢ়

খাসা জুতা তারা করবে তৈরী খাল দিয়ে শক্রর। [খালেদ]

খাজা খিজির (ফা)—পানির পয়গম্বর। (খাজা সম্রাট অর্থে এবং খিজির মহান ব্যক্তি অর্থে অর্থাৎ যিনি মুসলিম মতে পানিতে অমর হয়ে অধিষ্ঠিত আছেন খাজা খিজির আঃ)

উর্ধে জাগিয়া রহিলেন ঈসা অমর মর্ত্যে ‘খাজা খিজির’,

দুই ধ্রুবতারা দুই সে তীর। [মরু ভাস্করঃ অনাগত]

খাদেম (আ)—সেবক

এরাই মানব জাতির ‘খাদেম’ ইহারাই খাকসার

এরাই লোভীর সাম্রাজ্যেরে করে দেয় মিসমার।

খান্নাস (আ)—শয়তান, কুমন্ত্রণাদাতা

কুমন্ত্রণাদানকারী ‘খান্নাস’ শয়তান

মানব-দানব হতে চাহি পরিত্রাণ। [কাব্য আমপারা : সুরা নাস]

খাপ (ফা)—ঢাকনা

শামবাসী ওরা, সহিতে শেখেনি পরাধীনতার চাপ

তলোয়ার নাই, বহিছে কটিতে কেবল শূন্য খাপ।

খাব (ফা)—স্বপ্ন।

‘খাবে’ দেখেছিলেন ইবরাহিম

দাও কুরবানী মহামহিম। [কোরবানী]

খামোশ (ফা)—চুপ, সাবধান, নীরব

ব্যাস! চুপ ‘খামোশ’ রোদন।

খাঞ্চা (ফা)—ট্রে

চোখের পানির ঝালর ঝুলানো হাসির ‘খাঞ্চা’ পোশ,

যেন অশ্রুর গড়খাই ঘেরা দিল খোশ ফেরদৌস।

খাস (ফা)—আসল

জগতের ‘খাস’ দরবারে চাই।

শ্রেষ্ঠ আসন শ্রেষ্ঠ মান।

খিমা (আ)—তাঁবু

জয়নাল সম মোরা সবাই।

ওই বিমারী ‘খিমা’র মাঝ

আফশোস করি কাঁদি শুধু

দুশমন করে লুটতরাজ। [রীফ সর্দার]

খিঞ্জির (আ)—শূকর

আনোয়ার! জিঞ্জির।

পরা মোরা খিঞ্জির, খিঞ্জির? [আনোয়ার]

খুবজ (আ)—রুটি।

ঝুলিতে দুখানা শুকনো ‘খুবজ’-রুটি

একটি মশকে একটুকু পানি, খোর্মা দু’তিন মুঠি! [উমর ফারুক]

খেয়ালী (আ. ফা)—আনমনা। (আরবী ‘খেয়াল’ এর সঙ্গে ফারসী ‘ই’ মানে ইয়ে’ যোগ করা হয়েছে)

আমি খেয়ালী বিধির বক্ষ করিব ভিন্ন। [বিদ্রোহী]

খোশ আমদেদ (ফা)—স্বাগতম, শুভ আগমন

‘খোশ আমদেদ আফগান শের! অরুদ্ধ কণ্ঠে আজ

সালাম জানায় মুসলিম-হিন্দ শরমে নোয়ায়ে শির বেতাজ। [আমানুল্লাহ]

খোশ-খবর (আ. ফা)—শুভ সংবাদ

ঘোষিতে যেন গো ওপারে ওপারে

তাহারি আসার ‘খোশ খবর’। [মরু ভাস্করঃ অনাগত]

খোশ-নসীব (ফা.আ.)—সৌভাগ্য

দশ দিক ছাপি ওঠে আহ্বান, ধন্য ধন্য মুত্তালিব

তব কনিষ্ঠ পুত্র ধন্য, আবদুল্লাহ ‘খোশ-নসীব’। [মরু ভাস্করঃ অনাগত]

খুন (ফা.)—রক্ত

শুধু মোহ চোখের কালোয় মায়ারই জাল বুনে,

কাঁচা বুকের ‘খুন’ পিয়ে নেয় বিষাক্ত কাম ঘুণে।

খ

খোৎবা (আ)—ভাষণ

‘খোৎবা’ পড়বি মসজিদে

তুই খতিব নতুন ভাষায়। [জুলফিকার]

খোশরোজ (ফা)—শুভ দিন।

খুশীর ঐ ‘খোশররাজে’ বোজ খুনসুড়ি কি করে এড়াই? [আগুনের ফুলকি ছোটে]

খোশবু (ফা)—সুঘ্রাণ

সাহারাতে ফুটলো রে রঙিন গুলে লালা

সেই ফুলেরই ‘খোশবু’তে আজ দুনিয়া মাতোয়ালা। [জুলফিকার]

খোদ (ফা)—নিজ

‘খোদ’ খোদা সে নির্বিকার

আজ টুটেছে আসনও তাঁর।

খোদা (ফা)—স্রষ্টা

‘খোদা’র সৃষ্ট মানুষের ভালোবাসিতে পারে না যারা

জানি না কেমন জনগণ নেতা হতে চায় হায় তারা!

খেলাফত (আ)—প্রতিনিধিত্ব

‘খেলাফত’ তুমি চাওনিক কভু, চাহিলে আমরা জানি,

তোমার হাতের বেদেরেগ তেগ অবহেলে দিত আনি। [খালেদ]

গ

গজল (আ)—গীতিকবিতা, গান

হে মদিনার বুলবুলি গো

গাইলে তুমি কোন ‘গজল’? [বন গীতি]

গম্বুজ (ফা)—মসজিদের উপরি ভাগের গোল অংশ, টাওয়ার

‘গম্বুজে’ কে রে গুমরিয়া কাদে মসজিদে মসজিদে।

গরীব (আ)—দুস্থ, নিঃস্ব।

ধন সম্পদ এত ইহাদের, করেছে কি কভু দান?

আশ্রয় দেয় ‘গরীবে’ কি কভু এদের দর দালান? [গোঁড়ামি ধর্ম নয়]

গর্দান (ফা)—ঘাড়।

পণ্য তখতে বসিয়া যে করে তখতের অপমান।

রাজার রাজা যে, তার হুকুমেই যায় তার ‘গর্দান’।

গাজী (ফা)—যোদ্ধা

জালাবে আবার খেদিব … প্রদীপ

‘গাজী’ আবদুল করিম বীর। [সুবেহ উম্মিদ]

গ্লাস<গেলাস (ইং)—পাত্র, পানপাত্র

রজনী গন্ধার গেলাসে’ রজনী দেয় সুরা আনি। [গীতি শতদল]

গিদ্ধর (ফা)—শৃগাল, শকুন

আনোয়ার! আনোয়ার!

দুর্বল এ গিদধরে কেন তড়পানো আর? [আনোয়ার]

গুনাহগার (ফা)—পাপ ধারণকারী, পাপী

আয় ‘গুনাহগার’ ক্ষতির হিশাব চুকিয়ে নে তোর এই বেলা। [মরু ভাস্করঃ কৈশোর]

গুলজার (ফা)—ফুলময়, সৌন্দর্যময়।

বাজে, কাহারবা বাজা, ‘গুলজার’ গুলশান

গুলফাম।

গুলবাগ (ফা)—ফুলের বাগান।

আজও, গুনগুনিয়ে সেই খুশি কি জানাস রে ‘গুলবাগে’! [বনগীতিঃ সংযোজন]

গুলবাগিচা (ফা)—ফুলের বাগান

‘গুলবাগিচা’র বুলবুলি আমি

রঙীন প্রেমের গাই গজল [গুলবাগিচা]

গুলবাহার (ফা)—ফুলের বসন্ত (‘বাহার’ বসন্ত)

উহারা চাহুন অশান্তি, মোরা চাহিব ক্ষমা ও প্রেম তাঁহার,

ভূতেরা চাহুন গোর ও শ্মশান, আমরা চাহিব ‘গুলবাহার’। [এক আল্লাহ জিন্দাবাদ]

গুলাব (ফা)—গোলাপ ফুল।

ওরে ‘গুলাব’! নিরিবিলি/বুঝি নবীর কদম ছুঁয়েছিলি/তাই,

তার কদমের খোশবু আজও তোর আতরে জাগে। [বন গীতি]

গুলশান (ফা)—বাগান

অসম্ভবেরে সম্ভব করা জাগো নব যৌবন,

ভিক্ষা দাও গো; এ ধরা হউক আল্লাহ গুলশান’। [আল্লার রাহে ভিক্ষা দাও]

গুল বদন (ফা, আ)—ফুল-শরীর। (‘বদন’ আরবী, অর্থ শরীর)

নৈশাপুরের ‘গুলবদনী’র চিবুক গালের টোল,

রাঙা লেড়কির ভাঙা হাসি শিরীন শিরীন বোল।

গুলিস্তান (ফা)—বাগান, ফুলময় বাগান।

চাদের চেরাগ ক্ষয় হয়ে এলো ভোরের দরদালানে।

পাতার জাফরি খুলিয়া গোলাপ চাহিছে ‘গুলিস্তানে’।

গেরেফতার (ফা)—বন্দী

দেহ ও মনের রোজা আমার এফতার করে গেরেফতার

করিব, তৃষিত বক্ষে মোর ঐ চাঁদে। [নতুন চাঁদ]

গোর (ফা)—কবর

হবে জুদা তার তন্ শির

আজ যে বলিবে নাই বেঁচে হজরত

যে নেবেরে তারে ‘গোরে’।

গোরস্তান (ফা)—কবর খানা

জিন্নাত হতে দেখিব মোদের ‘গোরস্তানে’র পর

প্রেমে আনন্দে পূর্ণ সেথায় উঠেছে নতুন ঘর।

গোলাম (আ)—চাকর।

তাহাদের ধরে ‘গোলাম’ করিয়া ভরিতে ছে কার ঝুলি

চা বাগানের আড় কাঠি যেন চালান করিছ কুলি।

গোলাম খানা (আ, ফা)—চাকরের ঘর (ফারসী ‘খানা’ যুক্ত হয়েছে)

শহিদী দর্জা চাহিনি আমরা, চাহিনি বীরের অসি,

চেয়েছি গোলামী, জাবর কেটেছি ‘গোলাম’ খানায় বসি।

গোস্বা (উ)—ক্রোধ

মুণ্ডুটা তার খসাই

‘গোস্বা’তে আর পাই না ভেবে কি যে করি দশাই। [কামাল পাশা]

চ

চরকা (ফা)—সুতো তৈরীর চাকা

শনের চরকা যোর দেড়শত কোটি মানুষের ঘাড়ে

চড়ে দেড়শত চোর। [রোজা প্রজা]

চাপকান (ফা)—ঢিলা কোর্তা

দরিদ্রে ভালোবেসে যার ভুঁড়ি ফেঁপে হল ধামা-কুড়ি,

শীতের দিনেও চর্বি গলিয়া পড়ে ‘চাপকান’ কুঁড়ি।

চাপরাশি (ফা)—পিয়ন

গোলামীর চেয়ে শহিদী-দর্জা অনেক উর্ধে জেনো,

‘চাপরাশির ঐ তকমার চেয়ে তলোয়ার বড় মেননা।

চেরাগ (ফা)—বাতি

দিনে আর রাতে ‘চেরাগ’ যাহার চন্দ্র সূর্য তারা,

আহার যাহার আল্লার নাম প্রেমের অশ্রু ধারা।

চেহারা (ফা)—অবয়ব

মর্দের মতো চেহারা ওদের স্বাধীনের মতো বুলি,

অলস, দু’বাজু দু’চোখে সিয়াহ অবিশ্বাসের ঠুলি। [খালেদ]

চোগা (তুর্কি)—পশমী, জামা।

অন্তরে ভোগী বাইরে যে রোগী, মুসলমান সে নয়,

‘চোগা’ চাপকানে ঢাকা পড়িবে না সত্য যে পরিচয়।

জ

জওহর (আ, ফা —‘গওহর’) মুক্তো, মণি

পানি কওসর।

মনি জওহর’। [ফাতেহা-ই-দোয়াজ দহম]

জওয়ান (আ)—যুবক, শক্তিধর।

এমন সময় আসিল ‘জওয়ান’ হাথথলিতে হাতিয়ার

খর্জুর শীষে ঠেকিয়াছে গিয়া উচা উষ্ণীষ তার! [খালেদ]

জওয়াব (আ)—উত্তর

যদিরে তুই গরুর সখি পার হয়ে যাস পুলসেরাত

কি দিবি মোহাম্মদে ‘জওয়াব’? [শহিদী ঈদ]

জখম (ফা)—আঘাত।

নিজের হাজার ঘায়েল ‘জখম’ ভুলে তখন ডুকরে কেন কেঁদেও ফেলে শেষে

কে যেন ভাই কলজে খানা পেষে। [কামাল পাশা]

জঙ্গ (ফা)—যুদ্ধ

জং ধরে নি কো কখনো তাহাতে ‘জঙ্গের’ পুনে নেয়ে,

হাথেলিতে তব নাচিয়া ফিরেছে যেন বেদুঈন মেয়ে। [খালেদ]

জমজম (আ)—মক্কার বিখ্যাত কুপ।

টলে কাথের কলসে কাওসর ভর,

হাতে আব ‘জমজম’ জাম।

জমিন (ফা)—মাটি

জমায় না যে বিত্ত নিত্য মুসাফির গৃহহীন।

আসমান যার ছত্র ধরেছে পাদুকা যার ‘জমিন’।

জমিদার (ফা)—ভূস্বামী ভূমির মালিক

রবে না বাদশাহ রাজা জমিদার মহাজন।

কারো বাড়ী উৎসব কারো বাড়ী অনশন। [জয় হোক জয় হোক]

জলসা (আ)—সভা, সম্মেলন।

ফুলের দরবারে পাখীর ‘জলসা’তে বুকের অঞ্চল সিংহাসন মম

বসো আমার চাঁদ-চাদিনী রাতে। [গীতি শতদল]

জবেহ (আ)—হত্যা, বধ

নামাজ পড়িয়া, রোজা রেখে আর কলমা পড়িয়া সবে,

কেন হতেছিস দলে দলে তোরা কতল গাহেতে ‘জবে’? [আজাদ]

জল্লাদ (ফা)—খুনী।

এদের ভুলের মিথ্যা মোহের করি শুধু প্রতিবাদ,

ইহাদের প্রেমে কাঁদি আমি, কেন হলো এরা জল্লাদ?

জহর (ফা)—বিষ

‘জহর’ নিয়ে জহরত দেয়া নও বণিকের নও খেলা। [মরু ভাস্কর/কৈশোর]

জমায়েত (আ)—সমাগম

শুধু প্রজাদের জমায়েত হবে আজিকার ঈদগাহে,

কাহার সাধ্য কোন ভোগী রাক্ষস সেথা যেতে চাহে।

জাকাত (আ)—পবিত্রতা, (ইসলামী মতে গরীব দুঃখীদের দান করা।)

বুক খালি করে আপনারে আজ দাও ‘জাকাত’।

জানাজা (আ)—মৃত ব্যক্তির জন্য নামাজ

মৃত্তিকা মাতা কেঁদে মাটি হলো বুকে চেপে মরা লাশ,

বেটার ‘জানাজা’ কাঁধে যেন-তাই বহে ঘন নাভিশ্বাস।

জান্নাত (আ)—স্বগ, বেহেশত।

ইহারাই জিন, এরাই অসুর এরাই শক্র ‘জান্নাতে’র

যুগে যুগে আসি’ পয়গম্বর সংহার করে এই কাফের। [মহা সমর]

জামাত (আ)—দল।

শয়তান আজ ভেতে বিলায় শারাব জাম

দুশমন দোস্ত এক ‘জামাত।’

জামানা (আ)—সময় কাল।

ফরমানীর জামানায়

আনিল ফরমান খোদার জুলফিকার

জালিম (আ)—অত্যাচারী

আগুন যে বুকে আছে তাতে আরও দুঃখ ঘৃতাহুতি দাও,

বিপুল শক্তি লয়ে ওরা হোক জালিম পানে উধাও। [আজাদ]

জাহাজ (আ)—পোত।

কোরানের ওই জাহাজ বোঝাই হীরা মুক্তা পান্নাতে। [জুলফিকার]

জাহান্নাম (আ)—নরক

আজ ‘জাহান্নামের’ বহ্নি সিন্ধু নিবে গেছে ‘ক্ষরি’ জল,

যত ফিরদৌসের নার্গিস লালা ফেলে আঁসু পরিমল।

জাহান (ফা)—পৃথিবী

আজি ইসলামের ডঙ্কা গরজে ভরি জাহান

নাহি বড় হোট-সকল মানুষ এক সমান।

জানোয়ার (ফা)—পশু

আনোয়ার ভাই! ‘জানোয়ার’ সব সাফ। [কামাল পাশা]

জিঞ্জির (ফা)—শিকল

আজাদ আত্মা! আজাদ আত্মা! সাড়া দাও, দাও সাড়া,

এই গোলামীর জিঞ্জির’ ধরে ভীম বেগে দাও নাড়া। [আজাদ]

জিন (আ)—আগুনের তৈরী মনুষ্য সদৃশ্য জীব।

ওরা নির্জীব, জিব নাড়ে শুধু তবু স্বার্থ ও লোভ বশে,

ওরা ‘জিন’ প্রেত, যক্ষ উহারা লালসার পাঁকে মুখ ঘষে। [এক আল্লাহ জিন্দাবাদ]

জিন্দাবাদ (ফা)—দীর্ঘজীবি হোক।

উহারা প্রচার করুক হিংসা বিদ্বেষ আর নিন্দাবাদ,।

আমরা বলিব, সাম্যশান্তি, এক আত্মাহ ‘জিন্দাবাদ’। [এক আল্লাহ জিন্দাবাদ]

জিন্দান (ফা)—জেলখানা।

নির্যাতিতের জাতি নাই, জানি মোরা মজলুম ভাই,

জুলুমের ‘জিন্দানে’ জনগণে আজাদ করিতে চাই।

জিন্দেগী (ফা)—জীবন

‘জিন্দেগী’ ভর তারি মালা পরবো আমার গলে। [ইসলামী গান]

জিয়ারত (আ)—পরিদর্শন

কাবার জিয়ারতে তুমি কে যাও মদিনায়?

আমার সালাম পৌছে দিও নবীজীর রওজায়। [গীতি শতদল]

জুদা (ফা)—পৃথক

হকে ঘন ঘন বীর

হবে ‘জুদা’ তার তন শির

আজ যে বলিবে নাই বেঁচে হজরত।

জুলফিকার (আ)—তরবারি

আজ ভোঁতা সে দু’ধারী ধার

ঐ আলির ‘জুলফিকার’।

জুলুম (আ)—অত্যাচার।

আমার পিছনে পীড়িত আত্মা অগণন জনগণ

অসহ ‘জুলম’ যন্ত্রণা পেয়ে করিতেছে ক্রন্দন। [আল্লার রাহে ভিক্ষা দাও]

জেওর (আ)—অলঙ্কার।

খালেদ! খালেদ! তাজিমের সাথে ফরমান পড়ে ভূমি

সিপা’ সালারের সকল ‘জেওর’ খুলিয়া ফেলিলে তুমি। [খালেদ]

জেহাদ (আ)—যুদ্ধ

আশা ভরা মুখ, তাজা তাজা বুক, নৌজোয়ানীর গান,

দুঃসাহসীর মরণ সাধনা, ‘জেহাদে’র অভিযান।

জোশ (ফা. উ.)—শক্তি সাহস, উৎসাহ।

গম্বুজে কে রে গুমরিয়া কাঁদে মসজিদে মসজিদে

মুয়াজ্জিনের হুঁশ নাই, নাই ‘জোশ’ চিতে শেষ হৃদে।

জোহর (আ)—মধ্যাহ্ন সময়ের নামাজ

ঘুমিয়ে কাজ করেছি ফজর

তখনো জাগিনি যখন ‘জোহর’। [গীতি শতদল]

ত

তওবা (আ)—অনুশোচনা।

তাতে তৌবা তৌবা করি যদি

যাবে কামানের গোলা আটকে ঠিক। [তৌবা]

তকদীর (আ)—ভাগ্য।

বদলাবে ‘তকদীর’ আমার

ঘুচিবে সর্ব অন্ধকার। [নতুন চাঁদ]

তকবীর (আ)—আল্লাহর একত্ব ঘোষণা

বলিব বন্ধু, মিটেছে কি ক্ষুধা পেয়েছ কি কওসর?

বেহেশতে হতে ‘তকবীর’ ধ্বনি আল্লাহু আকবর।

তখত (ফা)—সিংহাসন

‘তখতে’ তাহার কালি পড়িয়াছে, অবিচারে আর পাপে,

তলোয়ারে তার মরিচা ধরেছে নির্যাতিতের শাপে।

তখত তাউস (ফা.আ.)—ময়ূর সিংহাসন। আরবী ‘তাউস’ বা ‘তাবুস’ অর্থ ময়ূর।

কেহ চাহিয়াছে ‘তখত-ই-তাউস’ কোহিনূর কেহ, এসেছে কেউ

খেলিতে সেরেফ খুশরোজ হেথা, বন্যার সম এসেছে ঢেউ। [আমানুল্লাহ]

তয়ম্মুম (আ)—পানির অভাবে মাটি ও পাথর দিয়ে অজু

যত সে জালিম রাজা বাদশারে মাটিতে করেছে গুম,

তাহাদেরি সেই খাকেতে খালেদ করিয়া ‘তয়ম্মুম’ [খালেদ]

তসবীর (আ)—ছবি

মঞ্জিলে এনে দেখাইলে কার অপরূপ তসবীর

তসবীতে জপি যত তার নাম, তত ঝরে আঁখি নীর।

তসলিম (আ)—সালাম।

সেই মুসলিম থাকে যদি কেউ ‘তসলিম’ করি তারে

ঈদ গাহে গিয়া তারি সার্থক হয় ডাকা আল্লারে।

তলোয়ার (ফা)—তরবারি

যুগে যুগে তুমি অকল্যাণের করিয়াছ সংহার,

তুমি বৈরাগী, বক্ষের প্রিয়া, ত্যাজি ঘর ‘তলোয়ার’। [আল্লার রাহে ভিক্ষা দাও]

তসবীহ (আ)—জপমালা।

ইহারাই ফেরদৌস আল্লার প্রেম ঘন অধিবাসী

‘তসবী’ ও তলোয়ার লয়ে আসি অসুরে যায় বিনাশি।

তহরিমা (আ)—নামাজের নিয়ত করে বুকে হাত বাঁধা।

খালেদ! খালেদ! ফজরে এলে না, জোহর কাটলো কেঁদে,

আসরে ক্লান্ত ঢুলিয়াছি শুধু বৃথা তহরিমা বেঁধে। [খালেদ]

তাজ (আ)—মুকুট, টুপী।

আড়ষ্ট নরে বলিষ্ঠ করে যাঁর কথা যার কাজ,

তারি তরে সেনা সংগ্রহ করি, গড়ি তারি শির ‘তাজ’।

তাজমহল (আ)—সম্রাট শাহজাহান নির্মিত স্মৃতিসৌধ।

দাও সে আকবর সেই শাহজাহান।

সেই ‘তাজমহলের স্বপ্নসাধ। [গুলবাগিচা]

তাজী (ফা)—ঘোড়া।

এক মুগীর জোর গায়ে নেই

ধরতে আসে তুকী ‘তাজী। [কামাল পাশা]

তালাক (আ)—বিবাহ-বিচ্ছেদ।

বিশ্ব যখন এগিয়ে চলেছে আমরা তখন বসে

বিবি ‘তালাকের ফতোয়া খুঁজেছি ফেকাহ্ ও হাদিস চষে।

তাম্বু (আ)—সামিয়ানা।

আসমানী তার তাম্বু টানানো মাথার পরে

গ্রহ রবি শশী দুলিতেছে আলো স্তরে স্তরে।

তামাম (আ)—সম্পূর্ণ, শেষ।

শোন দামাম কামান ‘তামাম’ সামান

নির্ঘোষি কার নাম

পড়ে সাল্লাল্লাহু আলায়হি সাল্লাম।

তুফান (আ)—ঝড়।

‘তুফান’ আমার জন্মের সাথী, আমি বিপ্লবী হাওয়া,

জেহাদ জেহাদ বিপ্লব বিদ্রোহ মোর গান গাওয়া। [চিরনির্ভয়]

তুনে (উ)—তুমিই।

কামাল ‘তুনে’ কামাল কিয়া ভাই। [কামাল পাশা]

তেজ (ফা)—শক্তি।

পরম প্রবল আল্লার ‘তেজ’ কোথা হতে যেন এলো

বহিতে লাগিল প্রলয়ঙ্কর ঝড় যেন এলোমেলো।

তেগ (ফা)—তলোয়ার।

হলকুমে হানে তেগ ওকে বসে ছাতিতে?

আফতাব ছেয়ে নিল আঁধিয়ারা রাতিতে।

তৌফিক (আ)—শক্তি।

‘তৌফিক’ দাও খোদা ইসলামে

মুসলিম জাহা পুনঃ হোক আবাদ। [জুলফিকার]

তৌহিদ (আ)—একত্ব।

‘তৌহিদ’ আর বহুত্ববাদে বেধেছে আজিকে মহাসমর

লা শরীক এক হবে জয়ী- কহিছে আল্লাহু আকবর। [মহা সমর]

দ

দম (ফা)—নিঃশ্বাস।

কাঁপে ঘন ঘন কাবা, গেল গেল বুঝি সৃষ্টির ‘দম’ টুটে।

দরগাহ (ফা)—মাজার।

নৈরাশা হইয়ো না রে দরগাহে আল্লার। [গীতি শতদল]

দরবার (ফা)—সভাস্থল, কোর্ট।

খসে পড়ে হাত হতে শক্রর তরবার

ভাসে শোকে কিয়ামতে আল্লার দরবার।

দরবেশ (ফা)—ভিক্ষুক, গবীর, আল্লার পথে দরিদ্র জীবন যাপন।

হায় ঋষি দরবেশ।

বুকের মাণিকে বুকে ধরে তুমি খোজ তারে দেশ দেশ।

ঈশ্বর দরাজ দিল (ফা)—প্রশস্ত হৃদয়।

শুকনো খুবজ খোর্মা চিবায়ে উমর দরাজ দিল,

ভাবিছে কেমনে খুলিবে আরব দীন দুনিয়ার খিল। [খালেদ]

দরিয়া (ফা)—সমুদ্র

মিকাইল অবিরল।

লোনা দরিয়ার সবি জল ঢালে

কুল মুলুকে।

দরুদ (ফা)—নবীর প্রশংসা।

আরব আবার হলো আরাস্তা।

বান্দারা যতো পড়ে ‘দরুদ’।

দহলিজ < দলিজ (ফা)—দরজার পাশের স্থান, বারান্দা।

নতুন করিয়া আমিনা জননী কাদিলেন হেরি শূন্য কোল,

অদূরে দলিজে’ মুত্তালিবের শোনা গেল ঘোর কাঁদন রোল। [মরু ভাস্কর/ পরভৃত]

দলিল (আ)-প্রমাণ।

দিলে দিলে আজ বন্ধকী দেনা নাই দলিল

কবুলিয়তের না বালাই।

দস্ত (ফা)-হাত

বাজুতে তাহার বাধা কোরান, বুকে দুর্মদ বেগ

আলবোরুজের চূড়া গুঁড়ো করা ‘দস্তে’ দারুণ তেগ। [খালেদ]

দাওয়াত (আ)-আমন্ত্রণ, নিমন্ত্রণ

‘দাওয়াত’ এসেছে নয়া জামানার

ভাঙা কিল্লায় ওড়ে নিশান। [গুল বাগিচা]

দানা পানি (ফা)—খাদ্য পানীয়।

মানবে মানবে আনে বিদ্বেষ কলহ ও হানাহানি

ইহারা দানব কেড়ে খায় সব মানবের ‘দানা পানি’। [গোড়ামী ধর্ম নয়]

দামামা (ফা)—ঢোল, নাকাড়া।

তবে শোন, ঐ শোন বাজে কোথা ‘দামামা’

শমশের হাতে নাও, বাঁধো শিরে আমামা।

দিল (ফা)—অন্তর।

এ কি বিস্ময়, আজরাইলেরও জলে ভর ভর চোখ,

বেদরদ ‘দিল’, কাঁপে থর থর যেন জ্বর জ্বর শোক।

দুনিয়া (আ)—পৃথিবী।

তারা বলে মোরা যদি প্রার্থনা করি তার কাছে এক সাথে,

নিত্য ঈদের আনন্দ তিনি দিবেন ধূলির দুনিয়াতে।

দুলদুল (আ)—হজরত আলির ঘোড়া।

বিশ্বাস করো এক আল্লাতে প্রতি নিঃশ্বাসে দিনেরাতে

হবে দুলদুল’ -আসোয়ার পাবে আল্লার তালোয়ার হাতে। [এক আল্লাহ জিন্দাবাদ]

দুশমন (ফা)—শত্রু।

বালু ফেড়ে ওঠে রক্তসূর্য ফজরের শেষে দেখি,

‘দুশমন’ খুনে লাল হয়ে ওঠে খালেদী আমামা এ কি? [খালেদ]

দিশারী (ফা)—পথ প্রদর্শক।

এক আল্লারে ভয় করি মোরা, কারেও করি না ভয়,

মোদের পথের ‘দিশারী’ সে এক সর্বশক্তিময়।

দোজখ (ফা)—নরক।

নহিলে আল্লার আদেশ না মানিবে

পরকালে দোজখের আগুনে জ্বলিবে [জয় হোক জয় হোক]

দোয়া (ফা)—আশীর্বাদ!

হে শহীদ বীর, এই দোয়া করো আরশের পায়া ধরি,

তোমারই মতন মরি যেন হেসে খুনের সেহেরা পরি। [উমর ফারুক]

দোস্ত (ফা)—বন্ধু

ঈদ উৎসব আসিলরে যেন দুর্ভিক্ষের দিনে,

যত দুশমনী ছিল যথা নিল ‘দোন্ত’ই আসিয়া জিনে। [মরুভাস্কর]

দৌলত (আ)—সম্পদ।

‘ধন দৌলত’ চান না উনি রন মশগুল খোদার নামে। [মৌলবী সাহেব]

ন

নওজোয়ান (ফা)—নব যুবক।

নিত্য সজীব যৌবন যার এস এস সেই নওজোয়ান

সর্বক্লৈব্য করিয়াছে দুর তোমাদেরই চির আত্মদান। [এক আল্লাহ জিন্দাবাদ]

নওরোজ (ফা)—নতুন দিন, নববর্ষ।

এরাই শহীদ প্রাণলয়ে এরা খেলে ছিনিমিনি খেলা,

ভীরুর বাজারে এরা আনে নিতি নব ‘নওরোজ’ মেলা।

নওয়াব (ফা)—রাজা, জমিদার।

ত্যাগ করে না ক ক্ষুধিতের তরে সঞ্চিত সম্পদ,

‘নওয়াব’ বাদশা জমিদার হয়ে চায় প্রতিষ্ঠা মদ।

নওশা (ফা)—নতুন বর।

রণে যায় কাসেম ঐ দু’ ঘড়ির ‘নওশা’

মেহেদীর রঙটুকু মুছে গেল সহসা।

নকীব (আ)—আহ্বায়ক, ঘোষক।

নকীবের তুরি ফুস্কারে আজ

বারোয়ার সুরে কাঁদে।

নজর (আ)—দৃষ্টি।

ফজর বেলার ‘নজর’ ওগো উঠলে মিনার পর

ঘুম টুটানো আজান দিলে, আল্লাহু আকবর। [বাংলার আজীজ]

নজরানা (আ)—উপহার।

সুর শাজাদার প্রেমিক পাগল হে গুণী তুমি,

মোর বনগীতি নজরানা দিয়া দন্ত চুমি। [জহীর উদ্দিন খান]

নফসি নফসি (আ)—আত্ম-বিলাপ।

ঝরা জলপাই পাতার মতন কপিতে কাঁপিতে সাদ

দিল ফরমান, ‘নফসি নফসি’ জপে, গণে পরমাদ। [খালেদ]

নয়া জামানা (আ. ফা)—নতুন কাল, আধুনিক কাল।

ওরে যৌবন রাজার সেনানী

‘নয়া জামানার’ নওজোয়ান। [জীবনে যারা বাঁচিল না]

নবী (আ)—পয়গম্বর, আল্লার সংবাদ বাহক।

আঁধার ধরণী চকিতে দেখিল স্বপ্নে রবি,

মক্কায় পুন: ফিরিয়া আসিল কিশোর নবী।

নবুয়ত (আ)—পয়গম্বরত্ব।

দেখেছি এর পিঠের পর নবুয়তের মোহর সীল

চক্ষে ইহার পলকবিহীন দৃষ্টি গভীর নিতল নীল। [মরুভাস্কর/ কৈশোর]

নহবত (আ)—সুর স্বর।

খাদিজার ঘরে জ্বলিল দীপালী ‘নহবতে’ বাজে সুর মধুর। [খাদিজা]

নহর (আ)—নদী ।

নহরের পানি লোনা হয়ে যায় আমার অশ্রু জলে,

তসবীর তার জড়াইয়া ধরি বক্ষের অঞ্চলে।

নামাজ (ফা)—উপাসনা।

নামাজ রোজার শুধু ভড়ং ইয়া উয়া পরে সেজেছ সং।

নিয়ামত (আ)—আশীর্বাদ, লাভ।

এই দুনিয়ার নিয়ামত হতে

নিজেদের করিল বঞ্চনা। [জীবনে যারা বাঁচিল না]

নিশান (ফা)—পতাকা।

বাজাই বিষান উড়াই ‘নিশান’ ঈশান কোণের মেঘে,

প্রেম বৃষ্টি ও বস্ত্র প্রহারে আত্মা উঠিবে জেগে।

নূর (আ)—আলো।

আমি যদি আরব হতাম মদিনারই পথ,

এই পথে মোর চলে যেতেন নূর নবী হজরত। [গীতি শতদল]

নীল (ফা)—রং

বিষে নীল হয়ে আসে মনি-সে কি অধিক মূল্য তরে? [মরু ভাস্কর : আলো আঁধারি]

নেকাব (আ)—পর্দা, ঘোমটা।

গুলরুখ নাজুক ‘নেকাবে’ ঢাকা।

নেস্ত-নাবুদ (ফা)— ধ্বংস কাণ্ড।

তাই তারা আজ ‘নেস্ত নাবুদ’ আমরা মোটেই হই নি জের। [কামাল পাশা]

প

পয়জার (ফা)—জুতা।

খালেদ! খালেদ! এই পশুদের চামড়া দিয়ে কি তবে

তোমার পায়ের দুশমন মারা দুটো পয়জার’ও হবে? [খালেদ]

পয়গম্বর (ফা)—মহাপুরুষ, নবী।

কোনো ওলী কোনো দরবেশ যোগী কোনো ‘পয়গম্বর’,

অন্য ধর্মে দেয় নিক গালি, কে রাখে খবর? [গোঁড়ামী ধর্ম নয়]

পয়গাম (ফা)—সুখবর।

শুভ বিবাহের পয়গাম তারে পাঠাল দেশের রেওয়াজ তাই,

দিনও তারিখ হল সব ঠিক, গলাগলি করে দুই বিয়াই। [খাদিজা]

পয়মাল (ফা)—বিনষ্ট, ক্ষতি।

তামুতে শয্যায় কাঁদে একা জয়নাল,

দাদা, তেরি ঘর কিয়া বরবাদ ‘পয়মাল’

পরওয়ার দেগার (ফা)—প্রভু, আল্লাহতালা।

বাদশা তুমি দিন ও দুনিয়ার

হে পরওয়ার দেগার’। [জুলফিকার]

পরদা, পর্দা (ফা)—ঢাকনা, ঘোমটা।

অপলক চোখে চাহি আকাশের ফিরোজা পর্দা পানে

গ্রহ তারা মোর সেহেলিয়া নিশি জাগে তার সন্ধানে।

পরোয়া (ফা)—ভয়, সংকোচ।

‘পরোয়া’ করিনা বাচি বা না বাচি যুগের হুজুগ কেটে গেলে । [আমার কৈফিয়ত]

পাক (ফা)- পবিত্র।

খালেদ! খালেদ! মিসমার হলো তোমার ইরাক শাম

জর্ডন নদে ডুবিয়াছে ‘পাক’ জেরুজালেমের নাম। [খালেদ]

পলিদ (ফ)—অপবিত্র

খালেদ! খালেদ! জাজিরাতুল সে আরবের পাক মাটি,

‘পলিদ’ হইলো, খুলেছে এখানে য়ুরূপ পাপের ভাঁটি।

পাও তক (উ)—পা পর্যন্ত।

শির হতে এই ‘পাও তক’ ভাই

লাল লালে লাল খুন মেখে। [কামাল পাশা]

পানাহ (ফা)—সাহায্য।

ঈর্ষাতুরের বিদ্বেষ যে ক্ষতি করে

শরণ যাচি, ‘পানাহ’ মাগি তাহার তরে। [আমপারাঃ সুরা ফলক]

পিঞ্জর (ফা)—খাঁচা।

ফিরদৌসের রণ দুন্দুভি

শুনে ‘পিঞ্জরে’ জেগেছে শের।

পিরহান (ফা)—জামা।

পিরানের সব দামন ছিন্ন কিন্তু সে সম্মুখে

পেরেশান ওরা তবু দেখিতেছি ভাঙিয়া পড়েনি দুঃখে। [খালেদ]

পিয়ালা (ফা)—পাত্র।

চাঁদের ‘পিয়ালা’তে আজি

জ্যোছনা-শিরাজী ঝরে। [গীতি শতদল]

পীর (ফা)—জ্ঞানবৃদ্ধ।

মোর জ্ঞানী ‘পীর’ আজ খারাবির পথে, এসো মোর সাথী ‘পথবালা’ [নির্ঝর গজল]।

পেরেশান (ফা)—হয়রান।

এই ধূর্ত ও ভোগীরাই তলোয়ারে বেঁধে কোরআন,

আলীর সেনারে করেছে সদাই বিব্রত ‘পেরেশান’।

ফ

ফকির (আ)—গরীব।

তুমি, চাহ নাই কেহ হইবে আমীর, পথের ‘ফকির’ কেহ [বনগীতিঃ সংযোজন]

ফখর (আ)—অহঙ্কার।

মার খাই আর তাহারি ফখর

করি হর্দম জগন্ময়। [জীবনে যাহারা বাঁচিল না]

ফরমান (ফা)—আদেশ।

তার সৃষ্টিরে ভালোবাসে যারা, তারাই মুসলমান,

মুসলিম সেই, যে মানে এক সে আল্লার ‘ফরমান’। [এ কি আল্লার কৃপা নয়?]

ফরিয়াদ (ফা)—অভিযোগ।

আমরা শুনেছি ভীত আত্মার সকরুণ ফরিয়াদ

আমরা তাদের রক্ষা করিব, এ যে আল্লার সাধ।

ফানা (আ)—ধ্বংস, বিলয়।

শুন, মোমিন মুসলমান

করি আমি নিবেদন

এ দুনিয়া ফানা হবে জেনে জানো না। [জুলফিকার]

ফেরেশতা (আ)—দেবদূত, স্বর্গীয় দেবতা।

অসম্ভবের অভিযান পথ তারাই দেখায় নরে

সর্ব সৃষ্টি ‘ফেরেশতারে’ও তারা বশীভুত করে।

ব

বজ্জাত (ফা)—দুষ্ট, খারাপবেজ্জাতি।

জাতের নামে বজ্জাতি সব জাত জালিয়াত খেলছ জুয়া,

ছুঁলেই তোর জাত যাবে? জাত ছেলের হাতের নয়তো মোয়া। [জাতের বজ্জাতি]

বদ (ফা)—খারাপ।

অজ্ঞান তিমিরান্ধকারের ইহারা বদ্ধজীব,

উৎপীড়কের পীড়িত দলিত বদ’ নসীব। [আল্লার রাহে ভিক্ষা দাও]

বদনসীব (ফা, আ.)—খারাপ ভাগ্য, দুর্ভাগা (নসীব আরবী, অর্থ ভাগ্য)

যেদিকে তাকাই দেখি যে কেবলি অন্ধ বদ্ধ জীব,

ডোগোন্মত্ত, পংগু, খঞ্জ, আতুর বদ নসীব।

বদনাম (ফা)—দূর্নাম।

তামাম মোর কাম শুধুই ‘বদনাম’ নিজের দোষ ভাই

নিজের দোষ সে। [নির্ঝরা]

বদমাশ (ফা)—পাজী।

চারদিকে এই গুণ্ডা এবং ‘বদমায়েসীর’ আখড়া দিয়ে

রে অগ্রদূত, চলতে কি তুই পারবি আপন প্রাণ বাঁচিয়ে? [পথের দিশা]

বন্দী (ফা)—আবদ্ধ।

তারাই বন্দী হয়ে আছে গ্লানি অধীনতা কারাগারে,

তারাই নিত্য জ্বালায় পিত্ত অসহায় অবিচারে।

বদল <বদলানো (আ)—পরিবর্তন।

এদের মুক্তি অদৃষ্টবাদ, বসে বসে ভাবে একা,

‘এ মোর নিয়তি’ ‘বদলানো’ নাহি যায় কপালের লেখা।

বরবাদ (ফা)—বিনষ্ট, নষ্ট।

কারো অট্টালিকা কারো খড়হীন ছাদ,

রবে না ভেদ, সব ভেদ হবে বরবাদ’। [জয় হোক জয় হোক]

বরাত (ফা)—ভাগ্য।

বদ নসীবের বরাত’ খারাপ বরাদ্দ তাই করলে কি না আল্লায়। [কামাল পাশা]

বাগিচা (ফা)—বাগান

খোদার ‘বাগিচা’ এই দুনিয়াতে তোমরা নব মুকুল

একমাত্র সে আল্লাহ্ এই বাগিচার বুলবুল।

বাদশাহ (ফা)—সম্রাট, রাজা।

কপালের পানে চাহিয়া আমার নয়নে আসিল বারি,

‘বাদশাহ’ হতে পারিত যে হায়, পেয়েছে সে জমিদারী।

বারেষ (উ)—বৃষ্টি।

শূন্য পিঠে কাঁদে দুল দুল

হজরত হোসেন শহীদ

আসমানে শোকের বারে

ঝরে আজ খুন হয়ে। [গুল বাগিচা]

বান্দা (ফা)—দাস, গোলাম।

সে দিন সত্য হয় যদি তাঁর এই বান্দার কথা,

ঘুচে যাবে মোর চির জনমের সকল দুঃখ ব্যথা। [একি আল্লার কৃপা নয়?]

বিমান (ফা)—আকাশ যান।

কাঁপুক বিশ্ব দূর ‘বিমান’ [গুল বাগিচা]

বিলকুল (আ)—সম্পূর্ণ

জান মারা তার পাষাণ পাঞ্জা ‘বিলকুল’ ঢিলা আজ,

কবজা নিসাড় কলিজা সুরাখ, খাক চুমে নীলা তাজ।

বুলন্দ (ফা)—উচ্চ, ভাল।

দু’জনার হবে বুলন্দ নসীব, লাখে লাখে হবে বদ নসীব,

এ নহে বিধান ইসলামের।

বুলবুল (ফা)—কোকিল।

শুষ্ক মনের সাহারায় যেন দজলা ফোরাত বহে,

পিজরার বুলবুল, বসরার গোলাবের কথা কহে।

বুসা (ফা)—চুমা।

খালেদ! খালেদ! ডাকে আর কাদে উমর পাগল প্রায়,

বলে, সত্যিই মহাবীর তুই ‘বুসা’ দিই তোকে আয়!

বিয়াবান (ফা)—মরুভূমি

আনোয়ার! আনোয়ার!

জনহীন এ ‘বিয়াবানে’ মিছে পস্তানো আর!

বেইমান (ফা, আ) —বিশ্বাসঘাতক।

জানো না কি তুমি, রে বেইমান

আল্লাহ সর্বশক্তিমান

দেখিছেন তোর সব কিছু?

বে আদব (ফা.আ)—অদ্র।

যত হুর পরী অপসরী দল

‘বে আদবী’ দেখে চটিয়া লাল। [জীবনে যারা বাঁচিল না]

বেনসীব (ফা.আ.)—ভাগ্যহীন (‘নসীব’ আরবী, অর্থ ভাগ্য)

কাঁদিয়া কহিনু ওরে ‘বে নসীব হতভাগ্যের দল,

মুসলিম হয়ে জনম লভিয়া এই কি লভিলি ফল? [আজাদ]

ম

মঞ্জিল (আ)—গন্তব্যস্থান।

নজুম সব বলছে সবাই, আসবে সেজন এ মঞ্জিল,

এই সে মানে, আমার ধ্যানে তাদের গোণায় আছে মিল। মরু [ভাঙ্করঃ কৈশোর]

মওত (আ)—মৃত্যু।

মওতের দারু পিইলে ভাঙে না হাজার বছর ঘুম? [খালেদ]

মজলুম (আ)—অত্যাচারিত।

সাত আসমান বিদারী আসিছে তাহার পূর্ণ ক্রোধ,

জালিম মারিয়া করিবেন মজলুমের প্রাপ্য শোধ।

ময়দান (ফা)—মাঠ।

আমি তকবীর ধ্বনি করি শুধু কর্ম বধির কানে

সত্যের যারা সৈনিক তারা জমা হবে ‘ময়দানে’।

মরদ (মর্দ) (ফা)—পুরুষ।

ওরা মরক্কো মর্দের জাত মৃত্যু মুঠার পরে,

শক্রর হাতে শির দিয়া ওরা শুধু হাতে পায়ে পড়ে। [খালেদ]

মস্তান (ফা)—মাতাল।

মস্তান’!

ব্যস থাম।

মহফিল (আ)— সভা, সংস্থা।

আমাদের সেই অপূর্ণ সাধ কিশোর কিশোরী মিলে

পূর্ণ করিও, বেহেশত এলো দুনিয়ার ‘মহফিলে’।

মহম্মদ (আ)—প্রশংসিত।

ত্রিভুবনের প্রিয় মুহম্মদ এলোরে দুনিয়ায়। [জুলফিকার]

মহরম (আ)—হিজরী সালের প্রথম মাস।

কত ‘মহরম’ এলো, গেলো চলে বহুকাল

ভুলিনি গো আজো সেই শহীদের লোহু লাল।

মসজিদ (আ)—উপাসনা স্থান, উপাসনা ঘর।

এরাই আত্ম প্রতিষ্ঠালোভে মসজিদে মসজিদে

বক্তৃতা দিয়ে জাগাত ঈর্ষা হয় স্বজাতির হৃদে।

মাজহাব (আ)—সম্প্রদায়।

হানাফী ওহাবী লা-মাজহাবীর তখনো মেটেনি গোল,

এমন সময় আজাজিল এসে হাঁকিল, তলপী তোল। [খালেদ]

মাল্লা (আ)—নাবিক।

কাণ্ডারী এ তীর পাকা মাঝি ‘মাল্লা’।

দাড়ী মুখে সারি গান লা-শরীক আল্লা।

মাফ (আ)—ক্ষমা।

আজকে যত পাপী তাপী সব গুনাহ পাইল মাফই। [জুলফিকার]

মারফত (আ)—মাধ্যম।

তাই সে পরম ভিক্ষু ভিক্ষা চায়

ভিখারীর ‘মারফতে’ তব দরজায়। [আল্লার রাহে ভিক্ষা দাও]

মারহাবা (আ)—স্বাগতম।

ওয়ে মারহাবা ওয়ে মারহাবা এয় সরওয়ারে কায়েনাত।

মাতম (ফা)—দুঃখ শোক।

হায় হায় হায়, কাঁদে সাহারায় আজিও তেমনি ও কে,

দজলা ফোরাত নতুন করিয়া ‘মাতম’ করিছে শোকে। [খালেদ]

মাজার (ফা)—কবর।

খালেদ! খালেদ! ভাঙিবে নাকি হাজার বছরী ঘুম

মাজার’ ধরিয়া ফরিয়াদ করে বিশ্বের মজলুম। [খালেদ]

মিনার (ফা)—মসজিদের উচ্চ টাওয়ার যেখান থেকে মুয়াজ্জিন আজান দেন।

ফোরাতের পানি রক্তিম হলো, মাগো বিদ্বেষ বিষে

কারা তীর হানে কাবার শান্তি মিনারের কার্ণিশে।

মিসকিন (আ)—ভিক্ষুক।

আমরা কাঙাল, আমরা গরীব, ভিক্ষুক ‘মিসকিন’

ভোগীদের দিন অন্ত হউক, আসুক মোদের দিন।

মুনাজাত (আ)—প্রার্থনা।

যে হাতে কেবলি কর মুনাজাত সে হাতে এবার অস্ত্র ধরো। [সাধনা]

মিছিল (ফা)—কাফেলা।

কারবালা যেন নাহি আসে আর মহররমের চাঁদে

তাজিয়া মিছিলে একি কাজিয়ার খেলা, দেখে প্রাণ কাঁদে।

মুনাফা (আ)—লাভ, আয়।

কিয়ামতের বাজারে ভাই মুনাফা’ চাও বহুত। [জুলফিকার]

মুনাফিক (আ)—প্রতারক, বেইমান।

ইসলাম তুমি দিয়ে কবর মুসলিম বলে করো ফখর

‘মুনাফিক’ তুমি সেরা বেদ্বীন।

মুবারক (আ)—পবিত্র।

আরশ হতে পথ ভুলে এ এল মদিনা শহর,

নামে ‘মুবারক’ মোহাম্মদ, পুঁজি আল্লাহু আকবার। [জুলফিকার]

মুয়াজ্জিন (আ)—আহ্বায়ক।

জাগিয়া শুনিনু প্রভাতী আজান

দিতেছে নবীন ‘মুয়াজ্জিন’।

মুরশিদ (আ)—ধর্মীয় পরিচালক।

খোদার প্রেমের শরাব পিয়ে বেহুঁশ হয়ে রই পড়ে,

ছেড়ে মসজিদ আমার ‘মুর্শিদ’ এলো যে এই পথ ধরে। [জুলফিকার]

মুর্দা (ফা)—লাশ, শবদেহ।

কোথায় ইমাম কোন সে খোবা পড়িবে আজিকে ঈদে

চারদিকে তব মুর্দার লাশ।

মুলক <মুলুক (আ)—রাজ্য, দেশ।

পরের ‘মুলুক’ লুট করে খায়, ডাকাত তারা ডাকাত!

তাই, তাদের তরে বরাদ্দ ভাই আঘাত শুধু আঘাত । [কামাল পাশা]

মুসলিম (ফা)—আল্লার একত্বে বিশ্বাসী জাতি।

ধৈৰ্য্য ও বিশ্বাস হারায় সে মুসলিম নয় কভু

বিশ্বে কারেও করে না কো ভয় আল্লাহ যার প্রভু।

মুসলমান (ফা)—আল্লার একত্বে বিশ্বাসী শান্তিবাদী মানব। (ফারসী শব্দ) মুসলিম এর বহু বচন মুসলমান)।

হউক হিন্দু, হোক ক্রীশ্চান, হোক সে মুসলমান

ক্ষমা নাই তার, যে আনে তাহার ধরায় অকল্যাণ [এ কি আল্লাহর কৃপা নয়?]

মুসাফির (আ)—পথিক, ভ্রমণকারী।

আরবের প্রাণ আরবের গান, ভাষা আর বাণী এই হেথাই

বেদুইনদের সাথে ‘মুসাফির’ বেশে ফিরিত গো সর্বদাই । [মরু-ভাস্করঃ পরভূত]

মুসাফিরখানা (আ. ফা)—অতিথি শালা।

আমি ছিনু পথ ভিখারিণী, তুমি কেন পথ ভুলাইলে,

‘মুসাফির’ খানা ভুলায়ে আনিবে কোন্ এই মঞ্জিলে।

মোল্লা (আ)—শিক্ষক, জ্ঞানী, পণ্ডিত।

আজ জল্লাদ নয় প্রহলাদ সম ‘মোল্লা’, খুন-বদন,

ওরে হত্যা নয় আজ সত্যাগ্রহ শক্তির উদ্বোধন।

মৌলবী (আ)—পণ্ডিত।

‘মৌলবী’ সাহেব দুনিয়া ভুলে

জ্বালিয়ে রাখেন দ্বীনের বাতি। [মৌলবী সাহেব]

মৌলানা (আ)—পণ্ডিত, জ্ঞানী (আসল অর্থ আমাদের প্রভু। ‘মওলা’ থেকে মৌলানা)

গাধার মতন বয়েছে ইহারা শাস্ত্র কোরাণ বেদ। [সুবেহু উম্মীদ]

মৌলুদ (আ)—জন্ম উৎসব (রাসুলে করীমের জন্ম উপলক্ষে আয়োজিত)

ওঁরেই ডাকি ফাতেহাতে। [মৌলবী সাহেব]

মোস্তফা (আ)—পছন্দনীয়।

আয় মরুপারের হাওয়া, নিয়ে যারে মদিনায়,

জাত পাক ‘মোস্তফার রওজা মোবারক যেথায়। [জুলফিকার]

র

রওশন (ফা)—উজ্জল, সুন্দর।

সূর্য যেন গো দেখিয়াছে তার পিছনের অমা রাতি,

রৌশন রাঙা করিছে কে যেন জালায়ে চাঁদের বাতি। [উমর ফারুক]

রওশনী (ফা)—ঔজ্জ্বল্য, আলোকময়তা।

বদর বিজয়ী বদরুদ্দোজা

বুচাল কি অমা রৌশনীতে।

রমজান (ফা)—উপবাস

মাহে রমজান এসেছে যখন, আসিবে শবে কদর

নামিবে তাহার রহমত এই ধূলির পর।

রসুল (আ)—প্রেরিত পুরুষ।

আল্লা ‘রসুল’ মুখে বলে তার ক্ষমা পায় নিক এরা

দেখেছে ও দামেস্ক শুধু, দেখেনি কাবা ও হেরা।

রসিদ (ফা)—স্বীকৃতি পত্র

পুলসিরাতের পুল হতে পার

নিয়ে রাখবে আগাম রসিদ। [গুলবাগিচা]

রহমত (আ)—দয়া।

বিশ্বাস করো অবিশ্বাসীরা, রহমত তার আসিছে ঐ

ভয় করিবে না মানুষ কারেও, অদ্বৈত সে আল্লা বৈ। [মহা সমর]

রাহা (ফা)—রাস্তা, পথ।

অস্তপারের দেশ পারায়ে বহুত সে দূর

তোদের ঘরের রাহা। [কামাল পাশা]

রোজ (ফা)—দিন, দিবস

যেন ‘রোজ’- হাসরের ময়দান,

সব উন্মদ সম ছুটে।

রোজ কিয়ামত (ফা আ.)—ধ্বংস, বিয়ের দিন।

জানি না কখন ঘনাবে ধরার ললাটে মহা প্রলয়,

মিশরের তরে ‘রোজ কিয়ামত’ ইহার অধিক নয়। [চিরঞ্জীব জগলুল]

রোজা (ফা)—উপবাস।

গরীবের ঈদ আসিবে বলিয়া যে আত্মা রোজা রাখে,

পরম আত্মার পরমাত্মীয় বলে আমি মানি তাকে।

রুহ (আ)—আত্মা।

মালেকুল মৌত করিবে কবজ ‘রুহ’ সেই খালেদের?

ল

লাজ (ফা)—সজ্জা।

আল্লার আশ্রয় চেয়ে আত্মার শক্তিতে আজ,

তোমরা পেয়েছ আশ্রয় আর তারা পাইতেছে লাজ।

লানত (আ)—অভিশাপ।

‘লানত’ গলায় গোলাম ওরা সালাম করে জুলুমবাজে,

ধর্ম ধজা উড়ায় দাড়ি, গলিজ মুখে কোরান ভাজে। [আনন্দময়ীর আগমনে]

লাশরীক (আ)—অংশীদারহীন, অদ্বিতীয়।

অখণ্ড এক চাঁদ আজ বুঝি দু’খণ্ড হয়ে যায়

শরিকী আনিল হায় যারা মানে লাশরীক আল্লায়।

লেবাস (আ)—পোশাক।

নাই হলো মা জেওর ‘লেবাস’ এই ঈদে আমার

আল্লাহ আমার মাথার মুকুট রসুল গলার হার। [গীতিশতদল]

শ

শবে কদর (ফা, আ.)—পবিত্র রাত্রি, সম্মানীয় রাত্রি।

করিয়াছি অবতীর্ণ কোরান শবে কদরে

জানবে কিসে শবে কদর কয় কারো [কাব্য আমপারাঃ সুরা কদর]

শমশের (ফা)—তরবারি।

হায়দরী হক হকি দুল দুল আসওয়ার

‘শমশের’ চমকায় দুশমনে ত্ৰাসবার।

শয়তান (আ)— অভিশপ্ত, দুরাচার, পাজি।

‘শয়তান’ ছিল বাদশাহ সেথা, অগণিত পাপ সেনা।

বিনি সুদে সেথা চলিত হেথা ব্যভিচার লেনা দেনা। [মরু-ভাস্করঃ অভ্যুদয়]

শরবত (আ)—সুস্বাদু পানীয়।

ঘন উথলে অদূরে জম জম শরবত।

শরম (ফা)—লজ্জা।

পুণ্য পিশাচ। স্বার্থপর।

দেখাস নে মুখ লাগে ‘শরম’।

শরাব (আ)—পানীয়।

রঙ্গীন রাখী, শিরীন ‘শরাব’ মুরলী রোবাব বীণ,

গুলিস্তানের বুলবুল পাখী, সোনালী রূপালী দিন।

শরীক (আ)—অংশীদার।

এক যে পরম বিচারক, তার ‘শরীক’ কেহই নাই,

কাহারে শান্তি দেন তিনি, দেখো দুদিন পরে তা ভাই। [গোঁড়ামী ধর্ম নয়]

শরীফ (আ)—ভদ্র, অমায়িক।

রিফ শরীফ’ সে কতটুকু ঠাই,

আজ তারি কথা ভুবনময়। [সুবেহ উম্মীদ]

শহদ (আ)—মধু, মিষ্টি।

দোজখ আমার হারাম হলো

পিয়ে কোরানের শিরিন শহদ [জুলফিকার]

শহীদ (আ.)—ধর্মযোদ্ধা।

তোমরা শহীদ তোমরা অমর, নিতি আনন্দ ধামে,

তোমরা খেলিবে, তোমাদের তরে তাঁর কৃপা নিতি নামে। [আল্লাহ রাহে ভিক্ষা দাও]

শহীদী (আ. ফা.) —ধর্মযোদ্ধা সদৃশ।

উহারা চাহক দাসের জীবন, আমরা শহীদী দর্জা চাই,

নিত্য মৃত্যু ভীত ওরা মোরা মৃত্যু কোথা খুঁজে বেড়াই। [এক আল্লাহ জিন্দাবাদ]

শাফায়াত (আ)—পক্ষে অনুরোধ, নিবেদন।

ইবরাহীমের মতো পুত্রেরে আল্লার রাহে দাও,

নইলে কখনো মুসলিম নও, মিছে শাফায়াত চাও।

শামাদান (আ)—ধূপার, বাতিধার।

আমার হৃদয় শামাদানে জ্বালাও মোমের বাতি।

শাহানশা (ফা)—সম্রাট।

ইহারা সর্ব ত্যাগী বৈরাগী প্রভু আল্লার রাহে

ভয় করে না ক কোনো দুনিয়ার কোন্ সে ‘শাহানশা’ কে।

শির (ফা) মস্তক, মাথা।

আল্লার নামে নিবেদিত ‘শির’ নোয়ায় সাধ্য কার?

আল্পা সে শির বুকে তুলে নেন, কাটে যদি তলোয়ার।

শিরীন (ফা)—সুমিষ্ট, ভালো চমৎকার।

শাফাতের ‘শিরীন’ শিরনী

পাবি না আর পাবি না যে। [শাদী মুবারক]

শিরনী (ফা)—মিষ্টি খাদ্য।

ঠোটে ঠোটে আজ বিলাব শিরনী ফুল কালাম।

শিরাজী (ফা)—পানীয়।

‘শিরাজী’ পিয়ায়ে শিরায় শিরায় কেবলই জাগাও নেশা,

নেশা যত লাগে অনুরাগে, বুকে তত জাগে আন্দেশা।

শের (আ)—সিংহ, ব্যাঘ্র।

মেষ সম যারা ছিল এতদিন।

‘শের’ হলো আজ সেই মেশের। [সুবেহু উম্মীদ]

শেরওয়ানী (ফা)-টিলা কোট, ঢিলা জামা।

রীশই-বুলন্দ ‘শেরওয়ানী’ চোগা তসবী ও টুপী ছাড়া,

পরে নাকো কিছু মুসলিম-গাছ ধরে যত দাও নাড়া [খালেদ]

শোহরত (আ)—প্রচারণা।

সামনে থেকে পালাও

‘শোহরত’ দাও, নওরাতি আজ হর ঘরে দীপ জ্বালো [কামাল পাশা]

স

সওগাত (তু)—উপহার, উপঢৌকন।

ভুখারীর দ্বারে ‘সওগাত’ বয়ে রিজওয়ানের।

সওদা (ফা)—সামগ্রী।

ওরে আছে বেলা, ভাঙে নিকো খেলা, ইহারি মাঝে

প্রাণের সওদা করে নে, বরে নে হৃদয় রাজে। [মরু ভাস্কর-খদিজা]

সওয়াব (আ)—পূণ্য।

ওরে ফাঁকিবাজ, ফেরেববাজ

আপনারে আর দিসনে লাজ

গরু ঘুষ দিয়ে চা সওয়াব?

সওদাগর (ফা)—ব্যবসায়ী।

দেখবি কে আয় আজ আমাদের নওল কিশোর সওদাগর

শুক্লা দ্বাদশ তিথির চাঁদের কিরণ ঝলে মুখের পর। [মরু ভাস্কর/ কৈশোর)

সওয়ার (ফা)—আরোহী।

বোররাকে তারা হইলো ‘সওয়ার’

ছুটাইবে ঘোড় ততঃকিম। [জীবনে যাহারা বাঁচিল না]

সফেদ (ফা)—সাদা।

নৌ রুস্তম উঠেছে রুখিয়া

সফেদ দানবে দিয়েছে লাজ। [সুবেহ উম্মীদ]

সয়লাব (আ)—পাবন, বন্যা।

বেদনার বানে ‘সয়লাব’ সব, পাইনে সাথীর হাত,

আন গো বন্ধু নূহের কিশতী বার্ষিকী সওগাত।

সাকী (আ)—পানপাত্র ধারক।

‘সাকী’র পিয়ালা পরে

সকরুণ অশ্রুর বেল ফুল ঝরে।

সাফ (উ)—পরিস্কার।

বুজদিল ঐ দুশমন সব বিলকুল ‘সাফ’ হো গিয়া । [কামাল পাশা]

সহি সালামত (আ) নিশ্চিত ভালো।

মজলুম যতো মুনাজাত করে কেঁদে কয় এয় খোদা,

খালেদের বাজুতে শমশের রেখো সহিসালামতে সদা।

সালাত (আ)—নামাজ।

ঐ শোন শোন সালাতের ধ্বনি

খায়রুম মিনান্ নৌম [মরু-ভাস্কর ও অবতরনিকা]

সালাম (আ)—শান্তি।

পাক কদমে সালাম জানাই

নবীর নায়েব মৌলবী সাহেব [মৌলবী সাহেব]

সাহারা (আ)—মরুভুমি, বালুভুমি।

যে গৃহ যুদ্ধে আরব হইলো মরু সাহারা

আত্মবিনাশী সে রণে নামিল পুনঃ তাহারা

সিজদা (আ)—নত হওয়া।

থাকি কি না থাকি এই দুনিয়ায় তোমরা থাকিয়া দেখো,

যেদিন সিজদা’; করো আরারে, কাঁদিয়া তাহারে ডেকো [এ কি আল্লার কৃপা নয়]

সিতারা (ফা)—তারকা।

জোহরা ‘সিতারা’ উঠেছে কি পুবে? জেগে উঠেছে কি পাখী?

সুরার সুরাহি ভেঙে ফেল সাকী, আর নিশি নাই বাকী।

সিন্দাবাদ (ফা)—নাবিক।

হে চির অরুণ তরুণ, তুমি কি বুঝিতে পারনি আজো।

ইঙ্গিত তুমি বৃদ্ধ সিন্দাবাদের, বাহন সাজো। [আজাদ]

সিয়া (আ)—নীল বর্ণ।

আসমানে ঐ ভাসমান যে মস্ত দুটো রক্তের তাল,

একটি নিবিড় নীল ‘সিয়া’ আর একটা খুবই গভীর লাল। [কামাল পাশা]

সিপাহসালার (ফা)—সেনাপতি।

ঐ শোন্ শশান্ সিপাহসালার কামাল ভাই-এর কালাম। [কামাল পাশা]

সুরাহি (আ)—মদের পাত্র। (আরবী ‘সারাহিয়্যা’ থেকে সরাহি।)

সুরার ‘সুরাহি’ ভেঙে ফেল সাকী আর নিশি নাই বাকী।

বিজ্ঞাপনের জন্য

হ

হজ (আ)—তীর্থ যাত্রা।

এরাই কাবার হজের যাত্রী, এদেরই দন্ত চুমি

কওসর আনে নিঙাড়িয়া রণক্ষেত্রের মরুভুমি।

হজরত (আ)—সর্বোত্তম, সম্মানীয়।

হিজরত করে ‘হজরত’ কিরে

এলো এ মেদিনী মদিনা ফেরা

হরদম (ফা)—সবসময়, প্রতি নিঃশ্বাসে।

তৈয়ার হেয় হর্দম ভাই ফাড়তে জিগর শত্রুদের। [কামাল পাশা]

হররোজ (ফা)—প্রতিদিন।

জীবনে যাদের হররোজ রোজা ক্ষুধায় আসে না নিদ,

মুমু সেই কৃষকের ঘরে এসেছে কি আজ ঈদ।

হাজার (ফা)—সহস্র।

আমার মনের মসজিদে দেয়। আজান হাজার মুয়াজ্জিন। [জুলফিকার]

হাবীব (আ)—বন্ধু।

খোদার ‘হাবীব’ এসেছে আজিকে হইবে মানব মিতা,

পুণ্য সভায় ঝলমল করে ধরা পাপ শঙ্কিতা। [উমর ফারুক]

হাম্মাম (ফা)—গোসলখানা।

খোলে হুরপরী মরি

ফিরদৌসের হাম্মাম’।

হারাম (আ)—নিষিদ্ধ।

চাই না ধর্ম চাই না কামচাইনা মোক্ষ সব হারাম

আমাদের কাছে শুধু হালালদুশমন খুন লালসে লাল। [দুঃশাসনের রক্তপান]

হারামী (আ.ফা)—পাজী, বদমাস।

এক হাতে বাঁধা হেমজিঞ্জীর আর এক হাত খোলা

কী যেন হারামী নেশার আবেশে চক্ষু ওদের ঘোলা। [খালেদ]

হারাম খোর (আ.ফা)—নিষিদ্ধ খাদ্য ভক্ষণকারী।

দ্যাখো হিন্দুস্থান সায়েব মেমের

রাজা আংরেজ হারামখোর’। [তৌবা]

হাশর (আ)—পুনরুত্থান দিবস।

রোজ হাশরে আল্লা আমায় করো না বিচার। [জুলফিকারঃ ২য় খণ্ড]

হাশমত (আ)—সৌখীন, জাকজমক।

দাও সেই খলিফা সে হাশমত

দাও সেই মদিনা সে বোগদাদ। [গুলবাগিচা]

হাওয়া (আ)—বাতাস, আবহাওয়া, বায়ু।

‘হাওয়ায়’ ঝরা পাতার নুপুর বাজে ঝুনঝুনিয়ে। [গীতি শতদল]

হিম্মত (আ)—সাহস।

দুলিতেছে তরী, ফুলিতেছে জল, ভুলিতেছে মাঝি পথ,

ছিড়িয়াছে পাল, কে ধরিবে হাল, আছে কার ‘হিম্মত’? [কাণ্ডারী হুঁশিয়ার]

হিসাব (আ)—গণণা।

মরলো যে সে মরেই গেছে বাঁচলো যারা রইলো বেঁচে

এই তো জানি সোজা হিসাব’! দুঃখ কি আরা [কামাল পাশা]

হুকুম (আ)—আদেশ।

আমরা ‘হকুম’ বর্দার তার, পাইয়াছি ফরমান,

ভীত নরনারী তরে অকাতরে দানিব মোদের প্রাণ।

হুঁশিয়ার (ফা)—সাবধান।

দুর্গম গিরি, কান্তার মরু দুস্তর পারাবার,

লঘিতে হবে রাত্রি নিশীথে, যাত্রীরা ‘হুশিয়ার’। [কাণ্ডারী হুঁশিয়ার]

হুরপরী (আ. ফা)—স্বর্গীয় নারী।

‘হুরপরী’ শোকে হায়

জল ছল ছল চোখে চায়।

হুররো হে (আ. উ)—বেশ হয়েছে, স্বাধীন হয়েছে।

হরো হো!

হুররো হো! [কামাল পাশা]

হেনা (উর্দু)—মেহেদী, রঙ।

লাল ফুল সম দাগ খাওয়া দিল, নার্গিস ফুলী আঁখ,

ইস্পাহানির ‘হেনা’ মাখা হাত, পাতলি পাতলি কাঁখ।

হেরেম (ফা)—অন্দর মহল।

আঁধার ‘হেরেমে’ বন্দিনী হলো সহসা আলোর মেয়ে,

সেইদিন হতে ইসলাম গেলো গ্লানির কালিতে ছেয়ে। [আমাদের নারী]

 

‘নবজাগরণ’ অ্যান্ড্রোয়েড অ্যাপ্লিকেশনটি প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।

‘নবজাগরণ’ এর টেলিগ্রাম চ্যানেলে জয়েন হতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।

‘নবজাগরণ’ এর ফেসবুক পেজে লাইক করতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।

Post Views: 4,065
Tags: arabicKazi Najrul Islamআরবীকাজী নজরুল ইসলামনজরুল ইসলামনজরুল-কাব্যে আরবী-ফারসী শব্দঃ বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনাফারসি
ADVERTISEMENT

Related Posts

নজরুল ইসলামের প্রবন্ধ সাহিত্য: বিশ্লেষণ ও সাহিত্যিক অবদান
সাহিত্য আলোচনা

নজরুল ইসলামের প্রবন্ধ সাহিত্য: বিশ্লেষণ ও সাহিত্যিক অবদান

লিখেছেনঃ মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম নজরুল ইসলামকে মূলত কবি, গীতিকার ও সংগীতস্রষ্টা হিসেবেই আমরা চিনি ও শ্রদ্ধা করি। কিন্তু তাঁর...

by মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম
July 29, 2025
আশাপূর্ণা দেবীর ছোটগল্প: শিল্পরূপের শৈল্পিক নির্মাণ
সাহিত্য আলোচনা

আশাপূর্ণা দেবীর ছোটগল্প: শিল্পরূপের শৈল্পিক নির্মাণ

লিখেছেনঃ মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম আশাপূর্ণা দেবী বাংলা সাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ নাম। তাঁর রচনায় যে রচনাশৈলী এবং শিল্পরূপ ব্যবহার করা...

by মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম
July 23, 2025
ম্যাজিক রিয়ালিজম থেকে সাহিত্য আন্দোলন: এক সাহিত্যিক অভিযাত্রা
সাহিত্য আলোচনা

ম্যাজিক রিয়ালিজম থেকে সাহিত্য আন্দোলন: এক সাহিত্যিক অভিযাত্রা

লিখেছেনঃ মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম সাহিত্যের ইতিহাসে আধুনিকতার উদ্ভব যেমন বাস্তবতার নিরন্তর অভিযাত্রার ফল, তেমনই সাহিত্যের নান্দনিক ও দার্শনিক ধারা...

by মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম
July 10, 2025
সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ : বাংলাসাহিত্যের এক অনন্য কথাশিল্পী
সাহিত্য আলোচনা

সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ : বাংলাসাহিত্যের এক অনন্য কথাশিল্পী

লিখেছেনঃ মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ বাংলা সাহিত্যের এক বিশিষ্ট নাম, যাঁর সাহিত্যিক জীবনপথ রচিত হয়েছে একাধারে প্রকৃতির...

by মুহাম্মাদ আব্দুল আলিম
July 9, 2025

Facebook Page

নবজাগরণ

ADVERTISEMENT
No Result
View All Result

Categories

  • English (9)
  • অন্যান্য (11)
  • ইসলাম (28)
  • ইসলামিক ইতিহাস (23)
  • ইহুদী (3)
  • কবিতা (37)
  • খ্রিস্টান (6)
  • ছোটগল্প (6)
  • নাস্তিকতা (18)
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (24)
  • বিশ্ব ইতিহাস (26)
  • ভারতবর্ষের ইতিহাস (198)
  • রাজনীতি (39)
  • সাহিত্য আলোচনা (72)
  • সিনেমা (18)
  • হিন্দু (16)

Pages

  • Cart
  • Checkout
  • Checkout
    • Confirmation
    • Order History
    • Receipt
    • Transaction Failed
  • Contact
  • Donation to Nobojagaran
  • Homepage
  • Order Confirmation
  • Order Failed
  • Privacy Policy
  • Purchases
  • Services
  • লেখা পাঠানোর নিয়ম
  • হোম

No Result
View All Result
  • মূলপাতা
  • ইতিহাস
    • ইসলামিক ইতিহাস
    • ভারতবর্ষের ইতিহাস
    • বিশ্ব ইতিহাস
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ধর্ম
    • ইসলাম
    • খ্রিস্টান
    • হিন্দু
    • ইহুদী
    • অন্যান্য ধর্ম
  • নাস্তিকতা
  • রাজনীতি
  • সিনেমা
  • সাহিত্য
    • কবিতা
    • ছোটগল্প
    • উপন্যাস
    • সাহিত্য আলোচনা
  • অন্যান্য
  • ই-ম্যাগাজিন
    • নবজাগরণ (ষাণ্মাসিক) – জীবনানন্দ ১২৫ তম জন্ম সংখ্যা – মননশীল সাহিত্য পত্রিকা
  • Others Language
    • English
    • Urdu
    • Hindi

©Nobojagaran 2020 | Designed & Developed with ❤️ by Adozeal

Login to your account below

Forgotten Password?

Fill the forms bellow to register

All fields are required. Log In

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In
Don't have an account yet? Register Now
1
Powered by Joinchat
Hi, how can I help you?
Open chat
wpDiscuz
0
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x
| Reply