বিখ্যাত ঐতিহাসিক এরিক হবসবম বলেছিলেন মিথ্যা প্রচারণা আণবিক বােমার চেয়েও ভয়ঙ্কর। এর অর্থ বােধহয় আর খুলে বলতে হবে না। হ্যাঁ, আজকের বিজেপি ও তার দোসররা বিভিন্ন ভাষণে যেখানে সেখানে যেভাবে মিথ্যা তথ্য, সাম্প্রদায়িক বক্তব্য তুলে ধরছেন তাতে শিক্ষিতজনেরাও বিভ্রান্ত হচ্ছেন। বিঘ্নিত হচ্ছে দেশের শান্তি ও সংহতি। তবে উল্লেখযােগ্য বিষয় এই যে, সাম্প্রতিক সংশােধিত নাগরিকত্ব বিল আলােচনা প্রসঙ্গে যেভাবে বার বার বাংলাদেশি শরণার্থী সমস্যা তথা সেখানকার সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর ধর্মীয় অত্যাচারের বিষয়টি সুকৌশলে ভারতীয় জনমানসের সামনে আনা হচ্ছে তাতে সর্বোপরি বিভাজন তত্ত্বই গ্রাহ্যতা পেয়ে যাচ্ছে না তাে! দেশের গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ পরিবেশ ধ্বংস হবে না তাে এর ফলে!
এ ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই যে, প্রধানত দারিদ্র্যের কারণে বাংলাদেশ থেকে হিন্দু, মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ভুক্ত বহু মানুষ চোরাপথে সীমান্ত পার হয়ে ভারতে ঢুকে পড়ছে বা ঢুকে পড়ার চেষ্টা করছে। আমাদের রাজ্যের অর্থনীতির উপর তার বিরূপ প্রভাব পড়ছে। তার মাসুল গুণতে হচ্ছে আমাদেরই। এটা ঠিক যে, পৃথিবীর যে কোনও দেশেই সংখ্যালঘুদের বিশেষ কিছু সমস্যা ভােগ করতেই হয়। ধর্মীয় সংখ্যালঘু তাে বটেই, ভাষাগত, সংস্কৃতি গত এমনকি উৎসগত সংখ্যালঘুত্বও মানুষকে বেশ কিছু সমস্যার সামনে দাঁড় করিয়ে দেয়। ওই সংখ্যালঘুরা না চাইলেও কিছু অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি তাদের তাড়া করে ফেরে। এই উপমহাদেশেও নানা ঐতিহাসিক কারণে সংখ্যালঘুরা বিভিন্ন ধরণের সমস্যায় ভােগেন। ভারত-পাকিস্তান-বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই সমস্যা আছে। স্থান-কাল-পাত্র ভেদে এই সমস্যার তীব্রতা বাড়ে বা কমে। তুলনামূলক আলােচনা করে কোনও সরল সিন্ধান্তে পৌছানাে বােকামি। তবে এ ক্ষেত্রে কিছু পরিসংখ্যান তুলে ধরা যেতে পারে। বাংলাদেশে ৯.৬ শতাংশ সংখ্যালঘু হিন্দু সরকারি চাকরির প্রায় ১০ শতাংশ ভােগ করেন। সেখানে ভারতের ১৪.৫ শতাংশ সংখ্যালঘু মুসলিমদের মধ্যে চাকরি করেন মাত্র ৪ শতাংশ। এই তথ্যের মধ্য দিয়ে অনুমান করা যায় রাষ্ট্রের চরিত্র। আর দাঙ্গার পরিসংখ্যান নিলে তাে আমাদের ভারতীয় হিসেবে মাথা হেঁট হতে বাধ্য। বাংলাদেশে যে দাঙ্গা হয়নি তা নয়, তবে তা ভারতের মত ব্যাপকতা অর্জন করতে পারেনি কখনই, এটা মানতেই হবে। তা হলে স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন আসতেই পারে, বাংলাদেশ থেকে ভারতে এত মানুষ চলে আসে কেন? স্মরণে রাখতে হবে কেবলমাত্র ধর্মীয় ও রাজনৈতিক কারণে মানুষ স্থান ত্যাগ করে না। এর পেছনে পরিবেশগত ও ও অর্থনৈতিক কারণও বিশেষভাবে ক্রিয়াশীল। যেমন সুযােগ পেলেই বহু ভারতীয় আমেরিকা, কানাডা, ব্রিটেন, জাপান ও অন্যান্য দেশে চলে যেতে চায়। লক্ষ লক্ষ ভারতীয় মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ দেশগুলিতে রয়েছে।
তাছাড়া বাংলাদেশ থেকে সংখ্যালঘুদের চলে আসাকে কেউ কেউ আবার অন্যভাবে ব্যাখ্যা করতে চান। তাদের মতে, বাংলাদেশের পাশে পশ্চিমবঙ্গের মত একটা রাজ্যের অবস্থানও এ ক্ষেত্রে অনেকাংশে দায়ী। কারণ রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক, সাম্প্রদায়িক ও ব্যক্তিগত কারণেও বাংলাদেশে সমস্যায় পড়লে হিন্দুরা নিজ স্থানে দাঁড়িয়ে তা সমাধানের চেষ্টা করার চেয়ে ভারতে তথা পশ্চিমবঙ্গে চলে আসাকে অধিকতর সহজ সমাধান বলে ধরে নেন। তাদের ধারণা, এদেশে একবার এসে গেলেই অন্নসংস্থানের সবরকম সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। অন্তত ধর্মীয় কারণেপশ্চিমবঙ্গে তাঁদের কোনওভাবে অবিচারের শিকার হতে হবে না। অনেকের আত্মীয়স্বজন এদেশে এসে এখন মােটামুটি প্রতিষ্ঠিত। এই চিন্তা ভাবনাও বাংলাদেশি হিন্দুদের এপারে তাড়িয়ে আনছে। এর প্রবাহ চলছে বহুদিন ধরেই। এর মানে এই নয় যে, বাংলাদেশের হিন্দুরা অত্যাচারিত হয়নি বা তারা খুব সুখে শান্তিতে রয়েছে। তবে এটা বাস্তব সত্য যে, ওপারের সংখ্যালঘুরা বাংলাদেশের মাটি কামড়ে পড়ে থেকে লড়তে চায় না। তারা নিরাপত্তার কোনও অভাব দেখলেই সেখানে জোরদার প্রতিবাদ করার চেয়ে ভারতে চলে আসাকে সুবিধাজনক বলে মনে করে। এই এখানেই ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিমদের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বচ্ছল হিন্দুদের তফাৎ। ভারতের সংখ্যালঘুরা শত অত্যাচারেও দেশের মাটি ছেড়ে যেতে রাজি নয়। কেননা তারা জানে বাংলাদেশে বা পাকিস্তানে তাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য কেউ বসে নেই। কিন্তু ভারতের ক্ষেত্রে ঠিক তেমনটা নয়। নিপীড়িত হিন্দুরা বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলে এলে তাদের আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে ঢিলেমি দেখালে ক্ষমতাসীন সরকারকে সমালােচিত হতে হয়। সেই সঙ্গে বিপন্নতা বােধ করে ভারতের সংখ্যালঘুরাও।
তবে পরিস্থিতি যাই হােক না কেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর আক্রমণকে কোনওভাবেই বরদাস্ত যায় না। এই অমানবিক কাজের নিন্দার কোনও ভাষা নেই। কেউ কেউ বলেন এমন হামলা তাে আগেও হয়েছে। খুব বেশি সংখ্যালঘু তাে আহত বা নিহত হয়নি। ভারতে একটা স্থানীয় দাঙ্গায় তাে এর চেয়ে বেশি লােক মরে। প্রর্ণ হল, একটা হিন্দুও কেন মরবে? একজন হিন্দুকেও ভিটেমাটি ছাড়তে হবে কেন? কেন একজন নারীও ধর্ষিত হবে হিন্দু বলে ? উপমহাদেশের সামগ্রিক শান্তির স্বার্থেই বাংলাদেশে সংখ্যালঘুর ওপর যে কোনও নির্যাতন বন্ধ হওয়া জরুরি। পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে এ বিষয়ে বিশেষ উদ্যোগী হতে হবে। রাজ্য সরকারের উচিত গুরুত্ব দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে বিষয়টি বুঝিয়ে বলা। আমাদের কেন্দ্রীয় সরকারের কর্তব্য হবে, বাংলাদেশকে বুঝিয়ে দেওয়া যে, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার বন্ধ না হলে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কেরই অবনতি ঘটবে। আমাদের বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদেরও এ বিষয়ে জনমত গড়ে তুলতে হবে। নইলে বাংলাদেশের প্রতিক্রিয়ায় আমাদের দেশেও এমন কিছু ঘটে যাওয়া প্রবল, যা মােটেই অভিপ্রেত নয়। আর সেই সঙ্গে ভারত সরকারকে অনুপ্রবেশকারীদের বা শরণার্থীদের প্রতি কঠোর হতে হবে। চলে এসাে—এই মনােভাব নিয়ে চললে অনুপ্রবেশকারীদের বা শরণার্থীর আগমন বাড়বে বই কমবে না।
বিজেপি কিন্তু অনুপ্রবেশ ইস্যু উত্থাপন করছে সমস্যাটা বােঝা বা সমাধানের জন্য নয়, মুসলিমদের বিরুদ্ধে হিন্দুদের খেপিয়ে ভােট জেতার জন্য। তাই সারা পৃথিবী জুড়ে এই সমস্যা নিয়ে যে গভীর আলােচনা চলছে, তার প্রতি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ না করে তারা দেখছে কেবল বাংলাদেশি সীমানা। এমনকি নেপালের তরাই অঞ্চলও তাদের দৃষ্টিগােচর হয় না। ভারতের সশস্ত্র রাষ্ট্রদ্রোহীরা যে ভুটানে আত্মগােপন করে থাকছেন, সে ব্যাপারে ভুটানের সরকারও অসহায়, তাহলে শুধু বাংলাদেশ সরকারকে বেছে নেওয়া হচ্ছে কেন? ভুটানের মাটি থেকেও ভারত বিরােধী সশস্ত্র তৎপরতা চালানাে হয়ে থাকে, অতএব ভুটানের বা নেপালের যে সব মানুষ বেআইনীভাবে ভারতে বসবাস করছেন তাদের শনাক্ত করে এখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার কথা ভাবা হবে না কেন?
রাষ্ট্রপুঞ্জের পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, গত ৪ দশকে প্রায় ৪.৩ কোটি মানুষ অনুন্নত দেশ ছেড়ে উন্নত দেশগুলিতে চলে গেছে। প্রতি বছর যাচ্ছে প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষ। তাছাড়া অস্থায়ীভাবে কাজ করতে যায় আরও ২ কোটি। দ্বিতীয়ত, বিজেপি বাংলাদেশ থেকে কোনও মুসলিম এলে তাকেঅনুপ্রবেশকারী আখ্যা দিয়ে জোর করে তাড়িয়ে দিতে চায় আর হিন্দু এলে তাকে শরণার্থী আখ্যা দিয়ে এখানেই পুনর্বাসনের দাবি করে। অথচ এই বিজেপি-র দাবি হল, সকলের জন্য একই আইন চালু করতে হবে। এই দাবি মারাত্মক। তৃতীয়ত, অনুপ্রবেকারীদের সংখ্যা। ভারত সরকার, পশ্চিমবঙ্গ সরকার নানা তথ্য, রিপাের্ট পর্যলােচনা করছে। তারা এখন সংখ্যার ব্যাপারে চূড়ান্ত কথা বলতে পারছে না। অথচ বি জে পি-র গােনা হয়ে গেছে। তারা বলছে অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা ২ কোটি। পূর্বেই বলা হয়েছে, বিজেপি অনুপ্রবেশকার হিসেবে শুধু বাংলাদেশি মুসলিমদের ধরে। অর্থাৎ ২ কোটি বাংলাদেশি মুসলমান ভারতবর্ষে ঢুকেছে। আর ভারত মানে তাে আর চেন্নাই বা বাঙ্গালাের যায়নি। কিছু দিল্লি, মুম্বাই, আসাম, বিহার, ত্রিপুরা গেছে তাে বাকি সব পশ্চিমবাংলায়। আসলে বিজেপি-ওয়ালারা অনুপ্রবেশকারীর হিসেব দেওয়ার সময় জনসংখ্যা বৃদ্ধি হারে নানান তথ্য নানান অঙ্ক উপস্থিত করে। কিন্তু পশ্চিমবাংলায় ভারতের অন্য রাজ্য থেকে যে হাজার হাজার মানুষ আসছে, সেটা উল্লেখ করতে চায় না। অথচ ২০১১ সালে সেই সংখ্যা ছিল ৫৫.৩ লক্ষ আর পশ্চিমবাংলা থেকে ওই সময়ের মধ্যে বাইরের রাজ্যে চলে গেছেন মাত্র ১২.৩ লক্ষ মানুষ। চতুর্থত, ভারতে বসবাসকারী অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীর সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করা প্রায় দুঃসাধ্য কাজ। অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা ছাড়াও অনুপ্রবেশ সংক্রান্তি আর একটি বিতর্কিত বিষয় হল, অনুপ্রবেশকারীদের সম্প্রদায়গত বিন্যাস। তবে যারা ঢুকে পড়েছে তাদের সংখ্যা বা সম্প্রদায়গত বিন্যাস না পাওয়া গেলেও, যারা ঢুকতে গিয়ে ধরা পড়েছে তাদের সংখ্যা ও সম্প্রদায়গত বিন্যাস পাওয়া যাচ্ছে। অনুপ্রবেশকারীদের সংখ্যার ব্যাপারে আর একটি দিকেরও হিসাব পাওয়া যায়। এ বিষয়টি হল, বৈধ পাশপাের্ট নিয়ে যারা আসছেন তাদের একটা অংশ ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাবার পরও ভারতে থেকে যাচ্ছেন, আর ফিরে যাচ্ছেন না। এদেরকে আমরা বেআইনী অনুপ্রবেশকারী হিসেবেই দেখব। রাজ্য স্বরাষ্ট্র দপ্তরের হিসাব মতাে ৭২-৯২ এই সময়ে ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাবার পর ফিরে যাননি এরকম মানুষের সংখ্যা ৬৭৫১৯৫ জন। এর মধ্যে হিন্দু ৪৮১৩৬৮ (৭১.৩ শতাংশ) জন ও মুসলমান ১৮৯০৬৮ (২৮ শতাংশ) জন। কিন্তু কোনও বৈধ নথিপত্র ছাড়া সীমান্ত পার হতে গিয়ে ৭২-৯২ এই সময়ে যারা ধরা পড়েছে তাদের মধ্যে হিন্দু ২৬.৯ শতাংশ এবং মুসলমান ৭২.৩ শতাংশ। অর্থাৎ চিত্রটা পুরাে বিপরীত। পাশপাের্ট ভিসা নিয়ে যারা আসে তার প্রধানত মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত। বাংলাদেশের গরীব লােকদের পাশপাের্ট ভিসা যােগাড় করা কঠিন। তাদের কাছে পায়ে হেঁটে দালালদের সাহয্যে সীমান্ত টপকানােটাই অনেক সহজ। এর থেকে প্রমাণিত হয় বাংলাদেশি হিন্দুদের মধ্যে দেশ ছাড়ার প্রবণতা গরীব অংশের তুলনায় অবস্থাপন্ন অংশের মধ্যে বেশী। এই সংখ্যা থেকে এও বােঝা যায় যে, মুসলমানদের তুলনায় হিন্দুদের মধ্যে দেশ ছাড়ার প্রবণতা বেশী। বাংলাদেশের জনসংখ্যার সাম্প্রদায়িক বিন্যাস হল, মুসলমান ৮৬.৬ শতাংশ আর হিন্দু ৯.৬ শতাংশ। কিন্তু সীমান্তে আটক বাংলাদেশি দের মধ্যে হিন্দুদের হার (২৬.৯ শতাংশ) এর থেকে বেশী।
তাছাড়াও হিন্দুদের একটা অংশের বাংলাদেশ ছাড়ার পিছনে কিছু রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে। কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষ ভারতে সংখ্যালঘুদের অবস্থার দিকে খােলা চোখে তাকালে অনুমান সম্ভব বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের কি অবস্থা। তবে বাংলাদেশ থেকে হিন্দুদের চলে আসাটা একান্তই রাজনৈতিক এরকম কোনও সিদ্ধান্তেও পৌঁছান যাবে না। আমরা ধরে নেব যারা অনুপ্রবেশ করতে গিয়ে ধরা পড়েছে তাদের মধ্যে সম্প্রদায়গত বিন্যাস ও যারা অনুপ্রবেশ করেছে তাদের মধ্যে সম্প্রদায়গত বিন্যাস একই। যদি আমরা বছরভিত্তিক অনুপ্রবেশের সংখ্যার দিকে তাকাই তবে ৭৭-৮০ এই চার বছর সুনির্দিষ্ট কোনও প্রবণতা লক্ষ করা যাবে না। কিন্তু ৮১-৯২ এই বিশেষ প্রবণতা আছে। প্রবণতা হল, এই সংখ্যার ক্ষেত্রে তফাৎ থাকলেও হিন্দু এবং মুসলমানদের সংখ্যার হ্রাস বা বৃদ্ধি ঘটছে একই সময়ে। যে বছর মুসলমানদের সংখ্যা বাড়ছে সেই একই বছরে হিন্দুদের সংখ্যাও বাড়ছে। যে বছর কমছে দুই সম্প্রদায়েরই কমছে। কাজেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন বাড়ছে—কেবল এই কারণেই যদি অনুপ্রবেশ ঘটে তবে তা কেবল প্রকাশিত হবে সংখ্যালঘুদের সংখ্যা বৃদ্ধিতে, সংখ্যাগরিষ্ঠের সঙ্গে একই অনুপাতে সংখ্যা বৃদ্ধিতে নয়। কাজেই অনুপ্রবেশের কারণ কেবল সাম্প্রদায়িক রাজনীতির মধ্যে খুঁজলে চলবে না। অনুপ্রবেশের ক্ষেত্রে দুটি সম্পদায়ের মধ্যেও সাধারণ প্রভাব ফেলতে পরে একমাত্র অর্থনৈতিক কোনও কারণ। তাই সাম্প্রদায়িক রাজনীতির খপ্পরে পড়ে বা আবেগতাড়িত হয়ে অনুপ্রবেশ বিষয়টিকে বিচার করলে সমস্যা আরও বাড়বে। উভয় দেশের মধ্যে পারস্পরিক আলাপ-আলােচনার ভিত্তিতে এই প্ররে সুষ্ঠু মীমাংসা করতে হবে। সীমান্ত ঘিরে প্রহরাকে আরও জোরদার করতে হবে।
‘নবজাগরণ’ অ্যান্ড্রোয়েড অ্যাপ্লিকেশনটি প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।
‘নবজাগরণ’ এর টেলিগ্রাম চ্যানেলে জয়েন হতে নিচের আইকনে ক্লিক করুন।